The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
শেখ মুজিবুর রহমান (শুনুন ) (১৭ই মার্চ ১৯২০ – ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা মুজিব, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি বাঙালির অধিকার রক্ষায় ব্রিটিশ ভারত থেকে ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে মুজিবকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্ব দেওয়া হয় এবং পাশাপাশি প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। এসকল কারণে, তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে গণ্য করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “বঙ্গবন্ধু”, “শেখ মুজিব” এবং “শেখ সাহেব” নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্তমান সভানেত্রী।
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন (সাধারণত বেগম রোকেয়া নামে অধিক পরিচিত; ৯ ডিসেম্বর ১৮৮০ - ৯ ডিসেম্বর ১৯৩২) হলেন একজন বাঙালি চিন্তাবিদ, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি বাঙালি মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং প্রথম বাঙালি নারীবাদী। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে বিবিসি বাংলার 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি' জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন বেগম রোকেয়া। ছোটগল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী ও শ্লেষাত্মক রচনায় রোকেয়ার স্টাইল ছিল স্বকীয় বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। উদ্ভাবনা, যুক্তিবাদিতা এবং কৌতুকপ্রিয়তা তার রচনার সহজাত বৈশিষ্ট্য। তার প্রবন্ধের বিষয় ছিল ব্যাপক ও বিস্তৃত। বিজ্ঞান সম্পর্কেও তার অনুসন্ধিৎসার পরিচয় পাওয়া যায় বিভিন্ন রচনায়। মতিচূর (১৯০৪) প্রবন্ধগ্রন্থে রোকেয়া নারী-পুরুষের সমকক্ষতার যুক্তি দিয়ে নারীদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় আহ্বান জানিয়েছেন এবং শিক্ষার অভাবকে নারীপশ্চাৎপদতার কারণ বলেছেন। তার সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৫) নারীবাদী ইউটোপিয়ান সাহিত্যের ক্লাসিক নিদর্শন বলে বিবেচিত। পদ্মরাগ (১৯২৪) তার রচিত উপন্যাস। অবরোধ-বাসিনীতে (১৯৩১) তিনি অবরোধপ্রথাকে বিদ্রূপবাণে জর্জরিত করেছেন।রোকেয়ার কর্ম ও আদর্শ উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর ৯ই ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস উদযাপন করে এবং বিশিষ্ট নারীদের অনন্য অর্জনের জন্য বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি বিশেষ দিবস। প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সকল বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। এ কাজে বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল।
১৯৭১ বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড বলতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টুকুতেই পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের জ্ঞানী-গুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করাকে বুঝায়। ১৯৭১ এর ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তান বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জেতা সম্ভব না, তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দুর্বল এবং পঙ্গু করে দেয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিজ নিজ গৃহ হতে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। এই পরিকল্পিত গণহত্যাটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। বন্দী অবস্থায় বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত লাশ রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়। অনেকের লাশ শনাক্তও করা যায়নি, পাওয়াও যায়নি বহু লাশ। ১৯৭১ এর ১৪ ডিসেম্বরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পালিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বুদ্ধিজীবী হত্যার স্মরণে বাংলাদেশের ঢাকায় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ডাকবিভাগ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে একটি স্মারক ডাকটিকিটের সিরিজ বের করেছে।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে লৌহজং, মুন্সিগঞ্জের সাথে শরিয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে, ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির (truss bridge) ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর আববাহিকায় ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যর ৪১টি স্পান বসবে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু। সরকারের পরিকল্পনামাফিক ২০২০ সালের শেষের দিকে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা ।প্রকল্পটি তিনটি জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করবে- মুন্সীগঞ্জ (মাওয়া পয়েন্ট/উত্তর পাড়), শরীয়তপুর এবং মাদারীপুর (জঞ্জিরা/দক্ষিণ পাড়)। এটির জন্য প্রয়োজনীয় এবং অধিগ্রহণকৃত মোট জমির পরিমাণ ৯১৮ হেক্টর। নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি ভাড়ার ভিত্তিতে আগামী ছয় বছরে অধিযাচন করা হবে।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’[১] একটি প্রত্যয়, একটি স্বপ্ন,যা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। বিরাট এক পরিবর্তন ও ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে চলছে। একুশ শতকে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ৬ জানুয়ারি ২০০৯ শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো শপথ নেন। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের বছরে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণই ছিল তাদের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রধান বিষয়।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভূ-রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মায়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
বিজয় দিবস বাংলাদেশে বিশেষ দিন হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের সর্বত্র পালন করা হয়। প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়। ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারীভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানী বাহিনীর প্রায় ৯১,৬৩৪ সদস্য বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এর ফলে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। ভারতেও এই দিনটি বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বাংলা: বাংলাদেশ গণসংঘ) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ বা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা সংক্ষেপে মুক্তিযুদ্ধ ছিল ১৯৭১ সালে সংঘটিত তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের সশস্ত্র সংগ্রাম, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসাবে পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি নিধনে ঝাঁপিয়ে পড়লে একটি জনযুদ্ধের আদলে গেরিলাযুদ্ধ তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা ঘটে। ২৫ মার্চের কালো রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ঢাকায় অজস্র সাধারণ নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পুলিশ ও ই.পি.আর.-কে হত্যা করে এবং ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাপ্রাপ্ত দল আওয়ামী লীগের প্রধান ও পূর্ব বাংলার তৎকালীন জনপ্রিয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। পার্বত্য চট্টগ্ৰামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-প্ৰধান জিয়াউর রহমান ও চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতা এম. এ.
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ই মে, ১৮৬১ - ৭ই আগস্ট ১৯৪১ ; ২৫শে বৈশাখ, ১২৬৮ - ২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
গণিতবিদ্যায় পিথাগোরাসের উপপাদ্য বা পিথাগোরিয়ান থিউরেম হল ইউক্লিডীয় জ্যামিতির অন্তর্ভুক্ত সমকোণী ত্রিভুজের তিনটি বাহু সম্পর্কিত একটি সম্পর্ক। এই উপপাদ্যটি গ্রিক গণিতবিদ পিথাগোরাসের নামানুসারে করা হয়েছে, যাকে ঐতিহ্যগতভাবে এই উপপাদ্যদের আবিষ্কারক ও প্রমাণকারী হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে উপপাদ্যটির ধারণা তার সময়ের আগে থেকেই প্রচলিত ছিল। চীনে এই উপপাদ্যটি “গোউযু থিউরেম” (勾股定理) হিসেবে প্রচলিত যা ৩, ৪ ও ৫ বাহু বিশিষ্ট ত্রিভুজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
বেকার হোস্টেল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত একটি সরকারি ছাত্রাবাস। ছাত্রাবাসটি ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯১০ সালে এডওয়ার্ড নরম্যান বেকার প্রতিষ্ঠা করেন।ছাত্রাবাসটি পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার ৮ স্মিথ লেনে অবস্থিত। কলকাতায় মুসলিম ছাত্রদের জন্য ১৮৯৬ সালে নির্মিত টেইলর হোস্টেলের চারপাশের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং অপর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থার কারণে ১৯০৮ সালে নতুন ছাত্রাবাস নির্মাণের জন্য আন্দোলন হয়। এর ফলে কলকাতায় বেকার হোস্টেল নির্মিত হয়।ছাত্রাবাসটিতে বেশ কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব বসবাস করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ১৯৪৫-৪৬ সালে মৌলানা আজাদ কলেজের ছাত্র থাকাবস্থায় এ ছাত্রাবাসের ২৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। ১৯৯৮ সালে ২৩ ও ২৪ নাম্বার কক্ষকে একত্রিত করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষ’ তৈরি করে। ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এ কক্ষের সম্মুখে তার আবক্ষ ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়।
করোনাভাইরাস বলতে ভাইরাসের একটি শ্রেণিকে বোঝায় যেগুলি স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদেরকে আক্রান্ত করে। মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শ্বাসনালীর সংক্রমণ ঘটায়। এই সংক্রমণের লক্ষণ মৃদু হতে পারে, অনেকসময় যা সাধারণ সর্দিকাশির ন্যায় মনে হয় (এছাড়া অন্য কিছুও হতে পারে, যেমন রাইনোভাইরাস), কিছু ক্ষেত্রে তা অন্যান্য মারাত্মক ভাইরাসের জন্য হয়ে থাকে, যেমন সার্স, মার্স এবং কোভিড-১৯। অন্যান্য প্রজাতিতে এই লক্ষণের তারতম্য দেখা যায়। যেমন মুরগির মধ্যে এটা উর্ধ্ব শ্বাসনালী সংক্রমণ ঘটায়, আবার গরু ও শূকরে এটি ডায়রিয়া সৃষ্টি করে। মানবদেহে সৃষ্ট করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়ানোর মত কোনো টিকা বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ আজও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে বৃটেন একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে।
আল্লামা মামুনুল হক (জন্ম: নভেম্বর ১৯৭৩) একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, অধ্যাপক, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, লেখক, সম্পাদক, আন্তর্জাতিক ইসলামি বক্তা ও সমাজ সংস্কারক। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া, ঢাকার শায়খুল হাদিস, বাবরি মসজিদ বাংলাদেশ, মাহাদুত তারবিয়্যাতুল ইসলামিয়া ও তারবিয়্যাতুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, মাসিক রহমানী পয়গামের সম্পাদক, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি ও বায়তুল মামুর জামে মসজিদের খতিব। তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের ইসলামি বক্তাদের সংগঠন রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন বাংলাদেশের উপদেষ্টা সহ কয়েকটি সংগঠনের নেতৃস্থানীয় পদে রয়েছেন। বাংলা, ইংরেজি, আরবি সহ পাঁচ ভাষায় তার দক্ষতা রয়েছে। ইসলামি নেতা হিসেবে তিনি দেশব্যাপী পরিচিত। নাস্তিক, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী ও ইসলাম বিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে কঠোর বক্তব্য দিয়ে তিনি বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছেন এবং এ সংক্রান্ত আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ইসলামি মৌলবাদ প্রচারের অভিযোগে তাকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ, গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ ৬৫টি সংগঠন দেশব্যাপী ব্যাপক আন্দোলন করেছে।
ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু (ক্রান্তীয় আর্দ্র জলবায়ু বা ক্রান্তীয় মৌসুমি ও উপকূলীয় আয়নবায়ুর জলবায়ু নামেও পরিচিত) হল এক ধরনের জলবায়ু, যা কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাসের "এএম" বিভাগের অনুরূপ। ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ুর মাসিক গড় তাপমাত্রা বছরের প্রতি মাসে এবং শুকনো মরসুমে ১৮ °সে (৬৪ °ফা) উপরে থাকে। ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু আর্দ্র "এএফ" (বা ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য জলবায়ু ) এবং শুকনো "এডব্লিউ" (বা ক্রান্তীয় সাভনা জলবায়ু ) এর মধ্যবর্তী জলবায়ু।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারতীয় প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চিন, নেপাল, ও ভূটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবীর বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে, অন্যদিকে এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তানের ছিল দু’টি অংশ: পূর্ব বাংলা (১৯৫৫ সালে পুনর্নামাঙ্কিত পূর্ব পাকিস্তান) ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কার্যতঃ পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন বাদামতলী কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের ছেলে রফিক, সালাম, এম. এ.
