The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
আল্লামা মামুনুল হক (জন্ম: নভেম্বর ১৯৭৩) একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ, ইসলামি বক্তা, লেখক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া, ঢাকার শায়খুল হাদিস, বাবরি মসজিদ বাংলাদেশ, মাহাদুত তারবিয়্যাতুল ইসলামিয়া ও তারবিয়্যাতুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, মাসিক রহমানী পয়গামের সম্পাদক, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি ও বায়তুল মামুর জামে মসজিদের খতিব। তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের ইসলামি বক্তাদের সংগঠন রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন বাংলাদেশের উপদেষ্টাসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতৃস্থানীয় পদে রয়েছেন। ইংরেজি সহ পাঁচটি ভাষায় তার দক্ষতা রয়েছে। ইসলামি নেতা হিসেবে তিনি দেশব্যাপী পরিচিত। নাস্তিক, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী ও ইসলাম বিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে কঠোর বক্তব্য দিয়ে তিনি বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছেন এবং এ সংক্রান্ত আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ইসলামি মৌলবাদ প্রচারের অভিযোগে তাকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ, গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ ৬৫টি সংগঠন দেশব্যাপী ব্যাপক আন্দোলন করেছে।
আকবর হোসেন পাঠান দুলু (জন্ম ১৮ আগস্ট ১৯৪৮) যিনি ফারুক নামে অধিক পরিচিত একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত জলছবি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। তিনি লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, সারেং বৌ, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে, মিয়া ভাই-সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভূ-রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মায়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ - ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
পেশী (ইংরেজি: Muscle) হলো প্রাণীদেহের বিশেষ এক ধরনের নরম কিন্তু স্থিতিস্থাপক কলা যার উদ্দেশ্য প্রাণীর নড়ন, চলন ও বলপ্রয়োগে সহায়তা করা। প্রাণীদেহের অভ্যন্তরেও পেশীসমূহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ পালন করে, যেমন হৃৎপিণ্ডের সংকোচন-প্রসারণ, পৌষ্টিকনালীর ভেতর দিয়ে খাদ্য পরিবহন, ইত্যাদি। ভ্রূণ মেসোডার্ম থেকে তৈরি সংকোচন প্রসারণশীল বিশেষ ধরনের টিস্যুকে পেশি টিস্যু বলে।
আজিজুল হক (১৯১৯ - ৮ আগস্ট ২০১২) হলেন একজন মুহাদ্দিস, ইসলামী ঐক্য জোটের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস অভিভাবক পরিষদের চেয়ারম্যান, ইসলামী চিন্তাবিদ এবং বাংলাদেশের একজন রাজনৈতিক ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব। তিনি ঢাকার জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া'র উপাচার্য ছিলেন। হাদিসগ্রন্থ বুখারি শরীফ পূর্ণাঙ্গভাবে বাংলা ভাষায় সর্বপ্রথম তিনি অনুবাদ করেন।[১] হাদীসশাস্ত্রে বিশেষ পাণ্ডিত্যের জন্য তাকে ‘শায়খুল হাদীস’ উপাধি দেওয়া হয়।
মাহাবুব আলম চাষী (১৯২৭ - ১৯৮৩) হলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সমাজকর্মী এবং সরকারি কর্মকর্তা। তিনি ১৯৭১ সালের অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র সচিব হিসাবে স্বাধীনতা যুদ্ধেও অবদান রেখেছেন। বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডে অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে তাকে চিহ্নিত করা হয়। পল্লী উন্নয়নে অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য ১৯৭৭ সালে তাকে “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয়।
তসলিমা নাসরিন (জন্ম: ২৫ আগস্ট ১৯৬২) বাংলাদেশের একজন সাহিত্যিক ও চিকিৎসক। বিংশ শতাব্দীর আশির দশকে একজন উদীয়মান কবি হিসেবে সাহিত্যজগতে প্রবেশ করে তসলিমা এই শতকের শেষের দিকে নারীবাদী ও ধর্মীয় সমালোচনামূলক রচনার কারণে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। তিনি তার রচনা ও ভাষণের মাধ্যমে লিঙ্গসমতা, মুক্তচিন্তা, নাস্তিক্যবাদ এবং ধর্মবিরোধী মতবাদ প্রচার করায় ইসলামপন্থীদের রোষানলে পড়েন ও তাদের নিকট হতে হত্যার হুমকি পেতে থাকায় ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ ত্যাগ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করতে বাধ্য হন। তিনি কিছুকাল যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেছেন। বর্তমানে তিনি ভারত সরকার কর্তৃক ভারতে অজ্ঞাতবাসে অবস্থানের সুযোগ পেয়েছেন।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারতীয় প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০–১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা মুজিব, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বাঙালির অধিকার রক্ষায় ব্রিটিশ ভারত থেকে শুরু করে ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে মুজিবকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্ব দেয়ার পাশাপাশি প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। এসকল কারণে তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে গণ্য করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী।
নির্বাচনী ব্যবস্থা হলো সাংবিধানিক নিয়ম অনুসরণ করে জনগণের মতামত জানাবার ব্যবস্থা। ভোট একটি দেশের জনগনের অন্যতম গণতান্ত্রিক অধিকার। এর মাধ্যমে জনগণ কোনো ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় আসার জন্য নির্বাচিত করে। বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত নির্বাচনী ব্যবস্থায় গরিষ্ঠতামূলক শাসন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমুলক ব্যবস্থার উপস্থিতি দেখা যায়। এছাড়া গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একক বিজয়ী ব্যবস্থা, বহু বিজয়ী ব্যবস্থা, পছন্দানুক্রম ব্যবস্থা, দলীয়-তালিকা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব এবং অতিরিক্ত সদস্য ব্যবস্থারও প্রচলন দেখা যায়।
পয়লা বৈশাখ বা পহেলা বৈশাখ (বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস বৈশাখের ১ তারিখ) বঙ্গাব্দের প্রথম দিন, তথা বাংলা নববর্ষ। দিনটি সকল বাঙালী জাতির ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণের দিন। দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়। ত্রিপুরায় বসবাসরত বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নিয়ে থাকে। সে হিসেবে এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন লোকউৎসব হিসাবে বিবেচিত।গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে বাংলাদেশের প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়। বাংলা একাডেমী কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে চান্দ্রসৌর বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১৫ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালিত হয়। এছাড়াও দিনটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ছুটির দিন হিসেবে গৃহীত। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা দিনটি নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করার উপলক্ষ হিসেবে বরণ করে নেয়।
শারীরিক ব্যায়াম বা শরীরচর্চা হল যেকোন শারীরিক কার্যক্রম যা শারীরিক সুস্থতা রক্ষা বা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এর অপর একটি অর্থ হল শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত আন্দোলন | বিভিন্ন কারণে ব্যায়াম করা হয়, যেমন- মাংসপেশী ও সংবহন তন্ত্র সবল করা, ক্রীড়া-নৈপুন্য বৃদ্ধি করা, শারীরিক ওজন হ্রাস করা বা রক্ষা করা কিংবা শুধু উপভোগ করা। নিয়মিত ব্যায়াম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে পুনরুদ্ধার হতে সাহায্য করে। হৃদ্ররোগ, সংবহন তন্ত্রের জটিলতা, টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং স্থূলতা রোধে শারীরিক ব্যায়াম কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়া মানসিক অবসাদগ্রস্ততা দূর করতে, ইতিবাচক আত্মসম্মান বৃদ্ধিতে, সামগ্রিক মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষায়, ব্যক্তির যৌন আবেদন বৃদ্ধি, শরীরের সঠিক অনুপাত অর্জনে শারীরিক ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিশুস্বাস্থ্যের স্থূলতা একটি সমকালীন বিশ্বব্যাপী সমস্যা। ব্যায়াম শরীরের স্থূলতা রোধে কাজ করে। স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীরা শারীরিক ব্যায়ামকে “অলৌকিক” এবং “আশ্চর্যজনক” ঔষধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা রক্ষার্থে ব্যায়ামের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রমাণিত।
কাজী নজরুল ইসলাম (২৫ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬; ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ – ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) রাঢ় বাংলায় জন্ম নেওয়া একজন বাঙালি কবি এবং পরবর্তী কালে বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য এবং তিনি ছিলেন বাঙালি মনীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ – দুই বাংলাতেই তার কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তার কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তার কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা হাতে তার প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তার প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে – কাজেই "বিদ্রোহী কবি", তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উভয় বাংলাতে প্রতি বৎসর উদযাপিত হয়ে থাকে।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (২৬ জুন ১৮৩৮ - ৮ এপ্রিল ১৮৯৪) ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি ঔপন্যাসিক। বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশে তার অসীম অবদানের জন্যে তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। তাকে সাধারণত প্রথম আধুনিক বাংলা ঔপন্যাসিক হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে গীতার ব্যাখ্যাদাতা হিসাবে, সাহিত্য সমালোচক হিসাবেও তিনি বিশেষ খ্যাতিমান। তিনি জীবিকাসূত্রে ব্রিটিশ রাজের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষার আদি সাহিত্যপত্র বঙ্গদর্শনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছদ্মনাম হিসেবে কমলাকান্ত নামটি বেছে নিয়েছিলেন। তাকে বাংলা উপন্যাসের জনক বলা হয়। এছাড়াও তিনি বাংলা সাহিত্যের সাহিত্য সম্রাট হিসেবে পরিচিত।বঙ্কিমচন্দ্র রচিত আনন্দমঠ (১৮৮২) উপন্যাসের কবিতা বন্দে মাতরম ১৯৩৭ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কর্তৃক ভারতের জাতীয় স্তোত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) হল কুরআনের একটি আয়াত (বাক্য) বা দোয়া, যার বাংলা অর্থ হল "আমরা তো আল্লাহরই এবং আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী"। কথাটা সাধারণত মুসলমানরা তাদের বেদনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে উচ্চারণ করে, বিশেষ করে যখন একজন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ,দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
মুহাম্মাদ (২৯ আগস্ট ৫৭০ - ৮ জুন ৬৩২; আরবি উচ্চারণ শুনতে ক্লিক করুন محمد মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত; তুর্কি : মুহাম্মেদ), পূর্ণ নাম : মুহাম্মাদ ইবনে ʿআবদুল্লাহ ইবনে ʿআবদুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম (ابو القاسم محمد ابن عبد الله ابن عبد المطلب ابن هاشم) হলেন ইসলামের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব এবং ইসলামী বিশ্বাস মতে আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সর্বশেষ নবী, (আরবি: النبي আন-নাবিয়্যু), তথা "বার্তাবাহক" (আরবি : الرسول আর-রাসুল), যার উপর ইসলামী প্রধান ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অমুসলিমদের মতে তিনি ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সফলতা।আনুমানিক ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে (হস্তিবর্ষ) মক্কা নগরীতে জন্ম নেওয়া মুহাম্মাদ মাতৃগর্ভে থাকাকালীন পিতা হারা হন শিশু বয়সে মাতাকে হারিয়ে এতিম হন এবং প্রথমে তার পিতামহ আবদুল মুত্তালিব ও পরে পিতৃব্য আবু তালিবের নিকট লালিত পালিত হন। হেরা পর্বতের গুহায় ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুওয়াত লাভ করেন। জিবরাঈল ফেরেশতা এই পর্বতের গুহায় আল্লাহর তরফ থেকে তার নিকট ওহী নিয়ে আসেন। তিন বছর পর ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে ওহী প্রচার করেন, এবং ঘোষণা দেন "আল্লাহ্ এক" ও তার নিকট নিজেকে সঁপে দেওয়ার মধ্যেই জাগতিক কল্যাণ নিহিত, এবং ইসলামের অন্যান্য নবীদের মত তিনিও আল্লাহর প্রেরিত দূত।মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মুহাম্মাদের নিকট আসা ওহীসমূহ কুরআনের আয়াত হিসেবে রয়ে যায় এবং মুসলমানরা এই আয়াতসমূহকে "আল্লাহর বাণী" বলে বিবেচনা করেন। এই কুরআনের উপর ইসলাম ধর্মের মূল নিহিত। কুরআনের পাশাপাশি হাদিস ও সিরাত (জীবনী) থেকে প্রাপ্ত মুহাম্মাদের শিক্ষা ও অনুশীলন (সুন্নাহ) ইসলামী আইন (শরিয়াহ) হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও, বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে; অন্যদিকে, এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তানের ছিল দুইটি অংশ: পূর্ব বাংলা (১৯৫৫ সালে পুনর্নামাঙ্কিত পূর্ব পাকিস্তান) ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কার্যত পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন বাদামতলী কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের ছেলে রফিক, সালাম, এম. এ.
