The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
বিজয় দিবস বাংলাদেশে বিশেষ দিন হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের সর্বত্র পালন করা হয়। প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়। ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রায় ৯১,৬৩৪ সদস্য বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এর ফলে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। ভারতেও এই দিনটি বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভূ-রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মায়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) উনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তার। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০–১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা বঙ্গবন্ধু, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
স্যার আইজ্যাক নিউটন (ইংরেজি: Sir Isaac Newton; ৪ জানুয়ারি ১৬৪৩ - ৩১ মার্চ ১৭২৭) প্রখ্যাত ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, প্রাকৃতিক দার্শনিক এবং আলকেমিস্ট। অনেকের মতে, নিউটন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী বিজ্ঞানী। ১৬৮৭ খ্রিস্টাব্দে তার বিশ্ব নন্দিত গ্রন্থ ফিলসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা প্রকাশিত হয় যাতে তিনি সর্বজনীন মহাকর্ষ এবং গতির তিনটি সূত্র বিধৃত করেছিলেন। এই সূত্র ও মৌল নীতিগুলোই চিরায়ত বলবিজ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে, আর তার গবেষণার ফলে উদ্ভূত এই চিরায়ত বলবিজ্ঞান পরবর্তী তিন শতক জুড়ে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার জগতে একক আধিপত্য করেছে। তিনিই প্রথম দেখিয়েছিলেন, পৃথিবী এবং মহাবিশ্বের সকল বস্তু একই প্রাকৃতিক নিয়মের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। কেপলারের গ্রহীয় গতির সূত্রের সাথে নিজের মহাকর্ষ তত্ত্বের সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে সমর্থ হয়েছিলেন। তার গবেষণার ফলেই সৌরকেন্দ্রিক বিশ্বের ধারণার পেছনে সামান্যতম সন্দেহও দূরীভূত হয় এবং বৈজ্ঞানিক বিপ্লব ত্বরান্বিত হয়।
মুজিব বর্ষ হলো বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালনের জন্য ঘোষিত বর্ষ। বাংলাদেশ সরকার ২০২০-২১ সালকে (১৭ই মার্চ ২০২০ থেকে ২৬ই মার্চ ২০২১ পর্যন্ত) মুজিব বর্ষ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়। বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অবিভক্ত ভারতের পূর্ববঙ্গে (বর্তমানে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে) ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০২০ সালের ১৭ই মার্চ তাঁর জন্মের ১০০ বছর পূর্তি হয়। তাই তাঁর এই জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্যই 'মুজিব বর্ষ' পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়াও ২০২১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতার অর্ধ-শত বার্ষিকীতে পদার্পণ করে। তাই ২০২০ ও ২০২১ সাল দুটি বাঙালির জাতীয় জীবনের দুটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী হলো ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর নয়মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরপূর্তি পালনের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃৃক ঘোষিত একটি বার্ষিক পরিকল্পনা। সরকার ২৬ মার্চ ২০২১ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের ঘোষণা দেয়।আভিধানিক ভাষায়, "সুবর্ণজয়ন্তী" শব্দটি মূলত কোনো ঘটনার ৫০ বছরপূর্তিকে নির্দেশ করে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ - ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি এশীয়দের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ (উচ্চারণ: [ʃad̪ʱinot̪a ɟud̪d̪ʱo]; শাধিনতা জুদ্ধো) বা মুক্তিযুদ্ধ (উচ্চারণ: [mukt̪iɟud̪d̪ʱo]; মুক্তিজুদ্ধো) হলো ১৯৭১ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি বিপ্লব ও সশস্ত্র সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবং বাঙালি গণহত্যার প্রেক্ষিতে এই জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পশ্চিম পাকিস্তান-কেন্দ্রিক সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে এবং নিয়মতান্ত্রিক গণহত্যা শুরু করে। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সাধারণ বাঙালি নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং পুলিশ ও ই.পি.আর. কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বীকার করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে গণবিদ্রোহ দমনে পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী শহর ও গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান ও বিমানযুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইসলামি দলগুলোর সমর্থন লাভ করে। সেনাবাহিনীর অভিযানে সহায়তার জন্য তারা ইসলামি মৌলবাদীদের নিয়ে আধা-সামরিক বাহিনী— রাজাকার, আল বদর ও আল শামস গঠন করে। পূর্ব পাকিস্তানের উর্দু-ভাষী বিহারিরাও সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে। পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের সহায়তাকারী আধা-সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা, উচ্ছেদ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যাসহ একাধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়। প্রায় এক কোটি বাঙালি শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং আরও তিন কোটি মানুষ দেশের অভ্যন্তরে উদ্বাস্তু হয়। বাঙালি ও উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতাকে বুদ্ধিজীবীরা গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। বাঙালি সামরিক, আধা-সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনী চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেনারেল এম. এ.
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারতীয় প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান। রাষ্ট্রপতি ভারতের আইনবিভাগ, শাসনবিভাগ ও বিচারবিভাগের সকল শাখার আনুষ্ঠানিক প্রধান এবং ভারতের সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। ভারতের রাষ্ট্রপতির দণ্ডিত ব্যক্তির দণ্ডাদেশ স্থগিত, হ্রাস বা দণ্ডিতকে ক্ষমা করার অধিকার রয়েছে।রাষ্ট্রপতি এক নির্বাচকমণ্ডলীর দ্বারা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। এই নির্বাচকমণ্ডলী গঠিত হয় ভারতীয় সংসদ (লোকসভা ও রাজ্যসভা) এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভার সদস্যদের নিয়ে। রাষ্ট্রপতির কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর। অতীতে দেখা গিয়েছে যে, শাসক দলের (লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল) মনোনীত প্রার্থীই রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। অনেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতি পুনরায় নির্বাচনে লড়তে পারেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, যাতে নির্বাচকমণ্ডলীতে প্রতি রাজ্যের জনসংখ্যা ও সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধায়কদের প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা এবং রাজ্য বিধানসভার সদস্যসংখ্যার সঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্যসংখ্যার সামঞ্জস্যবিধান করা যায়। কোনো প্রার্থী এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট পেতে ব্যর্থ হলে, একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পরাজয়শীল প্রার্থীদের ভোট অন্য প্রার্থীতে হস্তান্তরিত হতে থাকে (এবং সেই সঙ্গে সেই প্রার্থী নির্বাচন থেকে বাদ পড়তে থাকেন), যতক্ষণ না একজন সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেন। ভারতের উপরাষ্ট্রপতি অবশ্য লোকসভা ও রাজ্যসভার সকল সদস্যের (নির্বাচিত ও মনোনীত) প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন।যদিও ভারতীয় সংবিধানের ৫৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতি তার ক্ষমতা সরাসরি প্রয়োগ করতে পারেন, তবুও, কয়েকটি ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ছাড়া রাষ্ট্রপতির সব ক্ষমতাই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিপরিষদের কর্তৃত্বাধীন। ভারতের রাষ্ট্রপতি নতুন দিল্লিতে একটি এস্টেটে বাস করেন। এই এস্টেটটি রাষ্ট্রপতি ভবন নামে পরিচিত। রাষ্ট্রপতির অবসরযাপনের জন্য ছারাব্রা, শিমলা ও হায়দ্রাবাদে তিনটি রিট্রিট বিল্ডিং রয়েছে। হায়দ্রাবাদের রিট্রিট ভবনটির নাম রাষ্ট্রপতি নিলয়ম।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস যা ২৬শে মার্চ তারিখে পালিত বাংলাদেশের জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে (কাল রাত) তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করে। ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণের ডাক দেন। ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদ্যাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা
পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার মূল ভিত্তি। ‘পঞ্চায়েত’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি হিন্দি पंचायत থেকে। প্রাচীন ভারতে পাঁচজন সদস্য নিয়ে যে স্বশাসিত স্বনির্ভর গ্রামীণ পরিষদ গঠিত হত, তাকেই বলা হত পঞ্চায়েত। আধুনিককালে এই শব্দটির সঙ্গে যুক্ত হয় এক সমষ্টিগত চেতনা। ‘পঞ্চায়েত’ শব্দটির লোকপ্রচলিত অর্থ হয়ে দাঁড়ায় ‘পাঁচ জনের জন্য’। সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর বর্তমানে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের তৃতীয় স্তরের সরকার। বর্তমানে গ্রামবাংলাকে কেন্দ্র করে যে প্রশাসনিক, জনকল্যাণমূলক, বিচারবিভাগীয় ও প্রতিনিধিত্বমূলক স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত, তাকেই পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নামে অভিহিত করা হয়। ১৮৭০ সালে প্রথম বঙ্গীয় গ্রাম চৌকিদারি আইনের মাধ্যমে আধুনিক গ্রাম পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। স্বাধীনতার পর গণতান্ত্রিক ভারতে এই ব্যবস্থা তৃণমূলস্তর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন পাস হয় ও সংবিধান সংশোধন করা হয়। ১৯৫৭ সালে সর্বপ্রথম পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত আইন বিধিবদ্ধ হয়। ১৯৫৭ ও ১৯৬৩ সালের আইন অনুসারে পশ্চিমবঙ্গে চার-স্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু হয়। এরপর ১৯৭৩ সালে নতুন আইনের মাধ্যমে চালু হয় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা। ১৯৯১ সালে ভারতীয় সংবিধানের ৭৩তম সংশোধনী অনুসারে পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থাকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং ১৯৯২ সালে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত আইনটিকেও পুনরায় সংশোধিত করা হয়।
উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী (১২ই মে, ১৮৬৩ - ২০শে ডিসেম্বর, ১৯১৫) বিখ্যাত বাঙালি শিশুসাহিত্যিক, বাংলা ছাপাখানার অগ্রপথিক। তিনি একাধারে লেখক চিত্রকর, প্রকাশক, শখের জ্যোতির্বিদ, বেহালাবাদক ও সুরকার ছিলেন।সন্দেশ পত্রিকা তিনিই শুরু করেন যা পরে তার পুত্র সুকুমার রায় ও পৌত্র সত্যজিৎ রায় সম্পাদনা করেন। গুপি-গাইন-বাঘা-বাইন, টুনটুনির বই ইত্যাদি তারই অমর সৃষ্টি।
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] (শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ – ৪ জুলাই ১৯০২) নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত (বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...," ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা, যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তার রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান ইতিমধ্যে বসানো সম্পন্ন হয়েছে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু। পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।
মুহাম্মাদ (আরবি: مُحَمَّد; ২৯ আগস্ট ৫৭০ – ৮ জুন ৬৩২; মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত), ছিলেন একজন আরবের ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক নেতা এবং ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। ইসলামী মতবাদ অনুসারে, তিনি হলেন ঐশ্বরিকভাবে প্রেরিত ইসলামের সর্বশেষ নবী (আরবি: النبي; আন-নাবিয়্যু), তথা ‘বার্তাবাহক’ (আরবি: الرسول; আল-রাসুল), যার উপর ইসলামের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কুরআন অবতীর্ণ হয়। আদম, ইব্রাহিম, মূসা, যীশু এবং অন্যান্য নবীদের মতোই মুহাম্মদ একেশ্বরবাদী শিক্ষা প্রচার করার জন্য প্রেরিত। অমুসলিমদের মতে, তিনি ইসলামি জীবনব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল ছিলেন, তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সাফল্য। কুরআনের পাশাপাশি তার শিক্ষা এবং অনুশীলনগুলি ইসলামী ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে।
সিপাহি বিদ্রোহ বা সৈনিক বিদ্রোহ ১৮৫৭ সালের ১০ মে মিরাট শহরে শুরু হওয়া ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর সিপাহিদের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহ। ক্রমশ এই বিদ্রোহ গোটা উত্তর ও মধ্য ভারতে (অধুনা উত্তরপ্রদেশ, বিহার, উত্তর মধ্যপ্রদেশ ও দিল্লি অঞ্চল ) ছড়িয়ে পড়েছিল। এই সব অঞ্চলে বিদ্রোহীদের দমন করতে কোম্পানিকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। ১৮৫৮ সালের ২০ জুন গোয়ালিয়রে বিদ্রোহীদের পরাজয়ের পরই একমাত্র বিদ্রোহ দমন করা সম্ভব হয়। সিপাহি বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ, মহাবিদ্রোহ, ভারতীয় বিদ্রোহ, ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ ও ১৮৫৮ সালের গণ-অভ্যুত্থান নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। এই বিদ্রোহ দমন করা হয় নির্মমভাবে। বহু নিরপরাধ নরনারী, শিশু বৃদ্ধদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়।
কোষবিদ্যায় মাইটোসিস () হল কোষ চক্রের একটি ধাপ যেখানে ক্রোমোজোম অনুলিপিত হয়ে সমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি নতুন সৃষ্ট নিউক্লিয়াসে গমন করে। এ বিভাজনের ফলে ক্রোমোজোমের সংখ্যা পরিবর্তন ছাড়াই জিনগতভাবে সমবৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কোষ সৃষ্টি হয়। সাধারণত, মাইটোসিস বিভাজনের (নিউক্লিয়াসের বিভাজন) পূর্বে ইন্টারফেজ পর্যায়ের S ধাপ (যে ধাপে ডিএনএ অনুলিপন সম্পন্ন হয়) সংঘটিত হয় এবং মাইটোসিসের পরে সম্পন্ন হয় টেলোফেজ ও সাইটোকাইনেসিস। সাইটোকাইনেসিস পর্যায়ে একটি কোষের সাইটোপ্লাজম, কোষঅঙ্গাণু এবং কোষঝিল্লি বিভক্ত হয়ে প্রায় সমান কোষীয় উপাদান সমৃদ্ধ দুটি কোষ সৃষ্টি হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধীত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য সংবিধানের ১৪২নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
সত্যজিৎ রায় (২ মে ১৯২১ – ২৩ এপ্রিল ১৯৯২) ছিলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালক এবং লেখক। তাঁকে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। সত্যজিতের জন্ম কলকাতা শহরে সাহিত্য ও শিল্প সমাজে খ্যাতনামা রায় পরিবারে। তাঁর পূর্বপুরুষের ভিটা ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কিশোরগঞ্জে (বর্তমানে বাংলাদেশ) কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। সত্যজিতের কর্মজীবন একজন বাণিজ্যিক চিত্রকর হিসেবে শুরু হলেও প্রথমে কলকাতায় ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা জঁ রনোয়ারের সাথে সাক্ষাৎ ও পরে লন্ডন শহরে সফররত অবস্থায় ইতালীয় নব্য বাস্তবতাবাদী চলচ্চিত্র লাদ্রি দি বিচিক্লেত্তে (ইতালীয়: Ladri di biciclette, বাইসাইকেল চোর) দেখার পর তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ হন।