কাজী নজরুল ইসলাম (২৫ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬; ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ – ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) রাঢ় বাংলায় জন্ম নেওয়া একজন বাঙালি কবি এবং পরবর্তী কালে বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য এবং তিনি ছিলেন বাঙালি মনীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ – দুই বাংলাতেই তার কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তার কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তার কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা হাতে তার প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তার প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে – কাজেই "বিদ্রোহী কবি", তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উভয় বাংলাতে প্রতি বৎসর উদযাপিত হয়ে থাকে।
রূপকল্প ২০২১ (ভিশন ২০২১ নামেও পরিচিত) ছিল ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি নির্বাচনী ইশতেহার। এটি দেশের বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীর বছরের জন্য বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক রূপরেখা হয়ে ওঠে। এই নীতিটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তিগত আশাবাদীতার নীতিমালা হিসাবে সমালোচিত হয়েছে এবং গণমাধ্যমের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, কম খরচে ইন্টারনেটে প্রবেশ, পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন এর অন্তভুর্ক্ত। এই রূপকল্প ২০২১ হল ২০২১ সালের মধ্যে দেশ কোন অবস্থানে যাবে, এবং এই বছরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী পালন করবে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করাও এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।
সত্যজিৎ রায় (২ মে ১৯২১ – ২৩ এপ্রিল ১৯৯২) একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সঙ্গীত পরিচালক এবং লেখক। তাকে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। সত্যজিতের জন্ম কলকাতা শহরে সাহিত্য ও শিল্প সমাজে খ্যাতনামা রায় পরিবারে। তার পূর্বপুরুষের ভিটা ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কিশোরগঞ্জে (বর্তমানে বাংলাদেশ) কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। সত্যজিতের কর্মজীবন একজন বাণিজ্যিক চিত্রকর হিসেবে শুরু হলেও প্রথমে কলকাতায় ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা জঁ রনোয়ারের সাথে সাক্ষাৎ ও পরে লন্ডন শহরে সফররত অবস্থায় ইতালীয় নব্য বাস্তবতাবাদী চলচ্চিত্র লাদ্রি দি বিচিক্লেত্তে (ইতালীয়: Ladri di biciclette, বাইসাইকেল চোর) দেখার পর তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ হন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকান্ড সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সেনা শাখা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অর্থনীতি বা অর্থশাস্ত্র সামাজিক বিজ্ঞান-এর একটি শাখা যা পণ্য এবং কৃত্যের উৎপাদন, সরবরাহ, বিনিময়, বিতরণ এবং ভোগ ও ভোক্তার আচরণ নিয়ে আলোচনা করে থাকে৷ সম্পদ সীমিত কিন্তু চাহিদা অফুরন্ত– এই মৌলিক পরিপ্রেক্ষিতে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা অর্থনীতির প্রধান উদ্দেশ্য৷ অর্থনীতি শব্দটি ইংরেজি 'Economics' শব্দের প্রতিশব্দ। Economics শব্দটি গ্রিক শব্দ 'Oikonomia' থেকে উদ্ভূত যার অর্থ গৃহস্থালী পরিচালনা।
সমতলীয় জ্যামিতির ভাষায় তিনটি সরলরেখা দ্বারা আবদ্ধ চিত্রকে ত্রিভুজ বলা হয়। এটি একটি বহুভুজ, যার তিনটি ছেদচিহ্ন ও তিনটি প্রান্ত থাকে। দ্বি-মাত্রিক তলে ত্রিভুজের তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০ ° বা দুই সমকোণ। এক সময় কেবল ইউক্লিডীয় জ্যামিতিতেই ত্রিভুজ নিয়ে আলোচনা করা হত। কিন্তু নিকোলাই লোবাচেভস্কি সহ অন্যান্য জ্যামিতি বিশেষজ্ঞদের অবদানের ফলে অসমতলীয় জ্যামিতিতেও বর্তমানে ত্রিভুজ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ ধরনের তলে ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি দুই সমকোণ নয়। অথচ ইউক্লিডীয় জ্যামিতির মূল ভিত্তিই হচ্ছে এই ধারণাটি।
ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি দিবস। এটির পূর্ব নাম আইসিটি দিবস বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিবস। ২৭ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে বাংলাদেশ সরকার এ দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের ঘোষণা দেয়। ২৬ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে আইসিটি দিবসের পরিবর্তে এ দিনকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রতিবছর ১২ ডিসেম্বর জাতীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর দিবসটি পালন করে।
সংক্রামক রোগ বলতে সেই সব রোগ বোঝায়, যেসব রোগ একজন থেকে আর একজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই ছড়িয়ে পড়া শুধু মানুষ থেকে মানুষ নয়, পশু পাখি থেকে মানুষে, পশু পাখি থেকে পশু পাখির মাঝে, কিংবা মানুষ থেকে পশু পাখির মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বর্তমানে সংক্রামক রোগ এর প্রকোপ আনেকাংশে কমে এসেছে। বরং অসংক্রামক জীবন ঘাতী রোগ মহামারী আকারে দেখা দিচ্ছে।
ভাস্কর্য (ইংরেজি: Sculpture) ত্রি-মাত্রিক শিল্পকর্মকে ভাস্কর্য বলে।অর্থাৎ, জ্যামিতিশাস্ত্রের ন্যায় ভাস্কর্যকে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতা সহ ত্রি-মাত্রিক হতে হবে। বাংলাদেশ এবং চীনের ন্যায় বিশ্বের সর্বত্র বিভিন্ন ধরনের, বহুমূখী আকৃতির ভাস্কর্য দেখতে পাওয়া যায়। রেনেসাঁ এবং আধুনিককালে এটি ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। পুতুল, মুখোশ, মাটির জিনিসপত্র ভাস্কর্যের উদাহরণ। কিন্তু প্রায় চারশত বছর পূর্বে বিভিন্ন বিধি-নিষেধের কবলে পড়ে সেখানে ভাস্কর্য শিল্পকলার তেমন উন্মেষ ঘটেনি।যিনি প্রস্তরাদি, কাঠ ইত্যাদি দিয়ে ভাস্কর্য করেন, তিনি ভাস্কররূপে জনসমক্ষে পরিচিতি লাভ করেন।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামগুলোতেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
মানবাধিকার দিবস জাতিসংঘের নির্দেশনায় বিশ্বের সকল দেশে প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর পালিত হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ১০ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ সাল থেকে দিবসটি উদযাপন করা হয়। এছাড়াও, 'সার্বজনীন মানব অধিকার সংক্রান্ত ঘোষণাকে' বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ তারিখকে নির্ধারণ করা হয়। সার্বজনীন মানব অধিকার ঘোষণা ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী নবরূপে সৃষ্ট জাতিসংঘের অন্যতম বৃহৎ অর্জন।
মুজিব বর্ষ হল বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালনের জন্য ঘোষিত বর্ষ। বাংলাদেশ সরকার ২০২০-২১ সালকে মুজিব বর্ষ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত এ বর্ষ উদযাপন করা হবে। বাংলাদেশের জাতির পিতা এবং বঙ্গবন্ধু খ্যাত নেতা অবিভক্ত ভারতের পূর্ববঙ্গে (বর্তমানে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে) ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আবার ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতার অর্ধ-শত বার্ষিকীতে পদার্পণ করবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে শেখ মুজিবুর রহমান ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকায় ঘোষিত বর্ষটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
২০০২ সালে সর্বশ্রেষ্ঠ ১০০জন ব্রিটন অনুসন্ধানের জরিপ শেষ হওয়ার পরপরই, বিবিসি হাজারবছর ধরে বাঙালি জাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ব্যক্তিত্বকে খুঁজে বের করতে একই ধরনের জরিপের আয়োজন করেছিল। ২০০৪ সালে, বিবিসির বাংলা পরিসেবা মাধ্যম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি শিরোনাম নিয়ে ১১ই ফেব্রুয়ারি থেকে ২২শে মার্চ পর্যন্ত একটি জরিপ পরিচালনা করে। এই জরিপটিতে বাংলাদেশ, ভারত (পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম রাজ্য) সহ বিশ্বব্যাপী অবস্থানরত বাঙালিরা অংশ নেয়।ঐ জরিপের মনোনয়নে মোট ১৪০জনের নাম আসে। বিবিসি ২৬শে মার্চ থেকে শীর্ষ ২০জনের নাম ঘোষণা করতে শুরু করে যেখানে প্রতিদিন ২০জনের মধ্যথেকে একটি নাম ঘোষণা করা হত। ১৪ই এপ্রিল চূড়ান্ত দিনে, যা পহেলা বৈশাখের (বাংলা নববর্ষ) দিন ছিল, বিশ্বব্যাপী অবস্থানরত বাঙালিদের ভোটদানের ভিত্তিতে বিবিসি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে ঘোষণা করে।