একান্তই ইন্দ্রিয় সর্বস্ব প্রাণী হিসেবে মানব শিশুর জন্ম। ইন্দ্রিয় দ্বারা তাড়িত হলেও ধীরে ধীরে সে নানা ভাবে নানা প্রক্রিয়ায় একজন সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে। সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া একটি জীবনব্যাপী এবং বহুমুখী প্রক্রিয়া।এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একজন মানুষ পুরোপুরি সামাজিক মানুষ হিসেবে পরিনত হয়। এই প্রসঙ্গে সমাজবিজ্ঞানী কিংসলে ডেভিস এর সংজ্ঞাটি যথার্থ - ব্যক্তি পুরোপুরি সামাজিক মানুষে পরিনত হয়। এ প্রক্রিয়া ছাড়া ব্যক্তি তার ব্যক্তিত্ব লাভে ব্যর্থ হয় এবং সমাজে সে এক জন যোগ্য ও উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না।” সামাজিকীকরণ এমন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা মানব শিশু ক্রমশ ব্যক্তিত্বপূর্ণ সামাজিক মানুষে পরিণত হয়। যে সকল মাধ্যমে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া সাধিত হয় তার মধ্যে সর্বপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম পরিবার। নিচে পরিবারের ভূমিকার বিবরণ দেওয়া হল:- বলা হয়ে থাকে, শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশের পথে বংশগতি মূল উপাদান যোগায়, সংস্কৃতির নকশা অঙ্কন করে এবং পিতামাতা কারিগর হিসেবে কাজ করে। একটি শিশু তার দৈহিক, মানসিক এবং বস্তুগত ও অবস্তুগত যাবতীয় প্রয়োজন পরিবার থেকেই মেটায়। পরিবারেই শিশুর চিন্তা, আবেগ ও কর্মের অভ্যাস গঠিত হয়। একটি শিশুর সুকোমল বৃত্তিগুলি এবং সুপ্ত প্রতিভা পরিবারের মাধ্যমেই বিকাশ লাভ করে। শিশু পরিবার থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও গ্রহণ করে, পরিবার থেকেই একটি শিশু আচার-আচরণ, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করে সমাজে একজন যোগ্য ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে গড়ে ওঠে।সুতরাং একটি শিশুর ব্যক্তিত্ব নির্ভর করে পরিবারের তিনটি বিষয়ের উপর। পিতা-মাতার সম্পর্ক পিতা-মাতা ও শিশুর মধ্যে সম্পর্ক একই পরিবারের একাধিক শিশুদের মধ্যে পরস্পরের সম্পর্কউল্লিখিত সম্পর্কগুলি যদি ইতিবাচক হয় তবে ঐ শিশুরা সৎ, ব্যক্তিত্বপূর্ণ এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে ওঠে এবং সমাজে সহজ জীবনযাপন করতে পারে। শিশুর সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার দ্বারা পূণ বিকাশও হয়ে থাকে প্রশ্ন : সামাজিকীকরণ কী? সামাজিকীকরণের মাধ্যমগুলো বর্ণনা কর? উত্তর : ভূমিকা : সামাজিকীকরণ একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। শিশুর জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এ প্রক্রিয়ায় জীবন চলতে থাকে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যক্তি যখন এক পর্যায় থেকে আরেক পর্যায়ে প্রবেশ করে তখন তাকে নতুন পরিবেশের সঙ্গে, নতুন অবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হয়। এ খাপ খাওয়ানো প্রক্রিয়ার ফলে তার আচরণে পরিবর্তন আসে। নতুন নিয়মকানুন, রীতিনীতি এবং নতুন পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে চলার প্রক্রিয়ার নাম সামাজিকীকরণ। সামাজিকীকরণ : সামাজিকীকরণ বলতে এমন একটি প্রক্রিয়াকে বোঝায় যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানব শিশু সমাজের একজন কাঙ্ক্ষিত পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসেবে গড়ে ওঠে। সমাজবিজ্ঞানী কিংসলে ডেভিসের মতে, 'সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি পুরোপুরি সামাজিক মানুষে পরিণত হয়। এ প্রক্রিয়া ছাড়া ব্যক্তি তার ব্যক্তিত্ব লাভে ব্যর্থ হয় এবং সমাজে সে একজন যোগ্য ও উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না।অগবার্ন ও নিমকফ বলেন, 'সামাজিকীকরণ ছাড়া সমাজে জীবনযাপন একেবারেই সম্ভব নয় এবং সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি তার গোষ্ঠীর সঙ্গে মেলামেশার সামাজিক মূল্য বজায় রাখে।'সামাজিকীকরণ এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানব শিশু ক্রমেই ব্যক্তিত্বপূর্ণ সামাজিক মানুষে পরিণত হয়। অর্থাৎ যে সামাজিক প্রক্রিয়াকে মানুষের সামাজিক প্রগতির উন্মেষ, বিকাশ হয় তাকেই সামাজিকীকরণ বলা হয়। সামাজিকীকরণের মাধ্যম : নিম্নে সামাজিকীকরণের মাধ্যমগুলো আলোচনা করা হলো। পরিবার : সামাজিকীকরণের কতগুলো মাধ্যম রয়েছে। তার মধ্যে পরিবারের ভূমিকাই সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। বলা হয়ে থাকে, শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশের পথে বংশগতি কাঁচামাল জোগায়, সংস্কৃতি নকশা জোগায় এবং পরিবারে পিতা-মাতা কারিগর হিসেবে কাজ করেন। কারণ শিশুর দৈহিক, মানসিক, পার্থিব ও অপার্থিক যাবতীয় প্রয়োজন মেটায় পরিবার। কীভাবে কথা বলতে হবে, নিজের আবেগ কীভাবে প্রকাশ করা যায়, তা শিশু পরিবার থেকে শিক্ষালাভ করে। খেলার সঙ্গী : শিশুর সামাজিকীকরণে তার সঙ্গী বা খেলার সঙ্গীরা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। শিশু তার খেলার সঙ্গীদের সঙ্গে মেলামেশা করলে তার মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলি পরিস্ফুট হয়। সে স্বাবলম্বী হতে শেখে। ধর্ম : ধর্মীয় অনুশাসন মানুষের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। শৈশবকাল থেকে যে ব্যক্তি যে ধর্মে বিশ্বাসী সে ব্যক্তি সেই ধর্মীয় মূল্যবোধের মাধ্যমে লালিত হয় এবং সেই ধর্মীয় বৈশিষ্ট্যগুলো পরবর্তীকালে তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে প্রতিফলিত হয়। ধর্ম মানুষকে সামাজিক মূল্যবোধ তথা সত্যবাদিতা, কর্তব্যপরায়ণতা, ন্যায়পরায়ণতা, সহমর্মিতা প্রভৃতি গুণে গুণান্বিত হতে শিক্ষা দেয়। এককথায়, ধর্মীয় আচর-অনুষ্ঠান ব্যক্তির সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমাজের সভ্যরা যাতে সামাজিক মূল্য, সামাজিক আদর্শ, সামাজিক অভ্যাসগুলো আয়ত্ত করতে পারে সেজন্য প্রত্যেক সমাজ প্রতিটি সভ্যকে নির্দিষ্ট ভূমিকা পালনের শিক্ষাদান করে। সমাজ তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞানদান করে। গণমাধ্যম : সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়। গণমাধ্যমগুলো হলো সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, বেতার, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ইত্যাদি। তবে এগুলো সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে গৌণ ভূমিকা পালন করে।মন্তব্য : বিবৃত আলোচনাকে বিচার ও বিশ্লেষণ করে আমরা বলতে পারি, সামাজিকীকরণের বাহন হিসেবে পরিবার, খেলার সঙ্গী, ধর্ম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মুখ্য ভূমিকা পালন করে। আর গণমাধ্যমগুলো সামাজিকীকরণে গৌণ ভূমিকা পালন করে।প্রশ্ন : সামাজিকীকরণের সংজ্ঞা দাও। সামাজিকীকরণের মাধ্যম হিসেবে পরিবারের ভূমিকা বর্ণনা কর। উত্তর : সামাজিকীকরণ বলতে এমন একটি প্রক্রিয়াকে বোঝায় যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানব শিশু সমাজের একজন কাঙ্ক্ষিত পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসেবে গড়ে ওঠে।সমাজবিজ্ঞানী কিংসলে ডেভিসের মতে, 'সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার দ্বারা ব্যক্তি পুরোপুরি সামাজিক মানুষে পরিণত হয়। এ প্রক্রিয়া ছাড়া ব্যক্তি তার ব্যক্তিত্ব লাভে ব্যর্থ হয় এবং সমাজে সে একজন যোগ্য ও উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না।'অগবার্ন ও নিমকফ বলেন, 'সামাজিকীকরণ ছাড়া সমাজে জীবনযাপন একেবারেই সম্ভব নয় এবং সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার দ্বারা ব্যক্তি তার গোষ্ঠীর সঙ্গে মেলামেশায় সামাজিক মূল্য বজায় রাখে।' সামাজিকীকরণ এমন একটি প্রক্রিয়া, যার দ্বারা মানব শিশু ক্রমেই ব্যক্তিত্বপূর্ণ সামাজিক মানুষে পরিণত হয়। অর্থাৎ যে সামাজিক প্রক্রিয়াতে মানুষের সামাজিক প্রগতির উন্মেষ, বিকাশ হয় তাকেই সামাজিকীকরণ বলে। সামাজিকীকরণের মাধ্যম হিসেবে পরিবারের ভূমিকা সামাজিকীকরণের কতগুলো মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে পরিবারের ভূমিকাই সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। বলা হয়ে থাকে, শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশের পথে বংশগতি মূল উপাদান জোগায়, সংস্কৃতি নকশা তৈরি করে এবং পরিবারে পিতা-মাতা কারিগর হিসেবে কাজ করেন। কারণ শিশুর সব দৈহিক, মানসিক, বস্তুগত ও অবস্তুগত যাবতীয় প্রয়োজন মেটায় পরিবার। পরিবারেই শিশু তার চিন্তা, আবেগ ও কর্মের অভ্যাস গঠন করে। মূলত শিশুর চরিত্রের ভিত্তিপ্রস্তর রচিত হয় পরিবারেই। কীভাবে কথা বলতে হয়, নিজের আবেগ কীভাবে প্রকাশ করা হয় তা শিশু পরিবার থেকেই শিক্ষা লাভ করে। অর্থাৎ ভবিষ্যৎ জীবনের জীবনযুদ্ধে যেন মুখোমুখি হতে পারে তার জন্য আগে থেকেই পরিবার তাকে শিক্ষা দেয়। পরিবার শিশুর অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করে থাকে। শিশুর চলাফেরা, কথাবার্তা, ভাষা শিক্ষা দেওয়া, আচার-আচরণ শিক্ষা দেওয়া, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দান করার দায়িত্ব একমাত্র পরিবারের। সমাজের একজন যোগ্য ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পরিবারের অবদান সবচেয়ে বেশি। সুতরাং শিশুর ব্যক্তিত্ব নির্ভর করে তিনটি সম্পর্কের ওপর। যথা_ ১.
