The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪ - ২৩ অক্টোবর ২০১২) বিশ শতকের শেষভাগে সক্রিয় একজন প্রথিতযশা বাঙালি সাহিত্যিক। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর পূর্ববর্তী চার দশক তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসাবে সর্ববৈশ্বিক বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। বাংলাভাষী এই ভারতীয় সাহিত্যিক একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসাবে অজস্র স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন। তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার জীবনানন্দ-পরবর্তী পর্যায়ের অন্যতম প্রধান কবি। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক ও রোমান্টিক। তার কবিতার বহু পঙ্ক্তি সাধারণ মানুষের মুখস্থ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় "নীললোহিত", "সনাতন পাঠক", "নীল উপাধ্যায়" ইত্যাদি ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভূ-রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মায়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ই মে, ১৮৬১ - ৭ই আগস্ট ১৯৪১ ; ২৫শে বৈশাখ, ১২৬৮ - ২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত আমার সোনার বাংলা ও জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে গানদুটি যথাক্রমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সংগীত।
পাণ্ডব গোয়েন্দা হল ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় রচিত কাল্পনিক চরিত্র। এই গোয়েন্দাবাহিনী পাঁচজন কিশোর-কিশোরী নিয়ে গঠিত। এই দলে এক কুকুর আছে। দুঃসাহসী পাঁচটি ছেলেমেয়ে ও একটি কুকুর নিয়ে গঠিত পান্ডব গোয়েন্দারা নানারকম রোমাঞ্চকর অভিযান করে। কখোনো নিজেরাই ঘটনায় জড়িয়ে যায়, আবার কখোনো কারো সাহায্যার্থে তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে বিপদের মুখে। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এই দল গোয়েন্দাগিরি চালিয়েছে। পান্ডব গোয়েন্দা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭০ সালে মাসিক শুকতারা পত্রিকায়। তারপর আনন্দমেলা পুজো সংখ্যাতেও পান্ডব গোয়েন্দার উপন্যাস বেরিয়েছে। পান্ডব গোয়েন্দার একাধিক ছোটগল্প ও উপন্যাস শিশু কিশোরদের কাছে সবিশেষ জনপ্রিয়তা পায়।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) উনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। তার প্রকৃত নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য প্রথম জীবনেই তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ বুৎপত্তি ছিল তার। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও অপরবোধ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন জনপ্রিয় শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয় সহ, একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা
কাজী নজরুল ইসলাম (২৫ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬; ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ – ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) বাঙালি কবি এবং পরবর্তী কালে বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য এবং তিনি ছিলেন বাঙালি মনীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ – দুই বাংলাতেই তার কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তার কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তার কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা হাতে তার প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তার প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে – কাজেই "বিদ্রোহী কবি", তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উভয় বাংলাতে প্রতি বৎসর উদযাপিত হয়ে থাকে।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারতীয় প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভূটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিষ্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিষ্টধর্ম ও ইসলাম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ মার্চ ১৯২০ - ১৫ আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা মুজিব, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার একজন অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি বাঙালির অধিকার রক্ষায় ব্রিটিশ ভারত থেকে ভারত বিভাজন আন্দোলন এবং পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি হিসাবে শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের "জাতির জনক" বা "জাতির পিতা" বলা হয়ে থাকে। তিনি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সভাপতি, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং পরবর্তীতে এদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জনসাধারণের কাছে তিনি শেখ মুজিব এবং শেখ সাহেব হিসাবে বেশি পরিচিত ছিলেন এবং তার উপাধি "বঙ্গবন্ধু"। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্তমান সভানেত্রী এবং বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলা উইকিপিডিয়া হল উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন পরিচালিত উইকিপিডিয়া নামক উন্মুক্ত অনলাইন বিশ্বকোষের বাংলা সংস্করণ। এই সংস্করণটি ২৭ জানুয়ারি ২০০৪ সালে প্রথম যাত্রা শুরু করে। ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত বাংলা উইকিপিডিয়াতে ৯৪,০৮২ টি নিবন্ধ সৃষ্টি করা হয়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ অনুযায়ী বাংলা উইকিপিডিয়ায় সর্বমোট ৪৫,০৯,৭৯৮ বার সম্পাদনা হয়েছে। ১,৫৩০ জন সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবক বাংলা উইকিপিডিয়ায় কাজ করছেন। ১২ জন প্রশাসক বিশ্বকোষটির প্রশাসনিক ব্যাপারগুলো দেখেন। এই বিশ্বকোষটিতে মোট ১০,৪৯৩টি ফাইল বা চিত্র আছে। বাংলা উইকিপিডিয়াতে বাংলা লিপিতে লিখনের একটি সরঞ্জাম রয়েছে, যার মাধ্যমে কোন লাতিন বর্ণমালাভিত্তিক কি-বোর্ড ব্যবহার করে উচ্চারণভিত্তিক (ফোনেটিক) উপায়ে বাংলা টাইপ করা যায়। বহিঃস্থ কোন সফটওয়্যার ডাউনলোড করার প্রয়োজন পড়ে না।২০১০ সালে মোবাইল ফোনের জন্য বাংলা উইকিপিডিয়ার মোবাইল সংস্করণ চালু হয়। ২০১৮ সালে সারা বিশ্ব থেকে প্রায় ১৯ কোটিবার এবং প্রতিদিন গড়ে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৬৭৮ বার বাংলা উইকিপিডিয়া দেখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকান্ড সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সেনা শাখা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
করোনাভাইরাস বলতে ভাইরাসের একটি শ্রেণিকে বোঝায় যেগুলি স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদেরকে আক্রান্ত করে। মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শ্বাসনালীর সংক্রমণ ঘটায়। এই সংক্রমণের লক্ষণ মৃদু হতে পারে, অনেকসময় যা সাধারণ সর্দিকাশির ন্যায় মনে হয় (এছাড়া অন্য কিছুও হতে পারে, যেমন রাইনোভাইরাস), কিছু ক্ষেত্রে তা অন্যান্য মারাত্মক ভাইরাসের জন্য হয়ে থাকে, যেমন সার্স, মার্স এবং কোভিড-১৯। অন্যান্য প্রজাতিতে এই লক্ষণের তারতম্য দেখা যায়। যেমন মুরগির মধ্যে এটা উর্ধ্ব শ্বাসনালী সংক্রমণ ঘটায়, আবার গরু ও শূকরে এটি ডায়রিয়া সৃষ্টি করে। মানবদেহে সৃষ্ট করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়ানোর মত কোনো টিকা বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ আজও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে বৃটেন একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য। এই রাজ্যটি পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ,দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
সালমান শাহ (১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ - ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬) ছিলেন একজন বাংলাদেশী অভিনেতা ও মডেল। তার প্রকৃত নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। টেলিভিশন নাটক দিয়ে তার অভিনয় জীবন শুরু হলেও ১৯৯০-এর দশকে তিনি চলচ্চিত্রে অন্যতম জননন্দিত শিল্পী হয়ে উঠেন। ১৯৯৩ সালে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত কেয়ামত থেকে কেয়ামত মুক্তি পায়। একই ছবিতে নায়িকা মৌসুমী ও গায়ক আগুনের অভিষেক হয়। জনপ্রিয় এই নায়ক নব্বইয়ের দশকের বাংলাদেশে সাড়া জাগানো অনেক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি সর্বমোট ২৭টি চলচ্চিত্র অভিনয় করেন এবং সবকয়টিই ছিল ব্যবসাসফল। তিনি ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অকালে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যুবরণ করেন।
নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা বা মির্জা মুহাম্মাদ সিরাজ-উদ-দৌলা (১৭৩২ – ১৭৫৭) বাংলা-বিহার-ওড়িশার শেষ স্বাধীন নবাব। পলাশীর যুদ্ধে তাঁর পরাজয় ও মৃত্যুর পরই ভারতবর্ষে ১৯০ বছরের ইংরেজ শাসনের সূচনা হয়।সিরাজউদ্দৌলা তার নানা নবাব আলীবর্দী খানের কাছ থেকে ২৩ বছর বয়সে ১৭৫৬ সালে বাংলার নবাবের ক্ষমতা অর্জন করেন। তার সেনাপতি মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ২৩ জুন ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন। রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসনভার গ্রহণ করে।