মুহাম্মাদ (২৯ আগস্ট ৫৭০ - ৮ জুন ৬৩২; আরবি উচ্চারণ শুনতে ক্লিক করুন محمد মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত; তুর্কি : মুহাম্মেদ), পূর্ণ নাম : মুহাম্মাদ ইবনে ʿআবদুল্লাহ ইবনে ʿআবদুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম (ابو القاسم محمد ابن عبد الله ابن عبد المطلب ابن هاشم) হলেন ইসলামের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব এবং ইসলামী বিশ্বাস মতে আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সর্বশেষ নবী, (আরবি: النبي আন-নাবিয়্যু), তথা "বার্তাবাহক" (আরবি : الرسول আর-রাসুল), যার উপর ইসলামী প্রধান ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অমুসলিমদের মতে তিনি ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সফলতা।আনুমানিক ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে (হস্তিবর্ষ) মক্কা নগরীতে জন্ম নেওয়া মুহাম্মাদ মাতৃগর্ভে থাকাকালীন পিতা হারা হন শিশু বয়সে মাতাকে হারিয়ে এতিম হন এবং প্রথমে তার পিতামহ আবদুল মুত্তালিব ও পরে পিতৃব্য আবু তালিবের নিকট লালিত পালিত হন। হেরা পর্বতের গুহায় ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুওয়াত লাভ করেন। জিবরাঈল ফেরেশতা এই পর্বতের গুহায় আল্লাহর তরফ থেকে তার নিকট ওহী নিয়ে আসেন। তিন বছর পর ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে ওহী প্রচার করেন, এবং ঘোষণা দেন "আল্লাহ্ এক" ও তার নিকট নিজেকে সঁপে দেওয়ার মধ্যেই জাগতিক কল্যাণ নিহিত, এবং ইসলামের অন্যান্য নবীদের মত তিনিও আল্লাহর প্রেরিত দূত।মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মুহাম্মাদের নিকট আসা ওহীসমূহ কুরআনের আয়াত হিসেবে রয়ে যায় এবং মুসলমানরা এই আয়াতসমূহকে "আল্লাহর বাণী" বলে বিবেচনা করেন। এই কুরআনের উপর ইসলাম ধর্মের মূল নিহিত। কুরআনের পাশাপাশি হাদিস ও সিরাত (জীবনী) থেকে প্রাপ্ত মুহাম্মাদের শিক্ষা ও অনুশীলন (সুন্নাহ) ইসলামী আইন (শরিয়াহ) হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রতি বৎসর বিভিন্ন দিনে বিশ্বব্যাপী নানা "দিবস" পালিত হয়। এই সকল বৈশ্বিক দিবস বা বিশ্ব দিবস বা আন্তর্জাতিক দিবসসমূহের তালিকা এই পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো। এই সকল দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে - কোন একটি নির্দিষ্ট দিনে আন্তর্জাতিকভাবে সাম্প্রতিককালের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধি বা ক্ষেত্র বিশেষে কোন অতীত ঘটনা স্মরণ বা উদযাপন করা।
সুন্দরবন হলো বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলির অন্যতম। গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত। সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি। ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ রয়েছে ভারতের মধ্যে।
জাতিসংঘ (অপর নাম: রাষ্ট্রসংঘ) বিশ্বের জাতিসমূহের একটি সংগঠন, যার লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক অগ্রগতি এবং মানবাধিকার বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। ১৯৪৫ সালে ৫১টি রাষ্ট্র জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ সনদ স্বাক্ষর করার মাধ্যমে জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং পরবর্তীতে লুপ্ত লীগ অব নেশন্সের স্থলাভিষিক্ত হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। মূল সংবিধান ইংরেজি ভাষায় রচিত হয় এবং একে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তাই এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধীত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) উনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। তাঁর প্রকৃত নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য প্রথম জীবনেই তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তাঁর। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও অপরবোধ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাঁকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয় সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা । নারীমুক্তির আন্দোলনেও তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ বাংলাদেশের প্রথম ভূস্থির যোগাযোগ ও সম্প্রচার উপগ্রহ। এটি ১১ মে ২০১৮ কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে ৫৭ তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশের তালিকায় যোগ হয় বাংলাদেশ। এই প্রকল্পটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন কর্তৃক বাস্তবায়িত হয় এবং এটি ফ্যালকন ৯ ব্লক ৫ রকেটের প্রথম পেলোড উৎক্ষেপণ ছিল।
কোষ (ইংরেজি: Cell) হল সকল জীবদেহের গঠন, বিপাকীয় ক্রিয়াকলাপ ও বংশগতিমূলক তথ্য বহনকারী একক। এটি জীবের ক্ষুদ্রতম একক জীবিত একক, অর্থাৎ একটি কোষকে পৃথকভাবে জীবিত বলা যেতে পারে। এজন্যই একে জীবের নির্মাণ একক নামে আখ্যায়িত করা হয়।) ব্যাক্টেরিয়া এবং এ ধরনের কিছু জীব এককোষী। কিন্তু মানুষসহ পৃথিবীর অধিকাংশ জীবই বহুকোষী। মানবদেহে প্রায় ৩৭ লক্ষ কোটি কোষ রয়েছে; একটি কোষের আদর্শ আকার হচ্ছে ১০ মাইক্রোমিটার এবং ভর হচ্ছে ১ ন্যানোগ্রাম। জানামতে বৃহত্তম কোষ হচ্ছে উটপাখির ডিম। চূড়ান্ত কোষ তত্ত্ব আবিষ্কৃত হওয়ার পূর্বে ১৮৩৭ সালে চেক বিজ্ঞানী Jan Evangelista Purkyňe অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে উদ্ভিদ কোষ পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে ছোট ছোট দানা লক্ষ্য করেন। ১৮৩৯ সালে বিজ্ঞানী Matthias Jakob Schleiden এবং Theodor Schwann কোষ তত্ত্ব আবিষ্কার করেন এবং তাদের তত্ত্বে বলা হয়, সকল জীবিত বস্তুই এক বা একাধিক কোষ দ্বারা গঠিত এবং সব কোষই পূর্বে অস্তিত্বশীল অন্য কোন কোষ থেকে উৎপত্তি লাভ করে। জীবের মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ সব ক্রিয়াই কোষের অভ্যন্তরে সংঘটিত হয়। সকল কোষের মধ্যে কার্যক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বংশগতীয় তথ্য এবং পরবর্তী বংশধরে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে।
পৃথিবী সূর্য থেকে দূরত্ব অনুযায়ী তৃতীয়, সর্বাপেক্ষা অধিক ঘনত্বযুক্ত এবং সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে পঞ্চম বৃহত্তম গ্রহ। এটি সৌরজগতের চারটি কঠিন গ্রহের অন্যতম। পৃথিবীর অপর নাম "বিশ্ব" বা "নীলগ্রহ"। ইংরেজি ভাষায় পরিচিত আর্থ (Earth) নামে, গ্রিক ভাষায় পরিচিত গাইয়া (Γαῖα) নামে, লাতিন ভাষায় এই গ্রহের নাম "টেরা (Terra)।
প্রদোষ চন্দ্র মিত্র ওরফে ফেলুদা সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট বাংলা সাহিত্যের একটি জনপ্রিয় কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র। ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর মাসের সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প "ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি" প্রকাশিত হয়। ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত এই সিরিজের মোট ৩৫টি সম্পূর্ণ ও চারটি অসম্পূর্ণ গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। ফেলুদার প্রধান সহকারী তার খুড়তুতো ভাই তপেশরঞ্জন মিত্র ওরফে তোপসে ও লেখক লালমোহন গাঙ্গুলি (ছদ্মনাম জটায়ু)। ফেলুদার চরিত্র নির্মাণে সত্যজিৎ রায় তার ছোটবেলায় পড়া শার্লক হোমস এর গোয়েন্দা গল্পের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। তাই ফেলুদার চরিত্রের সাথে অনেক জায়গায় আমরা হোমসের আর ফেলুদার ভাই ও সহকারি তোপসের সাথে হোমসের সহকারি ওয়াটসনের মিল পাই। নিজের লেখা অধিকাংশ গল্পের বইয়ের মতই ফেলুদার বইতেও সত্যজিৎ রায় নিজেই প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করতেন। সত্যজিৎ রায় ফেলুদার সোনার কেল্লা ও জয় বাবা ফেলুনাথ উপন্যাসদুটিকে চলচ্চিত্রায়িত করেন। এই দুই ছবিতে কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। আর তাই তার অধিকাংশ বইয়ের ফেলুদার ছবির অলংকরণে সৌমিত্র চট্টপাধায়ের আদলের ছাপ স্পষ্ট। একই ভাবে জটায়ু চরিত্রের অলঙ্করণে স্পষ্ট সিনেমায় এই চরিত্রের জন্য তার নির্বাচিত অভিনেতা সন্তোষ দত্তের আদল। বর্তমানে সত্যজিতের পুত্র সন্দীপ রায় ফেলুদার গল্প ও উপন্যাস নিয়ে টেলিভিশন ধারাবাহিক ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ফেলুদার রহস্য খুব জটিল।
