The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে মরুকরণ বা মরুভূমি গঠন প্রক্রিয়ার অধ্যয়নকেই বলা হয় ঐতিহাসিক মরুকরণ। অতীতে ধারণা করা হত যে ফসলি জমির অতিরিক্ত ব্যবহার মাটির আর্দ্রতা হ্রাস করে, তাই পরবর্তীতে উক্ত জমি মরুভূমিতে পরিণত হয়। জমিতে সবুজ আচ্ছাদনের পরিমাণ হ্রাস পাওয়া, খরার প্রকোপ বৃদ্ধি কিংবা ঘূর্ণিবাত (Wind erosion)- এগুলোও মরুকরণের নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হত। কিন্তু সম্প্রতি দেখা গেছে, মরুভূমিগুলোকে সবুজায়নের মাধ্যমে পূর্বের ভূমিরূপ ফিরিয়ে আনার সকল চেষ্টাই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। এতে মরুকরণের প্রাচীন তত্ত্বগুলোর যথার্থতা নিয়েও অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছেন। সাম্প্রতিক গবেষণা দাবি করছে, কোনো প্রচণ্ড বা প্রলয়ঙ্করী ঘটনাই মরুকরণের সূত্রপাত করে - কম বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট খরা নয়। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যার পানিতে পলি ধৌত হয়ে চলে যায়; এবং ঐতিহাসিক পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে বাইজেন্টীয় যুগের শেষের দিকে এরকম প্রলয়ঙ্করী ঘটনা সংঘটিত হতে দেখা যায়। মরু এলাকায় বসতি হ্রাসের জন্য খরাকে দায়ী না করে এরকম ঘটনাপ্রবাহকেই দায়ী করা হয়েছে।
শব্দদূষণ বলতে মানুষের বা কোনো প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী কোনো শব্দ সৃষ্টির কারণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে বোঝায়। যানজট, কলকারখানা থেকে দূষণ সৃষ্টিকারী এরকম তীব্র শব্দের উৎপত্তি হয়। মানুষ সাধারণত ২০-২০,০০০ হার্জের কম বা বেশি শব্দ শুনতে পায় না। তাই মানুষের জন্য শব্দদূষণ প্রকৃতপক্ষে এই সীমার মধ্যেই তীব্রতর শব্দ দ্বারাই হয়ে থাকে।
বিহারীলাল চক্রবর্তী (২১ মে, ১৮৩৫ - ২৪ মে, ১৮৯৪) বাংলা ভাষার কবি। বাংলা সাহিত্যের প্রথম গীতি-কবি হিসেবে তিনি সুপরিচিত। রবীন্দ্রনাথ তাকে বাঙলা গীতি কাব্য-ধারার 'ভোরের পাখি' বলে আখ্যায়িত করেন। তার সব কাব্যই বিশুদ্ধ গীতিকাব্য। মনোবীণার নিভৃত ঝংকারে তার কাব্যের সৃষ্টি। বাঙালি কবি মানসের বহির্মুখী দৃষ্টিকে অন্তর্মুখী করার ক্ষেত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য।অতি অল্পকালের ভিতরে তিনি বাংলা কবিতার প্রচলিত ধারার পরিবর্তন ঘটিয়ে নিবিড় অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে গীতিকবিতার ধারা চালু করেন। এ বিষয়ে তিনি সংস্কৃত ও ইংরেজি সাহিত্যের মাধ্যমে গভীরভাবে প্রভাবিত হন। বিহারীলাল তার কবিতায় ভাবের আধিক্যকে খুব বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রকৃতি ও প্রেম, সংগীতের উপস্থিতি, সহজ-সরল ভাষা বিহারীলালের কবিতাকে দিয়েছে আলাদাধারার বৈশিষ্ট্য।
ভারত তার প্রাণীজগৎ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য পৃথিবীখ্যাত। মুষ্টিমেয় কিছু গৃহপালিত পশু যেমন গোরু, মহিষ, ছাগল, মুরগি, এবং ব্যাক্ট্রিয়ান ও ড্রোমেডারি উট ছাড়াও ভারতে বহু ধরনের প্রাণী বসবাস করে। এখানে বসবাস করে বেঙ্গল ও ইন্দোচীন বাঘ, এশীয় সিংহ, ভারতীয় ও ইন্দোচীন চিতা, তুষার চিতা, মেঘলা চিতা, হরিণের বিভিন্ন জাত, যেমন চিত্রা, হাঙ্গুল, বারশিঙ্গা; ভারতীয় হাতি, ভারতীয় গণ্ডার, এবং আরও অনেক। এলাকাটির সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ বণ্যপ্রাণী ১২০+ জাতীয় উদ্যানে, ১৮ বায়োস্ফিয়ার সংরক্ষণে এবং ৫০০+ বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে সংরক্ষিত আছে। ভারতে পৃথিবীর সবচেয়ে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা গুলির একটি আছে এবং এখানে পৃথিবীর ৩৬টি জীববৈচিত্র্য হটস্পট – বা ধনভাণ্ডার গুলির ৪টি আছে – সেগুলি হল পশ্চিমঘাট পর্বতমালা, পূর্ব হিমালয়, ইন্দো-বার্মা ও সুন্ডা ল্যান্ড। যেহেতু ভারতে বহু দুর্লভ ও বিপন্ন প্রজাতি বসবাস করে, সেইহেতু এই প্রাণী গুলির সংরক্ষণের জন্য বণ্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা কার্যকর। ভারত ১৭টি বিশালবিবিধ দেশগুলির একটি। একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারত ও অন্য ১৬টি বিশালবিবিধ দেশে একত্র ভাবে পৃথিবীর প্রায় ৬০-৭০% জীববৈচিত্র্য আছে। ভারতে, যা ইন্দোমালয় এলাকার একটি অংশ, বাস করে ৭.৬% স্তন্যপায়ী, ১২.৬% পক্ষী, ৬.২% সরীসৃপ, এবং ৬.০% সপুষ্পক উদ্ভিদের প্রজাতি।বহু ভারতীয় প্রজাতির পূর্বপুরুষ টাক্সন যার উৎপত্তি গন্ডোয়ানাল্যান্ডে, যার অন্তর্গত আসলে ভারত ছিল। উপদ্বীপীয় ভারতের লরেশিয়ার প্রতি গমন ও ধাক্কা প্রজাতিতে বিশাল বদল এনেছিল। যদিও, ২ কোটি বছর আগে আগ্নেয়প্র্রক্রিয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বহু ভারতীয় স্থানীয় ধরনের বিলুপ্তি ঘটালো। তারপর দ্রুত, ভারতে স্তন্যপায়ীরা ঢুকে পড়ল এশিয়া থেকে, উদীয়মান হিমালয়ের দুই দিকের প্রাণীভুগোলিক গিরিপথ দিয়ে। ফলস্বরূপ, ভারতীয় প্রজাতিগুলির মধ্যে, মাত্র ১২.৬% স্তন্যপায়ী এবং ৪.৫% পাখিই স্থানীয়, ৪৫.৮% সরীসৃপ এবং ৫৫.৮% উভচরের সঙ্গে। উল্লেখযোগ্য স্থানীয়রা হচ্ছে নীলগিরি লেঙ্গুর এবং পশ্চিমঘাটের খয়েরি ও গাঢ় লাল বেড ডোমস্ টোড বা কচ্ছপ। ভারতে বাস করে আইইউসিএন-চিহ্নিত বিপন্ন প্রাণীগুলির মধ্যে ১৭২টি প্রাণী, অর্থাৎ ২.৯%। এগুলির অন্তর্গত এশীয় হাতি, এশীয় সিংহ, বেঙ্গল টাইগার, ভারতীয় গণ্ডার, স্বাদুপানির কুমির, এবং ভারতীয় হোয়াইট-রাম্পড্ শকুন, যা একটি প্রায়-বিলুপ্তি ভুগেছিল এবং আইইউসিএন লাল তালিকায় ২০০০ সাল থেকে আছে।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০ – ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা বঙ্গবন্ধু, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস যা ২৬শে মার্চ তারিখে পালিত বাংলাদেশের জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে (কাল রাত) তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করে। ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণের ডাক দেন। ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদ্যাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
পরিবেশের অবনতি বলতে বায়ু, পানি ও মাটি প্রভৃতি সম্পদ নিঃশেষের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষয়সাধন, বাস্তুতন্ত্রের ধ্বংসসাধন, আবাস ধ্বংসকরণ; বন্যপ্রাণী বিলুপ্তকরণ; এবং দূষণ বৃদ্ধিকে বোঝায়। এটাকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়- কোন পরিবর্তন বা পরিবেশগত সমস্যার অনুভূতি যা ক্ষতিকর বা অবাঞ্ছিত। I=PAT সমীকরণ দ্বারা নির্দেশিত হিসাবমতে, পরিবেশগত প্রভাব (I) বা অবনতি ইতোমধ্যে একটি খুব বড় এবং ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠী (P), ক্রমাগত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা মাথাপিছু সমৃদ্ধি (A), এবং সম্পদের ব্যবহার হ্রাস ও প্রযুক্তি দূষণের (T) সমন্বয় দ্বারা সৃষ্ট।
দীনবন্ধু মিত্র (১৮৩০ – ১ নভেম্বর ১৮৭৩) ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা নাটকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রূপকার। বাংলার আধুনিক নাট্যধারার প্রবর্তক মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমসাময়িক দীনবন্ধু মিত্র অবশ্য মাইকেল প্রবর্তিত পৌরাণিক বা ঐতিহাসিক নাট্যরচনার পথে না গিয়ে বাস্তবধর্মী সামাজিক নাট্যরচনায় মনোনিবেশ করেন। এই ধারায় তিনিই হয়ে ওঠেন পরবর্তীকালের নাট্যকারদের আদর্শস্থানীয়।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
