The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
ইউক্রেন বা উক্রাইনা (ইউক্রেনীয়: Україна উক্রায়িনা আ-ধ্ব-ব: /ukraˈjina/) পূর্ব ইউরোপের একটি রাষ্ট্র। আয়তনের বিচারে রাশিয়ার পরে এটি ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র; এর আয়তন ৬,০৩,৬২৮ বর্গকিলোমিটার (২৭,০০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ক্রিমিয়া অঞ্চলসহ)। দেশটিতে প্রায় ৪ কোটি ৩৬ লক্ষ অধিবাসীর বাস, ফলে এটি ইউরোপ মহাদেশের ৮ম সর্বোচ্চ জনবহুল দেশ। ইউক্রেনের পশ্চিমে পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি, দক্ষিণ-পশ্চিমে রোমানিয়া ও মলদোভা), দক্ষিণে কৃষ্ণ সাগর ও আজভ সাগর, পূর্বে ও উত্তর-পূর্বে রাশিয়া এবং উত্তরে বেলারুস। দক্ষিণে ক্রিমিয়া উপদ্বীপে অবস্থিত স্বায়ত্বশাসিত ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্র ইউক্রেনের সীমান্তের মধ্যে পড়েছে। কিয়েভ ইউক্রেনের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।
শেন কেইথ ওয়ার্ন (১৩ সেপ্টেম্বর ১৩, ১৯৬৯ - ৪ মার্চ ২০২২) ছিলেন ভিক্টোরিয়ার ফার্নট্রি গুল্লি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার, যিনি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করেছিলেন। তাকে ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সেরা বোলার বিবেচনা করা হয়ে থাকে। ওয়ার্ন ১৯৯৪ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালম্যানাক-এ বর্ষসেরা উইজডেন ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছিলেন।ওয়ার্ন মূলত লেগ স্পিনার ছিলেন, সাথে লোয়ার অর্ডারে কার্যকরী ব্যাটিং করতেন।
রাশিয়া (রুশ: Россия রশিয়া), সরকারিভাবে রুশ ফেডারেশন নামে পরিচিত (রুশ: Российская Федерация রশিস্কায়া ফিদিরাৎসিয়া) যেটা পূর্ব ইউরোপে এবং উত্তর এশিয়ায় অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। এই দেশটি অর্ধ প্রেসিডেনসিয়াল ফেডারেল প্রজাতন্ত্র যার সংবিধান ৮৩ টি ফেডারেল বিষয় দ্বারা গঠিত। রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব পর্যন্ত নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড (উভয় দেশই কালিনিনগ্রাদ অব্লাস্ত সীমান্ত দিয়ে যুক্ত), বেলারুশ, ইউক্রেন, জর্জিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সাথে সীমান্ত আছে। দেশটির অখতস্ক সাগরের মাধ্যমে জাপানের সাথে ও বেরিং প্রণালীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার সাথে সামুদ্রিক সীমানা রয়েছে। রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ যার রয়েছে পৃথিবীর মোট আবাসযোগ্য জমির এক অষ্টমাংশ। দেশটির মোট আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল)। রাশিয়া বিশ্বের নবম জনবহুল দেশ যেখানে ২০১২ হিসাব অনুযায়ী ১৪৩ মিলিয়ন লোক বসবাস করে। পূর্ব ইউরোপে জায়গা সম্প্রসারণের ফলে রাশিয়া ১১টি সময় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এবং এখানে অনেক রকম ও বিস্তৃত পরিবেশের সমন্বয় ঘটেছে।
সাতই মার্চের ভাষণ ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মার্চ ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত এক ঐতিহাসিক ভাষণ। তিনি উক্ত ভাষণ বিকেল ২টা ৪৫ মিনিটে শুরু করে বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে শেষ করেন। উক্ত ভাষণ ১৮ মিনিট স্থায়ী হয়।এই ভাষণে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। এই ভাষণের একটি লিখিত ভাষ্য অচিরেই বিতরণ করা হয়েছিল। এটি তাজউদ্দীন আহমদ কর্তৃক কিছু পরিমার্জিত হয়েছিল। পরিমার্জনার মূল উদ্দেশ্য ছিল সামরিক আইন প্রত্যাহার এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবীটির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা। ১৩টি ভাষায় ভাষণটি অনুবাদ করা হয়। ১৩ তম হিসাবে মাহাতো নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর কুড়মালি ভাষায় ভাষণটি অনুবাদ করা হয়, যা নৃ তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ভাষায় ১ম অনুবাদ। নিউজউইক ম্যাগাজিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০১৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর ইউনেস্কো এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
সমাজতত্ত্ব একটি পাণ্ডিত্যপূর্ণ শৃঙ্খলা যা প্রাথমিকভাবে ফরাসি বিপ্লবের পর পরই জ্ঞানদান চিন্তার ফলে সমাজের প্রত্যক্ষবাদী বিজ্ঞান হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এটি বিজ্ঞান এবং জ্ঞানের দর্শনের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনের ফসল। বৃহত্তর অর্থে দর্শনের সাধারণ ভিত্তি থেকে পূর্ব নির্ধারিত ক্ষেত্র হিসেবে সামাজিক বিশ্লেষণের জন্ম। আধুনিকতা, পুঁজিবাদ, নগরায়ন, যৌক্তিকীকরণ, ধর্মনিরপেক্ষতা, উপনিবেশ স্থাপন এবং সাম্রাজ্যবাদের প্রতিক্রিয়া হিসেবে আধুনিক একাডেমিক সমাজতত্ত্ব আবির্ভূত হয়েছে। ১৯ শতকের শেষ দিকে সমাজবিজ্ঞান তার সামাজিকতার একক এবং নজরদারির নিমিত্তে আধুনিক জাতি রাষ্ট্রসমূহে একটি বিশেষ আগ্রহ সষ্টি করে একে প্রতিষ্ঠান হিসেবে গঠন করে। আলোকায়নের চেয়ে আধুনিকতার ধারণার উপর গুরুত্বারোপ করে, প্রায়ই শাস্ত্রীয় রাজনৈতিক দর্শন থেকে সমাজতাত্ত্বিক আলোচনাকে আলাদা করা হয়।সরকার, ব্যবসা, সংস্থা এবং অন্যান্য সামাজিক বিজ্ঞান পরিচালনার জন্য বিভিন্ন সংখ্যামূলক সামাজিক গবেষণা কৌশল সাধারণ টুলস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। সামাজিক গতিবিদ্যার তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা থেকে বিলুপ্ত হয়ে, এটি সামাজিক গবেষণা কে সমাজতত্ত্বের শৃঙ্খলা থেকে স্বায়ত্তশাসন দিয়েছে। একইভাবে, যে সকল প্রতিষ্ঠান মানুষ, মিথস্ক্রিয়া, সমাজ বা সংস্কৃতি অধ্যয়ন করে; তাদের বুঝাতে "সামাজিক বিজ্ঞান" ছাতা টার্ম হিসেবে অধিকার লাভ করে।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন (রুশ: Влади́мир Влади́мирович Пу́тин; জন্ম: ৭ অক্টোবর, ১৯৫২) লেনিনগ্রাদে জন্মগ্রহণকারী রুশ প্রজাতন্ত্র বা রাশিয়ার অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ২য় মেয়াদে ৭ মে, ২০১২ তারিখ থেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতাসীন। এর পূর্বে ২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০০ ও ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও, ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনাইটেড রাশিয়া দলের সভাপতি এবং রাশিয়া ও বেলারুশের মন্ত্রীসভার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০ – ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা বঙ্গবন্ধু, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের ঐক্যতন্ত্র, সংক্ষেপে সোভিয়েত ঐক্যতন্ত্র বা সোভিয়েত ইউনিয়ন, ছিল একটি ইউরেশীয়া পর্যন্ত বিস্তৃত একটি সমাজতান্ত্রিক দেশ, যার অস্তিত্ব ছিল ১৯২২ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। এটা সাধারণভাবে অনেকগুলো প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সম্মিলিত দেশ ছিল এবং সেখানে কোনও ব্যক্তিমালিকানা ছিল না, সমস্ত সম্পত্তি সামাজিক বা রাষ্ট্রের অধীনে ছিল। এটি একটি একদলীয় রাষ্ট্র ছিল, মূল পার্টি ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টি। এই সমাজতান্ত্রিক দেশের রাজধানী ও সর্বাধিক জনসংখ্যাবিশিষ্ট্য শহর হলো মস্কো। এছাড়া অনান্য বৃহৎ নগরগুলো হলো লেনিনগ্রাদ (রুশ সোভিয়েত), কিয়েভ (ইউক্রেন সোভিয়েত), মিনস্ক (বালুরাশিয়া সোভিয়েত), তাশখন্দ (উজবেক সোভিয়েত), আলমাতি (কাজাখ সোভিয়েত), নভোসিবির্স্ক, (রুশ সোভিয়েত)। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল বিশ্বের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্র, যার আয়তন ছিল ২,২৪,০২,২০০ বর্গকিলোমিটার (৮৬,৪৯,৫০০ বর্গমাইল)। এই দেশে মোট ১১টি টাইম-জোন ছিল।
চেচেন প্রজাতন্ত্র (/ˈtʃɛtʃɨn/; রুশ: Чеченская Республика, Chechenskaya Respublika; চেচেন ভাষায়: Нохчийн Республика, Noxçiyn Respublika), সাধারণত চেচনিয়া হিসাবে উল্লেখ করা করা হয় থাকে (/ˈtʃɛtʃniə/; রুশ: Чечня; চেচেন ভাষায়: Нохчийчоь, Noxçiyçö) এছাড়াও, বানান কখনও কখনও ইচকেরিয়া (Ichkeria; ইংরেজি: খনিজের ভূমি) হিসাবে উল্লেখ করা হয়। চেচনিয়া রাশিয়ার একটি প্রজাতন্ত্র। এটা উত্তর ককেশাসে পূর্ব ইউরোপের সর্বদক্ষিণ অংশে অবস্থিত, এবং কাস্পিয়ান সাগরের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে। প্রজাতন্ত্রের রাজধানী গ্রোজনি শহর। ২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী জনসংখ্যা হল, ১২ লক্ষ ৬৮ হাজার ৯৮৯ জন, যাদের বেশিরভাগ প্রধানত চেচেন জাতিগোষ্ঠির এবং তার সাথে কিছু রুশ সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মানুষ ছিল।