আয়তক্ষেত্র হচ্ছে এমন চতুর্ভুজ যার বিপরীত বাহুগুলো সমান ও সমান্তরাল এবং অভ্যন্তরের চারটি কোণের প্রত্যেকেই এক সমকোণ।এই সংজ্ঞা থেকে দেখা যায় আয়তের দুই জোড়া সমান্তরাল বাহু আছে, যার অর্থ আয়তক্ষেত্র একটি সামান্তরিক। বর্গক্ষেত্র একটি বিশেষ ধরনের আয়তক্ষেত্র যার চারটি বাহুর দৈর্ঘ্য সমান; এর অর্থ বর্গ একই সাথে আয়তক্ষেত্র ও রম্বস।
আইজ্যাক নিউটনের গতিসূত্রগুলি হল প্রকৃতির তিনটি নিয়ম, যা চিরায়ত বলবিদ্যার ভিত্তি স্বরূপ। এই নিয়মগুলি বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল এবং তার দরুন সৃষ্ট গতির মধ্যে সম্পর্ক বর্ণনা করে। প্রায় তিন শতাব্দীর বেশি সময় ধরে এই নিয়মগুলি নানাভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছে। সূত্র তিনটি হল: প্রথম সূত্র: বাইরে থেকে কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগ না করলে, স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং গতিশীল বস্তু চিরকাল সমবেগে সরলরেখায় বা সরল পথে চলতে থাকে। সুতরাং, কোন বস্তুর উপর সার্বিক (total) বলের পরিমাণ শূন্য হলে, বস্তুর ভরকেন্দ্র হয় স্থির নয়তো সমবেগে গতিশীল থাকবে। দ্বিতীয় সূত্র: কোন বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যে দিকে ক্রিয়া করে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন সেদিকেই ঘটে।অর্থাৎ কোনো বস্তুর ভর যদি অপরিবর্তিত থাকে,তবে বস্তুটির ওপর প্রযুুক্ত বাহ্যিক নেট বল বস্তুটির ভর ও ত্বরণের গুণফল হয়। সুতরাং m ভরের একটি বস্তুর উপর F বল প্রয়োগের ফলে তার ত্বরণ a হয়, এই ত্বরণের মান বলের সমানুপাতিক ও ভরের ব্যস্তানুপাতিক (F = ma) এবং বল যে দিকে ক্রিয়া করে ত্বরণও সেই দিকে হয়।গাণিতিকভাবে একে এভাবে লেখা হয়: F → = d p → d t = d d t ( m v → ) = v → d m d t + m d v → d t .
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি স্বশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি "আমেরিকা" নামেও পরিচিত। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি রাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি অঞ্চলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত; আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যটি মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। এছাড়াও ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে পাাঁচটি অঞ্চল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকা
বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকা হচ্ছে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে এমন ব্যাংকসমূহকে একটি তালিকা। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হলো বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহকে মূলত দুই শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছেঃ তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত ব্যাংক। ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৪২টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৩টি বিশেষায়িত ব্যাংক ও ৯টি বিদেশি ব্যাংকসহ বাংলাদেশে মোট তালিকাভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা ৬১টি এবং অ-তালিকাভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা ৫টি। প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশই সামাজিক ব্যবসার ধারণায় প্রতিষ্ঠিত হয় গ্রামীণ ব্যাংক নামক ক্ষুদ্রঋণ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, যা একটি বিশেষায়িত অতালিকাভুক্ত ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০০৬ সালে দারিদ্র বিমোচনে অবদান রাখায় গ্রামীণ ব্যাংক এবং মুহাম্মদ ইউনুস যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।
বাণ (বা বাণাসুর) হিন্দু কিংবদন্তি মতে একজন সহস্র বাহুধর অসুর রাজা এবং বলির পুত্র। শোণিতপুর (বর্তমানের তেজপুর)কে রাজধানী করে বাণাসুর মধ্য আসামে রাজত্ব করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে বাণাসুর একজন কিরাট রাজা ছিলেন। অন্যদিকে হিমাচলের লোককথা মতে তিনি শোণিতপুরের (বর্তমানের হিমাচল প্রদেশের শারাহন) রাজা ছিলেন।
মাটি বা মৃত্তিকা হলো পৃথিবীর উপরিভাগের নরম ও দানাদার আবরণ। পাথর গুঁড়ো হয়ে সৃষ্ট খনিজ পদার্থ এবং জৈব যৌগ মিশ্রিত হয়ে মাটি গঠিত হয়। জৈব পদার্থের উপস্থিতিতে ভূমিক্ষয় আবহবিকার, বিচূর্ণিভবন ইত্যাদি প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে পাথর থেকে মাটির উদ্ভব হয়েছে। সে কারণে অতি প্রাচীন কালের মাটি পৃথিবীতে পাওয়া যায় না । ভূ-ত্বক, জলস্তর, বায়ুস্তর এবং জৈবস্তরের মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে পাথর থেকে মাটি তৈরি হয়।রাশিয়ান বিজ্ঞানী Dokuchaevকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানের জনক বলা হয়।তিনি মৃত্তিকা সম্পর্কে ধারনা দেন।তার সংঙ্গা অনুযায়ী Soils are applied solely to those superficial or nearly superficial horizons of rocks, that have been more or less modified naturally by the interaction of water, air and various kinds of organisms, either living or dead; this being reflected in a certain manner in the composition, structure and color of such formations. Where these conditions are absent, there are no natural soils, but artificial mixtures of rock. Dokuchaev(1879)। বিজ্ঞানী ডকুশেভ ছাড়াও আরো অনেক বিজ্ঞানী মাটিকে বিভিন্ন ভাবে সংঙ্গায়ন করেন।তবে তাদের মধ্যে বিজ্ঞানী কীলোগ(Kellogg) এর সংঙ্গা থেকে মাটি সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো ধারনা পাওয়া যায়।বিজ্ঞানী কীলোগ এর মতে -Soil is a collection of natural bodies occupying a portion of the earth surface that supports plant growth and that has properties due to the integrated effect of climate and vegetation acting upon parent material, as conditioned by relief, over a period of time.
এশিয়া ( (শুনুন) বা ) পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে জনবহুল মহাদেশ, প্রাথমিকভাবে পূর্ব ও উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। এটি ভূপৃষ্ঠের ৮.৭% ও স্থলভাগের ৩০% অংশ জুড়ে অবস্থিত। আনুমানিক ৪৩০ কোটি মানুষ নিয়ে এশিয়াতে বিশ্বের ৬০%-এরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। অধিকাংশ বিশ্বের মত, আধুনিক যুগে এশিয়ার বৃদ্ধির হার উচ্চ। উদাহরণস্বরূপ, বিংশ শতাব্দীর সময়, এশিয়ার জনসংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়ে গেছে, বিশ্ব জনসংখ্যার মত।এশিয়ার সীমানা সাংস্কৃতিকভাবে নির্ধারিত হয়, যেহেতু ইউরোপের সাথে এর কোনো স্পষ্ট ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা নেই, যা এক অবিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের গঠন যাকে একসঙ্গে ইউরেশিয়া বলা হয়। এশিয়ার সবচেয়ে সাধারণভাবে স্বীকৃত সীমানা হলো সুয়েজ খাল, ইউরাল নদী, এবং ইউরাল পর্বতমালার পূর্বে, এবং ককেশাস পর্বতমালা এবং কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণে। এটা পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর এবং উত্তরে উত্তর মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। ইউরাল পর্বতমালা, ইউরাল নদী, কাস্পিয়ান সাগর, কৃষ্ণসাগর এবং ভূমধ্যসাগর দ্বারা এশিয়া ও ইউরোপ মহাদেশ দুটি পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন। এছাড়া লোহিত সাগর ও সুয়েজ খাল এশিয়া মহাদেশকে আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সংকীর্ণ বেরিং প্রণালী একে উত্তর আমেরিকা মহাদেশ থেকে পৃথক করেছে। উল্লেখ্য, বেরিং প্রণালীর একদিকে অবস্থান করছে এশিয়া মহাদেশের অন্তর্গত রাশিয়ার উলেনা এবং অপর পাশে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অন্তর্গত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা। এই প্রণালীটির সংকীর্ণতম অংশটি মাত্র ৮২ কি•মি• চওড়া, অর্থাৎ বেরিং প্রণালীর এই অংশ হতে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দূরত্ব মাত্র ৮২ কি•মি•।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটি (ইংরেজি: Information and communications technology বা সংক্ষেপে ICT) সাধারণভাবে তথ্য প্রযুক্তির সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রকৃতপক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এক ধরনের একীভূত যোগাযোগব্যবস্থা এবং টেলিযোগাযোগ, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও তৎসম্পর্কিত এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার, মিডলওয়্যার তথ্য সংরক্ষণ, অডিও-ভিডিও সিস্টেম ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত এমন এক ধরনের ব্যবস্থা যার মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী খুব সহজে তথ্য গ্রহণ, সংরক্ষণ, সঞ্চালন ও বিশ্লেষণ করতে পারেন। প্রযুক্তিতে আইসিটি শব্দটির ব্যবহার শুরু করে একাডেমিক গবেষকরা ১৯৮০ সালের দিকে। কিন্তু শব্দটি জনপ্রিয়তা লাভ করে ১৯৯৭ সাল থেকে। স্টিভেনসন ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্য সরকারকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই শব্দটি উল্লেখ করেন, যা পরবর্তীতে ২০০০ সালে যুক্তরাজ্যের নতুন জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে সংযোজন করা হয়।বর্তমান সময়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দ্বারা একক তার বা একক লিঙ্ক সিস্টেমের মাধ্যমে টেলিফোন, অডিও-ভিজুয়াল ও কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সমন্বয় প্রযুক্তিকে প্রকাশ করা হয়। একক লিঙ্ক সিস্টেমের মাধ্যমে টেলিফোন, অডিও-ভিজুয়াল ও কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সমন্বয়ের ফলে বিশাল অঙ্কের অর্থনৈতিক খরচ কমে গিয়েছে।