যোনি বা যোনিপথ বা যৌননালী বা জনননালী (লাতিন: ভ্যাজাইনা) হলো স্ত্রী যৌনাঙ্গ, যা জরায়ু থেকে স্ত্রীদেহের বাইরের অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ফাইব্রোমাসকুলার (তন্তু-পেশিময়) নলাকার অংশ। মানুষ ছাড়াও অমরাবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী ও মারসুপিয়াল প্রাণীতে, যেমন ক্যাঙ্গারু অথবা স্ত্রী পাখি, মনোট্রিম ও কিছু সরীসৃপের ক্লোকাতে যোনি পরিদৃষ্ট হয়। স্ত্রী কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণীরও যোনি আছে, যা মূলত ওভিডাক্টের শেষ প্রান্ত।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামগুলোতেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের চতুর্থ ও বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
কাদম্বিনী বসু গঙ্গোপাধ্যায় (১৮ জুলাই, ১৮৬১-৩ অক্টোবর, ১৯২৩) ব্রিটিশ ভারতের প্রথম দুই জন নারী স্নাতকের একজন এবং ইউরোপীয় চিকিৎসাশাস্ত্রে শিক্ষিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নারী চিকিৎসক। উনিশ শতকের শেষভাগে তিনি পাশ্চাত্য চিকিৎসায় ডিগ্রী অর্জন করেন এবং আনন্দীবাঈ জোশীর সাথে তিনিও হয়ে ওঠেন ভারতের প্রথমদিককার একজন নারী চিকিৎসক।
বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্য নামে পরিচিত। আনুমানিক খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনার সূত্রপাত হয়। খ্রিষ্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত বৌদ্ধ দোহা-সংকলন চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আরও তিনটি গ্রন্থের সঙ্গে চর্যাগানগুলি নিয়ে সম্পাদিত গ্রন্থের নাম দেন " হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোহা "। মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্য ছিল কাব্যপ্রধান। হিন্দুধর্ম, ইসলাম ও বাংলার লৌকিক ধর্মবিশ্বাসগুলিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই সময়কার বাংলা সাহিত্য। মঙ্গলকাব্য, বৈষ্ণব পদাবলি, শাক্তপদাবলি, বৈষ্ণব সন্তজীবনী, রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবতের বঙ্গানুবাদ, পীরসাহিত্য, নাথসাহিত্য, বাউল পদাবলি এবং ইসলামি ধর্মসাহিত্য ছিল এই সাহিত্যের মূল বিষয়। বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার সূত্রপাত হয় খ্রিষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার নবজাগরণের যুগে কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে বাংলা সাহিত্যে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। এই সময় থেকে ধর্মীয় বিষয়বস্তুর বদলে মানুষ, মানবতাবাদ ও মানব-মনস্তত্ত্ব বাংলা সাহিত্যের প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর বাংলা সাহিত্যও দুটি ধারায় বিভক্ত হয়: কলকাতা-কেন্দ্রিক পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য ও ঢাকা-কেন্দ্রিক বাংলাদেশের সাহিত্য। বর্তমানে বাংলা সাহিত্য বিশ্বের একটি অন্যতম, সমৃদ্ধ সাহিত্যধারা হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।
পৃথিবী সূর্য থেকে দূরত্ব অনুযায়ী তৃতীয়, সর্বাপেক্ষা অধিক ঘনত্বযুক্ত এবং সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে পঞ্চম বৃহত্তম গ্রহ। এটি সৌরজগতের চারটি কঠিন গ্রহের অন্যতম। পৃথিবীর অপর নাম "বিশ্ব" বা "নীলগ্রহ"। ইংরেজি ভাষায় পরিচিত আর্থ (Earth) নামে, গ্রিক ভাষায় পরিচিত গাইয়া (Γαῖα) নামে, লাতিন ভাষায় এই গ্রহের নাম "টেরা (Terra)।
কলকাতা বা কোলকাতা ([kolkata] (শুনুন) ইংরেজি: Kolkata; আদি নাম: কলিকাতা; পুরনো ইংরেজি নাম: Calcutta) হল ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক) ৬০ থেকে ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বই ও নতুন দিল্লির ঠিক পরেই।সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।
মুহাম্মাদ (২৯ আগস্ট ৫৭০ - ৮ জুন ৬৩২; আরবি উচ্চারণ শুনতে ক্লিক করুন محمد মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত; তুর্কি : মুহাম্মেদ), পূর্ণ নাম : আবু আল-কাসিম মুহাম্মাদ ইবনে ʿআবদুল্লাহ ইবনে ʿআবদুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম (ابو القاسم محمد ابن عبد الله ابن عبد المطلب ابن هاشم) হলেন ইসলামের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব এবং ইসলামী বিশ্বাস মতে আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সর্বশেষ নবী, (আরবি: النبي আন-নাবিয়্যু), তথা "বার্তাবাহক" (আরবি : الرسول আর-রাসুল), যার উপর ইসলামী প্রধান ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অমুসলিমদের মতে তিনি ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সফলতা।আনুমানিক ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে (হস্তিবর্ষ) মক্কা নগরীতে জন্ম নেওয়া মুহাম্মাদ মাতৃগর্ভে থাকাকালীন পিতা হারা হন শিশু বয়সে মাতাকে হারিয়ে এতিম হন এবং প্রথমে তার পিতামহ আবদুল মুত্তালিব ও পরে পিতৃব্য আবু তালিবের নিকট লালিত পালিত হন। হেরা পর্বতের গুহায় ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুওয়াত লাভ করেন। জিবরাঈল ফেরেশতা এই পর্বতের গুহায় আল্লাহর তরফ থেকে তার নিকট ওহী নিয়ে আসেন। তিন বছর পর ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে ওহী প্রচার করেন, এবং ঘোষণা দেন "আল্লাহ্ এক" ও তার নিকট নিজেকে সঁপে দেওয়ার মধ্যেই জাগতিক কল্যাণ নিহিত, এবং ইসলামের অন্যান্য নবীদের মত তিনিও আল্লাহর প্রেরিত দূত।মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মুহাম্মাদের নিকট আসা ওহীসমূহ কুরআনের আয়াত হিসেবে রয়ে যায় এবং মুসলমানরা এই আয়াতসমূহকে "আল্লাহর বাণী" বলে বিবেচনা করেন। এই কুরআনের উপর ইসলাম ধর্মের মূল নিহিত। কুরআনের পাশাপাশি হাদিস ও সিরাত (জীবনী) থেকে প্রাপ্ত মুহাম্মাদের শিক্ষা ও অনুশীলন (সুন্নাহ) ইসলামী আইন (শরিয়াহ) হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
তুরস্ক ( (শুনুন); তুর্কী: Türkiye), সরকারী নাম প্রজাতন্ত্রী তুরস্ক (Turkish: Türkiye Cumhuriyeti বা ত্যুর্কিয়ে জুম্হুরিয়েতি ),পশ্চিম এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। তুরস্কের প্রায় পুরোটাই এশীয় অংশে, পর্বতময় আনাতোলিয়া (তুর্কি: Antalya আন্তালিয়া) বা এশিয়া মাইনর উপদ্বীপে পড়েছে। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা আনাতোলিয়াতেই অবস্থিত। তুরস্কের বাকী অংশের নাম পূর্ব বা তুর্কীয় থ্রাস এবং এটি ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় অবস্থিত। এই অঞ্চলটি উর্বর উঁচু নিচু টিলাপাহাড় নিয়ে গঠিত। এখানে তুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তানবুল অবস্থিত। সামরিক কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তিনটি জলপথ এশীয় ও ইউরোপীয় তুরস্ককে পৃথক করেছে --- মার্মারা সাগর, এবং বসফরাস প্রণালী ও দার্দানেলেস প্রণালী। এই তিনটি জলপথ একত্রে কৃষ্ণ সাগর থেকে এজীয় সাগরে যাবার একমাত্র পথ তৈরি করেছে।তুরস্ক মোটামুটি চতুর্ভুজাকৃতির। এর পশ্চিমে এজীয় সাগর ও গ্রিস; উত্তর-পূর্বে জর্জিয়া, আর্মেনিয়া ও স্বায়ত্বশাসিত আজারবাইজানি প্রজাতন্ত্র নাখচিভান; পূর্বে ইরান; দক্ষিণে ইরাক, সিরিয়া ও ভূমধ্যসাগর। তুরস্কের রয়েছে বিস্তৃত উপকূল, যা দেশটির সীমান্তের তিন-চতুর্থাংশ গঠন করেছে।
প্রণব কুমার মুখোপাধ্যায় (বাংলা উচ্চারণ: [প্রণব মুখার্জি] (শুনুন);(১১ ডিসেম্বর ১৯৩৫ — ৩১ আগস্ট ২০২০) ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি (জুলাই, ২০১২-এ কার্যভার গ্রহণকারী) ছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক কর্মজীবন ছয় দশকব্যাপী। তিনি ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা। বিভিন্ন সময়ে ভারত সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন। ২০১২ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে প্রণব মুখোপাধ্যায় ছিলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী ও কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় সমস্যা-সমাধানকারী নেতা।
হস্তমৈথুন বা স্বমেহন (ইংরেজি: Masturbation) একরূপ যৌনক্রিয়া যাতে একজন ব্যক্তি কোনো সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অংশগ্রহণ ব্যতিরেকেই যৌনসুখ অর্জনের চেষ্টা করে। আত্মমৈথুন ও স্বকাম এর সমার্থক শব্দ। এ যৌনক্রিয়ায় প্রধানত হাতের সাহায্যে পুরুষ তার লিঙ্গ এবং নারী তার যোনী ঘর্ষণ করে বলে একে সচরাচর হস্তমৈথুন হিসেবেও উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