ইসলাম রাশিয়ার চারটি প্রধান ধর্মের মধ্যে অন্যতম। খ্রীষ্টধর্মের পর ইসলাম রাশিয়ার দ্বিতীয় সর্বাধিক স্বীকৃত ধর্ম। ইউরোপে রাশিয়ার সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে; এবং ২০১৭ সালে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের মতে, রাশিয়ায় মুসলমানদের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ১০,২২০,০০০ বা ৬%। ২০১২ সালে পরিচালিত একটি ব্যাপক জরিপ অনুযায়ী, মুসলিমরা রাশিয়ার জনসংখ্যার ৬.৫% ছিল। যাইহোক, সামাজিক অস্থিরতার কারণে ইসলামিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা সহ দুটি ফেডারেল বিষয়ের জনসংখ্যা জরিপ করা হয়নি, যার জনসংখ্যা একসাথে প্রায় ২মিলিয়ন ছিল, যথা চেচনিয়া এবং ইনুগুশটিয়া।আইনের অধীনে এবং রাশিয়ার রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী ধর্মগুলির মধ্যে একটি হিসাবে স্বীকৃত, ইসলাম রাশিয়ার ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের একটি অংশ, এবং রাশিয়ান সরকার দ্বারা ভর্তুকি দেওয়া হয়। অর্থোডক্স খ্রীষ্টধর্মের পাশাপাশি একটি প্রধান রুশ ধর্ম হিসেবে ইসলামের অবস্থান ক্যাথরিন দ্য গ্রেটের সময় থেকে শুরু হয়, যিনি ওরেনবার্গ অ্যাসেম্বলির মাধ্যমে ইসলামিক ধর্মযাজক এবং বৃত্তির পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন।শুরু থেকেই রুশ এবং এর উত্তরসূরি রাষ্ট্রসমূহ প্রতিবেশী, শাসক বা প্রজা হিসেবে মুসলিমদের সংস্পর্শে এসেছে। মুসলিম ভূমিসমূহ থেকে দূরপাল্লার রৌপ্য বাণিজ্য প্রথম রুশ রাষ্ট্রসমূহ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, এবং খ্রিস্টধর্মের পূর্বে ইসলাম ধর্ম রুশ ভূমিতে পৌঁছায়। ৯৮৮ সালে কিয়েভান রাসের শাসক ভ্লাদিমিরের খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের কয়েক দশক আগেই দশম শতাব্দীর মধ্যভাগে ভোলগা বুলগার রাষ্ট্রের শাসকরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। ১২৩৬ থেকে ১২৩৭ সালের মধ্যে মোঙ্গলরা ভোলগা বুলগার রাষ্ট্র ধ্বংস করে দেয় এবং এরপর সমগ্র রুশ ভূমিকে পদানত করে। ১৩২৭ সালে গোল্ডেন হোর্ডের শাসক উজবেক খান ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং এর ফলে এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের জন্য রুশ ভূমিসমূহের কর্তৃত্ব মুসলিমদের হাতে ন্যস্ত হয়। এরপর মাস্কোভি ও গোল্ডেন হোর্ডের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যের পরিবর্তন ঘটতে থাকলে মস্কোর রাজপুরুষেরা ক্রমাগত গোল্ডেন হোর্ডের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত সংঘর্ষে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৫৫২ সালে রাশিয়ার জার চতুর্থ আইভান গোল্ডেন হোর্ডের উত্তরসূরি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রাষ্ট্র কাজান দখল করেন এবং ভৌগোলিক সম্প্রসারণের এক সুদীর্ঘ প্রক্রিয়া আরম্ভ করেন। ক্রমে ক্রিমিয়া, ককেশাস এবং মধ্য এশিয়া রাশিয়ার পদানত হয় এবং এর ফলে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে বহু মুসলিম জাতি রুশ শাসনাধীনে আসে। ১৯৯৭ সালে রুশ সংবিধানে খ্রিস্টধর্ম, বৌদ্ধধর্ম এবং ইহুদিধর্মের পাশাপাশি ইসলাম ধর্মকেও রাশিয়ার 'সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে'র অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। বর্তমানে রাশিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫% ইসলাম ধর্মাবলম্বী।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ – ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি এশীয়দের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ( পূর্বনাম আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস) প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখে পালিত হয়। সারা বিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিবস উদ্যাপন করে থাকেন। বিশ্বের এক এক প্রান্তে নারীদিবস উদ্যাপনের প্রধান লক্ষ্য এক এক প্রকার হয়। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা উদ্যাপনের মুখ্য বিষয় হয়, আবার কোথাও মহিলাদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠাটি বেশি গুরুত্ব পায়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (WWI বা WW1), এছাড়াও বিশ্বযুদ্ধ-১, বা মহাযুুুুদ্ধ হিসাবে পরিচিত, একটি বৈশ্বিক যুদ্ধ যা ১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই ইউরোপে শুরু হয় এবং ১১ নভেম্বর ১৯১৮ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। ৬ কোটি ইউরোপীয়সহ আরো ৭ কোটি সামরিক বাহিনীর সদস্য ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম এই যুদ্ধে একত্রিত হয়। এটি ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের একটি এবং এর ফলে পরবর্তী সময়ে এর সাথে যুক্ত দেশগুলোর রাজনীতিতে বিরাট পরিবর্তন হয়। অনেক দেশে এটি বিপ্লবেরও সূচনা করে।
পারমাণবিক অস্ত্র এমন এক ধরনের যন্ত্র যা নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার ফলে প্রাপ্ত প্রচণ্ড শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি করে। সে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া ফিসানের ফলে অথবা ফিসান ও ফিউশান উভয়েরই সংমিশ্রনেও সংঘটিত হতে পারে। উভয় বিক্রিয়ার কারণেই খুবই অল্প পরিমাণ পদার্থ থেকে বিশাল পরিমাণে শক্তি নির্গত হয়। আধুনিক এক হাজার কিলোগ্রামের একটি থার্মো-নিউক্লিয়ার অস্ত্রের বিস্ফোরন ক্ষমতা প্রচলিত প্রায় ১ বিলিয়ন কিলোগ্রামের প্রচণ্ড বিস্ফোরক দ্রব্যের চেয়েও বেশি।
২০২২ নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসর যেটি বর্তমানে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে, কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি কারণে প্রতিযোগিতাটি স্থগিত করা হয়। ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) নিশ্চিত করে যে টুর্নামেন্টটি ২০২২ সালের ৪ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।স্বাগতিক হওয়ার সুবাদে নিউজিল্যান্ড সরাসরি টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা লাভ করে। প্রতিযোগিতায় খেলার যোগ্য অন্য দলসমূহ নির্ধারণ করা হয় আইসিসির ওডিআই র্যাংকিং অনুসারে। প্রাথমিকভাবে ২০১৭–২০২০ আইসিসি নারী চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে আরও তিন দলের বিশ্বকাপে উত্তীর্ণ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ২০১৮ সালে নিয়মটি পরিবর্তন করে স্বাগতিক দলের সাথে আরও চারটি দল উত্তীর্ণ হবে বলে নির্ধারণ করা হয়। বাকি তিনটি দলের ২০২১ নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব থেকে উঠে আসার কথা ছিল, যে টুর্নামেন্টটি ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীতে স্থগিত করা হয়। কিন্তু টুর্নামেন্টটি চলার মাঝপথেই সেটি বাতিল হয়ে যায় ও র্যাংকিং-এ এগিয়ে থাকা দলসমূহ বিশ্বকাপে উত্তীর্ণ হয়।
বিটিএস (কোরীয়: 방탄소년단) (যারা বাংতান বয়েজ নামেও পরিচিত,) হলো ৭ সদস্যের দক্ষিণ কোরিয়ান বয় ব্যান্ড। এ ৭ সদস্যের ব্যান্ড বিগহিট মিউজিক এর অধীনে ২০১০ সালে ট্রেইনি হিসেবে এবং ২০১৩ সালে ২ কুল ৪ স্কুল অ্যালবাম নিয়ে পুরো বিশ্বের সামনে নিজেদের আত্মপ্রকাশ করে। তারা মূলত হিপ হপ সঙ্গীতের গ্রুপ হলেও তাদের গানগুলোতে বিভিন্ন সঙ্গীতের ধরন প্রকাশ পায়। গানের মাধ্যমে তারা সাহিত্য, মনোস্তাত্বিক বিষয় এবং নিজেকে ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরে।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারতীয় প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
মহাদেশ বলতে পৃথিবীর বড় ভূখণ্ডসমূহকে বুঝায়। পৃথিবীতে ৭ টি মহাদেশ রয়েছে। মহাদেশসমূহ হল এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ওশেনিয়া, ও অ্যান্টার্কটিকা।দ্বীপসমূহকে পার্শ্ববর্তী মহাদেশের অন্তর্গত হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপসমূহকে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন ভূ-রাজনৈতিক অঞ্চল ওশেনিয়া সৃষ্টি করা হয়েছে।