খাদ্যজাল বা খাদ্যচক্র বহু খাদ্যশৃঙ্খলের সংযোগে তৈরী হওয়া একটি ছক যা প্রাকৃতিক ব্যবস্থায় 'কে কি(বা কাকে) খায়' তা সাধারণত চিত্রের আকারে তুলে ধরে। বাস্তুবিদ ও পরিবেশবিদরা সমস্ত জীবিত শরীরকে দুই 'ট্রাফিক' পর্যায়ে ভাগ করেছেন: ১)স্বয়ংসম্পূর্ণ জৈব শরীর বা autotroph- যারা নিজেদের খাদ্য স্বয়ং তৈরী করতে সক্ষম, ২)পর-নির্ভর জৈব শরীর বা heterotroph- যারা নিজেদের খাদ্য তৈরিতে অক্ষম ও পুষ্টি সংগ্রহের হেতু পর শরীরের ওপর নির্ভরশীল। এরা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে হলেও অটোট্রফদের ওপর নির্ভরশীল। সমস্ত প্রাণীর মতোই নিজেদের শরীরের স্বাভাবিক জৈবিক কার্য বজায় রাখতে, নিজেদের বৃদ্ধি, বিকাশে ও পুনরুৎপাদনের হেতু অটোট্রফরা অজৈবিক পদার্থসমূহ থেকে জৈবিক পদার্থ তৈরী করে। এইসব রাসায়নিক বিক্রিয়ার জন্য যা এনার্জি প্রয়োজন হয় তা প্রধানত সার্বজনীন প্রাণ ও শক্তিদাতা অর্থাৎ সূর্যের থেকেই আসে, যদিও জলাভূমিতে তার কিছুটা অংশ বায়োইলেট্রোজেনেসিস-এর ফলে ও হটস্প্রিং বা হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট গুলিতে খনিজ ইলেকট্রন দানের ফলে তৈরির হয়। সম্পূর্ণ অটোট্রফদের(অর্থাৎ যারা খাদ্যনির্মান প্রক্রিয়ায় স্বয়ংসম্পূর্ণ) ও সম্পূর্ণ হেটেরোট্রফিদের(যারা পর শরীর_ গাছ বা অন্য প্রাণীর ওপর খাদ্যের জন্য নির্ভরশীল) মাঝখানের ভাগে মিক্সট্রপ(mixotroph) বলে একটি জাতির উদ্ভিদ প্রজাতি বিদ্যমান যারা সৌরশক্তির সাহায্যেও কিছু খাদ্য নির্মাণ করে ও কিছু অংশে পরশরীরের ওপর নির্ভরশীল, যেমন মাংসাশী গাছ বা "কার্নিভোরাস প্লান্ট"। একটি খাদ্যজালের বিভিন্ন খাদ্যশৃঙ্খলের সংযোগ বিভিন্ন খাদ্যপথ চিত্রায়িত করে, যেমন তৃণভোজী ও মাংশাসী হেটেরোট্রোফরা যথাক্রমে অটোট্রফ বা অন্য হেটেরোট্রোফদের ভক্ষণ করে জৈবিক পুষ্টি লাভ করে। একটি খাদ্যজাল অতি সহজভাবে বিভিন্ন খাদ্য পদ্ধতির সহজাত চিত্রায়ণ যা বাস্তুতন্ত্রকে একটি ঐক্যবদ্ধ বিনিময় ব্যবস্থার ছবি প্রদান করে।আমাদের প্রকৃতিতে নানা প্রক্টরের খাদ্যাভ্যাস লক্ষ্য করা যায় যাদের ভেষজজীবী, মাংসাশী, মৃত শরীর থেকে পুষ্টি গ্রহণ বা স্ক্যাভেঞ্জারী,পরজীবীতা প্রমুখ বৃহৎ শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। অটোট্রফ ও হেটেরোট্রোফরা বহু আকার ও রূপে পৃথিবীতে বিরাজমান_আণুবীক্ষণিক সায়ানোব্যাকটেরিয়া থেকে বিশালাকায় জায়ান্ট রেডউড ও ভাইরাস থেকে নিয়ে দৈত্যাকার ব্লু হোয়েল।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (২৫ জানুয়ারি ১৮২৪ – ২৯ জুন ১৮৭৩) ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি এবং নাট্যকার ও প্রহসন রচয়িতা। তাকে বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব গণ্য করা হয়। ঐতিহ্যের অনুবর্তিতা অমান্য করে নব্যরীতি প্রবর্তনের কারণে তাকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলো বাংলাদেশ-এর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার পায়রায় নির্মিত একটি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি যৌথ ভাবে চীনের চায়না মেশিনারিজ কোম্পানি এবং বাংলাদেশের নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড নির্মাণ করছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে ৬৬০ মেগাওয়াট এর মোট ২ টি ইউনিট নির্মাণ করা হয়েছে যার ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ – ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি এশীয়দের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
সিন্ধু সভ্যতা ছিল একটি ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতা (৩৩০০ – ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ; পূর্ণবর্ধিত কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)। এই সভ্যতার কেন্দ্র ছিল মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সিন্ধু নদ অববাহিকা। এই সভ্যতা প্রস্তর যুগে বিকাশ লাভ করে (প্রাচীন যুগকেই প্রস্তর যুগ বলে)। প্রথম দিকে এই সভ্যতা পাঞ্জাব অঞ্চলের সিন্ধু অববাহিকায় বিকাশ লাভ করে। পরে তা প্রসারিত হয় ঘগ্গর-হকরা নদী উপত্যকা ও গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চল পর্যন্ত। বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ, ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পশ্চিমদিকের রাজ্যগুলি, দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তান এবং বালোচিস্তান প্রদেশের পূর্ব অংশ এই সভ্যতার অন্তর্গত ছিল।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) ঊনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তার। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
সোনার তরী হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্ত্তৃক রচিত একটি বিখ্যাত বাংলা কাব্যগ্রন্থ। সমগ্র গ্রন্থটি বাংলা কাব্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রোম্যান্টিক কাব্য সংকলন। এটি ১৮৯৪ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। এটি রবীন্দ্রনাথের কাব্য রচনার "মানসী-সোনার তরী পর্ব"-এর অন্তর্গত একটি উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি। এতে তাঁর কাব্য প্রতিভার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটেছে। এটি তাঁর অসংখ্য কালোত্তীর্ণ কাব্যের মধ্যে একটি। কাব্যগ্রন্থটি কবি দেবেন্দ্রনাথ সেনের প্রতি উৎসর্গিত।
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন হল বড়ু চণ্ডীদাস রচিত একটি মধ্যযুগীয় বাংলা কাব্য। এটি আদি মধ্যযুগীয় তথা প্রাক্-চৈতন্য যুগে বাংলা ভাষায় লেখা একমাত্র আখ্যানকাব্য এবং বৌদ্ধ সহজিয়া সংগীত-সংগ্রহ চর্যাপদের পর আদি-মধ্যযুগীয় বাংলা ভাষার আবিষ্কৃত দ্বিতীয় প্রাচীনতম নিদর্শন। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামের একটি গোয়ালঘর থেকে এই কাব্যের খণ্ডিত পুথিটি আবিষ্কার করেন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁরই সম্পাদনায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে পুথিটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। তিনি এই পুথির নামকরণ "শ্রীকৃষ্ণকীর্তন" করলেও পুথির মধ্যে একটি চিরকুটে লিখিত শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ নামটি দৃষ্টে কোনও কোনও গবেষক পুথিটির নাম "শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ" রাখারই পক্ষপাতী ছিলেন; যদিও নামটি সংশয়াতীত নয় বলে বর্তমানে কাব্যটিকে "শ্রীকৃষ্ণকীর্তন" নামেই অভিহিত করা হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ (উচ্চারণ: [ʃad̪ʱinot̪a ɟud̪d̪ʱo]; শাধিনতা জুদ্ধো) বা মুক্তিযুদ্ধ (উচ্চারণ: [mukt̪iɟud̪d̪ʱo]; মুক্তিজুদ্ধো) হলো ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি বিপ্লব ও সশস্ত্র সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবং বাঙালি গণহত্যার প্রেক্ষিতে এই জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পশ্চিম পাকিস্তান-কেন্দ্রিক সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে এবং নিয়মতান্ত্রিক গণহত্যা শুরু করে। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সাধারণ বাঙালি নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং পুলিশ ও ইপিআর কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বীকার করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনের পর অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে গণবিদ্রোহ দমনে পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী শহর ও গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান ও বিমানযুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইসলামি দলগুলোর সমর্থন লাভ করে। সেনাবাহিনীর অভিযানে সহায়তার জন্য তারা ইসলামি মৌলবাদীদের নিয়ে আধা-সামরিক বাহিনী— রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনী গঠন করে। পূর্ব পাকিস্তানের উর্দু-ভাষী বিহারিরাও সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে। পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের সহায়তাকারী আধা-সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা, উচ্ছেদ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যাসহ একাধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়। প্রায় এক কোটি বাঙালি শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং আরও তিন কোটি মানুষ দেশের অভ্যন্তরে উদ্বাস্তু হয়। বাঙালি ও উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতাকে বুদ্ধিজীবীরা গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। বাঙালি সামরিক, আধা-সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনী চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেনারেল এম. এ. জি.