রাষ্ট্র বলতে এমন এক রাজনৈতিক সংগঠনকে বোঝায় যা কোন একটি ভৌগোলিক এলাকা ও তৎসংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার সার্বভৌম ক্ষমতা রাখে। রাষ্ট্র সাধারণত একগুচ্ছ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে। এসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ভৌগোলিক সীমার ভেতর বসবাসকারী সমাজের সদস্যদের শাসনের জন্য নিয়ম-কানুন তৈরি করে। যদিও একথা ঠিক যে রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পাওয়া না পাওয়া বহুলাংশে নির্ভর করে, রাষ্ট্র হিসেবে তার উপর প্রভাব রাখা ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির উপর।
কোষ বিভাজন একটি মৌলিক ও অত্যাবশ্যকীয় প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে জীবের দৈহিকবৃদ্ধি ও বংশ বৃদ্ধি ঘটে । যে প্রক্রিয়ায় জীব কোষের বিভক্তির মাধ্যমে একটি থেকে দুটি বা চারটি কোষের সৃষ্টি হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে । কোষ বিভাজন সাধারণত বৃহত্তর কোষ চক্রের অংশ হিসাবে ঘটে। বিভাজনের ফলে সৃষ্ট নতুন কোষকে অপত্য কোষ (Daughter cell) এবং যে কোষটি বিভাজিত হয় তাকে মাতৃ কোষ (Mother cell) বলে। সুকেন্দ্রিক জীবে দুইরকম কোষ বিভাজন দেখা যায়; একটি হলো বর্ধনশীল কোষ বিভাজন, যেখানে বংশানুগতভাবে অপত্য কোষগুলো এবং মাতৃকোষ অভিন্ন (মাইটোসিস), অন্যটি হলো প্রজনন সংক্রান্ত কোষ বিভাজন, যেখানে অপত্য কোষগুলিতে ক্রোমোজোমের সংখ্যা অর্ধেক হ্রাস পেয়ে হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট উৎপন্ন করে (মিয়োসিস)। কোষবিদ্যায় মাইটোসিস হলো কোষ চক্রের একটি অংশ, যেখানে প্রতিলিপি করা ক্রোমোজোমগুলি দুটি নতুন নিউক্লিয়াসে বিভক্ত হয়। এই কোষ বিভাজন জিনগতভাবে অভিন্ন কোষের জন্ম হয় যাদের ক্রোমোজোমের মোট সংখ্যা বজায় থাকে। সাধারণত মাইটোসিস (নিউক্লিয়াসের বিভাজন) এর পূর্বে ইন্টারফেজের এস পর্যায় (যখন ডিএনএ প্রতিলিপি হয়) হয় এবং এটির পরে টেলোফেজ এবং সাইটোকাইনেসিস সম্পন্ন হয়; যখন একটি কোষের সাইটোপ্লাজম, অঙ্গাণু এবং কোষ ঝিল্লি বিভাজিত হয়ে নতুন সৃষ্ট কোষ দুটির মধ্যে প্রায় সমানভাবে বিভক্ত হয়ে যায়। মাইটোসিসের বিভিন্ন ধাপগুলি একসাথে একটি প্রাণীর কোষ চক্রের মাইটোটিক (এম) পর্বকে সংজ্ঞায়িত করে। ওয়াল্টার ফ্লেমিং ১৮৮২ সালে সামুদ্রিক সালামান্ডার (Triturus maculosa) কোষে প্রথমবারের মতো কোষ বিভাজন লক্ষ্য করেন।
থ্যালাসেমিয়া (ইংরেজি: Thalassemia) একটি অটোজোমাল মিউট্যান্ট প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত বংশগত রক্তের রোগ। এই রোগে রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিন কণার উৎপাদনে ত্রুটি হয়। থ্যালাসেমিয়া ধারণকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেনস্বল্পতা বা “অ্যানিমিয়া”তে ভুগে থাকেন। অ্যানিমিয়ার ফলে অবসাদগ্রস্ততা থেকে শুরু করে অঙ্গহানি ঘটতে পারে। থ্যালাসেমিয়া দুইটি প্রধান ধরনের হতে পারে: ১) আলফা থ্যালাসেমিয়া ২) বিটা থ্যালাসেমিয়া। সাধারণভাবে আলফা থ্যালাসেমিয়া, ß থ্যালাসেমিয়া থেকে কম তীব্র। আলফা থ্যালাসেমিয়া বিশিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে রোগের উপসর্গ মৃদু বা মাঝারি প্রকৃতির হয়ে থাকে । অন্যদিকে বিটা থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে রোগের তীব্রতা বা প্রকোপ অনেক বেশি; এক-দুই বছরের শিশুর ক্ষেত্রে ঠিকমত চিকিৎসা না করলে এটি শিশুর মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
মানুষকে সুষ্ঠু, স্বাধীন এবং সুশৃংখলভাবে পরিচালনার জন্য যে নিয়ম-কানুন তৈরি করা হয় তাকে আইন বলে। আইনের ইংরেজি প্রতিশব্দ Law যা Lag নামক শব্দ থেকে উদ্ভূত। Lag এর আভিধানিক অর্থ স্থির, অপরিবর্তনীয় এবং যা সর্বত্র সমানভাবে প্রযোজ্য। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আইন হলো সার্বভৌম শক্তি কর্তৃক বলবৎযোগ্য বিধান, যা সকলের জন্য অবশ্য পালনীয়।
সাতই মার্চের ভাষণ ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মার্চ ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত এক ঐতিহাসিক ভাষণ। তিনি উক্ত ভাষণ বিকেল ২টা ৪৫ মিনিটে শুরু করে বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে শেষ করেন। উক্ত ভাষণ ১৮ মিনিট স্থায়ী হয়।এই ভাষণে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। এই ভাষণের একটি লিখিত ভাষ্য অচিরেই বিতরণ করা হয়েছিল। এটি তাজউদ্দীন আহমদ কর্তৃক কিছু পরিমার্জিত হয়েছিল। পরিমার্জনার মূল উদ্দেশ্য ছিল সামরিক আইন প্রত্যাহার এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবীটির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা। ১৩টি ভাষায় ভাষণটি অনুবাদ করা হয়। ১৩ তম হিসাবে মাহাতো নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর কুড়মালি ভাষায় ভাষণটি অনুবাদ করা হয়, যা নৃ তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ভাষায় ১ম অনুবাদ। নিউজউইক ম্যাগাজিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০১৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর ইউনেস্কো এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
প্রতি বৎসর বিভিন্ন দিনে বিশ্বব্যাপী নানা "দিবস" পালিত হয়। এই সকল বৈশ্বিক দিবস বা বিশ্ব দিবস বা আন্তর্জাতিক দিবসসমূহের তালিকা এই পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো। এই সকল দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে - কোন একটি নির্দিষ্ট দিনে আন্তর্জাতিকভাবে সাম্প্রতিককালের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধি বা ক্ষেত্র বিশেষে কোন অতীত ঘটনা স্মরণ বা উদ্যাপন করা।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি বিশেষ দিবস। প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সকল বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। এ কাজে বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বাংলা: বাংলাদেশ গণসংঘ) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়।
জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত মুক্তিযোদ্ধা ও নিহত বেসামরিক বাঙালি ও অবাঙ্গালিদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত একটি স্মারক স্থাপনা। এটি সাভারে অবস্থিত। এর নকশা প্রণয়ন করেছেন স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন। এখানে মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের দশটি গণকবর রয়েছে। বিদেশি রাষ্ট্রনায়কগণ সরকারিভাবে বাংলাদেশ সফরে আগমন করলে এই স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন রাষ্ট্রাচারের অন্তর্ভুক্ত।
একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সহ পশ্চিমবঙ্গ তথা সমস্ত বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও সুপরিচিত। বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে অনেক তরুণ শহীদ হন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো রফিক, জব্বার, শফিউল, সালাম, বরকত সহ অনেকেই। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ৫ই আগষ্ট, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।
নীলচাষ বিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয় এবং দ্রুত সমগ্র বাংলায় এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। বিদ্রোহের পিছনে কাজ করে অর্ধ শতাব্দী ধরে নীল চাষীদের উপরে নির্মম নিপীড়ন ও নীল চাষ আইন প্রণয়ন।ভারত উপমহাদেশের মাটি নীল চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী হওয়ায় ব্রিটিশ নীলকরেরা নীলচাষে বিপুল পুঁজি বিনিয়োগ করে। নদীয়া, যশোর, বগুড়া, রংপুর প্রভৃতি জেলায় নীলচাষ শুরু হয়। উনিশ শতকের শেষের দিকে নীলচাষ অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক না হওয়ায় কৃষকরা ধান ও পাট চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ব্রিটিশ নীলকরেরা অত্যাচার আর নিপীড়নের মাধ্যমে নীলচাষে বাধ্য করলে আন্দোলন গড়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় এক পর্যায়ে বাংলায় নীল চাষ বিলুপ্ত হয়।
