The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
পয়লা বৈশাখ বা পহেলা বৈশাখ (বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস বৈশাখের ১ তারিখ) বঙ্গাব্দের প্রথম দিন, তথা বাংলা নববর্ষ। দিনটি সকল বাঙালী জাতির ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণের দিন। দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়। ত্রিপুরায় বসবাসরত বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নিয়ে থাকে। সে হিসেবে এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন লোকউৎসব হিসাবে বিবেচিত।গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে বাংলাদেশের প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়। বাংলা একাডেমী কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে চান্দ্রসৌর বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১৫ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালিত হয়। এছাড়াও দিনটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ছুটির দিন হিসেবে গৃহীত। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা দিনটি নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করার উপলক্ষ হিসেবে বরণ করে নেয়।
ইশার নামায (আরবি: صلاة العشاء; সালাতুল ইশা) মুসলিমদের অবশ্য পালনীয় দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের অন্যতম। নামায বা সালাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম। দৈনিক নামাযগুলোর মধ্যে এটি পঞ্চম। ইশার ফরয নামাজ চার রাক্বাত। এটি রাতে আদায় করা হয়। মাগরিবের নামাজের সময় অতিবাহিত হওয়ার পর ইশার নামাজের সময় শুরু হয় এবং রাতের তিনের এক ভাগ সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সর্বোত্তম, দুই তৃতীয়াংশ জায়েজ এবং সুবহে সাদিকের আগ(এটাকে মাকরুহ অনুত্তম সময় বলা হয়) পর্যন্ত পড়া যায়।
ভীমরাও রামজি আম্বেডকর (মারাঠি: डॉ. भीमराव रामजी आंबेडकर) (১৪ই এপ্রিল ১৮৯১ - ৬ই ডিসেম্বর ১৯৫৬), যিনি বাবাসাহেব আম্বেদকর নামেও পরিচিত, তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় ব্যবহারশাস্ত্রজ্ঞ (জ্যুরিস্ট), রাজনৈতিক নেতা, বৌদ্ধ আন্দোলনকারী, দার্শনিক, চিন্তাবিদ, নৃতত্ত্ববিদ, ঐতিহাসিক, সুবক্তা, বিশিষ্ট লেখক, অর্থনীতিবিদ, পণ্ডিত, সম্পাদক, রাষ্ট্রবিপ্লবী ও বৌদ্ধ পুনর্জাগরণবাদী। তিনি বাবাসাহেব নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি ভারতের সংবিধানের খসড়া কার্যনির্বাহক সমিতির সভাপতিও ছিলেন। তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদী এবং ভারতের দলিত আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। ইনি ভারতের সংবিধানের মুখ্য রচয়িতা । ২০১২ সালে হিস্ট্রি টি.
আবদুল মতিন খসরু (১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫০—১৪ এপ্রিল ২০২১) বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধা ও আইনজীবী যিনি কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। শেখ হাসিনার প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
সূরা (আরবি: سورة) হচ্ছে ইসলামী পরিভাষায় মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কুরআনের এক একটি অধ্যায়ের নাম। তবে এটি সাধারণ পুস্তকের অধ্যায়ের মত নয় বরং বিশেষভাবে কেবল কুরআনের বৈশিষ্ট্যের জন্যই এর উৎপত্তি। তাই এটি প্রকৃত অর্থেই কুরআনের একটি পরিভাষা, যাকে কেবল কুরআনের দৃষ্টিকোণ থেকেই ব্যাখ্যা করা যায়। কুরআনে ১১৪টি সূরা রয়েছে, প্রত্যেকটি কে আয়াত বিভক্ত করা হয়েছে। কুরআনের প্রথম সূরা হলো "আল ফাতিহা" এবং শেষ সূরার নাম "আন-নাস্"। দীর্ঘতম সূরা হলো "আল বাকারা" যেখানে ২৮৬ টি আয়াত রয়েছে এবং ক্ষুদ্রতম সুরা সুরা আল কাউসার । সূরা "তাওবা" ব্যতীত সকল সূরা শুরু হয়েছে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম দিয়ে এবং সুরা আন নামলে মোট দু'বার বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম আছে । একটি সূরা বা এর অংশবিশেষ অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট বা কারণকে বলা হয় শানে নুযূল।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভূ-রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মায়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
বঙ্গাব্দ, বাংলা সন বা বাংলা বর্ষপঞ্জি হল বঙ্গদেশের একটি ঐতিহ্য মণ্ডিত সৌর পঞ্জিকা ভিত্তিক বর্ষপঞ্জি। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সৌরদিন গণনা শুরু হয়। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে একবার ঘুরে আসতে মোট ৩৬৫ দিন কয়েক ঘণ্টা সময়ের প্রয়োজন হয়। এই সময়টাই এক সৌর বছর। গ্রেগরীয় সনের মতন বঙ্গাব্দেও মোট ১২ মাস। এগুলো হল বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র। আকাশে রাশিমণ্ডলীতে সূর্যের অবস্থানের ভিত্তিতে বঙ্গাব্দের মাসের হিসাব হয়ে থাকে। যেমন যে সময় সূর্য মেষ রাশিতে থাকে সে মাসের নাম বৈশাখ।
চড়ক পূজা পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোকোৎসব। চৈত্রের শেষ দিনে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয় এবং বৈশাখের প্রথম দু-তিন দিনব্যাপী চড়ক পূজার উৎসব চলে। এটি চৈত্র মাসে পালিত হিন্দু দেবতা শিবের গাজন উৎসবের একটি অঙ্গ। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে যা চড়ক সংক্রান্তির মেলা নামে অভিহিত।
রোযা বা রোজা (ফার্সি روزہ রুজ়ে), সাউম বা সাওম (আরবি صوم স্বাউম্, অর্থঃ সংযম), বা সিয়াম ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল ভিত্তির তৃতীয়। সুবহে সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,পাপাচার, কামাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম রোযা। ইসলামী বিধান অনুসারে, প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য রমযান মাসের প্রতি দিন রোজা রাখা ফরজ, (فرض ফ়ার্দ্ব্) যার অর্থ অবশ্য পালনীয়।
কুরআন মজিদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ বা কোরআন (আরবি: القرآن আল্-কুর্'আন্[টী১]) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন। এটিকে আরবি শাস্ত্রীয় সাহিত্যের সর্বোৎকৃষ্ট রচনা বলে মনে করা হয়। কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবিতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা হয়েছে।
রমজান (আরবি: رمضان রমদ্বান, [ভিন্ন রূপ]) হল ইসলামী বর্ষপঞ্জিকা অনুসারে নবম মাস, যে মাসে বিশ্বব্যাপী মুসলিমগণ রোজা পালন করে থাকে। রমজান মাসে রোজাপালন ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে তৃতীয়তম। রমজান মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ২৯ অথবা ত্রিশ দিনে হয়ে থাকে যা নির্ভরযোগ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।এ মাসে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম ব্যক্তির উপর সাওম পালন ফরয, কিন্তু অসুস্থ, গর্ভবতী, ডায়বেটিক রোগী, ঋতুবর্তী নারীদের ক্ষেত্রে তা শিথিল করা হয়েছে। রোজা বা সাওম হল সুবহে সাদিক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, পঞ্চইন্দ্রিয়ের দ্বারা গুনাহের কাজ এবং (স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে) যৌনসংগম থেকে বিরত থাকা। এ মাসে মুসলিমগণ অধিক ইবাদত করে থাকেন। কারণ অন্য মাসের তুলনায় এ মাসে ইবাদতের সওয়াব বহুগুণে বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ মাসের লাইলাতুল কদর নামক রাতে কুরআন নাযিল হয়েছিল, যে রাতকে আল্লাহ তাআলা কুরআনে হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম বলেছেন। এ রাতে ইবাদত করলে হাজার মাসের ইবাদতের থেকেও অধিক সওয়াব পাওয়া যায়। রমজান মাসের শেষদিকে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে মুসলমানগণ ঈদুল-ফিতর পালন করে থাকে যেটি মুসলমানদের দুটি প্রধান ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে একটি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ - ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) হল কুরআনের একটি আয়াত (বাক্য) বা দোয়া, যার বাংলা অর্থ হল "আমরা তো আল্লাহরই এবং আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী"। কথাটা সাধারণত মুসলমানরা তাদের বেদনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে উচ্চারণ করে, বিশেষ করে যখন একজন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে।
মুহাম্মাদ (২৯ আগস্ট ৫৭০ - ৮ জুন ৬৩২; আরবি উচ্চারণ শুনতে ক্লিক করুন محمد মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত; তুর্কি : মুহাম্মেদ), পূর্ণ নাম : মুহাম্মাদ ইবনে ʿআবদুল্লাহ ইবনে ʿআবদুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম (ابو القاسم محمد ابن عبد الله ابن عبد المطلب ابن هاشم) হলেন ইসলামের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব এবং ইসলামী বিশ্বাস মতে আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সর্বশেষ নবী, (আরবি: النبي আন-নাবিয়্যু), তথা "বার্তাবাহক" (আরবি : الرسول আর-রাসুল), যার উপর ইসলামী প্রধান ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অমুসলিমদের মতে তিনি ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সফলতা।আনুমানিক ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে (হস্তিবর্ষ) মক্কা নগরীতে জন্ম নেওয়া মুহাম্মাদ মাতৃগর্ভে থাকাকালীন পিতা হারা হন শিশু বয়সে মাতাকে হারিয়ে এতিম হন এবং প্রথমে তার পিতামহ আবদুল মুত্তালিব ও পরে পিতৃব্য আবু তালিবের নিকট লালিত পালিত হন। হেরা পর্বতের গুহায় ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুওয়াত লাভ করেন। জিবরাঈল ফেরেশতা এই পর্বতের গুহায় আল্লাহর তরফ থেকে তার নিকট ওহী নিয়ে আসেন। তিন বছর পর ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে ওহী প্রচার করেন, এবং ঘোষণা দেন "আল্লাহ্ এক" ও তার নিকট নিজেকে সঁপে দেওয়ার মধ্যেই জাগতিক কল্যাণ নিহিত, এবং ইসলামের অন্যান্য নবীদের মত তিনিও আল্লাহর প্রেরিত দূত।মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মুহাম্মাদের নিকট আসা ওহীসমূহ কুরআনের আয়াত হিসেবে রয়ে যায় এবং মুসলমানরা এই আয়াতসমূহকে "আল্লাহর বাণী" বলে বিবেচনা করেন। এই কুরআনের উপর ইসলাম ধর্মের মূল নিহিত। কুরআনের পাশাপাশি হাদিস ও সিরাত (জীবনী) থেকে প্রাপ্ত মুহাম্মাদের শিক্ষা ও অনুশীলন (সুন্নাহ) ইসলামী আইন (শরিয়াহ) হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