মানব পরিবারের সকল সদস্যের জন্য সার্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার যেটা তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। মানুষ এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে। তবে এ চর্চা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারবে না। মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। এ অধিকার একই সাথে সহজাত ও আইনগত অধিকার। স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম দায়িত্ব হল এসব অধিকার রক্ষণাবেক্ষণ করা। যদিও অধিকার বলতে প্রকৃতপক্ষে কি বোঝানো হয় তা এখন পর্যন্ত একটি দর্শনগত বিতর্কের বিষয়। বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের বিষয়টি এখন আরো প্রকটভাবে অনুভূত হচ্ছে, যখন আমরা দেখছি যে, মানুষের অধিকারসমূহ আঞ্চলিক যুদ্ধ, সংঘাত, হানাহানির কারণে বার বার লংঘিত হচ্ছে। প্রথমত একটি পরিবার ও সমাজের কর্তারা তাদের অধিনস্তদের অধিকার রক্ষা করবে। দ্বিতীয়ত রাষ্ট্র এবং তৃতীয়ত আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা পালন করে থাকে।
কুরআন মজিদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ বা কোরআন (আরবি: القرآن আল্-কুর্'আন্[টী১]) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন। এটিকে আরবি শাস্ত্রীয় সাহিত্যের সর্বোৎকৃষ্ট রচনা বলে মনে করা হয়। কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবিতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা হয়েছে।
ফেইসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত) বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। এর মালিক হলো ফেসবুক ইনক। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
কাঁঠাল এর বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus heterophyllus (ইংরেজি নাম: Jackfruit) মোরাসিয়া পরিবারের আর্টোকার্পাস গোত্রের ফল। এক প্রকারের হলুদ রঙের সুমিষ্ট গ্রীষ্মকালীন ফল। এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফল হিসাবে সরকারীভাবে নির্ধারিত। বাংলাদেশের সর্বত্র কাঁঠাল গাছ পরিদৃষ্ট হয়। কাঁচা কাঁঠালকে বলা হয় এঁচোড়। কাঁঠাল গাছের কাঠ আসবাবপত্র তৈরীর জন্য সমাদৃত। কাঁঠাল পাতা বিভিন্ন প্রাণীর পছন্দের খাদ্য। তুলনামূলকভাবে বিশালাকার এই ফলের বহির্ভাগ পুরু এবং কান্টকাকীর্ণ, অন্যদিকে অন্তরভাগে একটি কাণ্ড ঘিরে থাকে অসংখ্য রসালো কোয়া। কাঁঠালের বৃহদাকার বীজ কোয়ার অভ্যন্তরভাগে অবস্থিত।
পরিবেশ (Environment) : কোনো ব্যবস্থার ওপর কার্যকর বাহ্যিক প্রভাবকসমূহের সমষ্টিকে পরিবেশ বলে। যেমন: চারপাশের ভৌত অবস্থা, জলবায়ু ও প্রভাব বিস্তারকারী অন্যান্য জীব ও জৈব উপাদান ইত্যাদির সামষ্টিক রূপই হলো পরিবেশ। পরিবেশের প্রতিটি উপাদানের দ্বারাই একজন ব্যক্তি বা প্রাণী এমনকি উদ্ভিদ প্রভাবিত হয়ে থাকে। এই প্রভাবকসমূহের মধ্যে থাকে প্রাকৃতিক এবং অপ্রাকৃতিক বা কৃত্রিম পারিপার্শ্বিক উপাদানসমূহ।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৫ — ১৫ নভেম্বর ২০২০) একজন ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা। অভিনেতা হিসেবে তিনি কিংবদন্তি, তবে আবৃত্তি শিল্পী হিসেবেও তার নাম অত্যন্ত সম্ভ্রমের সাথেই উচ্চারিত হয়। তিনি কবি এবং অনুবাদকও। বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ৩৪টি সিনেমার ভিতর ১৪টিতে অভিনয় করেছেন।সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমহার্স্ট স্ট্রীট সিটি কলেজে, সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় অপুর সংসার ছবিতে অভিনয় করেন। পরবর্তীকালে তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মত পরিচালকদের সঙ্গেও কাজ করেছেন। সিনেমা ছাড়াও তিনি বহু নাটক, যাত্রা, এবং টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। অভিনয় ছাড়া তিনি নাটক ও কবিতা লিখেছেন, নাটক পরিচালনা করেছেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি মধ্য আয়ের উন্নয়নশীল এবং স্থিতিশীল বাজার অর্থনীতি। এই অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে রয়েছে মধ্যমহারের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি, পরিব্যাপ্ত দারিদ্র্য, আয় বণ্টনে অসমতা, শ্রমশক্তির উল্লেখযোগ্য বেকারত্ব, জ্বালানী, খাদ্যশস্য এবং মূলধনী যন্ত্রপাতির জন্য আমদানী নির্ভরতা, জাতীয় সঞ্চয়ের নিম্নহার, বৈদেশিক সাহায্যের ওপর ক্রমহ্রাসমান নির্ভরতা এবং কৃষি খাতের সংকোচনের সঙ্গে সঙ্গে সেবা খাতের দ্রুত প্রবৃদ্ধি। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্প বিশ্বের বৃহত্তম শিল্পের মধ্যে অন্যতম। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দের আগে পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত পাট ও পাটজাত পণ্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এসময় পাট রপ্তানি করে দেশটি অধিকাংশ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করত। কিন্তু পলিপ্রোপিলিন পণ্যের আগমনের ফলে ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দ থেকেই পাটজাত দ্রব্যের জনপ্রিয়তা ও বাণিজ্য কমতে থাকে।বাংলাদেশের মাথাপিছু স্থূল দেশজ উৎপাদন স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭০-এর দশকে সর্বোচ্চ ৫৭% প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। তবে এ প্রবৃদ্ধি বেশিদিন টেকেনি। ১৯৮০-এর দশকে এ হার ছিলো ২৯% এবং ১৯৯০-এর দশকে ছিলো ২৪%।বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের মধ্যে ৩৯ তম এবং ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে (পিপিপি) ২৯ তম যা দক্ষিন এশিয়ায় ২য়। বাংলাদেশ গত এক দশক ধরে গড়ে ৬.৩ শতাংশ হার ধরে রেখে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং বর্তমানে বিশ্বের ৭ম দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতি। ক্রয়ক্ষমতার সমতা অনুসারে (পিপিপি) বর্তমানে বাংলাদেশে মাথাপিছু জিডিপি ৪,৬০০ মার্কিন ডলার। বিশ্বব্যাংকের ২০১৯ সালের তথ্যানুসারে বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তি ৭,০০,০৯,৩৫৩ জন।২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপি ছিল ৩১৭.৪৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ২০২০ সালে অনুমিত ৮৬০.৯১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৮, ২০১৯ সালে জিডিপির হার ছিল যথাক্রমে ৮ % এবং ৭.৯ %। ২০২০, ২০২১ সালে সম্ভাব্য হার হবে যথাক্রমে ২ % ও ৯.৫ %।বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আসে প্রধানত ৫ টি খাত (উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা, পরিবহন, নির্মাণ এবং কৃষি) থেকে এবং গত অর্থবছরে (২০১৮-১৯) জিডিপিতে ৬৭ শতাংশ (সাড়ে সাত লাখ কোটি টাকা) অবদান রেখেছে এই খাতগুলি । বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর তথ্যানুসারে গত অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮.১৫ %, স্থিরমূল্যে যা ১১,০৫,৭৯৩ কোটি টাকা।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমান্বয়ে কৃষির তুলনার 'সেবা' ও 'শিল্প' খাত থেকে বাংলাদেশ বেশি পরিমাণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করে আসছে। ২০১৮ সালের তথ্যানুসারে 'সেবা', 'শিল্প' ও কৃষি খাতে বাংলাদেশের জিডিপি যথাক্রমে ৫২.১১; ৩৩.৬৬ এবং ১৪.