মুঘল সাম্রাজ্য (উর্দু: مغلیہ سلطنت, Mug̱ẖliyah Salṭanat, ফার্সি: گورکانیان, Gūrkāniyān) ছিল ভারত উপমহাদেশের একটি সাম্রাজ্য। প্রায় দুই শতাব্দী ধরে সাম্রাজ্য পশ্চিমে সিন্ধু অববাহিকার বাইরের প্রান্ত, উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তান এবং উত্তরে কাশ্মীর, পূর্বে বর্তমান আসাম ও বাংলাদেশের উচ্চভূমি এবং দক্ষিণ ভারতের ডেকান মালভূমির উপভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মুঘল সাম্রাজ্য মূলতঃ পারস্য ও মধ্য এশিয়ার ভাষা, শিল্প ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত ছিল।পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইবরাহিম লোদির বিরুদ্ধে বাবরের জয়ের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়। মুঘল সম্রাটরা ছিলেন মধ্য এশিয়ার টার্কো-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত। তারা চাগতাই খান ও তৈমুরের মাধ্যমে চেঙ্গিস খানের বংশধর। ১৫৫৬ সালে আকবরের ক্ষমতারোহণের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের ধ্রূপদী যুগ শুরু হয়। আকবর ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরের শাসনামলে ভারতে অর্থনৈতিক প্রগতি বহুদূর অগ্রসর হয়। আকবর অনেক হিন্দু রাজপুত রাজ্যের সাথে মিত্রতা করেন। কিছু রাজপুত রাজ্য উত্তর পশ্চিম ভারতে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখে কিন্তু আকবর তাদের বশীভূত করতে সক্ষম হন। মুঘল সম্রাটরা মুসলিম ছিলেন তবে জীবনের শেষের দিকে শুধুমাত্র সম্রাট আকবর ও তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর নতুন ধর্ম দীন-ই-ইলাহির অনুসরণ করতেন।মুঘল সাম্রাজ্য কাঠামো, যাইহোক, কখনও কখনও বাবরের নাতি আকবরএর শাসনের তারিখ ১৬০০ থেকে ধরা হয়। এই সাম্রাজ্যিক কাঠামো ১৭২০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়, শেষ প্রধান সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। তার রাজত্বকালে সাম্রাজ্যতার সর্বোচ্চ ভৌগোলিক ব্যাপ্তি অর্জন করে। পরবর্তীতে হ্রাস, বিশেষ করে ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসনামলে, পুরাতন দিল্লি এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে, ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ রাজ দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যায়।
ইসলাম ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। ২০০৬ সালের তথ্য অনুসারে তা মোট জনসংখ্যার ০.৬%-০.৯% । ১৫ শতকে ক্রিমীয় খানাত প্রতিষ্ঠার সময় থেকে ইউক্রেনে এই ধর্মের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।সুন্নি ইসলামের হানাফি মাযহাব ইউক্রেনের বৃহত্তম অ-খ্রিস্টান ধর্ম এবং ইউক্রেনীয় মুসলমানদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্রিমীয় তাতার। ইউক্রেনের আদিবাসী অন্যান্য তুর্কি জনগোষ্ঠী, প্রধানত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনে বসবাস করেন, তারা ইসলামের অন্যান্য ধরন অনুশীলন করে। এর মধ্যে রয়েছে ভোলগা তাতার, আজেরিস, উত্তর ককেশীয় জাতিগোষ্ঠী এবং উজবেক। ২০১২ সালে আনুমানিক ৫,০০,০০০ মুসলমান ইউক্রেনে বাস করত, যার মধ্যে ৩,০০,০০০ ক্রিমীয় তাতার ছিল। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উম্মাহর মুফতি ইসমাগিলোভ ইউক্রেনে মুসলমান সংখ্যা ১০ লক্ষ গণনা করেন।যদিও ইউক্রেনে মুসলমানদের জন্য কোন সাধারণ শাসন কাঠামো নেই, বহুজাতিক অঞ্চলের এক জাতিগত সম্প্রদায়গুলি তাদের জাতিগত প্রতিষ্ঠান দ্বারা উপস্থাপিত হয় এবং তাদের আন্তর্জাতিক সমকক্ষদের দ্বারা সমর্থিত হয়। কমিউনিটি সমর্থনকারী প্রধান ইসলামিক প্রতিষ্ঠানগুলি কিয়েভ, ক্রিমিয়া, সিম্ফেরপল এবং ডনেটস্কে পাওয়া যায়। কিয়েভ এবং ক্রিমিয়ায় স্বাধীন সালাফি সম্প্রদায় এবং কিয়েভ, খারকিভ এবং লুহানস্কে শিয়া সম্প্রদায়ও পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকাণ্ড সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রাজনীতি বা রাষ্ট্রনীতি বা রাজগতি বা রাজবুদ্ধি হলো হল দলীয় বা নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ক্ষমতার সম্পর্কের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিষয়ক কর্মকাণ্ডের সমষ্টি, উদাহরণস্বরুপ সম্পদের বণ্টন হল এমন একটি কর্মকাণ্ড। রাজনীতি এ্যাকাডেমিক অধ্যয়নকে রাজনীতিবিজ্ঞান বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কাজ হলো রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করা।
মৈমনসিংহ গীতিকা একটি সংকলনগ্রন্থ যাতে ময়মনসিংহ অঞ্চলে প্রচলিত দশটি পালাগান লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। প্রথম খণ্ডের দশটি পালার রচয়িতা ভিন্ন ভিন্ন হলেও সংগ্রাহক চন্দ্রকুমার দে। এই গানগুলো প্রাচীন কাল থেকে মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত হয়ে আসছে। তবে ১৯২৩-৩২ সালে ডক্টর দীনেশচন্দ্র সেন এই গানগুলো অন্যান্যদের সহায়তায় সংগ্রহ করেন এবং স্বীয় সম্পাদনায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রকাশ করেন। তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার নেত্রকোণা মহকুমার আইথর নামক স্থানের আধিবাসী চন্দ্রকুমার দে এসব গাথা সংগ্রহ করছিলেন। এই গীতিকাটি বিশ্বের ২৩টি ভাষায় মুদ্রিত হয়।
যুগ যুগ ধরে সাধারণ মানুষ যে সংস্কৃতি লালন করে আসছে সাধারন অর্থে তাই লোকসংস্কৃতি । লোকসংস্কৃতির বিশেষত্ব নিহিত আছে 'লোক' কথাটির মধ্যে। লোক সংস্কৃতির জন্ম সাধারণ মানুষের মুখে মুখে , তাদের চিন্তায় ও কর্মে। ঐতিহ্যনুসারে বৃহত্তর গ্রামীণ জনগোষ্টীর ধর্মীয় ও সামাজিক বিশ্বাস, আচার-আচরণ ও অনুষ্ঠান, জীবন-যাপন প্রণালী, শিল্প ও বিনোদন ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা সংস্কৃতিকে সহজ ভাষায় লোকসংস্কৃতি বলা হয়। আদিকাল থেকেই বাঙালীরা লোক সংস্কৃতি লালন করে আসছে। বাংলাদেশের লোক সংস্কৃতি এদেশের কৃষিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এটি বিরাজমান রয়েছে, তবে কালের পরিক্রমায় অনেক কিছুতেই পরিবর্তন এসেছে। কিছু রীতি বা আচারের উপর ভিত্তি করে লোক সংস্কৃতি গড়ে উঠে। যেমনঃ ভূতের ভয়ঃ লোকসমাজে ভুতের ভয় থেকে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন কাল্পনিক চরিত্র, যেমনঃ শাঁখচুন্নি, মামদো ভুত ইত্যাদি। এছারা ভূত তাড়ানোর পেশা যেমনঃওঝা প্রভৃতিও তৈরি হয়েছে!
সংস্কৃতি শব্দটির আভিধানিক অর্থ চিৎপ্রকর্ষ বা মানবীয় বৈশিষ্ট্যের উৎকর্ষ সাধন। ইংরেজি Culture-এর প্রতিশব্দ হিসেবে সংস্কৃতি শব্দটি ১৯২২ সালে বাংলায় প্রথম ব্যবহার শুরু হয়।সংস্কৃতি (বা কৃষ্টি) হলো সেই জটিল সামগ্রিকতা যাতে অন্তর্গত আছে জ্ঞান, বিশ্বাস, নৈতিকতা, শিল্প, আইন, রাজনীতি, আচার এবং সমাজের একজন সদস্য হিসেবে মানুষের দ্বারা অর্জিত অন্য যেকোনো সম্ভাব্য সামর্থ্য বা অভ্যাস।ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপিকা হেলেন স্পেনসার-ওটেইয়ের মতে, সংস্কৃতি হলো কিছু বুনিয়াদি অনুমান, মূল্যবোধ ও জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির, বিশ্বাস, নীতিমালা, প্রক্রিয়া এবং আচরণিক প্রথার অস্পষ্ট সমষ্টি–যা এক দল মানুষ ভাগ করে নেয় এবং সেই সমষ্টি দলের প্রত্যেক সদস্যের আচরণকে এবং তার নিকট অন্য সদস্যের আচরণের 'অর্থ' বা সংজ্ঞায়নকে প্রভাবিত করে (কিন্তু নির্ধারিত করে না)।
স্যাটেলাইট রাষ্ট্র (ইংরেজি: Satelite State; স্যাটেলাইট স্টেট) বলতে এমন সব রাষ্ট্রকে বোঝানো হয়, যে রাষ্ট্রগুলো কাগজে-কলমে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করলেও বাস্তবে কোনো শক্তিশালী দেশের প্রভাব বলয়ে থাকার কারণে স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলে। শক্তিশালী দেশটি এক্ষেত্রে তার স্যাটেলাইট রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা খাত, অর্থনীতি ও রাজনীতি সবক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে এবং নিজের সিদ্ধান্তগুলো চাপিয়ে দেয়। এই কাজ করার জন্য শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর পক্ষ থেকে স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পুতুল সরকার বসানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হয়। কিছু প্রেক্ষাপটে এটি স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাবের অন্যান্য দেশগুলিকেও নির্দেশ করে, যেমন: উত্তর কোরিয়া (বিশেষত ১৯৫০-১৯৫৩ সালের কোরীয়ান যুদ্ধের আশেপাশের বছরগুলিতে) ও কিউবা (বিশেষত ১৯৭২ সালে কমকনে যোগদানের পর) এবং আমেরিকার প্রভাবের ক্ষেত্রে কিছু দেশে, যেমন: দক্ষিণ ভিয়েতনাম (বিশেষ করে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়)।
মিশ্র অর্থনীতি এমন একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা একটি অর্থনীতির বিভিন্ন উপাদানগুলিকে একটি পরিকল্পিত পদ্ধতির আওতায় একত্রীত করে। মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের সাথে মুক্ত বাজার বা বেসরকারী উদ্যোগের সংমিশ্রণ করে। যদিও মিশ্র অর্থনীতির কোন একক সংজ্ঞা নেই, বিভিন্নভাবে এর সঙ্গায়ন করা যায় তবে এর একটি সংজ্ঞা হল রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের পাশাপাশি বেসরকারী বিনিয়োগের ব্যবস্থা যে অরথনীতিতে থাকে তাকে মিশ্র অর্থনীতি বলে। আরেকভাবে বলতে গেলে পুঁজিবাদী এবং সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সক্রিয় সহযোগিতা মনোভাব মূলক সহবস্থানই মিশ্র অর্থনীতি। এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা মূলত অরাজনৈতিক প্রকৃতির একটি অর্থনীতির যেখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগের সঙ্গে সরকারি উদ্যোগের মিশ্রণ রয়েছে। উল্লেখ্য বাংলাদেশেও মিশ্র অর্থনীতি ব্যবস্থা চালু রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America; উচ্চারণ: ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি স্বশাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি "আমেরিকা" নামেও পরিচিত। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি রাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি অঞ্চলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত; আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যটি মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। এছাড়াও ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে পাাঁচটি অঞ্চল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