শামসুজ্জামান খান (২৯ ডিসেম্বর ১৯৪০ - ১৪ এপ্রিল ২০২১) হলেন একজন বাংলাদেশী অধ্যাপক, লোক সংস্কৃতি ও পল্লীসাহিত্য গবেষক এবং বাংলা একাডেমির প্রাক্তন মহাপরিচালক। খানের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কর্ম হল বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা শিরোনামে ৬৪ খণ্ডে ৬৪ জেলার লোকজ সংস্কৃতির সংগ্রহসালা সম্পাদনা এবং ১১৪ খণ্ডে বাংলাদেশের ফোকলোর সংগ্রহমালা সম্পাদনা। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।
নামায বা নামাজ (ফার্সি: نَماز) সালাত বা সালাহ বা (আরবি: الصلوة আস-সালাহ, আরবি: ٱلصَّلَوَات আস-সালাওয়াত, অর্থ "প্রার্থনা", "দোয়া", "আশীর্বাদ" বা "প্রশংসা") হল ইসলাম ধর্মের প্রধান উপাসনাকর্ম। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত (নির্দিষ্ট নামাযের নির্দিষ্ট সময়) নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আবশ্যক বা ফরজ। ফরজ (আরবিতে: فَرْضُ) সাধারণত দুই প্রকার। যথা: ১.ফরজে আইন (আরবিতে: فَرْضُ عَيْنٍ ) ২.ফরজে কিফায়া (আরবিতে: فَرْضُ كِفَايَةٍ)। তন্মধ্যে সালাত (আরবিতে: صَلَاةُ) ফরজে আইন (আরবিতে: فَرْضُ عَيْنٍ )- এর অন্তর্ভুক্ত। নামায ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। ঈমান বা বিশ্বাসের পর নামাযই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।নামায শব্দটি ফার্সি ভাষা থেকে উদ্ভূত (ফার্সি: نماز) এবং বাংলা ভাষায় পরিগৃহীত একটি শব্দ যা আরবি ভাষার সালাত শব্দের (আরবি: صلاة, কুরআনিক আরবি:صلاة,) প্রতিশব্দ। বাংলা ভাষায় 'সালাত'-এর পরিবর্তে সচরাচর 'নামাজ' শব্দটিই ব্যবহৃত হয়। ফার্সি, উর্দু, হিন্দি, তুর্কী এবং বাংলা ভাষায় একে নামায (ফার্সি ভাষা থেকে উদ্ভূত) বলা হয়। কিন্তু এর মূল আরবি নাম সালাত (একবচন) বা সালাওয়াত (বহুবচন)। আর বাংলা অর্থ "স্মরণ করা", "মনে করা" বা "খেয়াল করা"। "সালাত" -এর আভিধানিক অর্থ দোয়া, রহমত, ক্ষমা প্রার্থনা করা ইত্যাদি। পারিভাষিক অর্থ: ‘শরী‘আত নির্দেশিত ক্রিয়া-পদ্ধতির মাধ্যমে আল্লাহর নিকটে বান্দার ক্ষমা ভিক্ষা ও প্রার্থনা নিবেদনের শ্রেষ্ঠতম ইবাদতকে ‘সালাত’ বলা হয়, যা তাকবিরে তাহরিমা দ্বারা শুরু হয় ও সালাম ফিরানো দ্বারা শেষ হয়’।ফরজ সলাত তরককারীর (পরিত্যাগকারীর) বিধান যা ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো প্রকার ওযর ব্যতীত অলসতা অবহেলা করে করা হয়: بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ সারাংশঃ সর্বজ্ঞানী আল্লাহ্ তা'য়ালা কোরআন মাজীদে তার বান্দাদের সর্বাধিকবার সালাত কায়িম করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পাঁচটি স্তম্ভের উপর ইসলামের ভিত্তি স্থাপিত বলেছেন। যেখানে সলাতের স্থান দ্বিতীয় স্তম্ভের মধ্যে রয়েছে (দেখুন;সহীহুল বুখারীর ৮ নাম্বার হাদীস)। আর আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক আল-উকাইলী (রাহি.) বলেছেনঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কোন সাহাবী সালাত ব্যতিত অন্য কোন আমল ছেড়ে দেয়াকে কুফুরী কাজ বলে মনে করতেন না (দেখুন জামে'ঊত তিরমিযীর ২৬২২নাম্বার সহীহ হাদীস)। অতঃপর মুসলিম উম্মাহর মাঝে সালাত অস্বীকারকারী কাফির হওয়ার উপর ইজমা সাব্যস্ত হয়েছে (দেখুন ইখতেলাফুল আইম্মাতুল 'উলামার ১ম খন্ডের ৭৯ নাম্বার পৃষ্ঠা)। পাশাপাশি এ সম্পর্কে আরেকটি মুসলিম উম্মাহর ইজমা হয়েছে যে, সালাত ত্যাগ করা মানে সালাত অস্বীকার করা (দেখুন;ফিক্বহুস সুন্নাহর ১ম খন্ডের ৯২ নাম্বার পৃষ্ঠা)। যেমন ইবনু হাজম রাহি. বলেছেনঃ (১)উমার, (২)আব্দুর রহমান বিন আউফ, (৩)মুয়ায বিন জাবাল ও (৪)আবু হুরায়রা (রাদ্বি.) প্রমুখ সাহাবী থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে এক ওয়াক্ত ফরজ সালাত ত্যাগ করে, শেষ পর্যন্ত সালাতের ওয়াক্ত চলে যায় সে কাফির ও ইসলাম ত্যাগী মুরতাদ। এসকল সাহাবীর মতের কেউ বিরোধী ছিলো বলে আমাদের জানা নেই৷ ইমাম মুনযির রাহি. তারগীব ও তারহীবে এটি উল্লেখ্য করেছেন। অতঃপর তিনি বলেন, সাহাবী ও তাদের পরবর্তীদের একটি দলের মত হলোঃ যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সালাত ত্যাগ করে সালাতের পুরো সময়টা পার করে দেয় সে কাফির। এ দলের মধ্যে রয়েছেন উমার ইবনুল খাত্তাব, (৫)'আব্দুল্লাহ্ ইবনু মাসউদ, (৬)'আব্দুল্লাহ্ ইবনু আব্বাস, মুয়ায বিন জাবাল, (৭)জাবির বিন আবদুল্লাহ্ ও (৮)আবু দারদা (রাদ্বি.)। আর সাহাবীদের বাইরে যারা রয়েছেন তারা হলেনঃ (১)আহমাদ বিন হাম্বল, (২)ইসহাক বিন রাহওয়াই, (৩)'আব্দুল্লাহ্ ইবনুল মুবারাক, (৪)নাখয়ী, (৫)হাকাম বিন উতাইবা, (৬)আবু আইয়ুব সাখতিয়া, (৭)আবু দাঊদ তায়ালিসী, (৮)আবু বকর বিন আবি শায়বা, (৯)যুহাইর বিন হারব প্রমুখ (রহঃ) (দেখুন; ফিক্বহুস সুন্নাহর ১ম খন্ডরের ৯৩ নাম্বার পৃষ্ঠা)। এতভিন্ন এ অভিমত আরো পোষণ করেছেন কিছু শাফেয়ী' আলেম[1] কিছু মালেকি আলেম[2] ও সালাফদের একটি দল[3] এবং অধিকাংশ আসহাবুল হাদীস[4], সহ এ দিকেই ইমাম ইবনু তাইমিয়া[5] ও ইমাম ইবনু কাইয়্যুম গেছেন[6] বর্তমান সময়ের মধ্যে শায়েখ আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ্ বিন বায[7] ও শায়েখ মুহাম্মাদ সালেহ আল উছাইমিন[8] এ মত গ্রহণ করেছেন। রেফারেন্স সমূহঃ [1]মাজমু' ৩/১৪ নাববী। [2]'হাশিয়া ১/১২০ 'আদী। [3]মাজমু' ৩/১৬ নাববী, মাজমু' ২০/৯৭ ইবনু তাইমিয়া। [4]তা'য়জিমু ক্বদারিস্ সলাত ২/৯৩৬ মারওয়াজী। [5]আল ফাতওয়াতুল কুবরা ২/২২৪ তাইমিয়া। [6]দেখুন আস্ সলাতু অ'আহকামু তারাকাহার ৬৪নাম্বার পৃষ্ঠা। [7] মাজমু' ২৯/১৫৯ ইবনু বায্। [8]মাজমু' ১২/৫১ উষাইমিন। বিপরীতে ফরজ সলাত তরককারীকে ইমাম আবু হানিফা, মালেক ও শাফেয়ী রহিমাহুমুল্লাহ বলেছেনঃ সে ফাসিক হবে কাফির হবে না (দেখুন হুকুমুত তারাকাস সলাতের ৪নাম্বার পৃষ্ঠা, উছাইমিন)। অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক আল-উকাইলী রাহিমাহুল্লাহ হতে তিরমিযীতে বর্ণিত ২৬২২ নাম্বার হাদীসের বর্ণনানুসারে যখন প্রমাণিত হলো যে, এই মাসআলাটি তাবেয়ীগণের যুগ থেকে একটি বিরোধপূর্ণ মাসআলা, তখন আবশ্যক হল এটাকে আল্লাহ তা‘আলার কিতাব এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহর সামনে পেশ করা। কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ وَمَا ٱخۡتَلَفۡتُمۡ فِيهِ مِن شَيۡءٖ فَحُكۡمُهُۥٓ إِلَى ٱللَّهِۚ আর তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ কর না কেন, তার ফয়সালা তো আল্লাহরই কাছে (আশ-শুরা ৪২:১০)। তিনি আরো বলেছেনঃ فَإِن تَنَٰزَعۡتُمۡ فِي شَيۡءٖ فَرُدُّوهُ إِلَى ٱللَّهِ وَٱلرَّسُولِ إِن كُنتُمۡ تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِۚ ذَٰلِكَ خَيۡرٞ وَأَحۡسَنُ تَأۡوِيلًا অতঃপর কোনো বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটলে তা উপস্থাপিত কর আল্লাহ্ ও রাসূলের নিকট, যদি তোমরা আল্লাহ্ ও আখেরাতে ঈমান এনে থাক। এ পন্থাই উত্তম এবং পরিণামে প্রকৃষ্টতর (আন-নিসা ৪:৫৯)। অনুরুপ অনান্য আয়াত সমূহ। তাছাড়া মতভেদকারীগণের একজনের কথাকে অপরজনের জন্য দলীল হিসেবে পেশ করা যায় না৷ কারণ, তাদের প্রত্যেকেই নিজের মতকে সঠিক মনে করে এবং তাদের একজন মত গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে অপরজনের মতের চেয়ে অধিক উত্তম নয়। ফলে এই ব্যাপারে তাদের মাঝে মীমাংসা করার মত একজন মীমাংসাকারীর দিকে প্রত্যাবর্তন করা আবশ্যক হয়ে পড়ে; আর সেই মীমাংসাকারী হল আল্লাহ তা‘আলার কিতাব ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ। (প্রথম দলীল) আল্লাহ তা'য়ালা বলেছেনঃ (إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِۦ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُۚ وَمَن يُشْرِكْ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱفْتَرَىٰٓ إِثْمًا عَظِيمًا) নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না। তিনি ক্ষমা করেন এ ছাড়া অন্যান্য পাপ, যার জন্য তিনি চান। আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে অবশ্যই মহাপাপ রচনা করে (আন নিসা ৪:৪৮)। তিনি অনত্র আরো বলেছেনঃ (فَقَدْ ضَلَّ ضَلَٰلًۢا بَعِيدًا) আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে তো ঘোর পথভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট হল (আন নিসা ৪:১১৬)। আর জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত সহীহ হাদীসানুসারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ) বান্দা এবং শিরক ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সালাত ছেড়ে দেয়া (মুসলিম ৮২)। অপর সহীহ বর্ণনায় রয়েছেঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন (بَيْنَ الْكُفْرِ وَالْإِيمَانِ تَرْكُ الصَّلَاةِ) কুফর ও ঈমানের মধ্যে পার্থক্য হল সলাত ত্যাগ করা (তিরমিযী ২৬১৮)। সুতরাং উপর্যুক্ত আয়াতদ্বয় ও হাদীস সলাত তরককারীকে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামী হওয়ার সুম্পষ্ট প্রমাণ এভাবে বহন করে যে, আল্লাহ্ তা'য়ালা তার সাথে শিরিক করা অবস্থায় মৃত বরণ করা ব্যক্তিকে কখনই ক্ষমা করবেন না, আর সহীহ মারফু' হাদীসানুসারে ইচ্ছাকৃতভাবে ফরজ সলাত তরককরা শিরক, ফলে এমতাবস্হায় মৃত ব্যক্তি চিরস্থায়ী জাহান্নামী হয়ে যাবে। যেমন শায়েখ মুহাম্মাদ সালেহ আল উছাইমিন (রহঃ) বলেছেনঃ এখানে কুফর (الكفر) দ্বারা উদ্দেশ্য হল, এমন কুফরী যা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মুসলিম মিল্লাত (সম্প্রদায়) থেকে বের করে দেয়। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুমিন ও কাফিরদের মাঝে সালাতকে পৃথককারী সূচক বানিয়ে দিয়েছেন। আর এটা সকলের নিকট সুবিদিত যে, কাফির মিল্লাত এবং মুসলিম মিল্লাত একে অপরের বিপরীত। ফলে যে ব্যক্তি এই (সালাতের) অঙ্গীকার পূরণ করবে না, সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে (দেখুন শায়েখের হুকুমুত তারাকাস সলাতের ৯নাম্বার পৃষ্ঠা)। সাধারণ নোটঃ এখানে কোনো প্রশ্নকর্তা প্রশ্ন করতে পারেন যে, সালাত বর্জনকারীর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত কুফর (الكفر) শব্দটির অর্থ কি কুফরে মিল্লাত (দীন অস্বীকার) না হয়ে কুফরে নিয়ামত (নিয়ামতের অকৃতজ্ঞতা) হওয়ার সম্ভাবনা রাখে না?
ইক্বামাহ্ (আরবি: إقامة) বা ইকামত হলো সামান্য পরিবর্তিত আযান, যা ফরয নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে নিয়তের পূর্বে উচ্চারণ করতে হয়। পার্থক্য এই যে আযানের শেষভাগে "হাইয়া আলাল ফালাহ" দুই বার বলার পর "ক্বদ ক্বামাতিস সালাহ" বাক্যটি দুইবার বলতে হয়। ইক্বামাহ্ শেষে নিয়ত করতঃ "আল্লাহু আকবার" বলে নামাজ শুরু করতে হয়। আলী ইবনু আবদুল্লাহ .. আনাস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বিলাল -কে আযানের বাক্যগুলো দু’ দু’বার এবং ইকামতের শব্দগুলো বেজোড় বলার নির্দেশ দেওয়া হল। ইসমায়ীল বলেন, আমি এ হাদীস আইয়্যূবের নিকট বর্ণনা করলে তিনি বলেন, তবে ‘কাদ্কামাতিস্ সালাত’ ব্যতীত। {সহীহ বুখারী (ইফাঃ)অধ্যায়ঃ ১০/ আযান (كتاب الأذان) হাদিস নাম্বার: ৫৮০} সুলাইমান ইব্ন হারব্ ...
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারতীয় প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রতি বছর বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে আয়োজিত একটি তুলনামূলকভাবে নতুন বর্ষবরণ উৎসব। বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বাংলাদেশের ঢাকা শহরে এটি প্রবর্তিত হয়। একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ উৎসব হিসাবে সারাদেশে এটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে প্রতিবছরই পহেলা বৈশাখে ঢাকা শহরের শাহবাগ-রমনা এলকায় এই মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এই শোভাযাত্রায় চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষক শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন স্তরের ও বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন ধরনের প্রতীকী শিল্পকর্ম বহন করা হয়। এছাড়াও বাংলা সংস্কৃতির পরিচয়বাহী নানা প্রতীকী উপকরণ, বিভিন্ন রঙ-এর মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি নিয়ে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়। তবে একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক থেকে প্রায় প্রতি জেলাসদরে এবং বেশ কিছু উপজেলা সদরে পহেলা বৈশাখে ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’’ আয়োজিত হওয়ায় ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’’ বাংলাদেশের নবতর সর্বজনীন সংস্কৃতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
বিদ্যা সিনহা সাহা মীম (জন্ম: ১০ নভেম্বর, ১৯৯২) হচ্ছেন একজন বাংলাদেশী মডেল ও অভিনেত্রী। লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার ২০০৭ প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম-স্থান লাভ করেন। একই বছরে হুমায়ুন আহমেদ পরিচালিত আমার আছে জল চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার চলচিত্রে অভিষেক হয়। জোনাকির আলো চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ৩৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে মৌসুমীর সাথে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন।
আল্লামা মামুনুল হক (জন্ম: নভেম্বর ১৯৭৩) একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ, ইসলামি বক্তা, লেখক, অধ্যাপক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া, ঢাকার শায়খুল হাদিস, বাবরি মসজিদ বাংলাদেশ, মাহাদুত তারবিয়্যাতুল ইসলামিয়া ও তারবিয়্যাতুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, মাসিক রহমানী পয়গামের সম্পাদক, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি ও বায়তুল মামুর জামে মসজিদের খতিব। তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের ইসলামি বক্তাদের সংগঠন রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন বাংলাদেশের উপদেষ্টাসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতৃস্থানীয় পদে রয়েছেন। ইংরেজি সহ পাঁচটি ভাষায় তার দক্ষতা রয়েছে। ইসলামি নেতা হিসেবে তিনি ব্যাপক পরিচিত। নাস্তিক, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী ও ইসলাম বিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে কঠোর বক্তব্য দিয়ে তিনি বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছেন এবং এ সংক্রান্ত আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ইসলামি মৌলবাদ প্রচারের অভিযোগে তাকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ, গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ ৬৫টি সংগঠন দেশব্যাপী ব্যাপক আন্দোলন করেছে। তাকে অভিযুক্ত করে রাষ্ট্রদ্রোহি মামলা সহ অসংখ্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ অসংখ্য নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছেন।
সূরা আল ফাতিহা (আরবি: سورة الفاتحة) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের প্রথম সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ৭ এবং রুকু সংখ্যা ১। ফাতিহা শব্দটি আরবি "ফাতহুন" শব্দজাত যার অর্থ "উন্মুক্তকরণ"। এটি আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে বিশেষ প্রতিদান স্বরূপ। সূরা ফাতিহা অন্যান্য সূরার ন্যায় বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম দিয়ে শুরু হয়েছে। আল ফাতিহা সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে বিধায় মক্কী সূরা হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ। সূরা ফাতিহাকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়া যায় না বলে একে অখণ্ড সূরা নামেও ডাকা হয়। সূরা ফাতিহাকে ভেঙে পড়ার বিধান নেই।
ইসলাম (আরবি: আল-ইসলাম - [الإسلام] (শুনুন)) একটি একেশ্বরবাদী এবং ইব্রাহিমীয় ধর্মবিশ্বাস যার মূল শিক্ষা হল, এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন স্রষ্টা নেই এবং মুহাম্মদ হলেন আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবি ও রাসূল।এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান ধর্ম, যার অনুসারী সংখ্যা ১.৯ বিলিয়ন এবং পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২৪.৪%, যারা মুসলমান নামে পরিচিত। মুসলমানরা ৫০ এর অধিক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টি। ইসলাম শিক্ষা দেয় যে আল্লাহ দয়ালু, করুনাময়, এক ও অদ্বিতীয় এবং একমাত্র ইবাদতযোগ্য অভিভাবক।মানবজাতিকে পথ প্রদর্শনের জন্য তিনি যুগে-যুগে অনেক নবি-রাসূল, আসমানি কিতাব এবং নিদর্শন পাঠিয়েছেন। ইসলামে প্রধান ধর্মগ্রন্থ হলো পবিত্র কুরআন যা স্বয়ং আল্লাহর বাণী; আর সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবি মুহাম্মদ (২৯ আগস্ট ৫৭০- ৮ জুন ৬৩২) এর কথা, কাজ ও মৌনসম্মতিকে সুন্নাহ বলা হয় যা হাদিস নামে লিপিবদ্ধ রয়েছে। তবে সমস্ত সুন্নাহই হাদিস, কিন্তু সমস্ত হাদিস সুন্নাহ নয়।
কাজী নজরুল ইসলাম (২৫ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬; ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ – ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) রাঢ় বাংলায় জন্ম নেওয়া একজন বাঙালি কবি এবং পরবর্তী কালে বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য এবং তিনি ছিলেন বাঙালি মনীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ – দুই বাংলাতেই তার কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তার কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তার কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা হাতে তার প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তার প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে – কাজেই "বিদ্রোহী কবি", তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উভয় বাংলাতে প্রতি বৎসর উদযাপিত হয়ে থাকে।