সাতই মার্চের ভাষণ ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মার্চ ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত এক ঐতিহাসিক ভাষণ। তিনি উক্ত ভাষণ বিকেল ২টা ৪৫ মিনিটে শুরু করে বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে শেষ করেন। উক্ত ভাষণ ১৮ মিনিট স্থায়ী হয়।এই ভাষণে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। এই ভাষণের একটি লিখিত ভাষ্য অচিরেই বিতরণ করা হয়েছিল। এটি তাজউদ্দীন আহমদ কর্তৃক কিছু পরিমার্জিত হয়েছিল। পরিমার্জনার মূল উদ্দেশ্য ছিল সামরিক আইন প্রত্যাহার এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবীটির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা। ১৩টি ভাষায় ভাষণটি অনুবাদ করা হয়। ১৩ তম হিসাবে মাহাতো নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর কুড়মালি ভাষায় ভাষণটি অনুবাদ করা হয়, যা নৃ তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ভাষায় ১ম অনুবাদ। নিউজউইক ম্যাগাজিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০১৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর ইউনেস্কো এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
ইউক্রেন বা উক্রাইনা (ইউক্রেনীয়: Україна উক্রায়িনা আ-ধ্ব-ব: /ukraˈjina/) পূর্ব ইউরোপের একটি রাষ্ট্র। আয়তনের বিচারে রাশিয়ার পরে এটি ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র; এর আয়তন ৬,০৩,৬২৮ বর্গকিলোমিটার (২৭,০০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ক্রিমিয়া অঞ্চলসহ)। দেশটিতে প্রায় ৪ কোটি ৩৬ লক্ষ অধিবাসীর বাস, ফলে এটি ইউরোপ মহাদেশের ৮ম সর্বোচ্চ জনবহুল দেশ। ইউক্রেনের পশ্চিমে পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি, দক্ষিণ-পশ্চিমে রোমানিয়া ও মলদোভা), দক্ষিণে কৃষ্ণ সাগর ও আজভ সাগর, পূর্বে ও উত্তর-পূর্বে রাশিয়া এবং উত্তরে বেলারুস। দক্ষিণে ক্রিমিয়া উপদ্বীপে অবস্থিত স্বায়ত্বশাসিত ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্র ইউক্রেনের সীমান্তের মধ্যে পড়েছে। কিয়েভ ইউক্রেনের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।
প্রাকৃতিক পরিবেশ হল জীবিত এবং প্রাণহীন প্রাকৃতিকভাবে পরিবেষ্টিত ঘটমান সমস্ত জিনিস, এক্ষেত্রে এর অর্থ কৃত্রিম নয়। পৃথিবী অথবা পৃথিবীর কিছু অংশে এই শব্দের ব্যবহার সুপ্রযুক্ত। সমস্ত প্রজাতি, জলবায়ু, আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক সম্পদ এই পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত যেটা মানুষের বাঁচা ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে প্রভাবিত করে।প্রাকৃতিক পরিবেশের ধারণাকে নিম্নলিখিত উপাদানে ভাগ করা যায়:
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ – ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮) ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় এবং বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। তার অনেক উপন্যাস ভারতবর্ষের প্রধান ভাষাগুলোতে অনূদিত হয়েছে। বড়দিদি (১৯১৩), পরিণীতা (১৯১৪), পল্লীসমাজ (১৯১৬), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), শ্রীকান্ত (চারখণ্ডে ১৯১৭-১৯৩৩), দত্তা (১৯১৮), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী (১৯২৬), শেষ প্রশ্ন (১৯৩১) ইত্যাদি শরৎচন্দ্র রচিত বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তার দরুন তিনি 'অপরাজেয় কথাশিল্পী' নামে খ্যাত। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক পান৷ এছাড়াও, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে 'ডিলিট' উপাধি পান ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে।
১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ মার্চ তারিখটিকে বিশ্ব কবিতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এই দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল বিশ্বব্যাপী কবিতা পাঠ, রচনা, প্রকাশনা ও শিক্ষাকে উৎসাহিত করা। ইউনেস্কোর অধিবেশনে এই দিবস ঘোষণা করার সময় বলা হয়েছিল, "এই দিবস বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কবিতা আন্দোলনগুলিকে নতুন করে স্বীকৃতি ও গতি দান করবে।"
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী হলো ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর নয়মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরপূর্তি পালনের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃৃক ঘোষিত একটি বার্ষিক পরিকল্পনা। সরকার ২৬ মার্চ ২০২১ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের ঘোষণা দেয়।আভিধানিক ভাষায়, "সুবর্ণজয়ন্তী" শব্দটি মূলত কোনো ঘটনার ৫০ বছরপূর্তিকে নির্দেশ করে।
পশ্চিমবঙ্গ খনিজ সম্পদে মাঝারি মানের সমৃদ্ধ রাজ্য। এই রাজ্যের প্রধান খনিজ দ্রব্য হল কয়লা ও ফায়ার ক্লে বা তাপসহ মাটি। এই দুটি খনিজ দ্রব্য রাজ্যটিতে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। অন্যান্য খনিজ দ্রব্যের মধ্যে চিনামাটি, চুনাপাথর, অ্যাপেটাইট, আকরিক লোহা, আকরিক তামা, ম্যাঙ্গানিজ, প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
খাদ্য শৃঙ্খল বা খাদ্য শিকল হচ্ছে উৎপাদক জীব (অর্থাৎ, উদ্ভিদ যা খাদ্য তৈরির জন্য সূর্যের বিকিরণ ব্যবহার করে) থেকে শুরু করে শীর্ষে অবস্থানকারী সর্বোচ্চ স্তরের খাদক বা শিকারী প্রজাতির (গ্রিজলি ভাল্লুক বা খুনে তিমির মতো) এবং বিয়োজক তথা মৃতভোজী (যেমন: কেঁচো বা ঘুনপোকা) এবং পচনকারীতে (যেমন ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া) সমাপ্ত হওয়া কোনও খাদ্য জালের বিভিন্ন অংশের একটি রৈখিক সম্পর্ক। এছাড়াও একটি খাদ্য শৃঙ্খল আরও দেখায় বিভিন্ন জীব খাদ্যের জন্য কীভাবে একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। খাদ্য শৃঙ্খলের প্রতিটি স্তর একটি আলাদা ট্রফিক স্তর প্রতিনিধিত্ব করে। খাদ্য জাল থেকে খাদ্য শৃঙ্খল আলাদা। কারণ কোন বাস্তুতন্ত্রের বিভিন্ন প্রাণির মধ্যে খাদ্য-খাদকের সম্পর্কের জটিল নেটওয়ার্ক একত্রিত হয়ে খাদ্য জাল তৈরি হয়; অন্যদিকে খাদ্য শৃঙ্খল কেবল অল্প কয়েকটি জীবের মধ্যে খাদ-খাদকের একমূখী সম্পর্ক। অনেকগুল৯ খাদ্য শৃঙ্খলের মধ্যে প্রাকৃতিক আন্তঃসংযোগগুলো মিলে একটি খাদ্য জাল তৈরি হয়। অর্থাৎ, খাদ্য শৃঙ্খল হচ্ছে খাদ্য জালের একটি অংশ।
ভ্রান্তিবিলাস মনু সেন পরিচালিত ১৯৬৩ সালের ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ১৮৬৯ সালের একই নামের গ্রন্থ অবলম্বনে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। ভ্রান্তিবিলাস উইলিয়াম শেকসপিয়র রচিত নাটক কমেডি অফ এররস অবলম্বনে লিখিত। এই কাহিনীর ভিত্তিতে ১৯৬৮ সালের বলিউডে সঙ্গীতধর্মী দো দুনি চার এবং ১৯৮২ সালে পুনর্নির্মিত হয় আঙ্গুর নামে। এই চলচ্চিত্রটির মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন উত্তম কুমার এবং সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় ।