হরমোন (ইংরেজি: Hormone, গ্রিক: ὁρμή) যে জৈব-রাসায়নিক তরল যা শরীরের কোনো কোষ বা গ্রন্থি থেকে শরীরের একটি নির্দিষ্ট অংশে নিঃসরিত হয়ে রক্তরস বা ব্যাপন প্রক্রিয়ায় উৎপত্তিস্থল থেকে দূরে বাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্রিয়ার পর ধ্বংস প্রাপ্ত হয় তাদের হরমোন বলে। হরমোন কথার অর্থ হল 'জাগ্রত করা'বা 'উত্তেজিত করা'।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকাণ্ড সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী (গুজরাটি: મોહનદાસ કરમચંદ ગાંધી উচ্চারণ )(মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী) বা মহাত্মা গান্ধী (২রা অক্টোবর, ১৮৬৯ - ৩০শে জানুয়ারি, ১৯৪৮) একজন অন্যতম ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিদের একজন এবং প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক নেতা। তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। এর মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণ তাদের অভিমত প্রকাশ করে । এ আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের উপর ভিত্তি করে এবং এটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি, সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত।২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ, দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী (১২ ডিসেম্বর ১৮৮০ - ১৭ নভেম্বর ১৯৭৬ - যিনি মওলানা ভাসানী নামেও পরিচিত) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম তৃণমূল রাজনীতিবিদ ও গণআন্দোলনের নায়ক, যিনি জীবদ্দশায় ১৯৪৭-এ সৃষ্ট পাকিস্তান ও ১৯৭১-এ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছে “মজলুম জননেতা” হিসাবে সমধিক পরিচিত। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায়ও তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময়ই তিনি মাওপন্থী কম্যুনিস্ট তথা বামধারার রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তার অনুসারীরা অনেকে এজন্য তাকে "লাল মওলানা" নামেও ডাকতেন। তিনি কৃষকদের জন্য পূর্ব পাকিস্তান কৃষক পার্টির করা জন্য সারাদেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী নেতা। তিনি পঞ্চাশের দশকেই নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, পাকিস্তানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ একটি অচল রাষ্ট্রকাঠামো। ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দের কাগমারী সম্মেলনে তিনি পাকিস্তানের পশ্চিমা শাসকদের “আস্ সালামু আলাইকুম” বলে সর্বপ্রথম পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতার ঐতিহাসিক ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (২৫ জানুয়ারি ১৮২৪ – ২৯ জুন ১৮৭৩) ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি এবং নাট্যকার ও প্রহসন রচয়িতা। তাকে বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব গণ্য করা হয়। ঐতিহ্যের অনুবর্তিতা অমান্য করে নব্যরীতি প্রবর্তনের কারণে তাকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
উদারনীতিবাদ বা উদারপন্থী মতবাদ (ইংরেজি: Liberalism)) সাম্য ও মুক্তির উপর নির্ভর করে সৃষ্ট একধরনের বৈশ্বিক রাজনৈতিক দর্শন। এ দুইটি নীতির উপর ভিত্তি করে উদারতাবাদকে অনেক বিস্তৃত আকার দেওয়া হয়েছে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন, জনগণের অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, মুক্তবাণিজ্য, ব্যক্তিগত মালিকানা প্রভৃতি ধারণার উদ্ভব ঘটেছে এ দর্শনের উপর ভিত্তি করে। উদারতাবাদের ইংরেজি Liberalism উদ্ভব হয়েছে লাতিন শব্দ liberalis থেকে।উদারনীতিবাদের সাধারণ অর্থ হলো রাষ্ট্রীয় কতৃত্ববাদ এর বিরুদ্ধে ব্যক্তিস্বাধীনতা নীতি প্রতিষ্ঠা করা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হব হাউসের মতে উদারনীতিবাদ হলো এমন একটি মতবাদ যেখানে প্রতিটি মানুষের স্বাধীনতা জীবনের কণ্ঠস্বর তাদের চিন্তা বিকাশ-এ বিকশিত হয়। উদারনীতিবাদের প্রধান ও প্রতিপাদই হলো স্বাধীনতা।
সাঁওতাল বিদ্রোহ বা সান্তাল হুল এর সূচনা হয় ১৮৫৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও বিহারের ভাগলপুর জেলায়। ইংরেজ আমলে স্থানীয় জমিদার, মহাজন ও ইংরেজ কর্মচারীদের অন্যায় অত্যাচারের শিকার হয়ে সাঁওতালরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে।এটি ছিল তাদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম। তাদের এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় সিধু, কানু, চাঁদ,ভৈরব প্রমুখ। ১৭৯৩ সালে লর্ড কর্নওয়ালিশের প্রবর্তিত চিরস্থায়ি বন্দোবস্তের ফলে তাদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছিল। তাই সিপাহী বিদ্রোহের আগে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সাঁওতালরা সোচ্চার হয়েছিল।
কারক শব্দটির ব্যাকরণগত অর্থ হলো- যা ক্রিয়া সম্পাদন করে। বাংলা ব্যাকরণ শাস্ত্রে, কারক বলতে মূলত ক্রিয়ার সঙ্গে বাক্যের বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের সম্পর্ককে নির্দেশ করে। কারকের সম্পর্ক বোঝাতে বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের সঙ্গে সাধারণত বিভক্তি ও অনুসর্গ যুক্ত হয়। বাক্যস্থ কোনো পদের সঙ্গে ক্রিয়াপদের সম্পর্ক বিদ্যমান থাকলে শুধুমাত্র তখনই কারক হবে।
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন (সাধারণত বেগম রোকেয়া নামে অধিক পরিচিত; ৯ ডিসেম্বর ১৮৮০ - ৯ ডিসেম্বর ১৯৩২) হলেন একজন বাঙালি চিন্তাবিদ, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি বাঙালি মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং প্রথম বাঙালি নারীবাদী। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে বিবিসি বাংলার 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি' জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন বেগম রোকেয়া। ছোটগল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী ও শ্লেষাত্মক রচনায় রোকেয়ার স্টাইল ছিল স্বকীয় বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। উদ্ভাবনা, যুক্তিবাদিতা এবং কৌতুকপ্রিয়তা তার রচনার সহজাত বৈশিষ্ট্য। তার প্রবন্ধের বিষয় ছিল ব্যাপক ও বিস্তৃত। বিজ্ঞান সম্পর্কেও তার অনুসন্ধিৎসার পরিচয় পাওয়া যায় বিভিন্ন রচনায়। মতিচূর (১৯০৪) প্রবন্ধগ্রন্থে রোকেয়া নারী-পুরুষের সমকক্ষতার যুক্তি দিয়ে নারীদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় আহ্বান জানিয়েছেন এবং শিক্ষার অভাবকে নারীপশ্চাৎপদতার কারণ বলেছেন। তার সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৫) নারীবাদী ইউটোপিয়ান সাহিত্যের ক্লাসিক নিদর্শন বলে বিবেচিত। পদ্মরাগ (১৯২৪) তার রচিত উপন্যাস। অবরোধ-বাসিনীতে (১৯৩১) তিনি অবরোধপ্রথাকে বিদ্রূপবাণে জর্জরিত করেছেন।রোকেয়ার কর্ম ও আদর্শ উদ্যাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর ৯ই ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস উদ্যাপন করে এবং বিশিষ্ট নারীদের অনন্য অর্জনের জন্য বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করে।
পুষ্পা: দ্য রাইজ - পার্ট ১ একটি আসন্ন ভারতীয় তেলুগু ভাষার ক্রাইম অ্যাকশন থ্রিলার চলচ্চিত্র, যা রচনা ও পরিচালনা করেছেন সুকুমার। এতে মূখ্য চরিত্রে অল্লু অর্জুন, রশ্মিকা মন্দানা, ফাহাদ ফজিল, প্রকাশ রাজ ও জগপতি বাবু এবং প্বার্শ চরিত্রে হরিশ উথামান, বেন্নেলা কিশোর এবং অনসূয়া ভরদ্বাজ অভিনয় করেছেন। এতে সঙ্গীতে সুর দিয়েছেন দেবী শ্রী প্রসাদ এবং চলচ্চিত্রটি মুত্তামশেট্টি মিডিয়া এর সাথে মৈত্রী মুভি মেকার্সের অধীনে নির্মিত হয়েছে। ছবিটি একই সাথে তেলুগু, মালয়ালম, তামিল, কন্নড় এবং হিন্দি ভাষায় মুক্তি দেওয়া হবে।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (২৬ জুন ১৮৩৮ - ৮ এপ্রিল ১৮৯৪) ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি ঔপন্যাসিক। বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশে তার অসীম অবদানের জন্যে তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। তাকে সাধারণত প্রথম আধুনিক বাংলা ঔপন্যাসিক হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে গীতার ব্যাখ্যাদাতা হিসাবে, সাহিত্য সমালোচক হিসাবেও তিনি বিশেষ খ্যাতিমান। তিনি জীবিকাসূত্রে ব্রিটিশ রাজের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষার আদি সাহিত্যপত্র বঙ্গদর্শনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছদ্মনাম হিসেবে কমলাকান্ত নামটি বেছে নিয়েছিলেন। তাকে বাংলা উপন্যাসের জনক বলা হয়। এছাড়াও তিনি বাংলা সাহিত্যের সাহিত্য সম্রাট হিসেবে পরিচিত।বঙ্কিমচন্দ্র রচিত আনন্দমঠ (১৮৮২) উপন্যাসের কবিতা বন্দে মাতরম ১৯৩৭ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কর্তৃক ভারতের জাতীয় স্তোত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
জাতীয় সংসদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনসভা। এককক্ষ বিশিষ্ট এ আইনসভার সদস্য সংখ্যা ৩৫০; যার মধ্যে ৩০০ জন সংসদ সদস্য জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন এবং অবশিষ্ট ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যগণ নির্বাচিত ৩০০ সংসদ সদস্যের ভোটে (পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিতে) নির্বাচিত হন। সংসদের মেয়াদকাল পাঁচ বছর।
বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক
বাংলাদেশের মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক ( সিএজি ) হ'ল দেশের সর্বোচ্চ অডিট ইনস্টিটিউশন (এসএআই)। বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশে এসএআই-এর মতো প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের সংবিধান অনুসরণে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই ইনস্টিটিউটটি প্রজাতন্ত্রের হিসাব রক্ষণ করার জন্যে দায়বদ্ধ এবং সরকার কর্তৃক অর্থায়নে সংস্থাগুলি ও কর্তৃপক্ষের সমেত বাংলাদেশ সরকারের সমস্ত প্রাপ্তি এবং ব্যয়ের নিরীক্ষণ করে। সিএজি- র প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সংসদে স্থায়ী কমিটি আলোচনা করে।
যৌনসঙ্গম (যৌনমিলন, সঙ্গম, মৈথুন, রতিক্রিয়া, রতিমিলন; যৌন সংসর্গ, যৌন সহবাস, সহবাস ইত্যাদি) হচ্ছে একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা দ্বারা মূলত যৌনআনন্দ বা প্রজনন বা উভয় ক্রিয়ার জন্য একজন পুরুষের উত্থিত শিশ্ন একজন নারীর যোনিপথে অনুপ্রবেশ করানো ও সঞ্চালনা করাকে বোঝায়। অন্যান্য অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গমের মধ্যে রয়েছে পায়ুসঙ্গম (লিঙ্গ দ্বারা মলদ্বার অনুপ্রবেশ), মুখমৈথুন, অঙ্গুলিসঞ্চালন (আঙ্গুল দ্বারা যৌন অনুপ্রবেশ), যৌনখেলনা ব্যবহার দ্বারা অনুপ্রবেশ (বন্ধনীযুক্ত কৃত্রিম শিশ্ন)। এই সকল কার্যক্রম মূলত মানবজাতি কর্তৃক দুই বা ততোধিকের মধ্যেকার শারীরিক ও মানসিক অন্তরঙ্গতা জনিত পরিতোষ লাভের জন্য এবং সাধারণত মানব বন্ধনে ভূমিকা রাখতে সম্পাদিত হয়ে থাকে।যৌনসঙ্গম বা অপরাপর যৌনকর্ম কীভাবে সংজ্ঞায়িত হয় তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, যা যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর উপর প্রভাব রাখতে পারে। যদিও যৌনসঙ্গম, নির্দিষ্টভাবে মৈথুন বলতে সাধারণত শিশ্ন-জরায়ুজ অনুপ্রবেশ ও সন্তান উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করা হয়, এর দ্বারা সাধারণভাবে অন্তর্ভেদী মুখমৈথুন ও বিশেষত শিশ্ন-পায়ুজ সঙ্গমকেও নির্দেশ করা হয়। এটি সাধারণত যৌন অনুপ্রবেশকে নির্দেশ করে, যেখানে অননুপ্রবেশকারী যৌনতাকে "বহির্সঙ্গম" নামে নামকরণ করা হয়, কিন্তু অনুপ্রবেশকারী যৌনকর্মকে যৌনসঙ্গম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যৌনতা বা ইংরেজি ভাষায় সেক্স, প্রায়শই যৌনসঙ্গমের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যবহৃত রূপ, যা দ্বারা যে কোন প্রকারের যৌনক্রিয়াকে বোঝানো হতে পারে। যেহেতু এসকল যৌনকর্মের সময়ে মানুষ যৌনবাহিত সংক্রমণের সংস্পর্শের ঝুঁকিতে থাকতে পারে, নিরাপদ যৌনচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও অনাভেদী যৌনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়ে থাকে।বিভিন্ন আইনি বিধিমালা যৌনসঙ্গমমের সামাজিক অনুমতিপ্রদানের জন্য বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতির মাধ্যমে বৈবাহিক রীতির প্রবর্তন, প্রচলন ও সমর্থন করেছে এবং বেশ কিছু যৌনকর্মের বিপরীতে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনকে স্থান দিয়েছে, যেমন বিবাহপূর্ব ব্যভিচার ও বিবাহপরবর্তী পরকীয়া, পায়ুকাম, পশুকাম, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনচর্চা ও অজাচার। ধর্মীয় বিশ্বাসও যৌনসঙ্গমসহ অন্যান্য যৌনাচার বিষয়ক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা পালন করে, যেমন কুমারীত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত, অথবা আইনি বা সরকারি নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়াবলি। বিভিন্ন ধর্মভেদে ও একই ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণীভেদে যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও কিছু বিষয়ে অভিন্নতা রয়েছে, যেমন ব্যভিচারের নিষেধাজ্ঞা।
রামমোহন রায়, যিনি সচরাচর রাজা রামমোহন রায় বলে অভিহিত, (২২ মে, ১৭৭২ – সেপ্টেম্বর ২৭, ১৮৩৩) বাংলার নবজাগরণের আদি পুরুষ। তিনি প্রথম ভারতীয় যিনি ধর্মীয়-সামাজিক পুনর্গঠন আন্দোলন ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি একজন বাঙালি দার্শনিক। তৎকালীন রাজনীতি, জনপ্রশাসন, ধর্ম এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পেরেছিলেন। তিনি সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত হয়েছেন সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টার জন্য। ভারতে দীর্ঘ কাল যাবৎ বৈষ্ণব বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণ যেতে বা আত্মাহুতি দিতে বাধ্য করা হত।
হিমোফিলিয়া (ইংরেজি: Haemophilia, অথবা hemophilia) হচ্ছে একটি বংশানুক্রমিক জিনগত রোগ। এই রোগে রক্ত তঞ্চনে সমস্যা হয় তাই একবার রক্তনালী কেটে গেলে আর রক্তপাত বন্ধ হয় না। শুধু পুরুষলোক এই রোগে আক্রান্ত হয় এবং স্ত্রীগণ এই রোগের বাহক, কারণ স্ত্রীদের দুটি এক্স ক্রোমোজোম থাকে আর পুরুষদের একটি এক্স ও অপরটি ওয়াই ক্রোমোজোম। ফ্যাক্টর VIII এর অভাবে হিমোফিলিয়া এ (A) এবং ফ্যাক্টর IX এর অভাবে হিমোফিলিয়া বি (B) রোগ হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America; উচ্চারণ: ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি স্বশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি "আমেরিকা" নামেও পরিচিত। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি রাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি অঞ্চলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত; আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যটি মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। এছাড়াও ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে পাাঁচটি অঞ্চল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
বিটিএস (কোরীয়: 방탄소년단) (যারা বাংতান বয়েজ নামেও পরিচিত,) হলো ৭ সদস্যের দক্ষিণ কোরিয়ান বয় ব্যান্ড। এ ৭ সদস্যের ব্যান্ড বিগহিট মিউজিক এর অধীনে ২০১০ সালে ট্রেইনি হিসেবে এবং ২০১৩ সালে ২ কুল ৪ স্কুল অ্যালবাম নিয়ে পুরো বিশ্বের সামনে নিজেদের আত্মপ্রকাশ করে। তারা মূলত হিপ হপ সঙ্গীতের গ্রুপ হলেও তাদের গানগুলোতে বিভিন্ন সঙ্গীতের ধরন প্রকাশ পায়। গানের মাধ্যমে তারা সাহিত্য, মনোস্তাত্বিক বিষয় এবং নিজেকে ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরে।