যৌনসঙ্গম (যৌনমিলন, সঙ্গম, মৈথুন, রতিক্রিয়া, রতিমিলন; যৌন সংসর্গ, যৌন সহবাস, সহবাস ইত্যাদি) হচ্ছে একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা দ্বারা মূলত যৌনআনন্দ বা প্রজনন বা উভয় ক্রিয়ার জন্য একজন পুরুষের উত্থিত শিশ্ন একজন নারীর যোনিপথে অনুপ্রবেশ করানো ও সঞ্চালনা করাকে বোঝায়। অন্যান্য অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গমের মধ্যে রয়েছে পায়ুসঙ্গম (লিঙ্গ দ্বারা মলদ্বার অনুপ্রবেশ), মুখমৈথুন, অঙ্গুলিসঞ্চালন (আঙ্গুল দ্বারা যৌন অনুপ্রবেশ), যৌনখেলনা ব্যবহার দ্বারা অনুপ্রবেশ (বন্ধনীযুক্ত কৃত্রিম শিশ্ন)। এই সকল কার্যক্রম মূলত মানবজাতি কর্তৃক দুই বা ততোধিকের মধ্যেকার শারীরিক ও মানসিক অন্তরঙ্গতা জনিত পরিতোষ লাভের জন্য এবং সাধারণত মানব বন্ধনে ভূমিকা রাখতে সম্পাদিত হয়ে থাকে।যৌনসঙ্গম বা অপরাপর যৌনকর্ম কীভাবে সংজ্ঞায়িত হয় তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, যা যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর উপর প্রভাব রাখতে পারে। যদিও যৌনসঙ্গম, নির্দিষ্টভাবে মৈথুন বলতে সাধারণত শিশ্ন-জরায়ুজ অনুপ্রবেশ ও সন্তান উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করা হয়, এর দ্বারা সাধারণভাবে অন্তর্ভেদী মুখমৈথুন ও বিশেষত শিশ্ন-পায়ুজ সঙ্গমকেও নির্দেশ করা হয়। এটি সাধারণত যৌন অনুপ্রবেশকে নির্দেশ করে, যেখানে অননুপ্রবেশকারী যৌনতাকে "বহির্সঙ্গম" নামে নামকরণ করা হয়, কিন্তু অনুপ্রবেশকারী যৌনকর্মকে যৌনসঙ্গম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যৌনতা বা ইংরেজি ভাষায় সেক্স, প্রায়শই যৌনসঙ্গমের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যবহৃত রূপ, যা দ্বারা যে কোন প্রকারের যৌনক্রিয়াকে বোঝানো হতে পারে। যেহেতু এসকল যৌনকর্মের সময়ে মানুষ যৌনবাহিত সংক্রমণের সংস্পর্শের ঝুঁকিতে থাকতে পারে, নিরাপদ যৌনচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও অনাভেদী যৌনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়ে থাকে।বিভিন্ন আইনি বিধিমালা যৌনসঙ্গমমের সামাজিক অনুমতিপ্রদানের জন্য বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতির মাধ্যমে বৈবাহিক রীতির প্রবর্তন, প্রচলন ও সমর্থন করেছে এবং বেশ কিছু যৌনকর্মের বিপরীতে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনকে স্থান দিয়েছে, যেমন বিবাহপূর্ব ব্যভিচার ও বিবাহপরবর্তী পরকীয়া, পায়ুকাম, পশুকাম, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনচর্চা ও অজাচার। ধর্মীয় বিশ্বাসও যৌনসঙ্গমসহ অন্যান্য যৌনাচার বিষয়ক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা পালন করে, যেমন কুমারীত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত, অথবা আইনি বা সরকারী নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়াবলি। বিভিন্ন ধর্মভেদে ও একই ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণীভেদে যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও কিছু বিষয়ে অভিন্নতা রয়েছে, যেমন ব্যভিচারের নিষেধাজ্ঞা।
বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকা
বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকা হচ্ছে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে এমন ব্যাংকসমূহকে একটি তালিকা। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হলো বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহকে মূলত দুই শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছেঃ তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত ব্যাংক। ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৪২টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৩টি বিশেষায়িত ব্যাংক ও ৯টি বিদেশি ব্যাংকসহ বাংলাদেশে মোট তালিকাভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা ৬০টি এবং অ-তালিকাভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা ৫টি। প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশই সামাজিক ব্যবসার ধারণায় প্রতিষ্ঠিত হয় গ্রামীণ ব্যাংক নামক ক্ষুদ্রঋণ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, যা একটি বিশেষায়িত অতালিকাভুক্ত ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০০৬ সালে দারিদ্র বিমোচনে অবদান রাখায় গ্রামীণ ব্যাংক এবং মুহাম্মদ ইউনুস যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল ১৯৭১ সালে সংঘটিত তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের সশস্ত্র সংগ্রাম, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসাবে পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি নিধনে ঝাঁপিয়ে পড়লে একটি জনযুদ্ধের আদলে গেরিলাযুদ্ধ তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা ঘটে। ২৫ মার্চের কালো রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ঢাকায় অজস্র সাধারণ নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পুলিশ ও ই.পি.আর.-কে হত্যা করে এবং ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাপ্রাপ্ত দল আওয়ামী লীগ প্রধান বাঙালিদের তৎকালীন জনপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। পার্বত্য চট্টগ্ৰামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ৮ম পূৰ্ব বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-প্ৰধান মেজর জিয়াউর রহমান ও চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতা এম. এ.
সমতলীয় জ্যামিতির ভাষায় তিন বাহু দ্বারা সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রকে ত্রিভুজ বলা হয়। এটি একটি বহুভুজ, যার তিনটি ছেদচিহ্ন ও তিনটি প্রান্ত থাকে। দ্বি-মাত্রিক তলে ত্রিভুজের তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০ ° বা দুই সমকোণ। এক সময় কেবল ইউক্লিডীয় জ্যামিতিতেই ত্রিভুজ নিয়ে আলোচনা করা হত। কিন্তু নিকোলাই লোবাচেভস্কি সহ অন্যান্য জ্যামিতি বিশেষজ্ঞদের অবদানের ফলে অসমতলীয় জ্যামিতিতেও বর্তমানে ত্রিভুজ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ ধরনের তলে ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি দুই সমকোণ নয়। অথচ ইউক্লিডীয় জ্যামিতির মূল ভিত্তিই হচ্ছে এই ধারণাটি।
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] (শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ – ৪ জুলাই ১৯০২) নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত (বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রি়য়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...," ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা, যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তার রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) হল কুরআনের একটি আয়াত (বাক্য) বা দোয়া, যার বাংলা অর্থ হল "আমরা তো আল্লাহরই এবং আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী"। কথাটা সাধারণত মুসলমানরা তাদের বেদনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে উচ্চারণ করে, বিশেষ করে যখন একজন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে।
সুন্দরবন হলো বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলীর অন্যতম। গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত। সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি।। ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ রয়েছে ভারতের মধ্যে।
মুঘল বা মোগল সাম্রাজ্য (উর্দু: مغلیہ سلطنت, Mug̱ẖliyah Salṭanat, ফার্সি: گورکانیان, Gūrkāniyān)), ছিল ভারত উপমহাদেশের একটি সাম্রাজ্য। উপমহাদেশের অধিকাংশ অঞ্চলজুড়ে মুঘল সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। মুঘল সাম্রাজ্য মূলতঃ পারস্য ও মধ্য এশিয়ার ভাষা, শিল্প ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত ছিল।পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইবরাহিম লোদির বিরুদ্ধে বাবরের জয়ের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়। মুঘল সম্রাটরা ছিলেন মধ্য এশিয়ার তুর্কো-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত। তারা চাগতাই খান ও তৈমুরের মাধ্যমে চেঙ্গিস খানের বংশধর। ১৫৫৬ সালে আকবরের ক্ষমতারোহণের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের ধ্রূপদী যুগ শুরু হয়। আকবর ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরের শাসনামলে ভারতে অর্থনৈতিক প্রগতি বহুদূর অগ্রসর হয়। আকবর অনেক হিন্দু রাজপুত রাজ্যের সাথে মিত্রতা করেন। কিছু রাজপুত রাজ্য উত্তর পশ্চিম ভারতে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখে কিন্তু আকবর তাদের বশীভূত করতে সক্ষম হন। মুঘল সম্রাটরা মুসলিম ছিলেন তবে জীবনের শেষের দিকে শুধুমাত্র সম্রাট আকবর ও তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর নতুন ধর্ম দীন-ই-ইলাহির অনুসরণ করতেন।মুঘল সাম্রাজ্য স্থানীয় সমাজে হস্তক্ষেপ করত না তবে প্রশাসনিকভাবে এসববের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা হত। অনেক বেশি কাঠামোগত, কেন্দ্রীভূত শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়। মুঘল শাসনামলে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন গোষ্ঠী যেমন মারাঠা, রাজপুত ও শিখরা সামরিক শক্তি অর্জন করে।
দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসব হল হিন্দু দেবী দুর্গার পূজাকে কেন্দ্র করে প্রচলিত একটি উৎসব। দুর্গাপূজা সমগ্র হিন্দুসমাজেই প্রচলিত। তবে বাঙালি হিন্দু সমাজে এটি অন্যতম বিশেষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। আশ্বিন বা চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে দুর্গাপূজা করা হয়। আশ্বিন মাসের দুর্গাপূজা শারদীয়া দুর্গাপূজা এবং চৈত্র মাসের দুর্গাপূজা বাসন্তী দুর্গাপূজা নামে পরিচিত। শারদীয়া দুর্গাপূজার জনপ্রিয়তা বেশি। বাসন্তী দুর্গাপূজা মূলত কয়েকটি পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বলতে পৃথিবীর চারপাশে ঘিরে থাকা বিভিন্ন গ্যাস মিশ্রিত স্তরকে বুঝায়, যা পৃথিবী তার মধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা ধরে রাখে। একে আবহমণ্ডল-ও বলা হয়। এটি সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করে। এটি তাপ ধরে রাখার মাধ্যমে (গ্রীনহাউজ প্রতিক্রিয়া) ভূপৃষ্টকে উত্তপ্ত করে ও দিনের তুলনায় রাতের তাপমাত্রা হ্রাস করে।