আয়াতুল কুরসি (আরবি: آية الكرسي) হচ্ছে মুসলমানদের ধর্মীয়গ্রন্থ কোরআনের দ্বিতীয় সুরা আল বাকারার ২৫৫তম আয়াত। এটি কোরআনের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ আয়াত এবং ইসলামি বিশ্বে ব্যাপকভাবে পঠিত ও মুখস্থ করা হয়। ইসলামি পণ্ডিতগণ একে কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত বলে দাবি করে থাকেন। এতে সমগ্র মহাবিশ্বের উপর আল্লাহর জোরালো ক্ষমতা ঘোষণা করা হয়েছে। মুসলমানগণ বিশ্বাস করেন যে, এটি পাঠ করলে অসংখ্য পুণ্য লাভ হয়। এছাড়া, দুষ্ট আত্মাকে দূর করতেও এই আয়াতটি ব্যবহৃত হয়।
সূরা আল-ফালাক (আরবি: سورة الفلق; নিশিভোর) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১১৩ তম সূরা; এর আয়াত, অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ৫ এবং রূকু, তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ১। সূরা আল-ফালাক মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে; যদিও কোন কোন বর্ণনায় একে মক্কায় অবতীর্ণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এর পাঁচ আয়াতে শয়তানের অনিষ্ট থেকে সুরক্ষার জন্য সংক্ষেপে আল্লাহর নিকট প্রার্থণা করা হয়। এই সূরাটি এবং এর পরবর্তী সূরা আন-নাসকে একত্রে মু'আওবিযাতাইন (আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার দু'টি সূরা) নামে উল্লেখ করা হয়। অসুস্থ অবস্থায় বা ঘুমের আগে এই সূরাটি পড়া একটি ঐতিহ্যগত সুন্নত।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ,দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
সূরা আন-নাস (আরবি: سورة الناس; মানবজাতি) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১১৪ তম এবং সর্বশেষ সূরা; এর আয়াত, অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ৬ এবং রূকু, তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ১। সূরা আন-নাস মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে; যদিও কোন কোন বর্ণনায় একে মক্কায় অবতীর্ণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এর ছয় আয়াতে শয়তানের অনিষ্ট থেকে সুরক্ষার জন্য সংক্ষেপে আল্লাহর নিকট প্রার্থণা করা হয়। এই সূরাটি এবং এর পূর্ববর্তী সূরা আল-ফালাককে একত্রে মু'আওবিযাতাইন (আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার দু'টি সূরা) নামে উল্লেখ করা হয়। অসুস্থ অবস্থায় বা ঘুমের আগে এই সূরাটি পড়া একটি ঐতিহ্যগত সুন্নত।
গেরিনা ফ্রি ফায়ার (ফ্রি ফায়ার ব্যাটলগ্রাউন্ডস বা ফ্রি ফায়ার নামেও পরিচিত) একটি ব্যাটল রয়্যাল গেম যা ১১১ ডটস স্টুডিও দ্বারা বিকাশিত এবং অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএসের জন্য গেরিনা দ্বারা প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৯ সালে এটি বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক ডাউনলোড করা মোবাইল গেম হয়ে উঠেছে। জনপ্রিয়তার কারণে, গেমটি ২০১৯ সালে গুগল প্লে স্টোর দ্বারা “সেরা জনপ্রিয় ভোট গেম” এর জন্য পুরস্কার পেয়েছিল। ২০২০ সালের মে পর্যন্ত, ফ্রি ফায়ার বিশ্বব্যাপী দৈনিক ৮০ মিলিয়নেরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারীদের সাথে একটি রেকর্ড তৈরি করেছে। নভেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত, ফ্রি ফায়ার বিশ্বজুড়ে বিশ্বব্যাপী ১ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।গেরিনা বর্তমানে ফ্রি ফায়ারের উন্নত সংস্করণে কাজ করছেন যা ফ্রি ফায়ার ম্যাক্স নামে পরিচিত।
গাজন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ও বাংলাদেশে পালিত একটি হিন্দু লোকউৎসব। এই উৎসব শিব, নীল, মনসা ও ধর্মঠাকুরের পূজাকেন্দ্রিক উৎসব। মালদহে গাজনের নাম গম্ভীরা, জলপাইগুড়িতে গমীরা। বাংলা পঞ্জিকার চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহ জুড়ে সন্ন্যাসী বা ভক্তদের মাধ্যমে শিবের গাজন অনুষ্ঠিত হয়। চৈত্র সংক্রান্তিতে চড়ক পূজার সঙ্গে এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটে। ধর্মের গাজন সাধারণত বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে পালিত হয়। চৈত্রমাস ছাড়া বছরের অন্যসময় শিবের গাজন অনুষ্ঠিত হলে তাকে হুজুগে গাজন বলা হয়। গাজন সাধারণত তিনদিন ধরে চলে। এই উৎসবের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল মেলা।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০–১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা মুজিব, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বাঙালির অধিকার রক্ষায় ব্রিটিশ ভারত থেকে শুরু করে ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে মুজিবকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্ব দেয়ার পাশাপাশি প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। এসকল কারণে তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে গণ্য করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) উনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তাঁর। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
সহিহ আল-বুখারি (আরবি: صحيح البخاري) একটি প্রসিদ্ধ হাদীস বিষয়ক গ্রন্থ। এর আসল ও পুরো নাম, الجامع المسند الصحيح المختصر من أمور رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم وسننه وأيامه সুন্নি ইসলাম মতে, এটি কুতুব আল-সিত্তাহ অর্থাৎ হাদীস বিষয়ক প্রধান ছয়টি গ্রন্থের অন্তর্গত একটি গ্রন্থ। পারস্যের স্বনামখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ইমাম বুখারি ইসলামের নবী মুহাম্মাদ(সা:)-এর বাণীসংবলিত এই গ্রন্থটি সংকলন করেছেন। এই গ্রন্থটিকে আল-কোরআনের পর সবচাইতে প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে ধরা হয়।
দুরূদ বা দুরূদ শরীফ (ফার্সি: درود) হল একটি সম্ভাষণ যা মুসলমানরা নির্দিষ্ট বাক্যাংশ পড়ে ইসলামের শেষ পয়গম্বর হযরত মুহাম্মাদ (দঃ)-এর শান্তির প্রার্থণা উদ্দেশ্যে পাঠ করা হয়ে থাকে। এটি একটি ফার্সি শব্দ যা মুসলমানদের মুখে বহুল ব্যবহারের কারণে ১৭শ শতাব্দীতে বাংলা ভাষায় অঙ্গীভূত হয়ে যায়। বৃহত্তর অর্থে হযরত মুহাম্মাদ (দঃ)-এর প্রতি এবং তার পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্ততি এবং সহচরদের প্রতি আল্লাহ্র দয়া ও শান্তি বর্ষণের জন্য প্রার্থনা করাই দুরূদ। দুরূদকে প্রায়ই সম্মানসূচকভাবে ইসলামী পরিভাষায় "দুরূদ শরীফ"ও বলা হয়ে থাকে।
যাকাত (আরবি: زكاة zakāt, "যা পরিশুদ্ধ করে", আরও আরবি: زكاة ألمال, "সম্পদের যাকাত") হলো ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের একটি। প্রত্যেক স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক মুসলমান নর-নারীকে প্রতি বছর স্বীয় আয় ও সম্পত্তির একটি নির্দিষ্ট অংশ, যদি তা ইসলামী শরিয়ত নির্ধারিত সীমা (নিসাব পরিমাণ) অতিক্রম করে তবে, গরীব-দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণের নিয়মকে যাকাত বলা হয়। সাধারণত নির্ধারিত সীমার অধিক সম্পত্তি হিজরি ১ বছর ধরে থাকলে মোট সম্পত্তির ২.৫ শতাংশ (২.৫%) বা ১/৪০ অংশবিতরণ করতে হয়। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে হজ্জ্ব এবং যাকাত শুধুমাত্র শর্তসাপেক্ষ যে, তা সম্পদশালীদের জন্য ফরয বা আবশ্যিক হয়। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনে "যাকাত" শব্দের উল্লেখ এসেছে ৩২ বার। নামাজের পরে সবচেয়ে বেশি বার এটি উল্লেখ করা হয়েছে।যাকাত এর আভিধানিক অর্থ:
ভারতের সংবিধান ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন। এই সংবিধানে সরকারের গঠন, কার্যপদ্ধতি, ক্ষমতা ও কর্তব্য নির্ধারণ; মৌলিক অধিকার, রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশমূলক নীতি, এবং নাগরিকদের কর্তব্য নির্ধারণের মাধ্যমে দেশের মৌলিক রাজনৈতিক আদর্শের রূপরেখাটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদে ২৮৪ জনের সই করলে গৃহীত হয় এবং এই দিনটি জাতীয় আইন দিবস হিসেবে পরিচিত। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে এই সংবিধান কার্যকরী হয়। উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ঘোষণার স্মৃতিতে ২৬ জানুয়ারি তারিখটি সংবিধান প্রবর্তনের জন্য গৃহীত হয়েছিল। সংবিধানে ভারতীয় রাজ্যসংঘকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র রূপে ঘোষণা করা হয়েছে; এই দেশের নাগরিকবৃন্দের জন্য ন্যায়বিচার, সাম্য ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা হয়েছে এবং জাতীয় সংহতি রক্ষার জন্য নাগরিকদের পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃভাব জাগরিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। "সমাজতান্ত্রিক", "ধর্মনিরপেক্ষ" ও "সংহতি" এবং সকল নাগরিকের মধ্যে "ভ্রাতৃভাব" – এই শব্দগুলি ১৯৭৬ সালে একটি সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। সংবিধান প্রবর্তনের স্মৃতিতে ভারতীয়রা প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি তারিখটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে উদযাপন করেন। ভারতের সংবিধান বিশ্বের সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বৃহত্তম লিখিত সংবিধান। এই সংবিধানে মোট ২৪টি অংশে ৪৪৮টি ধারা, ১২টি তফসিল এবং ১১৩টি সংশোধনী বিদ্যমান। ভারতের সংবিধানের ইংরেজি সংস্করণে মোট শব্দসংখ্যা ১১৭,৩৬৯। এই সংবিধানের প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পূর্বপ্রচলিত ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অবসান ঘটে। দেশের সর্বোচ্চ আইন হওয়ার দরুন, ভারত সরকার প্রবর্তিত প্রতিটি আইনকে সংবিধান-অনুসারী হতে হয়। সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান ড.
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকাণ্ড সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সেনা শাখা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আযান আরবি: أَذَان (অথবা আজান হিসেবে উচ্চারণ করা হয় যেমন: আফগানিস্তান, আজারবাইজান, বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, এবং তুর্কমেনিস্তান, ইজান হিসেবে উচ্চারণ করা হয় তুরস্ক, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, আজন হিসেবে উচ্চারণ করা হয় উজবেকিস্তান, মুয়াজ্জিন কর্তৃক প্রার্থনার উদ্দেশ্যে দিনের নির্ধারিত সময়ে ৫ বার আহবান করাকে আযান বলা হয়।
যৌনসঙ্গম (যৌনমিলন, সঙ্গম, মৈথুন, রতিক্রিয়া, রতিমিলন; যৌন সংসর্গ, যৌন সহবাস, সহবাস ইত্যাদি) হচ্ছে একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা দ্বারা মূলত যৌনআনন্দ বা প্রজনন বা উভয় ক্রিয়ার জন্য একজন পুরুষের উত্থিত শিশ্ন একজন নারীর যোনিপথে অনুপ্রবেশ করানো ও সঞ্চালনা করাকে বোঝায়। অন্যান্য অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গমের মধ্যে রয়েছে পায়ুসঙ্গম (লিঙ্গ দ্বারা মলদ্বার অনুপ্রবেশ), মুখমৈথুন, অঙ্গুলিসঞ্চালন (আঙ্গুল দ্বারা যৌন অনুপ্রবেশ), যৌনখেলনা ব্যবহার দ্বারা অনুপ্রবেশ (বন্ধনীযুক্ত কৃত্রিম শিশ্ন)। এই সকল কার্যক্রম মূলত মানবজাতি কর্তৃক দুই বা ততোধিকের মধ্যেকার শারীরিক ও মানসিক অন্তরঙ্গতা জনিত পরিতোষ লাভের জন্য এবং সাধারণত মানব বন্ধনে ভূমিকা রাখতে সম্পাদিত হয়ে থাকে।যৌনসঙ্গম বা অপরাপর যৌনকর্ম কীভাবে সংজ্ঞায়িত হয় তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, যা যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর উপর প্রভাব রাখতে পারে। যদিও যৌনসঙ্গম, নির্দিষ্টভাবে মৈথুন বলতে সাধারণত শিশ্ন-জরায়ুজ অনুপ্রবেশ ও সন্তান উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করা হয়, এর দ্বারা সাধারণভাবে অন্তর্ভেদী মুখমৈথুন ও বিশেষত শিশ্ন-পায়ুজ সঙ্গমকেও নির্দেশ করা হয়। এটি সাধারণত যৌন অনুপ্রবেশকে নির্দেশ করে, যেখানে অননুপ্রবেশকারী যৌনতাকে "বহির্সঙ্গম" নামে নামকরণ করা হয়, কিন্তু অনুপ্রবেশকারী যৌনকর্মকে যৌনসঙ্গম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যৌনতা বা ইংরেজি ভাষায় সেক্স, প্রায়শই যৌনসঙ্গমের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যবহৃত রূপ, যা দ্বারা যে কোন প্রকারের যৌনক্রিয়াকে বোঝানো হতে পারে। যেহেতু এসকল যৌনকর্মের সময়ে মানুষ যৌনবাহিত সংক্রমণের সংস্পর্শের ঝুঁকিতে থাকতে পারে, নিরাপদ যৌনচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও অনাভেদী যৌনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়ে থাকে।বিভিন্ন আইনি বিধিমালা যৌনসঙ্গমমের সামাজিক অনুমতিপ্রদানের জন্য বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতির মাধ্যমে বৈবাহিক রীতির প্রবর্তন, প্রচলন ও সমর্থন করেছে এবং বেশ কিছু যৌনকর্মের বিপরীতে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনকে স্থান দিয়েছে, যেমন বিবাহপূর্ব ব্যভিচার ও বিবাহপরবর্তী পরকীয়া, পায়ুকাম, পশুকাম, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনচর্চা ও অজাচার। ধর্মীয় বিশ্বাসও যৌনসঙ্গমসহ অন্যান্য যৌনাচার বিষয়ক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা পালন করে, যেমন কুমারীত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত, অথবা আইনি বা সরকারী নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়াবলি। বিভিন্ন ধর্মভেদে ও একই ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণীভেদে যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও কিছু বিষয়ে অভিন্নতা রয়েছে, যেমন ব্যভিচারের নিষেধাজ্ঞা।
উসমান গাজি (উসমানীয় তুর্কি: عثمان غازى উসমান গাজি; বা উসমান বে বা উসমান আল্প); (১৩ ফেব্রুয়ারি ১২৫৮ – আগস্ট ১/৯, ১৩২৬) ছিলেন উসমানীয় তুর্কিদের নেতা এবং উসমানীয় রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। উসমানের সময় উসমানীয়দের রাজ্য (বেয়লিক) আকারে ছোট ছিল এবং পরবর্তীতে তা বিশাল সাম্রাজ্যে পরিণত হয়। ১৯২২ সালে সালতানাতের বিলুপ্তির পূর্ব পর্যন্ত সাম্রাজ্য টিকে ছিল।
উসমানীয় সাম্রাজ্য (উসমানীয় তুর্কি: دَوْلَتِ عَلِيّهٔ عُثمَانِیّه, Devlet-i Aliyye-i Osmâniyye, আধুনিক তুর্কি: Osmanlı İmparatorluğu বা Osmanlı Devleti), ঐতিহাসিকভাবে তুর্কি সাম্রাজ্য বা অটোমান সাম্রাজ্য (ইংরেজি: Ottoman Empire) বলে পরিচিত। এই সম্রাজ্যের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা উসমান গাজীর পিতা আরতুগ্রুল গাজী। ১২৯৯ সালে অঘুজ তুর্কি বংশোদ্ভূত প্রথম উসমান এর পিতা আরতুগ্রুল গাজী উত্তর-পশ্চিম আনাতোলিয়ার দ্বায়িত্ব পান সেলযুক সাম্রাজ্য কর্তৃক, প্রথম দিকে রোমের সেলযুক সাম্রাজ্যের প্রতি অনুগত থাকলেও রোমের সেলজুক সাম্রাজ্যের ক্রান্তিলগ্নে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এবং ধীরে ধীরে একটি বৃহত সালতানাত প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সেলজুক রাজবংশের জামাতাও ছিলেন এবং প্রথম উসমানের মাতা হালিমে সুলতান ছিলেন সেলজুক সাম্রাজ্যের শাহজাদী। প্রথম মুরাদ কর্তৃক বলকান জয়ের মাধ্যমে উসমানীয় সাম্রাজ্য বহুমহাদেশীয় সাম্রাজ্য হয়ে উঠে এবং খিলাফতের দাবিদার হয়। ১৪৫৩ সালে সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদের কনস্টান্টিনোপল জয় করার মাধ্যমে উসমানীয়রা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য উচ্ছেদ করে। ১৫২৬ সালে হাঙ্গেরি জয়ের পর ইউরোপের বলকান অঞ্চল সমূহ নিয়ে বড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
সুভাষচন্দ্র বসু উচ্চারণ (২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ - ?) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র যিনি এই সংগ্রামে নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত। ২০২১ সালে ভারত সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় পরাক্রম দিবস বলে ঘোষনা করেন।
চাশতের নামাজ বা দোহার সালাত বা সালাতুদ দোহা (আরবি: صلاة الضحى) হল ফজর ও যোহরের নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে পড়ার জন্য নফল/ঐচ্ছিক নামাজ। "। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন – যা আমি মৃত্যু পর্যন্ত কখনো ছাড়বো না। ১. প্রতি মাসের তিনটি রোজা ২. চাশতের নামাজ ৩.