ইউরোপীয় দেশগুলো ও অধীনস্থ ভূভাগের তালিকা
নিচের তালিকায় সমস্ত সত্তা বিভিন্ন সাধারণ সংজ্ঞা, এমনকি আংশিকভাবে পতিত, ভৌগোলিক বা রাজনৈতিকভাবে ইউরোপে রয়েছে। প্রদর্শিত তথ্য সূত্র প্রতি ক্রস রেফারেন্সড নিবন্ধ অনুসারে।
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন হল বড়ু চণ্ডীদাস রচিত একটি মধ্যযুগীয় বাংলা কাব্য। এটি আদি মধ্যযুগীয় তথা প্রাক্-চৈতন্য যুগে বাংলা ভাষায় লেখা একমাত্র আখ্যানকাব্য এবং বৌদ্ধ সহজিয়া সংগীত-সংগ্রহ চর্যাপদের পর আদি-মধ্যযুগীয় বাংলা ভাষার আবিষ্কৃত দ্বিতীয় প্রাচীনতম নিদর্শন। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামের একটি গোয়ালঘর থেকে এই কাব্যের খণ্ডিত পুথিটি আবিষ্কার করেন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁরই সম্পাদনায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে পুথিটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। তিনি এই পুথির নামকরণ "শ্রীকৃষ্ণকীর্তন" করলেও পুথির মধ্যে একটি চিরকুটে লিখিত শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ নামটি দৃষ্টে কোনও কোনও গবেষক পুথিটির নাম "শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ" রাখারই পক্ষপাতী ছিলেন; যদিও নামটি সংশয়াতীত নয় বলে বর্তমানে কাব্যটিকে "শ্রীকৃষ্ণকীর্তন" নামেই অভিহিত করা হয়।
প্রথম চেচেন যুদ্ধ বা চেচনিয়ার যুদ্ধ ছিল ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত রাশিয়া এবং ইচকেরিয়া চেচেন প্রজাতন্ত্রের মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি যুদ্ধ। ১৯৯৪–১৯৯৫ সালের প্রাথমিক অভিযানে রুশ সৈন্যরা চেচনিয়ার পার্বত্য অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার প্রচেষ্টা চালায়, কিন্তু প্রচুর লোকবল, অস্ত্রশস্ত্র ও বিমান সমর্থন থাকা সত্ত্বেও চেচেন গেরিলা যোদ্ধারা রুশ বাহিনীকে কোণঠাসা করে ফেলে। রুশ সৈন্যদের মনোবলের অভাব, রুশ জনমতের তীব্র বিরোধিতা এবং গ্রোজনির যুদ্ধে রুশদের পরাজয়ের ফলে বোরিস ইয়েলৎসিনের সরকার ১৯৯৬ সালে চেচেনদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে বাধ্য হয় এবং পরবর্তী বছর তাদের সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে।
মুহাম্মাদ (আরবি: مُحَمَّد; ২৯ আগস্ট ৫৭০ – ৮ জুন ৬৩২; মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত), ছিলেন একজন আরবের ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক নেতা এবং ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। ইসলামী মতবাদ অনুসারে, তিনি হলেন ঐশ্বরিকভাবে প্রেরিত ইসলামের সর্বশেষ নবী (আরবি: النبي; আন-নাবিয়্যু), তথা ‘বার্তাবাহক’ (আরবি: الرسول; আল-রাসুল), যার উপর ইসলামের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কুরআন অবতীর্ণ হয়। আদম, ইব্রাহিম, মূসা, যীশু এবং অন্যান্য নবীদের মতোই মুহাম্মদ একেশ্বরবাদী শিক্ষা প্রচার করার জন্য প্রেরিত। অমুসলিমদের মতে, তিনি ইসলামি জীবনব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল ছিলেন, তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সাফল্য। কুরআনের পাশাপাশি তার শিক্ষা এবং অনুশীলনগুলি ইসলামী ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে।
পারমাণবিক শক্তিধর দেশের তালিকা
পারমাণবিক শক্তি পরমাণুর তেজস্ক্রিয়তা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনের একটি প্রক্রিয়া। যখন কোন তেজস্ক্রিয় পদার্থ যেমন ইউরেনিয়াম-২৩৫ (ইউরেনিয়ামের একটি আইসোটোপ) কে নিউট্রন দ্বারা আঘাত করা হয় তখন তেজস্ক্রিয় পদার্থে পারমাণবিক শৃংখল বিক্রিয়া (nuclear chain reaction) শুরু হয়। এই প্রক্রিয়াকে বলে পারমাণবিক বিযোজন (Nuclear fission)। শৃংখল বিক্রিয়ার ফলে প্রচুর তাপ নির্গত হয়, যা পানিকে ফুটিয়ে বাস্প উৎপন্ন করে। উদ্ভূত বাস্প বাস্পীয় টারবাইন চালাতে ব্যবহৃত হয়।
ভারতে বর্ণপ্রথা হলো জাতি এর উপমূর্তিগত উদাহরণ। প্রাচীন ভারতে এর উৎস রয়েছে এবং মধ্যযুগীয়, আদি-আধুনিক, এবং আধুনিক ভারতে বিশেষত মোগল সাম্রাজ্য এবং ব্রিটিশ রাজের বিভিন্ন শাসকগোষ্ঠী দ্বারা এটি রূপান্তরিত হয়েছিল। এটি আজ ভারতে শিক্ষাগত এবং চাকরি সংরক্ষণ এর একটি ভিত্তি হিসেবে রয়ে গেছে। বর্ণপ্রথা দুটি পৃথক ধারণা নিয়ে গঠিত, এগুলি হলোবর্ণ এবং জাতি যা এই পদ্ধতির বিশ্লেষণের বিভিন্ন স্তরের দিক হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।
সাইমন কমিশন বা ইন্ডিয়ান স্ট্যাটু্যটরি কমিশন রিপোর্ট বা ভারতীয় সংবিধানিক কমিশন ছিল ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সাতজন সদসবৃন্দের দ্বারা গঠিত কমিশন যারা ১৯২৭ সালেতে ভারতের সংবিধানিক পুনর্গঠন অধ্যয়ন করতে এসেছিলেন। ভারতে ভারতীয় সমস্যাবলি অনুসন্ধান করে শাসনতান্ত্রিক সংস্কার সম্পর্কে প্রতিবেদন পেশ করার জন্য এই কমিশন গঠন করা হয়েছিল (১৯২৭)। এই কমিশন ছিল সরকার ও বিরোধীদলীয় সাতজন সংসদ সদস্য নিয়ে গঠিত একটি সংসদীয় কমিশন। সভাপতি স্যার জন সাইমনের নামানুসারে এ কমিশন সাইমন কমিশন নামেও পরিচিত। কাজী নজরুল ইসলাম সাইমন কমিশনের রিপোর্ট নামে ব্যাঙ্গাত্বক একটি কবিতা লিখেন। ১৯২৮ সালের ৩০ অক্টোবর, লালা লাজপত রায় সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনিতে অংশগ্রহণ করেন । সেখানে তিনি পুলিশের লাঠি চার্চে গভীর ভাবে আহত হন। গুরুতরভাবে আহত হয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘’আমার শরীরে করা ব্রিটিশের প্রহার, ব্রিটিশের ধংসের কারণ হয়ে উঠবে’’। ব্রিটিশের প্রহারে গুরুতরভাবে আহত হওয়ার ফলে ১৯২৮ সালের ১৭ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রতি বৎসর বিভিন্ন দিনে বিশ্বব্যাপী নানা "দিবস" পালিত হয়। এই সকল বৈশ্বিক দিবস বা বিশ্ব দিবস বা আন্তর্জাতিক দিবসসমূহের তালিকা এই পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো। এই সকল দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে - কোন একটি নির্দিষ্ট দিনে আন্তর্জাতিকভাবে সাম্প্রতিককালের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধি বা ক্ষেত্র বিশেষে কোন অতীত ঘটনা স্মরণ বা উদ্যাপন করা।
ইসলাম ধর্মমতে লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রাত (যা সচরাচর শবেমেরাজ নামে অধিকতর পরিচিত) হচ্ছে যে রাতে ইসলামের নবি মুহাম্মদ (সা:) ঐশ্বরিক উপায়ে ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেছিলেন এবং স্রষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। অনেক মুসলমান এবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে এই রাতটি উদ্যাপন করেন। আবার অনেক মুসলমান এই রাত উদ্যাপন করেন না বরং এই রাত উদ্যাপন করাকে বিদআত বলেন। ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব আছে, কেননা এই মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ অর্থাৎ নামাজ, মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যক (ফরজ) করা হয় এবং এই রাতেই দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করার বিধি মুসলমানদের জন্য নিয়ে আসেন নবি মুহাম্মদ (সা:)।
সম্প্রদায় হল ক্ষুদ্র বা বৃহৎ জনগোষ্ঠী যাদের মধ্যে কিছু বিষয়, যেমন সামাজিক প্রথা, ধর্ম, মূল্যবোধ, ও পরিচয়ের মিল থাকে। সম্প্রদায় প্রায়শই একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থান (যেমন, দেশ, শহর, বা গ্রাম) ভিত্তিতে গড়ে ওঠে, তবে সব ক্ষেত্রে নয়। নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থানের বাইরেও দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে ওঠলে তাকে সম্প্রদায় বলা হয়, যেমন ইন্টারনেট সম্প্রদায়। মানুষ এই ধরনের সামাজিক সম্পর্ককে তাদের পরিচয়, রীতিনীতি, ও সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন পরিবার, কর্মক্ষেত্র, সরকার, সমাজ, বা মানবসেবায় ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে। যদিও সম্প্রদায় বলতে ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যক্তিগত সামাজিক সম্পর্ককে বুঝানো হয়, "সম্প্রদায়" বলতে বৃহৎ জনগোষ্ঠী, যেমন জাতীয় সম্প্রদায়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, ভার্চুয়াল সম্প্রদায়ের সাথে একাত্মতাও বুঝানো হয়।