প্রতি বৎসর বিভিন্ন দিনে বিশ্বব্যাপী নানা "দিবস" পালিত হয়। এই সকল বৈশ্বিক দিবস বা বিশ্ব দিবস বা আন্তর্জাতিক দিবসসমূহের তালিকা এই পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো। এই সকল দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে - কোন একটি নির্দিষ্ট দিনে আন্তর্জাতিকভাবে সাম্প্রতিককালের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধি বা ক্ষেত্র বিশেষে কোন অতীত ঘটনা স্মরণ বা উদ্যাপন করা।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যচর্চা শুরু হয় ১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে, "সংবাদ প্রভাকর" পত্রিকায় কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে। বাংলা ভাষায় প্রথম সার্থক উপন্যাস দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫) তাঁর লেখা। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ: ললিতা তথা মানস (১৮৫৬)
রাশিয়া (রুশ: Россия রশিয়া), সরকারিভাবে রুশ ফেডারেশন নামে পরিচিত (রুশ: Российская Федерация রশিস্কায়া ফিদিরাৎসিয়া) যেটা পূর্ব ইউরোপে এবং উত্তর এশিয়ায় অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। এই দেশটি অর্ধ প্রেসিডেনসিয়াল ফেডারেল প্রজাতন্ত্র যার সংবিধান ৮৩ টি ফেডারেল বিষয় দ্বারা গঠিত। রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব পর্যন্ত নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড (উভয় দেশই কালিনিনগ্রাদ অব্লাস্ত সীমান্ত দিয়ে যুক্ত), বেলারুশ, ইউক্রেন, জর্জিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সাথে সীমান্ত আছে। দেশটির অখতস্ক সাগরের মাধ্যমে জাপানের সাথে ও বেরিং প্রণালীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার সাথে সামুদ্রিক সীমানা রয়েছে। রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ যার রয়েছে পৃথিবীর মোট আবাসযোগ্য জমির এক অষ্টমাংশ। দেশটির মোট আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল)। রাশিয়া বিশ্বের নবম জনবহুল দেশ যেখানে ২০১২ হিসাব অনুযায়ী ১৪৩ মিলিয়ন লোক বসবাস করে। পূর্ব ইউরোপে জায়গা সম্প্রসারণের ফলে রাশিয়া ১১টি সময় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এবং এখানে অনেক রকম ও বিস্তৃত পরিবেশের সমন্বয় ঘটেছে।
বিটিএস (কোরীয়: 방탄소년단) (যারা বাংতান বয়েজ নামেও পরিচিত,) হলো ৭ সদস্যের দক্ষিণ কোরিয়ান বয় ব্যান্ড। এ ৭ সদস্যের ব্যান্ড বিগহিট মিউজিক এর অধীনে ২০১০ সালে ট্রেইনি হিসেবে এবং ২০১৩ সালে ২ কুল ৪ স্কুল অ্যালবাম নিয়ে পুরো বিশ্বের সামনে নিজেদের আত্মপ্রকাশ করে। তারা মূলত হিপ হপ সঙ্গীতের গ্রুপ হলেও তাদের গানগুলোতে বিভিন্ন সঙ্গীতের ধরন প্রকাশ পায়। গানের মাধ্যমে তারা সাহিত্য, মনোস্তাত্বিক বিষয় এবং নিজেকে ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরে।
হিরোডোটাস (; প্রাচীন গ্রিক: Ἡρόδοτος, Hēródotos, গ্রিক উচ্চারণ: [hɛː.ró.do.tos]; ছিলেন একজন প্রাচীন গ্রিক ইতিহাসবিদ। তিনি পারসিয়ান সম্রাজ্যের (বর্তমানে, আধুনিক তুর্কি) হেলির্কানাসাস (বর্তমানে, আধুনিক তুর্কি) -এ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ‘The Histories’ বইটি লেখার জন্য জনপ্রিয়, যা তার গ্রিকো-পারসিয়ান যুদ্ধগুলোর উপর গবেষণার একটি বিশদ নথি। তাকে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয় যিনি ঐতিহাসিক বিষয়গুলোর উপর একটি বিশেষ পদ্ধতির অনুসন্ধান করেন, যেখানে তিনি ঐতিহাসিক ধাতুসমুহ সংগ্রহ করেন এবং ইতিহাস লিখনধারা অনুযায়ী সাজান। এ কারণে তাকে ইতিহাসের জনক বা “The Father of History” হিসেবে গণ্য করা হয়। এই সম্মান তাকে সর্বপ্রথম খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকের রোমান ওরেটর, সিসারো প্রদান করেন।তার ঐতিহাসিক গুরুত্বের পরও তার নিজস্ব জীবন সম্পর্কে তেমন জানা যায় নি। তার লেখা ইতিহাসগুলোর অধিকাংশরই বিষয় ছিল ক্রোসাস, সাইরাস, কেমবাইসেস, এসমারডিস, মহান দারিয়াস।দারিয়াস এবং যারযেস এর জীবন এবং ম্যারাথনের যুদ্ধ, থের্মোপিলাইয়ের যুদ্ধ, আর্টেমিজিয়ামের যুদ্ধ সালামিসের যুদ্ধ প্লাটায়য়ার যুদ্ধ এবং মিকিলির যুদ্ধ। তার নৃকুলবিদ্যা, ভূগল, ইতিহাস লেখনধারা সংক্রান্ত বিষয়ের উপর লেখাগুলো “দ্যা হিসটোরিস” -এর একটি সংজ্ঞায়িত এবং জরুরি অংশ এবং প্রচুর তথ্য বহন করে। তার বইগুলোতে অনেক নিশ্চিত অসত্য এবং কাল্পনিক ঘটনা থাকায় তাকে সমালোচিতও হতে হয়েছে। পঞ্চম শতাব্দির শেষের দিকের সময়কার ইতিহাসবিদ, থুসিডাইডিস থেকে শুরু করে অনেক লেখক তাকে বিনোদনের জন্য কাহিনী তৈরি করার অভিযোগ করেছে। যদিও হিরোডোটাস বলেছেন যে তিনি যা দেখেছেন বা তাকে যা বলা হয়েছে তিনি তা খুব কমই লেখেন এবং অনেক সময় তিনি নিজের লেখা ঘটনা বিশ্বাস করেন না। তার দেওয়া অনেক তথ্য ইতিহাসবিদ এবং প্রত্নতাত্ত্বিকদের দ্বারা সঠিক প্রমাণিত হয়েছে।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান ইতিমধ্যে বসানো সম্পন্ন হয়েছে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু। পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।
তদ্ভব /তদ্ভবো/ সংস্কৃত : तद्भव, ইংরেজি : arising from that (তা থেকে উৎপন্ন)। সংস্কৃত থেকে উদ্ভূত এবং ক্রমশ পরিবর্তিত হয়ে বাংলা ভাষায় গৃহীত ও প্রচলিত। একটি "তদ্ভব" হল একটি ইন্দো-আর্য উৎপত্তি (এবং এইভাবে সংস্কৃত এর সাথে সম্পর্কিত) কিন্তু যেটি মধ্য ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহ পরিবর্তনের মাধ্যমে বিকশিত হয়েছে। পর্যায় এবং শেষ পর্যন্ত উত্তরাধিকারসূত্রে একটি আধুনিক ইন্দো-আর্য ভাষা।এই অর্থে, তদ্ভবকে আধুনিক ইন্দো-আর্য ভাষার স্থানীয় (উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত) শব্দভাণ্ডার হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারতীয় প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
মুহাম্মাদ (আরবি: مُحَمَّد; ২৯ আগস্ট ৫৭০ – ৮ জুন ৬৩২; মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত), ছিলেন একজন আরবের ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক নেতা এবং ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। ইসলামী মতবাদ অনুসারে, তিনি হলেন ঐশ্বরিকভাবে প্রেরিত ইসলামের সর্বশেষ নবী (আরবি: النبي; আন-নাবিয়্যু), তথা ‘বার্তাবাহক’ (আরবি: الرسول; আল-রাসুল), যার উপর ইসলামের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কুরআন অবতীর্ণ হয়। আদম, ইব্রাহিম, মূসা, যীশু এবং অন্যান্য নবীদের মতোই মুহাম্মদ একেশ্বরবাদী শিক্ষা প্রচার করার জন্য প্রেরিত। অমুসলিমদের মতে, তিনি ইসলামি জীবনব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল ছিলেন, তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সাফল্য। কুরআনের পাশাপাশি তার শিক্ষা এবং অনুশীলনগুলি ইসলামী ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে।
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও, বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে; অন্যদিকে, এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তানের ছিল দুইটি অংশ: পূর্ব বাংলা (১৯৫৫ সালে পুনর্নামাঙ্কিত পূর্ব পাকিস্তান) ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার পূর্ব পাকিস্তান তথা পূর্ব বাংলাকে ইসলামীকরণ তথা আরবিকরণের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে আরবি হরফে বাংলা লিখন অথবা সমগ্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা আরবি করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কার্যত পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন বাদামতলী কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের ছেলে রফিক, সালাম, এম. এ.