২৩%। বর্তমানে 'বিদেশি আয়' (রেমিট্যান্স) এবং 'তৈরি পোশাক শিল্প' (গার্মেন্টস) বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। যদিও তৈরি পোশাক শিল্প (রপ্তানি) থেকে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে থাকে কিন্তু একইসাথে বিদেশ থেকে এর কাঁচামাল ক্রয়ে খরচ থাকার কারণে এককভাবে অভিবাসন খাতই (রেমিট্যান্স) বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম উৎস। আবার, বাংলাদেশ রপ্তানির চেয়ে বেশি পরিমাণে আমদানি করার কারণে,বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে যে ঘাটতি ঘটে তা প্রধানত 'রেমিট্যান্স' এর মুদ্রা ব্যবহার করে মেটানো হয়ে থাকে। বাংলাদেশ 'প্রবাসী আয়ের' (রেমিট্যান্স) মাধ্যমেই প্রধানত তাদের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ) বাড়িয়ে থাকে। ২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বেশি রেমিট্যান্স আসা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৯ম।২০২০সালে বিশ্ব মন্দা স্বত্তেও বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয় ছিল ২৫০০ কোটি মার্কিনডলার যা ২০১৯ সালে ছিল ১৯০০ কোটি মার্কিনডলার । ২০১৮, ২০১৭, ২০১৬ ও ২০১৫ সালে রেমিট্যান্স এসেছে যথাক্রমে ১,৫৫৩, ১,৩৫৩, ১,৩৬১ ও ১,৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার।বাংলাদেশে প্রতিবছর ইদের পূর্বে বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স আসে এবং ২০২০ সাল থেকে সরকার প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এর উপর ২ শতাংশ হারে (১০০ টাকায় ২ টাকা) প্রণোদনা দিচ্ছে।বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৬ শতাংশ পূরণ করে 'তৈরি পোশাক শিল্প' (গার্মেন্টস) খাত যা বাংলাদেশের গত বছরের সর্বমোট রপ্তানির ৮৩ % (৩,০০০ কোটি টাকা)। বিশ্বে রপ্তানি আয় অর্জনের ক্ষেত্রে বৃহৎ রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ছিল ৪২ তম। ২০১৮ সালে বৈশ্বিক পোশাক বাজারে বাংলাদেশের অংশ ছিল ৬ শতাংশ এবং পোশাক রপ্তানিতে একক দেশ হিসেবে বিশ্বে ২য়। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপিতে পণ্য ও সেবা রপ্তানি খাতের অবদান ছিল ১৪.৬ %।
একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সহ পশ্চিমবঙ্গ তথা সমস্ত বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও সুপরিচিত। বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮) বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েকজন তরুণ শহীদ হন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো রফিক, জব্বার, শফিউল, সালাম, বরকত সহ অনেকেই। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।
পূর্বপদের বিভক্তি এর লোপে যে সমাস হয় এবং যে সমাসে পরপদের অর্থ প্রধানভাবে বোঝায় তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে। তৎপুরুষ সমাসের পূর্বপদে দ্বিতীয়া থেকে সপ্তমী পর্যন্ত যে কোনো বিভক্তি থাকতে পারে এবং পূর্বপদের বিভক্তি অনুসারে এদের নামকরণ করা হয়। যেমন: বিপদকে আপন্ন= বিপদাপন্ন। এখানে দ্বিতীয়া বিভক্তি 'কে' লোপ পেয়েছে বলে এর নাম দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস।
ভূগোল (ইংরেজি: Geography, যেটি এসেছে গ্রীক শব্দ “γεωγραφία”, বা, geographia, থেকে; যার শাব্দিক অর্থ: "পৃথিবী সম্পর্কিত বর্ণনা বা আলোচনা") হচ্ছে বিজ্ঞানের সেই শাখা যেখানে পৃথিবীর ভূমি, এর গঠন বিন্যাস, এর অধিবাসী সম্পর্কিত সমস্ত প্রপঞ্চ (phenomenon / ক্রিয়া-প্রক্রিয়া) সংক্রান্ত বিষয়াদি আলোচিত হয়। এই শব্দটি খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতকে গ্রিক জ্ঞানবেত্তা এরাটোসথেনিস (২৭৬–১৯৪ খ্রিস্টপূর্ব) প্রথম ব্যবহার করেন। ভূগোলে মানুষের বসবাসের জগৎ ও তার সাথে সম্পর্কিত সমস্ত বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপঃ ভৌত ভূগোলে জলবায়ু, ভূমি ও জল নিয়ে গবেষণা করা হয়; সাংস্কৃতিক ভূগোলে কৃত্রিম, মনুষ্যনির্মিত ধারণা যেমন দেশ, বসতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, পরিবহন, দালান, ও ভৌগোলিক পরিবেশের অন্যান্য পরিবর্তিত রূপ আলোচনা করা হয়। ভূগোলবিদেরা তাদের গবেষণায় অর্থনীতি, ইতিহাস, জীববিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব এবং গণিতের সহায়তা নেন।
{ কিং প্রথম বাংলা কিং পৃর্ব বাংলা বাঙ্গালী কোম্পানি ইতিহাস কিং বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট তাদের ইতিহাস কে বিতর্কিত করে 1943 সালে (1) মোহাম্মদ ছৈয়দ জহির উদ্দিন আহমদ বাবুর কিং বাবর খিলজি বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট (2) মোহাম্মদ ছৈয়দ ইখতিয়ার আহমদ কিং বখতিয়ার খিজির বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট (3) মোহাম্মদ ছৈয়দ সুলতান আহমদ কিং গেয়াস উদ্দিন বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট (4) মোহাম্মদ ছৈয়দ আজম আহমদ কিং আজম বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট (5) মোহাম্মদ ছৈয়দ জাহাঙ্গীর আহমদ কিং জাহাঙ্গীর বাহাদুর শা জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (6) মোহাম্মদ ছৈয়দ আকবর আহমদ কিং আলি আকবর বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট (7) মোহাম্মদ ছৈয়দ আল মামুদ কিং আহমদ বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট (8) মোহাম্মদ ছৈয়দ ঈশা আহমদ কিং ঈশা বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট ঈশাখাঁ (9)মোঃ ছৈয়দ মুশা আহমদ কিং মুশা মামুদ বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট (10) মোহাম্মদ ছৈয়দ জান আহমদ কিং জান মামুদ বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট (11) মোহাম্মদ ছৈয়দ আলি আহমদ কিং আলি মামুদ বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট (12) মোহাম্মদ ছৈয়দ আবদুল গনি কিং ডেংগর বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট (13) মোহাম্মদ ছৈয়দ আবদুর আজিজ কিং ইব্রাহিম বাহাদুর শা মুঘল সম্রাট ইব্রাহিমখাঁ সত্য কথা এখনো কিং আলি নগর কিং মাসদাইর নামে দলিল আছে সোনার বাংলাদেশের সরকার
গণিতের পরিভাষায় মৌলিক সংখ্যা (অথবা মৌলিক) হল এমন প্রাকৃতিক সংখ্যা যার কেবলমাত্র দুটো পৃথক উৎপাদক আছে: ১ এবং ঐ সংখ্যাটি নিজে। ১ এর চেয়ে বড় সকল সংখ্যা যারা মৌলিক না তাদেরকে যৌগিক সংখ্যা বলে। অর্থাৎ যে সংখ্যাকে অন্য কোন সংখ্যা দ্বারা ভাগ করা যায় না, তাকে মৌলিক সংখ্যা বলে।পাটিগণিতের মৌলিক উপপাদ্য এর মাধ্যমে সংখ্যাতত্ত্বে মৌলিকের ভূমিকা প্রবেশ করানো হয়। ১ এর উপরে যেকোনো মৌলিক সংখ্যাকে ১ বাদে তার আগ পর্যন্ত সকল মৌলিক সংখ্যার গুনফল হিসাবে প্রকাশ করা যায়। কোনো সংখ্যার মৌলিকতা নির্ণয়ের সহজ কিন্তু ধীর পদ্ধতি হচ্ছে পরীক্ষামূলক ভাগ, যাতে দেখতে হয় সংখ্যা n, ২ থেকে শুরু করে n এর বর্গমূল পর্যন্ত কোনো দুইটি সংখ্যার গুনফল কিনা। পরীক্ষামূলক ভাগের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরি পদ্ধতি হচ্ছে মিলার-রাবিন মৌলিকতা পরীক্ষা যা দ্রুত কিন্তু সামান্য সম্ভাবনা থাকে ভুলের এবং একেএস মৌলিকতা পরীক্ষা, যেটাতে সবসময়ে সঠিক উত্তর আসে বহুঘাত সময়ে, কিন্তু অনেক ধীর। বিশেষ রুপের মৌলিক সংখ্যার জন্য দ্রুতগতির পদ্ধতি আছে, যেমন মার্সেন সংখ্যাদের জন্য। ডিসেম্বর ২০২০-এর হিসাব অনুযায়ী, সর্ববৃহৎ মৌলিক সংখ্যাতে ২৩২৪৯২৫ টি অঙ্ক আছে। প্রথম ছাব্বিশটি মৌলিক সংখ্যা হল:
প্লাস্টিক দূষণ হল পরিবেশ কর্তৃক প্লাস্টিক পদার্থের আহরণ যা পরবর্তীতে যে বন্যপ্রাণ, বন্যপ্রাণ আবাসস্থল, এমনকি মানবজাতীর ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে৷ আকারের উপর ভিত্তি করে, মাইক্রো-, মেসো-, অথবা ম্যাক্রোবর্জ্য এই তিনভাগে প্লাস্টিক দূষণকে শ্রেণীকরণ করা হয়। নিয়মিত প্লাস্টিক পদার্থের ব্যবহার প্লাস্টিক দূষণের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে৷ পলিথিন ব্যাগ, কসমেটিক প্লাস্টিক, গৃহস্থালির প্লাস্টিক, বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যের বেশিরভাগই পুনঃচক্রায়ন হয় না৷ এগুলো পরিবেশে থেকে বর্জ্যের আকার নেয়৷ মানুষের অসচেতনতাই প্লাস্টিক দূষণের প্রধান কারণ ৷ প্লাস্টিক এমন এক রাসায়নিক পদার্থ যা পরিবেশে পচতে অথবা কারখানায় পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ করতে প্রচুর সময় লাগে ৷ তাই একে "অপচ্য পদার্থ" হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। তাই প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে ৷ সাধারনত উদ্ভিদকূল, জলজ প্রাণী, দ্বীপ অঞ্চলের প্রাণীরা প্লাস্টিক বর্জ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে৷ প্লাস্টিক বর্জ্য ঐসকল প্রাণীর বাসস্থান, খাদ্য সংগ্রহের স্থান ও উদ্ভিদের খাদ্য গ্রহণের পথে বাধার সৃষ্টি করে। শুধুমাত্র উদ্ভিদ বা জলজ প্রাণী নয়, মানুষ প্লাস্টিক দূষণের কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ৷ থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণের জন্য প্লাস্টিক দূষণ পরোক্ষভাবে দায়ী৷ শুধুমাত্র আমেরিকাতে প্রতিবছর ৫ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহৃত হয় ৷ এগুলোর মধ্যে মাত্র ২৪ শতাংশ পুনঃচক্রায়ন হয়ে থাকে ৷ অন্য ৩.৮ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য আকারে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়৷ বর্তমানে বিভিন্ন দেশে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার কমাতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে ৷ বাংলাদেশেও পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