জনপ্রিয় সংস্কৃতি বা জনসংস্কৃতি বা সাধারণ সংষ্কৃতি (ইংরেজি: Popular culture, pop culture, mass culture) বলতে সেই সমস্ত সাংস্কৃতিক উপাদানের সমষ্টিকে বোঝায় যেগুলো বিভিন্ন জনপ্রিয় গণমাধ্যম, সমাজে বহুল প্রচলিত ভাষা ও লোকাঁচারে আধিপত্য বিস্তার করে। প্রতিদিনকার জীবনের নানা চাহিদা ও মিথষ্ক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট সাংস্কৃতিক মুহূর্তগুলো সমষ্টিবদ্ধ হয়ে মূলধারার লোকজনের দৈনন্দিন জীবনের প্রকৃতি নির্ধারণ করে। রান্নাবান্না, কাপড় চোপড়, গণমাধ্যম, বিনোদন, খেলাধুলা, সাহিত্য, ইত্যাদিতে জনসংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটে।অনেক সময়ই উচ্চবর্গ আর নিম্নবর্গের মধ্যে জনসংস্কৃতির সীমারেখাটি পরিষ্কার নয় ৷ সমাজের সদস্যদের দ্বারা স্বীকৃত বিভিন্ন বিশ্বাস বা অনুশীলন এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অর্থাৎ ঐতিহাসিক স্থাপনা ও বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান ও বিবিধ শিল্প যা পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকে মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে থাকে এবং যা একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঐ সমাজে সর্বব্যাপি ও প্রাধান্য বিস্তারকারী হয়ে থাকে তাকে জনপ্রিয় সংস্কৃতি (Popular culture) বলা হয়। জনসংস্কৃতি বলতে প্রাধান্য বিস্তারকারী ঐতিহাসিক স্থাপনা ও বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান ও বিবিধ শিল্প যা পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকে মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে থাকে তার সঙ্গে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও অনুভূতির মিথষ্ক্রিয়াকেও বোঝানো হয়। একটি নির্দিষ্ট সমাজে যা অত্যন্ত বেশি প্রভাব বিস্তার করে থাকে। সেইজন্য, একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রতি কোন ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গী তৈরিতে জনসংস্কৃতি প্রভাব বিস্তার করে।[2] যাহোক, জনসংস্কৃতিকে ব্যাখ্যা করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে।[3] এই কারণে, জনপ্রিয় সংস্কৃতি হচ্ছে এমন কিছু যা বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে পরস্পরবিরোধী উপায়ে বিভিন্ন ব্যক্তির দ্বারা সংজ্ঞায়িত হয়েছে।[4] সাধারণভাবে সংস্কৃতির অন্যান্য রূপ যেমন: লোক সংস্কৃতি, শ্রমজীবী-শ্রেণীর সংস্কৃতি বা উঁচু সংস্কৃতির সঙ্গেে এবং বিভিন্ন তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোন যেমন: মনঃসমীক্ষণ, উত্তরআধুনিকতাবাদ, এবং অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে এর বৈপরীত্য রয়েছে। সবচেয়ে প্রচলিত জনসংস্কৃতির ধরন হচ্ছে: বিনোদন, (যেমন: চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, টেলিভিশন এবং ভিডিও গেমস) খেলাধুলা, সংবাদ, রাজনীতি, ফ্যাশন, প্রযুক্তি, এবং স্ল্যাং।[5]অনেকে কখনো কখনো জনপ্রিয় সংস্কৃতিকে (Popular culture) তুচ্ছ এবং মূলধারায় সম্মতিসূচক গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার জন্য শিক্ষা, সাহিত্য, চলচ্চিত্র, সংবাদ, ভিডিওগেম ও সংস্কৃতির বুদ্ধিবৃত্তিক আধেয়কে সুচিন্তিত ভাবে অতি সরলীকরণ বলে জ্ঞান করেন। এর ফলে মূল ধারার বাইরের সংস্কৃতিগুলো {লক্ষণীয়ভাবে ধর্মভিত্তিক দলগুলো (religious groups) এবং উপসংস্কৃতির দলগুলো (countercultural groups)} জনসংস্কৃতিকে অত্যন্ত সমালোচনা করে থাকে। তারা এই সংস্কৃতিকে অগভীর, ভোগবাদী, গণ উত্তেজনাকর, বা দূষিত বলে বিবেচনা করেন।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একটি জাতীয় রাজনৈতিক দল। এই দল সাধারণভাবে কংগ্রেস নামে পরিচিত। কংগ্রেস দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলদুটির একটি (অপর দলটি হল ভারতীয় জনতা পার্টি)। এটি একটি ভারতের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন। ১৮৮৫ সালে থিওজোফিক্যাল সোসাইটির কিছু "অকাল্ট" সদস্য কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। এঁরা হলেন অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম, দাদাভাই নওরোজি, দিনশ এদুলজি ওয়াচা, উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, মনমোহন ঘোষ, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে ও উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন প্রমুখ। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব দান করেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করলে, কংগ্রেস দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। সেই থেকে মূলত নেহেরু-গান্ধী পরিবারই কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দান করতে থাকেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ (উচ্চারণ: [ʃad̪ʱinot̪a ɟud̪d̪ʱo]; শাধিনতা জুদ্ধো) বা মুক্তিযুদ্ধ (উচ্চারণ: [mukt̪iɟud̪d̪ʱo]; মুক্তিজুদ্ধো) হলো ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি বিপ্লব ও সশস্ত্র সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবং বাঙালি গণহত্যার প্রেক্ষিতে এই জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পশ্চিম পাকিস্তান-কেন্দ্রিক সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে এবং নিয়মতান্ত্রিক গণহত্যা শুরু করে। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সাধারণ বাঙালি নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং পুলিশ ও ইপিআর কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বীকার করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনের পর অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে গণবিদ্রোহ দমনে পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী শহর ও গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান ও বিমানযুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইসলামি দলগুলোর সমর্থন লাভ করে। সেনাবাহিনীর অভিযানে সহায়তার জন্য তারা ইসলামি মৌলবাদীদের নিয়ে আধা-সামরিক বাহিনী— রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনী গঠন করে। পূর্ব পাকিস্তানের উর্দু-ভাষী বিহারিরাও সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে। পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের সহায়তাকারী আধা-সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা, উচ্ছেদ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যাসহ একাধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়। প্রায় এক কোটি বাঙালি শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং আরও তিন কোটি মানুষ দেশের অভ্যন্তরে উদ্বাস্তু হয়। বাঙালি ও উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতাকে বুদ্ধিজীবীরা গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। বাঙালি সামরিক, আধা-সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনী চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেনারেল এম. এ. জি.
একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সহ পশ্চিমবঙ্গ তথা সমস্ত বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও সুপরিচিত। বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে অনেক তরুণ শহীদ হন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো রফিক, জব্বার, শফিউল, সালাম, বরকত সহ অনেকেই। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ৫ই আগষ্ট, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।
জুমার নামাজ (আরবি: صلاة الجمعة সালাত আজ-জুমুআহ, "শুক্রবারের সালাত") ইসলামের অন্যতম একটি নামাজ। جُمُعَة (জুমুআহ) শব্দটি আরবী । এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া । যেহেতু, সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামায়াতের সাথে সে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরযরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে "জুমার নামাজ" বলা হয়। সময় একই হলেও যোহরের সাথে জুমার নামাজের নিয়মগত কিছু পার্থক্য রয়েছে।
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও, বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে; অন্যদিকে, এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তানের ছিল দুইটি অংশ: পূর্ব বাংলা (১৯৫৫ সালে পুনর্নামাঙ্কিত পূর্ব পাকিস্তান) ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার পূর্ব পাকিস্তান তথা পূর্ব বাংলাকে ইসলামীকরণ তথা আরবিকরণের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে আরবি হরফে বাংলা লিখন অথবা সমগ্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা আরবি করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কার্যত পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন বাদামতলী কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের ছেলে রফিক, সালাম, এম. এ.