মুন্সি আব্দুর রউফ (১ মে ১৯৪৩ - ৮ এপ্রিল ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান “বীর শ্রেষ্ঠ” উপাধিতে ভূষিত করা হয় তিনি তাঁদের অন্যতম। তিনি ১৯৬৩ সালের ৮ মে পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে যোগদান করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি নিয়মিত পদাতিক সৈন্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের বুড়িঘাট গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে ১৯৭১ সালের ৮ এপ্রিল তিনি মর্টার শেলের আঘাতে শহীদ হন। তাঁকে রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে একটি টিলার ওপর সমাহিত করা হয়।
রক্তচাপ (ইংরেজি: blood pressure) হল রক্তনালীর গাত্রের উপর রক্ত কতৃক প্রযুক্ত চাপ। যা একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রোগনির্ণায়ক লক্ষণ। এই চাপের অধিকাংশ হৃৎপিন্ডের রক্ত সংবহনতন্ত্রের মধ্য দিয়ে রক্ত সরবরাহ করার জন্য তৈরি হয়। সচরাচর রক্তচাপ বলতে বড় রক্তনালীতে রক্ত সঁচরণ প্রনালীর চাপকে নির্দেশ করে। সাধারণত রক্তচাপ বলতে সিস্টেমিক প্রবাহ-এর ধমনিক প্রবাহ(arterial pressure) কে বোঝায়। সাধারণত প্রতিটি হৃৎস্পন্দনের সময় একবার সর্বোচ্চ সংকোচন চাপ (সিস্টোলিক) এবং দুটি হৃদস্পন্দনের মাঝে সর্বনিম্ন প্রসারন চাপ (ডায়াস্টলিক) চাপ হয়। হৃৎপিন্ডের সংকোচন প্রবণতাই রক্তচাপের প্রধান কারণ। এটি সাধারণত উর্ধ্ববাহুর ব্রাকিয়াল ধমনীতে দেখা হয়। রক্তচাপ সবসময় সংকোচক(systolic) চাপকে (একটি হৃদস্পন্দনের সময় সর্বোচ্চ) উপরে এবং প্রসারক(diastolic) চাপ (দুটি হৃদস্পন্দনের মাঝে সর্বনিম্ন) নিচে লিখে প্রকাশ করা হয়। যেমন ১২০/৮০। এর পরিমাপের একক mmHg
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৫ — ১৫ নভেম্বর ২০২০) একজন ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা। অভিনেতা হিসেবে তিনি কিংবদন্তি, তবে আবৃত্তি শিল্পী হিসেবেও তার নাম অত্যন্ত সম্ভ্রমের সাথেই উচ্চারিত হয়। তিনি কবি এবং অনুবাদকও। বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ৩৪টি সিনেমার ভিতর ১৪টিতে অভিনয় করেছেন।সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমহার্স্ট স্ট্রীট সিটি কলেজে, সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় অপুর সংসার ছবিতে অভিনয় করেন। পরবর্তীকালে তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মত পরিচালকদের সঙ্গেও কাজ করেছেন। সিনেমা ছাড়াও তিনি বহু নাটক, যাত্রা, এবং টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। অভিনয় ছাড়া তিনি নাটক ও কবিতা লিখেছেন, নাটক পরিচালনা করেছেন।
সংস্কৃত (সংস্কৃত উচ্চারণ: [ˈsɐ̃skr̩t̪ɐm] संस्कृतम् সংস্কৃতম্, সঠিক নাম: संस्कृता वाक्, সংস্কৃতা বাক্, পরবর্তীকালে প্রচলিত অপর নাম: संस्कृतभाषा সংস্কৃতভাষা, "পরিমার্জিত ভাষা") হল একটি ঐতিহাসিক ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা এবং হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের পবিত্র দেবভাষা। এটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর প্রধান দুই বিভাগের একটি "শতম" ভুক্ত ভাষা। বর্তমানে সংস্কৃত ভারতের ২২টি সরকারি ভাষার অন্যতম এবং উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অন্যতম সরকারি ভাষা।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামগুলোতেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
কোষ হলো সকল জীবদেহের গঠন, বিপাকীয় ক্রিয়াকলাপ ও বংশগতিমূলক তথ্য বহনকারী একক। এটি জীবের ক্ষুদ্রতম জীবিত একক, অর্থাৎ একটি কোষকে পৃথকভাবে জীবিত বলা যেতে পারে। এজন্যই একে জীবের নির্মাণ একক নামে আখ্যায়িত করা হয়।) ব্যাক্টেরিয়া এবং এ ধরনের কিছু জীব এককোষী। কিন্তু মানুষসহ পৃথিবীর অধিকাংশ জীবই বহুকোষী। মানবদেহে প্রায় ৩৭ লক্ষ কোটি কোষ রয়েছে; একটি কোষের আদর্শ আকার হচ্ছে ১০ মাইক্রোমিটার এবং ভর হচ্ছে ১ ন্যানোগ্রাম। জানামতে বৃহত্তম কোষ হচ্ছে উটপাখির ডিম। চূড়ান্ত কোষ তত্ত্ব আবিষ্কৃত হওয়ার পূর্বে ১৮৩৭ সালে চেক বিজ্ঞানী Jan Evangelista Purkyne অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে উদ্ভিদ কোষ পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে ছোটো ছোটো দানা লক্ষ্য করেন। ১৮৩৯ সালে বিজ্ঞানী Matthias Jakob Schleiden এবং Theodor Schwann কোষ তত্ত্ব আবিষ্কার করেন এবং তাদের তত্ত্বে বলা হয়, সকল জীবিত বস্তুই এক বা একাধিক কোষ দ্বারা গঠিত এবং সব কোষই পূর্বে অস্তিত্বশীল অন্য কোনো কোষ থেকে উৎপত্তি লাভ করে। জীবের মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ সব ক্রিয়াই কোষের অভ্যন্তরে সংঘটিত হয়। সকল কোষের মধ্যে কার্যক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বংশগতীয় তথ্য এবং পরবর্তী বংশধরে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) উনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তাঁর। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
হৃৎপিণ্ড অধিকাংশ প্রাণীতে একটি পেশীবহুল অঙ্গ, যা পৌনঃপুনিক ছন্দময় সংকোচনের মাধ্যমে সংবহনতন্ত্রের রক্তনালির মধ্য দিয়ে সারা দেহে রক্ত পাম্প করে। এনিলিডা, মলাস্কা এবং আর্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণীদের দেহেও অনুরূপ অঙ্গ বিদ্যমান। পাম্পকৃত রক্ত দেহে অক্সিজেন ও পুষ্টি পদার্থ বহন করে নিয়ে যায়, আর ফুসফুসে বিভিন্ন বিপাকজাত বর্জ্য, যেমন- কার্বন ডাই অক্সাইড বহন করে নিয়ে আসে। মানুষের দেহে, হৃদপিণ্ডের আকার প্রায় একটি বদ্ধ মুষ্টির সমান এবং এটি বুকের মধ্য প্রকোষ্ঠতে ফুসফুস দুটির মাঝখানে অবস্থিত।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ (উচ্চারণ: [ʃad̪ʱinot̪a ɟud̪d̪ʱo]; শাধিনতা জুদ্ধো) বা মুক্তিযুদ্ধ (উচ্চারণ: [mukt̪iɟud̪d̪ʱo]; মুক্তিজুদ্ধো) হলো ১৯৭১ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি বিপ্লব ও সশস্ত্র সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবং বাঙালি গণহত্যার প্রেক্ষিতে এই জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পশ্চিম পাকিস্তান-কেন্দ্রিক সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে এবং নিয়মতান্ত্রিক গণহত্যা শুরু করে। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সাধারণ বাঙালি নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং পুলিশ ও ই.পি.আর. কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বীকার করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে গণবিদ্রোহ দমনে পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী শহর ও গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান ও বিমানযুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইসলামি দলগুলোর সমর্থন লাভ করে। সেনাবাহিনীর অভিযানে সহায়তার জন্য তারা ইসলামি মৌলবাদীদের নিয়ে আধা-সামরিক বাহিনী— রাজাকার, আল বদর ও আল শামস গঠন করে। পূর্ব পাকিস্তানের উর্দু-ভাষী বিহারিরাও সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে। পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের সহায়তাকারী আধা-সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা, উচ্ছেদ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যাসহ একাধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়। প্রায় এক কোটি বাঙালি শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং আরও তিন কোটি মানুষ দেশের অভ্যন্তরে উদ্বাস্তু হয়। বাঙালি ও উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতাকে বুদ্ধিজীবীরা গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। বাঙালি সামরিক, আধা-সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনী চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেনারেল এম. এ.
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বাংলা: বাংলাদেশ গণসংঘ) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়।
ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি ঢাকা জেলার প্রধান শহর। ভৌগোলিকভাবে এটি বাংলাদেশের মধ্যভাগে বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে একটি সমতল এলাকাতে অবস্থিত। ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ায় মুম্বাইয়ের পড়ে দ্বিতীয়়়় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। ঢাকার জিডিপি ১৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার , ২০২০ সালের হিসেবে । এছাড়া ঢাকার পিপিপি ২৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার , ২০২০ সালের হিসেবে । ভৌগোলিকভাবে ঢাকা একটি অতিমহানগরী বা মেগাসিটি; ঢাকা মহানগরী এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ১০ লক্ষ। জনসংখ্যার বিচারে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম শহর। জনঘনত্বের বিচারে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর; ৩০৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই শহরে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ২৩ হাজার লোক বাস করে।ঢাকা শহর "মসজিদের শহর" নামে সুপরিচিত। এখানে এক হাজারেরও বেশি মসজিদ আছে। এছাড়া ঢাকা "জাদুর শহর " নামেও পরিচিত। এই শহরে রোজ প্রায় ৫ লক্ষ রিকশা চলাচল করে। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান সংস্কৃতি, শিক্ষা ও বাণিজ্যকেন্দ্র।ঢাকা শহরের জলবায়ু ক্রান্তীয় আর্দ্র ও শুষ্ক প্রকৃতির। গড় তাপমাত্রা এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ প্রায় ৩৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন প্রায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ঢাকা শহরে বর্ষাকাল, সেসময় প্রতি মাসে গড়ে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়।সপ্তদশ শতাব্দীতে পুরান ঢাকা মুঘল সাম্রাজ্যের সুবহে বাংলা (বাংলা প্রদেশ) এর প্রাদেশিক রাজধানী ছিল। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে এই শহর জাহাঙ্গীর নগর নামে পরিচিত ছিলো। বিশ্বব্যাপী মসলিন বাণিজ্যের একটি কেন্দ্র ছিলো ঢাকা এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীগণ এখানে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আসতেন। ঢাকাতে বিশ্বের সেরা মসলিন কাপড় উৎপাদিত হতো। যদিও আধুনিক ঢাকা শহরের বিকাশ ঘটে ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ শাসন আমলে, এই সময় নবাবগণ ঢাকা শাসন করতেন। এই সময় কলকাতার পরেই ঢাকা বাংলা প্রেসিডেন্সির দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী হয়ে ওঠে। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পরে ঢাকা নবগঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পরে ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসনিক রাজধানীতে পরিণত হয়। ১৯৫০-১৯৬০ সালের মধ্যে এই শহর বিভিন্ন সামাজিক, জাতীয়তাবাদী ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে ঢাকা “স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের রাজধানী” ঘোষিত হয়। ইতিপূর্বে সামরিক আইন বলবৎ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা, সামরিক দমন, যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তাণ্ডবলীলার মতো একাধিক অস্থির ঘটনার সাক্ষী হয় এই শহর।
বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্য নামে পরিচিত। আনুমানিক খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনার সূত্রপাত হয়। খ্রিষ্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত বৌদ্ধ দোহা-সংকলন চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আরও তিনটি গ্রন্থের সঙ্গে চর্যাগানগুলো নিয়ে সম্পাদিত গ্রন্থের নাম দেন " হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোহা "। মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্য ছিল কাব্যপ্রধান। হিন্দুধর্ম, ইসলাম ও বাংলার লৌকিক ধর্মবিশ্বাসগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই সময়কার বাংলা সাহিত্য। মঙ্গলকাব্য, বৈষ্ণব পদাবলি, শাক্তপদাবলি, বৈষ্ণব সন্তজীবনী, রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবতের বঙ্গানুবাদ, পীরসাহিত্য, নাথসাহিত্য, বাউল পদাবলি এবং ইসলামি ধর্মসাহিত্য ছিল এই সাহিত্যের মূল বিষয়। বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার সূত্রপাত হয় খ্রিষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার নবজাগরণের যুগে কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে বাংলা সাহিত্যে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। এই সময় থেকে ধর্মীয় বিষয়বস্তুর বদলে মানুষ, মানবতাবাদ ও মানব-মনস্তত্ত্ব বাংলা সাহিত্যের প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর বাংলা সাহিত্যও দুটি ধারায় বিভক্ত হয়: কলকাতা-কেন্দ্রিক পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য ও ঢাকা-কেন্দ্রিক বাংলাদেশের সাহিত্য। বর্তমানে বাংলা সাহিত্য বিশ্বের একটি অন্যতম, সমৃদ্ধ সাহিত্যধারা হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের সরকারি মেডিকেল কলেজের তালিকা
বাংলাদেশের সরকারি মেডিকেল কলেজের তালিকা হিসাবে বাংলাদেশে সরাসরি সরকারের ব্যবস্থাপনাধীনে পরিচালিত মেডিকেল কলেজসমূহের তালিকাকে নির্দেশ করা হচ্ছে। ১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে ঢাকার বকশিবাজারে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ এদেশের প্রথম সরকারি পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত মেডিকেল কলেজ। বর্তমানে এ-জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সাইত্রিশটি।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান ইতিমধ্যে বসানো সম্পন্ন হয়েছে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু। পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।
ভৌগোলিক নির্দেশক (ইংরেজি: Geographical indication সংক্ষেপে GI জি আই) হচ্ছে কোনো সামগ্ৰীর ব্যবহার করা বিশেষ নাম বা চিহ্ন। এই নাম বা চিহ্ন নিৰ্দিষ্ট সামগ্ৰীর ভৌগোলিক অবস্থিতি বা উৎস (যেমন একটি দেশ, অঞ্চল বা শহর) অনুসারে নিৰ্ধারণ করা হয়। ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সামগ্ৰী নিৰ্দিষ্ট গুণগত মানদণ্ড বা নিৰ্দিষ্ট প্ৰস্তুত প্ৰণালী অথবা বিশেষত্ব নিশ্চিত করে। উদাহরণস্বরুপ, ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্ৰাপ্ত অসমের মুগা সূতা চিহ্নই মুগা সূতায় নিৰ্মিত বস্ত্ৰ বা অন্যান্য সামগ্ৰীর গুণগত মানদণ্ড নিশ্চিতি প্ৰদান করে। ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিভিন্ন সামগ্ৰী নিৰ্দিষ্ট অঞ্চলটিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করার অধিকার এবং আইনি সুরক্ষা প্ৰদান করে।
কুরআন মজিদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ বা কোরআন (আরবি: القرآن আল্-কুর্'আন্[টী১]) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন। এটিকে আরবি শাস্ত্রীয় সাহিত্যের সর্বোৎকৃষ্ট রচনা বলে মনে করা হয়। কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবিতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা হয়েছে।
সত্যজিৎ রায় (২ মে ১৯২১ – ২৩ এপ্রিল ১৯৯২) একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সঙ্গীত পরিচালক এবং লেখক। তাকে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। সত্যজিতের জন্ম কলকাতা শহরে সাহিত্য ও শিল্প সমাজে খ্যাতনামা রায় পরিবারে। তার পূর্বপুরুষের ভিটা ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কিশোরগঞ্জে (বর্তমানে বাংলাদেশ) কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। সত্যজিতের কর্মজীবন একজন বাণিজ্যিক চিত্রকর হিসেবে শুরু হলেও প্রথমে কলকাতায় ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা জঁ রনোয়ারের সাথে সাক্ষাৎ ও পরে লন্ডন শহরে সফররত অবস্থায় ইতালীয় নব্য বাস্তবতাবাদী চলচ্চিত্র লাদ্রি দি বিচিক্লেত্তে (ইতালীয়: Ladri di biciclette, বাইসাইকেল চোর) দেখার পর তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ হন।
ইসলাম (আরবি: আল-ইসলাম - [الإسلام] (শুনুন)) একটি একেশ্বরবাদী এবং ইব্রাহিমীয় ধর্মবিশ্বাস যার মূল শিক্ষা হল, এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন স্রষ্টা নেই এবং মুহাম্মদ হলেন আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবি ও রাসূল।এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান ধর্ম, যার অনুসারী সংখ্যা ১.৯ বিলিয়ন এবং পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২৪.৪%, যারা মুসলমান নামে পরিচিত। মুসলমানরা ৫০ এর অধিক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টি। ইসলাম শিক্ষা দেয় যে আল্লাহ দয়ালু, করুনাময়, এক ও অদ্বিতীয় এবং একমাত্র ইবাদতযোগ্য অভিভাবক।মানবজাতিকে পথ প্রদর্শনের জন্য তিনি যুগে-যুগে অনেক নবি-রাসূল, আসমানি কিতাব এবং নিদর্শন পাঠিয়েছেন। ইসলামে প্রধান ধর্মগ্রন্থ হলো পবিত্র কুরআন যা স্বয়ং আল্লাহর বাণী; আর সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবি মুহাম্মদ (২৯ আগস্ট ৫৭০- ৮ জুন ৬৩২) এর কথা, কাজ ও মৌনসম্মতিকে সুন্নাহ বলা হয় যা হাদিস নামে লিপিবদ্ধ রয়েছে। তবে সমস্ত সুন্নাহই হাদিস, কিন্তু সমস্ত হাদিস সুন্নাহ নয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ৫ জানুয়ারি, ১৯৫৫) পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এবং সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা-সভানেত্রী। বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, ভূমি ও ভূমিসংস্কার, তথ্য ও সংস্কৃতি, পর্বতাঞ্চল বিষয়ক, কৃষি, বিদ্যুৎ, কর্মী ও প্রশাসনিক সংস্কার, সংখ্যালঘু কল্যাণ ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগেরও ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। তিনি পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন বাগ্মী রাজনীতিবিদ। তাকে প্রায়শই দিদি বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এছাড়াও তাকে অগ্নিকন্যাও বলা হয়। ২০১১ সালে তার নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছিল। এই সরকার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সময় গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার ছিল। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটে তিনি দুই বার রেল, এক বার কয়লা মন্ত্রকের এবং এক বার মানবসম্পদ উন্নয়ন, যুব, ক্রীড়া, নারী ও শিশুকল্যাণ বিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গে কৃষকদের জমি বলপূর্বক অধিগ্রহণ করে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের বিরোধিতা করে আন্দোলন করেছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America; উচ্চারণ: ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি স্বশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি "আমেরিকা" নামেও পরিচিত। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি রাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি অঞ্চলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত; আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যটি মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। এছাড়াও ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে পাাঁচটি অঞ্চল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
করোনাভাইরাস বলতে ভাইরাসের একটি শ্রেণিকে বোঝায় যেগুলি স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদেরকে আক্রান্ত করে। মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শ্বাসনালীর সংক্রমণ ঘটায়। এই সংক্রমণের লক্ষণ মৃদু হতে পারে, অনেকসময় যা সাধারণ সর্দিকাশির ন্যায় মনে হয় (এছাড়া অন্য কিছুও হতে পারে, যেমন রাইনোভাইরাস), কিছু ক্ষেত্রে তা অন্যান্য মারাত্মক ভাইরাসের জন্য হয়ে থাকে, যেমন সার্স, মার্স এবং কোভিড-১৯। অন্যান্য প্রজাতিতে এই লক্ষণের তারতম্য দেখা যায়। যেমন মুরগির মধ্যে এটা উর্ধ্ব শ্বাসনালী সংক্রমণ ঘটায়, আবার গরু ও শূকরে এটি ডায়রিয়া সৃষ্টি করে। মানবদেহে সৃষ্ট করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়ানোর মত কোনো টিকা বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ আজও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে বৃটেন একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে।
কলকাতা বা কোলকাতা ([kolkata] (শুনুন) ইংরেজি: Kolkata; আদি নাম: কলিকাতা; পুরনো ইংরেজি নাম: Calcutta) হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ায় কলকাতা ৭ম বৃহৎ অর্থনীতির শহর । কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। কলকাতা শহরের অর্থনীতি আর চট্টগ্রাম শহরের অর্থনীতি প্রায় সমান। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক)৩০ থেকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বই ও নতুন দিল্লির ঠিক পরেই। কলকাতা দক্ষিণ এশিয়ায় মুম্বাই,ঢাকা,দিল্লি,চেন্নাই,করাচী, চট্টগ্রাম,এর পর ৭ম বৃহৎ অর্থনীতির শহর। সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকাণ্ড সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সেনা শাখা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী (গুজরাটি: નરેન્દ્ર દામોદરદાસ મોદી; উচ্চারণ শুনুন , জন্ম ১৭ই সেপ্টেম্বর, ১৯৫০) ভারতের পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রী। এই রাজনীতিবিদ ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ষোড়শ সাধারণ নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টিকে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে বহুমতের দ্বারা জয়লাভ লাভ করেন এবং ২৬শে মে ভারতের পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি গুজরাটের চতুর্দশ মুখ্যমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
যৌনসঙ্গম (যৌনমিলন, সঙ্গম, মৈথুন, রতিক্রিয়া, রতিমিলন; যৌন সংসর্গ, যৌন সহবাস, সহবাস ইত্যাদি) হচ্ছে একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা দ্বারা মূলত যৌনআনন্দ বা প্রজনন বা উভয় ক্রিয়ার জন্য একজন পুরুষের উত্থিত শিশ্ন একজন নারীর যোনিপথে অনুপ্রবেশ করানো ও সঞ্চালনা করাকে বোঝায়। অন্যান্য অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গমের মধ্যে রয়েছে পায়ুসঙ্গম (লিঙ্গ দ্বারা মলদ্বার অনুপ্রবেশ), মুখমৈথুন, অঙ্গুলিসঞ্চালন (আঙ্গুল দ্বারা যৌন অনুপ্রবেশ), যৌনখেলনা ব্যবহার দ্বারা অনুপ্রবেশ (বন্ধনীযুক্ত কৃত্রিম শিশ্ন)। এই সকল কার্যক্রম মূলত মানবজাতি কর্তৃক দুই বা ততোধিকের মধ্যেকার শারীরিক ও মানসিক অন্তরঙ্গতা জনিত পরিতোষ লাভের জন্য এবং সাধারণত মানব বন্ধনে ভূমিকা রাখতে সম্পাদিত হয়ে থাকে।যৌনসঙ্গম বা অপরাপর যৌনকর্ম কীভাবে সংজ্ঞায়িত হয় তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, যা যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর উপর প্রভাব রাখতে পারে। যদিও যৌনসঙ্গম, নির্দিষ্টভাবে মৈথুন বলতে সাধারণত শিশ্ন-জরায়ুজ অনুপ্রবেশ ও সন্তান উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করা হয়, এর দ্বারা সাধারণভাবে অন্তর্ভেদী মুখমৈথুন ও বিশেষত শিশ্ন-পায়ুজ সঙ্গমকেও নির্দেশ করা হয়। এটি সাধারণত যৌন অনুপ্রবেশকে নির্দেশ করে, যেখানে অননুপ্রবেশকারী যৌনতাকে "বহির্সঙ্গম" নামে নামকরণ করা হয়, কিন্তু অনুপ্রবেশকারী যৌনকর্মকে যৌনসঙ্গম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যৌনতা বা ইংরেজি ভাষায় সেক্স, প্রায়শই যৌনসঙ্গমের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যবহৃত রূপ, যা দ্বারা যে কোন প্রকারের যৌনক্রিয়াকে বোঝানো হতে পারে। যেহেতু এসকল যৌনকর্মের সময়ে মানুষ যৌনবাহিত সংক্রমণের সংস্পর্শের ঝুঁকিতে থাকতে পারে, নিরাপদ যৌনচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও অনাভেদী যৌনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়ে থাকে।বিভিন্ন আইনি বিধিমালা যৌনসঙ্গমমের সামাজিক অনুমতিপ্রদানের জন্য বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতির মাধ্যমে বৈবাহিক রীতির প্রবর্তন, প্রচলন ও সমর্থন করেছে এবং বেশ কিছু যৌনকর্মের বিপরীতে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনকে স্থান দিয়েছে, যেমন বিবাহপূর্ব ব্যভিচার ও বিবাহপরবর্তী পরকীয়া, পায়ুকাম, পশুকাম, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনচর্চা ও অজাচার। ধর্মীয় বিশ্বাসও যৌনসঙ্গমসহ অন্যান্য যৌনাচার বিষয়ক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা পালন করে, যেমন কুমারীত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত, অথবা আইনি বা সরকারী নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়াবলি। বিভিন্ন ধর্মভেদে ও একই ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণীভেদে যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও কিছু বিষয়ে অভিন্নতা রয়েছে, যেমন ব্যভিচারের নিষেধাজ্ঞা।
উইকিপিডিয়ার অ-বিশ্বকোষীয় পরিদর্শক পরিচিতির জন্য, দেখুন উইকিপিডিয়া:বৃত্তান্ত।উইকিপিডিয়া একটি সম্মিলিতভাবে সম্পাদিত, বহুভাষিক, মুক্ত প্রবেশাধিকার, মুক্ত কন্টেন্ট সংযুক্ত একটি ইন্টারনেট বিশ্বকোষ, যা অলাভজনক উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন কর্তৃক সমর্থিত, আয়োজিত এবং পরিচালিত। স্বেচ্ছাসেবীরা বিশ্বব্যাপী সম্মিলিতভাবে ৩০১টি ভাষার উইকিপিডিয়ায় প্রায় ৪০ মিলিয়ন নিবন্ধ রচনা করেছেন, যার মধ্যে শুধু ইংরেজি উইকিপিডিয়ায় রয়েছে ৫৮ লক্ষের অধিক নিবন্ধ। যে কেউ ওয়েবসাইটে প্রবেশের মাধ্যমে যে কোনো নিবন্ধের সম্পাদনা করতে পারেন, যা সম্মিলিতভাবে ইন্টারনেটের সর্ববৃহৎ এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় সাধারণ তথ্যসূত্রের ঘাটতি পূরণ করে থাকে। ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সালে, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায় উইকিপিডিয়া সব ওয়েবসাইটের মধ্যে বিশ্বব্যাপী পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে, "মাসিক প্রায় ১৮ বিলিয়ন পৃষ্ঠা প্রদর্শন এবং প্রায় ৫০০ মিলিয়ন স্বতন্ত্র পরিদর্শক নিয়ে..., উইকিপিডিয়ায় ইয়াহু, ফেসবুক, মাইক্রোসফট এবং গুগলের পথানুসরণ করে, সর্বাধিক ১.২ বিলিয়ন স্বতন্ত্র পরিদর্শক রয়েছে।"জানুয়ারি ১৫, ২০০১ সালে জিমি ওয়েলস এবং ল্যারি স্যাঙ্গার উইকিপিডিয়া চালু করেন, পরবর্তীতে এর নাম তৈরি করেন, একটি পিন্ডারিশব্দে উইকি (এটি সম্মিলিত ওয়েবসাইটের এক প্রকার নাম, হাওয়াইয়ান ভাষায় "হাঁটা") এবং বিশ্বকোষ। 'উইকি উইকি' মানে দাঁড়িয়ে ছোট-ছোট পায়ে হাঁটা। উইকি ওয়েব সংস্কৃতিতে সবার ছোট-ছোট অবদান যুক্ত হয়েই এই সাইটটির মত ক্রমবর্ধমান সংগ্রহ গড়ে ওঠে। বর্তমানে এটি সব থেকে বড় এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় ইন্টারনেট ভিত্তিক তথ্যসূত্র হিসাবে ব্যবহার হয়।২০০৬ সালে, টাইম ম্যাগাজিন স্বীকৃতি দেয় যে, উইকিপিডিয়ায় (ইউটিউব, রেডিট, মাইস্পেস, এবং ফেসবুক-এর পাশাপাশি) বিশ্বব্যাপী লাখ-লাখ মানুষের অংশগ্রহণে অনলাইন সহযোগিতা ও মিথস্ক্রিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও উইকিপিডিয়া নিবন্ধের তাৎক্ষণিক খবর সংক্রান্ত দ্রুত হালনাগাদের কারণে এটি একটি সংবাদ সূত্র হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছে।উইকিপিডিয়া ওয়েবসাইট উন্মুক্ত প্রকৃতির হওয়ায় এখানে লেখার মান, ধ্বংসপ্রবণতা এবং তথ্যের নির্ভুলতা রক্ষা করতে বিভিন্ন উদ্যোগ পরিচালিত হয়ে থাকে। তবে, কিছু নিবন্ধে অপরীক্ষিত বা অযাচাইকৃত বা অসঙ্গত তথ্য থাকতে পারে।
চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রাচীনতম পদ সংকলন তথা সাহিত্য নিদর্শন। নব্য ভারতীয় আর্যভাষারও প্রাচীনতর রচনা এটি। খ্রিষ্টীয় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত এই গীতিপদাবলির রচয়িতারা ছিলেন সহজিয়া বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যগণ। বৌদ্ধ ধর্মের গূঢ় অর্থ সাংকেতিক রূপের আশ্রয়ে ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যেই তাঁরা পদগুলো রচনা করেছিলেন। বাংলা সাধন সংগীত শাখাটির সূত্রপাতও হয়েছিলো এই চর্যাপদ থেকেই। সে বিবেচনায় এটি একটি ধর্মগ্রন্থজাতীয় রচনা। একই সঙ্গে সমকালীন বাংলার সামাজিক ও প্রাকৃতিক চিত্রাবলি এই পদগুলোতে উজ্জ্বল। এর সাহিত্যগুণ এখনও চিত্তাকর্ষক। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থশালা থেকে চর্যার একটি খণ্ডিত পুঁথি উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে চর্যাপদের সঙ্গে বাংলা ভাষার অনস্বীকার্য যোগসূত্র বৈজ্ঞানিক যুক্তিসহ প্রতিষ্ঠিত করেন। চর্যাপদের প্রধান কবিগণ হলেন লুইপাদ, কাহ্নপাদ, ভুসুকুপাদ, শবরপাদ প্রমুখ।
মুঘল বা মোগল সাম্রাজ্য (উর্দু: مغلیہ سلطنت, Mug̱ẖliyah Salṭanat, ফার্সি: گورکانیان, Gūrkāniyān)), ছিল ভারত উপমহাদেশের একটি সাম্রাজ্য। প্রায় দুই শতাব্দী ধরে সাম্রাজ্য পশ্চিমে সিন্ধু অববাহিকার বাইরের প্রান্ত, উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তান এবং উত্তরে কাশ্মীর, পূর্বে বর্তমান আসাম ও বাংলাদেশের উচ্চভূমি এবং দক্ষিণ ভারতের ডেকান মালভূমির উপভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মুঘল সাম্রাজ্য মূলতঃ পারস্য ও মধ্য এশিয়ার ভাষা, শিল্প ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত ছিল।পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইবরাহিম লোদির বিরুদ্ধে বাবরের জয়ের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়। মুঘল সম্রাটরা ছিলেন মধ্য এশিয়ার টার্কো-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত। তারা চাগতাই খান ও তৈমুরের মাধ্যমে চেঙ্গিস খানের বংশধর। ১৫৫৬ সালে আকবরের ক্ষমতারোহণের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের ধ্রূপদী যুগ শুরু হয়। আকবর ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরের শাসনামলে ভারতে অর্থনৈতিক প্রগতি বহুদূর অগ্রসর হয়। আকবর অনেক হিন্দু রাজপুত রাজ্যের সাথে মিত্রতা করেন। কিছু রাজপুত রাজ্য উত্তর পশ্চিম ভারতে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখে কিন্তু আকবর তাদের বশীভূত করতে সক্ষম হন। মুঘল সম্রাটরা মুসলিম ছিলেন তবে জীবনের শেষের দিকে শুধুমাত্র সম্রাট আকবর ও তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর নতুন ধর্ম দীন-ই-ইলাহির অনুসরণ করতেন।মুঘল সাম্রাজ্য কাঠামো, যাইহোক, কখনও কখনও বাবরের নাতি আকবরএর শাসনের তারিখ ১৬০০ থেকে ধরা হয়। এই সাম্রাজ্যিক কাঠামো ১৭২০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়, শেষ প্রধান সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। তার রাজত্বকালে সাম্রাজ্যতার সর্বোচ্চ ভৌগোলিক ব্যাপ্তি অর্জন করে। পরবর্তীতে হ্রাস, বিশেষ করে ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসনামলে, পুরাতন দিল্লি এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে, ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ রাজ দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যায়।
যোনি বা যোনিপথ বা যৌননালী বা জনননালী (লাতিন: ভ্যাজাইনা) হলো স্ত্রী যৌনাঙ্গ, যা জরায়ু থেকে স্ত্রীদেহের বাইরের অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ফাইব্রোমাসকুলার (তন্তু-পেশিময়) নলাকার অংশ। মানুষ ছাড়াও অমরাবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী ও মারসুপিয়াল প্রাণীতে, যেমন ক্যাঙ্গারু অথবা স্ত্রী পাখি, মনোট্রিম ও কিছু সরীসৃপের ক্লোকাতে যোনি পরিদৃষ্ট হয়। স্ত্রী কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণীরও যোনি আছে, যা মূলত ওভিডাক্টের শেষ প্রান্ত।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ - ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮) ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় এবং বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। তার অনেক উপন্যাস ভারতবর্ষের প্রধান ভাষাগুলোতে অনূদিত হয়েছে। বড়দিদি (১৯১৩), পল্লীসমাজ (১৯১৬), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), শ্রীকান্ত (চারখণ্ডে ১৯১৭-১৯৩৩), দত্তা (১৯১৮), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী (১৯২৬), পরিণীতা (১৯১৪), শেষ প্রশ্ন (১৯৩১) ইত্যাদি শরৎচন্দ্র রচিত বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তার দরুন তিনি 'অপরাজেয় কথাশিল্পী' নামে খ্যাত। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক পান৷ এছাড়াও, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] (শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ – ৪ জুলাই ১৯০২) নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত (বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...," ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা, যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তার রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?
পৃথিবী সূর্য থেকে দূরত্ব অনুযায়ী তৃতীয়, সর্বাপেক্ষা অধিক ঘনত্বযুক্ত এবং সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে পঞ্চম বৃহত্তম গ্রহ। সূর্য হতে এটির দূরত্ব প্রায় ১৫ কোটি কি.মি।এটি সৌরজগতের চারটি কঠিন গ্রহের অন্যতম। পৃথিবীর অপর নাম "বিশ্ব" বা "নীলগ্রহ"। ইংরেজি ভাষায় পরিচিত আর্থ (Earth) নামে, গ্রিক ভাষায় পরিচিত গাইয়া (Γαῖα) নামে, লাতিন ভাষায় এই গ্রহের নাম "টেরা (Terra)।
সিপাহি বিদ্রোহ বা সৈনিক বিদ্রোহ ১৮৫৭ সালের ১০ মে মিরাট শহরে শুরু হওয়া ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর সিপাহিদের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহ। যার মধ্যে আলেম ওলামাদের অবদান অপরিসীম। ক্রমশ এই বিদ্রোহ গোটা উত্তর ও মধ্য ভারতে (অধুনা উত্তরপ্রদেশ, বিহার, উত্তর মধ্যপ্রদেশ ও দিল্লি অঞ্চল ) ছড়িয়ে পড়েছিল। এই সব অঞ্চলে বিদ্রোহীদের দমন করতে কোম্পানিকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। ১৮৫৮ সালের ২০ জুন গোয়ালিয়রে বিদ্রোহীদের পরাজয়ের পরই একমাত্র বিদ্রোহ দমন করা সম্ভব হয়। সিপাহি বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ, মহাবিদ্রোহ, ভারতীয় বিদ্রোহ, ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ ও ১৮৫৮ সালের গণ-অভ্যুত্থান নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। এই বিদ্রোহ দমন করা হয় নির্মমভাবে। বহু নিরপরাধ নরনারী, শিশু বৃদ্ধদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়।
জীবনানন্দ দাশ () (১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৯ - ২২ অক্টোবর, ১৯৫৪; ৬ ফাল্গুন, ১৩০৫ - ৫ কার্তিক, ১৩৬১ বঙ্গাব্দ) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাঙালি কবি, লেখক ও প্রাবন্ধিক। তিনি বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম। তার কবিতায় পরাবাস্তবের দেখা মিলে। জীবনানন্দের প্রথম কাব্যে নজরুল ইসলামের প্রভাব থাকলেও দ্বিতীয় কাব্য থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন মৌলিক ও ভিন্ন পথের অনুসন্ধানী। মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে তিনি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন এবং ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে যখন তাঁর জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছিল, ততদিনে তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবিতে পরিণত হয়েছেন।গ্রামবাংলার ঐতিহ্যময় নিসর্গ ও রূপকথা-পুরাণের জগৎ জীবনানন্দের কাব্যে হয়ে উঠেছে চিত্ররূপময়, তাতে তিনি ‘রূপসী বাংলার কবি’ অভিধায় খ্যাত হয়েছেন। বুদ্ধদেব বসু তাঁকে 'নির্জনতম কবি' বলে আখ্যায়িত করেছেন। অন্যদিকে, অন্নদাশঙ্কর রায় তাঁকে ‘শুদ্ধতম কবি’ অভিধায় আখ্যায়িত করেছেন। সমালোচকদের অনেকে তাঁকে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল-পরবর্তী বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবি বলে মনে করেন। জীবনানন্দের বনলতা সেন কাব্যগ্রন্থ নিখিলবঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলনে পুরস্কৃত (১৯৫৩) হয়। ১৯৫৫ সালে শ্রেষ্ঠ কবিতা গ্রন্থটি ভারত সরকারের সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করে। জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মাঝে রয়েছে রূপসী বাংলা, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, বেলা অবেলা কালবেলা, শ্রেষ্ঠ কবিতা ইত্যাদি।
ইশার নামায (আরবি: صلاة العشاء; সালাতুল ইশা) মুসলিমদের অবশ্য পালনীয় দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের অন্যতম। নামায বা সালাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম। দৈনিক নামাযগুলোর মধ্যে এটি পঞ্চম। ইশার ফরয নামাজ চার রাক্বাত। এটি রাতে আদায় করা হয়। মাগরিবের নামাজের সময় অতিবাহিত হওয়ার পর ইশার নামাজের সময় শুরু হয় এবং রাতের তিনের এক ভাগ সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সর্বোত্তম, দুই তৃতীয়াংশ জায়েজ এবং সুবহে সাদিকের আগ(এটাকে মাকরুহ অনুত্তম সময় বলা হয়) পর্যন্ত পড়া যায়।
অস্থিসন্ধি বলতে দুই বা ততোধিক অস্থির সংযোগস্থলকে বোঝায়। প্রতিটি অস্থিসন্ধির অস্থি সমূহ একরকম স্থিতিস্থাপক রজ্জুর মত বন্ধনী দিয়ে আটকানো থাকে যাতে অস্থিগুলো সহজে সন্ধিস্থল থেকে বিচ্যুত হতে না পারে ৷ সন্ধিস্থল বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গ সঞ্চালনে সাহায্য করে ৷ আমাদের দেহের অস্থিসন্ধি একরকম নয় ৷ এদের কোনোটি একেবারে অনড় যেমন :— আন্তঃকশেরুকীয় অস্থিসন্ধি , আবার কোনোটি সহজে সণ্চালন করা যায় যেমন :— হাত , পায়ের অস্থিসন্ধি ৷
ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি হলো ভারতের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রধান দুটি দলের অন্যতম (অপর দলটি হলো ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস)। ২০১৪ সালের হিসেব অনুসারে, ভারতের সংসদ ও রাজ্য বিধানসভাগুলির প্রতিনিধি সংখ্যার দিক থেকে এটি ভারতের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। প্রাথমিক সদস্যপদের দিক থেকে এটি বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। বিজেপি একটি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দল। জাতীয়তাবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সঙ্গে এই দলের আদর্শগত ও সংগঠনগত নৈকট্য রয়েছে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি রাজনৈতিক দল।
ভগবদ্গীতা (সংস্কৃত: भगवद्गीता, ˈbʱəɡəʋəd̪ ɡiːˈt̪aː , ভগবানের গান) বা শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা বা গীতা একটি ৭০০-শ্লোকের মানব ধর্মগ্রন্থ। সাতশত শ্লোকের একটি গ্রন্থ বিধার একে সপ্তশতী বলে। এটি প্রাচীন সংস্কৃত মহাকাব্য মহাভারত-এর একটি অংশ। গীতা একটি স্বতন্ত্র ধর্মগ্রন্থ তথা একটি পৃথক শাস্ত্র এর মর্যাদা পেয়ে থাকে। হিন্দুরা গীতা-কে ভগবানের মুখনিঃসৃত বাণী মনে করেন। মানবধর্ম, দর্শন ও সাহিত্যের ইতিহাসে গীতা এক বিশেষ স্থানের অধিকারী। গীতা-র কথক কৃষ্ণ হিন্দুদের দৃষ্টিতে ঈশ্বরের অবতার পরমাত্মা স্বয়ং। তাই গীতা-য় তাকে বলা হয়েছে "শ্রীভগবান"।গীতা-র বিষয়বস্তু কৃষ্ণ ও পাণ্ডব রাজকুমার অর্জুনের কথোপকথন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শুরু ঠিক আগে শত্রুপক্ষে আত্মীয়, বন্ধু ও গুরুকে দেখে অর্জুন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিলেন। এই সময় কৃষ্ণ তাকে ক্ষত্রিয় যোদ্ধার ধর্ম স্মরণ করিয়ে দিয়ে এবং বিভিন্ন প্রকার যোগশাস্ত্র ও বৈদান্তিক দর্শন ব্যাখ্যা করে তাকে যুদ্ধে যেতে উৎসাহিত করেন। তাই গীতা-কে বলা হয় মানব ধর্মতত্ত্বের একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ এবং হিন্দুদের জীবনচর্যার একটি ব্যবহারিক পথনির্দেশিকা। যোগশাস্ত্র ব্যাখ্যার সময় কৃষ্ণ নিজের "স্বয়ং ভগবান" রূপটি উন্মোচিত করেন এবং বিশ্বরূপে অর্জুনকে দর্শন দিয়ে আশীর্বাদ করেন। অর্জুন ছাড়া প্রত্যক্ষভাবে কৃষ্ণের মুখ থেকে গীতা শুনেছিলেন সঞ্জয় (তিনি যুদ্ধের ঘটনা ধৃতরাষ্ট্রের কাছে বর্ণনা করার জন্য বেদব্যাসের কাছ থেকে দিব্য দৃষ্টি লাভ করেছিলেন), হনুমান (তিনি অর্জুনের রথের চূড়ায় বসে ছিলেন) ও ঘটোৎকচের পুত্র বর্বরিক যিনি কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সব ঘটনা দেখেছিলেন)। গীতা-কে গীতোপনিষদ বলা হয়। অর্থাৎ, গীতা উপনিষদ্ বা বৈদান্তিক সাহিত্যের অন্তর্গত। "উপনিষদ্" নামধারী ধর্মগ্রন্থগুলি শ্রুতিশাস্ত্রের অন্তর্গত হলেও, মহাভারত-এর অংশ বলে গীতা স্মৃতিশাস্ত্রের অন্তর্গত। আবার উপনিষদের শিক্ষার সারবস্তু গীতা-য় সংকলিত হয়েছে বলে একে বলা হয় "উপনিষদ্সমূহের উপনিষদ্"। গীতা-কে মোক্ষশাস্ত্র নামেও অভিহিত করা হয়।ভারতীয় মনীষীদের পাশাপাশি অ্যালডাস হাক্সলি, জে.
নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা বা মির্জা মুহাম্মাদ সিরাজ-উদ-দৌলা (ফার্সি: مرزا محمد سراج الدولہ, ১৭৩২–১৭৫৭) বাংলা-বিহার-ওড়িশার শেষ স্বাধীন নবাব।বাংলা ইতিহাসের একটি প্রতিমূর্তি।পলাশীর যুদ্ধে তাঁর পরাজয় ও মৃত্যুর পরই ভারতবর্ষে ১৯০ বছরের ইংরেজ শাসনের সূচনা হয়।সিরাজউদ্দৌলা তাঁর নানা নবাব আলীবর্দী খানের কাছ থেকে ২৩ বছর বয়সে ১৭৫৬ সালে বাংলার নবাবের ক্ষমতা অর্জন করেন। তাঁর সেনাপতি মীরজাফর, রায়দুর্লভ, বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ২৩ জুন ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন। রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসনভার গ্রহণ করে।
ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহ
ভারত হল ২৮টি রাজ্য ও ৮ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় রাজ্যসংঘ। এই দেশের প্রথম স্তরের প্রশাসনিক বিভাগের সংখ্যা ৩৬। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি আবার জেলা ও ক্ষুদ্রতর প্রশাসনিক বিভাগে বিভক্ত।
জাতিসংঘ (অপর নাম: রাষ্ট্রসংঘ) বিশ্বের জাতিসমূহের একটি সংগঠন, যার লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক অগ্রগতি এবং মানবাধিকার বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। ১৯৪৫ সালে ৫১টি রাষ্ট্র জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ সনদ স্বাক্ষর করার মাধ্যমে জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং পরবর্তীতে লুপ্ত লীগ অব নেশন্সের স্থলাভিষিক্ত হয়।
আল্লু অর্জুন (জন্ম: ৮ এপ্রিল ১৯৮২) একজন ভারতীয় তেলুগুভাষী চলচ্চিত্র অভিনেতা। পারাগু ও ভিদাম ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি দুইটি ফিল্মফেয়ার সেরা তেলুগু অভিনেতা পুরস্কার এবং আরিয়া ও পারাগু এর জন্য দুইটি নন্দী বিশেষ জ্যুরি পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি গান্ত্রোত্রী চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সিনেমা এ্যাওয়ার্ডের সেরা নবাগত পুরস্কার জিতে নেন। বর্তমানে তিনি জয় আলুক্কাস, কোলগেট, লট মোবাইলস এবং সেভেন আপের পণ্য দূত। কেরালাতে তিনি ভক্তদের কাছে নিজেকে মল্লু অর্জুন নামে পরিচয় দেন।
মুহাম্মদ (৫৭০ – ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ) ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হিসেবে মুসলমানদের মাঝে গণ্য। নবী মুহাম্মাদ তার জীবনে যে সকল মহিলার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন মুসলমানগণ তাদেরকে উম্মাহাতুল মুমিনীন অর্থাৎ মুসলমানদের মাতা হিসেবে অভিহিত করেন। কুরআনেও সেটি উল্লেখিত হয়েছে। কুরআন ৩৩:৬:নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মাতা।তিনি আরবীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সেনানায়ক হিসেবেও সফলতা লাভ করেছেন। ইতিহাসে তাকে রাজনৈতিক এবং আধ্যাত্মিক উভয় ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তি এবং ইসলামের প্রবর্তক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যৌবনে তিনি মূলত ব্যবসার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ২৫ বছর বয়সে তার সাথে আরবের তৎকালীন বিশিষ্ট ধনী এবং সম্মানিত ব্যক্তিত্ব খাদিজার বিয়ে হয়। তাদের বৈবাহিক জীবন প্রায় ২৪ বছর স্থায়ী হয়। এরপর খাদিজা মৃত্যুবরণ করেন। খাদিজার জীবদ্দশায় তিনি আর কোন স্ত্রী গ্রহণ করেননি। মুসলিম জীবনীকারদের বর্ণনামতে, খাদিজার মৃত্যুর পর নবী আরও ১০ জন (মতান্তরে ১২ জন) স্ত্রী গ্রহণ করেন। অর্থাৎ তার স্ত্রীর সংখ্যা সর্বমোট ১১ জন (মতান্তরে ১৩ জন)। ইসলামে এককালীনভাবে চারটির অধিক বিয়ে নিষিদ্ধ হলেও কুরআনের সূরা আহযাবের ৫০-৫২ আয়াত অনুযায়ী মুহাম্মাদ চারটির অধিক বিয়ের অনুমতিপ্রাপ্ত ছিলেন। স্ত্রীদের মধ্যে শুধুমাত্র আয়েশা ছিলেন কুমারী। বাকি সব স্ত্রী ছিলেন বিধবা । মুহাম্মাদের জীবনকে প্রধান দুইটি অংশে ভাগ করা হয়: মক্কী জীবন এবং মাদানী জীবন। মক্কী জীবনে তিনি দুইজনকে বিয়ে করেন। তার বাকি সবগুলো বিয়েই ছিলো মাদানী জীবনে তথা হিজরতের পরে। মুহাম্মদের বৈবাহিক জীবনে তালাক ছিল না। এ কারণে কুরআনে তালাক সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা রয়েছে।
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তালিকা
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ মূলত তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে: পাবলিক (সরকারি মালিকানাধীন), বেসরকারি (বেসরকারি মালিকানাধীন) এবং আন্তর্জাতিক (আন্তর্জাতিক সংগঠন কর্তৃক পরিচালিত)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত, দেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের অধিভুক্ত; যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি আদেশ (১৯৭৩ সালের পি.ও.
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। মূল সংবিধান ইংরেজি ভাষায় রচিত হয় এবং একে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তাই এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধীত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য সংবিধানের ১৪২নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা পশ্চিমবঙ্গের এককক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভা। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার বিবাদীবাগ এলাকায় হাইকোর্টের দক্ষিণে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভবনটি অবস্থিত। বিধানসভার সদস্যদের বিধায়ক বলা হয়। তাঁরা পাঁচ বছরের জন্য জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার মোট আসনসংখ্যা ২৯৫। এর মধ্যে ২৯৪টি আসনের বিধায়করা এক-আসনবিশিষ্ট বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সরাসরি নির্বাচিত হয়ে আসেন এবং এক জন সদস্য অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায় থেকে সরাসরি নির্বাচিত হন। সাধারণত, বিধানসভার মেয়াদ পাঁচ বছরের; তবে তার আগেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়া যায়।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বলতে পৃথিবীর চারপাশে ঘিরে থাকা বিভিন্ন গ্যাস মিশ্রিত স্তরকে বোঝায়, যা পৃথিবী তার মধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা ধরে রাখে। একে আবহমণ্ডল-ও বলা হয়। এটি সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করে। এটি তাপ ধরে রাখার মাধ্যমে (গ্রীনহাউজ প্রতিক্রিয়া) ভূপৃষ্টকে উত্তপ্ত করে ও দিনের তুলনায় রাতের তাপমাত্রা হ্রাস করে।
একাদশী একটি চান্দ্র তিথি। চাঁদের শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথি, হিন্দু ধর্মমতানুসারে পুণ্যতিথি হিসেবে বিবেচিত। হিন্দুধর্মমতে নিরম্বু উপবাস বিহিত। একাদশী ব্রত অবশ্য পালনীয়। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তার লীলাবিলাসের প্রথম থেকেই "একাদশী উপবাসের" প্রথা প্রবর্তন করেছিলেন। শ্রীল জীব-গোস্বামী তার ভক্তিসন্দর্ভ গ্রন্থে স্কন্ধ পুরাণের একটি উদ্ধৃৃতি দিয়ে বলেছেন, "যে মানুষ একাদশীর দিন শস্যদানা গ্রহণ করে সে তার পিতা, মাতা, ভাই এবং গুরু হত্যাকারী, সে যদি বৈকন্ঠ লোকেও উন্নীত হয়, তবুুুুও তার অধঃপতন হয়়।" (শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত, আদিলীলা ১৫/৮-১০) এসময় সাধারণত ফলমূল ও বিভিন্ন সবজি এবং দুধ খাওয়া যায়, তবে একাদশীতে পঞ্চরবি শস্য বর্জন করা বাঞ্চনীয়। বিষ্ণুর শয়ন, পার্শ্ব পরিবর্তন ও উত্থান উপলক্ষে যথাক্রমে আষাঢ়, ভাদ্র ও কার্তিক মাসের শুক্লা একাদশী বিশেষ শুভপ্রদ গণ্য করা হয়। ভৈমী একাদশী ও মাঘের শুক্লা একাদশীকেও বিশেষ মাহাত্ম্যপূর্ণ বলে মনে করা হয়। নিয়মিত একাদশী পালন শরীরের পক্ষেও উপকারী। তাই স্বাস্থ্যগত কারণেও অনেকে প্রতি মাসে দুটি একাদশী তিথি পালন করেন। . . . পদ্মপূরাণে একাদশী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। একসময় জৈমিনি ঋষি তার গুরুদেব মহর্ষি ব্যাসদেবকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে গুরুদেব! একাদশী কি?
এশিয়া ( (শুনুন) বা ) পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে জনবহুল মহাদেশ, প্রাথমিকভাবে পূর্ব ও উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। এটি ভূপৃষ্ঠের ৮.৭% ও স্থলভাগের ৩০% অংশ জুড়ে অবস্থিত। আনুমানিক ৪৩০ কোটি মানুষ নিয়ে এশিয়াতে বিশ্বের ৬০%-এরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। অধিকাংশ বিশ্বের মত, আধুনিক যুগে এশিয়ার বৃদ্ধির হার উচ্চ। উদাহরণস্বরূপ, বিংশ শতাব্দীর সময়, এশিয়ার জনসংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়ে গেছে, বিশ্ব জনসংখ্যার মত।এশিয়ার সীমানা সাংস্কৃতিকভাবে নির্ধারিত হয়, যেহেতু ইউরোপের সাথে এর কোনো স্পষ্ট ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা নেই, যা এক অবিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের গঠন যাকে একসঙ্গে ইউরেশিয়া বলা হয়। এশিয়ার সবচেয়ে সাধারণভাবে স্বীকৃত সীমানা হলো সুয়েজ খাল, ইউরাল নদী, এবং ইউরাল পর্বতমালার পূর্বে, এবং ককেশাস পর্বতমালা এবং কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণে। এটা পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর এবং উত্তরে উত্তর মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। ইউরাল পর্বতমালা, ইউরাল নদী, কাস্পিয়ান সাগর, কৃষ্ণসাগর এবং ভূমধ্যসাগর দ্বারা এশিয়া ও ইউরোপ মহাদেশ দুটি পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন। এছাড়া লোহিত সাগর ও সুয়েজ খাল এশিয়া মহাদেশকে আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সংকীর্ণ বেরিং প্রণালী একে উত্তর আমেরিকা মহাদেশ থেকে পৃথক করেছে। উল্লেখ্য, বেরিং প্রণালীর একদিকে অবস্থান করছে এশিয়া মহাদেশের অন্তর্গত রাশিয়ার উলেনা এবং অপর পাশে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অন্তর্গত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা। এই প্রণালীটির সংকীর্ণতম অংশটি মাত্র ৮২ কি•মি• চওড়া, অর্থাৎ বেরিং প্রণালীর এই অংশ হতে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দূরত্ব মাত্র ৮২ কি•মি•।
সূরা (আরবি: سورة) হচ্ছে ইসলামী পরিভাষায় মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কুরআনের এক একটি অধ্যায়ের নাম। তবে এটি সাধারণ পুস্তকের অধ্যায়ের মত নয় বরং বিশেষভাবে কেবল কুরআনের বৈশিষ্ট্যের জন্যই এর উৎপত্তি। তাই এটি প্রকৃত অর্থেই কুরআনের একটি পরিভাষা, যাকে কেবল কুরআনের দৃষ্টিকোণ থেকেই ব্যাখ্যা করা যায়। কুরআনের প্রথম সূরা হলো "আল ফাতিহা" এবং শেষ সূরার নাম "আন-নাস্"। দীর্ঘতম সূরা হলো "আল বাকারা" এবং ক্ষুদ্রতম সুরা সুরা আল কাউসার । সূরা "তাওবা" ব্যতীত সকল সূরা শুরু হয়েছে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম দিয়ে এবং সুরা আননামলে মোট দু'বার বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম আছে । একটি সূরা বা এর অংশবিশেষ অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট বা কারণকে বলা হয় শানে নুযূল।