অপারেশন সার্চলাইট (ইংরেজি: Operation Searchlight) ১৯৭১সালে ২৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত পরিকল্পিত গণহত্যা, যার মাধ্যমে তারা ১৯৭১ এর মার্চ ও এর পূর্ববর্তী সময়ে সংঘটিত বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দমন করতে চেয়েছিল। এই গণহত্যা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের আদেশে পরিচালিত,যা ১৯৭০ এর নভেম্বরে সংঘটিত অপারেশন ব্লিটজ্ এর পরবর্তি অনুষঙ্গ। অপারেশনটির আসল উদ্দেশ্য ছিল ২৬ মার্চ এর মধ্যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সব বড় বড় শহর দখল করে নেয়া এবং রাজনৈতিক ও সামরিক বিরোধীদের এক মাসের ভেতর নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। বাঙালিরা তখন পাল্টা প্রতিরোধ সৃষ্টি করে,যা পাকিস্তানি পরিকল্পনাকারীদের ধারণার বাইরে ছিল। মে এর মাঝামাঝি সময়ে সকল বড় বড় শহরের পতন ঘটার মধ্যে দিয়ে অপারেশন সার্চলাইটের প্রধান অংশ শেষ হয়। এই সামরিক আক্রমণ ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে ত্বরান্বিত করে। এই গণহত্যা বাঙালিদের ক্রুদ্ধ করে তোলে যে কারণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙ্গালি অফিসার ও সৈনিকেরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হয় এবং বহু মানুষকে শরণার্থীরূপে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়। এই ভয়াবহ গণহত্যা ১৯৭১ এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায় এবং বাঙালিরা দখলদারী পাকিস্তানি বাহিনীকে বিতারিত করার সংগ্রামে লিপ্ত হয়। পরিণতিতে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ কমান্ড "মিত্র বাহিনী" এর কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিনাশর্তে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।।
বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ (১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩০ - ১৯ মার্চ ২০২২) বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ ও ৬ষ্ঠ প্রধান বিচারপতি এবং দু'বার দায়িত্বপালনকারী রাষ্ট্রপতি। তিনি প্রথমে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর হতে ১৯৯১ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে রাষ্ট্রপতি হিসাবে এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় থাকা-কালীন ১৯৯৬ সালের ২৩ জুলাই থেকে ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
শঙ্খ ঘোষ (৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩২ - ২১ এপ্রিল ২০২১) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতের একজন শক্তিমান বাঙালি কবি ও সাহিত্য-সমালোচক। তিনি একজন বিশিষ্ট রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ হিসাবে প্রসিদ্ধ ছিলেন। তিনি ছিলেন কাব্য সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দ দাশের উত্তরসূরী।তার প্রকৃত নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। শঙ্খ ঘোষ সারা জীবন শিক্ষকতা করেছেন। তিনি বঙ্গবাসী কলেজ, জঙ্গীপুর কলেজ, যাদবপুর, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিজ (শিমলা), দিল্লি ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যে অধ্যাপনা করেছেন।বাবরের প্রার্থনা কাব্যগ্রন্থটির জন্য তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার গদ্যগ্রন্থ "বটপাকুড়ের ফেনা" ২০১৬ সালে ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান জ্ঞানপীঠ পুরস্কার লাভ করে। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম হল মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে, উর্বশীর হাসি, ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ ইত্যাদি। তিনি শঙ্খ ঘোষ নামে অধিক পরিচিত হলেও তাঁকে অন্য নামও গ্রহণ করতে দেখা যায়। দশম-একাদশ শতকের সংস্কৃত আলংকারিক কুন্তক-এর নাম তিনি গ্রহণ করেছেন নিজের আরেকটি ছদ্মনাম হিসেবে। আবার শুভময় নামটিও তাকে ব্যবহার করতে দেখা যায়।ঘোষ ১০ই এপ্রিল ২০২১ তারিখে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হন বলে পরিক্ষায় ধরা পরে। এরপরে তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন এবং ২১শে এপ্রিল ২০২১ তারিখে কলকাতায় তাঁর নিজ বাড়িতে সকাল ১১:৩০ -এ মারা যান।
মুজিববর্ষ হলো বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালনের জন্য ঘোষিত বর্ষ। বাংলাদেশ সরকার ২০২০-২১ সালকে (১৭ই মার্চ ২০২০ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত) মুজিববর্ষ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়। বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অবিভক্ত ভারতের পূর্ববঙ্গের ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার (বর্তমানে গোপালগঞ্জ জেলা) টুঙ্গিপাড়া গ্রামে (বর্তমানে উপজেলা) ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০২০ সালের ১৭ই মার্চ তাঁর জন্মের ১০০ বছর পূর্তি হয়। তাই তাঁর এই জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্যই 'মুজিববর্ষ' পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়াও ২০২১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতার অর্ধ-শত বার্ষিকীতে পদার্পণ করে। তাই ২০২০ ও ২০২১ সাল দুটি বাঙালির জাতীয় জীবনের দুটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকছে।
গুপ্ত সাম্রাজ্য (সংস্কৃত: गुप्त राजवंश, Gupta Rājavaṃśa) ছিল একটি প্রাচীন ভারতীয় সাম্রাজ্য। আনুমানিক খ্রিষ্টীয় ৩২০ থেকে ৫৫০ অব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের অধিকাংশ অঞ্চল জুড়ে এই সাম্রাজ্য প্রসারিত ছিল। মহারাজ শ্রীগুপ্ত ধ্রুপদি সভ্যতা-র আদর্শে এই সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। গুপ্ত শাসকদের সময়/শাসনামলে ভারতে যে শান্তি ও সমৃদ্ধি স্থাপিত হয়েছিল, তার ফলশ্রুতিতে দেশ বৈজ্ঞানিক ও শিল্পক্ষেত্রে বিশেষ উৎকর্ষ লাভ করতে সক্ষম হয়। গুপ্তযুগকে বলা হয় ভারতের স্বর্ণযুগ। এই যুগ ছিল আবিষ্কার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বাস্তুবিদ্যা, শিল্প, ন্যায়শাস্ত্র, সাহিত্য, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, ধর্ম ও দর্শনের বিশেষ উৎকর্ষের যুগ; বর্তমান হিন্দু সংস্কৃতি মূলত এই যুগেরই ফসল। গুপ্ত যুুগের আমলে অনেক পণ্ডিত ব্যক্তি যেমন কালিদাস, আর্যভট্ট, বরাহমিহির, বিষ্ণু শর্মা -এর অবির্ভাব হয়েছিলো।
পঞ্চদশ শতাব্দীর বাঙালি কবি কৃত্তিবাস ওঝা কর্তৃক বাংলা ভাষায় অনূদিত রামায়ণ কৃত্তিবাসী রামায়ণ বা শ্রীরাম পাঁচালী নামে পরিচিত। কৃত্তিবাসী রামায়ণ-এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এটি পাঁচালীর আকারে পয়ার ছন্দে রচিত এবং মূল সংস্কৃত রামায়ণের আক্ষরিক অনুবাদ নয়। উপরন্তু কৃত্তিবাস রামায়ণ-বহির্ভূত অনেক গল্প এই অনুবাদে গ্রহণ করেছিলেন। তদুপরি, তিনি বাংলার সামাজিক রীতিনীতি ও লৌকিক জীবনের নানা অনুষঙ্গের প্রবেশ ঘটিয়ে তিনি বাল্মীকি-রামায়ণ উপাখ্যানের বঙ্গীকরণ করেন, যা অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত বাল্মিকী রামায়ণ অপেক্ষা ভিন্ন। যেমন রামায়ণের মূল রচয়িতা বাল্মিকী তাঁর রচনায় রামচন্দ্রকৃত দুর্গাপূজার কথা উল্লেখ করেন নি, এমনকি রামায়ণের অন্য কোনো অনুবাদেও তা দেখা যায় না। কিন্তু কৃত্তিবাস ওঝা তার রামায়ণে এটি কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই উল্লেখ করেন। এছাড়াও তিনি রামায়ণের চরিত্রগুলো তৎকালীন সাধারণ বঙ্গীয় সমাজের আলোকে ব্যাখ্যা করেছেন, যা বাল্মিকী রামায়ণে বর্ণিত একই চরিত্রের সাথে একই রকম নয়।
ইউটিউব (ইংরেজি:Youtube) হলো সান ব্রুনো, ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক একটি মার্কিন অনলাইন ভিডিও-শেয়ারিং সাইট যা ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। ২০০৬ সালের অক্টোবরে, গুগল সাইটটিকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করে নেয়। ইউটিউব বর্তমানে গুগলের অন্যতম অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