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান ইতিমধ্যে বসানো সম্পন্ন হয়েছে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু। পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।
জাতিসংঘ (পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত বানানঃ রাষ্ট্রপুঞ্জ) বিশ্বের জাতিসমূহের একটি সংগঠন, যার লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক অগ্রগতি এবং মানবাধিকার বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। ১৯৪৫ সালে ৫১টি রাষ্ট্র জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ সনদ স্বাক্ষর করার মাধ্যমে জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং পরবর্তীতে লুপ্ত লীগ অব নেশন্সের স্থলাভিষিক্ত হয়।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
সামাজিক ডারউইনবাদ (ইংরেজি: Social Darwinism) হল সমাজের বিভিন্ন তত্ত্ব যা ১৮৭০ এর দশকে যুক্তরাজ্য, উত্তর আমেরিকা, এবং পশ্চিম ইউরোপে আবির্ভূত হয়। এটি সমাজবিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে প্রাকৃতিক নির্বাচন এবং যোগ্যতমের উদ্বর্তন এর ধারণা প্রয়োগ করার দাবি জানায়। সামাজিক ডারউইবাদীগণ যুক্তি দেখান যে, সমাজের সবলরা দেখতে পাবে তাদের সম্পদ এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যখন দুর্বলরা দেখবে তাদের সম্পদ এবং ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। কোন কোন দলকে শক্তিশালী এবং কোন কোন দলকে দুর্বল বলে মনে করা হবে, এবং কোন সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সমাযে সবলরা পুরস্কার ও দুর্বলরা শাস্তি লাভ করে তা নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক-ডারউইনবাদী সম্প্রদায়গুলোতে মতভেদ রয়েছে। এই ধরনের অনেক দৃষ্টিভঙ্গি লেসে-ফেয়ার পুঁজিবাদের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে প্রতিযোগিতায় জোড় দেয়, অন্য দৃষ্টিভঙ্গিগুলো কর্তৃত্ববাদ, ইউজেনিক্স, বর্ণবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, ফ্যাসিবাদ, নাৎসিবাদ, এবং জাতীয় বা জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে সংগ্রামের সমর্থনে ব্যবহৃত হয়।একটি বৈজ্ঞানিক ধারণা হিসাবে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সামাজিক ডারউইনবাদ ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা হারায় এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে ব্যাপকভাবে নিন্দিত হয়। এর কারণ হল, প্রথমতঃ এর সাথে নাৎসিবাদের সম্পর্ক, এবং দ্বিতীয়তঃ ক্রমবর্ধমান বৈজ্ঞানিক ঐকমত্য যে এই মতবাদটি বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন। পরবর্তীতে যেসব তত্ত্ব সামাজিক ডারউইনবাদ হিসেবে শ্রেণীকৃত ছিল, সেগুলো সাধারণত তাদের প্রতিপক্ষের সমালোচনা হিসেবে বর্ণনা করা হয়; এই মতগুলোর প্রবক্তারা নিজেদেরকে সামাজিক ডারউইনবাদী হিসেবে পরিচয় দেননি। সৃষ্টিবাদীরা প্রায়ই সেই সামাজিক ডারউইনবাদ বজায় রেখেছেন, যার ফলে তারা সবচেয়ে বেশি যোগ্যকে পুরষ্কৃত করার নীতি পরিকল্পনা করেছেন, এই ব্যাপারটি আসলে ডারউইনবাদের যৌক্তিক পরিণাম (জীববিজ্ঞানের প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্ব)। জীববিজ্ঞানী এবং ঐতিহাসিকগণ বলেছেন যে এটি প্রকৃতিগত হেত্বাভাস বা আপিল টু নেচার নামক হেত্বাভাসে দুষ্ট, কেননা প্রাকৃতিক নির্বাচনের তত্ত্বটিকে নিছকই জীববিজ্ঞানগত প্রপঞ্চকে বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়, এবং এই ব্যাপারটি যে মানব সমাজের জন্য ভাল বা এটিকে মানব সমাজের নৈতিক নির্দেশনা হিসেবে ব্যবহার করতে হবে, যেহেতু প্রাকৃতিক নির্বাচনের তত্ত্বটি নিছক একটি জৈবিক ঘটনার বর্ণনা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং এর ফলে এটি নির্দেশিত হয়না যে, এই প্রাকৃতিক নির্বাচন মানব সমাজের জন্য ভাল বা এটি মানব সমাজে একটি নৈতিক নির্দেশিকা হিসাবে ব্যবহার করা উচিত। যদিও অধিকাংশ পণ্ডিত ডারউইনের তত্ত্বের জনপ্রিয়করন এবং সামাজিক ডারউইনিজমের বিকাশের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করেন, তারা এটাও বলেন যে সামাজিক ডারউইনবাদ জীববিজ্ঞানগত বিবর্তনের নীতির অনিবার্য পরিণাম নয়।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (২৫ জানুয়ারি ১৮২৪ – ২৯ জুন ১৮৭৩) ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি এবং নাট্যকার ও প্রহসন রচয়িতা। তাকে বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব গণ্য করা হয়। ঐতিহ্যের অনুবর্তিতা অমান্য করে নব্যরীতি প্রবর্তনের কারণে তাকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বাংলা: বাংলাদেশ গণসংঘ) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়।
চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা (ইংরেজি: Elasticity of demad)বলতে সাধারণতা: পণ্যের মূল্য বা ভোক্তার আয়ের তুলনায় পণ্যের চাহিদার পরিবর্তনশীলতা বোঝায়। পণ্যের চাহিদা এবং এর মূল্যের মধ্যে ফাংশনাল সম্পর্ক রয়েছে। গণিত বা অর্থনীতির পরিভাষায় চাহিদা পণ্যের মূল্যের ফাংশন। আবার চাহিদা সংশ্লিষ্ট ভোক্তার আয়েরও ফাংশন। অন্যভাবে বলা হয়, পণ্যের মূল্য এবং ভোক্তার আয় পণ্যের চাহিদার নিয়ামক। চাহিদা অনেক কিছুরই ফাংশন হতে পারে। অর্থাৎ, চাহিদার পরিমাণ অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করতে পারে। অতঃএব চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা এর নিয়ামকসমূহের যে কোনটির ওপর নির্ভর করে।
সমাজ বলতে মূলত এমন এক ব্যবস্থা বোঝায়, যেখানে একাধিক চরিত্র একত্রে কিছু নিয়ম-কানুন প্রতিষ্ঠা করে একত্রে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলে। মানুষের ক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তি একত্র হয়ে লিখিত কিংবা অলিখিত নিয়ম-কানুন তৈরি করে; এরকম একত্র বসবাসের অবস্থাকে সমাজ বলে। মানুষ ছাড়াও ইতর প্রাণীর ক্ষেত্রে সমাজের অস্তিত্ব দেখা যায়, তবে সেখানে মানুষের মতো কাঠামোবদ্ধ সমাজের দৃষ্টান্ত নজরে আসে না।
নিখিল ভারত মুসলিম লীগ (উর্দু: : مسلم لیگ), ১৯০৬ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক দল যা ব্রিটিশ ভারত এবং ভারত উপমহাদেশে মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান তৈরির পেছনে চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। ভারত এবং পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর লীগ সংখ্যালঘু বা ছোট দল হিসেবে ভারতে বিশেষ করে কেরালায় তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়, এবং বিভিন্ন সময় অন্যান্য দলের সাথে ঐক্যজোটে সরকার গঠন করে। পাকিস্তানে লীগ দেশের প্রথম সরকার গঠন করে, কিন্তু ১৯৫০ সালে সামরিক শাসনের কারণে দলতে ভাঙন দেখা দেয়। মুসলিম লীগের কিছু অংশ ১৯৪৭ থেকে পাকিস্তানের বেশির ভাগ জনগণ শাসিত সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৬ সালে দলটি পুনরায় জীবিত হয় এবং ১৯৭৯ সালের সংসদীয় নির্বাচনে ১৪টি আসনে জয় লাভ করে। তখন থেকেই দলটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দল হিসেবে পরিণত হয়। ভারতবর্ষে মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণে এই দলটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই দলের বিশিষ্ট নেতাদের মধ্যে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, লিয়াকত আলি খান, খাজা নাজিমুদ্দিন, নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, শেরে বাংলা এ. কে.
ইউরোপ একটি মহাদেশ যা বৃহত্তর ইউরেশিয়া মহাদেশীয় ভূখণ্ডের পশ্চিমের উপদ্বীপটি নিয়ে গঠিত। সাধারণভাবে ইউরাল ও ককেসাস পর্বতমালা, ইউরাল নদী, কাস্পিয়ান এবং কৃষ্ণ সাগর-এর জলবিভাজিকা এবং কৃষ্ণ ও এজিয়ান সাগর সংযোগকারী জলপথ ইউরোপকে এশিয়া মহাদেশ থেকে পৃথক করেছে।ইউরোপের উত্তরে উত্তর মহাসাগর, পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর দক্ষিণে ভূমধ্যসাগর এবং দক্ষিণ-পূর্বে কৃষ্ণ সাগর ও সংযুক্ত জলপথ রয়েছে। যদিও ইউরোপের সীমানার ধারণা ধ্রুপদী সভ্যতায় পাওয়া যায়, তা বিধিবহির্ভূত; যেহেতু প্রাথমিকভাবে ভূ-প্রাকৃতিক শব্দ "মহাদেশ"-এ সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক উপাদান অন্তর্ভুক্ত।
এশিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে জনবহুল মহাদেশ, প্রাথমিকভাবে পূর্ব ও উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। এটি ভূপৃষ্ঠের ৮.৭% ও স্থলভাগের ৩০% অংশ জুড়ে অবস্থিত। আনুমানিক ৪৩০ কোটি মানুষ নিয়ে এশিয়াতে বিশ্বের ৬০%-এরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। অধিকাংশ বিশ্বের মত, আধুনিক যুগে এশিয়ার বৃদ্ধির হার উচ্চ। উদাহরণস্বরূপ, বিংশ শতাব্দীর সময়, এশিয়ার জনসংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়ে গেছে, বিশ্ব জনসংখ্যার মত।এশিয়ার সীমানা সাংস্কৃতিকভাবে নির্ধারিত হয়, যেহেতু ইউরোপের সাথে এর কোনো স্পষ্ট ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা নেই, যা এক অবিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের গঠন যাকে একসঙ্গে ইউরেশিয়া বলা হয়। এশিয়ার সবচেয়ে সাধারণভাবে স্বীকৃত সীমানা হলো সুয়েজ খাল, ইউরাল নদী, এবং ইউরাল পর্বতমালার পূর্বে, এবং ককেশাস পর্বতমালা এবং কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণে। এটা পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর এবং উত্তরে উত্তর মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। ইউরাল পর্বতমালা, ইউরাল নদী, কাস্পিয়ান সাগর, কৃষ্ণ সাগর এবং ভূমধ্যসাগর দ্বারা এশিয়া ও ইউরোপ মহাদেশ দুটি পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন। এছাড়া লোহিত সাগর ও সুয়েজ খাল এশিয়া মহাদেশকে আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সংকীর্ণ বেরিং প্রণালী একে উত্তর আমেরিকা মহাদেশ থেকে পৃথক করেছে। উল্লেখ্য, বেরিং প্রণালীর একদিকে অবস্থান করছে এশিয়া মহাদেশের অন্তর্গত রাশিয়ার উলেনা এবং অপর পাশে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অন্তর্গত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা। এই প্রণালীটির সংকীর্ণতম অংশটি মাত্র ৮২ কি•মি• চওড়া, অর্থাৎ বেরিং প্রণালীর এই অংশ হতে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দূরত্ব মাত্র ৮২ কি•মি•।