পশ্চিমবঙ্গের ভূগোল অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গ পূর্ব ভারতের একটি রাজ্য। দক্ষিণে ২১º৩৮’ উত্তর অক্ষাংশ থেকে উত্তরে ২৭º১০’ উত্তর অক্ষাংশ এবং পশ্চিমে ৮৫º৫০’ পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে পূর্বে ৮৯º৫০’ পূর্ব দ্রাঘিমা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটি বিস্তৃত। এ-রাজ্যের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর, ধুবুলিয়া, বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী, গুসকরা, আউসগ্রাম, রাজবাঁধ, দুর্গাপুর, বাঁকুড়া জেলার দুর্লভপুর এবং পুরুলিয়া জেলার আর্দ্রা শহরের উপর দিয়ে পূর্ব-পশ্চিমে কর্কটক্রান্তি রেখা প্রসারিত। এ-রাজ্যের উত্তর সীমা যেমন হিমালয় পর্বতমালাকে স্পর্শ করেছে, তেমনি দক্ষিণ সীমায় রয়েছে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনার সুবিশাল বদ্বীপ ও বঙ্গোপসাগর। তিনটি বিদেশি রাষ্ট্র – নেপাল, ভূটান ও বাংলাদেশ এবং পাঁচটি ভারতীয় রাজ্য – সিক্কিম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও অসম প্রত্যক্ষভাবে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী। এছাড়াও সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত সান্নিধ্যের জন্য ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক বিদ্যমান।
কোষ (ইংরেজি: Cell) হল সকল জীবদেহের গঠন, বিপাকীয় ক্রিয়াকলাপ ও বংশগতিমূলক তথ্য বহনকারী একক। এটি জীবের ক্ষুদ্রতম একক জীবিত একক, অর্থাৎ একটি কোষকে পৃথকভাবে জীবিত বলা যেতে পারে। এজন্যই একে জীবের নির্মাণ একক নামে আখ্যায়িত করা হয়।) ব্যাক্টেরিয়া এবং এ ধরনের কিছু জীব এককোষী। কিন্তু মানুষসহ পৃথিবীর অধিকাংশ জীবই বহুকোষী। মানবদেহে প্রায় ৩৭ লক্ষ কোটি কোষ রয়েছে; একটি কোষের আদর্শ আকার হচ্ছে ১০ মাইক্রোমিটার এবং ভর হচ্ছে ১ ন্যানোগ্রাম। জানামতে বৃহত্তম কোষ হচ্ছে উটপাখির ডিম। চূড়ান্ত কোষ তত্ত্ব আবিষ্কৃত হওয়ার পূর্বে ১৮৩৭ সালে চেক বিজ্ঞানী Jan Evangelista Purkyňe অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে উদ্ভিদ কোষ পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে ছোট ছোট দানা লক্ষ্য করেন। ১৮৩৯ সালে বিজ্ঞানী Matthias Jakob Schleiden এবং Theodor Schwann কোষ তত্ত্ব আবিষ্কার করেন এবং তাদের তত্ত্বে বলা হয়, সকল জীবিত বস্তুই এক বা একাধিক কোষ দ্বারা গঠিত এবং সব কোষই পূর্বে অস্তিত্বশীল অন্য কোন কোষ থেকে উৎপত্তি লাভ করে। জীবের মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ সব ক্রিয়াই কোষের অভ্যন্তরে সংঘটিত হয়। সকল কোষের মধ্যে কার্যক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বংশগতীয় তথ্য এবং পরবর্তী বংশধরে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে।
২০১৯–২০ করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী
২০১৯-২০২০ করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী বলতে করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ (কোভিড-১৯)-এর বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাব ও দ্রুত বিস্তারের চলমান ঘটনাটিকে নির্দেশ করা হয়েছে। এই রোগটি একটি বিশেষ ভাইরাসের কারণে সংঘটিত হয়, যার নাম গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় রোগলক্ষণসমষ্টি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস ২ (SARS-CoV-2) রোগটির প্রাদুর্ভাব প্রথমে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনের হুপেই প্রদেশের উহান নগরীতে শনাক্ত করা হয়। ২০২০ সালের ১১ই মার্চ তারিখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগটিকে একটি বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০২০ সালের ২৮শে এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের ১৮৫টিরও বেশি দেশ ও অধীনস্থ অঞ্চলে ৩০ লক্ষেরও বেশি ব্যক্তি করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন বলে সংবাদ প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে। এদের মধ্যে ২ লক্ষ ১৫ হাজার জনেরও বেশি ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছে এবং ৯ লাখ ১৮ হাজারের বেশি রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে।করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯-এ আক্রান্ত ব্যক্তি কাশি বা হাঁচি দেবার ফলে বাতাসে নিক্ষিপ্ত বহু লক্ষ অতিক্ষুদ্র শ্লেষ্মাকণা বাতাসে ভাসতে শুরু করলে নিকটবর্তী অপর কোনও ব্যক্তি সেই ভাইরাসযুক্ত বাতাস শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করলে তার দেহেও ভাইরাসটি সংক্রমিত হতে পারে। সাধারণ শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণেও খুবই স্বল্প পরিমাণ ভাইরাস কণা বাতাসে ভাসতে পারে। এছাড়া ভাইরাস কণা টেবিলে বা অন্য কোনও পৃষ্ঠে হাঁচি-কাশির মাধ্যমে কিংবা ভাইরাসযুক্ত হাত দিয়ে স্পর্শের মাধ্যমে পৃষ্ঠের উপাদানভেদে কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিন লেগে থাকতে পারে, যেই পৃষ্ঠ আরেকজন ব্যক্তি স্পর্শ করে তারপরে নাকে, মুখে বা চোখে হাত দিলে ঐ ব্যক্তির শ্লৈষ্মিক ঝিল্লির মধ্য দিয়ে ভাইরাস দেহে প্রবেশ করতে পারে।যখন কোনও রোগী ব্যাধিটির লক্ষণ-উপসর্গ প্রকাশ করা শুরু করে, তখনই এটি সবচেয়ে বেশী সংক্রামক থাকে, তবে লক্ষণ-উপসর্গ দেখা দেবার আগেও ব্যাধিটি সংক্রমণ হওয়া সম্ভব। ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হবার সময় থেকে লক্ষণ-উপসর্গ প্রকাশ পাবার গড় সময় সাধারণত পাঁচ দিন, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুই থেকে ১৪ দিন বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে। ব্যাধিটির সাধারণ লক্ষণ-উপসর্গগুলি হল জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট। ব্যাধিটি জটিল রূপ ধারণ করলে প্রথমে ফুসফুস প্রদাহ (নিউমোনিয়া) হতে পারে এবং আরও গুরুতর রূপ ধারণ করলে তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক রোগলক্ষণসমষ্টি প্রকাশ পেতে পারে, যাতে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই ব্যাধির জন্য কোনও প্রতিষেধক টীকা কিংবা বিশেষভাবে কার্যকর কোনও ভাইরাস নিরোধক ঔষধ এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত হয়নি। এই ব্যাধির চিকিৎসাতে মূলত উপসর্গসমূহের উপশম করা হয় এবং সহায়ক চিকিৎসা প্রদান করা হয়, যাতে রোগী নিজে থেকেই ধীরে ধীরে সেরে উঠতে পারে। ব্যাধিটি প্রতিরোধের জন্য অন্য ব্যক্তিদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখা, হাঁচি-কাশি দেবার সময় স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মুখ ঢাকা, হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করা, পর্যবেক্ষণে রাখা এবং সম্ভাব্য সংক্রমিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আত্ম-পৃথকীকরণ (সঙ্গনিরোধ) করার পরামর্শ দেওয়া হয়।ভাইরাসটির বিস্তার প্রতিরোধের প্রচেষ্টাতে ভ্রমণের উপরে নিষেধাজ্ঞা, সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টিন), সান্ধ্য আইন (কারফিউ), অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়া বা বাতিল করা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার মত ঘটনা ঘটেছে। যেমন হুপেই প্রদেশের সঙ্গনিরোধ, সমগ্র ইতালির সঙ্গনিরোধ, সীমান্ত বন্ধকরণ, বিদেশী পর্যটক ও অন্যান্য বিদেশীদের আগমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ, চীনের অন্যান্য প্রদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়াতে কারফিউ, বিমানবন্দর ও রেলস্টেশনগুলিতে উপসর্গ ও দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষার ব্যবস্থা, ব্যাপকভাবে আক্রান্ত অঞ্চলে ভ্রমণের ব্যাপারে সতর্কতামূলক বার্তা, ইত্যাদি। বিশ্বের প্রায় ১১৫টি দেশে বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে জাতীয় কিংবা স্থানীয় পর্যায়ে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, ফলে প্রায় ১২০ কোটি ছাত্রছাত্রীর জীবনে এর প্রভাব পড়েছে।এই বৈশ্বিক মহামারীর কারণে সারা বিশ্বের আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়েছে। বহু ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বা বাতিল করা হয়েছে। অনেক দেশে দ্রব্যের (যেমন খাদ্য বা ঔষধ) যোগানের স্বল্পতার ব্যাপারে ব্যাপক ভীতি থেকে আতঙ্কগ্রস্ত মানুষের কেনাকাটার হিড়িক লেগেছে। ভাইরাসটিকে নিয়ে ভুল বা মিথ্যা তথ্য ও ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্ব আন্তর্জাল বা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া চীন, পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষ ও বিদেশীভীতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। মূল সংবিধান ইংরেজি ভাষায় রচিত হয় এবং একে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তাই এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধীত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বাংলা: বাংলাদেশ গণসংঘ) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়
