The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
বন্ধুত্বের সম্পর্ক এক মানুষকে আরেকজনের সঙ্গে মনের বন্ধনে আবদ্ধ করে। সমমনা লোকেরাই সফলভাবে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে পারেন। এটা আমাদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে গড়ে উঠতে পারে। সাধারণত একই বয়স, চিন্তাধারা এবং একই মেজাজের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। বন্ধুত্বের সম্পর্ককে খানিকটা আলাদা করে মূল্যায়ন করার জন্যই প্রতি বছর আগস্ট মাসের প্রথম রবিবারে সারা বিশ্বজুড়ে বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস পালন করা হয়।
ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের কারণ ও ফলাফল ইতিহাসে মোটামুটি ১৭৬০-১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দ এই সময়কালে কৃষি এবং বাণিজ্যিক ব্যবস্থা থেকে আধুনিক শিল্পায়নের দিকে গতি শুরু হওয়ায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিস্ময়কর পরিবর্তন ঘটে। পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীর সমুদ্র যাত্রা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের পথ খুলে দেয়। এরপর পুঁজিবাদের উদ্ভব, বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কার, কয়লার খনি আর ইস্পাতের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে অনেক শিল্প শহর আর কারখানা গড়ে উঠে।
২০২০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক (জাপানি: 2020年夏季オリンピック, ইংরেজি: 2020 Summer Olympics; আনুষ্ঠানিকভাবে ৩২তম অলিম্পিক গেমস (জাপানি: 第三十二回オリンピック競技大会, ইংরেজি: Games of the XXXII Olympiad এবং টোকিও ২০২০ (জাপানি: 東京2020, ইংরেজি: Tokyo 2020) নামে পরিচিত) হলো একটি চলমান আন্তর্জাতিক বহু-ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, যা গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমসের ৩২তম আসর। এই আসরটি জাপানের টোকিওতে ২০২১ সালের ২৩শে জুলাই শুরু হয়েছে (কিছু প্রতিযোগিতার প্রাথমিক পর্ব ২১শে জুলাই শুরু হয়েছে) এবং ৮ই আগস্ট সমাপ্ত হবে।
সামন্ততন্ত্র বা সামন্তবাদ মধ্যযুগের ইউরোপের ইতিহাসে একটি গুরত্ত্বপুর্ন প্রতিষ্ঠান বা প্রথা। মধ্য যুগে ইউরোপে যে তিনটি স্তম্ভ ( জার্মান জাতিগোষ্ঠীর রাজ্য শাসন পদ্ধতি, খ্রিষ্ট ধর্ম ও সামন্ত্রতন্ত্র ) এর উপর ভিত্তি করে তাদের সমাজ ও সভ্যতার সৌধ নির্মিত হয়েছিল বলে স্বীকৃত, সেই তিনটি স্তম্ভের মধ্যে নিঃসন্দেহে সামন্ত্রতন্ত্র বিশেষভাবে আলোচিত। কারণ সামন্ত্রতন্ত্র ইউরোপের ইতিহাসে এতো বেশি আলোচিত যে, মধ্যযুগকে অনেক সময় সামন্ত্রতন্ত্রের যুগ বলেও চিহ্নিত করা হয়।
পুঁজিবাদ বা ধনতন্ত্র (ইংরেজি: Capitalism) বলতে এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বোঝানো হয় যেখানে বাজার অর্থনীতিতে মুনাফা তৈরির লক্ষ্যে বাণিজ্য, কারখানা এবং উৎপাদনের উপকরণসমূহের উপর ব্যক্তিগত মালিকানার নিয়ন্ত্রণ থাকে। পুঁজিবাদের কেন্দ্রীয় বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভুক্ত করে পুঁজির সঞ্চয়ন, প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজার এবং শ্রমিকের মজুরি। এটি হলো সেই সমাজ সংগঠন যাতে পণ্য সম্পর্ক, মানে কেনাবেচার সম্পর্ক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ে। এখানে পরিবার ও রাষ্ট্র থাকে। তবে পরিবার ক্রমাগত ক্ষুদ্র নিঃসঙ্গ পর্যায়ে নিছক বাণিজ্যিক বোঝাপড়ার জায়গায় গিয়ে ঠেকে। রাষ্ট্র এখানে জবরদস্তির হাতিয়ারগুলো ধরে রাখে।, তবে ক্রমেই সে বাণিজ্যিক স্বার্থের খপ্পরে পড়ে, তার কার্যক্রম সম্প্রদায়ের পক্ষ হতে সেবা কেনাবেচার দালালিতে গিয়ে ঠেকে। এটি সমাজতন্ত্রের বিপরীত একটি অর্থব্যবস্থা।
মুদ্রণ একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি প্রধান গঠন বা মাপদন্ড থেকে লেখা ও ছবির প্রতিলিপি তৈরি করা হয়। মুদ্রণের প্রথমদিকের কাজের উদাহরণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সিলিন্ডার সীল ও অন্যান্য বস্তু যেমন সাইরাস সিলিন্ডার এবং সিলিন্ডার অফ নাবোনিদাস। কাঠের টুকরায় মুদ্রণের সূচনা ঘটে চীনে প্রায় ২২০ খ্রিস্টাব্দে। পরবর্তীতে এর উন্নয়ন হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয় বর্ণ সহজে পরিবর্তনযোগ্য ধরনের মুদ্রণ ব্যবস্থা, প্রায় ১০৪০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ চীনে বি শেং তৈরি করেন এটি। ইয়োহানেস গুটেনবার্গ যান্ত্রিক পরিবর্তনযোগ্য ধরনের মুদ্রণ ব্যবস্থা ইউরোপে ১৫ শতাব্দীতে চালু করেন। তার ছাপাখানা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রেনেসাঁ যুগের, সংস্কারের, আলোকিত যুগের এবং বৈজ্ঞানিক বিপ্লব উন্নয়নের এবং এটি আধুনিক জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতির উপাদানের ভিত্তি স্থাপন করে এবং জনগণের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটায়।আধুনিক বড় মাপের মুদ্রণগুলো সাধারণত ছাপাখানা ব্যবহার করে করা হয়, অন্যদিকে ছোট মাপের মুদ্রণগুলো সম্পন্ন করা হয় প্রায় বিনামূল্য-ধরনের আধুনিক মুদ্রাকর দ্বারা। যদিও কাগজ হল - মুদ্রণ করার সবচেয়ে সাধারণ উপাদান, তবুও মুদ্রণ প্রায়শই ধাতু, প্লাস্টিক, কাপড় ও যৌগিক পদার্থের উপরেও করা হয়। কাগজের মুদ্রণের ক্ষেত্রে এটা প্রায়ই একটি বড় মাপের শিল্প প্রক্রিয়ায় করা হয় এবং এটি একটি অপরিহার্য অংশ প্রকাশনা ও লেনদেনের ক্ষেত্রে।
প্রতি বৎসর বিভিন্ন দিনে বিশ্বব্যাপী নানা "দিবস" পালিত হয়। এই সকল বৈশ্বিক দিবস বা বিশ্ব দিবস বা আন্তর্জাতিক দিবসসমূহের তালিকা এই পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো। এই সকল দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে - কোন একটি নির্দিষ্ট দিনে আন্তর্জাতিকভাবে সাম্প্রতিককালের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধি বা ক্ষেত্র বিশেষে কোন অতীত ঘটনা স্মরণ বা উদ্যাপন করা।
উইলিয়াম কেরি ইংরেজি: William Carey (১৭৬১ – ১৮৩৪) ছিলেন একজন মিশনারি ও বাংলায় গদ্য পাঠ্যপুস্তকের প্রবর্তক, ব্রিটিশ খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারক, যাজক, বিশেষ ব্যাপটিষ্ট মন্ত্রী, অনুবাদক, সামাজিক সংস্কারক, এবং সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্ববিদ। তিনি ব্যাপ্টিস্ট মিশনারি সোসাইটি, প্রথম ডিগ্রী প্রদানকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও শ্রীরামপুর কলেজ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ - ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভূ-রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মায়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
২০২০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ফুটবল
২০২০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের ফুটবল টুর্নামেন্টটি ২১ জুলাই থেকে ২০ আগস্ট ২০২১ পর্যন্ত জাপানে অনুষ্ঠিত হবে।অলিম্পিকের আয়োজক শহর টোকিও ছাড়াও কাশিমা, সইতামা, সাপ্পোরো, সেন্ডাই এবং ইয়োকোহামায় ম্যাচগুলি অনুষ্ঠিত হবে।ফিফার সাথে যুক্ত সমিতিগুলি টুর্নামেন্টে অংশ নিতে দল পাঠাতে পারে। মহিলাদের দলগুলিতে কোনও বয়সের বিধিনিষেধ নেই, যখন পুরুষদের দলগুলি অনূর্ধ্ব -২৪ খেলোয়াড়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে (১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারী বা তারপরে জন্মগ্রহণকারী) সর্বাধিক তিনজন বয়স অতিক্রমকারী প্লেয়ারকে অনুমোদন দিতে পারে।২০২০ সালের জুনে ফিফা অলিম্পিকে ভিডিও সহকারী রেফারি (ভিএআর) সিস্টেমের ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। পুরুষদের টুর্নামেন্টটি সাধারণত অনূর্ধ্ব -২৩ খেলোয়াড়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, যদিও এক বছরের মধ্যে অলিম্পিক পিছিয়ে দেওয়ার পরে, ফিফা ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পরে জন্ম নেওয়া খেলোয়াড়দের বয়সের সীমাবদ্ধতা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
নারী ক্ষমতায়ন (ইংরেজি: Women's empowerment) হল নারী ক্ষমতায়নের প্রক্রিয়া। ক্ষমতায়নকে বিভিন্ন উপায়ে সংজ্ঞায়িত করতে পারা যায়, কিন্তু, নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলতে ক্ষমতায়নের অর্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার বাইরের মানুষের (মহিলাগণ) একে গ্রহণ করা এবং তাঁদের অনুমতি দেওয়া। "এই রাজনৈতিক গঠন এবং আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে একটি আয় উপার্জনের দক্ষতার উপর জোর দেওয়া হয়, যা অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণকে সক্ষম করেন।" ক্ষমতায়ন হল একটি প্রক্রিয়া যা ব্যক্তির নিজের জীবন, সমাজ এবং নিজের সম্প্রদায়ে ক্ষমতা সৃষ্টি করে। মানুষ ক্ষমতাবান হয় যেখানে তাঁদের শিক্ষা, পেশা এবং জীবনযাত্রার নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা এবং সেই সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে তাঁরা তাঁদের উপলব্ধ সুযোগসমূহ লাভ করতে সক্ষম হয়। নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার বোধ করার ক্ষমতায়নের একটি ধারণা সৃষ্টি হয়। ক্ষমতায়নে শিক্ষার মাধ্যমে নারীর সম্মান বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি, সাক্ষরতা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়ে আছে। নারী ক্ষমতায়ন নারীদের সমাজে বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে জীবন নির্ধারণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দেয়। নারী ক্ষমতায়ন নারীর নিজস্ব মূল্যবোধকে বিকাশিত করতে সাহায্য করে।
ভূগোল (ইংরেজি: Geography, যেটি এসেছে গ্রীক শব্দ “γεωγραφία”, বা, geographia, থেকে; যার শাব্দিক অর্থ: "পৃথিবী সম্পর্কিত বর্ণনা বা আলোচনা") হচ্ছে বিজ্ঞানের সেই শাখা যেখানে পৃথিবীর ভূমি, এর গঠন বিন্যাস, এর অধিবাসী সম্পর্কিত সমস্ত প্রপঞ্চ (phenomenon / ক্রিয়া-প্রক্রিয়া) সংক্রান্ত বিষয়াদি আলোচিত হয়। এই শব্দটি খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতকে গ্রিক জ্ঞানবেত্তা এরাটোসথেনিস (২৭৬–১৯৪ খ্রিস্টপূর্ব) প্রথম ব্যবহার করেন। ভূগোলে মানুষের বসবাসের জগৎ ও তার সাথে সম্পর্কিত সমস্ত বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপঃ ভৌত ভূগোলে জলবায়ু, ভূমি ও জল নিয়ে গবেষণা করা হয়; সাংস্কৃতিক ভূগোলে কৃত্রিম, মনুষ্যনির্মিত ধারণা যেমন দেশ, বসতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, পরিবহন, দালান, ও ভৌগোলিক পরিবেশের অন্যান্য পরিবর্তিত রূপ আলোচনা করা হয়। ভূগোলবিদেরা তাদের গবেষণায় অর্থনীতি, ইতিহাস, জীববিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব এবং গণিতের সহায়তা নেন।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
রেনেসাঁ মানবতাবাদ হচ্ছে ধ্রুপদী সভ্যতার পাঠ যা প্রথমে ইতালিতে শুরু হয় এবং পরবর্তীতে পশ্চিম সমাজে ১৪, ১৫ এবং ১৬ শতকে ছড়িয়ে পড়ে। রেনেসাঁ মানবতাবাদ পরিভাষাটি উদ্ভব হয়েছে রেনেসাঁ (রাইনাসিমেন্টো, "পুনর্জন্ম") এবং "মানবতাবাদ" (যদিও বর্তমান সময়ে মানবতাবাদের ভিন্ন অর্থ হয় কিন্তু রেনেসাঁ মানবতাবাদের প্রকৃত অর্থ আধুনিক মানবতাবাদ থেকে ভিন্ন ছিল) থেকেরেনেসাঁ মানবতাবাদ হচ্ছে মধ্যযুগীয় সংকীর্ণ পণ্ডিতপনার বিরুদ্ধে একতার প্রতিক্রিয়ারুপ সাড়া। মানবতাবাদীরা চেয়েছেন নাগরিকত্ব যাতে গড়ে উঠে; এর ফলে বেসামরিক জীবনে তারা তাদের স্বাধীন মতের প্রতিফলন ঘটাতে পারবে, এবং অন্যদের প্ররোচিত করে মানবিক গুণসম্পন্ন ও নির্মল সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এইবিষয়টি মানবতাপাঠের অন্তর্গত। যা আজ মানবিকতা নামে পরিচিত, এখানে ব্যাকরণ, অলঙ্করাশাস্ত্র, ইতিহাস, কবিতা ও নীতিশাস্ত্র আলোচিত হয়।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারতীয় প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
ইউরোপ (ইংরেজি: Europe) একটি মহাদেশ যা বৃহত্তর ইউরেশিয়া মহাদেশীয় ভূখণ্ডের পশ্চিমের উপদ্বীপটি নিয়ে গঠিত। সাধারণভাবে ইউরাল ও ককেসাস পর্বতমালা, ইউরাল নদী, কাস্পিয়ান এবং কৃষ্ণ সাগর-এর জলবিভাজিকা এবং কৃষ্ণ ও এজিয়ান সাগর সংযোগকারী জলপথ ইউরোপকে এশিয়া মহাদেশ থেকে পৃথক করেছে।ইউরোপের উত্তরে উত্তর মহাসাগর, পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর দক্ষিণে ভূমধ্যসাগর এবং দক্ষিণ-পূর্বে কৃষ্ণ সাগর ও সংযুক্ত জলপথ রয়েছে। যদিও ইউরোপের সীমানার ধারণা ধ্রুপদী সভ্যতায় পাওয়া যায়, তা বিধিবহির্ভূত; যেহেতু প্রাথমিকভাবে ভূ-প্রাকৃতিক শব্দ "মহাদেশ"-এ সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক উপাদান অন্তর্ভুক্ত।
নারী শিক্ষা এমন এক শিক্ষায়তনিক ক্ষেত্র যা লিঙ্গের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গঠন পরীক্ষার সময় নারীদের জীবন ও অভিজ্ঞতা অধ্যয়নকে কেন্দ্রে করে নারীবাদী এবং আন্তঃবিষয়ক পদ্ধতিগুলির স্বপক্ষ রচনা করে থাকে। অধিকার ও নিপীড়নের ব্যবস্থা; এবং ক্ষমতা ও লিঙ্গের মধ্যেকার সম্পর্ক যেমন তারা অন্যান্য পরিচয় এবং সামাজিক অবস্থান যেমন জাতি, যৌনমুখীকরণ, আর্থ-সামাজিক শ্রেণি এবং অক্ষমতা হিসাবে বিভক্ত করে।মহিলাদের অধ্যয়নের ক্ষেত্রের সাথে সম্পর্কিত যে জনপ্রিয় ধারণাগুলি তার মধ্যে রয়েছে নারীবাদী তত্ত্ব, স্ট্যান্ডপয়েন্ট থিওরি, আন্তঃনীতি, বহুসংস্কৃতিবাদ, ট্রান্সন্যাশনাল ফেমিনিজম, সামাজিক ন্যায়বিচার।মহিলাদের গবেষণার সাথে সম্পর্কিত গবেষণা অনুশীলন এবং পদ্ধতিগুলির মধ্যে রয়েছে এথনোগ্রাফি, অটোথনোগ্রাফি, ফোকাস গ্রুপ, সমীক্ষা, সম্প্রদায়ভিত্তিক গবেষণা, বক্তৃতা বিশ্লেষণ এবং সমালোচনামূলক তত্ত্ব, উত্তর-কাঠামোবাদ এবং কৌতুক তত্ত্বের সাথে সম্পর্কিত পড়া অনুশীলন। এটি লিঙ্গ, বর্ণ, শ্রেণি, যৌনতা এবং অন্যান্য সামাজিক বৈষম্যের বিভিন্ন সামাজিক নিয়মগুলি গবেষণা এবং সমালোচনা করে।
রেনেসাঁ শিল্প বলতে ইউরোপীয় রেনেসাঁর সময়কার চিত্রকলা, স্থাপত্য, এবং আলংকারিক কার্যকলাপসমূহকে বোঝানো হয় যা দর্শন, সাহিত্য, সঙ্গীত, এবং বিজ্ঞানের পাশাপাশি একটি নিজস্ব শৈলী নিয়ে ১৪০০ সালে ইতালিতে আবির্ভূত হয়। রেনেসাঁ চিত্রকলা, যাকে কিনা ক্লাসিকাল এন্টিকুইটির/ধ্রুপদী সভ্যতার শ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়, তা ক্লাসিকাল বা শাস্ত্রীয় চিত্রকলাকে বুনিয়াদ করেই গড়ে ওঠে, তবে সেই ঐতিহ্যকেই উত্তর ইউরোপের সমসাময়িক শৈল্পিক বিকাশ এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সাথে যুক্ত করে রুপান্তর করে নেয়। সুরভি বন্দোপাধ্যায়ের মতে "ক্লাসিসিজম-এর বৈশিষ্ট্য হল পরিমিতিবোধ, ভারসাম্যবোধ, সংযম এবং আঙ্গিক-সচেতনতা।...ক্লাসিসিজম-এর তাত্ত্বিক অর্থ হল নিয়ম, প্রথা এবং প্রচলিত শৃঙ্খলার অনুসরণ, তাৎক্ষণিক প্রেরণা নয়"। রেনেসাঁ শিল্প এবং রেনেসাঁ মানবতাবাদ দর্শন সমস্ত ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিত্যনতুন শৈল্পিক কলাকৌশল ও শৈল্পিক সংবেদনশীলতা শিল্পী ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের প্রভাবিত করে। রেনেসাঁ শিল্পের মাধ্যমেই ইউরোপ মধ্যযুগ থেকে আদি আধুনিক যুগে উন্নীত হয়।
সিন্ধু সভ্যতা ছিল একটি ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতা (৩৩০০ – ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ; পূর্ণবর্ধিত কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)। এই সভ্যতার কেন্দ্র ছিল মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সিন্ধু নদ অববাহিকা। প্রথম দিকে এই সভ্যতা পাঞ্জাব অঞ্চলের সিন্ধু অববাহিকায় বিকাশ লাভ করে। পরে তা প্রসারিত হয় ঘগ্গর-হকরা নদী উপত্যকা ও গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চল পর্যন্ত। বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ, ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পশ্চিমদিকের রাজ্যগুলি, দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তান এবং বালোচিস্তান প্রদেশের পূর্ব অংশ এই সভ্যতার অন্তর্গত ছিল।
উপনিবেশবাদ বলতে একটি দেশ কর্তৃক অন্য একটি দেশের উপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নেয়াকে বোঝায় , যা প্রায়ই উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। সাধারণত উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার পেছনে উদ্দেশ্য থাকে অর্থনৈতিক আধিপত্য। উপনিবেশ শব্দটি এমন একটি সেট যা ঔপনিবেশিক শক্তি এবং উপনিবেশের মধ্যে অসম সম্পর্ক এবং প্রায়ই ঔপনিবেশিক এবং আদিবাসীদের মধ্যে অসম সম্পর্ক বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়।
খিলাফত আন্দোলন যা ভারতীয় মুসলিম আন্দোলন (১৯১৯-১৯২৪) নামেও পরিচিত, ইসলামী খেলাফত পুনরুদ্ধার করতে ব্রিটিশ ভারতের মুসলমানরা শওকত আলী, মোহাম্মদ আলী জওহর ও আবুল কালাম আজাদ নেতৃত্বে পরিচালিত একটি সর্ব-ইসলামবাদ রাজনৈতিক প্রতিবাদ অভিযান করে। যেখানে উসমানীয় খিলাফতের একজন যিনি সুন্নি মুসলমানদের নেতা হিসাবে কার্যকর রাজনৈতিক কর্তৃত্ব হিসাবে বিবেচিত ছিলেন। এটি সেভ্র চুক্তির মাধ্যমে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে খলিফা এবং উসমানীয় সাম্রাজ্যের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ ছিল।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) উনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তাঁর। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) হল কুরআনের একটি আয়াত (বাক্য) বা দোয়া, যার বাংলা অর্থ হল "আমরা তো আল্লাহরই এবং আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী"। কথাটা সাধারণত মুসলমানরা তাদের বেদনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে উচ্চারণ করে, বিশেষ করে যখন একজন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে।
অর্থশাস্ত্রের পরিভাষায় ব্যবসায় এক ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ড (বিজ্ঞান) যেখানে নির্দিষ্ট সৃষ্টিশীল ও উৎপাদনীয় লক্ষ্যকে সামনে রেখে বৈধভাবে সম্পদ উপার্জন বা লাভের উদ্দেশ্যে লোকজনকে সংগঠিত করা হয় ও তাদের উৎপাদনীয় কর্মকাণ্ড রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। ব্যক্তির মুনাফা পাওয়ার আশায় পণ্যদ্রব্য ও সেবাকর্ম উৎপাদনের মাধ্যমে উপযোগ সৃষ্টি এবং মানুষের বস্তুগত ও অবস্তুগত অভাব পূরণের লক্ষ্যে সেগুলো বণ্টন এবং এর সহায়ক সবরকম বৈধ, ঝুঁকিবহুল ও ধারাবাহিক কার্যকে ব্যবসা বলে।
অলিম্পিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বা অলিম্পিক গেমস (ফরাসি: Jeux olympiques ঝোজোলাঁপিক)) হল একটি আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা যেখানে গ্রীষ্মকালীন এবং শীতকালীন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীরা বিভিন্ন ধরনের খেলায় অংশগ্রহণ করে। দুইশতাধিক দেশের অংশগ্রহণে মুখরিত এই অলিম্পিক গেমস বিশ্বের সর্ববৃহৎ এবং সর্বোচ্চ সম্মানজনক প্রতিযোগিতা হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। অলিম্পিক গেমস প্রত্যেক চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এর দুটো প্রকরন গ্রীষ্ম এবং শীতকালীন প্রতিযোগিতা প্রত্যেক দুই বছর পর পর হয়ে থাকে, যার অর্থ দাঁড়ায় প্রায় প্রত্যেক দুই বছর পর পর অলিম্পিক গেমসের আসর অনুষ্ঠিত হয়। খ্রীষ্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দিতে প্রাচীন গ্রীসের অলিম্পিয়া থেকে শুরু হওয়া প্রাচীন অলিম্পিক গেমস থেকেই মূলত আধুনিক অলিম্পিক গেমসের ধারণা জন্মে। ১৮৯৪ সালে ব্যারন পিয়ের দ্য কুবেরত্যাঁ সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) গঠন করেন। এই আইওসি-ই অলিম্পিক গেমস সংক্রান্ত সকল কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
ফরিদা আক্তার পপি (ববিতা নামে পরিচিত; জন্ম: ৩০ জুলাই, ১৯৫৩) বাংলাদেশের একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং প্রযোজক। তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ৭০-র দশকের সেরা অভিনেত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৭৩ সালে ২৩তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে গোল্ডেন বীয়ার জয়ী সত্যজিৎ রায়ের অশনি সংকেত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রশংসিত হন। ববিতা ৩৫০ এর বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ১৯৭৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রবর্তনের পর টানা তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। এছাড়া ১৯৭৬, ১৯৭৭, ১৯৮৫ সালে আরেকবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী, ১৯৯৬ সালে শ্রেষ্ঠ প্রযোজক, ২০০২ ও ২০১১ সালে পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী। এছাড়া ২০১৬ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
হিন্দু মহিলা বিদ্যালয় ছিল এ্যানেট এ্যাক্রয়েডের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কলকাতার এন্টালী থানা এলাকার ২২,বেনিয়া পুকুর লেনে অবস্থিত একটি আবাসিক বিদ্যালয়। এর আগে বেথুন ১৮৪৯ সালে মহিলাদের জন্য বেথুন স্কুল স্থাপন করেছিলেন কিন্তু এই বিদ্যালয় ছাত্রীদের সেই ভাবে আকর্ষণ করেতে পারেনি। এই বিদ্যালয়টি সেকালে প্রভাবশালী ধর্মপ্রচারের সঙ্গে সঙ্গে নারী শিক্ষাপ্রচারে এক ব্যতিক্রমি স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছিল। সেইকালে বালকদের যেমন বিদ্যালয় ছিল ঠিক তেমনই সুবিধাযুক্ত বিদ্যালয় বালিকাদের জন্য এ্যানেট এ্যাক্রয়েড মাত্র ১২ জন ছাত্রীদের নিয়ে বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যোগেশ চন্দ্র বাগলের মতে ১৮ নভেম্বর ১৮৭৩সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয় এবং ডেভিড কফের মতে বিদ্যালয়টি ১৮ সেপ্টেম্বর ১৮৭৩ প্রতিষ্ঠা হয়।দ্বারকানাথ গাঙ্গুলী বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং আনন্দমোহন বসু এবং দুর্গামোহন দাস এই বিদ্যালয়টির খরচা বহন করতেন । শিবনাথ শাস্ত্রী ও মনমোহন ঘোষ এই বিদ্যালয়টির সাথে জড়িত ছিলেন। জে বি ফিয়ার এই বিদ্যালয়টির সান্মানিক শিক্ষিকা ছিলেন। বিদ্যালয়টি এ্যানেটের তত্বাবধানে পাশ্চাত্য ধারা মতে বরাবর চলেছিল। ১৮৭৫ সালের ৬ এপ্রিল হেনরী বেভারীজের সাথে এ্যানেট এ্যাক্রয়েডের বিবাহের পরে, বিদ্যালয়টি অল্প সময়ের জন্য বন্ধ ছিল (মার্চ ১৮৭৬ সাল পর্যন্ত)।পরে ১ জুন ১৮৭৬ সালে বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয় নামে আবার চালু হয়েছিল ।
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (সাধারণভাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত) কলকাতা শহরে অবস্থিত একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৮৫৭ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের প্রথম আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়। এটিই ভারতের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যার সাথে জড়িত চার জন ভারতীয় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে "পাঁচ তারা বিশ্ববিদ্যালয়" ও "উৎকর্ষ সম্ভাবনার কেন্দ্র" মর্যাদা দিয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিচালিত একটি নগরাঞ্চলীয় অনুমোদনদাতা ও গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়। আশুতোষ শিক্ষাপ্রাঙ্গণ নামে পরিচিত এর কেন্দ্রীয় ক্যাম্পাসটি মধ্য কলকাতার কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলে অবস্থিত; বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর ক্যাম্পাসগুলি রাজাবাজার (রাসবিহারী শিক্ষাপ্রাঙ্গণ), বালিগঞ্জ (তারকনাথ শিক্ষাপ্রাঙ্গণ), আলিপুর (শহীদ ক্ষুদিরাম শিক্ষাপ্রাঙ্গণ), বিধাননগর (আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় শিক্ষাপ্রাঙ্গণ), হাজরা ও দক্ষিণ সিঁথিতে অবস্থিত।
মুহাম্মাদ (আরবি: مُحَمَّد, ২৯ আগস্ট ৫৭০ - ৮ জুন ৬৩২; মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত) হলেন ইসলামের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব এবং ইসলামি বিশ্বাস মতে আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সর্বশেষ নবি (আরবি: النبي আন-নাবিয়্যু), তথা ‘বার্তাবাহক’ (আরবি : الرسول আর-রাসুল), যার উপর ইসলামি প্রধান ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অমুসলিমদের মতে, তিনি ইসলামি জীবনব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল, তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সাফল্য।আনুমানিক ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে (হস্তিবর্ষ) মক্কা নগরীতে জন্ম নেওয়া মুহাম্মাদ মাতৃগর্ভে থাকাকালীন পিতা হারা হন। শৈশবে মাতাকে হারিয়ে এতিম হন এবং প্রথমে তার পিতামহ আবদুল মুত্তালিব ও পরে পিতৃব্য আবু তালিবের নিকট লালিত-পালিত হন। হেরা পর্বতের গুহায় ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুওয়াত লাভ করেন। জিবরাঈল ফেরেশতা এই পর্বতের গুহায় আল্লাহর তরফ থেকে তার নিকট ওহী নিয়ে আসেন। তিন বছর পর ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে ওহি প্রচার করেন, এবং ঘোষণা দেন "আল্লাহ্ এক" ও তার নিকট নিজেকে সঁপে দেওয়ার মধ্যেই জাগতিক কল্যাণ নিহিত, এবং ইসলামের অন্যান্য নবিদের মত তিনিও আল্লাহর প্রেরিত দূত।মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মুহাম্মাদের নিকট আসা ওহিসমূহ কুরআনের আয়াত হিসেবে রয়ে যায় এবং মুসলমানরা এই আয়াতসমূহকে "আল্লাহর বাণী" বলে বিবেচনা করেন। এই কুরআনের উপর ইসলাম ধর্মের মূল নিহিত। কুরআনের পাশাপাশি হাদিস ও সিরাত (জীবনী) থেকে প্রাপ্ত মুহাম্মাদের শিক্ষা ও অনুশীলন (সুন্নাহ) ইসলামি আইন (শরিয়াহ) হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কাজী নজরুল ইসলাম (২৪ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬; ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ – ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) রাঢ় বাংলায় জন্ম নেওয়া একজন বাঙালি কবি এবং পরবর্তী কালে বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য এবং তিনি ছিলেন বাঙালি মনীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ – দুই বাংলাতেই তার কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তার কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তার কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা হাতে তার প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তার প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে – কাজেই "বিদ্রোহী কবি", তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উভয় বাংলাতে প্রতি বৎসর উদযাপিত হয়ে থাকে।
ধ্বনিতত্ত্বের পরিভাষায় শ্বাসাঘাত বা প্রস্বর (ইংরেজি: Accent বা Stress) বলতে কোনও শব্দে বা শব্দের অংশবিশেষ তথা সিলেবলে স্বাভাবিকভাবে খানিকটা জোর দিয়ে উচ্চারণ করার ঘটনাকে বোঝায়। যেমন ইংরেজি ভাষাতে democracy শব্দটিতে দ্বিতীয় সিলেবলটিতে শ্বাসাঘাত পড়ে, কিন্তু democratic শব্দটিতে তৃতীয় সিলেবলে শ্বাসাঘাত পড়ে। যেসব সিলেবলে এই জোর পরিলক্ষিত হয় না, বলা হয় তারা প্রস্বরহীন বা শ্বাসাঘাতহীন (ইংরেজি ভাষায় unaccented বা unstressed)। সব ভাষাতেই শ্বাসাঘাতের বিভিন্ন নির্দিষ্ট বিন্যাস থাকে; এই বিন্যাসকে বলা হয় প্রস্বরীকরণ বা শ্বাসাঘাতীকরণ (ইংরেজি ভাষায় Accentuation)। শ্বাসাঘাত নিয়ে গবেষণাকে বলা হয় শ্বাসাঘাততত্ত্ব (ইংরেজি ভাষায় Accentology)।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০–১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা বঙ্গবন্ধু, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্ব স্বরূপ তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
ইতিহাস হল মানুষের অতীত ঘটনা ও কার্যাবলীর অধ্যয়ন। বৃহৎ একটি বিষয় হওয়া সত্ত্বেও এটি কখনও মানবিক বিজ্ঞান এবং কখনও বা সামাজিক বিজ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে আলোচিত হয়েছে। অনেকেই ইতিহাসকে মানবিক এবং সামাজিক বিজ্ঞানের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন হিসেবে দেখেন। কারণ ইতিহাসে এই উভয়বিধ শাস্ত্র থেকেই পদ্ধতিগত সাহায্য ও বিভিন্ন উপাদান নেওয়া হয়। একটি শাস্ত্র হিসেবে ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গেলে অনেকগুলো উপবিভাগের নাম চলে আসে: দিনপঞ্জি, ইতিহাস-লিখন, কুলজি শাস্ত্র, পালিওগ্রাফি এবং ক্লায়োমেট্রিক্স। স্বাভাবিক প্রথা অনুসারে ইতিহাসবেত্তাগণ ইতিহাসের লিখিত উপাদানের মাধ্যমে বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেন, যদিও কেবল লিখিত উপাদান হতে ইতিহাসে সকল তত্ত্ব উদ্ধার করা সম্ভব নয়। ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে যে উৎসগুলো বিবেচনা করা হয়, সেগুলোকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়: লিখিত, মৌখিক এবং শারীরিক বা প্রত্যক্ষ করণ। ইতিহাসবেত্তারা সাধারণত তিনটি উৎসই পরখ করে দেখেন। তবে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে লিখিত উপাদান সর্বজন স্বীকৃত। এই উৎসটির সাথে লিখন পদ্ধতির ইতিহাস অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। হেরোডোটাসকে ইতিহাসের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
গ্যালিলিও গ্যালিলেই (ইতালীয় উচ্চারণ: [ɡaliˈlɛːo ɡaliˈlɛi]; জন্ম: ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৫৬৪ - মৃত্যু: ৮ জানুয়ারি, ১৬৪২) একজন ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ এবং দার্শনিক যিনি বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সঙ্গে বেশ নিগূঢ়ভাবে সম্পৃক্ত। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানের মধ্যে রয়েছে দূরবীক্ষণ যন্ত্রের উন্নতি সাধন যা জ্যোতির্বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সবচেয়ে বড়ো ভূমিকা রেখেছে, বিভিন্ন ধরনের অনেক জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ, নিউটনের গতির প্রথম এবং দ্বিতীয় সূত্র, এবং কোপারনিকাসের মতবাদের পক্ষে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ।
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ বা কলেজ অফ ফোর্ট উইলিয়াম ছিল ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর-জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি প্রতিষ্ঠিত একটি প্রাচ্যবিদ্যা শিক্ষাকেন্দ্র। ১৮০০ সালের ০৯ জুলাই কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম চত্বরে এই কলেজ স্থাপিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানে সহস্রাধিক সংস্কৃত, আরবি, ফার্সি, বাংলা, হিন্দি ও উর্দু বই ইংরেজিতে অনূদিত হয়।
ম্যাকবেথ (ইংরেজি: Macbeth, ; সম্পূর্ণ শিরোনাম: দ্য ট্র্যাজেডি অফ ম্যাকবেথ, ইংরেজি: The Tragedy of Macbeth) হল উইলিয়াম শেকসপিয়র কর্তৃক রচিত একটি ট্র্যাজেডি। অনুমিত হয়, ১৬০৬ সালে এই নাটকটি প্রথম মঞ্চায়িত হয়েছিল। যাঁরা নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতা কেড়ে নিতে চান, তাদের উপর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার বাস্তব ও মানসিক প্রভাব এই নাটকে দৃশ্যায়িত হয়েছে। ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম জেমস ছিলেন শেকসপিয়রের নাট্য কোম্পানির পৃষ্ঠপোষক। তাঁর রাজত্বকালে শেকসপিয়র যে নাটকগুলি রচনা করেছিলেন, সেগুলির মধ্যে ম্যাকবেথ নাটকটিতেই নাট্যকারের সঙ্গে তার পৃষ্ঠপোষকের সম্পর্ক সবচেয়ে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল। নাটকটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৬২৩ সালের ফোলিও সংস্করণে। সম্ভবত একটি প্রম্পট বই থেকে এই সংস্করণের পাঠটি গৃহীত হয়েছিল। ম্যাকবেথ নাটকটিই শেকসপিয়রের সংক্ষিপ্ততম ট্র্যাজেডি।স্কটল্যান্ডের দুঃসাহসী সেনাপ্রধান ম্যাকবেথ তিন ডাইনির ভবিষ্যদ্বাণী থেকে জানতে পারেন যে, একদিন তিনি স্কটল্যান্ডের রাজা হবেন। উচ্চাকাঙ্ক্ষার দ্বারা প্রলুব্ধ এবং নিজের স্ত্রীর কৃতকর্মের দ্বারা তাড়িত হয়ে ম্যাকবেথ রাজা ডানকানকে হত্যা করেন এবং স্কটল্যান্ডের সিংহাসন অধিকার করে বসেন। কিন্তু তারপরই অপরাধবোধ-প্রসূত এক মানসিক বিকৃতির বশে শত্রুতা ও সন্দেহের হাত থেকে নিজেকে রক্ষে করতে একের পর এক খুন করতে বাধ্য হন তিনি। সেই সঙ্গে ম্যাকবেথ হয়ে ওঠেন এক স্বৈরাচারী শাসক। একের পর এক ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড এবং তার অনুবর্তী গৃহযুদ্ধের ফলে ম্যাকবেথ ও তার স্ত্রী দু’জনেই উন্মাদ হয়ে যান। লেডি ম্যাকবেথ আত্মহত্যা করেন এবং ম্যাকবেথ ম্যাকডাফের হাতে পরাজিত ও নিহত হন।
কুমিল্লা বিভাগ বাংলাদেশের মধ্য-পূর্বাঞ্চলের প্রস্তাবিত একটি বিভাগ। কুমিল্লা বিভাগের সদরদপ্তর কুমিল্লা শহরে অবস্থিত। প্রস্তাবিত এই বিভাগ নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নিয়ে গঠিত হবে। এটি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের মোট ১২,৮৪৮.৫৩ কিমি২ (৪,৯৬০.৮৫ মা২) এবং ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ১,৬৭,০৮,০০০ জনসংখ্যা নিয়ে গঠিত।
রেনেসাঁস বা পুনর্জন্ম বা পুনর্জাগরণ বা নবজাগরণ (ফরাসি: Renaissance, ইতালীয়: Rinascimento) ছিল পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে সংঘটিত ইউরোপীয় ইতিহাসে মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে পদার্পনের মধ্যবর্তী সময়। এটি মধ্যযুগের সংকটের পর সংঘটিত হয়ে ব্যাপক সামাজিক পরিবর্তন সাধিত করে। তাছাড়া রেনেসাঁ মূলত শুরু হয় চতুর্দশ শতাব্দীতে এবং শেষ হয় সপ্তদশ শতাব্দীতে এসে। গতানুগতিকভাবে সবাই রেনেসাঁর প্রাথমিক সময়ের দিকে নজর দেয়, কিন্তু অনেক ইতিহাসবিদ মধ্যযুগের দিকেই বেশি মনোনিবেশ করেন এবং তারা যুক্তি দেখান যে এটি মধ্যযুগেরই বিস্তৃতি।রেনেসাঁসের অভিধানিক অর্থ হল পুনর্জন্ম বা পুনর্জাগরণ বা নবজাগরণ। এই যুগের ব্যাপ্তিকাল ছিল আনুমানিক চতু্র্দশ থেকে ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত। আধুনিক ইউরোপের উদ্ভবের ক্ষেত্রে রেনেসাঁস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি মূলত একটি দীর্ঘস্থায়ী সমাজ পরিবর্তন প্রক্রিয়া। এই রেনেসাঁসের ভেতর দিয়ে আধুনিক পাশ্চাত্য সভ্যতার উত্থান ঘটেছে এবং একইসঙ্গে অবসান ঘটেছে মধ্যযুগের। প্রচলিত অর্থে রেনেসাঁস বলতে বোঝায় প্রাচীন যুগের গ্রিক ও রোমান সাহিত্য , সংস্কৃতি , দর্শন , প্রযুক্তি , বিজ্ঞান , শিল্পকলা , ভাস্কর্যকলা প্রভৃতি অধ্যয়ন করা এবং এসবের ভিত্তিতে জীবনকে পরিচালনা করা এ যুগের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল প্রাচীন পুস্তক অধ্যয়নের অনুশীলন বৃদ্ধি, রাজকীয় ও ধর্মীয় পৃষ্ঠপোষকতার উত্থান, চিত্রকলায় দৃষ্টিভঙ্গির ব্যবহার এবং বিজ্ঞানের সামগ্রিক উন্নতি। অর্থাৎ , আর্থ সামাজিক ব্যবস্থার উন্মেষ ও বিকাশ এর মধ্য দিয়ে ইউরোপের সামাজিক জীবনে যে ব্যাপক পরিবর্তনের সূচনা ঘটে , তাকেই বলা হয় রেনেসাঁস। ইসলামি স্বর্ণযুগ পরে, মধ্য এশিয়ায় তিমুরিদ রেনেসাঁ নবজাগরণ শুরু হয়, যা অটোম্যান টার্কি, সাফাভিড ইরান এবং মুঘল ভারতকে প্রভাবিত করেছিল।অর্থাৎ সহজভাবে বলতে গেলে, অতীত ও বর্তমানের সম্মিলনই রেনেসাঁ। গ্রিক ক্লাসিক্যাল যুগে যে-সব কালজয়ী মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁরা জ্ঞানের যে আলো ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাকেই নতুন করে জাগিয়ে, নতুন করে বুঝে, নতুন জ্ঞানের আলো দিয়ে সেই শিক্ষাকে এই রেনেসাঁর মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়েছিল।
কোরীয় যুদ্ধ (২৫ জুন ১৯৫০ – ২৭ জুলাই ১৯৫৩)জাতিসংঘ সমর্থিত কোরিয়া প্রজান্ত্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সমর্থিত গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া মধ্যকার ১৯৫০-এর দশকের প্রথম দিকে শুরু হওয়া তিন বছরের অধিক সময় ব্যাপী সংঘটিত হওয়া একটি আঞ্চলিক সামরিক যুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে সংঘটিত হওয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ নিয়ে বিজয়ী মিত্রশক্তির মধ্যকার একটি চুক্তিকে কেন্দ্র করে কোরীয়দের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন এই যুদ্ধের প্রাথমিক কারণ ধরা হয়। ১৯১০ সাল থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত জাপান সাম্রাজ্য কোরীয় উপদ্বীপ শাসন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান সাম্রাজ্যের আত্মসমর্পণের পর মার্কিন প্রশাসন উপদ্বীপটিকে ৩৮তম সমান্তরাল রেখায় ভাগ করে, এর মধ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনী দক্ষিণ অর্ধেক নিজেদের দখলে আনে এবং সোভিয়েত সশস্ত্র বাহিনী উত্তর অর্ধেক অধিকারে আনে।কোরীয় উপদ্বীপের উত্তরে প্রতিষ্ঠিত হয় সাম্যবাদী সরকার আর অন্যদিকে দক্ষিণে মার্কিনিদের সহয়তায় প্রতিষ্ঠিত ডানপন্থী সরকার। ৩৮তম সমান্তরাল রেখা ক্রমেই দুই কোরীয় রাষ্ট্রের মধ্যে রাজনৈতিক ভাগ সৃষ্টি করে। যদিও যুদ্ধ শুরু হওয়ার মাস পূর্ব পর্যন্ত আলোচনার জন্য যোগাযোগ চলতে থাকে, ধীরে ধীরে দু পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সীমানাপাড়ে বিচ্ছিন্ন লড়াই সংঘটিত হয়। পরিস্থিতি রণাঙ্গনে রূপান্তরিত হয় যখন ১৯৫০ সালের ২৫ জুন উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৫০ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বর্জন করে। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেটো না পাওয়ায় নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য নিরাপত্তা সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকারী রাষ্ট্র কোরিয়ায় একটি সামরিক হস্তক্ষেপ অনুমোদন পাস করে।
জুমার নামাজ (আরবি: صلاة الجمعة সালাত আজ-জুমুআহ, "শুক্রবারের সালাত") ইসলামের অন্যতম একটি নামাজ। جُمُعَة (জুমুআহ) শব্দটি আরবী । এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া । যেহেতু, সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামায়াতের সাথে সে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরযরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে "জুমার নামাজ" বলা হয়। সময় একই হলেও যোহরের সাথে জুমার নামাজের নিয়মগত কিছু পার্থক্য রয়েছে।
বিগত কয়েক সহস্রাব্দে ভারতীয় নারীর অবস্থা বহু পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে। প্রাচীণযুগ থেকে মধ্যযুগে, তাদের অবস্থার অবনতি আর কয়েকজন সমাজসংস্কারকের প্রচেষ্টায় আবার সমমর্যাদার অধিকারে উত্তরণের ইতিহাস বেশ ঘটনাবহুল। আধুনিক ভারতে নারীরা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার অধ্যক্ষ, বিরোধী দলনেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ পদ অলংকৃত করেছেন।
যৌনসঙ্গম (যৌনমিলন, সঙ্গম, মৈথুন, রতিক্রিয়া, রতিমিলন; যৌন সংসর্গ, যৌন সহবাস, সহবাস ইত্যাদি) হচ্ছে একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা দ্বারা মূলত যৌনআনন্দ বা প্রজনন বা উভয় ক্রিয়ার জন্য একজন পুরুষের উত্থিত শিশ্ন একজন নারীর যোনিপথে অনুপ্রবেশ করানো ও সঞ্চালনা করাকে বোঝায়। অন্যান্য অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গমের মধ্যে রয়েছে পায়ুসঙ্গম (লিঙ্গ দ্বারা মলদ্বার অনুপ্রবেশ), মুখমৈথুন, অঙ্গুলিসঞ্চালন (আঙ্গুল দ্বারা যৌন অনুপ্রবেশ), যৌনখেলনা ব্যবহার দ্বারা অনুপ্রবেশ (বন্ধনীযুক্ত কৃত্রিম শিশ্ন)। এই সকল কার্যক্রম মূলত মানবজাতি কর্তৃক দুই বা ততোধিকের মধ্যেকার শারীরিক ও মানসিক অন্তরঙ্গতা জনিত পরিতোষ লাভের জন্য এবং সাধারণত মানব বন্ধনে ভূমিকা রাখতে সম্পাদিত হয়ে থাকে।যৌনসঙ্গম বা অপরাপর যৌনকর্ম কীভাবে সংজ্ঞায়িত হয় তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, যা যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর উপর প্রভাব রাখতে পারে। যদিও যৌনসঙ্গম, নির্দিষ্টভাবে মৈথুন বলতে সাধারণত শিশ্ন-জরায়ুজ অনুপ্রবেশ ও সন্তান উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করা হয়, এর দ্বারা সাধারণভাবে অন্তর্ভেদী মুখমৈথুন ও বিশেষত শিশ্ন-পায়ুজ সঙ্গমকেও নির্দেশ করা হয়। এটি সাধারণত যৌন অনুপ্রবেশকে নির্দেশ করে, যেখানে অননুপ্রবেশকারী যৌনতাকে "বহির্সঙ্গম" নামে নামকরণ করা হয়, কিন্তু অনুপ্রবেশকারী যৌনকর্মকে যৌনসঙ্গম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যৌনতা বা ইংরেজি ভাষায় সেক্স, প্রায়শই যৌনসঙ্গমের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যবহৃত রূপ, যা দ্বারা যে কোন প্রকারের যৌনক্রিয়াকে বোঝানো হতে পারে। যেহেতু এসকল যৌনকর্মের সময়ে মানুষ যৌনবাহিত সংক্রমণের সংস্পর্শের ঝুঁকিতে থাকতে পারে, নিরাপদ যৌনচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও অনাভেদী যৌনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়ে থাকে।বিভিন্ন আইনি বিধিমালা যৌনসঙ্গমমের সামাজিক অনুমতিপ্রদানের জন্য বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতির মাধ্যমে বৈবাহিক রীতির প্রবর্তন, প্রচলন ও সমর্থন করেছে এবং বেশ কিছু যৌনকর্মের বিপরীতে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনকে স্থান দিয়েছে, যেমন বিবাহপূর্ব ব্যভিচার ও বিবাহপরবর্তী পরকীয়া, পায়ুকাম, পশুকাম, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনচর্চা ও অজাচার। ধর্মীয় বিশ্বাসও যৌনসঙ্গমসহ অন্যান্য যৌনাচার বিষয়ক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা পালন করে, যেমন কুমারীত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত, অথবা আইনি বা সরকারি নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়াবলি। বিভিন্ন ধর্মভেদে ও একই ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণীভেদে যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও কিছু বিষয়ে অভিন্নতা রয়েছে, যেমন ব্যভিচারের নিষেধাজ্ঞা।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ,দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
হাঙ্গেরি (হাঙ্গেরীয় ভাষায়: Magyarország মজরোর্সাগ্ আ-ধ্ব-ব: [ˈmɒɟɒrorsaːg]) বা হাঙ্গেরীয় প্রজাতন্ত্র (Magyar Köztársaság মজর্ ক্যোস্তার্শশাগ্) মধ্য ইউরোপের একটি স্থলবেষ্টিত প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। হাঙ্গেরির অধিকাংশ এলাকা দানিউব উপত্যকা তথা হাঙ্গেরীয় সমভূমিতে অবস্থিত। এই সমতলভূমির ভেতর দিয়ে দানিউব নদী প্রবাহিত হয়েছে। হাঙ্গেরির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর বুদাপেস্ট দানিউব নদীর উভয় তীরে অবস্থিত। শহরটি পূর্ব মধ্য ইউরোপের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। হাঙ্গেরির বর্তমান সীমানা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ত্রিয়াননের চুক্তিতে ১৯২০ সালে নির্ধারিত হয়।
ফরাসি বিপ্লব (ফরাসি: Révolution française) (১৭৮৯–১৭৯৯) ফরাসি বিপ্লব, ইউরোপ এবং পশ্চিমা সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই বিপ্লবের সময় ফ্রান্সে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়ে প্রজাতান্ত্রিক আদর্শের অগ্রযাত্রা শুরু হয় এবং একই সাথে দেশের রোমান ক্যাথলিক চার্চ সকল গোঁড়ামী ত্যাগ করে নিজেকে পুনর্গঠন করতে বাধ্য হয়। ফরাসি বিপ্লবকে পশ্চিমা গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি জটিল সন্ধিক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় যার মাধ্যমে পশ্চিমা সভ্যতা নিরঙ্কুশ রাজনীতি এবং অভিজাততন্ত্র থেকে নাগরিকত্বের যুগে পদার্পণ করে। ঐতিহাসিকরা এই বিপ্লবকে মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসাবে বিবেচনা করেন।ফরাসি বিপ্লবের মূলনীতি ছিল "Liberté, égalité, fraternité, ou la mort!" অর্থাৎ "[[স্বাধীনতা, সমতা, ভ্রাতৃত্ব|স্বাধীনতা, সাম্য ও মৈত্রী "। এই শ্লোগানটিই বিপ্লবের চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছিলো যার মাধ্যমে সামরিক এবং অহিংস উভয়বিধ পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এই শ্লোগানটি তখন সকল কর্মীর প্রাণের কথায় পরিণত হয়েছিলো।
বৈজ্ঞানিক বিপ্লব (scientific revolution) বলতে বিজ্ঞানের ইতিহাসের একটি সময়ব্যাপ্তিকে বোঝায়, ১৭ শতাব্দীতে ইয়োহানেস কেপলার, গ্যালিলিওদের অনুসন্ধান ও আবিষ্কারসমূহ দিয়ে যার শুরু এবং ১৬৮৭ সালে নিউটনের প্রিন্সিপিয়া ম্যাথেমেটিকার প্রকাশনার মাধ্যমে যার পরিণতি। এর পথ ধরেই পরবর্তীতে যুক্তি ও বিজ্ঞানের বিকাশকালের(Age of Enlightenment) শুরু।
তালিবান (পশতু ভাষায়: طالبان, তালেবান-ও ব্যবহৃত হয়) দেওবন্দি, সুন্নি ইসলামি এবং পশতুন জাতীয়তাবাদী আন্দোলন। "তালিবান" শব্দের অর্থ "ছাত্র"। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে এই আন্দোলনের নেতারা ক্ষমতাসীন ছিলেন। ২০০১ সালে নর্দার্ন অ্যালায়েন্স এবং ন্যাটো দেশগুলো কর্তৃক পরিচালিত এক যৌথ অভিযানের মাধ্যমে সেদেশে তালিবান শাসনের অবসান ঘটানো হয়, তালিবান নেতারা অনেকেই বন্দী হন, বাকিরা পালিয়ে যান। বর্তমানেও দৃঢ় চেতনার অধিকারী তালিবান সমর্থকেরা পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তের উপজাতীয় অঞ্চলে ক্ষমতাসীন আফগান সরকার, অপারেশন এন্ডিউরিং ফ্রিডম-এ অংশগ্রহণকারী ন্যাটো সৈন্যবাহিনী এবং ন্যাটো পরিচালিত ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাসিস্টেন্স ফোর্সের (আইএসএএফ) বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
কলকাতা বা কোলকাতা ([kolkata] (শুনুন) ইংরেজি: Kolkata; আদি নাম: কলিকাতা; পুরনো ইংরেজি নাম: Calcutta) হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ায় কলকাতা ৭ম বৃহৎ অর্থনীতির শহর । কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। কলকাতা শহরের অর্থনীতি আর চট্টগ্রাম শহরের অর্থনীতি প্রায় সমান। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক)৩০ থেকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বই ও নতুন দিল্লির ঠিক পরেই। কলকাতা দক্ষিণ এশিয়ায় মুম্বাই,ঢাকা,দিল্লি,চেন্নাই,করাচী, চট্টগ্রাম,এর পর ৭ম বৃহৎ অর্থনীতির শহর। সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।
ফেইসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত) বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। এর মালিক হলো ফেসবুক ইনক। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
যোনি বা যোনিপথ বা যৌননালী বা জনননালী (লাতিন: ভ্যাজাইনা) হলো স্ত্রী যৌনাঙ্গ, যা জরায়ু থেকে স্ত্রীদেহের বাইরের অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ফাইব্রোমাসকুলার (তন্তু-পেশিময়) নলাকার অংশ। মানুষ ছাড়াও অমরাবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী ও মারসুপিয়াল প্রাণীতে, যেমন ক্যাঙ্গারু অথবা স্ত্রী পাখি, মনোট্রিম ও কিছু সরীসৃপের ক্লোকাতে যোনি পরিদৃষ্ট হয়। স্ত্রী কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণীরও যোনি আছে, যা মূলত ওভিডাক্টের শেষ প্রান্ত।
আফ্রিকা আয়তন ও জনসংখ্যা উভয় বিচারে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মহাদেশ (এশিয়ার পরেই)। পার্শ্ববর্তী দ্বীপগুলোকে গণনায় ধরে মহাদেশটির আয়তন ৩০,২২১,৫৩২ বর্গ কিলোমিটার (১১,৬৬৮,৫৯৮ বর্গমাইল) । এটি বিশ্বের মোট ভূপৃষ্ঠের ৬% ও মোট স্থলপৃষ্ঠের ২০.৪% জুড়ে অবস্থিত। এ মহাদেশের ৬১টি রাষ্ট্র কিংবা সমমানের প্রশাসনিক অঞ্চলে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ, অর্থাৎ বিশ্বের জনসংখ্যার ১৪% বসবাস করে। নাইজেরিয়া আফ্রিকার সর্বাধিক জনবহুল দেশ। আফ্রিকার প্রায় মাঝখান দিয়ে নিরক্ষরেখা
অবতার (সংস্কৃত: अवतार, IAST: avatāra,) "" হল হিন্দুধর্মের একটি মতবাদ। পৃথিবীতে কোনও দেবতার আবির্ভাব বা আবির্ভূত জীবদেহকে "অবতার" বলা হয়। শব্দটি সাধারণ ক্ষেত্রে "ব্যক্তিবিশেষের দেবতা আবির্ভাবের জন্য অবতরণ" অর্থে ব্যবহৃত হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সম্মানীয়/শ্রদ্ধেয়/স্রষ্টার বাণী নিয়ে জীবদেহ ধারণ গুরু বা কোনও মানুষকেও অবতার বলে উল্লেখ করা হয়।বৈদিক সাহিত্যে অবতার শব্দটি পাওয়া যায় না। তবে বেদ-পরবর্তী সাহিত্যে এটি ক্রিয়াপদ আকারে উল্লিখিত হয়েছে। খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতাব্দীর পরে রচিত পৌরাণিক সাহিত্যেই এই শব্দটিকে স্বতন্ত্রভাবে বিশেষ্য পদের আকারে ব্যবহার করা হয়েছে। ঋগ্বেদের বর্ণনা অনুসারে, ইন্দ্র একটি রহস্যময় শক্তির বলে ইচ্ছামতো যে কোনও রূপ ধারণ করতে পারেন। ভগবদ্গীতা গ্রন্থে অবতার মতবাদটি বিস্তারিত ও সুস্পষ্ট ভাবে ব্যাখ্যা হলেও সেখানে অবতার শব্দটির পরিবর্তে অন্যান্য পারিভাষিক শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে।হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর সঙ্গেই অবতারবাদের বিশেষ সম্পর্ক। যদিও এই মতবাদ কিছু ক্ষেত্রে অন্য কয়েকজন দেবদেবীদের ক্ষেত্রেও প্রযুক্ত হয়। হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলিতে বিষ্ণুর অবতারগুলির ভিন্ন ভিন্ন তালিকা পাওয়া যায়। গরুড় পুরাণ গ্রন্থে বিষ্ণুর দশাবতার ও ভাগবত পুরাণ গ্রন্থে বিষ্ণুর বাইশটি অবতারের বর্ণনা পাওয়া যায়। যদিও শেষোক্ত পুরাণটিতে এও বলা হয়েছে বিষ্ণুর অবতারের সংখ্যা অগণিত। বৈষ্ণব ধর্মতত্ত্বে অবতারবাদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মতবাদ। হিন্দুধর্মের দেবী-কেন্দ্রিক শাক্তধর্মে মহাশক্তির বিভিন্ন অবতারের রূপ বর্ণিত হয়েছে। তাদের মধ্যে কালী, দুর্গা ও ত্রিপুরাসুন্দরী সর্বাধিক পরিচিত। মধ্যযুগে রচিত কয়েকটি হিন্দু ধর্মগ্রন্থে গণেশ ও শিব প্রমুখ অন্য কয়েকজন দেবতার অবতারের কথা উল্লিখিত হলেও সেই গ্রন্থগুলি অপ্রধান ও স্বল্পপরিচিত। উল্লেখ্য, হিন্দুধর্মের বৈষ্ণব ও শৈব সম্প্রদায়ের মধ্যে অন্যতম প্রধান পার্থক্যই হল এই অবতারবাদ।
রাজা রামমোহন রায় অথবা রামমোহন রায় (২২ মে, ১৭৭২ – সেপ্টেম্বর ২৭, ১৮৩৩) প্রথম ভারতীয় ধর্মীয়-সামাজিক পুনর্গঠন আন্দোলন ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাঙালি দার্শনিক। তৎকালীন রাজনীতি, জনপ্রশাসন, ধর্মীয় এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পেরেছিলেন। তিনি সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত হয়েছেন, সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টার জন্য। তখন হিন্দু বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণে যেতে বা আত্মাহুতি দিতে বাধ্য করা হত।
গীতগোবিন্দম্ (ওড়িয়া: ଗୀତ ଗୋବିନ୍ଦ, Bengali:গীতগোবিন্দ, Devanagari: गीत गोविन्द) (Song of Govinda) গৌড়ের রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি জয়দেব কর্তৃক সংস্কৃত ভাষায় রচিত একটি কাব্য; এর রচনাকাল ১২ শতক। এই কাব্যে বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণের গোপিনীদের সঙ্গে রাসলীলা — রাধার বিষাদ বর্ণনা, কৃষ্ণের জন্য ব্যাকুলতা, উপালম্ভ বচন, কৃষ্ণের রাধার জন্য উৎকণ্ঠা, রাধার সখীদের দ্বারা রাধার বিরহ-সন্তাপের বর্ণনা গ্রন্থিত হয়েছে। কাব্যের মনোরম রচনাশৈলী, ভাবপ্রবণতা, সুমধুর রাগরাগিণী, ধর্মীয় তাৎপর্য তথা সুললিত কোমল-কান্ত-পদাবলী সাহিত্যিক রসপিপাসুদের অপার আনন্দ প্রদান করে। ১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে উইলিয়াম জোন্স দ্বারা লিখিত 'অন দ্য মিউজিকাল মোডস্ অফ হিন্দুস্' (এশিয়াটিক রিসার্চেস, খণ্ড ৩) বইয়ে গীতগোবিন্দকে 'গোপনাট্য' (Pastoral Drama) বলে অভিহিত করা হয়েছে। অন্যান্য সমালোচকরা একে 'গীতিনাটক', 'পরিশুদ্ধ যাত্রা', 'সংগীত রূপক' বলে আখ্যায়িত করেছেন। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকাতে (খণ্ড ৫) এই কাব্যকে 'ধর্মনাট্য'বলা হয়েছে। জার্মান কবি গ্যেটে এই কাব্যের অনুবাদ সংস্করণ পাঠ করে কাব্যটির ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন।
কুরআন মজিদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ বা কোরআন (আরবি: القرآن আল্-কুর্'আন্[টী১]) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন। এটিকে আরবি শাস্ত্রীয় সাহিত্যের সর্বোৎকৃষ্ট রচনা বলে মনে করা হয়। কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবিতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা হয়েছে।
ডেঙ্গু জ্বর (সমার্থক ভিন্ন বানান ডেঙ্গি) একটি এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস জনিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ। এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে সচরাচর ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। উপসর্গগুলির মাঝে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশিতে ও গাঁটে ব্যথা এবং গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি। দুই থেকে সাত দিনের মাঝে সাধারণত ডেঙ্গু রোগী আরোগ্য লাভ করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগটি মারাত্মক রক্তক্ষরী রূপ নিতে পারে যাকে ডেঙ্গু রক্তক্ষরী জ্বর (ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার) বলা হয়। এর ফলে রক্তপাত হয়, রক্ত অনুচক্রিকার মাত্রা কমে যায় এবং রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ ঘটে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কখনোবা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম দেখা দেয়। ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কমে যায়।কয়েক প্রজাতির এডিস মশকী (স্ত্রী মশা) ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক। যেগুলোর মধ্যে এডিস ইজিপ্টি মশকী প্রধানতম। ভাইরাসটির পাঁচটি সেরোটাইপ পাওয়া যায়। ভাইরাসটির একটি সেরোটাইপ সংক্রমণ করলে সেই সেরোটাইপের বিরুদ্ধে রোগী আজীবন প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে, কিন্তু ভিন্ন সেরোটাইপের বিরুদ্ধে সাময়িক প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে। পরবর্তীতে ভিন্ন সেরোটাইপের ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমিত হলে রোগীর মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। কয়েক ধরনের টেস্টের মাধ্যমে, যেমন, ভাইরাসটি বা এর আরএনএ প্রতিরোধী এন্টিবডির উপস্থিতি দেখেও ডেঙ্গু জ্বর নির্ণয় করা যায়।
মানব পরিবারের সকল সদস্যের জন্য সার্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার যেটা তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। মানুষ এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে। তবে এ চর্চা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারবে না। মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। এ অধিকার একই সাথে সহজাত ও আইনগত অধিকার। স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম দায়িত্ব হল এসব অধিকার রক্ষণাবেক্ষণ করা। যদিও অধিকার বলতে প্রকৃতপক্ষে কি বোঝানো হয় তা এখন পর্যন্ত একটি দর্শনগত বিতর্কের বিষয়। বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের বিষয়টি এখন আরো প্রকটভাবে অনুভূত হচ্ছে, যখন আমরা দেখছি যে, মানুষের অধিকারসমূহ আঞ্চলিক যুদ্ধ, সংঘাত, হানাহানির কারণে বার বার লংঘিত হচ্ছে। প্রথমত একটি পরিবার ও সমাজের কর্তারা তাদের অধিনস্তদের অধিকার রক্ষা করবে। দ্বিতীয়ত রাষ্ট্র এবং তৃতীয়ত আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা পালন করে থাকে।
বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্য নামে পরিচিত। আনুমানিক খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনার সূত্রপাত হয়। খ্রিষ্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত বৌদ্ধ দোহা-সংকলন চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আরও তিনটি গ্রন্থের সঙ্গে চর্যাগানগুলো নিয়ে সম্পাদিত গ্রন্থের নাম দেন " হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোহা "। মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্য ছিল কাব্যপ্রধান। হিন্দুধর্ম, ইসলাম ও বাংলার লৌকিক ধর্মবিশ্বাসগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই সময়কার বাংলা সাহিত্য। মঙ্গলকাব্য, বৈষ্ণব পদাবলি, শাক্তপদাবলি, বৈষ্ণব সন্তজীবনী, রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবতের বঙ্গানুবাদ, পীরসাহিত্য, নাথসাহিত্য, বাউল পদাবলি এবং ইসলামি ধর্মসাহিত্য ছিল এই সাহিত্যের মূল বিষয়। বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার সূত্রপাত হয় খ্রিষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার নবজাগরণের যুগে কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে বাংলা সাহিত্যে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। এই সময় থেকে ধর্মীয় বিষয়বস্তুর বদলে মানুষ, মানবতাবাদ ও মানব-মনস্তত্ত্ব বাংলা সাহিত্যের প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর বাংলা সাহিত্যও দুটি ধারায় বিভক্ত হয়: কলকাতা-কেন্দ্রিক পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য ও ঢাকা-কেন্দ্রিক বাংলাদেশের সাহিত্য। বর্তমানে বাংলা সাহিত্য বিশ্বের একটি অন্যতম, সমৃদ্ধ সাহিত্যধারা হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকাণ্ড সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মুনাজ্জামাত্ আল তাহ্রি ফিলিস্তিনিয়াহ্ (পিএলও) (আরবি: منظمة التحرير الفلسطينية; Munaẓẓamat at-Taḥrīr al-Filasṭīniyyah ) নামক সংগঠনটি ১৯৬৪ সালে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১০০ এর বেশি দেশ এই সংগঠনকে ফিলিস্তিনিদের ন্যায়সংগত প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচনা করে ও এর সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ১৯৭৪ সাল থেকে পিএলও জাতিসংঘে পর্যবেক্ষক মর্যাদা ভোগ করছে। ১৯৯১ সালে মাদ্রিদ সম্মেলনের আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল একে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দেখত। ১৯৯৩ সালে ইসরায়েলের অস্তিত্ব মেনে নেয় এবং জাতিসংঘের ২৪২ ও ৩৩৮ নং প্রস্তাব স্বীকার করে নেয় ও সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল সরকারিভাবে পিএলওকে ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধি হিসেবে মেনে নেয়।
বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের একটি এফেলিয়েট বিশ্ববিদ্যালয়। গাজীপুর জেলার বোর্ডবাজারে ১১.৩৯ একর জমির ওপর বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। বিদ্যার্থী তালিকাভুক্তি অনুসারে এটি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। অধিভুক্ত কলেজগুলোতে অধ্যয়ন করে ২৮ লাখেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী।
মার্টিন লুথার (১০ই নভেম্বর ১৪৮৩ - ১৮ই ফেব্রুয়ারি ১৫৪৬) ছিলেন একজন জার্মান ধর্মযাজক এবং ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক। তিনি ষোড়শ শতকে প্রটেস্ট্যান্ট ধর্মবিপ্লবের সূত্রপাত করেন। পাপ করে অর্থের বিনিময়ে বিধাতার শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় - এই মতের তিনি কঠোর বিরোধিতা করেন। লুথার শিক্ষা দেন যে ভাল কাজ করে মুক্তি অর্জন করা যায় না, বরং পাপমুক্তিদাতা হিসেবে যিশু খ্রিষ্টের উপর বিশ্বাস রাখার মাধ্যমে ঈশ্বরের উপহার হিসেবেই তা পাওয়া যায়।
মুঘল বা মোগল সাম্রাজ্য (উর্দু: مغلیہ سلطنت, Mug̱ẖliyah Salṭanat, ফার্সি: گورکانیان, Gūrkāniyān)), ছিল ভারত উপমহাদেশের একটি সাম্রাজ্য। প্রায় দুই শতাব্দী ধরে সাম্রাজ্য পশ্চিমে সিন্ধু অববাহিকার বাইরের প্রান্ত, উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তান এবং উত্তরে কাশ্মীর, পূর্বে বর্তমান আসাম ও বাংলাদেশের উচ্চভূমি এবং দক্ষিণ ভারতের ডেকান মালভূমির উপভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মুঘল সাম্রাজ্য মূলতঃ পারস্য ও মধ্য এশিয়ার ভাষা, শিল্প ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত ছিল।পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইবরাহিম লোদির বিরুদ্ধে বাবরের জয়ের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়। মুঘল সম্রাটরা ছিলেন মধ্য এশিয়ার টার্কো-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত। তারা চাগতাই খান ও তৈমুরের মাধ্যমে চেঙ্গিস খানের বংশধর। ১৫৫৬ সালে আকবরের ক্ষমতারোহণের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের ধ্রূপদী যুগ শুরু হয়। আকবর ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরের শাসনামলে ভারতে অর্থনৈতিক প্রগতি বহুদূর অগ্রসর হয়। আকবর অনেক হিন্দু রাজপুত রাজ্যের সাথে মিত্রতা করেন। কিছু রাজপুত রাজ্য উত্তর পশ্চিম ভারতে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখে কিন্তু আকবর তাদের বশীভূত করতে সক্ষম হন। মুঘল সম্রাটরা মুসলিম ছিলেন তবে জীবনের শেষের দিকে শুধুমাত্র সম্রাট আকবর ও তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর নতুন ধর্ম দীন-ই-ইলাহির অনুসরণ করতেন।মুঘল সাম্রাজ্য কাঠামো, যাইহোক, কখনও কখনও বাবরের নাতি আকবরএর শাসনের তারিখ ১৬০০ থেকে ধরা হয়। এই সাম্রাজ্যিক কাঠামো ১৭২০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়, শেষ প্রধান সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। তার রাজত্বকালে সাম্রাজ্যতার সর্বোচ্চ ভৌগোলিক ব্যাপ্তি অর্জন করে। পরবর্তীতে হ্রাস, বিশেষ করে ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসনামলে, পুরাতন দিল্লি এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে, ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ রাজ দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যায়।
আসসালামু আলাইকুম (পূর্ণরূপ: আস-সালামু আলাইকুম ওয়া-রাহমাতুল্লাহি ওয়া-বারাকাতু; আরবি: ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ; আপনার/তোমার উপর শান্তি, আল্লাহর দয়া, আল্লাহর কৃপা বর্ষিত হোক) বা সংক্ষেপে সালাম হলো একটি আরবি অভিবাদনবাচক শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে শান্তি, প্রশান্তি কল্যাণ, দোয়া, আরাম, আনন্দ, তৃপ্তি। সালাম একটি সম্মানজনক, অভ্যর্থনামূলক, অভিনন্দনজ্ঞাপক, শান্তিময় উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন পরিপূর্ণ ইসলামী অভিবাদন।
আয়নীকরণ শক্তি (ইংরেজি: Ionization energy) বা আয়নীকরণ বিভব হলো গ্যাসীয় অবস্থায় কোনো মৌলের এক মোল বিচ্ছিন্ন পরমাণু থেকে একটি করে ইলেকট্রন অসীম দূরত্বে অপসারণ করে এক মোল ধনাত্মক আয়নে পরিণত করতে যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয়, তার পরিমাণ।। X + শক্তি → X+ + e-অথবা: গ্যাসীয় অবস্থায় এক মোল গ্যাসীয় পরমাণু থেকে এক মোল ইলেকট্রন অপসারণ করে এক মোল ধনাত্মক আয়নে পরিণত করতে যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয়, তাকে ঐ মৌলের আয়নিকরণ শক্তি বলে। আয়নীকরণ বিভব শব্দটি অতীতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে ব্যবহৃত হয় না। আয়নিকরণ বিভব এর একক হল kilojoules পার মোল (kJ/mol) or kilocalories পার মোল (kcal/mol).
করোনাভাইরাস বলতে ভাইরাসের একটি শ্রেণিকে বোঝায় যেগুলি স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদেরকে আক্রান্ত করে। মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শ্বাসনালীর সংক্রমণ ঘটায়। এই সংক্রমণের লক্ষণ মৃদু হতে পারে, অনেকসময় যা সাধারণ সর্দিকাশির ন্যায় মনে হয় (এছাড়া অন্য কিছুও হতে পারে, যেমন রাইনোভাইরাস), কিছু ক্ষেত্রে তা অন্যান্য মারাত্মক ভাইরাসের জন্য হয়ে থাকে, যেমন সার্স, মার্স এবং কোভিড-১৯। অন্যান্য প্রজাতিতে এই লক্ষণের তারতম্য দেখা যায়। যেমন মুরগির মধ্যে এটা ঊর্ধ্ব শ্বাসনালী সংক্রমণ ঘটায়, আবার গরু ও শূকরে এটি ডায়রিয়া সৃষ্টি করে। মানবদেহে সৃষ্ট করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়ানোর মত কোনো টিকা বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ আজও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে বৃটেন একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ - ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮) ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় এবং বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। তার অনেক উপন্যাস ভারতবর্ষের প্রধান ভাষাগুলোতে অনূদিত হয়েছে। বড়দিদি (১৯১৩), পল্লীসমাজ (১৯১৬), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), শ্রীকান্ত (চারখণ্ডে ১৯১৭-১৯৩৩), দত্তা (১৯১৮), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী (১৯২৬), পরিণীতা (১৯১৪), শেষ প্রশ্ন (১৯৩১) ইত্যাদি শরৎচন্দ্র রচিত বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তার দরুন তিনি 'অপরাজেয় কথাশিল্পী' নামে খ্যাত। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক পান৷ এছাড়াও, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে
দশাবতার বিষ্ণু দশ প্রধান অবতার। বৈষ্ণব দর্শনে, কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে মর্ত্যে অবতীর্ণ পরম সত্ত্বাকে অবতার (সংস্কৃত: अवतार, avatāra) নামে অভিহিত করা হয়। বিষ্ণুর (বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে কৃষ্ণের) দশ মুখ্য অবতারের সমষ্টিগত নামই দশাবতার। এই দশাবতারের কথা জানা যায় গরুড় পুরাণ (১।৮৬।১০-১১) থেকে। এই দশ অবতার মানব সমাজে তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তির ভিত্তিতে সর্বাপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হন।
ইসলামি যৌন আইনশাস্ত্র বা যৌনতা বিষয়ক ফিকহ হল ইসলামি পারিবারিক আইনশাস্ত্র, ইসলামি পরিচ্ছন্নতা বিধিমালা ও ইসলামি ফৌজদারি বিধিমালার একটি অংশ, এর মাধ্যমে সেসব ইসলামি অনুশাসন বোঝায় যার দ্বারা মুসলিমদের যৌনতা ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রিত হবে। এইসব অনুশাসন বহির্ভূত সকল প্রকার যৌনকর্ম ইসলামি মতে নিষিদ্ধ বা হারাম। মানব জীবনের যৌন চাহিদা ইসলাম কর্তৃক স্বীকৃত কিন্তু যৌনাচারের পন্থা সম্পর্কে রয়েছে অনুশাসন।মানুষের বিবিধ যৌনাচার অনুমোদনযোগ্য কিনা তা দুটি প্রপঞ্চের ওপর নির্ভর করে। প্রথমত: যৌনাচারের মূল উদ্দেশ্য বংশবৃদ্ধি এবং দ্বিতীয়ত: নারী ও পুরুষ কেবল রীতিসিদ্ধ উপায়ে বিয়ের মাধ্যমে যৌনাচারের প্রাধিকার অর্জন করে। ইসলামে যৌনতা বিষয়ক নিয়মাবলি ইসলামি প্রধান ধর্মগ্রন্থ কুরআন, ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সঃ)-এর বাণী ও কর্ম যা হাদীস নামে পরিচিত, ইসলামিক নেতৃবৃন্দ কর্তৃক প্রদত্ত ফতোয়া প্রভৃতিতে ব্যাপক ও বিস্তারিত ভাবে বলা হয়েছে, যা নারী ও পুরুষের মাঝে নিয়মতান্ত্রিক যৌন সম্পর্কের মধ্যে সীমিত।। যদিও অধিকাংশ ঐতিহ্য সন্ন্যাসদশা ও কৌমার্যকে নিরুৎসাহিত করে থাকে, তবু সকল ঐতিহ্যেই লিঙ্গসমূহের মধ্যে যে কোন সম্পর্কের ক্ষেত্রে কঠোর সতীত্ব ও শালীনতাকে উৎসাহিত করে, যা এই বিষয়টিকে তুলে ধরে যে, তাদের ইসলাম স্বীকৃত জৈবিক সম্পর্ক জীবনের জন্য একটি পরিবেষ্টনীস্বরূপ এবং যৌন কর্মকাণ্ড থেকেও অনেক বিস্তৃত, যা বিবাহের জন্য ব্যাপকভাবে সংরক্ষিত। বিবাহের বাইরে লিঙ্গ পার্থক্যকরণ ও শালীনতার এই চেতনা ইসলামের বর্তমান পরিচিত বৈশিষ্ট্যের মাঝে দেখতে পাওয়া যায়, যেমন ইসলামি পোশাকের ব্যাখ্যা এবং লিঙ্গ বিভাজনের মূল্যবোধসমুহ।
সুভাষচন্দ্র বসু উচ্চারণ (২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ - ?) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র যিনি এই সংগ্রামে নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত। ২০২১ সালে ভারত সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় পরাক্রম দিবস বলে ঘোষনা করেন।
বাংলা শব্দভাণ্ডার হল বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডার যার মূল এবং আদি উৎস পালি এবং প্রাকৃত ভাষা দ্বারা। বাংলা ভাষাতে পরের কালে ফার্সি, আরবি, সংস্কৃত এবং বিভিন্ন ভাষা থেকে ঋণশব্দ এবং পুনঃঋণশব্দ গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন ভাষার সংস্পর্শে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে থেকে তাই বাংলার শব্দভাণ্ডার বর্তমানে অসংখ্য শব্দসমৃদ্ধ ও বিচিত্র।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America; উচ্চারণ: ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি স্বশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি "আমেরিকা" নামেও পরিচিত। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি রাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি অঞ্চলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত; আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যটি মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। এছাড়াও ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে পাাঁচটি অঞ্চল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
পৃথিবী সূর্য থেকে দূরত্ব অনুযায়ী তৃতীয়, সর্বাপেক্ষা অধিক ঘনত্বযুক্ত এবং সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে পঞ্চম বৃহত্তম গ্রহ। সূর্য হতে এটির দূরত্ব প্রায় ১৫ কোটি কি.মি।এটি সৌরজগতের চারটি কঠিন গ্রহের অন্যতম। পৃথিবীর অপর নাম "বিশ্ব" বা "নীলগ্রহ"। ইংরেজি ভাষায় পরিচিত আর্থ (Earth) নামে, গ্রিক ভাষায় পরিচিত গাইয়া (Γαῖα) নামে, লাতিন ভাষায় এই গ্রহের নাম "টেরা (Terra)।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্য করার জন্য ষোড়শ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত একটি জয়েন্ট-স্টক কোম্পানি। এর সরকারি নাম "ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি"। ১৬০০ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাণী প্রথম এলিজাবেথ এই কোম্পানিকে ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্য করার রাজকীয় সনদ প্রদান করেন। এ সনদ কোম্পানিটিকে ২১ বছর পর্যন্ত পূর্ব ভারতে একচেটিয়া বাণিজ্য করার প্রাধিকার অর্পণ করেছিল। তবে পরবর্তীকালে এ কোম্পানি ভারতের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে এবং ১৮৫৮ সালে বিলুপ্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করে। অত:পর ব্রিটিশ সরকার সরাসরি ভারত শাসন শুরু করে।