কুরআন মজিদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ বা কোরআন (আরবি: القرآن আল্-কুর্'আন্[টী১]) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন। এটিকে আরবি শাস্ত্রীয় সাহিত্যের সর্বোৎকৃষ্ট রচনা বলে মনে করা হয়। কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবিতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা হয়েছে।
চীন (চীনা: 中国 চুংকুও), সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী চীন বা সংক্ষেপে গণচীন, পূর্ব এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। ১৪৪ কোটি জনসংখ্যার দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল রাষ্ট্র। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দেশটি শাসন করে। বেইজিং শহর দেশটির রাজধানী। গণচীনের শাসনের আওতায় পড়েছে ২২টি প্রদেশ, পাঁচটি স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল, চারটি কেন্দ্রশাসিত পৌরসভা (বেইজিং, থিয়েনচিন, সাংহাই এবং ছুংছিং), এবং দুইটি প্রায়-স্বায়ত্বশাসিত বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল (হংকং এবং মাকাউ)। এছাড়াও চীন তাইওয়ানের ওপরে সার্বভৌমত্ব দাবী করে আসছে। দেশটির প্রধান প্রধান নগর অঞ্চলের মধ্যে সাংহাই, কুয়াংচৌ, বেইজিং, ছোংছিং, শেনচেন, থিয়েনচিন ও হংকং উল্লেখযোগ্য। চীন বিশ্বের একটি বৃহৎ শক্তি এবং এশিয়ার মহাদেশের একটি প্রধান আঞ্চলিক শক্তি।চীনের আয়তন প্রায় ৯৬ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। স্থলভূমির আয়তনের দিক থেকে এটি বিশ্বের ৩য়/৪র্থ বৃহত্তম রাষ্ট্র (বিতর্কিত)।। সামগ্রিক আয়তনের বিচারে ও পরিমাপের পদ্ধতিভেদে এটি বিশ্বের তৃতীয় বা চতুর্থ বৃহত্তম এলাকা। চীনের ভূমিরূপ বিশাল ও বৈচিত্র্যময়। দেশটির অনুর্বর উত্তরাংশে অরণ্য স্টেপ তৃণভূমি এবং গোবি ও তাকলা মাকান মরুভূমি যেমন আছে, তেমনি এর আর্দ্র দক্ষিণাংশে আছে উপক্রান্তীয় অরণ্যসমূহ। হিমালয় ও কারাকোরাম পর্বতমালা, পামির মালভূমি ও থিয়েন শান পর্বতমালা চীনকে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়া থেকে ভৌগলিকভাবে আলাদা করেছে। ইয়াংসিকিয়াং নদী (বিশ্বের ৩য় দীর্ঘতম) ও পীত নদী (বিশ্বের ৬ষ্ঠ দীর্ঘতম) তিব্বতের মালভূমি থেকে উত্সারিত হয়ে পূর্বের জনবহুল অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাগরে পড়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের তটরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪,৫০০ কিলোমিটার (৯,০০০ মা)। বোহাই উপসাগর, পীতসাগর, পূর্ব চীন সাগর ও দক্ষিণ চীন সাগর এর সামুদ্রিক সীমানা নির্ধারণ করেছে। চীনের উত্তরে রয়েছে মঙ্গোলিয়া; উত্তর পূর্বে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া; পূর্বে চীন সাগর; দক্ষিণে ভিয়েতনাম, লাওস, মায়ানমার, ভারত, ভুটান, নেপাল; দক্ষিণ পশ্চিমে পাকিস্তান; পশ্চিমে আফগানিস্তান, তাজিকিস্তান, কির্গিজিস্তান ও কাজাকিস্তান। এই ১৪টি দেশ বাদে চীনের পূর্বে পীত সাগরের পাশে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান; দক্ষিণ চীন সাগরের উল্টো দিকে আছে ফিলিপাইন।
রাষ্ট্র বলতে এমন এক রাজনৈতিক সংগঠনকে বোঝায় যা কোন একটি ভৌগোলিক এলাকা ও তৎসংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার সার্বভৌম ক্ষমতা রাখে। রাষ্ট্র সাধারণত একগুচ্ছ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে। এসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ভৌগোলিক সীমার ভেতর বসবাসকারী সমাজের সদস্যদের শাসনের জন্য নিয়ম-কানুন তৈরি করে। যদিও একথা ঠিক যে রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পাওয়া না পাওয়া বহুলাংশে নির্ভর করে, রাষ্ট্র হিসেবে তার উপর প্রভাব রাখা ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির উপর।
ভৌগোলিক আয়তন অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকা
এই পাতাটিতে সর্বমোট ভৌগোলিক আয়তন অনুযায়ী পৃথিবীর রাষ্ট্র ও তাদের উপর নির্ভরশীল অঞ্চলগুলির একটি উচ্চ-থেকে-নিম্ন ক্রমানুসারে সাজানো তালিকা প্রদান করা হয়েছে। তালিকাটিতে আইএসও ৩১৬৬-১ আদর্শে অন্তর্ভুক্ত সমস্ত সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলগুলি স্থান পেয়েছে। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্র ও ভ্যাটিকান সিটিকে ক্রমসংখ্যা প্রদান করা হয়েছে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন (Fall of Soviet Union) আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৯১ সালের ২৬শে ডিসেম্বর, সোভিয়েত ইউনিয়নের ১৫টি প্রজাতন্ত্রের স্বাধীনতার স্বীকৃতিতে ঘোষণা নং ১৪২-হ হিসাবে জারি করা হয়। ফলে পতনের পর ১২টি সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র নিয়ে, "স্বাধীন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রমণ্ডল" নামক ১টি অবিভক্ত অর্থনৈতিক ও আঞ্চলিক সংগঠন তৈরি হয়।
সিন্ধু সভ্যতা ছিল একটি ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতা (৩৩০০ – ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ; পূর্ণবর্ধিত কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)। এই সভ্যতার কেন্দ্র ছিল মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সিন্ধু নদ অববাহিকা। এই সভ্যতা প্রস্তর যুগে বিকাশ লাভ করে (প্রাচীন যুগকেই প্রস্তর যুগ বলে)। প্রথম দিকে এই সভ্যতা পাঞ্জাব অঞ্চলের সিন্ধু অববাহিকায় বিকাশ লাভ করে। পরে তা প্রসারিত হয় ঘগ্গর-হকরা নদী উপত্যকা ও গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চল পর্যন্ত। বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ, ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পশ্চিমদিকের রাজ্যগুলি, দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তান এবং বালোচিস্তান প্রদেশের পূর্ব অংশ এই সভ্যতার অন্তর্গত ছিল।
পাকিস্তান (উর্দু: پاکِستان), সরকারিভাবে ইসলামি প্রজাতন্ত্রী পাকিস্তান (উর্দু: اِسلامی جمہوریہ پاکِستان), দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। ২১,২৭,৪২,৬৩১-র অধিক জনসংখ্যা নিয়ে এটি জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম রাষ্ট্র এবং আয়তনের দিক থেকে ৩৩তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। পাকিস্তানের দক্ষিণে আরব সাগর এবং ওমান উপসাগরীয় উপকূলে ১০৪৬ কিলোমিটার (৬৫০ মাইল) উপকূল রয়েছে এবং এটি পূর্ব দিকে ভারতের দিকে, আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমে, ইরান দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং উত্তর-পূর্ব দিকে চীন সীমান্তে অবস্থিত। এটি উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তানের ওয়াখান করিডোরের দ্বারা তাজিকিস্তান থেকে সংকীর্ণভাবে বিভক্ত এবং ওমানের সাথে সমুদ্রের সীমান্ত ভাগ করে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে রাষ্ট্রপতি ও সংসদীয় উভয় ব্যবস্থার কারণে বহুবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা হয়েছে। ১৯৭২ সালের সংবিধানের দ্বিতীয় তফসিল অনুসারে, সংসদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতেন একটি গোপন ভোটে। পরে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী অনুসারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রত্যক্ষ নির্বাচন পদ্ধতির বিধান চালু করা হয়। তবে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর পরেই সংসদীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পর পরোক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান চালু করা হয়েছিল। সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বর্তমানে সংসদ সদস্যদের দ্বারা পরোক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] (শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ – ৪ জুলাই ১৯০২; জন্মনাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত, বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...," ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা, যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তার রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?
ফেসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেইসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত), হল মেটা প্ল্যাটফর্মসের মালিকানাধীন বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
জনসংখ্যা অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকা
এই নিবন্ধে জনসংখ্যা অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও অধীনস্থ অঞ্চলসমূহের একটি তালিকা উপস্থাপন করা হল। এই তালিকাতে মূলত আইএসও ৩১৬৬-১ মানদণ্ড অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্রসমূহ, জন-অধ্যুষিত অধীনস্থ অঞ্চল, এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনকারী দেশগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেমন যুক্তরাজ্যকে একটিমাত্র সত্তা ধরা হলেও নেদারল্যান্ডস রাজ্যের গঠনকারী দেশগুলিকে আলাদা আলাদা সত্তা গণ্য করা হয়েছে। এছাড়া আইএসও ৩১৬৬-১-এ অনুপস্থিত কিছু সীমিত স্বীকৃতিবিশিষ্ট রাষ্ট্রসমূহও নিচের তালিকাতে স্থান পেয়েছে।
এশিয়ার সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকা
এশিয়া মহাদেশে ৪৯টি সার্বভৌম দেশ আছে। সার্বভৌম দেশ বলতে কোন দেশ বা রাষ্ট্রের নিজের অভ্যন্তরীন এবং অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নির্ধারণের সার্বভৌম ক্ষমতা আছে।
যৌনসঙ্গম (যৌনমিলন, সঙ্গম, মৈথুন, রতিক্রিয়া, রতিমিলন; যৌন সংসর্গ, যৌন সহবাস, সহবাস ইত্যাদি) হচ্ছে একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা দ্বারা মূলত যৌনআনন্দ বা প্রজনন বা উভয় ক্রিয়ার জন্য একজন পুরুষের উত্থিত শিশ্ন একজন নারীর যোনিপথে অনুপ্রবেশ করানো ও সঞ্চালনা করাকে বোঝায়। অন্যান্য অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গমের মধ্যে রয়েছে পায়ুসঙ্গম (লিঙ্গ দ্বারা মলদ্বার অনুপ্রবেশ), মুখমৈথুন, অঙ্গুলিসঞ্চালন (আঙ্গুল দ্বারা যৌন অনুপ্রবেশ), যৌনখেলনা ব্যবহার দ্বারা অনুপ্রবেশ (বন্ধনীযুক্ত কৃত্রিম শিশ্ন)। এই সকল কার্যক্রম মূলত মানবজাতি কর্তৃক দুই বা ততোধিকের মধ্যেকার শারীরিক ও মানসিক অন্তরঙ্গতা জনিত পরিতোষ লাভের জন্য এবং সাধারণত মানব বন্ধনে ভূমিকা রাখতে সম্পাদিত হয়ে থাকে।যৌনসঙ্গম বা অপরাপর যৌনকর্ম কীভাবে সংজ্ঞায়িত হয় তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, যা যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর উপর প্রভাব রাখতে পারে। যদিও যৌনসঙ্গম, নির্দিষ্টভাবে মৈথুন বলতে সাধারণত শিশ্ন-জরায়ুজ অনুপ্রবেশ ও সন্তান উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করা হয়, এর দ্বারা সাধারণভাবে অন্তর্ভেদী মুখমৈথুন ও বিশেষত শিশ্ন-পায়ুজ সঙ্গমকেও নির্দেশ করা হয়। এটি সাধারণত যৌন অনুপ্রবেশকে নির্দেশ করে, যেখানে অননুপ্রবেশকারী যৌনতাকে "বহির্সঙ্গম" নামে নামকরণ করা হয়, কিন্তু অনুপ্রবেশকারী যৌনকর্মকে যৌনসঙ্গম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যৌনতা বা ইংরেজি ভাষায় সেক্স, প্রায়শই যৌনসঙ্গমের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যবহৃত রূপ, যা দ্বারা যে কোন প্রকারের যৌনক্রিয়াকে বোঝানো হতে পারে। যেহেতু এসকল যৌনকর্মের সময়ে মানুষ যৌনবাহিত সংক্রমণের সংস্পর্শের ঝুঁকিতে থাকতে পারে, নিরাপদ যৌনচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও অনাভেদী যৌনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়ে থাকে।বিভিন্ন আইনি বিধিমালা যৌনসঙ্গমমের সামাজিক অনুমতিপ্রদানের জন্য বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতির মাধ্যমে বৈবাহিক রীতির প্রবর্তন, প্রচলন ও সমর্থন করেছে এবং বেশ কিছু যৌনকর্মের বিপরীতে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনকে স্থান দিয়েছে, যেমন বিবাহপূর্ব ব্যভিচার ও বিবাহপরবর্তী পরকীয়া, পায়ুকাম, পশুকাম, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনচর্চা ও অজাচার। ধর্মীয় বিশ্বাসও যৌনসঙ্গমসহ অন্যান্য যৌনাচার বিষয়ক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা পালন করে, যেমন কুমারীত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত, অথবা আইনি বা সরকারি নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়াবলি। বিভিন্ন ধর্মভেদে ও একই ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণীভেদে যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও কিছু বিষয়ে অভিন্নতা রয়েছে, যেমন ব্যভিচারের নিষেধাজ্ঞা।
দর্শন, ইংরেজিতে ফিলোসফি (philosophy) (গ্রিক ভাষা φιλοσοφία, ফিলোসোফিয়া, আক্ষরিকভাবে "জ্ঞানের প্রতি ভালবাসা") হলো অস্তিত্ব, জ্ঞান, মূল্যবোধ, কারণ, মন এবং ভাষা সম্পর্কে সাধারণ এবং মৌলিক প্রশ্নগুলির অধ্যয়ন। জগৎ, জীবন, মানুষের সমাজ, তার চেতনা এবং জ্ঞানের প্রক্রিয়া প্রভৃতি মৌল বিধানের আলোচনাকেও দর্শন বলা হয়। মানুষের সামাজিক চেতনার বিকাশের একটা পর্যায়েই মাত্র মানুষের পক্ষে বিশ্লেষণী দৃষ্টি নিয়ে জগৎ এবং জীবন সম্পর্কে চিন্তা করা সম্ভব হয়েছে। মানুষ তার নিজের উদ্ভব মুহূর্ত থেকেই চিন্তার এরূপ ক্ষমতা দেখাতে সক্ষম ছিল না। মানুষের চেতনার বিকাশের একটা স্তরে মানুষ তার পরিবেশ সম্পর্কে চিন্তা করতে আরম্ভ করে। নিজের জীবনকে অধিকতর নিশ্চিত করে রক্ষা করার প্রয়োজনে মানুষ প্রকৃতি জগৎের রহস্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করে। প্রকৃতি, জগৎ এবং পরবর্তীকালে মানুষের নিজের দেহ এবং চেতনা সম্পর্কেও সে চিন্তা করতে শুরু করে।আদিকালে বিশ্বজগৎ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের পরিধি খুব অধিক ছিল না। দর্শনই আদি জ্ঞানের মূল ভাণ্ডার। জগৎ ও জীবনের প্রত্যেকটি সমস্যা মানুষের কাছে প্রশ্নাকারে উত্থাপিত হয়। যে প্রশ্নই উপস্থিত হোক না কেন, মানুষ তার একটা জবাব দিয়ে প্রকৃতিকে বশ করার চেষ্টা করেছে। তাই আদি দর্শন একদিকে যেমন সমস্ত জ্ঞানের ভাণ্ডার তেমনি আবার তার মধ্যে সমস্যার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষার ভিত্তিতে সমাধানের বদলে কাল্পনিক সমাধানের সাক্ষাৎ অধিক মেলে। কালক্রমে মানুষের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পুরাতন দার্শনিক কল্পনা বাস্তব জীবনে ভিত্তিহীন প্রমাণিত হলে তার স্থানে অধিকতর সঠিক সমাধান আবিষ্কৃত হতে থাকে। এইভাবে অধিকতর বাস্তব এবং সুনির্দিষ্ট আলোচনা ভিত্তিতে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বিকশিত হতে থাকে। পূর্বে প্রকৃতি, পদার্থ, সমাজ, চেতনা, যুক্তি, অর্থনীতি, ধর্ম সবই দর্শনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কালক্রমে তাদের প্রত্যেকে এক একটি ভিন্ন বিজ্ঞান বা আলোচনার শাখায় রূপান্তরিত হতে থাকে। এই বিকাশের পরিণামে বর্তমানে দর্শন বলতে কেবলমাত্র কল্পনার উপর নির্ভরশীল কোনো বিষয় আর অবশিষ্ট নেই। তাই দর্শনের প্রাচীন সংজ্ঞা এবং তার বর্তমান পরিস্থিতি এক নয়। সুনির্দিষ্টভাবে মানুষের জ্ঞান বিকশিত হওয়ার পরেও দর্শনকে অনেকে কল্পনার মধ্যে আবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। এই প্রয়াসে দর্শন জীবনের বাস্তব সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কশুন্য হয়ে পড়ে। যেখানে প্রাচীনকালে জীবনের সমস্যাই দর্শনের বিকাশ ঘটিয়েছে সেখানে আধুনিককালের এরূপ প্রয়াস দর্শনকে জীবনের সঙ্গে সম্পর্কশুন্য অবাস্তব কল্পনায় পর্যবসিত করেছে। দর্শনের এই সংকটের সুস্পষ্ট নির্দেশ দেন ঊনবিংশ শতকে কার্ল মার্কস। কার্ল মার্কস এবং ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস দর্শনকে জীবনের সঙ্গে যুক্ত করে বলেন যে, দর্শন হবে জীবন এবং জগৎকে বৈজ্ঞানিক এবং সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা। দর্শন হবে বৃহত্তম সংখ্যক মানুষের স্বার্থে জগৎ এবং সমাজকে পরিবর্তিত করার ভাবগত হাতিয়ার। দর্শন অবাস্তব কল্পনা নয়। দর্শন জগৎ ও জীবনের মৌলিক বিধানের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। আর এই ব্যাখ্যারই অপরনাম হচ্ছে দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের তত্ত্ব।দর্শন যেমন মানুষের আদি জ্ঞানভাণ্ডার, তেমনি তার ইতিহাস জ্ঞানের যে কোনো শাখার চেয়ে প্রাচীন। প্রাচীন গ্রিস, ভারত ও চীনে দর্শনের বিস্ময়কর বিকাশের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। কিন্তু দর্শনের বিকাশকে দেশ বা জনগোষ্ঠী হিসেবে বিভক্ত করার কোনো বিশেষ তাৎপর্য নেই। জীবন ও জগৎের সমস্যা নিয়ে চিন্তাই হচ্ছে দর্শন।
সামাজিক স্তরবিন্যাস হলো এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে অর্থ, সম্পদ, মেধা, বংশ, শিক্ষা, বয়স, পেশা, লিঙ্গ, ক্ষমতা ইত্যাদির ভিত্তিতে সমাজের বিদ্যমান জনসংখ্যাকে বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত করা হয়। জন্মসূত্রে সকল মানুষ সমান এমন মানবতাবাদী দর্শন পৃথিবীতে চালু থাকলেও বিশ্বের ইতিহাসের দিকে তাকালে এমন কোন সমাজ পাওয়া যাবেনা যেখানে মানুষে মানুষে পার্থক্য নেই। সামাজিক স্তরবিন্যাস সর্বজনীন। সব যুগে সব কালে সব সমাজই স্তরায়িত।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধীত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য সংবিধানের ১৪২নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত।২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ, দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) ঊনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তার। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
যোনি (লাতিন: ভ্যাজাইনা) স্ত্রীদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা একই সঙ্গে প্রজননতন্ত্র এবং রেচনতন্ত্রে অংশ।যোনি নারীর প্রজননতন্ত্রের বহির্ভাগ। যৌনসঙ্গম কালে পুরুষ তার লিঙ্গ নারীর যোনীতে প্রবিষ্ট করে এবং অঙ্গচালনার মাধ্যমে বীর্য নিক্ষেপ করে। এই বীর্য নারীর জরায়ুতে অবস্থিত ডিম্ব নিষিক্ত করে মানব ভ্রূণের জন্ম দিতে সক্ষম। অন্যদিকে, মূত্র ও নারীর মাসিক রজঃস্রাব কালে যোনীপথেই রক্তের নির্গমন হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় যোনীপথেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।বাংলায় যোনীর অনেক প্রতিশব্দ রয়েছে যথা স্ত্রীযোনী, যোনিপথ, যৌননালী, জনননালী ইত্যাদি। যৌনাঙ্গ, যৌনকর্ম ইত্যাদি শব্দও যোনী থেকে উদ্ভূত। যোনী হলো স্ত্রী প্রজনানঙ্গ যা জরায়ু থেকে স্ত্রীদেহের বাইরের অংশ অবধি পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ফাইব্রোমাসকুলার (তন্তু-পেশিময়) নলাকার অংশ। মানুষ ছাড়াও অমরাবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী ও মারসুপিয়াল প্রাণীতে, যেমন ক্যাঙ্গারু অথবা স্ত্রী পাখি, মনোট্রিম ও কিছু সরীসৃপের ক্লোকাতে যোনী বিদ্যমান। স্ত্রী কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণীরও যোনী আছে, যা মূলত ওভিডাক্টের শেষ প্রান্ত।