নারীর প্রতি সহিংসতা বা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বা লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা এবং যৌনতা ও লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা হচ্ছে সহিংস অপরাধগুলো প্রধাণত বা কেবলই নারী বা বালিকাদের উপরেই করা হয়। এরকম সহিংসতাকে প্রায়ই ঘৃণাপূর্বক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়, যা নারী বা বালিকাদের উপর করা হয় কেননা তারা নারী। নারীর প্রতি সহিংসতার খুব লম্বা ইতিহাস রয়েছে, যদিও এরকম সহিংসতার মাত্রা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ছিল, এমনকি আজও বিভিন্ন সমাজে এগুলোর মাত্রা ও ঘটনার ধরন বিভিন্ন হয়। এরকম সহিংসতাকে প্রায়ই নারীকে সমাজে বা আন্তঃব্যক্তি সম্পর্কে অধীনস্ত করার কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ব্যক্তি তার অধিকারপ্রাপ্তির বোধ, উচ্চস্থানের বোধ, নারীবিদ্বেষ, বা নিজের সহিংস প্রকৃতির জন্য নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করতে পারেন।
নিখিল ভারত মুসলিম লীগ (উর্দু: : مسلم لیگ), ১৯০৬ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক দল যা ব্রিটিশ ভারত এবং ভারত উপমহাদেশে মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান তৈরির পেছনে চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। ভারত এবং পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর লীগ সংখ্যালঘু বা ছোট দল হিসেবে ভারতে বিশেষ করে কেরালায় তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়, এবং বিভিন্ন সময় অন্যান্য দলের সাথে ঐক্যজোটে সরকার গঠন করে। পাকিস্তানে লীগ দেশের প্রথম সরকার গঠন করে, কিন্তু ১৯৫০ সালে সামরিক শাসনের কারণে দলতে ভাঙন দেখা দেয়। মুসলিম লীগের কিছু অংশ ১৯৪৭ থেকে পাকিস্তানের বেশির ভাগ জনগন শাসিত সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৬ সালে দলটি পুনরায় জীবিত হয় এবং ১৯৭৯ সালের সংসদীয় নির্বাচনে ১৪টি আসনে জয় লাভ করে। তখন থেকেই দলটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দল হিসেবে পরিণত হয়। ভারতবর্ষে মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণে এই দলটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই দলের বিশিষ্ট নেতাদের মধ্যে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, লিয়াকত আলি খান, খাজা নাজিমুদ্দিন, নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, শেরে বাংলা এ. কে.
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রায় প্রতিটি কাজের সাথেই মাপ-জোখের ব্যাপারটি জড়িত। এছাড়া বিভিন্ন গবেষণার ক্ষেত্রে সূক্ষ্ম মাপ-জোখের প্রয়োজন হয়। পদার্থবিজ্ঞানের প্রায় সকল পরীক্ষণেই পদার্থের পরিমাণ, বলের মান, অতিবাহিত সময়, শক্তির পরিমাণ ইত্যাদি জানতে হয়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এ মাপ-জোখের বিষয়টাকে বলা হয় পরিমাপ।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলাকে রাজধানী করে অস্থায়ী সরকার গঠিত হয় ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল। ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমান মুজিবনগর)শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের জনগণের প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী সংগঠন ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় এবং এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ সহায়তাকারী রাষ্ট্র ভারতের সরকার ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক রক্ষায় এই সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। এই সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ প্রবল যুদ্ধে রূপ নেয় এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত হয়।ফলে পৃথিবীর বুকে নতুন একটি মানচিএের সূচনা হয়।
গণতন্ত্র বলতে কোনও জাতিরাষ্ট্রের (অথবা কোনও সংগঠনের) এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝায় যেখানে নীতিনির্ধারণ বা সরকারি প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিক বা সদস্যের সমান ভোটাধিকার থাকে। গণতন্ত্রে আইন প্রস্তাবনা, প্রণয়ন ও তৈরীর ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের অংশগ্রহণের সমান সু্যোগ রয়েছে, যা সরাসরি বা নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে হয়ে থাকে। "গণতন্ত্র" পরিভাষাটি সাধারণভাবে একটি রাজনৈতিক রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হলেও অন্যান্য সংস্থা বা সংগঠনের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হতে পারে, যেমন বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রমিক ইউনিয়ন, রাষ্ট্র-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।
দর্শন, ইংরেজিতে ফিলোসফি (philosophy) (গ্রিক ভাষা φιλοσοφία, ফিলোসোফিয়া, আক্ষরিকভাবে "জ্ঞানের প্রতি ভালবাসা") হলো অস্তিত্ব, জ্ঞান, মূল্যবোধ, কারণ, মন এবং ভাষা সম্পর্কে সাধারণ এবং মৌলিক প্রশ্নগুলির অধ্যয়ন। জগৎ, জীবন, মানুষের সমাজ, তার চেতনা এবং জ্ঞানের প্রক্রিয়া প্রভৃতি মৌল বিধানের আলোচনাকেও দর্শন বলা হয়। মানুষের সামাজিক চেতনার বিকাশের একটা পর্যায়েই মাত্র মানুষের পক্ষে বিশ্লেষণী দৃষ্টি নিয়ে জগৎ এবং জীবন সম্পর্কে চিন্তা করা সম্ভব হয়েছে। মানুষ তার নিজের উদ্ভব মুহূর্ত থেকেই চিন্তার এরূপ ক্ষমতা দেখাতে সক্ষম ছিল না। মানুষের চেতনার বিকাশের একটা স্তরে মানুষ তার পরিবেশ সম্পর্কে চিন্তা করতে আরম্ভ করে। নিজের জীবনকে অধিকতর নিশ্চিত করে রক্ষা করার প্রয়োজনে মানুষ প্রকৃতি জগতের রহস্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করে। প্রকৃতি, জগৎ এবং পরবর্তীকালে মানুষের নিজের দেহ এবং চেতনা সম্পর্কেও সে চিন্তা করতে শুরু করে।আদিকালে বিশ্বজগৎ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের পরিধি খুব অধিক ছিল না। দর্শনই আদি জ্ঞানের মূল ভাণ্ডার। জগৎ ও জীবনের প্রত্যেকটি সমস্যা মানুষের কাছে প্রশ্নাকারে উত্থাপিত হয়। যে প্রশ্নই উপস্থিত হোক না কেন, মানুষ তার একটা জবাব দিয়ে প্রকৃতিকে বশ করার চেষ্টা করেছে। তাই আদি দর্শন একদিকে যেমন সমস্ত জ্ঞানের ভাণ্ডার তেমনি আবার তার মধ্যে সমস্যার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষার ভিত্তিতে সমাধানের বদলে কাল্পনিক সমাধানের সাক্ষাৎ অধিক মেলে। কালক্রমে মানুষের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পুরাতন দার্শনিক কল্পনা বাস্তব জীবনে ভিত্তিহীন প্রমাণিত হলে তার স্থানে অধিকতর সঠিক সমাধান আবিষ্কৃত হতে থাকে। এইভাবে অধিকতর বাস্তব এবং সুনির্দিষ্ট আলোচনা ভিত্তিতে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বিকশিত হতে থাকে। পূর্বে প্রকৃতি, পদার্থ, সমাজ, চেতনা, যুক্তি, অর্থনীতি, ধর্ম সবই দর্শনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কালক্রমে তাদের প্রত্যেকে এক একটি ভিন্ন বিজ্ঞান বা আলোচনার শাখায় রূপান্তরিত হতে থাকে। এই বিকাশের পরিণামে বর্তমানে দর্শন বলতে কেবলমাত্র কল্পনার উপর নির্ভরশীল কোনো বিষয় আর অবশিষ্ট নেই। তাই দর্শনের প্রাচীন সংজ্ঞা এবং তার বর্তমান পরিস্থিতি এক নয়। সুনির্দিষ্টভাবে মানুষের জ্ঞান বিকশিত হওয়ার পরেও দর্শনকে অনেকে কল্পনার মধ্যে আবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। এই প্রয়াসে দর্শন জীবনের বাস্তব সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কশূণ্য হয়ে পড়ে। যেখানে প্রাচীনকালে জীবনের সমস্যাই দর্শনের বিকাশ ঘটিয়েছে সেখানে আধুনিককালের এরূপ প্রয়াস দর্শনকে জীবনের সঙ্গে সম্পর্কশূণ্য অবাস্তব কল্পনায় পর্যবসিত করেছে। দর্শনের এই সংকটের সুস্পষ্ট নির্দেশ দেন ঊনবিংশ শতকে কার্ল মার্কস। কার্ল মার্কস এবং ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস দর্শনকে জীবনের সঙ্গে যুক্ত করে বলেন যে, দর্শন হবে জীবন এবং জগৎকে বৈজ্ঞানিক এবং সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা। দর্শন হবে বৃহত্তম সংখ্যক মানুষের স্বার্থে জগৎ এবং সমাজকে পরিবর্তিত করার ভাবগত হাতিয়ার। দর্শন অবাস্তব কল্পনা নয়। দর্শন জগৎ ও জীবনের মৌলিক বিধানের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। আর এই ব্যাখ্যারই অপরনাম হচ্ছে দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের তত্ত্ব।দর্শন যেমন মানুষের আদি জ্ঞানভাণ্ডার, তেমনি তার ইতিহাস জ্ঞানের যে কোনো শাখার চেয়ে প্রাচীন। প্রাচীন গ্রিস, ভারত ও চীনে দর্শনের বিস্ময়কর বিকাশের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। কিন্তু দর্শনের বিকাশকে দেশ বা জনগোষ্ঠী হিসেবে বিভক্ত করার কোনো বিশেষ তাৎপর্য নেই। জীবন ও জগতের সমস্যা নিয়ে চিন্তাই হচ্ছে দর্শন।