ভারতীয় ইউনিয়নের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ (অতীতের পূর্ববাংলা) এবং ভারতের বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অসম ও সিকিম রাজ্য অবস্থিত। রাজ্যের উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা ও দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। এর মধ্যবর্তী অঞ্চলে গঙ্গা পূর্বমুখে এবং তার শাখানদী হুগলি দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। রাজ্যের উত্তরবঙ্গ অঞ্চলে অবস্থিত শিলিগুড়ি করিডোর উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের মূল ভূখণ্ডের সংযোগ রক্ষা করছে। পশ্চিমবঙ্গ একাধিক ভৌগোলিক অঞ্চলে বিভক্ত। যেমন, দার্জিলিং হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল, তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চল, রাঢ় অঞ্চল, পশ্চিমের উচ্চভূমি ও মালভূমি অঞ্চল, উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চল, সুন্দরবন এবং গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চল।১৯৪৭ সালে, যখন ভারত স্বাধীনতা লাভ করে, তখন ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রদেশ বিভাজনের পরিকল্পনা অনুযায়ী উক্ত প্রদেশের ১৪টি জেলা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গঠিত হয়। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি পূর্বতন দেশীয় রাজ্য কোচবিহার একটি জেলা রূপে পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে পূর্বতন ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগর রাজ্যের হুগলি জেলার একটি অংশরূপে যুক্ত হয়। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠন আইন অনুযায়ী, পুরুলিয়া জেলার বঙ্গভুক্তি ঘটে এবং বিহারের অপর একটি অংশ পশ্চিম দিনাজপুরের সঙ্গে যুক্ত হয়। পরবর্তীকালে পশ্চিম দিনাজপুর, মেদিনীপুর, চব্বিশ পরগনা, ও জলপাইগুড়ি জেলার মতো বৃহদাকার জেলাগুলিকে দ্বিধাবিভক্ত করা হয়।
জীবনানন্দ দাশ () (১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৯ - ২২ অক্টোবর, ১৯৫৪; ৬ ফাল্গুন, ১৩০৫ - ৫ কার্তিক, ১৩৬১ বঙ্গাব্দ) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাঙালি কবি, লেখক ও প্রাবন্ধিক। তিনি বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম। জীবনানন্দের প্রথম কাব্যে নজরুল ইসলামের প্রভাব থাকলেও দ্বিতীয় কাব্য থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন মৌলিক ও ভিন্ন পথের অনুসন্ধানী। মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে তিনি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন এবং ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে যখন তাঁর জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছিল, ততদিনে তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবিতে পরিণত হয়েছেন।গ্রামবাংলার ঐতিহ্যময় নিসর্গ ও রূপকথা-পুরাণের জগৎ জীবনানন্দের কাব্যে হয়ে উঠেছে চিত্ররূপময়, তাতে তিনি ‘রূপসী বাংলার কবি’ অভিধায় খ্যাত হয়েছেন। বুদ্ধদেব বসু তাঁকে 'নির্জনতম কবি' বলে আখ্যায়িত করেছেন। অন্যদিকে, অন্নদাশঙ্কর রায় তাঁকে ‘শুদ্ধতম কবি’ অভিধায় আখ্যায়িত করেছেন। সমালোচকদের অনেকে তাঁকে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল-পরবর্তী বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবি বলে মনে করেন। জীবনানন্দের বনলতা সেন কাব্যগ্রন্থ নিখিলবঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলনে পুরস্কৃত (১৯৫৩) হয়। ১৯৫৫ সালে শ্রেষ্ঠ কবিতা গ্রন্থটি ভারত সরকারের সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করে। জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মাঝে রয়েছে রূপসী বাংলা, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, বেলা অবেলা কালবেলা, শ্রেষ্ঠ কবিতা ইত্যাদি।
ঢাকা (ইংরেজি: Dhaka, পূর্বে Dacca) দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি দেশটির ঢাকা বিভাগের প্রধান শহর। ভৌগোলিকভাবে এটি বাংলাদেশের মধ্যভাগে বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে একটি সমতল এলাকাতে অবস্থিত। ঢাকা একটি অতিমহানগরী বা মেগাসিটি; ঢাকা মহানগরী এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ। জনসংখ্যার বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর (দিল্লি, করাচী ও মুম্বইয়ের পরেই) এবং সমগ্র বিশ্বের নবম বৃহত্তম শহর। জনঘনত্বের বিচারে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ মহানগরী; ১৩৪ বর্গমাইল আয়তনের এই শহরে প্রতি বর্গমাইল এলাকায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার লোকের বাস।ঢাকা শহরটি "মসজিদের শহর" নামেও সুপরিচিত। এখানে ৭০০-রও বেশি মসজিদ আছে। এছাড়া ঢাকা "বিশ্বের রিকশা রাজধানী" নামেও পরিচিত। এই শহরে রোজ প্রায় ৪০০,০০০ থেকে ৪৫০,০০০টি রিকশা চলাচল করে। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান সংস্কৃতি, শিক্ষা ও বাণিজ্যকেন্দ্র।ঢাকা শহরের জলবায়ু ক্রান্তীয় আর্দ্র ও শুষ্ক প্রকৃতির। গড় তাপমাত্রা এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ প্রায় ৩৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন প্রায় ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ঢাকা শহরে বর্ষাকাল, সেসময় প্রতি মাসে গড়ে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়।সপ্তদশ শতাব্দীতে পুরানো ঢাকা মুঘল সাম্রাজ্যের সুবহে বাংলা (বাংলা প্রদেশ) এর প্রাদেশিক রাজধানী ছিলো। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে এই শহর জাহাঙ্গীর নগর নামে পরিচিত ছিলো। বিশ্বব্যাপী মসলিন বাণিজ্যের একটি কেন্দ্র ছিলো ঢাকা এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীগণ এখানে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আসতেন। ঢাকাতে বিশ্বের সেরা মসলিন কাপড় উৎপাদিত হতো। যদিও আধুনিক ঢাকা শহরের বিকাশ ঘটে ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ শাসন আমলে, এই সময় নবাবগণ ঢাকা শাসন করতেন। এই সময় কলকাতার পরেই ঢাকা বাংলা প্রেসিডেন্সির দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী হয়ে ওঠে। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পরে ঢাকা নবগঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পরে ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসনিক রাজধানীতে পরিণত হয়। ১৯৫০-১৯৬০ সালের মধ্যে এই শহর বিভিন্ন সামাজিক, জাতীয়তাবাদী ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে ঢাকা স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের রাজধানী ঘোষিত হয়। ইতিপূর্বে সামরিক আইন বলবৎ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা, সামরিক দমন, যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তাণ্ডবলীলার মতো একাধিক অস্থির ঘটনার সাক্ষী হয় এই শহর।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে লৌহজং, মুন্সিগঞ্জের সাথে শরিয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে, ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট ষ্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির (truss bridge) ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর আববাহিকায় ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যর ৪১টি স্পান বসবে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু। সরকারের পরিকল্পনামাফিক ২০২০ সালের শেষের দিকে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা ।প্রকল্পটি তিনটি জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করবে- মুন্সীগঞ্জ (মাওয়া পয়েন্ট/উত্তর পাড়), শরীয়তপুর এবং মাদারীপুর (জঞ্জিরা/দক্ষিণ পাড়)। এটির জন্য প্রয়োজনীয় এবং অধিগ্রহণকৃত মোট জমির পরিমাণ ৯১৮ হেক্টর। নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি ভাড়ার ভিত্তিতে আগামী ছয় বছরে অধিযাচন করা হবে।
উসমানীয় সাম্রাজ্য (উসমানীয় তুর্কি: دَوْلَتِ عَلِيّهٔ عُثمَانِیّه, Devlet-i Aliyye-i Osmâniyye, আধুনিক তুর্কি: Osmanlı İmparatorluğu বা Osmanlı Devleti), ঐতিহাসিকভাবে তুর্কি সাম্রাজ্য বা অটোমান সাম্রাজ্য বলে পরিচিত। এই সম্রাজ্যের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা উসমান গাজীর পিতা আরতুগ্রুল গাজী। ১২৯৯ সালে অঘুজ তুর্কি বংশোদ্ভূত প্রথম উসমান উত্তরপশ্চিম আনাতোলিয়ার দ্বায়িত্ব পান সেলযুক সাম্রাজ্য কর্তৃক, প্রথম দিকে রোমের সেলযুক সাম্রাজ্যের প্রতি অনুগত থাকলেও রোমের সেলজুক সাম্রাজ্যের ক্রান্তিলগ্নে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
সুপার সাইক্লোন আম্পান () একটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়, যা বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী ভারতের পূর্বাংশে এবং বাংলাদেশে আঘাত হানে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল, ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকির মধ্যে ছিল। এ শতাব্দীতে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এটিই প্রথম সুপার ঘূর্ণিঝড়।২০০৭ মরসুমের সিডরের পর থেকে গঙ্গা বদ্বী্পে আঘাত হানার এটি সবচেয়ে শক্তিশালী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় এবং ১৯৯৯ ওড়িশা ঘূর্ণিঝড়ের পর বঙ্গোপসাগরে এটি প্রথম সুপার ঘূর্ণিঝড়। আম্পানে ১৩০০কোটি মার্কিন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। ২০০৮ সালের ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে ভারত মহাসাগরের উত্তরভাগে রেকর্ড করা সবচেয়ে ব্যয়বহুল ঘূর্ণিঝড়ও আম্পান।২০২০ সালের প্রথম ভারত মহাসাগরের উত্তরভাগে ঘূর্ণিঝড় মরসুমের ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি ভারতীয় মহাসাগরে তৈরি গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘটে। ঘূর্ণিঝড়টি সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়ে, তবে স্থলভাগে তা ধীরে ধীরে শক্তি হারায়। উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হয়।এর আগে বঙ্গোপসাগরের দুইটি ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তীব্রতার কাছাকাছি যেতে পেরেছিল। তার মধ্যে একটি আঘাত হেনেছিল ওড়িশায়, অন্যটি বাংলাদেশের চট্টগ্রামে।
ঋতু বা মৌসুম বছরের একটি খণ্ডবিশেষ যা নির্দিষ্ট সার্বজনীন কোন সূত্রের ভিত্তিতে স্থির করা হয়। সচরাচর স্থানীয় আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করে বৎসরের ঋতু বিভাজন করা হয়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে বসন্ত, গ্রীষ্ম, হেমন্ত ও শীত- এই চারটি প্রধান ঋতু দেখা যায়। কিছু দেশের জনগণ ঋতুকে আরো কয়েকভাগে বিভক্ত করেছেন। তন্মধ্যে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যে ৬টি ঋতু বিদ্যমান।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ - ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮) ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় এবং বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। তার অনেক উপন্যাস ভারতবর্ষের প্রধান ভাষাগুলোতে অনূদিত হয়েছে। বড়দিদি (১৯১৩), পল্লীসমাজ (১৯১৬), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), শ্রীকান্ত (চারখণ্ডে ১৯১৭-১৯৩৩), দত্তা (১৯১৮), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী (১৯২৬), পরিণীতা (১৯১৪), শেষ প্রশ্ন (১৯৩১) ইত্যাদি শরৎচন্দ্র রচিত বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তার দরুন তিনি 'অপরাজেয় কথাশিল্পী' নামে খ্যাত।
এশিয়া ( (শুনুন) বা ) পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে জনবহুল মহাদেশ, প্রাথমিকভাবে পূর্ব ও উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। এটি ভূপৃষ্ঠের ৮.৭% ও স্থলভাগের ৩০% অংশ জুড়ে অবস্থিত। আনুমানিক ৪৩০ কোটি মানুষ নিয়ে এশিয়াতে বিশ্বের ৬০%-এরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। অধিকাংশ বিশ্বের মত, আধুনিক যুগে এশিয়ার বৃদ্ধির হার উচ্চ। উদাহরণস্বরূপ, বিংশ শতাব্দীর সময়, এশিয়ার জনসংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়ে গেছে, বিশ্ব জনসংখ্যার মত।এশিয়ার সীমানা সাংস্কৃতিকভাবে নির্ধারিত হয়, যেহেতু ইউরোপের সাথে এর কোনো স্পষ্ট ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা নেই, যা এক অবিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের গঠন যাকে একসঙ্গে ইউরেশিয়া বলা হয়। এশিয়ার সবচেয়ে সাধারণভাবে স্বীকৃত সীমানা হলো সুয়েজ খাল, ইউরাল নদী, এবং ইউরাল পর্বতমালার পূর্বে, এবং ককেশাস পর্বতমালা এবং কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণে। এটা পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর এবং উত্তরে উত্তর মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। ইউরাল পর্বতমালা, ইউরাল নদী, কাস্পিয়ান সাগর, কৃষ্ণসাগর এবং ভূমধ্যসাগর দ্বারা এশিয়া ও ইউরোপ মহাদেশ দুটি পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন। এছাড়া লোহিত সাগর ও সুয়েজ খাল এশিয়া মহাদেশকে আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সংকীর্ণ বেরিং প্রণালী একে উত্তর আমেরিকা মহাদেশ থেকে পৃথক করেছে। উল্লেখ্য, বেরিং প্রণালীর একদিকে অবস্থান করছে এশিয়া মহাদেশের অন্তর্গত রাশিয়ার উলেনা এবং অপর পাশে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অন্তর্গত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা। এই প্রণালীটির সংকীর্ণতম অংশটি মাত্র ৮২ কি•মি• চওড়া, অর্থাৎ বেরিং প্রণালীর এই অংশ হতে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দূরত্ব মাত্র ৮২ কি•মি•।
চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রাচীনতম পদ সংকলন তথা সাহিত্য নিদর্শন। নব্য ভারতীয় আর্যভাষারও প্রাচীনতর রচনা এটি। খ্রিষ্টীয় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত এই গীতিপদাবলির রচয়িতারা ছিলেন সহজিয়া বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যগণ। বৌদ্ধ ধর্মের গূঢ় অর্থ সাংকেতিক রূপের আশ্রয়ে ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যেই তাঁরা পদগুলো রচনা করেছিলেন। বাংলা সাধন সংগীত শাখাটির সূত্রপাতও হয়েছিলো এই চর্যাপদ থেকেই। সে বিবেচনায় এটি একটি ধর্মগ্রন্থজাতীয় রচনা। একই সঙ্গে সমকালীন বাংলার সামাজিক ও প্রাকৃতিক চিত্রাবলি এই পদগুলোতে উজ্জ্বল। এর সাহিত্যগুণ এখনও চিত্তাকর্ষক। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থশালা থেকে চর্যার একটি খণ্ডিত পুঁথি উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে চর্যাপদের সঙ্গে বাংলা ভাষার অনস্বীকার্য যোগসূত্র বৈজ্ঞানিক যুক্তিসহ প্রতিষ্ঠিত করেন। চর্যাপদের প্রধান কবিগণ হলেন লুইপাদ, কাহ্নপাদ, ভুসুকুপাদ, শবরপাদ প্রমুখ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম তাঁর রচিত কাব্য, উপন্যাস, ছোটোগল্প, নাট্যসাহিত্য, প্রবন্ধ, চিত্রকলা ও সঙ্গীতের মধ্যে ছড়িয়ে আছে।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আকাশ যুদ্ধ শাখা। বিমান বাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের আকাশ সীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। পাশাপাশি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে বিমান সহায়তা প্রদান করাও বিমান বাহিনীর অন্যতম দায়িত্ব। এছাড়াও বিমান বাহিনী দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন দুর্যোগে মানবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে এবং বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের সাথেও যুক্ত রয়েছে।
ইসলাম (আরবি) : আল-ইসলাম - [الإسلام] (শুনুন) রোমান হরফে : al-Islām - الإسلام) একটি একেশ্বরবাদী এবং ইব্রাহিমীয় ধর্মবিশ্বাস যার মূল শিক্ষা হল, এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন স্রষ্টা নেই এবং মুহাম্মদ হলেন আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবী ও রাসূল।এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান ধর্ম, যার অনুসারী সংখ্যা ১.৯ বিলিয়ন এবং পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২৪.৪ %, যারা মুসলমান নামে পরিচিত। মুসলমানরা ৫০ এর অধিক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টি। ইসলাম শিক্ষা দেয় যে আল্লাহ দয়ালু, করুনাময়, এক ও অদ্বিতীয় এবং একমাত্র ইবাদতযোগ্য অভিভাবক।
সত্যজিৎ রায় (২ মে ১৯২১ – ২৩ এপ্রিল ১৯৯২) একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সঙ্গীত পরিচালক এবং লেখক। তাকে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। সত্যজিতের জন্ম কলকাতা শহরে সাহিত্য ও শিল্প সমাজে খ্যাতনামা রায় পরিবারে। তার পূর্বপুরুষের ভিটা ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কিশোরগঞ্জে (বর্তমানে বাংলাদেশ) কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। সত্যজিতের কর্মজীবন একজন বাণিজ্যিক চিত্রকর হিসেবে শুরু হলেও প্রথমে কলকাতায় ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা জঁ রনোয়ারের সাথে সাক্ষাৎ ও পরে লন্ডন শহরে সফররত অবস্থায় ইতালীয় নব্য বাস্তবতাবাদী চলচ্চিত্র লাদ্রি দি বিচিক্লেত্তে (ইতালীয়: Ladri di biciclette, বাইসাইকেল চোর) দেখার পর তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ হন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদবী এবং চিহ্নসমূহ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন্ড অফিসার, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার (জেসিও), নন-কমিশন্ড অফিসার (এনসিও) এবং সাধারণ সৈনিক পদবী আছে। কমিশন্ড অফিসাররা প্রথম শ্রেণীর সেনা সদস্য, জেসিওরা প্রথম শ্রেণী (নন-ক্যাডার) সদস্য এবং এনসিওরা (সার্জেন্ট 2য় শ্রেণী) তৃতীয় শ্রেণীর সদস্য হিসেবে বিবেচিত,অপরদিকে সাধারণ সৈনিকদের চতুর্থ শ্রেণীর সদস্যদের কাতারে ফেলা হয়।
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবীর বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে, অন্যদিকে এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তানের ছিল দু’টি অংশ: পূর্ব বাংলা (১৯৫৫ সালে পুনর্নামাঙ্কিত পূর্ব পাকিস্তান) ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কার্যতঃ পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন বাদামতলী কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের ছেলে রফিক, সালাম, এম. এ.
ভারতের রাজ্যসমূহ ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহ
ভারত হল ২৮টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় রাজ্যসংঘ। এই দেশের প্রথম স্তরের প্রশাসনিক বিবাগের সংখ্যা ৩৬। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি আবার জেলা ও ক্ষুদ্রতর প্রশাসনিক বিভাগে বিভক্ত।
ফেইসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত) বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। এর মালিক হলো ফেসবুক ইনক। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
এই নিবন্ধটি ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পূর্ববর্তী ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস-সম্পর্কিত। ১৯৪৭-পরবর্তী ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ইতিহাস নিবন্ধটি। এছাড়া পাকিস্তান বা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন যথাক্রমে পাকিস্তানের ইতিহাস ও বাংলাদেশের ইতিহাস। দক্ষিণ ভারত, অবিভক্ত বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন যথাক্রমে দক্ষিণ ভারতের ইতিহাস, বাংলার ইতিহাস ও পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস।ভারতের ইতিহাস বলতে মূলত খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দ থেকে খ্রিষ্টীয় বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত, ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন -মধ্যযুগীয় ও প্রাক-আধুনিক কালের ইতিহাসকেই বোঝানো হয়। খ্রিষ্টের জন্মের প্রায় দশ লক্ষ(?) বছর আগে উক্ত ভূখণ্ডে প্রথম মানববসতি গড়ে উঠতে দেখা যায়। তবে ভারতের জ্ঞাত ইতিহাসের সূচনা হয় ৩৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সিন্ধু সভ্যতার উন্মেষ ও প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে। পরবর্তী হরপ্পা যুগের সময়কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দের সূচনায় এই ব্রোঞ্জযুগীয় সভ্যতার পতন ঘটে। সূচনা হয় লৌহ-নির্ভর বৈদিক যুগের। এই যুগেই সমগ্র গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে মহাজনপদ নামে পরিচিত ১৬টি প্রধান প্রধান রাজ্য-তথা-জনবসতির উত্থান ঘটে। এই জনপদগুলির অধিকাংশই রাজতান্ত্রিক হলেও এদের মধ্যে "লিচ্ছিবি" ছিল গণতান্ত্রিক। এই জনপদের মধ্যে অন্যতম ছিল মগধ।খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে মগধে জন্মগ্রহণ করেন মহাবীর ও গৌতম বুদ্ধ; পরবর্তীকালে যাঁরা ভারতের জনসাধারণের মধ্যে শ্রমণ ধর্মদর্শন প্রচার করেন।
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী (গুজরাটি: મોહનદાસ કરમચંદ ગાંધી উচ্চারণ )(মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী) বা মহাত্মা গান্ধী (২রা অক্টোবর, ১৮৬৯ - ৩০শে জানুয়ারি, ১৯৪৮) একজন অন্যতম ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিদের একজন এবং প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক নেতা। তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। এর মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণ তাদের অভিমত প্রকাশ করে । এ আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের উপর ভিত্তি করে এবং এটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি, সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।
যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States ইউনাইটেড স্টেটস) বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র এবং সংক্ষেপে ইউ.এস (US) । এই ইউ. এস (US) যুক্তরাষ্ট্রের কান্ট্রি কোড, টপ লেভেল ডোমেইন ও ইন্টারনেট টপ লেভেল ডোমেইন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) সংক্ষেপে (USA) ইউ. এস.
আইজ্যাক নিউটনের গতিসূত্রগুলি হল প্রকৃতির তিনটি নিয়ম, যা চিরায়ত বলবিদ্যার ভিত্তি স্বরূপ। এই নিয়মগুলি বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল এবং তার দরুন সৃষ্ট গতির মধ্যে সম্পর্ক বর্ণনা করে। প্রায় তিন শতাব্দীর বেশি সময় ধরে এই নিয়মগুলি নানাভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছে। সূত্র তিনটি হল: প্রথম সূত্র: বাইরে থেকে কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগ না করলে, স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং গতিশীল বস্তু চিরকাল সমবেগে সরলরেখায় বা সরল পথে চলতে থাকে। সুতরাং, কোন বস্তুর উপর সার্বিক (total) বলের পরিমাণ শূন্য হলে, বস্তুর ভরকেন্দ্র হয় স্থির নয়তো সমবেগে গতিশীল থাকবে। দ্বিতীয় সূত্র: কোন বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যে দিকে ক্রিয়া করে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন সেদিকেই ঘটে।অর্থাৎ কোনো বস্তুর ভর যদি অপরিবর্তিত থাকে,তবে বস্তুটির ওপর প্রযুুক্ত বাহ্যিক নেট বল বস্তুটির ভর ও ত্বরণের গুণফল হয়। সুতরাং m ভরের একটি বস্তুর উপর F বল প্রয়োগের ফলে তার ত্বরণ a হয়, এই ত্বরণের মান বলের সমানুপাতিক ও ভরের ব্যস্তানুপাতিক (F = ma) এবং বল যে দিকে ক্রিয়া করে ত্বরণও সেই দিকে হয়।গাণিতিকভাবে একে এভাবে লেখা হয়: F → = d p → d t = d d t ( m v → ) = v → d m d t + m d v → d t .
মহাদেশ বলতে পৃথিবীর বড় ভূখণ্ডসমূহকে বুঝায়। পৃথিবীতে ৭ টি মহাদেশ রয়েছে। মহাদেশসমূহ হল এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ওশেনিয়া, ও অ্যান্টার্কটিকা।দ্বীপসমূহকে পার্শ্ববর্তী মহাদেশের অন্তর্গত হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপসমূহকে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন ভূ-রাজনৈতিক অঞ্চল ওশেনিয়া সৃষ্টি করা হয়েছে।
১৯৪২ সালের ১৭ ডিসেম্বর তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার গঠিত হয়। সর্বাধিনায়ক হন বিপ্লবী সতীশচন্দ্র সামন্ত। এই সরকারের বিভিন্ন বাহিনী গঠিত হয়। এই জাতীয় সরকার সে সময় পৃথক শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। আইন-শৃঙ্খলা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিচার, কৃষি, প্রচার, সমর ইত্যাদি বিভাগে পৃথক পৃথক সচিব নিয়োগ করা হয়েছিল। সবার উপরে ছিলেন সর্বাধিনায়ক বিপ্লবী সতীশচন্দ্র সামন্ত। অর্থসচিব ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজয়কুমার মুখোপাধ্যায় এবং সমর ও স্বরাষ্ট্রসচিব ছিলেন সুশীলকুমার ধাড়া। ১৯৪৪ সালে ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের অস্তিত্ব।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম হল একটি প্রোটোকল তালিকা বা রাষ্ট্রের নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের পদ সমূহের ক্রমবিন্যাস। একজন ব্যক্তি যখন একের অধিক পদ ধরে রাখে তখন সর্বোচ্চ পদটি হিসাব করা হয়। এই তালিকাটি শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ ও তাদের আসনের ব্যবস্থা, রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী সহ অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিদেশ গমন ও প্রত্যাবর্তনের সময় তাদের বিদায় ও অভ্যর্থনা জানানো এবং সমপর্যায়ের বিদেশি অতিথিদের দেশে স্বাগত ও পরে বিদায় জানানোর আনুষ্ঠানিকতার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই। সরকারের দৈনন্দিন কার্যক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হয় না বা কোন ভুমিকা রাখে না।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরা ও অন্যান্য অঞ্চলে, বাংলাদেশ এবং ভারত ও বাংলাদেশের বাইরে বসবাসরত বাঙালি হিন্দু পদবীসমূহ বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। এখানে যেমন ধর্মীয় জাতিভেদ প্রথার প্রভাব বিদ্যমান তেমনই ঐতিহ্যবাহী পেশা হতে পদবী গ্রহণের রেওয়াজ বিদ্যমান। বৈদিক যুগে কোনও পদবী হতো না। কারো মতে এই কৌলীন্য প্রথা হর্ষবর্ধনের সময়কাল হতে শুরু হয়েছে। কনৌজকে কেন্দ্র করে তিনটি সাম্রাজ্যের স্থাপনা হয়েছিলো। রাজ্যসীমার দক্ষিণ দিকে ছিল রাষ্ট্রকূট সাম্রাজ্য, পূর্ব দিকে ছিল পাল সাম্রাজ্য এবং গুর্জর-প্রতিহার শাসক বৎসরাজার হাতে। পাল রাজত্ব শেষে বিজয় সেনের পুত্র সম্রাট বল্লালসেন সর্বপ্রথম বাংলায় কৌলীন্য প্রথা প্রচলন করেছিলেন ছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তবে, স্বপক্ষে নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রের অভাব রয়েছে। এসময় অবিভক্ত বঙ্গে রাঢ় ও বরেন্দ্র এই দুই অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন কুলীনরা বসবাস করতেন। বাঙালি হিন্দুরা বহুবার নিজেদের পদবী পরিবর্তন করেছেন, কখনও পেশাভিত্তিক কারণে আবার কখনও বর্ণ প্রথার জন্য। বাঙালি হিন্দুদের পদবীসমূহ হিন্দুধর্মের চার বর্ণ যথা ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র এর মাঝে ভাগ করা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রাচীন বাংলা থেকে বাংলায় প্রকৃত ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য বলে দাবি জানাতে কাউকে দেখা যায় না। তার পরিবর্তে অনেক উপবর্ণ বা জাতি দেখতে পাওয়া যায়। কায়স্থ, বৈদ্য, বণিক, সদগোপ, তেলি, মালি, কর্মকার, বারুজীবী, সূত্রধর, কপালি, চণ্ডাল ইত্যাদি অনেক শ্রেণীর জাতিগোষ্ঠীর উপস্থিতি দেখা যায়। যারা রাজকার্য পরিচালনায় সহায়ক ছিলেন তেমন উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীরা ছিলেন কায়স্থ আর যারা চিকিৎসাবৃত্তি অবলম্বন করতেন তারা বৈদ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তবে এই দুই শ্রেণীর লোক সমাজের উচ্চবর্ণের থেকে গৃহীত হতেন এবং ব্রাহ্মণের সাথে এরাও বাঙালি সমাজে উচ্চজাতি হিসেবে গণ্য হতেন। তাছাড়া ব্রিটিশ শাসন আমলে ভূস্বামীদের আলাদা পদবী প্রদান করতেও দেখা যায়।। কর্মজীবীশ্রেণীর অন্তর্গত ব্যক্তিদের মাঝেও নিজ নিজ কর্মানুসারে পদবী বিদ্যমান হিন্দু সমাজে।
প্রতি বৎসর বিভিন্ন দিনে বিশ্বব্যাপী নানা "দিবস" পালিত হয়। এই সকল বৈশ্বিক দিবস বা বিশ্ব দিবস বা আন্তর্জাতিক দিবসসমূহের তালিকা এই পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো। এই সকল দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে - কোন একটি নির্দিষ্ট দিনে আন্তর্জাতিকভাবে সাম্প্রতিককালের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধি বা ক্ষেত্র বিশেষে কোন অতীত ঘটনা স্মরণ বা উদযাপন করা।
ভারতের সংবিধান ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন। এই সংবিধানে সরকারের গঠন, কার্যপদ্ধতি, ক্ষমতা ও কর্তব্য নির্ধারণ; মৌলিক অধিকার, রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশমূলক নীতি, এবং নাগরিকদের কর্তব্য নির্ধারণের মাধ্যমে দেশের মৌলিক রাজনৈতিক আদর্শের রূপরেখাটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদে ২৮৪ জনের সই করলে গৃহীত হয় এবং এই দিনটি জাতীয় আইন দিবস হিসেবে পরিচিত। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে এই সংবিধান কার্যকরী হয়। উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ঘোষণার স্মৃতিতে ২৬ জানুয়ারি তারিখটি সংবিধান প্রবর্তনের জন্য গৃহীত হয়েছিল। সংবিধানে ভারতীয় রাজ্যসংঘকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র রূপে ঘোষণা করা হয়েছে; এই দেশের নাগরিকবৃন্দের জন্য ন্যায়বিচার, সাম্য ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা হয়েছে এবং জাতীয় সংহতি রক্ষার জন্য নাগরিকদের পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃভাব জাগরিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। "সমাজতান্ত্রিক", "ধর্মনিরপেক্ষ" ও "সংহতি" এবং সকল নাগরিকের মধ্যে "ভ্রাতৃভাব" – এই শব্দগুলি ১৯৭৬ সালে একটি সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। সংবিধান প্রবর্তনের স্মৃতিতে ভারতীয়রা প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি তারিখটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে উদযাপন করেন। ভারতের সংবিধান বিশ্বের সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বৃহত্তম লিখিত সংবিধান। এই সংবিধানে মোট ২৪টি অংশে ৪৪৮টি ধারা, ১২টি তফসিল এবং ১১৩টি সংশোধনী বিদ্যমান। ভারতের সংবিধানের ইংরেজি সংস্করণে মোট শব্দসংখ্যা ১১৭,৩৬৯। এই সংবিধানের প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পূর্বপ্রচলিত ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অবসান ঘটে। দেশের সর্বোচ্চ আইন হওয়ার দরুন, ভারত সরকার প্রবর্তিত প্রতিটি আইনকে সংবিধান-অনুসারী হতে হয়। সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান ড.
আরতুগ্রুল (উসমানীয় তুর্কি: ارطغرل; ১১৯১/১১৯৮, আহলাত – ১২৮১, সাগুত) যিনি আরতুগ্রুল গাজী নামে পরিচিত ছিলেন। উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান প্রথম উসমানের পিতা। তিনি অঘুজ তুর্কিদের কায়ি গোত্রের নেতা ছিলেন। বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে রোমের সেলজুকদের সাহায্যার্থে আরতুগরুল মার্ভ থেকে আনাতোলিয়ায় আসেন। এ সময় তিনি বেশ কিছু ধারাবাহিক ঘটনার মাধ্যমে তিনি উসমানীয় সাম্রাজ্য সৃষ্টিতে নেতৃত্ব দেন। তার ছেলে প্রথম উসমান এবং ভবিষ্যৎ বংশধরদের মত তাকেও গাজী উপাধিতে সম্বোধন করা হয়, যা দ্বারা ইসলামের জন্য লড়াই করা বীর যোদ্ধাদের বোঝায়।
কুরআন মাজীদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ (আরবি: القرآن আল্-কুর্'আন্[টী১]) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন। এটি মানবজাতির সর্বোৎকৃষ্ট ধর্ম গ্রন্থ, সংবিধান এবং পূর্নাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবীতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা হয়েছে।
ভূটান (জংখা: འབྲུག་ཡུལ ড্রুক ইয়ুল আনুষ্ঠানিক নাম কিংডম অব ভুটান འབྲུག་རྒྱལ་ཁབ་ ড্রুক ইয়ুল খাপ,) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাজতন্ত্র। ভূটানের অধিবাসীরা নিজেদের দেশকে মাতৃভাষা জংখা ভাষায় 'দ্রুক ইয়ুল' বা 'বজ্র ড্রাগনের দেশ' নামে ডাকে। দেশটি ভারতীয় উপমহাদেশে হিমালয় পর্বতমালার পূর্বাংশে অবস্থিত। ভুটান উত্তরে চীনের তিব্বত অঞ্চল, পশ্চিমে ভারতের সিকিম ও তিব্বতের চুম্বি উপত্যকা, পূর্বে অরুণাচল প্রদেশ এবং দক্ষিণে আসাম ও উত্তরবঙ্গ দ্বারা পরিবেষ্টিত। ভুটান শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ "ভূ-উত্থান" থেকে যার অর্থ "উঁচু ভূমি"।সংস্কৃত ভাষায় ভোট বা ভোটান্ত বলতেও ভুুুটান দেশটিকে বোঝানো হয়। ভুটান সার্কের একটি সদস্য রাষ্ট্র এবং মালদ্বীপের পর দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম জনসংখ্যার দেশ। ভুটানের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর থিম্পু। ফুন্টসলিং ভুটানের প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র।
বীর্য একপ্রকার জৈবিক তরল যা যৌনসঙ্গমের শেষ পর্যায়ে চরম সুখানুভূতি সৃষ্টির সঙ্গে পুরুষাঙ্গ হতে নি:সৃত হয়। শুক্রাণূ সমৃদ্ধ পুরুষের বীর্যে নারীর ডিম্ব নিষিক্ত হলে জরায়ুতে মানব ভ্রূণের সৃষ্টি হয়। কেবল যৌনসঙ্গম নয়, যৌনানন্দ লাভের জন্য হস্তমৈথুনের মাধ্যমেও বীর্যস্খলন করা হয়ে থাকে। এছাড়া স্বপ্নদোষ মাধ্যমে বীর্যপাত হয়ে থাকে।
শিব (; Sanskrit: शिवः, Śiva, শিব হলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ দেবতা। সনাতন ধর্মের শাস্ত্রসমূহে তিনি পরমসত্ত্বা রূপে ঘোষিত। শিব সৃষ্টি-স্থিতি-লয়রূপ তিন কারণের কারণ, পরমেশ্বর- এটা তার প্রণাম মন্ত্রেই বার বার উঠে এসেছে। তিনি জন্মরহিত, শাশ্বত, সর্বকারণের কারণ; তিনি স্ব-স্বরূপে বর্তমান, সমস্ত জ্যোতির জ্যোতি; তিনি তুরীয়, অন্ধকারের অতীত, আদি ও অন্তবিহীন।
শাকিব খান (জন্ম ২৮ মার্চ ১৯৭৯) হচ্ছেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, গায়ক, চলচ্চিত্র সংগঠক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত অনন্ত ভালবাসা (১৯৯৯) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। তিনি গণমাধ্যমে "সুপারস্টার", "কিং খান" ও "ঢালিউড কিং" হিসাবে সম্বোধিত হন। তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা।শাকিব তার কর্মজীবনে একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আটটি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, তিনটি বাচসাস পুরস্কার ও চারটি সিজেএফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার। তিনি ২০১০ সালের ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না, ২০১২ সালের খোদার পরে মা, ২০১৫ সালের আরো ভালোবাসবো তোমায় এবং ২০১৭ সালের সত্তা চলচ্চিত্রের জন্য চারবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল নাট্যধর্মী সুভা (২০০৬), প্রণয়ধর্মী আমার প্রাণের স্বামী (২০০৭), প্রিয়া আমার প্রিয়া (২০০৮), ও বলবো কথা বাসর ঘরে (২০০৯), প্রণয়ধর্মী-হাস্যরসাত্মক আদরের জামাই (২০১১), মারপিট-প্রণয়ধর্মী ডন নাম্বার ওয়ান (২০১২), প্রণয়ধর্মী পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী (২০১৩), মারপিট-থ্রিলারধর্মীশিকারি (২০১৬), নবাব (২০১৭), নাট্যধর্মী রাজনীতি (২০১৭), সত্তা (২০১৭) ও প্রণয়ধর্মী-হাস্যরসাত্মক চালবাজ (২০১৮), ভাইজান এলো রে(২০১৮), নাকাব(২০১৮)। ২০১১ সালে মনের জ্বালা চলচ্চিত্রে তিনি প্রথমবারে মতো তিনি নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে গানে কন্ঠ দেন। ২০১৪ সালে তিনি হিরো: দ্যা সুপার স্টার চলচ্চিত্র দিয়ে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং পরবর্তীকালে পাসওয়ার্ড (২০১৯), বীর (২০২০) ও প্রিয়তমা চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন।