The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
রাখীবন্ধন উৎসব (হিন্দি: रक्षाबंधन, সিলেটি: ꠞꠣꠈꠤꠛꠘ꠆ꠗꠘ, পাঞ্জাবি: ਰਕਸ਼ਾਬੰਧਨ, উর্দু: رکشا بندھن the bond of protection), বা রাখী (হিন্দি: राखी, পাঞ্জাবি: ਰਾਖੀ, উর্দু: راکھی) বা রাখীপূর্ণিমা ভারতের একটি উৎসব। এই উৎসব ভাই ও বোনের মধ্যে প্রীতিবন্ধনের উৎসব। হিন্দু, জৈন ও শিখরা এই উৎসব পালন করে। এই দিন দিদি বা বোনেরা তাদের ভাই বা দাদার হাতে রাখী নামে একটি পবিত্র সুতো বেঁধে দেয়। এই রাখীটি ভাই বা দাদার প্রতি দিদি বা বোনের ভালবাসা ও ভাইয়ের মঙ্গলকামনা এবং দিদি বা বোনকে আজীবন রক্ষা করার ভাই বা দাদার শপথের প্রতীক। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব উদযাপিত হয়। চিতোরের বিধবা রানি কর্ণবতী মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের সাহায্য প্রার্থনা করে একটি রাখী পাঠিয়েছিলেন। এর পর থেকে এই উৎসবের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
জলবিদ্যুৎ পড়ন্ত বা স্রোত আছে এমন নদীর পানির চাপকে ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। এটি নবায়নযোগ্য শক্তিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। একবার যদি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা সম্ভব হয়, খুব কম শক্তি ব্যয়ের মাধ্যমে এটি চালানো যায়। এবং এটা জীবাশ্ম জ্বালানী, যেমন: তেল, গ্যাস, কয়লা ইত্যাদিচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তুলনায় খুব কম পরিমাণে গ্রীনহাউস গ্যাস কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন করে। পানিবিদ্যুৎ পৃথিবীর মোট বিদ্যুতের ২০% এবং নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ৮৮%।
আফগানিস্তান (পশতু/দারি: افغانستان, Afġānestān [avɣɒnesˈtɒn]) হলো পাহাড়ি স্থলবেষ্টিত একটি দেশ। এটি ইরান, পাকিস্তান, চীন, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, ও তুর্কমেনিস্তানের মধ্যস্থলে একটি ভূ-বেষ্টিত মালভূমির উপর অবস্থিত। আফগানিস্তানকে অনেক সময় দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের অংশ হিসেবেও গণ্য করা হয়। আফগানিস্তানের পূর্বে ও দক্ষিণে পাকিস্তান , পশ্চিমে ইরান, উত্তরে তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তান এবং উত্তর-পূর্বে গণচীন। আফগানিস্তান শব্দটির অর্থ "আফগান (তথা পশতুন) জাতির দেশ"। আফগানিস্তান একটি রুক্ষ এলাকা যার অধিকাংশ এলাকা পর্বত ও মরুভূমি আবৃত।শুধু পার্বত্য উপত্যকা এবং উত্তরের সমভূমিতে গাছপালা দেখা যায়। এখানকার গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়া গরম ও শুষ্ক এবং শীতকালে প্রচণ্ড শীত পড়ে। কাবুল দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী।
তালেবান বা তালিবান (পশতু: طالبان, অনুবাদ 'ছাত্র') আফগানিস্তানের একটি দেওবন্দি ইসলামি আন্দোলন এবং সামরিক সংগঠন। ২০১৬ সাল থেকে মৌলভি হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা তালেবান নেতা। ২০২১ সালের হিসাবে তালেবানের আনুমানিক ২,০০,০০০ যোদ্ধা রয়েছে।১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ অঞ্চল তালেবানের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং তারা সেখানে ইসলামি আইন (শরিয়ত) প্রণয়ন করেছিলো। ১৯৯৪ সালে আফগান গৃহযুদ্ধের অন্যতম প্রধান দল হিসেবে তালেবানের আবির্ভাব ঘটে। এই দলটি মূলত পূর্ব ও দক্ষিণ আফগানিস্তানের পশতুন এলাকার ছাত্রদের (তালিব) নিয়ে গঠিত হয় যারা ঐতিহ্যবাহী ইসলামি বিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করেছিলো এবং সোভিয়েত–আফগান যুদ্ধের সময় যুদ্ধ করেছিলো। মোহাম্মদ ওমরের নেতৃত্বে, এই আন্দোলন আফগানিস্তানের বেশিরভাগ অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৯৬ সালে আফগানিস্তান ইসলামি আমিরাত প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আফগান রাজধানী কান্দাহারে স্থানান্তরিত হয়। ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর ২০০১ সালের ডিসেম্বরে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আক্রমণের পর ক্ষমতাচ্যুত না হওয়া পর্যন্ত দেশের বেশিরভাগ অংশ তালেবানের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছিলো মাত্র তিনটি দেশ: পাকিস্তান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। পরে এই দলটি আফগানিস্তান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কারজাই প্রশাসন এবং ন্যাটো নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সহায়তা বাহিনীর (আইএসএএফ) বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি বিদ্রোহ আন্দোলন হিসেবে পুনরায় একত্রিত হয়।
প্ৰাচীনযুগে বাংলা নামে কোনো অখণ্ড রাষ্ট্ৰ ছিল না। বাংলার বিভিন্ন অংশ তখন বঙ্গ, পুণ্ড্ৰ, গৌড়, হরিকেল, সমতট, বরেন্দ্ৰ এরকম প্ৰায় ১৬টি জনপদে বিভক্ত ছিল।বাংলার বিভিন্ন অংশে অবস্থিত প্ৰাচীন জনপদগুলোর সীমা ও বিস্তৃতি সঠিকভাবে নির্ণয় করা অসম্ভব। কেননা বিভিন্ন সময়ে এসব জনপদের সীমানা হ্ৰাস অথবা বৃদ্ধি পেয়েছে।বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে প্ৰাচীনতম হলো পুণ্ড্ৰ।
২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশে ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক জনসভায় গ্রেনেড হামলা, যে হামলায় ২৪ জন নিহত হয় এবং তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সহ প্রায় ৩০০ লোক আহত হয়। এই হামলায় নিহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নারী নেত্রী মিসেস আইভি রহমান অন্যতম, যিনি বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভূ-রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মায়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
আন্তর্জাতিক ধ্বনিমূলক বর্ণমালা
আন্তর্জাতিক ধ্বনিমূলক বর্ণমালা (সংক্ষেপে আধ্বব) বা আন্তর্জাতিক ধ্বনিলিপি হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক ধ্বনিভিক্তিক প্রতিবর্ণীকরণ পদ্ধতি যা আন্তর্জাতিক ধ্বনিবিজ্ঞান সংগঠন বিশ্বের সব কথিত ভাষার সব ধ্বনিকে প্রমিতভাবে তুলে ধরার জন্য উনবিংশ শতকের শেষ দিকে সৃষ্টি করেছিল। এই বর্ণমালা ইংরেজিতে International Phonetic Alphabet, সংক্ষেপে IPA (আইপিএ) এবং ফরাসিতে Alphabet Phonétique International, সংক্ষেপে API (আপেই) নামেও সুপরিচিত। অভিধানবিদ, বিদেশী ভাষার শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, ভাষাবিজ্ঞানী, বাগ্চিকিত্সক, গায়ক, অভিনেতা, কৃত্রিম ভাষা নির্মাতা ও অনুবাদকেরা এই বর্ণমালাটি ব্যবহার করে থাকেন।এই বর্ণমালাতে প্রধানতঃ রোমান বর্ণমালার (এবং এর পরিবর্তিত রূপের) ব্যবহার হয়ে থাকে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ - ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
ভূ-অভ্যন্তরে শিলায় পীড়নের জন্য যে শক্তির সঞ্চয় ঘটে, সেই শক্তির হঠাৎ মুক্তি ঘটলে ভূ-পৃষ্ঠ ক্ষণিকের জন্য কেঁপে ওঠে এবং ভূ-ত্বকের কিছু অংশ আন্দোলিত হয়। এই রূপ আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী কম্পনকে ভূমিকম্প বলে। কম্পন-তরঙ্গ থেকে যে শক্তির সৃষ্টি হয়, তা ভূমিকম্পের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এই তরঙ্গ ভূ-গর্ভের কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলে উৎপন্ন হয় এবং উৎসস্থল থেকে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
বাদল সরকার (১৫ জুলাই, ১৯২৫ - ১৩ মে, ২০১১) একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি নাট্যব্যক্তিত্ব। যিনি থার্ড থিয়েটার নামক ভিন্ন ধারার নাটকের প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত। ৭০ দশকের নকশাল আন্দোলনের সময় প্রতিষ্ঠান বিরোধী নাটক রচনার জন্যে তিনি পরিচিত হন, মঞ্চের বাইরে সাধারণ মানুষের ভেতর নাটক'কে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রথম কাজ বাদল সরকারের। তার নিজস্ব নাটক দল শতাব্দী গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে। ভারতে আধুনিক নাট্যকার হিসেবে হাবিব তনভীর, বিজয় তেন্ডুলকর, মোহন রাকেশ এবং গিরিশ কারনাডের পাশাপাশি বাংলায় বাদল সরকারের নাম উচ্চারিত হয়।
২০১৫-এর নেপাল ভূমিকম্প (এছাড়াও হিমালয়ান ভূমিকম্প হিসাবে উল্লেখিত) ৭.৮ বা ৮.১ মাত্রার একটি ভূমিকম্প যা শনিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০১৫ সালে ১১:৫৬ এনএসটি (৬:১২:২৬ ইউটিসি) সময়ে নেপালের লামজংয়ের পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্ব কেন্দ্রস্থল থেকে আনুমানিক ২৯ কিমি (১৮ মা) ব্যাপী এলাকায় ভূপৃষ্ঠের প্রায় ১৫ কিমি (৯.৩ মা) গভীরে সংগঠিত হয়।১৯৩৪-এর নেপাল–বিহার ভূমিকম্পের পর এটি নেপালে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত নেপাল সহ ভারত, চীন ও বাংলাদেশে সর্বমোট ৬৫০০ জনের অধিক মানুষ নিহত হয়েছে জানা যায়। এই ভূমিকম্পে ফলে মাউন্ট এভারেস্টে মৃত্যুসংখ্যা ২০১৪ সালের তুষারধ্বসে মৃত্যুসংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। কাঠমাণ্ডু শহরে অবস্থিত শতাব্দীপ্রাচীন ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানসমূহ ভূমিকম্পের ফলে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০–১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা বঙ্গবন্ধু, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
হিস্পানিওলা দ্বীপের ক্যারিবিয়ান দেশ হাইতির তিবুরন উপদ্বীপে ২০২১ সালের ১৪ই আগস্ট সকাল ৮:২৯:০৯ এডিটি-তে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পটি রাজধানী পর্তোপ্রাঁসের থেকে আনুমানিক ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল; ৮১ এনএমআই) পশ্চিমে পেটিট-ট্রু-ডি-নিপ্পসের কাছে ভূগর্ভের ১০ কিলোমিটার (৬.২ মাইল; ৫.৪ এনএমআই) গভীরে হাইপোসেন্টারের মাধ্যমে আঘাত হানে। শক্তিশালী ভূমিকম্প হাইতিয়ান উপকূলের জন্য সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়, যা কিছুক্ষণ পরেই সুনামির সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ "উচ্চ হতাহতের" ও ব্যাপক বিপর্যয়ের অনুমান করে। বর্তমানে হতাহতের সংখ্যা 1400জন অনুমান করা হয়েছে, এটি বর্তমানে ২০২১ সালের সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্প এবং ২০১৮ সালের সুলাওয়েসি ভূমিকম্পের পর বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বড় প্রানঘাতী ঘটনা।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারতীয় প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
বুদ্ধদেব বসু (৩০ নভেম্বর ১৯০৮ - ১৮ মার্চ ১৯৭৪) একজন বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, গল্পকার, অনুবাদক, সম্পাদক ও সাহিত্য-সমালোচক ছিলেন। বিংশ শতাব্দীর বিশ ও ত্রিশের দশকের নতুন কাব্যরীতির সূচনাকারী অন্যতম কবি হিসেবে তিনি সমাদৃত। তবে সাহিত্য সমালোচনা ও কবিতা পত্রিকার প্রকাশ ও সম্পাদনার জন্য তিনি বিশেষভাবে সম্মাননীয়।
দিল্লী সালতানাত বলতে মধ্যযুগে ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসনকালকে বুঝানো হয়। ১২০৬ থেকে ১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ভারতে রাজত্বকারী একাধিক মুসলিম রাজ্য ও সাম্রাজ্যগুলি “দিল্লী সালতানাত” নামে অভিহিত। এই সময় বিভিন্ন তুর্কি ও আফগান রাজবংশ দিল্লি শাসন করে। এই রাজ্য ও সাম্রাজ্যগুলি হল: মামলুক সুলতান (১২০৬-৯০), খিলজি রাজবংশ (১২৯০-১৩২০), তুঘলক রাজবংশ (১৩২০-১৪১৩), সৈয়দ রাজবংশ (১৪১৩-৫১) এবং লোদি রাজবংশ (১৪৫১-১৫২৬)। এই সালতানাত মঙ্গোলদের( চাগাতাই খানাত থেকে) আক্রমণকে প্রতিহত করার কয়েকটি শক্তির মধ্যে অন্যতম বলে পরিচিত।মুহাম্মদ ঘুরির প্রাক্তন তুর্কি মামলুক দাস কুতুবুদ্দিন আইবেক দিল্লির প্রথম সুলতান ছিলেন এবং তাঁর মামলুক রাজবংশ উত্তর ভারতের বিশাল অঞ্চল জয় করেন। এর পরে, খিলজি রাজবংশ বেশিরভাগ মধ্য ভারতকেও জয় করতে সক্ষম হয়, তবে উভয়ই পুরো ভারত উপমহাদেশকে জয় করতে ব্যর্থ হয়। সালতানাতটি তুঘলক রাজবংশের সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করে এর ভৌগোলিক সীমানার দিক থেকে শীর্ষে পৌঁছে। এর পরে বিজয়নগর সাম্রাজ্য এবং মেওয়ার মতো হিন্দু সাম্রাজ্যের স্বাধীনতা দাবি করার কারণে সালতানাতের পতন ঘটে, এবং শাহী বাংলার মতো নতুন মুসলিম সালতানাতের উদ্ভব ঘটে।দিল্লির সুলতানি আমলে , ভারতীয় সভ্যতার সাথে ইসলামী সভ্যতার মিশ্রণ ঘটেছিল এবং আফ্রো-ইউরেশিয়ার বৃহৎ অংশে বিস্তৃত একটি বিশ্বব্যবস্থা এবং বিস্তৃত আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কগুলির সাথে ভারতীয় উপমহাদেশের যোগাযোগ আরও সংহতকরণ ছিল, যার একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ছিল ভারতীয় সংস্কৃতি এবং সমাজের উপর। তাদের শাসনের সময়টিতে ইন্দো-ইসলামিক স্থাপত্যের প্রাথমিকতম রূপগুলি যান্ত্রিক প্রযুক্তির বৃহত্তর ব্যবহার ভারতের জনসংখ্যা এবং অর্থনীতিতে বৃদ্ধির হার এবং হিন্দি-উর্দু ভাষার উত্থান ব্যাপক ভাবে লক্ষ্য করা যায়। দিল্লী সুলতানি ১৩ ও ১৪ শতকে মঙ্গোল সাম্রাজ্যের সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক আগ্রাসন প্রতিহত জন্য পরিচিত ছিল। ১৫২৬ সালে দিল্লি সালতানাত মুঘল সাম্রাজ্যের কাছে পরাজিত হয়।
কাজী নজরুল ইসলাম (২৪ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬; ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ – ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) রাঢ় বাংলায় জন্ম নেওয়া একজন বাঙালি কবি এবং পরবর্তী কালে বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য এবং তিনি ছিলেন বাঙালি মনীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ – দুই বাংলাতেই তার কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তার কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তার কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা হাতে তার প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তার প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে – কাজেই "বিদ্রোহী কবি", তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উভয় বাংলাতে প্রতি বৎসর উদযাপিত হয়ে থাকে।
মানব পরিবারের সকল সদস্যের জন্য সার্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার যেটা তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। মানুষ এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে। তবে এ চর্চা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারবে না। মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। এ অধিকার একই সাথে সহজাত ও আইনগত অধিকার। স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম দায়িত্ব হল এসব অধিকার রক্ষণাবেক্ষণ করা। যদিও অধিকার বলতে প্রকৃতপক্ষে কি বোঝানো হয় তা এখন পর্যন্ত একটি দর্শনগত বিতর্কের বিষয়। বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের বিষয়টি এখন আরো প্রকটভাবে অনুভূত হচ্ছে, যখন আমরা দেখছি যে, মানুষের অধিকারসমূহ আঞ্চলিক যুদ্ধ, সংঘাত, হানাহানির কারণে বার বার লংঘিত হচ্ছে। প্রথমত একটি পরিবার ও সমাজের কর্তারা তাদের অধিনস্তদের অধিকার রক্ষা করবে। দ্বিতীয়ত রাষ্ট্র এবং তৃতীয়ত আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা পালন করে থাকে।
চণ্ডালিকা হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্ত্তৃক রচিত একটি বাংলা নাটক। এটি ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ১৯৩৮ সালে "চণ্ডালিকা"-র কাহিনী অবলম্বনে একই নামে চন্ডালিকা নৃত্যনাট্যটি রচনা করেন। রাজেন্দ্রলাল মিত্র কর্ত্তৃক সম্পাদিত নেপালী বৌদ্ধ সাহিত্যে শার্দূলকর্ণাবদানের যে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে, তাই থেকে এই নাটকটির গল্পটি গৃহীত।
নবায়নযোগ্য শক্তি বা রিনিউয়েবল এনার্জি হলো এমন শক্তির উৎস যা স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পুনরায় ব্যবহার করা যায় এবং এর ফলে শক্তির উৎসটি নিঃশেষ হয়ে যায় না। বিভিন্ন প্রাকৃতিক উৎস যেমন: সূর্যের আলো ও তাপ, বায়ু প্রবাহ, জলপ্রবাহ, জৈব শক্তি (জৈবভর), ভূ-তাপ, সমুদ্র তরঙ্গ, সমুদ্র-তাপ, জোয়ার-ভাটা, শহুরে আবর্জনা, হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ইত্যাদি নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। অধিকাংশ দেশ তাদের বিদ্যুৎের চাহিদা মেটাতে নবায়যোগ্য শক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। নবায়নযোগ্য শক্তি সমূহ পরিবেশ বান্ধব এবং কার্বন নিঃসরণ মুক্ত। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং একটি টেকশই জ্বালানি ব্যবস্থায় পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাপী পরিবেশবাদী আন্দোলনসমূহ নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে উৎসাহ অব্যহত রেখেছে।
সুফিবাদ বা তাসাউফ , (আরবি: الْتَّصَوُّف, ব্যক্তিবাচক বিশেষ্য: صُوفِيّ, সুফি, مُتَصَوِّف মুতাসাউইফ) যাকে বিভিন্নভাবে ইসলামী আধ্যাত্মবাদ, ইসলামের অন্তর্নিহিত রূপ, ইসলামের অন্তর্গত আধ্যাত্মিকতার অদৃশ্য অনুভূতি হিসেবেও সংজ্ঞায়িত করা হয়, তা হল ইসলামে আধ্যাত্মবাদ, যা নির্দিষ্ট মূল্যবোধ, আচার-প্রথা চর্চা, মূলনীতি দ্বারা বিশেষায়িত, যা ইসলামের ইতিহাসের খুব প্রাথমিক দিকে শুরু হয়েছিল, এবং এটি ইসলামের আধ্যাত্মিক চর্চার "প্রধান অভিব্যক্তি ও কেন্দ্রীয় স্বচ্ছতা"কে তুলে ধরে। সুফিবাদের চর্চাকারীদের "সুফি" বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে (আরবি বহুবচন: صُوفِيَّة সুফিয়াহ; صُوفِيُّون সুফিয়ুন; مُتَصَوُّفََة মুতাসায়িফাহ; مُتَصَوُّفُون মুতাসায়িফুন)। ইসলামে তাসাউফের আরেকটি সমার্থক ধারণা হল তাজকিয়া (تزكية)।
বাংলার ইতিহাস বলতে অধুনা বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং আসামের বরাক উপত্যকার বিগত চার সহস্রাব্দের ইতিহাসকে বোঝায়।গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদ এক অর্থে বাংলাকে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের ইতিহাসে বাংলা এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। প্রাচীন রোমান ও গ্রিকদের কাছে এই অঞ্চল গঙ্গারিডাই নামে পরিচিত ছিল। চার সহস্রাব্দ পূর্বে বাংলায় সভ্যতার ক্রমবিকাশ শুরু হয়।
২০১১ টোহুকু ভূমিকম্প ও সুনামি হলো ২০১১ সালের জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৬ মিনিটে হওয়া রিক্টার স্কেলে ৯.০ মাত্রার একটি ভূমিকম্প। ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল টোহুকু থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে। এর ফলে ওই অঞ্চলে ১০ মিটার (৩৩ ফিট) উচ্চতার সুনামিও আঘাত হানে। সরকারিভাবে ১৩,৩৩৩ জনের প্রাণহানির খবর প্রকাশ করা হয়, আহতের সংখ্যা বলা হয় ৪,৮৭৮,২৮২। নিখোঁজ ১৫,১৫০ জন। অন্তত ৩টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে হাইড্রোজেনের পরিমাণ বেড়ে প্ল্যান্টটি গরম হয়ে যাওয়ায় এ বিস্ফোরণ ঘটে।
আলাউদ্দিন-খিলজি(শাসন কালঃ১২৯৬-১৩১৬)তিনি ছিলেন খিলজি বংশের দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে শক্তিশালী শাসক। যিনি দিল্লিতে বসে ভারতীয় উপমহাদেশে খিলজি শাসন পরিচালনা করেছেন। তিনি চেয়েছিলেন ভারতীয় ইতিহাসেও একজন আলেকজেন্ডারের মতো শক্তিশালী কারো কথা উল্লেখ করা থাকুক। তাই তিনি নিজেকে ২য় আলেকজেন্ডার (সিকান্দার-এ-সানি) হিসেবে পরিচিত করার চেষ্টা চালিয়ে যান। তিনি নিজের নামে মুদ্রা প্রচলন করেন এবং জুম্মাহের খুতবার আগের বয়ানে নিজের কৃতিত্ব বর্ণনার আদেশ দেন।
মুহাম্মাদ (আরবি: مُحَمَّد, ২৯ আগস্ট ৫৭০ - ৮ জুন ৬৩২; মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত) হলেন ইসলামের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব এবং ইসলামি বিশ্বাস মতে আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সর্বশেষ নবি (আরবি: النبي আন-নাবিয়্যু), তথা ‘বার্তাবাহক’ (আরবি : الرسول আর-রাসুল), যার উপর ইসলামি প্রধান ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অমুসলিমদের মতে, তিনি ইসলামি জীবনব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল, তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সাফল্য।আনুমানিক ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে (হস্তিবর্ষ) মক্কা নগরীতে জন্ম নেওয়া মুহাম্মাদ মাতৃগর্ভে থাকাকালীন পিতা হারা হন। শৈশবে মাতাকে হারিয়ে এতিম হন এবং প্রথমে তার পিতামহ আবদুল মুত্তালিব ও পরে পিতৃব্য আবু তালিবের নিকট লালিত-পালিত হন। হেরা পর্বতের গুহায় ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুওয়াত লাভ করেন। জিবরাঈল ফেরেশতা এই পর্বতের গুহায় আল্লাহর তরফ থেকে তার নিকট ওহী নিয়ে আসেন। তিন বছর পর ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে ওহি প্রচার করেন, এবং ঘোষণা দেন "আল্লাহ্ এক" ও তার নিকট নিজেকে সঁপে দেওয়ার মধ্যেই জাগতিক কল্যাণ নিহিত, এবং ইসলামের অন্যান্য নবিদের মত তিনিও আল্লাহর প্রেরিত দূত।মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মুহাম্মাদের নিকট আসা ওহিসমূহ কুরআনের আয়াত হিসেবে রয়ে যায় এবং মুসলমানরা এই আয়াতসমূহকে "আল্লাহর বাণী" বলে বিবেচনা করেন। এই কুরআনের উপর ইসলাম ধর্মের মূল নিহিত। কুরআনের পাশাপাশি হাদিস ও সিরাত (জীবনী) থেকে প্রাপ্ত মুহাম্মাদের শিক্ষা ও অনুশীলন (সুন্নাহ) ইসলামি আইন (শরিয়াহ) হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া ইবনে আবি সুফিয়ান আরবি: يزيد بن معاوية بن أبي سفيان (২০ জুলাই ৬৪৭ – ১৪ নভেম্বর ৬৮৩) সাধারণভাবে প্রথম ইয়াজিদ বলে পরিচিত, ছিলেন উমাইয়া খিলাফতের দ্বিতীয় খলিফা। উত্তরাধিকার সূত্রে খিলাফত লাভকারীদের মধ্যে তিনি সর্বপ্রথম খলিফা হন। তার পিতা প্রথম মুয়াবিয়া তাকে খলিফা নিযুক্ত করেন। তিনি ৬৮০ থেকে ৬৮৩ সাল পর্যন্ত তিন বছর শাসন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকাণ্ড সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আবদুর রব সেরনিয়াবাত (১৯২১ - ১৫ আগস্ট ১৯৭৫) বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ এবং প্রাক্তন ভূমি প্রশাসন, ভূমি সংস্কার ও ভূমি রাজস্ব ও বন্যানিয়ন্ত্রণ, পানিসম্পদ ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপা। তিনি শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের সময়ে নিহত হন।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) উনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তাঁর। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
ভারতে নারীবাদ হল ভারতের নারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা ও রক্ষার আন্দোলন। এই ধারণাগুলিকে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রেও এই আন্দোলনের অংশীদারেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকেন। এটি ভারত রাষ্ট্রের মধ্যে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। অন্যান্য দেশের নারীবাদী আন্দোলনের মত ভারতেও এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্যের মধ্যে আছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা অর্জন: সমান পারিশ্রমিকে কাজ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় সমানাধিকার এবং রাজনীতিতে সমানাধিকার। ভারতীয় নারীবাদীরা ভারতের নির্দিষ্ট পিতৃতান্ত্রিক সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে কিছু স্বতন্ত্র আন্দোলনও পরিচালনা করেছেন, যেমন সতীদাহ প্রথা রদ ও উত্তরাধিকার আইনের প্রতিষ্ঠা।
মুহাম্মদ জুনায়েদ (যিনি জুনায়েদ বাবুনগরী নামে অধিক পরিচিত) (৮ অক্টোবর ১৯৫৩ – ১৯ আগস্ট ২০২১) ছিলেন একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক, ইসলামি বক্তা ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর, দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব ও শায়খুল হাদিস, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মাসিক মুঈনুল ইসলামের প্রধান সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও তিনি নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার মুতাওয়াল্লী, মাসিক দাওয়াতুল হকের পৃষ্ঠপোষক, ইনসাফ২৪.কম ও কওমিভিশন.কমের প্রধান উপদেষ্টা সহ কয়েকটি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের নেতৃস্থানীয় পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার অনুসারীরা তাকে ‘মজলুম জননেতা’, ‘কায়েদে মিল্লাত’, ‘আপোষহীন সিপাহসালার’ ইত্যাদি উপাধিতে ডেকে থাকে। তিনি পাকিস্তানের বিখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব ইউসুফ বিন্নুরীর শিষ্য। মুসলিম নেতা হিসেবে তিনি দেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়। তিনি ২০১৩ সালের হেফাজত আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে কারাবরণ করেছিলেন।
রাজস্থান (রাজস্থানী ও হিন্দি: राजस्थान, উচ্চারিত [raːdʒəsˈtʰaːn] (শুনুন)) আয়তনের বিচারে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের বৃহত্তম রাজ্য। শতদ্রু-সিন্ধু নদী উপত্যকা তথা ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর প্রসারিত থর মরুভূমি এই রাজ্যের অধিকাংশ অংশ জুড়ে রয়েছে। রাজ্যের উত্তর পশ্চিম সীমায় পাকিস্তান রাষ্ট্র, দক্ষিণ-পশ্চিমে গুজরাট রাজ্য, দক্ষিণ-পূর্বে মধ্যপ্রদেশ, উত্তর-পূর্বে উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা এবং উত্তরে পাঞ্জাব রাজ্য অবস্থিত।
শম্ভু মিত্র (২২ আগস্ট ১৯১৫ – ১৯ মে ১৯৯৭) বাংলা তথা ভারতীয় নাট্যজগতের এক কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব, স্বনামধন্য আবৃত্তিশিল্পী ও চলচ্চিত্র অভিনেতা ছিলেন। ১৯৩৯ সালে বাণিজ্যিক নাট্যমঞ্চে যোগ দেন। পরে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সদস্য হন। ১৯৪৮ সালে মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গড়ে তোলেন নাট্যসংস্থা বহুরূপী। ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বহুরূপীর প্রযোজনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সফোক্লিস, হেনরিক ইবসেন, তুলসী লাহিড়ী এবং অন্যান্য বিশিষ্ট নাট্যকারের রচনা তাঁর পরিচালনায় মঞ্চস্থ হয়। শম্ভু মিত্রের স্ত্রী তৃপ্তি মিত্র ও কন্যা শাঁওলী মিত্রও স্বনামধন্য মঞ্চাভিনেত্রী। শাঁওলি মিত্রের নাট্যসংস্থা পঞ্চম বৈদিকের সঙ্গে আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন শম্ভু মিত্র। তাঁর পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য নাটকগুলি হল নবান্ন, দশচক্র, রক্তকরবী, রাজা অয়দিপাউস ইত্যাদি। তাঁর রচিত নাটকের মধ্যে চাঁদ বণিকের পালা সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য। ১৯৭৬ সালে নাটক ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তাঁকে ম্যাগসেসে পুরস্কার ও ভারত সরকারের পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করা হয়।
অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত (৬ অক্টোবর ১৯৩৩ — ১৭ নভেম্বর ২০২০) একজন বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও চিন্তাশীল প্রাবন্ধিক। রচনার প্রাচুর্য এবং বৈচিত্র্যে,মনীষা এবং সংবেদনশীলতায় তিনি বাংলাসাহিত্যের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। তিনি ২০টিরও বেশি কবিতার বই লিখেছেন, বাংলা এবং সাঁওতালি কবিতা ও নাটক ইংরেজি এবং জার্মান ভাষায় অনুবাদ করেছেন, এবং জার্মান ও ফরাসি সাহিত্য থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন। তিনি বেশ কয়েকটি বই প্রবন্ধের প্রকাশ করেছেন। তাঁর স্বতন্ত্র গদ্যশৈলীর জন্য তিনি সুপরিচিত।
বায়োমাস হল উদ্ভিদ বা প্রাণী উপাদান যা শক্তি উৎপাদনের (বিদ্যুৎ বা তাপ) জন্য ব্যবহৃত হয়। আবার বিভিন্ন শিল্পে এই পণ্যাদির কাঁচা পদার্থ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে উত্থিত শক্তির ফসল (উদাহরণস্বরূপ মিসকান্থাস, সুইচগ্রাস ) কাঠ বা বন থেকে পাওয়া অবশিষ্টাংশ, ফসলের অবশিষ্ঠ অঙ্গশ (গমের খড়, বিগাস), উদ্যান (উদ্যানে থাকা বর্জ্য), খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ (কর্ন শাঁস), পশুর বর্জ্য (সার সমৃদ্ধ নাইট্রোজেন এবং ফসফরাস) বা নিকাশী গাছ যা মানুষের দ্বারা নষ্ট করা হয়েছে । পোড়া উদ্ভিদ উদ্ভূত বায়োমাস CO 2 প্রদান করে । তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের আইনি কাঠামোতে এটি এখনো পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। কারণ CO2 পুনঃসংশ্লিষ্ট চক্রের কারণে তা নতুন ফসলে পরিণত হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে উদ্ভিদ বায়ুমণ্ডলে এবং গাছপালায় CO2 ফিরিয়ে দেয় যার পুনর্ব্যবহার হয় এমনকি CO2 পরিবেশে নেতিবাচক কারণ হতে পারে। কারণ প্রতিটি চক্রের সময় CO2 এর অপেক্ষাকৃত বড় অংশ মাটিতে স্থানান্তরিত হয়।
২০০৪-এর ভারত মহাসাগরে ভূমিকম্প ও সুনামি
২০০৪ ভারত মহাসাগরে ভূমিকম্প ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা উপকূলে ০০:৫৮:৫৩ ইউটিসি, ২৬ ডিসেম্বর ঘটে। ভূমিকম্পটি উপকেন্দের সাথে ঘটে।এর প্রভাব পরিমাপ করা হয় ৯.১ থেকে ৯.৩ এর মাত্রায় যা IX এর সর্বোচ্চ মার্কেলি তীব্রতা ছিল।ভারতীয় প্লেট বার্মা প্লেট দ্বারা যখন বিভাজিত হয় তখন ভারতীয় মহাসাগরের সীমান্ত বর্তি বহির্দেশের সমভূমির মধ্য দিয়ে বিধ্বস্ত সুনামির একটি ধারাবাহিকতা সৃষ্টি করে যার ফলে সমুদ্রতলে মেগাথ্রাস্ট ভূমিকম্প ঘটে। এর ফলে ১৪টি দেশের ২,৩০,০০০ থেকে ২,৮০,০০০ জন মানুষ মারা যায় এবং উপকূলিয় অঞ্চল ৩০ মিটার (১০০ ফু) ঢেউয়ে প্লাবীত হয়। এটি লিপিবদ্ধ করা ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে একটি। ইন্দোনেশিয়াকে কঠিনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নত করা হয়,এর পর শ্রীলঙ্কা, ভারত ও থাইল্যান্ড কে পর্যায় ক্রমে ধরা হয়।
কাপ্তাই বাঁধ বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত ও চট্টগ্রাম থেকে ৬৫ কিলোমিটার (৪০ মাইল) উজানে কর্ণফুলি নদীর উপর নির্মিত একটি বাঁধ। কাপ্তাই হ্রদ নামে পরিচিত এটির একটি কৃত্রিম জলাধার রয়েছে যার পানি ধারণক্ষমতা ৫২,৫১,০০০ একর (২১,২৫,০০০ হেক্টর)। বাঁধ ও হ্রদটি নির্মাণের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা। ১৯৬২ খ্রীস্টাব্দে এটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। বাঁধের সঞ্চিত পানি ব্যবহার করে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। ১৯৬২ ও ১৯৮৮ সালের মধ্যে এখানে সর্বমোট ২৩০ মেগাওয়াট (৩,১০,০০০ অশ্বশক্তি) বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর বসানো হয়। এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম বাঁধ ও একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।এছাড়া এখানে ‘কাপ্তাই ৭.৪ মেগাওয়াট সোলার পিডি গ্রিড কানেকটেড বিদ্যুৎকেন্দ্র' নামে দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়। পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে বাঁধের পাশে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এই সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের অবস্থান।
রিং আইডি (ইংরেজি: RingID) কানাডার মন্ট্রিয়েল সিটিতে অবস্থিত ‘রিং ইনকর্পোরেশন’ দ্বারা পরিচালিত একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আইরিন ইসলাম ও শরিফ ইসলামের যৌথ উদ্যোগে যার যাত্রা শুরু। ব্যবহারকরীগণ তাদের আইডি ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন। রিং আইডি এমন একটি প্লাটফর্ম, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী বিনামূল্যে কল, মেসেজ, স্টিকার, গোপন চ্যাট (সিক্রেট চ্যাট)সহ নানা সেবা পান।রিং আইডি ডটকম অ্যাপটি ওয়েব, ডেক্সটপ, উইন্ডোজ, অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোনেও ব্যবহার করার উপযুক্ত।২০১৫ সালের জুলাইয়ে রিং আইডি প্রথম প্রকাশ হয়। এটির সিক্রেট চ্যাট বৈশিষ্ট্যটি ব্যবহারকারীদের নিকট সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পায়। এতে গোপন চ্যাটে তার বার্তা কতক্ষণ প্রদর্শিত হবে তা নির্ধারণ করা যায় এবং নির্দিষ্ট সময় পর প্রেরকের বার্তা অদৃশ্য হয়ে যায়।রিং আইডিতে ব্যবহারকারী সময় নির্ধারন করে গোপন ছবি পাঠাতে পারেন। যা নির্দিষ্ট সময় পর অদৃশ্য হয়ে যায়। এছাড়াও গোপন অডিও এবং ভিডিও পাঠানো যায়, যা পাঠক শুধুমাত্র একবার দেখতে পারবেন। ব্যবহারকারীরা সরাসরি চ্যাট বন্ধ করে দিতে পারবেন। এবং পরে একই চ্যাট উইন্ডোতে স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে যেতে পারবেন।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ,দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান ইতিমধ্যে বসানো সম্পন্ন হয়েছে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু। পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।
শামসুন্নাহার স্মৃতি (জন্ম ২৪ অক্টোবর ১৯৯২), যিনি পরীমনি নামে অধিক পরিচিত, একজন বাংলাদেশী মডেল ও অভিনেত্রী। ২০১৫ সালে ভালোবাসা সীমাহীন চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার বড় পর্দায় অভিষেক হয়। রানা প্লাজা (২০১৫) ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তিনি আলোচনায় আসেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল প্রণয়ধর্মী আরো ভালোবাসবো তোমায়, লোককাহিনী নির্ভর মহুয়া সুন্দরী, এবং অ্যাকশনধর্মী রক্ত ।
প্যারিস বা পারি (ফরাসি: Paris [paʁi] (শুনুন) পারি) ফ্রান্সের রাজধানী। শহরটি উত্তর ফ্রান্সে ইল-দ্য-ফ্রঁস অঞ্চলের প্রাণকেন্দ্রে সেন নদীর তীরে অবস্থিত। প্রশাসনিক সীমানার ভেতরে প্যারিসের প্রাক্কলিত জনসংখ্যা ২,২১১,১৯৭। প্রশাসনিক সীমানা ছাড়িয়ে প্যারিসকে কেন্দ্র করে অবিচ্ছিন্নভাবে একটি সু-বৃহৎ নগর এলাকা গড়ে উঠেছে, যা প্যারিস "নগর এলাকা" (unité urbaine উ্যনিতে উ্যর্বেন) নামে পরিচিত; এই নগর এলাকায় প্রায় এক কোটি লোকের বসবাস।। এই নগর এলাকা ও তার আশেপাশের প্যারিস-কেন্দ্রিক উপ-শহরগুলি মিলে প্যারিস এয়ার উ্যর্বেন বা প্যারিস মেট্রোপলিটান এলাকা গঠন করেছে, যার জনসংখ্যা ১ কোটি ২০ লক্ষ।। ইউরোপের এ জাতীয় মেট্রোপলিটান এলাকাগুলির মধ্যে এটি অন্যতম বৃহৎ একটি এলাকা।।
ইউটিউব (ইংরেজি:Youtube) হলো সান ব্রুনো, ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক একটি মার্কিন অনলাইন ভিডিও-শেয়ারিং সাইট যা পেপ্যালের তিন প্রাক্তন কর্মচারী—চাড হারলি, স্টিভ চেন, এবং জাওয়েদ করিম—২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ করেন। ২০০৬ সালের অক্টোবরে, গুগল সাইটটিকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করে নেয়। ইউটিউব বর্তমানে গুগলের অন্যতম অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
কলকাতা বা কোলকাতা ([kolkata] (শুনুন) ইংরেজি: Kolkata; আদি নাম: কলিকাতা; পুরনো ইংরেজি নাম: Calcutta) হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ায় কলকাতা ৭ম বৃহৎ অর্থনীতির শহর । কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। কলকাতা শহরের অর্থনীতি আর চট্টগ্রাম শহরের অর্থনীতি প্রায় সমান। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক)৩০ থেকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বই ও নতুন দিল্লির ঠিক পরেই। কলকাতা দক্ষিণ এশিয়ায় মুম্বাই,ঢাকা,দিল্লি,চেন্নাই,করাচী, চট্টগ্রাম,এর পর ৭ম বৃহৎ অর্থনীতির শহর। সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।
সুলতান ফিরোজ শাহ তুগলক (ফার্সি: فیروز شاہ تغلق, হিন্দি: फ़िरोज़ शाह तुग़लक़; জন্ম: ১৩০৯- মৃত্যু: ২০শে সেপ্টেম্বর ১৩৮৮) তুগলক রাজবংশের একজন শাসক যিনি মোহাম্মদ বিন তুগলক মৃত্যুর পর ১৩৫১ সালে দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং ১৩৮৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকেন। তার মা ছিলেন দীপালপূরের একজন হিন্দু রাজকন্যা এবং পিতার নাম ছিলো রজব যিনি গিয়াসউদ্দিন তুগলকের ছোট ভাই এবং দীপালপুরের সিপাহসাহলার ছিলেন। সুলতান মুহাম্মদ বিন তুগলক অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে ১৩৫১ সালে তিনি ক্ষমতায় আসীন হন।ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর তার সাম্রাজ্যে অস্থিরতা ছড়িয়ে পরে তাই মোহাম্মদ বিন তুগলকের চেয়ে তার সাম্রাজ্য অনেকটাই ছোট ছিল। তার রাজত্বকালে তিনি বাংলাকে আপাতঃ স্বাধীনতা দিতে বাধ্য হন।
মদিনার সনদ (আরবি: صحيفة المدينة, সাহিফাত আল-মাদিনাহ; or: ميثاق المدينة, মীছাক্ক আল-মাদিনাহ) হলো ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে (অথবা ১লা হিজরি সালে) মক্কা থেকে মদিনায় গমনের (হিজরত) পর ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক প্রণয়নকৃত শান্তিস্থাপনের একটি প্রাথমিক সংবিধান। এটি মদিনার সংবিধান (دستور المدينة, দাস্তুর আল-মাদিনাহ) নামেও পরিচিত।
অর্থনীতির ভাষায় চাহিদা এবং যোগান বলতে কোন একটি পণ্যের বা সেবার ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে বিদ্যমান বাজার সম্পর্ক বোঝায়। বাজারে কোন পণ্যের দাম এবং সরবরাহ কী-রূপ হবে তা চাহিদা ও যোগানের মধ্যে বিরাজমান সম্পর্ক দ্বারাই নির্ধারিত হয়। ব্যষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে এটি একটি মৌলিক সম্পর্ক এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাখ্যার পাশাপাশি নতুন নতুন তত্ত্ব তৈরির ক্ষেত্রেও এটি প্রায় সর্বদা ব্যবহৃত হয়। আন্টোনিও অগাস্টিন কর্নো এটি সর্বপ্রথম বর্ণনা করেন এবং আলফ্রেড মার্শাল এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। এই মডেল এর মতে একটি মুক্ত প্রতিযোগিতামুলক বাজারে পণ্যের প্রকৃত বিক্রয় মূল্যই ভোক্তার চাহিদা এবং বিক্রেতার সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে এবং একটি সাম্যাবস্থা প্রতিষ্ঠা করে।
মহারাজ গণেশনারায়ণ রায়ভাদুড়ি (পঞ্চদশ শতাব্দী) (শাসনকাল ১৪১৫) ছিলেন বাংলার একজন হিন্দু শাসক। তিনি বাংলার ইলিয়াস শাহি রাজবংশকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় এসে সমগ্র বাঙ্গালা জুড়ে স্বাধীন হিন্দু সাম্রাজ্য স্থাপন করেন । তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ ১৪১৫-১৪৩৫ সময়কালে বাংলা শাসন করে। তাঁর পুত্র সুলতান যদুনারায়ণ বা জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ বা জালাল আল-দীন মুহম্মদ শাহের মুদ্রায় তাঁর নাম কানস রাউ বা কানস শাহ বলে উল্লেখ রয়েছে। ইন্দো-পারসীক ইতিহাসবিদরা তাঁকে রাজা কংস বা কানসি বলে উল্লেখ করেছেন। একে সংস্কৃত গণেশ শব্দের ভুল আরবি বানান বলে মনে করা হয়। আধুনিক কিছু পণ্ডিত তাঁকে ও দনুজমর্দন দেবকে এক বলে মনে করলেও তা সত্য নয়। উভয়ই ১৫ শতকের গোড়ার দিকে গৌড়কে শাসন করেছিলেন। রাজা গণেশ ছিলেন বরেন্দ্র ব্রাহ্মণ। আর দনুজমর্দন দেব বা রামনাথ দে ছিলেন চন্দ্রদ্বীপের দেব বংশের কায়স্থ শাসক। রাজা গণেশ তার রাজত্বকালে দুর্গাপুজাকে জনপ্রিয় করেছিলেন।
গিরিশচন্দ্র ঘোষ (২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৮৪৪ - ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯১২) ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি সংগীতস্রষ্টা, কবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যপরিচালক ও নট। বাংলা থিয়েটারের স্বর্ণযুগ মূলত তারই অবদান।১৮৭২ সালে তিনিই প্রথম বাংলা পেশাদার নাট্য কোম্পানি ন্যাশানাল থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন। গিরিশচন্দ্র প্রায় চল্লিশটি নাটক রচনা করেছেন এবং ততোধিক সংখ্যক নাটক পরিচালনা করেছেন। জীবনের পরবর্তী ভাগে তিনি রামকৃষ্ণ পরমহংসের এক বিশিষ্ট শিষ্য হয়েছিলেন।