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামগুলোতেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
বৈশাখ হল বঙ্গাব্দ বা বাংলা সনের প্রথম মাস এবং শকাব্দ বা ভারতীয় রাষ্ট্রীয় পঞ্চাঙ্গের দ্বিতীয় মাস। এটি নেপালি পঞ্জিকা বিক্রম সম্বৎ ও পাঞ্জাবি নানকশাহি পঞ্জিকার প্রথম মাস। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির এপ্রিল মাসের শেষার্ধ ও মে মাসের প্রথমার্ধ নিয়ে বৈশাখ মাস। বৈদিক পঞ্জিকায় এই মাসকে মাধব মাস এবং বৈষ্ণব পঞ্জিকায় একে মধুসূদন মাস বলে।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৫ — ১৫ নভেম্বর ২০২০) একজন ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা। অভিনেতা হিসেবে তিনি কিংবদন্তি, তবে আবৃত্তি শিল্পী হিসেবেও তার নাম অত্যন্ত সম্ভ্রমের সাথেই উচ্চারিত হয়। তিনি কবি এবং অনুবাদকও। বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ৩৪টি সিনেমার ভিতর ১৪টিতে অভিনয় করেছেন।সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমহার্স্ট স্ট্রীট সিটি কলেজে, সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় অপুর সংসার ছবিতে অভিনয় করেন। পরবর্তীকালে তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মত পরিচালকদের সঙ্গেও কাজ করেছেন। সিনেমা ছাড়াও তিনি বহু নাটক, যাত্রা, এবং টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। অভিনয় ছাড়া তিনি নাটক ও কবিতা লিখেছেন, নাটক পরিচালনা করেছেন।
আজিজুল হক (১৯১৯ - ৮ আগস্ট ২০১২) হলেন একজন মুহাদ্দিস, ইসলামী ঐক্য জোটের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস অভিভাবক পরিষদের চেয়ারম্যান, ইসলামী চিন্তাবিদ এবং বাংলাদেশের একজন রাজনৈতিক ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব। তিনি ঢাকার জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া'র উপাচার্য ছিলেন। হাদিসগ্রন্থ বুখারি শরীফ পূর্ণাঙ্গভাবে বাংলা ভাষায় সর্বপ্রথম তিনি অনুবাদ করেন।[১] হাদীসশাস্ত্রে বিশেষ পাণ্ডিত্যের জন্য তাকে ‘শায়খুল হাদীস’ উপাধি দেওয়া হয়।
আরতুগ্রুল (উসমানীয় তুর্কি: ارطغرل; ১১৯১/১১৯৮, আহলাত – ১২৮১, সুগুত) যিনি আরতুগ্রুল গাজি নামে পরিচিত ছিলেন। উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম উসমানের পিতা। তিনি ওঘুজ তুর্কিদের কায়ি গোত্রের নেতা ছিলেন। বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে রোমের সেলজুকদের সাহায্যার্থে আরতুগ্রুল মার্ভ থেকে আনাতুলিয়ায় আসেন। এ সময় তিনি বেশ কিছু ধারাবাহিক ঘটনার মাধ্যমে তিনি উসমানীয় সাম্রাজ্য সৃষ্টিতে নেতৃত্ব দেন। তার ছেলে প্রথম উসমান এবং ভবিষ্যৎ বংশধরদের মত তাকেও গাজী উপাধিতে সম্বোধন করা হয়, যা দ্বারা ইসলামের জন্য লড়াই করা বীর যোদ্ধাদের বোঝায়।
আরবি ভাষা (العَرَبِيَّة, আল্-ʿআরবিয়্যাহ্ বা عَرَبِيّ ʻআরবিয়্য্) সেমেটীয় ভাষা পরিবারের জীবন্ত সদস্যগুলির মধ্যে বৃহত্তম। এটি একটি কেন্দ্রীয় সেমেটীয় ভাষা এবং হিব্রু ও আরামীয় ভাষার সাথে এ ভাষার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। আধুনিক আরবিকে একটি "ম্যাক্রোভাষা" আখ্যা দেয়া হয়; এর ২৭ রকমের উপভাষা ISO 639-3-তে স্বীকৃত।
জানাযা একটি বিশেষ প্রার্থনা যা কোনো মৃত মুসলমানকে কবর দেয়ার পূর্বে অনুষ্ঠিত হয়। সচরাচর এটি জানাযার নামাজ নামে অভিহিত হয়। মুসলমান অর্থাৎ ইসলাম ধর্মামলম্বীদের জন্য এটি ফরযে কেফায়া বা সমাজের জন্য আবশ্যকীয় দায়িত্ব অর্থাৎ কোনো মুসলমানের মৃত্যু হলে মুসলমান সমাজের পক্ষ থেকে অবশ্যই জানাযার নামাজ পাঠ করতে হবে। তবে কোনো এলাকা বা গোত্রের পক্ষ থেকে একজন আদায় করলে সকলের পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায়।
কলকাতা বা কোলকাতা ([kolkata] (শুনুন) ইংরেজি: Kolkata; আদি নাম: কলিকাতা; পুরনো ইংরেজি নাম: Calcutta) হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ায় কলকাতা ৭ম বৃহৎ অর্থনীতির শহর । কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। কলকাতা শহরের অর্থনীতি আর চট্টগ্রাম শহরের অর্থনীতি প্রায় সমান। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক)৩০ থেকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বই ও নতুন দিল্লির ঠিক পরেই। কলকাতা দক্ষিণ এশিয়ায় মুম্বাই,ঢাকা,দিল্লি,চেন্নাই,করাচী, চট্টগ্রাম,এর পর ৭ম বৃহৎ অর্থনীতির শহর। সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।
উইকিপিডিয়ার অ-বিশ্বকোষীয় পরিদর্শক পরিচিতির জন্য, দেখুন উইকিপিডিয়া:বৃত্তান্ত।উইকিপিডিয়া একটি সম্মিলিতভাবে সম্পাদিত, বহুভাষিক, মুক্ত প্রবেশাধিকার, মুক্ত কন্টেন্ট সংযুক্ত একটি ইন্টারনেট বিশ্বকোষ, যা অলাভজনক উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন কর্তৃক সমর্থিত, আয়োজিত এবং পরিচালিত। স্বেচ্ছাসেবীরা বিশ্বব্যাপী সম্মিলিতভাবে ৩০১টি ভাষার উইকিপিডিয়ায় প্রায় ৪০ মিলিয়ন নিবন্ধ রচনা করেছেন, যার মধ্যে শুধু ইংরেজি উইকিপিডিয়ায় রয়েছে ৫৮ লক্ষের অধিক নিবন্ধ। যে কেউ ওয়েবসাইটে প্রবেশের মাধ্যমে যে কোনো নিবন্ধের সম্পাদনা করতে পারেন, যা সম্মিলিতভাবে ইন্টারনেটের সর্ববৃহৎ এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় সাধারণ তথ্যসূত্রের ঘাটতি পূরণ করে থাকে। ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সালে, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায় উইকিপিডিয়া সব ওয়েবসাইটের মধ্যে বিশ্বব্যাপী পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে, "মাসিক প্রায় ১৮ বিলিয়ন পৃষ্ঠা প্রদর্শন এবং প্রায় ৫০০ মিলিয়ন স্বতন্ত্র পরিদর্শক নিয়ে..., উইকিপিডিয়ায় ইয়াহু, ফেসবুক, মাইক্রোসফট এবং গুগলের পথানুসরণ করে, সর্বাধিক ১.২ বিলিয়ন স্বতন্ত্র পরিদর্শক রয়েছে।"জানুয়ারি ১৫, ২০০১ সালে জিমি ওয়েলস এবং ল্যারি স্যাঙ্গার উইকিপিডিয়া চালু করেন, পরবর্তীতে এর নাম তৈরি করেন, একটি পিন্ডারিশব্দে উইকি (এটি সম্মিলিত ওয়েবসাইটের এক প্রকার নাম, হাওয়াইয়ান ভাষায় "হাঁটা") এবং বিশ্বকোষ। 'উইকি উইকি' মানে দাঁড়িয়ে ছোট-ছোট পায়ে হাঁটা। উইকি ওয়েব সংস্কৃতিতে সবার ছোট-ছোট অবদান যুক্ত হয়েই এই সাইটটির মত ক্রমবর্ধমান সংগ্রহ গড়ে ওঠে। বর্তমানে এটি সব থেকে বড় এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় ইন্টারনেট ভিত্তিক তথ্যসূত্র হিসাবে ব্যবহার হয়।২০০৬ সালে, টাইম ম্যাগাজিন স্বীকৃতি দেয় যে, উইকিপিডিয়ায় (ইউটিউব, রেডিট, মাইস্পেস, এবং ফেসবুক-এর পাশাপাশি) বিশ্বব্যাপী লাখ-লাখ মানুষের অংশগ্রহণে অনলাইন সহযোগিতা ও মিথস্ক্রিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও উইকিপিডিয়া নিবন্ধের তাৎক্ষণিক খবর সংক্রান্ত দ্রুত হালনাগাদের কারণে এটি একটি সংবাদ সূত্র হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছে।উইকিপিডিয়া ওয়েবসাইট উন্মুক্ত প্রকৃতির হওয়ায় এখানে লেখার মান, ধ্বংসপ্রবণতা এবং তথ্যের নির্ভুলতা রক্ষা করতে বিভিন্ন উদ্যোগ পরিচালিত হয়ে থাকে। তবে, কিছু নিবন্ধে অপরীক্ষিত বা অযাচাইকৃত বা অসঙ্গত তথ্য থাকতে পারে।
মুহাম্মদ (৫৭০ – ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ) ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হিসেবে মুসলমানদের মাঝে গণ্য। নবী মুহাম্মাদ তার জীবনে যে সকল মহিলার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন মুসলমানগণ তাদেরকে উম্মাহাতুল মুমিনীন অর্থাৎ মুসলমানদের মাতা হিসেবে অভিহিত করেন। কুরআনেও সেটি উল্লেখিত হয়েছে। কুরআন ৩৩:৬:নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মাতা।তিনি আরবীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সেনানায়ক হিসেবেও সফলতা লাভ করেছেন। ইতিহাসে তাকে রাজনৈতিক এবং আধ্যাত্মিক উভয় ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তি এবং ইসলামের প্রবর্তক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যৌবনে তিনি মূলত ব্যবসার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ২৫ বছর বয়সে তার সাথে আরবের তৎকালীন বিশিষ্ট ধনী এবং সম্মানিত ব্যক্তিত্ব খাদিজার বিয়ে হয়। তাদের বৈবাহিক জীবন প্রায় ২৪ বছর স্থায়ী হয়। এরপর খাদিজা মৃত্যুবরণ করেন। খাদিজার জীবদ্দশায় তিনি আর কোন স্ত্রী গ্রহণ করেননি। মুসলিম জীবনীকারদের বর্ণনামতে, খাদিজার মৃত্যুর পর নবী আরও ১০ জন (মতান্তরে ১২ জন) স্ত্রী গ্রহণ করেন। অর্থাৎ তার স্ত্রীর সংখ্যা সর্বমোট ১১ জন (মতান্তরে ১৩ জন)। ইসলামে এককালীনভাবে চারটির অধিক বিয়ে নিষিদ্ধ হলেও কুরআনের সূরা আহযাবের ৫০-৫২ আয়াত অনুযায়ী মুহাম্মাদ চারটির অধিক বিয়ের অনুমতিপ্রাপ্ত ছিলেন। স্ত্রীদের মধ্যে শুধুমাত্র আয়েশা ছিলেন কুমারী। বাকি সব স্ত্রী ছিলেন বিধবা । মুহাম্মাদের জীবনকে প্রধান দুইটি অংশে ভাগ করা হয়: মক্কী জীবন এবং মাদানী জীবন। মক্কী জীবনে তিনি দুইজনকে বিয়ে করেন। তার বাকি সবগুলো বিয়েই ছিলো মাদানী জীবনে তথা হিজরতের পরে। মুহাম্মদের বৈবাহিক জীবনে তালাক ছিল না। এ কারণে কুরআনে তালাক সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States ইউনাইটেড স্টেটস) ইহা রাষ্ট্র নাম এবং সরকারি নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চচাশটি প্রদেশ একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি অধীন অঞ্চল নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি সংক্ষেপে আমেরিকা (বাংলা: মার্কিন) নামে পরিচিত। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি রাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি অঞ্চলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত; আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত। হাওয়াই প্রদেশ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত
পাকিস্তান (উর্দু: پاکِستان), সরকারিভাবে ইসলামি প্রজাতন্ত্রী পাকিস্তান (উর্দু: اِسلامی جمہوریہ پاکِستان), দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। ২১,২৭,৪২,৬৩১ এর অধিক জনসংখ্যা নিয়ে এটি জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম রাষ্ট্র এবং আয়তনের দিক থেকে ৩৩তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। পাকিস্তানের দক্ষিণে আরব সাগর এবং ওমান উপসাগরীয় উপকূলে ১০৪৬ কিলোমিটার (৬৫০ মাইল) উপকূল রয়েছে এবং এটি পূর্ব দিকে ভারতের দিকে, আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমে, ইরান দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং উত্তর-পূর্ব দিকে চীন সীমান্তে অবস্থিত। এটি উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তানের ওয়াখান করিডোরের দ্বারা তাজিকিস্তান থেকে সংকীর্ণভাবে বিভক্ত এবং ওমানের সাথে সমুদ্রের সীমান্ত ভাগ করে।
ইফতার (আরবি: إفطار ইফ্ত্বার্) হচ্ছে, রমযান মাসে মুসলিমগণ সারাদিন রোযা রাখার পর, সূর্যাস্তের সময় যে খাবার গ্রহণ করেন। রমজান মাসে সবাই একত্রে বসে ইফতার গ্রহণ করেন। খেজুর খাবার মাধ্যমে ইফতার শুরু করা সুন্নত। বাংলাদেশের বেশির ভাগ স্থানে পানি খাবার মাধ্যমে, আবার অনেক স্থানে ভেজা চাল মুখে দেবার মাধ্যমে ইফতারি শুরু করা হয়।
মুঘল বা মোগল সাম্রাজ্য (উর্দু: مغلیہ سلطنت, Mug̱ẖliyah Salṭanat, ফার্সি: گورکانیان, Gūrkāniyān)), ছিল ভারত উপমহাদেশের একটি সাম্রাজ্য। প্রায় দুই শতাব্দী ধরে সাম্রাজ্য পশ্চিমে সিন্ধু অববাহিকার বাইরের প্রান্ত, উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তান এবং উত্তরে কাশ্মীর, পূর্বে বর্তমান আসাম ও বাংলাদেশের উচ্চভূমি এবং দক্ষিণ ভারতের ডেকান মালভূমির উপভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মুঘল সাম্রাজ্য মূলতঃ পারস্য ও মধ্য এশিয়ার ভাষা, শিল্প ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত ছিল।পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইবরাহিম লোদির বিরুদ্ধে বাবরের জয়ের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়। মুঘল সম্রাটরা ছিলেন মধ্য এশিয়ার টার্কো-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত। তারা চাগতাই খান ও তৈমুরের মাধ্যমে চেঙ্গিস খানের বংশধর। ১৫৫৬ সালে আকবরের ক্ষমতারোহণের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের ধ্রূপদী যুগ শুরু হয়। আকবর ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরের শাসনামলে ভারতে অর্থনৈতিক প্রগতি বহুদূর অগ্রসর হয়। আকবর অনেক হিন্দু রাজপুত রাজ্যের সাথে মিত্রতা করেন। কিছু রাজপুত রাজ্য উত্তর পশ্চিম ভারতে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখে কিন্তু আকবর তাদের বশীভূত করতে সক্ষম হন। মুঘল সম্রাটরা মুসলিম ছিলেন তবে জীবনের শেষের দিকে শুধুমাত্র সম্রাট আকবর ও তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর নতুন ধর্ম দীন-ই-ইলাহির অনুসরণ করতেন।মুঘল সাম্রাজ্য কাঠামো, যাইহোক, কখনও কখনও বাবরের নাতি আকবরএর শাসনের তারিখ ১৬০০ থেকে ধরা হয়। এই সাম্রাজ্যিক কাঠামো ১৭২০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়, শেষ প্রধান সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। তার রাজত্বকালে সাম্রাজ্যতার সর্বোচ্চ ভৌগোলিক ব্যাপ্তি অর্জন করে। পরবর্তীতে হ্রাস, বিশেষ করে ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসনামলে, পুরাতন দিল্লি এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে, ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ রাজ দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যায়।
আব্দুল কাদের জিলানী হলেন ইসলাম ধর্মে অন্যতম প্রধান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ত্ব। তিনি ইসলামের অন্যতম প্রচারক হিসাবে সুবিদিত। সূফীরা তাকে 'বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী ' নামে ব্যক্ত করেন। আধ্যাত্মিকতায় উচ্চমার্গের জন্য বড়পীর, ইরাকের অন্তর্গত 'জিলান' নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করায় জিলানী, সম্মানিত হিসাবে আবু মোহাম্মদ মুহিউদ্দীন প্রভৃতি উপাধি ও নামেও তাকে সম্বোধন করা হয়।
তুরস্ক ( (শুনুন); তুর্কী: Türkiye), সরকারী নাম প্রজাতন্ত্রী তুরস্ক (Turkish: Türkiye Cumhuriyeti বা ত্যুর্কিয়ে জুম্হুরিয়েতি ),পশ্চিম এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। তুরস্কের প্রায় পুরোটাই এশীয় অংশে, পর্বতময় আনাতোলিয়া (তুর্কি: Antalya আন্তালিয়া) বা এশিয়া মাইনর উপদ্বীপে পড়েছে। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা আনাতোলিয়াতেই অবস্থিত। তুরস্কের বাকী অংশের নাম পূর্ব বা তুর্কীয় থ্রাস এবং এটি ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় অবস্থিত। এই অঞ্চলটি উর্বর উঁচু নিচু টিলাপাহাড় নিয়ে গঠিত। এখানে তুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তানবুল অবস্থিত। সামরিক কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তিনটি জলপথ এশীয় ও ইউরোপীয় তুরস্ককে পৃথক করেছে --- মার্মারা সাগর, এবং বসফরাস প্রণালী ও দার্দানেলেস প্রণালী। এই তিনটি জলপথ একত্রে কৃষ্ণ সাগর থেকে এজীয় সাগরে যাবার একমাত্র পথ তৈরি করেছে।তুরস্ক মোটামুটি চতুর্ভুজাকৃতির। এর পশ্চিমে এজীয় সাগর ও গ্রিস; উত্তর-পূর্বে জর্জিয়া, আর্মেনিয়া ও স্বায়ত্বশাসিত আজারবাইজানি প্রজাতন্ত্র নাখচিভান; পূর্বে ইরান; দক্ষিণে ইরাক, সিরিয়া ও ভূমধ্যসাগর। তুরস্কের রয়েছে বিস্তৃত উপকূল, যা দেশটির সীমান্তের তিন-চতুর্থাংশ গঠন করেছে।
যোনি বা যোনিপথ বা যৌননালী বা জনননালী (লাতিন: ভ্যাজাইনা) হলো স্ত্রী যৌনাঙ্গ, যা জরায়ু থেকে স্ত্রীদেহের বাইরের অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ফাইব্রোমাসকুলার (তন্তু-পেশিময়) নলাকার অংশ। মানুষ ছাড়াও অমরাবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী ও মারসুপিয়াল প্রাণীতে, যেমন ক্যাঙ্গারু অথবা স্ত্রী পাখি, মনোট্রিম ও কিছু সরীসৃপের ক্লোকাতে যোনি পরিদৃষ্ট হয়। স্ত্রী কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণীরও যোনি আছে, যা মূলত ওভিডাক্টের শেষ প্রান্ত।
ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি হলো ভারতের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রধান দুটি দলের অন্যতম (অপর দলটি হলো ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস)। ২০১৪ সালের হিসেব অনুসারে, ভারতের সংসদ ও রাজ্য বিধানসভাগুলির প্রতিনিধি সংখ্যার দিক থেকে এটি ভারতের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। প্রাথমিক সদস্যপদের দিক থেকে এটি বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। বিজেপি একটি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দল। জাতীয়তাবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সঙ্গে এই দলের আদর্শগত ও সংগঠনগত নৈকট্য রয়েছে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি রাজনৈতিক দল।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অস্থায়ী সরকার (যা মুজিবনগর সরকার বা প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার নামেও পরিচিত) মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমান মুজিবনগর) শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের জনগণের প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী সংগঠন ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় এবং এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ সহায়তাকারী রাষ্ট্র ভারতের সরকার ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক রক্ষায় এই সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। এই সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ প্রবল যুদ্ধে রূপ নেয় এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত হয়।
বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্য নামে পরিচিত। আনুমানিক খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনার সূত্রপাত হয়। খ্রিষ্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত বৌদ্ধ দোহা-সংকলন চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আরও তিনটি গ্রন্থের সঙ্গে চর্যাগানগুলো নিয়ে সম্পাদিত গ্রন্থের নাম দেন " হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোহা "। মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্য ছিল কাব্যপ্রধান। হিন্দুধর্ম, ইসলাম ও বাংলার লৌকিক ধর্মবিশ্বাসগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই সময়কার বাংলা সাহিত্য। মঙ্গলকাব্য, বৈষ্ণব পদাবলি, শাক্তপদাবলি, বৈষ্ণব সন্তজীবনী, রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবতের বঙ্গানুবাদ, পীরসাহিত্য, নাথসাহিত্য, বাউল পদাবলি এবং ইসলামি ধর্মসাহিত্য ছিল এই সাহিত্যের মূল বিষয়। বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার সূত্রপাত হয় খ্রিষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার নবজাগরণের যুগে কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে বাংলা সাহিত্যে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। এই সময় থেকে ধর্মীয় বিষয়বস্তুর বদলে মানুষ, মানবতাবাদ ও মানব-মনস্তত্ত্ব বাংলা সাহিত্যের প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর বাংলা সাহিত্যও দুটি ধারায় বিভক্ত হয়: কলকাতা-কেন্দ্রিক পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য ও ঢাকা-কেন্দ্রিক বাংলাদেশের সাহিত্য। বর্তমানে বাংলা সাহিত্য বিশ্বের একটি অন্যতম, সমৃদ্ধ সাহিত্যধারা হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।
চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রাচীনতম পদ সংকলন তথা সাহিত্য নিদর্শন। নব্য ভারতীয় আর্যভাষারও প্রাচীনতর রচনা এটি। খ্রিষ্টীয় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত এই গীতিপদাবলির রচয়িতারা ছিলেন সহজিয়া বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যগণ। বৌদ্ধ ধর্মের গূঢ় অর্থ সাংকেতিক রূপের আশ্রয়ে ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যেই তাঁরা পদগুলো রচনা করেছিলেন। বাংলা সাধন সংগীত শাখাটির সূত্রপাতও হয়েছিলো এই চর্যাপদ থেকেই। সে বিবেচনায় এটি একটি ধর্মগ্রন্থজাতীয় রচনা। একই সঙ্গে সমকালীন বাংলার সামাজিক ও প্রাকৃতিক চিত্রাবলি এই পদগুলোতে উজ্জ্বল। এর সাহিত্যগুণ এখনও চিত্তাকর্ষক। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থশালা থেকে চর্যার একটি খণ্ডিত পুঁথি উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে চর্যাপদের সঙ্গে বাংলা ভাষার অনস্বীকার্য যোগসূত্র বৈজ্ঞানিক যুক্তিসহ প্রতিষ্ঠিত করেন। চর্যাপদের প্রধান কবিগণ হলেন লুইপাদ, কাহ্নপাদ, ভুসুকুপাদ, শবরপাদ প্রমুখ।
ইউক্রেন বা উক্রাইনা (ইউক্রেনীয়: Україна উক্রায়িনা আ-ধ্ব-ব: /ukraˈjina/) পূর্ব ইউরোপের একটি রাষ্ট্র। রাশিয়ার পরে এটি ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র। ইউক্রেনের পশ্চিমে পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি, দক্ষিণ-পশ্চিমে রোমানিয়া ও মলদোভা, দক্ষিণে কৃষ্ণ সাগর ও আজভ সাগর, পূর্বে ও উত্তর-পূর্বে রাশিয়া এবং উত্তরে বেলারুস। দক্ষিণে ক্রিমিয়া উপদ্বীপে অবস্থিত স্বায়ত্বশাসিত ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্র ইউক্রেনের সীমান্তের মধ্যে পড়েছে। কিয়েভ ইউক্রেনের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।
আরবি লিপি (الأَبْجَدِيَّة العَرَبِيَّة আল্-আব্জাদীয়াহ্ আল্-ʻআরবীয়াহ্ বা الحُرُوف العَرَبِيَّة আল্-হুরুফ্ আল্-ʻআরবীয়াহ্) ২৮টি বর্ণ নিয়ে গঠিত একটি লিখন পদ্ধতি যা আরবি ও কুর্দি ভাষা লিখতে ব্যবহার করা হয়। এদের মধ্যে প্রতিটি বর্ণের একটি বিচ্ছিন্ন রূপ, আদ্য রূপ, মধ্য রূপ ও অন্ত্য রূপ হয়। আরবি লিপি ডান থেকে বাম দিকে লেখা হয়। আরবি লিপি কখনো কখনো সোমালি ও মালাগাসি ভাষাও লিখতে ব্যবহার করা হয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ৫ জানুয়ারি, ১৯৫৫) পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এবং সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা-সভানেত্রী। বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, ভূমি ও ভূমিসংস্কার, তথ্য ও সংস্কৃতি, পর্বতাঞ্চল বিষয়ক, কৃষি, বিদ্যুৎ, কর্মী ও প্রশাসনিক সংস্কার, সংখ্যালঘু কল্যাণ ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগেরও ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। তিনি পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন বাগ্মী রাজনীতিবিদ। তাকে প্রায়শই দিদি বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এছাড়াও তাকে অগ্নিকন্যাও বলা হয়। ২০১১ সালে তার নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছিল। এই সরকার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সময় গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার ছিল। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটে তিনি দুই বার রেল, এক বার কয়লা মন্ত্রকের এবং এক বার মানবসম্পদ উন্নয়ন, যুব, ক্রীড়া, নারী ও শিশুকল্যাণ বিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গে কৃষকদের জমি বলপূর্বক অধিগ্রহণ করে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের বিরোধিতা করে আন্দোলন করেছিলেন।
ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি ঢাকা জেলার প্রধান শহর। ভৌগোলিকভাবে এটি বাংলাদেশের মধ্যভাগে বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে একটি সমতল এলাকাতে অবস্থিত। ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ায় মুম্বাইয়ের পড়ে দ্বিতীয়়়় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। ঢাকার জিডিপি ১৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার , ২০২০ সালের হিসেবে । এছাড়া ঢাকার পিপিপি ২৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার , ২০২০ সালের হিসেবে । ভৌগোলিকভাবে ঢাকা একটি অতিমহানগরী বা মেগাসিটি; ঢাকা মহানগরী এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ১০ লক্ষ। জনসংখ্যার বিচারে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম শহর। জনঘনত্বের বিচারে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর; ৩০৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই শহরে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ২৩ হাজার লোক বাস করে।ঢাকা শহর "মসজিদের শহর" নামে সুপরিচিত। এখানে এক হাজারেরও বেশি মসজিদ আছে। এছাড়া ঢাকা "জাদুর শহর " নামেও পরিচিত। এই শহরে রোজ প্রায় ৫ লক্ষ রিকশা চলাচল করে। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান সংস্কৃতি, শিক্ষা ও বাণিজ্যকেন্দ্র।ঢাকা শহরের জলবায়ু ক্রান্তীয় আর্দ্র ও শুষ্ক প্রকৃতির। গড় তাপমাত্রা এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ প্রায় ৩৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন প্রায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ঢাকা শহরে বর্ষাকাল, সেসময় প্রতি মাসে গড়ে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়।সপ্তদশ শতাব্দীতে পুরান ঢাকা মুঘল সাম্রাজ্যের সুবহে বাংলা (বাংলা প্রদেশ) এর প্রাদেশিক রাজধানী ছিল। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে এই শহর জাহাঙ্গীর নগর নামে পরিচিত ছিলো। বিশ্বব্যাপী মসলিন বাণিজ্যের একটি কেন্দ্র ছিলো ঢাকা এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীগণ এখানে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আসতেন। ঢাকাতে বিশ্বের সেরা মসলিন কাপড় উৎপাদিত হতো। যদিও আধুনিক ঢাকা শহরের বিকাশ ঘটে ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ শাসন আমলে, এই সময় নবাবগণ ঢাকা শাসন করতেন। এই সময় কলকাতার পরেই ঢাকা বাংলা প্রেসিডেন্সির দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী হয়ে ওঠে। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পরে ঢাকা নবগঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পরে ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসনিক রাজধানীতে পরিণত হয়। ১৯৫০-১৯৬০ সালের মধ্যে এই শহর বিভিন্ন সামাজিক, জাতীয়তাবাদী ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে ঢাকা “স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের রাজধানী” ঘোষিত হয়। ইতিপূর্বে সামরিক আইন বলবৎ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা, সামরিক দমন, যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তাণ্ডবলীলার মতো একাধিক অস্থির ঘটনার সাক্ষী হয় এই শহর।
শিব (; সংস্কৃত: शिव [ɕɪʋɐ], সংস্কৃত: शिवः, আইএএসটি: Śiva, ISO: Śiva, শুনুন ), হলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ দেবতা। সনাতন ধর্মের শাস্ত্রসমূহে তিনি পরমসত্ত্বা রূপে ঘোষিত। শিব সৃষ্টি-স্থিতি-লয়রূপ তিন কারণের কারণ, পরমেশ্বর- এটা তার প্রণাম মন্ত্রেই বার বার উঠে এসেছে। তিনি জন্মরহিত, শাশ্বত, সর্বকারণের কারণ; তিনি স্ব-স্বরূপে বর্তমান, সমস্ত জ্যোতির জ্যোতি; তিনি তুরীয়, অন্ধকারের অতীত, আদি ও অন্তবিহীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে ঢাবি) ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশের একটি স্বায়ত্তশাসিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়; যা বহু-অনুষদভিত্তিক গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। ১৯২১ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ ভারতে অক্সব্রিজ শিক্ষা ব্যবস্থা অনুসরণে এটি স্থাপিত হয়। সূচনালগ্নে বিভিন্ন প্রথিতযশা বৃত্তিধারী ও বিজ্ঞানীদের দ্বারা কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রিত হবার প্রেক্ষাপটে এটি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে স্বীকৃতি পায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষত্ব হলো বাংলাদেশ স্বাধীন করতে এর বিশেষ অবদান ছিল। যেখানে দেশের সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে বিশেষ অবদান রেখেছিল।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি পদক লাভ করেছেন। এছাড়া, এটি বাংলাদেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এশিয়া উইক এর পক্ষ থেকে শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে নেয়। এটি এশিয়ার সেরা ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৬৪তম। এখানে প্রায় ৪৩০০০ ছাত্র-ছাত্রী এবং ২০৮০ জন শিক্ষক রয়েছে৷