দ্য কাশ্মীর ফাইলস হল বিবেক অগ্নিহোত্রী রচিত ও নির্দেশিত ২০২২ সালের একটি ভারতীয় হিন্দি ভাষার নাটকীয় চলচ্চিত্র। জি স্টুডিওস দ্বারা প্রযোজিত, চলচ্চিত্রটি কাশ্মীর বিদ্রোহের সময় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিতাড়নকে চিত্রিত করে। এতে অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তী, দর্শন কুমার ও পল্লবী জোশী অভিনয় করেছেন। এটির একটি বিশেষ প্রিমিয়ার ২০২২ সালের ৪ই মার্চ ছিল, কিন্তু ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর স্কোয়াড্রন নেতার বিধবা স্ত্রীর দায়ের করা মামলার পক্ষে রায় দেওয়ার পরে একটি স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ছবিটির মুক্তি স্থগিত করা হয়েছিল। আদেশে বলা হয়েছিল, যে ছবিটিতে ভুল উপাদান রয়েছে এবং মামলাকারীর স্বামীর সাথে সম্পর্কিত দৃশ্যসমূহ মুছে ফেলা বা সংশোধন করা প্রয়োজন। নির্দিষ্ট কিছু দৃশ্যে উপর সংযম রেখে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি প্রদান করা হয়েছিল।চলচ্চিত্রটি প্রাথমিকভাবে ২০২১ সালের ২৬শে জানুয়ারি ভারতের সাধারণতন্ত্র দিবসে বিশ্বব্যাপী প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, কিন্তু এটি ওমিক্রনের বিস্তারের কারণে স্থগিত করা হয়, এবং অবশেষে ২০২২ সালের ১১ই মার্চ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। চলচ্চিত্রটি হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশে করমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল।
লালন (১৭ অক্টোবর ১৭৭৪ – ১৭ অক্টোবর ১৮৯০) ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি; যিনি ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক বাউল সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক। তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং ‘বাউল-সম্রাট’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তার গানের মাধ্যমেই উনিশ শতকে বাউল গান বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
অশোক (ব্রাহ্মী লিপি: 𑀅𑀲𑁄𑀓, সংস্কৃত: अशोक) বা মহান অশোক, গ্রিক নাম পিওদাসেস, ভারতীয় উপমহাদেশের তৃতীয় মৌর্য সম্রাট যিনি পিতা বিন্দুসারের পর সিংহাসন লাভ করেন। ভারতবর্ষের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই সম্রাট দাক্ষিণাত্যের কিছু অংশ ব্যতীত ভারতবর্ষের অধিকাংশ অঞ্চল শাসন করেন। তাঁকে একজন "সর্বভারতীয় সম্রাট" বলা যায়। তিনি শুধু বর্তমান ভারত ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলো শাসনই করেননি বরং এসব অঞ্চলের সংস্কৃতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন। সাম্রাজ্যের বাহিরেও তিনি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। আধুনিক যুগে জীববৈচিত্র্য রক্ষার যে মনোভাব দেখা যায় তিনি খ্রিস্টপূর্ব যুগে বিশাল সাম্রাজ্যের শাসক রূপে সে ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ব্র্যাক একটি আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তর উন্নয়নমূলক সংস্থা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে স্যার ফজলে হাসান আবেদ এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলাসহ এশিয়া, আফ্রিকা এবং আমেরিকার ১৩টি দেশে এটির কার্যক্রম রয়েছে। ব্র্যাক এর দাবি অনুযায়ী বর্তমানে তাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় ০১ (এক) লক্ষ এর মত কর্মী কাজ করে থাকেন। তবে এদের মধ্যে ৭০ ভাগই নারী কর্মী। ব্র্যাকের পরিষেবার আওতায় আছে ১২৬ মিলিয়ন লোক। একটি সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব তহবিলযুক্ত দুগ্ধ, খাদ্য, কৃষি, গবাধি পশুর খামার ও হস্তশিল্পসহ বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করে থাকে। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১৪টি দেশে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম রয়েছে।
গরুড় (সংস্কৃত: गरुड) বা গরুৎমান হিন্দু ও বৌদ্ধ পুরাণে উল্লিখিত একটি বৃহদাকার পৌরাণিক পাখি বা পক্ষীতুল্য জীব। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, গরুড় বিষ্ণুর বাহন। তিনি ঋষি কশ্যপ ও বিনতার পুত্র; তার ভাই অরুণ সূর্যের বাহন। গরুড় শব্দের অর্থ বাক্যের ডানা। তিনি বৈদিক জ্ঞানের প্রতীক। গরুড় কখনো মুক্তডানা ঈগলের মত, কখনো ঈগলমানবের মত বর্ণনা করা হয়েছে। গরুড় সাপদের শত্রু।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অস্থায়ী সরকার (যা মুজিবনগর সরকার বা প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার নামেও পরিচিত) মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল জনগনের রায়ে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমান মুজিবনগর) শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের জনগণের প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী সংগঠন ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় এবং এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ সহায়তাকারী রাষ্ট্র ভারতের সরকার ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক রক্ষায় এই সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। এই সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ প্রবল যুদ্ধে রূপ নেয় এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত হয়।
পুরুষসূক্ত (সংস্কৃত: पुरुष सूक्त) হল ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলের অন্তর্গত একটি স্তোত্র (৯০ সংখ্যক স্তোত্র)। এটি "পরব্রহ্ম" বা পুরুষের উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত। এটিকে শুক্ল যজুর্বেদ সংহিতা এবং অথর্ব বেদ সংহিতা সহ প্রায় সকল বেদেই পাওয়া যায়। এই স্তোত্রের মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষি হলেন নারায়ণ। তবে ভাগবত পুরাণ ও মহাভারত বিষ্ণুকে পুরুষ সুক্ত প্রার্থনায় বর্ণিত চূড়ান্ত পুরুষ হিসাবে ঘোষণা করেছে।
ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন (রুশ: Влади́мир Влади́мирович Пу́тин; জন্ম: ৭ অক্টোবর, ১৯৫২) লেনিনগ্রাদে জন্মগ্রহণকারী রুশ প্রজাতন্ত্র বা রাশিয়ার অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ২য় মেয়াদে ৭ মে, ২০১২ তারিখ থেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতাসীন। এর পূর্বে ২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০০ ও ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও, ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনাইটেড রাশিয়া দলের সভাপতি এবং রাশিয়া ও বেলারুশের মন্ত্রীসভার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সেক্টরসমূহ
১৯৭১ সালে সংগঠিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচলনায় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের সমগ্র ভূখণ্ডকে ১১টি যুদ্ধক্ষেত্র বা সেক্টরে ভাগ করা হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধীত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য সংবিধানের ১৪২নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) হচ্ছে সেনা, নৌ ও বিমান শাখার ক্যাডেটদের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় সারির, আধাসামরিক, সেচ্ছাসেবী বাহিনী। এটি সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা, জেসিও, এনসিও, বেসামরিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত। বিএনসিসি'র মূলমন্ত্র হলো - 'জ্ঞান ও শৃঙ্খলা'।
সামাজিকীকরণ এমন একটি প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানব শিশু সমাজের একজন কাঙ্ক্ষিত পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসেবে গড়ে ওঠে। সমাজবিজ্ঞানী কিংসলে ডেভিসের মতে, "সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি পুরোপুরি সামাজিক মানুষে পরিণত হয়।" সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া একটি জীবনব্যাপী এবং বহুমুখী প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একজন মানুষ পুরোপুরি সামাজিক মানুষ হিসেবে পরিণত হয়।সামাজিকীকরণ ছাড়া ব্যক্তি তাঁর ব্যক্তিত্ব লাভে ব্যর্থ হয় এবং সমাজে সে একজন যোগ্য ও উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে না। সামাজিকীকরণ এমন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা মানব শিশু ক্রমশ ব্যক্তিত্বপূর্ণ সামাজিক মানুষে পরিণত হয়।
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] (শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ – ৪ জুলাই ১৯০২; জন্মনাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত, বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...," ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা, যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তার রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?
ফেসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেইসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত), হল মেটা প্ল্যাটফর্মসের মালিকানাধীন বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
জাতিসংঘ বিশ্বের জাতিসমূহের একটি সংগঠন, যার লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক অগ্রগতি এবং মানবাধিকার বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। ১৯৪৫ সালে ৫১টি রাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদ স্বাক্ষর করার মাধ্যমে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং পরবর্তীতে লুপ্ত লীগ অব নেশন্সের স্থলাভিষিক্ত হয়।
সুভাষচন্দ্র বসু উচ্চারণ (২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ - ?) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র যিনি এই সংগ্রামে নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত। ২০২১ সালে ভারত সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় পরাক্রম দিবস বলে ঘোষণা করেন।
দোলযাত্রা একটি সনাতনহিন্দু বৈষ্ণব উৎসব। বহির্বঙ্গে পালিত হোলি উৎসবটির সঙ্গে দোলযাত্রা উৎসবটি সম্পর্কযুক্ত। এটির উদ্ভব ভারতীয় উপমহাদেশে এবং সেখানে বেশি উদযাপিত হয় তবে দক্ষিণ এশীয় প্রবাসীদের মাধ্যমে এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চল এবং পশ্চিমা বিশ্বের কিছু অংশেও ছড়িয়ে পড়ছে। এই উৎসবের অপর নাম বসন্ত উৎসব। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোল যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (২৬ জুন ১৮৩৮ – ৮ এপ্রিল ১৮৯৪) ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি ঔপন্যাসিক। বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশে তার অসীম অবদানের জন্যে তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। তাকে সাধারণত প্রথম আধুনিক বাংলা ঔপন্যাসিক হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে গীতার ব্যাখ্যাদাতা হিসাবে, সাহিত্য সমালোচক হিসাবেও তিনি বিশেষ খ্যাতিমান। তিনি জীবিকাসূত্রে ব্রিটিশ রাজের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষার আদি সাহিত্যপত্র বঙ্গদর্শনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছদ্মনাম হিসেবে কমলাকান্ত নামটি বেছে নিয়েছিলেন। তাকে বাংলা উপন্যাসের জনক বলা হয়। এছাড়াও তিনি বাংলা সাহিত্যের সাহিত্য সম্রাট হিসেবে পরিচিত।বঙ্কিমচন্দ্র রচিত আনন্দমঠ (১৮৮২) উপন্যাসের কবিতা বন্দে মাতরম ১৯৩৭ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কর্তৃক ভারতের জাতীয় স্তোত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
চর্যাপদের কবি বা সিদ্ধাচার্য চর্যাপদ রচনা করেছিলেন। সাধারণত বজ্রযানী ও সহজযানী আচার্যগণই সিদ্ধাচার্য নামে অভিহিত হতেন। তিব্বতি ও ভারতীয় কিংবদন্তিতে এঁরাই 'চৌরাশি সিদ্ধা' নামে পরিচিত। তবে এই ৮৪ জন সিদ্ধাচার্য আসলে কারা ছিলেন তা সঠিক জানা যায় না।চর্যার কবিরা ছিলেন পূর্ব ভারত ও নেপাল রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসী। কেউ পূর্ববঙ্গ, কেউ উত্তরবঙ্গ, কেউ বা রাঢ়ের অধিবাসী ছিলেন। কেউ কেউ বিহার, কেউ ওড়িশা, কেউ বা আবার অসম বা কামরূপের বাসিন্দাও ছিলেন। এঁরা ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, ক্ষত্রিয়, বণিক এমনকি অন্ত্যজ শ্রেণি থেকেও এসেছিলেন। কেউ কেউ রাজবংশজাতও ছিলেন। এঁরা পূর্বাশ্রমের পিতৃপ্রদত্ত নাম ত্যাগ করেছিলেন বলে নাম দেখে এঁদের জাতি স্থির করা যায় না। এঁরা হিন্দুধর্মের সনাতন শাস্ত্রবিধান মানতেন না বলে এঁদের বেদবিরোধী ও নাস্তিক আখ্যা দেওয়া হয়। সাধনার নামে গোপনে কেউ কেউ যৌনাচারও করতেন বলে আধুনিক গবেষকগণ মত প্রকাশ করেন।আবিষ্কৃত পুঁথিটিতে ৫০টি চর্যায় মোট ২৪ জন সিদ্ধাচার্যের নাম পাওয়া যায়। এঁরা হলেন: লুই, কুক্কুরী, বিরুআ, গুণ্ডরী, চাটিল, ভুসুকু, কাহ্ন, কাম্বলাম্বর, ডোম্বী, শান্তি, মহিত্তা, বীণা, সরহ, শবর, আজদেব, ঢেণ্ঢণ, দারিক, ভাদে, তাড়ক, কঙ্কণ, জঅনন্দি, ধাম, তান্তী পা, লাড়ীডোম্বী। এঁদের মধ্যে লাড়ীডোম্বীর পদটি পাওয়া যায়নি। ২৪, ২৫ ও ৪৮ সংখ্যক পদগুলি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত পুঁথিতে না থাকলেও ডক্টর প্রবোধচন্দ্র বাগচী আবিষ্কৃত তিব্বতি অনুবাদে এগুলির রচয়িতার নাম উল্লিখিত হয়েছে যথাক্রমে কাহ্ন, তান্তী পা ও কুক্কুরী। এই নামগুলির অধিকাংশই তাদের ছদ্মনাম এবং ভনিতার শেষে তারা নামের সঙ্গে 'পা' (<পদ) শব্দটি সম্ভ্রমবাচক অর্থে ব্যবহার করতেন।
এই নিবন্ধটি ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পূর্ববর্তী ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস-সম্পর্কিত। ১৯৪৭-পরবর্তী ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ইতিহাস নিবন্ধটি। এছাড়া পাকিস্তান বা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন যথাক্রমে পাকিস্তানের ইতিহাস ও বাংলাদেশের ইতিহাস। দক্ষিণ ভারত, অবিভক্ত বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন যথাক্রমে দক্ষিণ ভারতের ইতিহাস, বাংলার ইতিহাস ও পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস।ভারতের ইতিহাস বলতে মূলত খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দ থেকে খ্রিষ্টীয় বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত, ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন -মধ্যযুগীয় ও প্রাক-আধুনিক কালের ইতিহাসকেই বোঝানো হয়। খ্রিষ্টের জন্মের প্রায় দশ লক্ষ(?) বছর আগে উক্ত ভূখণ্ডে প্রথম মানববসতি গড়ে উঠতে দেখা যায়। তবে ভারতের জ্ঞাত ইতিহাসের সূচনা হয় ৩৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সিন্ধু সভ্যতার উন্মেষ ও প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে। পরবর্তী হরপ্পা যুগের সময়কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দের সূচনায় এই ব্রোঞ্জযুগীয় সভ্যতার পতন ঘটে। সূচনা হয় লৌহ-নির্ভর বৈদিক যুগের। এই যুগেই সমগ্র গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে মহাজনপদ নামে পরিচিত ১৬টি প্রধান প্রধান রাজ্য-তথা-জনবসতির উত্থান ঘটে। এই জনপদগুলির অধিকাংশই রাজতান্ত্রিক হলেও এদের মধ্যে "লিচ্ছিবি" ছিল গণতান্ত্রিক। এই জনপদের মধ্যে অন্যতম ছিল মগধ।খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে মগধে জন্মগ্রহণ করেন মহাবীর ও গৌতম বুদ্ধ; পরবর্তীকালে যাঁরা ভারতের জনসাধারণের মধ্যে শ্রমণ ধর্মদর্শন প্রচার করেন।
বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকা
বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকা হচ্ছে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে এমন ব্যাংকসমূহের একটি তালিকা। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হলো বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহকে মূলত দুই শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে; তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত ব্যাংক। ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৪৩টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৩টি বিশেষায়িত ব্যাংক ও ৯টি বিদেশি ব্যাংকসহ বাংলাদেশে মোট তালিকাভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা ৬১টি এবং অ-তালিকাভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা ৫টি। প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশই সামাজিক ব্যবসার ধারণায় প্রতিষ্ঠিত হয় গ্রামীণ ব্যাংক নামক ক্ষুদ্রঋণ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, যা একটি বিশেষায়িত অ-তালিকাভুক্ত ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০০৬ সালে দারিদ্র বিমোচনে অবদান রাখায় গ্রামীণ ব্যাংক এবং মুহাম্মদ ইউনূস যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকাণ্ড সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যখন তুষারাবৃত উঁচু পর্বতের কোনও দুর্বল তুষারস্তরের উপর বসে থাকা একটি সুসংবদ্ধ তুষারস্তুপ (snow pack) বা তুষারাবরণ (snow cover) ভেঙে খাড়া ঢাল বেয়ে দ্রুত পিছলে নেমে আসে, তখন সেই ঘটনাকে হিমধস (ইংরেজি: Avalanche বা Snowslide) বলে। হিমধসের সমার্থক কিছু পরিভাষা হল হিমানীসম্পাত, হিমানীসম্প্রপাত, হিমস্খলন, ইত্যাদি। একবার শুরু হবার পরে সাধারণত হিমধসের বেগ দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং এর ভর ও আয়তন বৃদ্ধি পেতে থাকে।হিমধস সাধারণত একই পার্বত্য এলাকায় একই পথে বারংবার ঘটে, যাকে হিমধস পথ (Avalanche path) বলা হয়। গড়ে যতটুকু সময় পরপর একই পথে হিমধস ঘটে, তাকে পুনরাগমন বিরতি (Return interval) বলে। হিমধস পথটি তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত -- নিষ্ক্রান্তি অঞ্চল (Release zone), পথ (track) এবং অবক্ষেপণ অঞ্চল (Deposition zone)।হিমধস সাধারণত পার্বত্য অঞ্চলে শীতকালে বা বসন্তকালে হয়ে থাকলেও হিমবাহের চলনের কারণে বছরের যেকোনও সময়েই এটি ঘটতে পারে। মূলত মাধ্যাকর্ষণের কারণে হিমধসের সৃষ্টি হলেও এর পেছনে আরও কারণ থাকতে পারে। পর্বতে তুষারপাতের কারণে উপরের তুষারস্তরের ওজন বৃদ্ধি, কিংবা কোনও বিশেষ কাঠামোগত কারণে তুষারের ভেতরের ভারবহন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, ইত্যাদি হিমধসের পেছনের মূল কারণ হতে পারে। সাধারণত কোনও তুষারঝড়ে ১ ফুট বা তার বেশি পুরু তুষারপাত হলে তার ঠিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হিমধসের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তুষারের দ্রুত স্তুপীভবনের ফলে তার নিচের জমাট হিমখণ্ডের উপর চাপ অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে হিমখণ্ডের নিচের একটি দুর্বল স্তরে ফাটল ধরে। হিমখণ্ডের স্তরগুলি সারা শীতকাল ধরে একের পর এক সৃষ্টি হয়; একটি স্তর আরেকটি স্তরের সাথে কীভাবে আবদ্ধ থাকে, সেটিই নির্ধারণ করে কোন্ স্তরটি দুর্বল হবে ও ভেঙে যাবে।পার্বত্য অঞ্চলে হিমধস একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে গণ্য হয় কেননা এতে বিপুল পরিমাণ ভরবিশিষ্ট তুষার অত্যন্ত দ্রুতবেগে ধাবিত হয় এবং এর পথের উপরে পড়ে এমন সবকিছু ধ্বংস করে দিতে পারে। সেইসাথে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী বরফের নিচে চাপা পড়ে ও আটকা পড়ে মারা যেতে পারে। হিমধসে আটকা পড়ে গেলে হিমখণ্ড বা হিমস্তুপ থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরে যেতে হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এটি সম্ভব হয় না। তাই স্কিকারী বা স্নোবোর্ডকারীরা সরাসরি নিচের দিকে দ্রুত ধাবিত হয়ে পরে ডানে বা বামে সরে যেতে পারে। স্নোমোবিল চালকেরা মোটরের গতি বাড়িয়ে বিপদ থেকে রক্ষা পেতে পারে। যদি এর পরেও মুক্তি না পাওয়া যায়, তাহলে কোন শক্ত গাছকে আকড়ে ধরতে হয়। গাছ না থাকলে জোরে সাঁতার কাটতে হয়, কেননা মানুষের শরীর হিমধসের চেয়ে তিন গুণ ভারী এবং খুব সহজেই ডুবে যেতে পারে। হিমধস একবার থেমে গেলে এটি কংক্রিটের মতো শক্ত হয়ে জমাট বেঁধে যায়, তাই একবার হিমধসের ভেতরে আটকা পড়ে গেলে আর বের হবার উপায় নেই। যদি ১৫ মিনিটের মধ্যে খুঁড়ে বের করা হয়, তাহলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় ৯৩%। কিন্তু ৪৫ মিনিটের পরে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুব কম, মাত্র ২০ থেকে ৩০%। ২ ঘণ্টা পরে খুবই কম লোক বেঁচে থাকে।ইউরোপে ও উত্তর আমেরিকাতে হিমধসের বিপদ বা ঝুঁকি নির্দেশকারী স্কেল বা মাপনী আছে, যেগুলি পর্বতারোহীদেরকে সতর্ক করতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বাংলা: বাংলাদেশ গণসংঘ) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা
এটি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের পর থেকে বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রপতিদের সম্পূর্ণ তালিকা।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (WWI বা WW1), এছাড়াও বিশ্বযুদ্ধ-১, বা মহাযুুুুদ্ধ হিসাবে পরিচিত, একটি বৈশ্বিক যুদ্ধ যা ১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই ইউরোপে শুরু হয় এবং ১১ নভেম্বর ১৯১৮ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। ৬ কোটি ইউরোপীয়সহ আরো ৭ কোটি সামরিক বাহিনীর সদস্য ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম এই যুদ্ধে একত্রিত হয়। এটি ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের একটি এবং এর ফলে পরবর্তী সময়ে এর সাথে যুক্ত দেশগুলোর রাজনীতিতে বিরাট পরিবর্তন হয়। অনেক দেশে এটি বিপ্লবেরও সূচনা করে।
মৌর্য্য সাম্রাজ্য (সংস্কৃত: मौर्यसाम्राज्यम्) প্রাচীন ভারতে লৌহ যুগের একটি বিস্তীর্ণ সাম্রাজ্য ছিল। মৌর্য্য রাজবংশ দ্বারা শাসিত এই সাম্রাজ্য ৩২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ১৮৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত টিকে ছিল। ভারতীয় উপমহাদেশের পূর্বদিকে সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমতলভূমিতে অবস্থিত মগধকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল পাটলিপুত্র।মৌর্য্য সাম্রাজ্য তৎকালীন যুগের অন্ততম বৃহত্তম সাম্রাজ্য হিসেবে পরিগণিত হত, শুধু তাই নয়, ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে এর চেয়ে বড় সাম্রাজ্য কখনো তৈরী হয়নি। ৩২২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য নন্দ রাজবংশ উচ্ছেদ করে এই সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং তারপর মহান আলেকজান্ডারের সেনাবাহিনীর পশ্চাৎ অপসারণের সুযোগে নিজ সামরিক শক্তিবলে মধ্য ও পশ্চিম ভারতের আঞ্চলিক রাজ্যগুলিকে জয় করে বিরাট সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। ৩১৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যেই গ্রীক সত্রপগুলিকে পরাজিত করে মৌর্য্য সাম্রাজ্য সম্পূর্ণ উত্তর-পশ্চিম ভারত জুড়ে বিস্তৃত হয়। বর্তমান যুগের মানচিত্রের নিরিখে এই সাম্রাজ্য উত্তরে হিমালয়, পূর্বে অাসাম, পশ্চিমে বালুচিস্তান ও হিন্দুকুশ পর্বতমালা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য ও বিন্দুসার এই সাম্রাজ্যকে দক্ষিণ ভারতে বিস্তৃত করেন এবং অশোক কলিঙ্গ রাজ্য জয় করে সমগ্র দক্ষিণ ভারতে মৌর্য্য সাম্রাজ্যের শাসন প্রতিষ্ঠিত করেন। অশোকের মৃত্যুর পঞ্চাশ বছরের মধ্যেই ১৮৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এই সাম্রাজ্যের পতন ঘটে মগধে শুঙ্গ রাজবংশের উত্থান ঘটে।
সংস্কৃতি শব্দটির আভিধানিক অর্থ চিৎপ্রকর্ষ বা মানবীয় বৈশিষ্ট্যের উৎকর্ষ সাধন। ইংরেজি Culture-এর প্রতিশব্দ হিসেবে সংস্কৃতি শব্দটি ১৯২২ সালে বাংলায় প্রথম ব্যবহার শুরু হয়।সংস্কৃতি (বা কৃষ্টি) হলো সেই জটিল সামগ্রিকতা যাতে অন্তর্গত আছে জ্ঞান, বিশ্বাস, নৈতিকতা, শিল্প, আইন, রাজনীতি, আচার এবং সমাজের একজন সদস্য হিসেবে মানুষের দ্বারা অর্জিত অন্য যেকোনো সম্ভাব্য সামর্থ্য বা অভ্যাস।ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপিকা হেলেন স্পেনসার-ওটেইয়ের মতে, সংস্কৃতি হলো কিছু বুনিয়াদি অনুমান, মূল্যবোধ ও জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির, বিশ্বাস, নীতিমালা, প্রক্রিয়া এবং আচরণিক প্রথার অস্পষ্ট সমষ্টি–যা এক দল মানুষ ভাগ করে নেয় এবং সেই সমষ্টি দলের প্রত্যেক সদস্যের আচরণকে এবং তার নিকট অন্য সদস্যের আচরণের 'অর্থ' বা সংজ্ঞায়নকে প্রভাবিত করে (কিন্তু নির্ধারিত করে না)।
কুরআন মজিদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ বা কোরআন (আরবি: القرآن আল্-কুর্'আন্[টী১]) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন। এটিকে আরবি শাস্ত্রীয় সাহিত্যের সর্বোৎকৃষ্ট রচনা বলে মনে করা হয়। কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবিতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা হয়েছে।