বিশ্বায়ন (globalization) বা ভুবনায়ন বিংশ শতকের শেষভাগে উদ্ভূত এমন একটি আন্তর্জাতিক অবস্থা যাতে পৃথিবীর বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা দৈশিক গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তঃদেশীয় পরিসরে পরিব্যাপ্তি লাভ করেছে। এর ফলে সারা বিশ্ব একটি পরিব্যাপ্ত সমাজে পরিণত হয়েছে এবং অভিন্ন বিনিয়োগ,কর্মসংস্থান,উৎপাদন ও বিপণন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন দেশ যুগপৎ অংশ গ্রহণ করছে।
এই নিবন্ধটি ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পূর্ববর্তী ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস-সম্পর্কিত। ১৯৪৭-পরবর্তী ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ইতিহাস নিবন্ধটি। এছাড়া পাকিস্তান বা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন যথাক্রমে পাকিস্তানের ইতিহাস ও বাংলাদেশের ইতিহাস। দক্ষিণ ভারত, অবিভক্ত বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন যথাক্রমে দক্ষিণ ভারতের ইতিহাস, বাংলার ইতিহাস ও পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস।ভারতের ইতিহাস বলতে মূলত খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দ থেকে খ্রিষ্টীয় বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত, ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন -মধ্যযুগীয় ও প্রাক-আধুনিক কালের ইতিহাসকেই বোঝানো হয়। খ্রিষ্টের জন্মের প্রায় দশ লক্ষ(?) বছর আগে উক্ত ভূখণ্ডে প্রথম মানববসতি গড়ে উঠতে দেখা যায়। তবে ভারতের জ্ঞাত ইতিহাসের সূচনা হয় ৩৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সিন্ধু সভ্যতার উন্মেষ ও প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে। পরবর্তী হরপ্পা যুগের সময়কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দের সূচনায় এই ব্রোঞ্জযুগীয় সভ্যতার পতন ঘটে। সূচনা হয় লৌহ-নির্ভর বৈদিক যুগের। এই যুগেই সমগ্র গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে মহাজনপদ নামে পরিচিত ১৬টি প্রধান প্রধান রাজ্য-তথা-জনবসতির উত্থান ঘটে। এই জনপদগুলির অধিকাংশই রাজতান্ত্রিক হলেও এদের মধ্যে "লিচ্ছিবি" ছিল গণতান্ত্রিক। এই জনপদের মধ্যে অন্যতম ছিল মগধ।খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে মগধে জন্মগ্রহণ করেন মহাবীর ও গৌতম বুদ্ধ; পরবর্তীকালে যাঁরা ভারতের জনসাধারণের মধ্যে শ্রমণ ধর্মদর্শন প্রচার করেন।
যতিচিহ্ন, বিরামচিহ্ন বা ছেদচিহ্ন হল সেইসব সাংকেতিক চিহ্ন যেগুলো লেখ্যমাধ্যমে ব্যবহার করে বাক্যের বিভিন্ন ভাব, যেমন: জিজ্ঞাসা, বিস্ময়, সমাপ্তি ইত্যাদি সার্থকভাবে প্রকাশের মাধ্যমে বাক্যের অর্থ সুস্পষ্ট করা হয়। বাংলা ভাষায় ২০টির মতো যতিচিহ্ন রয়েছে। এদের মধ্যে বাক্যশেষে ব্যবহার্য যতিচিহ্ন ৪টি; বাক্যের ভিতরে ব্যবহার্য ১০টি এবং বাক্যের আগে পরে ব্যবহার্য ৬টি।
মুঘল বা মোগল সাম্রাজ্য (উর্দু: مغلیہ سلطنت, Mug̱ẖliyah Salṭanat, ফার্সি: گورکانیان, Gūrkāniyān)), ছিল ভারত উপমহাদেশের একটি সাম্রাজ্য। প্রায় দুই শতাব্দী ধরে সাম্রাজ্য পশ্চিমে সিন্ধু অববাহিকার বাইরের প্রান্ত, উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তান এবং উত্তরে কাশ্মীর, পূর্বে বর্তমান আসাম ও বাংলাদেশের উচ্চভূমি এবং দক্ষিণ ভারতের ডেকান মালভূমির উপভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মুঘল সাম্রাজ্য মূলতঃ পারস্য ও মধ্য এশিয়ার ভাষা, শিল্প ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত ছিল।পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইবরাহিম লোদির বিরুদ্ধে বাবরের জয়ের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়। মুঘল সম্রাটরা ছিলেন মধ্য এশিয়ার টার্কো-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত। তারা চাগতাই খান ও তৈমুরের মাধ্যমে চেঙ্গিস খানের বংশধর। ১৫৫৬ সালে আকবরের ক্ষমতারোহণের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের ধ্রূপদী যুগ শুরু হয়। আকবর ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরের শাসনামলে ভারতে অর্থনৈতিক প্রগতি বহুদূর অগ্রসর হয়। আকবর অনেক হিন্দু রাজপুত রাজ্যের সাথে মিত্রতা করেন। কিছু রাজপুত রাজ্য উত্তর পশ্চিম ভারতে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখে কিন্তু আকবর তাদের বশীভূত করতে সক্ষম হন। মুঘল সম্রাটরা মুসলিম ছিলেন তবে জীবনের শেষের দিকে শুধুমাত্র সম্রাট আকবর ও তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর নতুন ধর্ম দীন-ই-ইলাহির অনুসরণ করতেন।মুঘল সাম্রাজ্য কাঠামো, যাইহোক, কখনও কখনও বাবরের নাতি আকবরএর শাসনের তারিখ ১৬০০ থেকে ধরা হয়। এই সাম্রাজ্যিক কাঠামো ১৭২০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়, শেষ প্রধান সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। তার রাজত্বকালে সাম্রাজ্যতার সর্বোচ্চ ভৌগোলিক ব্যাপ্তি অর্জন করে। পরবর্তীতে হ্রাস, বিশেষ করে ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসনামলে, পুরাতন দিল্লি এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে, ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ রাজ দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যায়।
মুহাম্মদ ইবনে বতুতা বা ইবনে বতুতা (ফেব্রুয়ারি ২৪, ১৩০৪ - ১৩৬৮ অথবা ১৩৬৯, আরবি: أبو عبد الله محمد بن عبد الله اللواتي الطنجي بن بطوطة, ʾAbū ʿAbd al-Lāh Muḥammad ibn ʿAbd al-Lāh l-Lawātī ṭ-Ṭanǧī ibn Baṭūṭah) সুন্নি মুসলিম পর্যটক, চিন্তাবিদ, বিচারক এবং সুন্নি ইসলামের মালিকি মাজহাবের অনুসারী একজন ধর্মতাত্ত্বিক। তার পূর্ণ নাম হলো আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে বতুতা তিনি ১৭ রজব ৭০৩ হিজরী মোতাবেক ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার দিন মরোক্কোর তাঞ্জিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন। চীন সহ পৃথিবীর অনেক জায়গায় তিনি "শামস-উদ্-দ্বীন" নামেও পরিচিত।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বাংলা: বাংলাদেশ গণসংঘ) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়।
কৃষ্ণদেবরায় ছিলেন বিজয়নগর সাম্রাজ্যের একজন সম্রাট যিনি ১৫০৯-১৫২৯ খ্রিস্টাব্দ অবধি রাজত্ব করেছিলেন। তিনি তুলু রাজবংশের তৃতীয় শাসক ছিলেন এবং তাকে সাম্রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সম্রাট কৃষ্ণদেবরায় কন্নড় রাজ্য রাম রামন ( কন্নড় সাম্রাজ্য অধিপতি), অন্ধ্র ভোজা (তেলেগু সাহিত্যের ভোজরাজ) এবং মুরু রায়রা গান্ডা (ত্রিলোকাধিপতি) ইত্যাদি উপাধি অর্জন করেছিলেন। তিনি বিজাপুর সুলতান, গোলকোন্ডা, বাহমানি সুলতানিয়াত এবং ওড়িশার গজপতিদের পরাজিত করে দাক্ষিণাত্যের একুজন প্রভাবশালী শাসক হয়েছিলেন এবং ভারতের অন্যতম শক্তিশালী হিন্দু সম্রাট ছিলেন। মোগল সম্রাট বাবর যখন উত্তর ভারতের বেশিরভাগ অংশ শাসন করছিলেন, তখন কৃষ্ণদেবরায় ছিলেন দাক্ষিণাত্যের সবচেয়ে শক্তিশালী সম্রাট এবং ভারতীয় উপমহাদেশের নিরিখে একটি বিস্তৃত সাম্রাজ্যের অধিপতি।
আইজ্যাক নিউটনের গতিসূত্রগুলি হল প্রকৃতির তিনটি নিয়ম, যা চিরায়ত বলবিদ্যার ভিত্তি স্বরূপ। এই সূত্রগুলি বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল এবং তার দরুন সৃষ্ট গতির মধ্যে সম্পর্ক বর্ণনা করে। প্রথম সূত্রে বলা হয়েছে যে, বাহ্যিক বল প্রয়োগ না করলে, বস্তু হয় স্থির থাকবে অথবা ধ্রুব বেগে চলতে থাকে। দ্বিতীয় সূত্রে বলা হয়েছে যে, কোনও বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক, অথবা ধ্রুব ভরসম্পন্ন কোনও বস্তুর জন্য নিট বল বস্তুর ভর ও ত্বরণের গুণফলের সমান। তৃতীয় সূত্রে বলা হয়েছে যে, যখন একটি বস্তু দ্বিতীয় কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে, তখন দ্বিতীয় বস্তুটি প্রথম বস্তুর উপর সমান ও বিপরীতমুখী বল প্রয়োগ করে।
ফেইসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত) বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। এর মালিক হলো ফেসবুক ইনক। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
ত্রিপুরা উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি রাজ্য। এই রাজ্যের আয়তন ১০,৪৯১.৬৯ বর্গকিলোমিটার, এবং এটি ভারতের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য । ত্রিপুরা উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমে বাংলাদেশ কর্তৃক বেষ্টিত; রাজ্যের পূর্বভাগে ভারতের অপর দুই রাজ্য আসাম ও মিজোরাম অবস্থিত। এই রাজ্যের রাজধানী আগরতলা। রাজ্যের সরকারি ভাষা বাংলা ও ককবরক। বাংলার সুলতানী আমলে ত্রিপুরা ছিল বাংলার একটি করদ রাজ্য, যা ব্রিটিশ আমলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনতামুলক মিত্র রাজ্য হিসাবেই ছিল । ১৯৪৯ সালের ১৫ অক্টোবর ত্রিপুরা অন্তর্ভুক্তি চুক্তি অনুসারে এই রাজ্য সদ্যস্বাধীনতাপ্রাপ্ত ভারতীয় অধিরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনকালে এই রাজ্য পার্বত্য ত্রিপুরা (Hill Tippera) নামে পরিচিতি ছিল। সাক্ষরতায় এই রাজ্য দেশে তৃতীয় স্থান অধিকারী।
কার্বন ডাই অক্সাইড (রাসায়নিক সংকেত CO2) একটি প্রাকৃতিক রাসায়নিক যৌগ যা দুইটি অক্সিজেন পরমাণু ও একটি কার্বন পরমাণু দিয়ে গঠিত এবং প্রতিটি অক্সিজেন পরমাণু একটি কার্বন পরমাণুর সাথে দ্বি-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে।এটা আদর্শ তাপমাত্রা ও চাপে গ্যাসীয় অবস্থায় বিরাজ করে এবং এই অবস্থায় পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে বিদ্যমান যেখানে ট্রেস গ্যাস হিসাবে এর ঘনত্ব ০.০৩৯%।
শ্রীকৃষ্ণ (সংস্কৃত: श्रीकृष्ण) হলেন হিন্দু ধর্মানুসারীদের আরাধ্য ভগবান। তিনি ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার রূপে খ্যাত। কখনো কখনো তাকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর ('পরম সত্ত্বা') উপাধিতে ভূষিত করা হয় এবং হিন্দুদের অন্যতম ধর্মগ্রন্থ ভগবদ্গীতার প্রবর্তক হিসাবে মান্য করা হয়। তিনি হলেন বৃন্দাবনের অধীশ্বরী শ্রী রাধিকার প্রাণনাথ। হিন্দু বর্ষপঞ্জী অনুসারে প্রতিবছর ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী (জন্মাষ্টমী) তিথিতে তার জন্মোৎসব পালন করা হয়।
রাষ্ট্র হিসাবে আফগানিস্তানের ইতিহাস (ফার্সি: تاریخ افغانستان , তারিখে আফগানিস্তান, পশতু: د افغانستان تاريخ , দা আফগানিস্তান তারিখ) শুরু হয় আহমদ শাহ দুররানির হাত ধরে ১৭৪৭ সালে। এর লিখিত ইতিহাস ৫০০ অব্দে হাখমানেশি সাম্রাজ্য পর্যন্ত পাওয়া যায়। প্রাগৈতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান খনন করে দেখা গেছে উত্তর আফগানিস্তানে প্রায় ৫০,০০০ বছর আগে মনুষ্য বসতি ছিল। ধারণা করা হয় আফগানিস্তানের কৃষি খামার সম্প্রদায় বিশ্বের প্রাচীনতমগুলির একটি। ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের পর মধ্য এশিয়া থেকে এই এলাকায় লোক আসতে শুরু করে। এদের অধিকাংশই ছিল আর্য, যারা ইরান ও ভারতেও বসতি স্থাপন করেছিল। তখন এই এলাকার নাম ছিল আরিয়ানা
মীর জাফর', যাঁর সম্পূর্ণ নাম সৈয়দ মীর জাফর আলী খান (১৬৯১ – ৫ ফেব্রুয়ারি ১৭৬৫), ছিলেন ইংরেজ প্রভাবিত বাংলার একজন নবাব। তার শাসনামল ভারতে কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠার শুরু এবং সমগ্র উপমহাদেশে ব্রিটিশ সম্রাজ্য বিস্তারের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ভূতপূর্ব নবাব সিরাজউদ্দৌলা নদীয়ার পলাশীর কাছে যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হন। মীর জাফর ছিলেন উক্ত যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি। তার অধীনের সৈন্যবাহিনী যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করার জন্য নবাবকে পরাজয় বরণ করতে হয়। ইংরেজদের সাথে মীর জাফরের পূর্বেই এই মর্মে একটি চুক্তি ছিল যে, যুদ্ধে ইংরেজরা জয়ী হলে মীর জাফর হবেন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব। বিনিময়ে মীর জাফর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে পাঁচ লক্ষ পাউন্ড ও কলকাতায় বসবাসকারী ইউরোপীয়দের আড়াই লক্ষ পাউন্ড প্রদান করবেন। ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত, সিংহাসনচ্যুত ও নিহত হলে মীর জাফর বাংলার নবাব হন। কিন্তু ব্রিটিশদের দাবিকৃত বিপুল অর্থের যোগান দিতে তিনি সমর্থ হননি। ১৭৫৮ সালে রবার্ট ক্লাইভ তার প্রতিনিধি খোজা ওয়াজিদের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, মীর জাফর চিনশুরায় ওলন্দাজদের সাথে একটি চুক্তি করেছেন। হুগলি নদীতে ওলন্দাজ জাহাজের আনাগোনা দেখতে পাওয়া যায়। এসব কিছু চুঁচুড়া যুদ্ধের পটভূমি সৃষ্টি করে।
বৌদ্ধধর্ম (সংস্কৃত: बौद्धधर्मः, পালি: বৌদ্ধধম্ম) হল বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ধর্ম যার অনুসারী সংখ্যা ৫২০ মিলিয়নেরও বেশি বা বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৭ শতাংশের অধিক এবং তারা বৌদ্ধ হিসেবে পরিচিত। বৌদ্ধধর্ম বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্য, বিশ্বাস ও আধ্যাত্মিক চর্চাকে ধারণ করে যেগুলো মূলত সিদ্ধার্থ গৌতমের মৌলিক শিক্ষা এবং এর ব্যাখ্যাকৃত দর্শনের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এটি খ্রিষ্টপূর্ব ৬ষ্ঠ ও ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে প্রাচীন ভারতে একটি শ্রমণ ঐতিহ্য হিসেবে উৎপত্তিলাভ করে এবং এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। বৌদ্ধধর্মের তিনটি প্রধান বিদ্যমান শাখা সাধারণত পণ্ডিতদের দ্বারা স্বীকৃত: থেরবাদ, মহাযান ও বজ্রযান।
শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড
শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ছিল বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একদল সদস্য সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত করে এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডি ৩২-এর বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করে। পরে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ পর্যন্ত খন্দকার মোশতাক আহমেদ অঘোষিতভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হন। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের বেসামরিক প্রশাসনকেন্দ্রিক রাজনীতিতে প্রথমবারের মতো সামরিক ক্ষমতার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ ঘটে। হত্যাকাণ্ডটি বাংলাদেশের আদর্শিক পটপরিবর্তন বলে বিবেচিত। বর্তমানে ১৫ ই আগস্ট বাংলাদেশের ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালিত হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America; উচ্চারণ: ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি স্বশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি "আমেরিকা" নামেও পরিচিত। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি রাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি অঞ্চলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত; আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যটি মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। এছাড়াও ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে পাাঁচটি অঞ্চল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
যৌনসঙ্গম (যৌনমিলন, সঙ্গম, মৈথুন, রতিক্রিয়া, রতিমিলন; যৌন সংসর্গ, যৌন সহবাস, সহবাস ইত্যাদি) হচ্ছে একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা দ্বারা মূলত যৌনআনন্দ বা প্রজনন বা উভয় ক্রিয়ার জন্য একজন পুরুষের উত্থিত শিশ্ন একজন নারীর যোনিপথে অনুপ্রবেশ করানো ও সঞ্চালনা করাকে বোঝায়। অন্যান্য অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গমের মধ্যে রয়েছে পায়ুসঙ্গম (লিঙ্গ দ্বারা মলদ্বার অনুপ্রবেশ), মুখমৈথুন, অঙ্গুলিসঞ্চালন (আঙ্গুল দ্বারা যৌন অনুপ্রবেশ), যৌনখেলনা ব্যবহার দ্বারা অনুপ্রবেশ (বন্ধনীযুক্ত কৃত্রিম শিশ্ন)। এই সকল কার্যক্রম মূলত মানবজাতি কর্তৃক দুই বা ততোধিকের মধ্যেকার শারীরিক ও মানসিক অন্তরঙ্গতা জনিত পরিতোষ লাভের জন্য এবং সাধারণত মানব বন্ধনে ভূমিকা রাখতে সম্পাদিত হয়ে থাকে।যৌনসঙ্গম বা অপরাপর যৌনকর্ম কীভাবে সংজ্ঞায়িত হয় তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, যা যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর উপর প্রভাব রাখতে পারে। যদিও যৌনসঙ্গম, নির্দিষ্টভাবে মৈথুন বলতে সাধারণত শিশ্ন-জরায়ুজ অনুপ্রবেশ ও সন্তান উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করা হয়, এর দ্বারা সাধারণভাবে অন্তর্ভেদী মুখমৈথুন ও বিশেষত শিশ্ন-পায়ুজ সঙ্গমকেও নির্দেশ করা হয়। এটি সাধারণত যৌন অনুপ্রবেশকে নির্দেশ করে, যেখানে অননুপ্রবেশকারী যৌনতাকে "বহির্সঙ্গম" নামে নামকরণ করা হয়, কিন্তু অনুপ্রবেশকারী যৌনকর্মকে যৌনসঙ্গম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যৌনতা বা ইংরেজি ভাষায় সেক্স, প্রায়শই যৌনসঙ্গমের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যবহৃত রূপ, যা দ্বারা যে কোন প্রকারের যৌনক্রিয়াকে বোঝানো হতে পারে। যেহেতু এসকল যৌনকর্মের সময়ে মানুষ যৌনবাহিত সংক্রমণের সংস্পর্শের ঝুঁকিতে থাকতে পারে, নিরাপদ যৌনচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও অনাভেদী যৌনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়ে থাকে।বিভিন্ন আইনি বিধিমালা যৌনসঙ্গমমের সামাজিক অনুমতিপ্রদানের জন্য বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতির মাধ্যমে বৈবাহিক রীতির প্রবর্তন, প্রচলন ও সমর্থন করেছে এবং বেশ কিছু যৌনকর্মের বিপরীতে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনকে স্থান দিয়েছে, যেমন বিবাহপূর্ব ব্যভিচার ও বিবাহপরবর্তী পরকীয়া, পায়ুকাম, পশুকাম, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনচর্চা ও অজাচার। ধর্মীয় বিশ্বাসও যৌনসঙ্গমসহ অন্যান্য যৌনাচার বিষয়ক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা পালন করে, যেমন কুমারীত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত, অথবা আইনি বা সরকারি নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়াবলি। বিভিন্ন ধর্মভেদে ও একই ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণীভেদে যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও কিছু বিষয়ে অভিন্নতা রয়েছে, যেমন ব্যভিচারের নিষেধাজ্ঞা।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) হল কুরআনের একটি আয়াত (বাক্য) বা দোয়া, যার বাংলা অর্থ হল "আমরা তো আল্লাহরই এবং আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী"। এটি ইস্তিরজা' (আরবি: اِسْتِرْجَاع, অনুবাদ 'প্রত্যাবর্তন') নামেও পরিচিত। সাধারণত মুসলমানরা তাদের বেদনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে বাক্যটি উচ্চারণ করে, বিশেষ করে যখন একজন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা বা মির্জা মুহম্মদ সিরাজ-উদ-দৌলা (১৭৩২–১৭৫৭) ছিলেন বাংলা-বিহার-ওড়িশার শেষ স্বাধীন নবাব। বাংলা ইতিহাসের এক প্রতিমূর্তি। পলাশীর যুদ্ধে তাঁর পরাজয় ও মৃত্যুর পরই ভারতবর্ষে ১৯০ বছরের ইংরেজ শাসনের সূচনা হয়।সিরাজউদ্দৌলা তাঁর নানা নবাব আলীবর্দী খানের কাছ থেকে ২৩ বছর বয়সে ১৭৫৬ সালে বাংলার নবাবের ক্ষমতা অর্জন করেন। তাঁর সেনাপতি মীরজাফর, রায়দুর্লভ, বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ২৩ জুন ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন। রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসনভার গ্রহণ করে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ (উচ্চারণ: [ʃad̪ʱinot̪a ɟud̪d̪ʱo]; শাধিনতা জুদ্ধো) বা মুক্তিযুদ্ধ (উচ্চারণ: [mukt̪iɟud̪d̪ʱo]; মুক্তিজুদ্ধো) হলো ১৯৭১ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি বিপ্লব ও সশস্ত্র সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবং বাঙালি গণহত্যার প্রেক্ষিতে এই জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পশ্চিম পাকিস্তান-কেন্দ্রিক সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে এবং নিয়মতান্ত্রিক গণহত্যা শুরু করে। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সাধারণ বাঙালি নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং পুলিশ ও ই.পি.আর. কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বীকার করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে গণবিদ্রোহ দমনে পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী শহর ও গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান ও বিমানযুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইসলামি দলগুলোর সমর্থন লাভ করে। সেনাবাহিনীর অভিযানে সহায়তার জন্য তারা ইসলামি মৌলবাদীদের নিয়ে আধা-সামরিক বাহিনী— রাজাকার, আল বদর ও আল শামস গঠন করে। পূর্ব পাকিস্তানের উর্দু-ভাষী বিহারিরাও সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে। পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের সহায়তাকারী আধা-সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা, উচ্ছেদ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যাসহ একাধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়। প্রায় এক কোটি বাঙালি শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং আরও তিন কোটি মানুষ দেশের অভ্যন্তরে উদ্বাস্তু হয়। বাঙালি ও উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতাকে বুদ্ধিজীবীরা গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। বাঙালি সামরিক, আধা-সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনী চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেনারেল এম. এ.
কুরআন মজিদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ বা কোরআন (আরবি: القرآن আল্-কুর্'আন্[টী১]) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন। এটিকে আরবি শাস্ত্রীয় সাহিত্যের সর্বোৎকৃষ্ট রচনা বলে মনে করা হয়। কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবিতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন বলতে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনকে বোঝায়। এই রাজ্যটি দেশের চতুর্থ-সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী হল কলকাতা। রাজ্যটি দু-টি প্রধান প্রাকৃতিক অঞ্চলে বিভক্ত: দক্ষিণে গাঙ্গেয় সমভূমি এবং উত্তরে হিমালয় ও হিমালয়ের পাদদেশীয় অঞ্চল। পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্পকে তত্ত্বাবধান করে রাজ্য সরকারের মালিকানাধীন সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগম।
দার্জিলিং হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি শহর ও পুরসভা। এই শহরটি হিমালয়ের শিবালিক পর্বতশ্রেণিতে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬,৭০০ ফু (২,০৪২.২ মি) উচ্চতায় অবস্থিত। শহরটি চা শিল্প, বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য ও ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের জন্য খ্যাত একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গের আংশিক স্বায়ত্ত্বশাসিত জেলা দার্জিলিঙের সদর দফতর এই শহরেই অবস্থিত।