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার ও ফরাসি মিত্রদের সাথে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পলাশী নামক স্থানে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তাই পলাশীর যুদ্ধ নামে পরিচিত। ১৭৫৭ সালের জুন ২৩ তারিখে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। এই যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হন এবং ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সূচিত হয়। এটি ব্রিটিশদের দ্বিতীয় যুদ্ধ ছিল দক্ষিণ এশিয়াতে ইঙ্গ-মুঘল যুদ্ধর পর।
জিয়াউর রহমান (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ৩০ মে ১৯৮১) ছিলেন বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন সেনাপ্রধান এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাঙালি জনগণের উপর আক্রমণ করার পর তিনি তার পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে বিদ্রোহ করেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরে ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা সমর্থনে একটি বিবৃতি পাঠ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করে। তবে মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকার সময় সংবিধান লঙ্ঘন, শেখ মুজিবের আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের অভিযোগে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) তার বীর উত্তম খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তার খেতাব বাতিল করা হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে সরিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর ১৯৮১ সালের ৩০শে মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে নির্মমভাবে নিহত হন।
যোনি (লাতিন: ভ্যাজাইনা) স্ত্রীদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা একই সঙ্গে প্রজননতন্ত্র এবং রেচনতন্ত্রে অংশ।যোনি নারীর প্রজননতন্ত্রের বহির্ভাগ। যৌনসঙ্গম কালে পুরুষ তার লিঙ্গ নারীর যোনীতে প্রবিষ্ট করে এবং অঙ্গচালনার মাধ্যমে বীর্য নিক্ষেপ করে। এই বীর্য নারীর জরায়ুতে অবস্থিত ডিম্ব নিষিক্ত করে মানব ভ্রূণের জন্ম দিতে সক্ষম। অন্যদিকে, মূত্র ও নারীর মাসিক রজঃস্রাব কালে যোনীপথেই রক্তের নির্গমন হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় যোনীপথেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।বাংলায় যোনীর অনেক প্রতিশব্দ রয়েছে যথা স্ত্রীযোনী, যোনিপথ, যৌননালী, জনননালী ইত্যাদি। যৌনাঙ্গ, যৌনকর্ম ইত্যাদি শব্দও যোনী থেকে উদ্ভূত। যোনী হলো স্ত্রী প্রজনানঙ্গ যা জরায়ু থেকে স্ত্রীদেহের বাইরের অংশ অবধি পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ফাইব্রোমাসকুলার (তন্তু-পেশিময়) নলাকার অংশ। মানুষ ছাড়াও অমরাবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী ও মারসুপিয়াল প্রাণীতে, যেমন ক্যাঙ্গারু অথবা স্ত্রী পাখি, মনোট্রিম ও কিছু সরীসৃপের ক্লোকাতে যোনী বিদ্যমান। স্ত্রী কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণীরও যোনী আছে, যা মূলত ওভিডাক্টের শেষ প্রান্ত।
কলকাতা বা কোলকাতা ([kolkata] (শুনুন)) হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ায় কলকাতা ৩য় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক)$২৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বই ও নতুন দিল্লির ঠিক পর ৩য় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। এছাড়াও কলকাতা শহর,, মুম্বাই এবং নতুন দিল্লীর পর দক্ষিণ এশিয়ার ৩য় ধনী শহর|সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।
১৯৭১ বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড বলতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টুকুতেই পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের জ্ঞানী-গুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করাকে বুঝায়। ১৯৭১ এর ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তান বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জেতা সম্ভব না, তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দুর্বল এবং পঙ্গু করে দেয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিজ নিজ গৃহ হতে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। এই পরিকল্পিত গণহত্যাটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। বন্দী অবস্থায় বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত লাশ রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়। অনেকের লাশ শনাক্তও করা যায়নি, পাওয়াও যায়নি বহু লাশ। ১৯৭১ এর ১৪ ডিসেম্বরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পালিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বুদ্ধিজীবী হত্যার স্মরণে বাংলাদেশের ঢাকায় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ডাকবিভাগ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে একটি স্মারক ডাকটিকিটের সিরিজ বের করেছে।
'পর্যায় সারণী' হচ্ছে বিভিন্ন মৌলিক পদার্থকে একত্রে উপস্থাপনের একটি আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত ছক। আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত মৌলসমূহকে তাদের ইলেকট্রন বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে, ধর্মাবলী বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণীতে ও পর্যায়ে বিভক্ত করে মৌলসমূহের পারমাণবিক সংখ্যার ক্রমানুসারে পর্যায় সারণীতে সাজানো হয়েছে। পর্যায় সারণিতে মোট ১১৮টি মৌল রয়েছে।
ভারতের সংবিধান ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন। এই সংবিধানে সরকারের গঠন, কার্যপদ্ধতি, ক্ষমতা ও কর্তব্য নির্ধারণ; মৌলিক অধিকার, নির্দেশমূলক নীতি, এবং নাগরিকদের কর্তব্য নির্ধারণের মাধ্যমে দেশের মৌলিক রাজনৈতিক আদর্শের রূপরেখাটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদে ২৮৪ জনের সই করলে গৃহীত হয় এবং এই দিনটি জাতীয় আইন দিবস হিসেবে পরিচিত। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে এই সংবিধান কার্যকরী হয়। উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ঘোষণার স্মৃতিতে ২৬ জানুয়ারি তারিখটি সংবিধান প্রবর্তনের জন্য গৃহীত হয়েছিল। সংবিধানে ভারতীয় রাজ্যসংঘকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র রূপে ঘোষণা করা হয়েছে; এই দেশের নাগরিকবৃন্দের জন্য ন্যায়বিচার, সাম্য ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা হয়েছে এবং জাতীয় সংহতি রক্ষার জন্য নাগরিকদের পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃভাব জাগরিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। "সমাজতান্ত্রিক", "ধর্মনিরপেক্ষ" ও "সংহতি" এবং সকল নাগরিকের মধ্যে "ভ্রাতৃভাব" – এই শব্দগুলি ১৯৭৬ সালে একটি সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। সংবিধান প্রবর্তনের স্মৃতিতে ভারতীয়রা প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি তারিখটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে উদ্যাপন করেন। ভারতের সংবিধান বিশ্বের সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বৃহত্তম লিখিত সংবিধান। এই সংবিধানে মোট ২৪টি অংশে ৪৪৮টি ধারা, ১২টি তফসিল এবং ১১৩টি সংশোধনী বিদ্যমান। ভারতের সংবিধানের ইংরেজি সংস্করণে মোট শব্দসংখ্যা ১১৭,৩৬৯। এই সংবিধানের প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পূর্বপ্রচলিত ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অবসান ঘটে। দেশের সর্বোচ্চ আইন হওয়ার দরুন, ভারত সরকার প্রবর্তিত প্রতিটি আইনকে সংবিধান-অনুসারী হতে হয়। সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান ড.
শঙ্খ ঘোষ (৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩২ - ২১ এপ্রিল ২০২১) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতের একজন শক্তিমান বাঙালি কবি ও সাহিত্য-সমালোচক। তিনি একজন বিশিষ্ট রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ হিসাবে প্রসিদ্ধ ছিলেন। তিনি ছিলেন কাব্য সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দ দাশের উত্তরসূরী।তার প্রকৃত নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। শঙ্খ ঘোষ সারা জীবন শিক্ষকতা করেছেন। তিনি বঙ্গবাসী কলেজ, জঙ্গীপুর কলেজ, যাদবপুর, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিজ (শিমলা), দিল্লি ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যে অধ্যাপনা করেছেন।বাবরের প্রার্থনা কাব্যগ্রন্থটির জন্য তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার গদ্যগ্রন্থ "বটপাকুড়ের ফেনা" ২০১৬ সালে ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান জ্ঞানপীঠ পুরস্কার লাভ করে। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম হল মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে, উর্বশীর হাসি, ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ ইত্যাদি।তিনি শঙ্খ ঘোষ নামে অধিক পরিচিত হলেও তাঁকে অন্য নামও গ্রহণ করতে দেখা যায়। দশম-একাদশ শতকের সংস্কৃত আলংকারিক কুন্তক-এর নাম তিনি গ্রহণ করেছেন নিজের আরেকটি ছদ্মনাম হিসেবে। আবার শুভময় নামটিও তাকে ব্যবহার করতে দেখা যায়।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা
এটি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের পর থেকে বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রপতিদের সম্পূর্ণ তালিকা।
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ বা কলেজ অফ ফোর্ট উইলিয়াম ছিল ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর-জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি প্রতিষ্ঠিত একটি প্রাচ্যবিদ্যা শিক্ষাকেন্দ্র। ১৮০০ সালের ০৯ জুলাই কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম চত্বরে এই কলেজ স্থাপিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানে সহস্রাধিক সংস্কৃত, আরবি, ফার্সি, বাংলা, হিন্দি ও উর্দু বই ইংরেজিতে অনূদিত হয়।
স্নায়ুতন্ত্রের গঠনমূলক ও কার্যকরী একককে নিউরন বা স্নায়ুকোষ বলে। মস্তিষ্ক কোটি কোটি স্নায়ুকোষ (নিউরন) দিয়ে তৈরি। এই একটি মাত্র মানব মগজে রয়েছে ১,০০০ কোটি স্নায়ুকোষ বা নার্ভ সেল। আর এগুলো একটি আরেকটির সাথে সংযুক্ত রয়েছে তেমনি শত শত কোটি স্নায়ুতন্তু দিয়ে। প্রতিটি নিউরনে দুটি অংশ থাকে। যথা : ১. কোষদেহ ও ২.
সুভাষচন্দ্র বসু উচ্চারণ (২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ - ?) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র যিনি এই সংগ্রামে নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত। ২০২১ সালে ভারত সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় পরাক্রম দিবস বলে ঘোষণা করেন।
ক্যাটরিনা কাইফ (ইংরেজি: Katrina Kaif; উচ্চারিত [kəˈʈriːnaː ˈkɛːf]; জন্মঃ ১৬ই জুলাই, ১৯৮৪) ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও সাবেক মডেল তারকা যিনি হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্র শিল্প হিসেবে খ্যাত বলিউডে অভিনয় করছেন। এছাড়াও তিনি তেলুগু, মালয়ালম ভাষার ছায়াছবিতেও অংশগ্রহণ করছেন। ইস্টার্ণ আই সাময়িকীর পাঠকদের ভোটে বিশ্বে সবচেয়ে যৌনাবেদনময়ী এশীয় নারী হিসেবে ২০০৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত পরপর তিন বছর চিহ্নিত হয়েছেন। ব্রিটিশ নাগরিক ক্যাটরিনা কর্ম ভিসা নিয়ে ভারতে কাজ করছেন। তার প্রকৃত নাম ক্যাটরিনা টার্কুট। তিনি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজের সাথে যুক্ত আছেন তার মধ্যে মেয়ে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধমূলক কাজ অন্যতম।
জুমার নামাজ (আরবি: صلاة الجمعة সালাত আজ-জুমুআহ, "শুক্রবারের সালাত") ইসলামের অন্যতম একটি নামাজ। جُمُعَة (জুমুআহ) শব্দটি আরবী । এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া । যেহেতু, সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামায়াতের সাথে সে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরযরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে "জুমার নামাজ" বলা হয়। সময় একই হলেও যোহরের সাথে জুমার নামাজের নিয়মগত কিছু পার্থক্য রয়েছে।
হুতোম প্যাঁচার নকশা কালীপ্রসন্ন সিংহ রচিত আধুনিক বাংলা সাহিত্যের গোড়াপত্তনকালীন পর্যায়ে রচিত একটি গদ্য উপাখ্যান, যা তিনি "হুতোম প্যাঁচা" ছদ্মনামে লিখেছেন। এটি মূলত ব্যঙ্গ-বিদ্রূপাত্মক সামাজিক নকশা জাতীয় রচনা। ১৮৬১ সালে "চড়ক" শিরোনামে একটি নকশায় এটি প্রকাশিত হয়, পরবর্তীতে ১৮৬৩ সালে প্রথম ভাগ এবং ১৮৬৪ সালে দ্বিতীয় ভাগ প্রকাশিত হয়।
হস্তমৈথুন বা স্বমেহন একরূপ যৌনক্রিয়া যাতে একজন ব্যক্তি কোনো সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অংশগ্রহণ ব্যতিরেকেই যৌনসুখ অর্জনের চেষ্টা করে। আত্মমৈথুন ও স্বকাম এর সমার্থক শব্দ। এ যৌনক্রিয়ায় প্রধানত আঙ্গুল তথা হাতের সাহায্যে পুরুষ তার লিঙ্গ এবং নারী তার যোনী ঘর্ষণ করে বলে একে সচরাচর “হস্তমৈথুন” হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
সিন্ধু সভ্যতা ছিল একটি ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতা (৩৩০০ – ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ; পূর্ণবর্ধিত কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)। এই সভ্যতার কেন্দ্র ছিল মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সিন্ধু নদ অববাহিকা। এই সভ্যতা প্রস্তর যুগে বিকাশ লাভ করে (প্রাচীন যুগকেই প্রস্তর যুগ বলে)। প্রথম দিকে এই সভ্যতা পাঞ্জাব অঞ্চলের সিন্ধু অববাহিকায় বিকাশ লাভ করে। পরে তা প্রসারিত হয় ঘগ্গর-হকরা নদী উপত্যকা ও গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চল পর্যন্ত। বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ, ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পশ্চিমদিকের রাজ্যগুলি, দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তান এবং বালোচিস্তান প্রদেশের পূর্ব অংশ এই সভ্যতার অন্তর্গত ছিল।
বয়েলের সূত্র একটি দশার সমীকরণ যা কোনো গ্যাসের আয়তন ও প্রযুক্ত চাপের মধ্যেকার সম্পর্ক প্রকাশ করে। বিজ্ঞানী বয়েল প্রদত্ব সূত্রটি হলো: স্থির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের আয়তন ঐ গ্যাসের উপর প্রযুক্ত চাপের ব্যস্তানুপাতিক। গাণিতিক ভাবে প্রকাশের জন্য ধরা যাক, আয়তন= V এবং চাপমাত্রা= P তাহলে গাণিতিকভাবে বয়েলের সূত্রানুসারে, অতএব, "স্থির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের চাপ এবং আয়তন এর গুণফল ধ্রুবক হবে।" অর্থাৎ, চাপ বৃদ্ধি করা হলে সমানুপাতিক ভাবে গ্যাসের আয়তন হ্রাস পাবে। একই হারে চাপ হ্রাস করা হলে সমানুপাতিক হারে গ্যাসের আয়তন বৃদ্ধি পাবে। বয়েলের সূত্রের ব্যাখ্যা :- • বয়েলের সূত্রের ধ্রুবক দুটি হল (i). গ্যাসের ভর (ii).
বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহ
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র যার সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনাবসানে ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান নামক যে রাষ্ট্রটি সৃষ্টি হয়েছিলো, তার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তান শোষণ, বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দারিদ্র্যপীড়িত বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় ঘটেছে দুর্ভিক্ষ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ; এছাড়াও প্রলম্বিত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও পুনঃপৌনিক সামরিক অভ্যুত্থান এদেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করেছে। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক প্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
ফেসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেইসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত), হল মেটা প্ল্যাটফর্মসের মালিকানাধীন বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও, বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে; অন্যদিকে, এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তানের ছিল দুইটি অংশ: পূর্ব বাংলা (১৯৫৫ সালে পুনর্নামাঙ্কিত পূর্ব পাকিস্তান) ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কার্যত পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন বাদামতলী কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের ছেলে রফিক, সালাম, এম. এ.
আধুনিক অলিম্পিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বা অলিম্পিক গেমস (ইংরেজি: Olympic Games ফরাসি: Jeux olympiques) হলো একটি আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা যেখানে গ্রীষ্মকালীন এবং শীতকালীন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীরা বিভিন্ন ধরনের খেলায় অংশগ্রহণ করে। দুইশতাধিক দেশের অংশগ্রহণে মুখরিত এই অলিম্পিক গেমস বিশ্বের সর্ববৃহৎ এবং সর্বোচ্চ সম্মানজনক প্রতিযোগিতা হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। অলিম্পিক গেমস প্রত্যেক চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এর দুটো প্রকরণ গ্রীষ্ম এবং শীতকালীন প্রতিযোগিতা প্রত্যেক দুই বছর পর পর হয়ে থাকে, যার অর্থ দাঁড়ায় প্রায় প্রত্যেক দুই বছর পর পর অলিম্পিক গেমসের আসর অনুষ্ঠিত হয়। খ্রীষ্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দিতে প্রাচীন গ্রীসের অলিম্পিয়া থেকে শুরু হওয়া প্রাচীন অলিম্পিক গেমস থেকেই মূলত আধুনিক অলিম্পিক গেমসের ধারণা জন্মে। ১৮৯৪ সালে ব্যারন পিয়ের দ্য কুবেরত্যাঁ সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) গঠন করেন। এই আইওসি-ই অলিম্পিক গেমস সংক্রান্ত সকল কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
বাংলার নবজাগরণ বলতে বোঝায় ব্রিটিশ রাজত্বের সময় অবিভক্ত ভারতের বাংলা অঞ্চলে ঊনবিংশ ও বিংশ শতকে সমাজ সংস্কার আন্দোলনের জোয়ার ও বহু কৃতি মনীষীর আবির্ভাবকে। মূলত রাজা রামমোহন রায়ের (১৭৭৫-১৮৩৩) সময় এই নবজাগরণের শুরু এবং এর শেষ ধরা হয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (১৮৬১-১৯৪১) সময়ে, যদিও এর পরেও বহু জ্ঞানীগুণী মানুষ এই সৃজনশীলতা ও শিক্ষাদীক্ষার জোয়ারের বিভিন্ন ধারার ধারক ও বাহক হিসাবে পরিচিত হয়েছেন। ঊনবিংশ শতকের বাংলা ছিল সমাজ সংস্কার, ধর্মীয় দর্শনচিন্তা, সাহিত্য, সাংবাদিকতা, দেশপ্রেম ও বিজ্ঞানের পথিকৃৎদের এক অন্যন্য সমাহার যা মধ্যযুগের অন্ত ঘটিয়ে এদেশে আধুনিক যুগের সূচনা করে।
করোনাভাইরাস বলতে ভাইরাসের একটি শ্রেণিকে বোঝায় যেগুলি স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদেরকে আক্রান্ত করে। মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শ্বাসনালির সংক্রমণ ঘটায়। এই সংক্রমণের লক্ষণ মৃদু হতে পারে, অনেকসময় যা সাধারণ সর্দিকাশির ন্যায় মনে হয় (এছাড়া অন্য কিছুও হতে পারে, যেমন রাইনোভাইরাস), কিছু ক্ষেত্রে তা অন্যান্য মারাত্মক ভাইরাসের জন্য হয়ে থাকে, যেমন সার্স, মার্স এবং কোভিড-১৯। অন্যান্য প্রজাতিতে এই লক্ষণের তারতম্য দেখা যায়। যেমন মুরগির মধ্যে এটা ঊর্ধ্ব শ্বাসনালি সংক্রমণ ঘটায়, আবার গরু ও শূকরে এটি ডায়রিয়া সৃষ্টি করে। মানবদেহে সৃষ্ট করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়ানোর মত কোনো টিকা বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ আজও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে বৃটেন একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে।
চার্লসের সূত্র (আয়তনের সূত্র হিসেবেও পরিচিত) হলো একটি পরীক্ষালব্ধ গ্যাসের সূত্র যা তাপ বৃদ্ধির সাথে সাথে গ্যাসের প্রসারণের ব্যাখ্যা দেয়। চার্লসের সূত্রের একটি আধুনিক বিবৃতি হলো: স্থির চাপে নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের আয়তন গ্যাসটির পরম তাপমাত্রার সমানুপাতিক। অর্থাৎ, : V ∝ T {\displaystyle V\propto T} [যখন P স্থির] বা, : V T = k , o r V = k T {\displaystyle {\frac {V}{T}}=k,\quad or\quad V=kT} [এখানে, V = গ্যাসের আয়তন, T = তাপমাত্রা এবং K হলো ধ্রুবক ] সূত্রটি তাপমাত্রা বৃদ্ধি সাথে গ্যাসের আয়তন বৃদ্ধির বর্ণনা দেয়। ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে কোনো পদার্থের তুলনা করার জন্য সূত্রটি এভাবেও লেখা যায়: V 1 T 1 = V 2 T 2 or V 2 V 1 = T 2 T 1 or V 1 T 2 = V 2 T 1 .