তাজবিদ (আরবি:تجويد ) উচ্চারণ তাজউইদ। এর আভিধানিক অর্থ সৌন্দর্য মণ্ডিত করা বা যথাযথ ভাবে সম্পন্ন করা। যে বিষয়টিতে কুরআন মাজীদ সঠিক উচ্চারণে তিলাওয়াতের নিয়মাবলী উল্লেখ করা হয় তাকে তাজউইদ বলে৷ সঠিক উচ্চারণ মাখরাজ ও সিফাত অনুসারে উচ্চারণের উপর অধিক নির্ভর করে৷ তাজউইদ অনুসারে কুরআন তিলাওয়াত করা ওয়াজিব (আবশ্যক)৷ তাজউইদ অনুসারে উচ্চারণ না করলে সাধারণত অর্থ বিকৃত হয়ে যায়৷ তাজউইদের উদ্দেশ্য হলো কুরআন মাজিদের প্রত্যেকটি হরফকে যথাযথ ভাবে পাঠ করা, কুরআন মাজীদের শব্দ ও হরফগুলো পাশাপাশি আসার ফলে যে সকল কায়দার (গুন্নাহ, পুর, বারিক, মাদ্দ, ইত্তেকায়ে সাকিনাইন, ওয়াকফ) সৃষ্টি হয় তা সঠিকভাবে পাঠ করা, কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করার সময় অতিরিক্ত কোনোকিছু যাতে যুক্ত না হয়, প্রয়োজনীয় কিছু জাতে বাদ না পড়ে, কুরআন মাজীদের বিশেষ আয়াত (সিজদাহ, সাকতাহ, এমালাহ, তাসহিল) সম্পর্কে আলোচনা সর্বোপরি কুরআন মাজীদকে সঠিকভাবে তিলাওয়াত এর জন্য সম্ভাব্য সকল আলোচনা।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বলতে পৃথিবীর চারপাশে ঘিরে থাকা বিভিন্ন গ্যাস মিশ্রিত স্তরকে বোঝায়, যা পৃথিবী তার মধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা ধরে রাখে। একে আবহমণ্ডল-ও বলা হয়। এটি সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করে। এটি তাপ ধরে রাখার মাধ্যমে (গ্রীনহাউজ প্রতিক্রিয়া) ভূপৃষ্টকে উত্তপ্ত করে ও দিনের তুলনায় রাতের তাপমাত্রা হ্রাস করে।
জ্যামিতি গণিতের একটি শাখা যেখানে আকার ও আকৃতি এবং এতদসম্পর্কিত বিভিন্ন আঙ্গিকের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করা হয়। জ্যামিতিকে স্থান বা জগতের বিজ্ঞান হিসেবে গণ্য করা যায়। পাটিগণিতে যেমন গণনা সংক্রান্ত আমাদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করা হয়, তেমনি জ্যামিতিতে স্থান বা জগৎ নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা ও ব্যাখ্যা দেয়া হয়। প্রাথমিক জ্যামিতিকে কাজে লাগিয়ে দ্বি-মাত্রিক বিভিন্ন আকারের ক্ষেত্রফল ও পরিসীমা এবং ত্রিমাত্রিক বস্তুসমূহের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল ও আয়তন নির্ণয় করা সম্ভব।
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বলতে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে যে অস্থায়ী কিংবা স্থায়ী নেতিবাচক এবং ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তার যাবতীয় চুলচেরা বিশ্লেষণকে বোঝাচ্ছে। ইউএনএফসিসিসি (UNFCCC) বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে মানুষের কারণে সৃষ্ট, আর জলবায়ুর বিভিন্নতাকে অন্য কারণে সৃষ্ট জলবায়ুর পরিবর্তন বোঝাতে ব্যবহার করে। কিছু কিছু সংগঠন মানুষের কারণে সৃষ্ট পরিবর্তনসমূহকে মনুষ্যসৃষ্ট (anthropogenic) জলবায়ুর পরিবর্তন বলে। তবে একথা অনস্বীকার্য যে, বিশ্বব্যাপি জলবায়ুর পরিবর্তন শুধুমাত্র প্রাকৃতিক কারণেই নয়, এর মধ্যে মানবসৃষ্ট কারণও সামিল। এই নিবন্ধে "বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন" বলতে শ্রেফ প্রাকৃতিক কারণে জলবায়ু পরিবর্তনকে বোঝানো হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের বিপর্যয়ের এই ঘটনাকে বাংলাদেশ সরকারের বাংলাদেশ বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নব্বইয়ের দশকে প্রণীত ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট এ্যাকশন প্ল্যান (NEMAP)-এ দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কোনো দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সত্যিই পড়ছে কিনা, তা চারটি মানদন্ডে বিবেচনা করা হয়: ১. জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ ২. কোথায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেশি হচ্ছে ৩.
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] (শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ – ৪ জুলাই ১৯০২) নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত (বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রি়য়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...," ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা, যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তার রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?
ঢাকা (ইংরেজি: Dhaka, পূর্বে Dacca) দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি দেশটির ঢাকা বিভাগের প্রধান শহর। ভৌগোলিকভাবে এটি বাংলাদেশের মধ্যভাগে বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে একটি সমতল এলাকাতে অবস্থিত। ঢাকা একটি অতিমহানগরী বা মেগাসিটি; ঢাকা মহানগরী এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ১০ লক্ষ। জনসংখ্যার বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার ২য় বৃহত্তম শহর (দিল্লির পরেই) এবং সমগ্র বিশ্বের ৭ম বৃহত্তম শহর। জনঘনত্বের বিচারে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ মহানগরী; ৩০৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই শহরে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ২৩ হাজার লোকের বাস।ঢাকা শহরটি "মসজিদের শহর" নামেও সুপরিচিত। এখানে ১০০০-রও বেশি মসজিদ আছে। এছাড়া ঢাকা "রিক্সার রাজধানী" নামেও পরিচিত। এই শহরে রোজ প্রায় ৫ লক্ষ রিকশা চলাচল করে। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান সংস্কৃতি, শিক্ষা ও বাণিজ্যকেন্দ্র।ঢাকা শহরের জলবায়ু ক্রান্তীয় আর্দ্র ও শুষ্ক প্রকৃতির। গড় তাপমাত্রা এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ প্রায় ৩৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন প্রায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ঢাকা শহরে বর্ষাকাল, সেসময় প্রতি মাসে গড়ে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়।সপ্তদশ শতাব্দীতে পুরানো ঢাকা মুঘল সাম্রাজ্যের সুবহে বাংলা (বাংলা প্রদেশ) এর প্রাদেশিক রাজধানী ছিলো। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে এই শহর জাহাঙ্গীর নগর নামে পরিচিত ছিলো। বিশ্বব্যাপী মসলিন বাণিজ্যের একটি কেন্দ্র ছিলো ঢাকা এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীগণ এখানে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আসতেন। ঢাকাতে বিশ্বের সেরা মসলিন কাপড় উৎপাদিত হতো। যদিও আধুনিক ঢাকা শহরের বিকাশ ঘটে ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ শাসন আমলে, এই সময় নবাবগণ ঢাকা শাসন করতেন। এই সময় কলকাতার পরেই ঢাকা বাংলা প্রেসিডেন্সির দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী হয়ে ওঠে। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পরে ঢাকা নবগঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পরে ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসনিক রাজধানীতে পরিণত হয়। ১৯৫০-১৯৬০ সালের মধ্যে এই শহর বিভিন্ন সামাজিক, জাতীয়তাবাদী ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে ঢাকা “স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের রাজধানী” ঘোষিত হয়। ইতিপূর্বে সামরিক আইন বলবৎ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা, সামরিক দমন, যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তাণ্ডবলীলার মতো একাধিক অস্থির ঘটনার সাক্ষী হয় এই শহর।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) হল কুরআনের একটি আয়াত (বাক্য) বা দোয়া, যার বাংলা অর্থ হল "আমরা তো আল্লাহরই এবং আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী"। কথাটা সাধারণত মুসলমানরা তাদের বেদনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে উচ্চারণ করে, বিশেষ করে যখন একজন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে।