The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
পদ্মা সেতু বা পদ্মা বহুমুখী সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হয়েছে। সেতুটি ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়। এই দিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল প্রদান করে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুতে আরোহণ করেন এবং এর মাধ্যমে সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়।পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। দুই স্তর বিশিষ্ট ইস্পাত ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এই সেতুর উপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় তৈরি সেতুটি ৪১টি স্প্যান নিয়ে গঠিত, প্রতিটি স্প্যান লম্বায় ১৫০.১২ মিটার (৪৯২.৫ ফুট) এবং চওড়ায় ২২.৫ মিটার (৭৪ ফুট)। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি (৩.৮২ মাইল)। এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু, স্প্যান সংখ্যা ও মোট দৈর্ঘ্য উভয়ের দিক থেকে গঙ্গা নদীর উপর নির্মিত দীর্ঘতম সেতু এবং ১২০ মিটার (৩৯০ ফুট) গভীরতাযুক্ত বিশ্বের গভীরতম পাইলের সেতু।সেতুটি চালু হওয়ার পর বাংলাদেশের জিডিপি ১.২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। ১৬ কোটির অধিক জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম দেশ। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ – ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি এশীয়দের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
অক্ষরবৃত্ত ছন্দ বাংলা সাহিত্যে প্রচলিত প্রধান তিনটি ছন্দের একটি। অন্য দুটি হলো স্বরবৃত্ত ছন্দ এবং মাত্রাবৃত্ত ছন্দ। অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা কবিতাগুলোর মূলপর্ব সাধারণত ৮ বা ১০ হয় । এছাড়া অক্ষরবৃত্ত ছন্দ ৮✝৮, ৮✝৬, ৮✝৪, ৮✝২ চারের হতে পারে। এই ছন্দকে মিশ্রকলাবৃত্ত, তানপ্রধান ছন্দ ইত্যাদি নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে।
যে শব্দের দ্বারা সংক্ষেপে কোনো বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে ব্যক্ত করা যায় তাকেই পরিভাষা বলা হয়। শব্দ হল যেকোনো কিছুর নাম বা তাকে ভাষায় প্রকাশ করার উপায়, প্রতিশব্দ হল সমার্থক শব্দ; কিন্তু পরিভাষা পুরোপুরিই সংজ্ঞাবাচক। এর অর্থ ব্যাপক। একটি পরিভাষা একটি পরিপূর্ণ সংজ্ঞাকে নির্দেশ করে। শব্দের অর্থ এবং পরিভাষার অর্থ ভিন্ন বা একেবারে বিপরীত হতে পারে। যেমন, বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শব্দটি সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে। সংস্কৃতে বিজ্ঞান শব্দের অর্থ ছিল ঈশ্বরানুভব, অপরোক্ষ জ্ঞান, তত্ত্বজ্ঞান বা বিশেষ জ্ঞান। কিন্তু বাংলায় এটি ইংরেজি সায়েন্স (science) শব্দের পরিভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই বাংলায় বিজ্ঞান শব্দের অর্থ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার ফলে কোনো বিষয়ে ক্রম অনুসারে লব্ধ জ্ঞান। ঈশ্বরানুভূতি এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান একেবারে বিপরীত। দেখা যাচ্ছে, পরিভাষার অর্থ সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং এটিই বর্তমানে একটি সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞার জন্ম দিয়েছে।
তানিয়া আহমেদ (জন্ম: ৫ই জুন ১৯৭২) হলেন একজন বাংলাদেশী মডেল, অভিনেত্রী, পরিচালক ও উপস্থাপিকা। মডেলিং দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হলেও পরে তিনি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেন। সেকু সিকান্দার নাটকে মৈরন ও রঙের মানুষ নাটকে মাঞ্জেলা চরিত্র দুটি তাকে পরিচিতি দেয়। পরবর্তীতে তিনি টেলিভিশন নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি গানের ভিডিও পরিচালনায় মনোনিবেশ করেন।
তথ্য জানার অধিকার (আর.টি.আই.) হল ভারতীয় সংসদ দ্বারা প্রচলিত একটি আইন যা ভারতীয় নাগরিকের তথ্য জানার অধিকার সম্বন্ধে বিধিগুলি এবং তার পদ্ধতিগুলি নির্দেশ করে। এই আইনটি আগের তথ্য জানার স্বাধীনতা আইন,২০০২ এর পরিবর্ত হিসাবে পরিগণিত হয়। আর.টি.আই. আইন অনুসারে, যেকোন ভারতীয় নাগরিক কোনো "রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ" (সরকারী সংস্থা বা "রাষ্ট্রীয় সহায়ক সংস্থা") এর কাছে তথ্য জানতে চেয়ে অনুরোধ করতে পারে, এবং তৎপরতার সঙ্গে তা ত্রিশ দিনের মধ্যে উত্তর দেওয়া বাধ্যতামূলক। বিষয়টি যদি আবেদনকারীর জীবন এবং তাঁর স্বাধীনতা সংক্রান্ত হয়, সেক্ষেত্রে তথ্য ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জানানো বাধ্যতামূলক। এই আইন অনুযায়ী,প্রত্যেক রাষ্ট্রীয় সংস্থা তাদের সব তথ্যাবলী কম্প্যুটারে সংরক্ষিত করতে বাধ্য যাতে তা পরিব্যাপ্ত থাকে এবং অতি সক্রিয়ভাবে তথ্যাবলীর শ্রেণিবিভাগ করা যায় এবং নাগরিকেরা অতি স্বল্প সময়ে তথ্যানুসন্ধানের নিয়মানুগ আবেদন করতে পারেন।সংসদে এই আইনটি ১৫ই জুন,২০০৫ এ পাশ হয়েছে যা ১২ই অক্টোবর, ২০০৫এ কার্যকরী হয়। প্রতিদিন প্রায় ৪৮০০টি আর.টি.আই.আবেদন নথিভুক্ত হয়। আইনটি বলবৎ হওয়ার প্রথম দশ বছরের মধ্যে ১৭,৫০০,০০০ টির বেশি আবেদন নথিভুক্ত হয়েছে। আর.টি.আই. হল প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিকের আইনী অধিকার। আর.টি.আই অন্তর্ভুক্ত কর্তৃপক্ষদের প্রায় বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ বলা হয়। ভারতীয় সংবিধানে মৌলিক অধিকার 'বাক্ স্বাধীনতা'কে আরও মজবুত ভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই আইনটি বলবৎ হয়েছে। যেহেতু আর.টি.আই.ভারতীয় সংবিধানের ১৯ নং ধারা, বাক্ ও ভাবপ্রকাশের অধিকারকে সূচিত করে, তাই এটিকে মৌলিক অধিকার হিসেবেই সূচিত করা হয়। ভারতে তথ্যাদি প্রকাশ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ এবং অন্যান্য যে বিশেষ আইনগুলি ছিল এই নতুন আর.টি.আই.
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০ – ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা বঙ্গবন্ধু, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
এস আই টুটুল একজন বাংলাদেশী গায়ক, সুরকার, গীতিকার ও অভিনয়শিল্পী। তিনি ধ্রুবতারা ব্যান্ড এ লিড গিটারিস্ট হিসেবে কাজ করেন। তিনি আইয়ুব বাচ্চুর সাথে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। মূলত আইয়ুব বাচ্চু তার বড় ভাইয়ের বন্ধু ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-এর বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
হিউয়েন সাঙ (বা হিউয়েন-সাং বা হুয়ান-সাং বা জুয়ানজ্যাং চীনা: 玄奘; ফিনিন: Xuán Zàng; ওয়েড-জাইলস: Hsüan-tsang শ্যুয়্যান্ ৎসাং) (৬০২ - ৬৬৪) ছিলেন বিখ্যাত চীনা বৌদ্ধ ভিক্ষু, পণ্ডিত, পর্যটক এবং অনুবাদক। তিনি উত্তর ভারতের সম্রাট হর্ষবর্ধন (৬০৬ - ৬৪৭) খ্রিষ্টপূর্ব এর রাজত্বকালে চৈনিক এবং ভারতীয় বৌদ্ধধর্মের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। ধারণামতে ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দের কোন এক সময়ে তিনি ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছিলেন। তিনি তার ভারত ভ্রমণ শুরু করেছিলেন লানপো বা লামখান থেকে। লামখানকে তৎকালীন ভারতবর্ষের লোকেরা লম্পক নামে ডাকত। তিনি বালখজুমধ, গচি, বামিয়ান এবং কপিশা হয়ে এ স্থানে এসেছিলেন। মূলত লামখান থেকেই তার ভারতবর্ষ ভ্রমণের সূচনা। তিনি মূলত গৌতম বুদ্ধের নিদর্শন এবং স্মৃতিধন্য স্থানসমূহ পরিদর্শন এবং ভারতবর্ষ থেকে বুদ্ধ ও অন্যান্য বৌদ্ধ ভিক্ষুদের রচনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই ভ্রমণ শুরু করেছিলেন।
নালন্দা (সংস্কৃত ও পালি: नालंदा; আইএএসটি: Nālandā; /naːlən̪d̪aː/) ছিল প্রাচীন ভারতের মগধ রাজ্যে (অধুনা ভারতের বিহার রাজ্য) অবস্থিত একটি খ্যাতনামা মহাবিহার। এটি বিহারের রাজধানী পাটনা শহরের ৯৫ কিলোমিটার (৫৯ মা) দক্ষিণপূর্বে এবং বিহার শরিফ শহরের কাছে অবস্থিত। খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দী থেকে আনুমানিক ১২০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত নালন্দা মহাবিহার ছিল ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এটি একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।প্রাচীন ভারতে বৈদিক শিক্ষার উৎকর্ষ তক্ষশীলা, নালন্দা, বিক্রমশিলা প্রভৃতি বৃহদায়তন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির স্থাপনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে ইতিহাসবিদগণ ভারতের প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেও চিহ্নিত করে থাকেন। নালন্দা মহাবিহারের বিকাশ ঘটেছিল খ্রিস্টীয় ৫ম-৬ষ্ঠ শতাব্দীতে গুপ্ত সম্রাটগণের এবং পরবর্তীকালে কনৌজের সম্রাট হর্ষবর্ধনের পৃষ্ঠপোষকতায়। গুপ্ত যুগের উদার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের ফলশ্রুতিতে খ্রিস্টীয় ৯ম শতাব্দী পর্যন্ত ভারতে এক বিকাশ ও সমৃদ্ধির যুগ চলেছিল। পরবর্তী শতাব্দীগুলিতে অবশ্য সেই পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। সেই সময় পূর্ব ভারতে পাল শাসনকালে বৌদ্ধধর্মের তান্ত্রিক বিকাশ ছিল ভারতের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ঘটনা।খ্যাতির মধ্যগগনে থাকাকালীন নালন্দায় ভারত ছাড়াও তিব্বত, চীন, কোরিয়া ও মধ্য এশিয়ার পণ্ডিত ও ছাত্ররা অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা করতে আসতেন। ইন্দোনেশিয়ার শৈলেন্দ্র রাজবংশও যে এই মহাবিহারের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিল, তাও পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে স্পষ্ট।
স্বরবৃত্ত ছন্দ (দলবৃত্ত/ছড়ার ছন্দ/শ্বাসাঘাতপ্রধান ছন্দ) বাংলা সাহিত্যে প্রচলিত প্রধান তিনটি ছন্দের একটি। অন্য দুটি হলো অক্ষরবৃত্ত ছন্দ এবং মাত্রাবৃত্ত ছন্দ।, স্বরবৃত্ত ছন্দে লেখা কবিতাগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চার মাত্রার চালে চলতে পছন্দ করে। প্রধানত ছড়া এবং গান লিখতেই এই ছন্দ সচরাচর ব্যবহৃত হয়। "প্রাচীন পয়ারের পাশাপাশি অবস্থান করেও এই বিশেষ ছন্দরীতিটি প্রাকৃত বাংলা বা লোকসাহিত্যের ছড়া, প্রবাদ, পাঁচালি প্রভৃতির বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবুও বাঙালির চিন্তা-চেতনায় এ ছন্দের প্রভাব অখণ্ড, অনন্ত।"
পারিবারিক সহিংসতা থেকে নারীদের সুরক্ষা আইন ২০০৫ (ভারত)
পারিবারিক সহিংসতা থেকে নারীদের সুরক্ষা আইন ২০০৫, ভারতের সংসদের একটি আইন যা নারীদের পারিবারিক সহিংসতা থেকে রক্ষা করার জন্য প্রণীত হয়েছে। ২৬ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে এটি ভারত সরকার এবং মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক দ্বারা কার্যকর করা হয়। এই আইনটি ভারতীয় আইনে প্রথমবারের মতো "গার্হস্থ্য সহিংসতা" এর একটি সংজ্ঞা প্রদান করে, এই সংজ্ঞাটি ব্যাপক এবং শুধুমাত্র শারীরিক সহিংসতা নয়, বরং অন্যান্য ধরনের সহিংসতা যেমন আবেগগত/মৌখিক, যৌন এবং অর্থনৈতিক অপব্যবহারকে সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করে। এটি একটি নাগরিক আইন যা মূলত ফৌজদারি প্রয়োগের পরিবর্তে সুরক্ষা আদেশের জন্য বোঝানো হয়।
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র একটি সর্বরোগ হরণকারী মন্ত্র। এই মন্ত্রটি ভগবান মহাদেবকে স্মরণ করে রচিত। এই মন্ত্রটি ঋগ্বেদেও দৃষ্ট হয় - আবার এই মন্ত্রটি মার্কণ্ডেয় পুরাণেও দৃষ্ট হয়। এই মন্ত্রটি জপ করলে মানুষ সব অশান্তি , রোগপীড়া ,ব্যাধি থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত হয়। নিরাকার মহাদেবই মৃত্যুমুখী প্রাণকে বলপূর্বক জীবদেহে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করেন এবং অপার শান্তিদান করেন। এই মন্ত্রটির সাথে একটি কাহিনী প্রচলিত আছে। সেটি হল - মহর্ষি মৃকন্ডু এবং তাঁর পত্নী মরুদবতী পুত্রহীন ছিলেন। তারা তপস্যা করেন মহাদেবকে সন্তুষ্ট করেন এবং এক পুত্র লাভ করেন , যার নাম হল মার্কন্ডেয়। কিন্তু মার্কন্ডেয়র বাল্যকালেই মৃত্যুযোগ ছিল। অভিজ্ঞ ঋষিদের কথায় বালক মার্কন্ডেয় শিব লিঙ্গের সামনে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করতে লাগলেন। যথা সময়ে যম রাজ এলেন। কিন্তু মহাদেবের শরণে আসা প্রাণকে কেইবা হরণ করতে পারে !
বিজয় সেন ছিলেন সেন রাজবংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা। তার পিতা হেমন্ত সেনের প্রতিষ্ঠিত ক্ষুদ্র সেন রাজ্যকে তিনি পরাক্রমশালী সম্রাজ্যে পরিনত করেন। তিনি ১০৯৭ থেকে ১১৬০ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলায় রাজত্ব করেন। তার প্রতিষ্ঠিত সেন বংশ ১০০ বছর পর্যন্ত টিকে ছিল। বিজয় সেনের বংশধরগন দাক্ষিনাত্যের কর্ণাট থেকে এদেশে এসেছিলেন। তিনি সূর বংশীয় রাজকন্যা বিলাশদেবীকে বিয়ে করেছিলেন।
কুরুক্ষেত্র একটি জায়গার নাম যেটা ঐতিহাসিক এবং ধার্মিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাস অনুযায়ী এটি পাঞ্জাবের একটি জায়গা হলেও বর্তমানে জায়গাটি ভারতবর্ষের হরিয়ানা রাজ্যে অবস্থিত। মহাভারতের বর্ণনা অনুযায়ী, পান্ডব-কৌরবদের পূর্বপুরুষ রাজা কুরু এই জায়গাটির পত্তন করেন। এই জায়গাতেই মহাভারতের ধর্মযুদ্ধ হয়েছিল। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই কুরুক্ষেত্রেই ভাগবত গীতা বলেছিলেন।
সমাজতন্ত্র বা সমাজবাদ (ইংরেজি: Socialism) হচ্ছে এমন একটি সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে উৎপাদনের উপকরণের সামাজিক মালিকানা এবং অর্থনীতির একটি সমবায়ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা, এছাড়াও একই সাথে এটি একটি রাজনৈতিক মতবাদ ও আন্দোলন যার লক্ষ্য হচ্ছে এই ধরনের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। অর্থাৎ এটি এমন একটি সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে সম্পদ ও অর্থের মালিকানা সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন অর্থাৎ কোনো ব্যক্তিমালিকানা থাকে না। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনসাধারণের প্রয়োজন অনুসারে পণ্য উৎপাদন হয়। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিতে একটি দেশের কলকারখানা, খনি, জমি ইত্যাদি সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হিসেবে পরিগণিত হয়।সমাজতন্ত্র হল সাম্যবাদী সমাজের প্রথম পর্যায়। উৎপাদনের উপায়ে সমাজতান্ত্রিক মালিকানা হলো এর অর্থনৈতিক ভিত্তি। সমাজতন্ত্র ব্যক্তিগত মালিকানার উৎখাত ঘটায় এবং মানুষে মানুষে শোষণ, অর্থনৈতিক সঙ্কট ও বেকারত্বের বিলোপ ঘটায়, উন্মুক্ত করে উৎপাদনী শক্তির পরিকল্পিত বিকাশ ও উৎপাদন সম্পর্কের পূর্ণতর রূপদানের প্রান্তর। সমাজতন্ত্রের আমলে সামাজিক উৎপাদনের লক্ষ্য ছিল জনগণের স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি ও সমাজের প্রতিটি লোকের সার্বিক বিকাশ সাধন। সমাজতন্ত্রের মুলনীতি হলো 'প্রত্যেকে কাজ করবে তার সামর্থ্য অনুযায়ী এবং প্রত্যেকে গ্রহণ করবে তার প্রয়োজন অনু্যায়ী।' সমাজতন্ত্র দুই ধরনেরঃ কল্পলৌকিক সমাজতন্ত্র ও বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র। সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করা হয়েছিলো ১৯১৭ সালে। সমাজতন্ত্রে বৈরি শ্রেণি নাই, কেননা কলকারখানা, ভূমি, সবই সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সম্পত্তি। সমাজতন্ত্রে শ্রেণি শোষণ বিলুপ্ত হয়।শুরু হয় সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি।
বাল্যবিবাহ হল অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির আনুষ্ঠানিক অথবা অনানুষ্ঠানিক বিবাহ। আইনত বিয়ের বয়স ১৮ বৎসর, বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে। কিন্তু বিশেষ ক্ষেত্রে অভিবাবকের অনুমতি সাপেক্ষে এই বয়সের আগেও বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়। যদিও আইন অনুযায়ী বিয়ের বয়স ১৮ বৎসর, তারপরও কিছু কিছু দেশের নিজস্ব প্রথাকেই আইনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। বাল্যবিবাহে মেয়ে এবং ছেলে উভয়ের উপরই প্রভাব পড়ে। তবে মেয়েরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিশেষত নিম্ন আর্থসামাজিক পরিস্থিতির কারণে। বেশিরভাগ বাল্যবিবাহে দুজনের মধ্যে শুধু একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকে। বিশেষত মেয়েরাই বাল্যবিবাহের শিকার বেশি হয়। বাল্যবিবাহের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রধানত - দরিদ্রতা, যৌতুক, সামাজিক প্রথা, বাল্যবিবাহ সমর্থনকারী আইন, ধর্মীয় ও সামাজিক চাপ, অঞ্চলভিত্তিক রীতি, অবিবাহিত থাকার শঙ্কা, নিরক্ষরতা এবং মেয়েদের উপার্জনে অক্ষম ভাবা।বিভিন্ন কারণেই বাল্যবিবাহের প্রচলন অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- দারিদ্রতা, নিরাপত্তাহীনতা, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণসমূহ। এখনও উন্নয়নশীল দেশসমূহ, যেমন, আফ্রিকার কিছু অংশ,দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া, লাতিন আমেরিকা এবং ওশেনিয়া প্রভৃতি দেশে বাল্যবিবাহ বহুল প্রচলিত। যাইহোক, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশগুলিতে আইনী ব্যতিক্রমগুলিতে ১৭ টি রাজ্যে ন্যূনতম বয়সের প্রয়োজন নেই।নাইজার, চাদ, মালি, ভারত, বাংলাদেশ, গিনিও মধ্য আফ্রিকার কিছু দেশে বাল্যবিবাহের হার সবচাইতে বেশি, যা প্রায় ৬০% এর উপর। ২০০৩-২০০৯ জরিপ অনুযায়ী, নাইজার, চাদ, বাংলাদেশ, মালি এবং ইথিওপিয়াতে ১৫ বছরের নিচে শিশুদের বাল্যবিবাহের হার ২০% এর উপর।
বরাহমিহির প্রাচীন ভারতের গুপ্ত সাম্রাজ্যের সমসাময়িক (আনুমানিক ৫০৫ - ৫৮৭) একজন বিখ্যাত দার্শনিক, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতবিদ ও কবি। তিনি পঞ্চসিদ্ধান্তিকা নামের একটি মহাসংকলনগ্রন্থ রচনা করেন, যাতে তার জীবদ্দশার সময়কার গ্রিক, মিশরীয়, রোমান ও ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের সার লিপিবদ্ধ হয়েছে। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় বিজ্ঞানীদের অন্যতম। জ্যোতির্বিজ্ঞান ছাড়াও গণিতশাস্ত্র, পূর্তবিদ্যা, আবহবিদ্যা, এবং স্থাপত্যবিদ্যায় পণ্ডিত ছিলেন। তিনি কলা ও বিজ্ঞানের প্রায় সমস্ত শাখায় ব্যাপক অবদান রাখেন। উদ্ভিদবিদ্যা থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞান, সামরিক বিজ্ঞান থেকে পুরাকৌশল --- জ্ঞানের সমস্ত ক্ষেত্রেই ছিল তার স্বচ্ছন্দ পদচারণা।
আবহাওয়া কোনো স্থানের স্বল্প সময়ের বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থা। সাধারণত এক দিনের এমন রেকর্ডকেই আবহাওয়া বলে। আবার কোনো একটি বৃহৎ অঞ্চল জুড়ে আবহাওয়ার উপদানগুলো যেমন - বায়ুর তাপ,চাপ,আদ্রতা,বৃষ্টিপাত ইত্যাদির অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ বছরের যে সাধারণ অবস্থা (গড় অবস্থা) দেখা যায় তাকে জলবায়ু বলে। আবহাওয়া নিয়ত পরিবর্তনশীল একটি চলক। আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে বিজ্ঞানের যে শাখা আলোচনা করে তাকে আবহাওয়া বিজ্ঞান বলা হয়।আবহাওয়া হ'ল বায়ুমণ্ডলের অবস্থা, উদাহরণস্বরূপ এটি তাপমাত্রা বা শীতল, ভেজা বা শুকনো, শান্ত বা ঝড়ো, পরিষ্কার বা মেঘলা এমন ডিগ্রি বর্ণনা করে 1 পৃথিবীতে, বেশিরভাগ আবহাওয়া ঘটনাটি গ্রহের বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তরে, ট্রপোস্ফিয়ার এ (স্ট্রাটোস্ফিয়ার এর ঠিক নীচে) ঘটে। আবহাওয়াটি প্রতিদিনের তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের ক্রিয়াকলাপকে বোঝায়, যেখানে জলবায়ুটি দীর্ঘ সময়ের জন্য বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থার গড় । "আবহাওয়া" সাধারণত পৃথিবীর আবহাওয়া বোঝাই বোঝানো হয়।
মানব পরিবারের সকল সদস্যের জন্য সার্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার যেটা তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। মানুষমাত্রই এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে। তবে এ চর্চা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারবে না। মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। এ অধিকার একই সাথে সহজাত ও আইনগত অধিকার। স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম দায়িত্ব হল এসব অধিকার রক্ষণাবেক্ষণ করা। যদিও অধিকার বলতে প্রকৃতপক্ষে কি বোঝানো হয় তা এখন পর্যন্ত একটি দর্শনগত বিতর্কের বিষয়। বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের বিষয়টি এখন আরো প্রকটভাবে অনুভূত হচ্ছে, যখন আমরা দেখছি যে, মানুষের অধিকারসমূহ আঞ্চলিক যুদ্ধ, সংঘাত, হানাহানির কারণে বার বার লংঘিত হচ্ছে। প্রথমত একটি পরিবার ও সমাজের কর্তারা তাদের অধিনস্তদের অধিকার রক্ষা করবে। দ্বিতীয়ত রাষ্ট্র এবং তৃতীয়ত আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা পালন করে থাকে।
মেঘদূত (দেবনাগরী: मेघदूत) বা মেঘসন্দেশ কালিদাস রচিত একটি কাব্য। প্রাচীন টীকাকারদের মতে এটি কেলিকাব্য, ক্রীড়াকাব্য, খণ্ডকাব্য বা মহাকাব্য; আধুনিক গবেষকগণ এটিকে "বর্ষাকাব্য", "বিরহকাব্য" বা "গীতিকাব্য" নামে অভিহিত করেন। মন্দাক্রান্তা ছন্দে রচিত এই কাব্য কালিদাসের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় এবং সম্পূর্ণ মৌলিক রচনা। আবার "শুদ্ধ বিরহকে অবলম্বন করে সংস্কৃত সাহিত্যের প্রথম ও পূর্ণাঙ্গ কাব্য(ও) মেঘদূত।"রামগিরি পর্বতে নির্বাসিত এক অভিশপ্ত যক্ষের প্রিয়াবিরহ এই কাব্যের মূল উপজীব্য। কাব্যটি "পূর্বমেঘ" ও "উত্তরমেঘ" নামে দুটি অংশে বিভক্ত। ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "কালিদাসের মেঘদূত অতি প্রাচীনকালেই জনপ্রিয়তার শিখরে স্থান পেয়েছিল। একদিকে পঞ্চাশটির অধিক টীকা, বহু প্রক্ষিপ্ত শ্লোক, অন্যদিকে এর অনুকরণে পঞ্চাশাধিক দূতকাব্যের রচনা এর জনপ্রিয়তার প্রমাণ।...
গুপ্ত সাম্রাজ্য (সংস্কৃত: गुप्त राजवंश, Gupta Rājavaṃśa) ছিল একটি প্রাচীন ভারতীয় সাম্রাজ্য। আনুমানিক খ্রিষ্টীয় ৩২০ থেকে ৫৫০ অব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের অধিকাংশ অঞ্চল জুড়ে এই সাম্রাজ্য প্রসারিত ছিল। মহারাজ শ্রীগুপ্ত ধ্রুপদি সভ্যতা-র আদর্শে এই সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। গুপ্ত শাসকদের সময়/শাসনামলে ভারতে যে শান্তি ও সমৃদ্ধি স্থাপিত হয়েছিল, তার ফলশ্রুতিতে দেশ বৈজ্ঞানিক ও শিল্পক্ষেত্রে বিশেষ উৎকর্ষ লাভ করতে সক্ষম হয়। গুপ্তযুগকে বলা হয় ভারতের স্বর্ণযুগ। এই যুগ ছিল আবিষ্কার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বাস্তুবিদ্যা, শিল্প, ন্যায়শাস্ত্র, সাহিত্য, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, ধর্ম ও দর্শনের বিশেষ উৎকর্ষের যুগ; বর্তমান হিন্দু সংস্কৃতি মূলত এই যুগেরই ফসল। গুপ্ত যুুগের আমলে অনেক পণ্ডিত ব্যক্তি যেমন কালিদাস, আর্যভট্ট, বরাহমিহির, বিষ্ণু শর্মা -এর অবির্ভাব হয়েছিলো।
ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান। রাষ্ট্রপতি ভারতের আইনবিভাগ, শাসনবিভাগ ও বিচারবিভাগের সকল শাখার আনুষ্ঠানিক প্রধান এবং ভারতের সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। ভারতের রাষ্ট্রপতির দণ্ডিত ব্যক্তির দণ্ডাদেশ স্থগিত, হ্রাস বা দণ্ডিতকে ক্ষমা করার অধিকার রয়েছে।রাষ্ট্রপতি এক নির্বাচকমণ্ডলীর দ্বারা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। এই নির্বাচকমণ্ডলী গঠিত হয় ভারতীয় সংসদ (লোকসভা ও রাজ্যসভা) এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভার সদস্যদের নিয়ে। রাষ্ট্রপতির কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর। অতীতে দেখা গিয়েছে যে, শাসক দলের (লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল) মনোনীত প্রার্থীই রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। অনেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতি পুনরায় নির্বাচনে লড়তে পারেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, যাতে নির্বাচকমণ্ডলীতে প্রতি রাজ্যের জনসংখ্যা ও সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধায়কদের প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা এবং রাজ্য বিধানসভার সদস্যসংখ্যার সঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্যসংখ্যার সামঞ্জস্যবিধান করা যায়। কোনো প্রার্থী এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট পেতে ব্যর্থ হলে, একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পরাজয়শীল প্রার্থীদের ভোট অন্য প্রার্থীতে হস্তান্তরিত হতে থাকে (এবং সেই সঙ্গে সেই প্রার্থী নির্বাচন থেকে বাদ পড়তে থাকেন), যতক্ষণ না একজন সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেন। ভারতের উপরাষ্ট্রপতি অবশ্য লোকসভা ও রাজ্যসভার সকল সদস্যের (নির্বাচিত ও মনোনীত) প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন।যদিও ভারতীয় সংবিধানের ৫৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতি তার ক্ষমতা সরাসরি প্রয়োগ করতে পারেন, তবুও, কয়েকটি ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ছাড়া রাষ্ট্রপতির সব ক্ষমতাই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিপরিষদের কর্তৃত্বাধীন। ভারতের রাষ্ট্রপতি নতুন দিল্লিতে একটি এস্টেটে বাস করেন। এই এস্টেটটি রাষ্ট্রপতি ভবন নামে পরিচিত। রাষ্ট্রপতির অবসরযাপনের জন্য ছারাব্রা, শিমলা ও হায়দ্রাবাদে তিনটি রিট্রিট বিল্ডিং রয়েছে। হায়দ্রাবাদের রিট্রিট ভবনটির নাম রাষ্ট্রপতি নিলয়ম।
একটি মুক্ত বাজার একটি বাজার যেখানে দাম দ্বারা নির্ধারিত হয় যোগান ও চাহিদা. বিনামূল্যে সঙ্গে বাজারের বিপরীতে নিয়ন্ত্রিত বাজার গুলি যা সরাসরি দাম, সরবরাহ বা চাহিদা নিয়ন্ত্রিত হয়. বিভিন্ন অর্থনৈতিক তত্ত্ব ও মুক্ত বাজার সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য আবশ্যক, উদাহরণস্বরূপ, একটি নিখুঁত বাজার সাথে নির্ভুল তথ্য এবং নিখুঁত প্রতিযোগিতার.
গৌড়েশ্বর মহারাজাধিরাজ শশাঙ্কদেব ছিলেন প্রাচীন বাঙ্গালার গৌড় সাম্রাজ্যের সার্বভৌম নৃপতি ও বাংলা অঞ্চলে একীভূত রাষ্ট্রের প্রথম স্বাধীন রাজা। তিনি বাংলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র রাজ্যকে একত্র করে গৌড় জনপদ গড়ে তোলেন। খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে তিনি রাজত্ব করেছেন বলে ধারণা করা হয়। কারো কারো মতে তিনি ৬০০ হতে ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রাজত্ব করেন। তাঁর রাজধানীর নাম ছিল কর্ণসুবর্ণ বা কানসোনা।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারত প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম ধর্ম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
জিন্নাহর চৌদ্দ দফা নামক সাংবিধানিক সংস্কার পরিকল্পনা মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ কর্তৃক প্রস্তাবিত হয়। স্বাধীন ভারতে মুসলিমদের রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য এই প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। জিন্নাহর লক্ষ্য ছিল মুসলিমদের জন্য অধিকতর রাজনৈতিক অধিকার আদায় করা। এ কারণে তিনি এই চৌদ্দ দফা প্রস্তাব করেন। এর মধ্যে মুসলিমদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মুসলিম লীগের নেতাদের আহ্বানে জিন্নাহ দলের নেতৃত্বে ফিরে আসেন এবং দলকে পুনরুজ্জীবিত করেন। ফলে এই দফাগুলো মুসলিমদের দাবিতে পরিণত হয় এবং পরবর্তী সময়গুলোতে মুসলিমদের চিন্তাধারায় প্রভাব ফেলে।
দেশসমূহের সংঘ বা লিগ অব নেশন্স (League of Nations) প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। ১৯২০ সালের ১০ই জানুয়ারি প্যারিস শান্তি আলোচনার ফলস্বরূপ এ সংস্থাটির জন্ম। পৃথিবীতে বৈশ্বিক শান্তি রক্ষায় সর্বপ্রথম সংস্থাটি হল সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালীন চুক্তিপত্র বা নিয়মপত্র (কভেন্যান্ট/covenant) অনুযায়ী এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল সম্মিলিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অসামরিকীকরণের মাধ্যমে যুদ্ধ এড়ানো এবং সমঝোতা ও সালিশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্বের নিরসন করা। অন্যান্য লক্ষ্যের মধ্যে শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতকরণ, আদিবাসীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ, বৈশ্বিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ, মাদক ও মানব পাচার রোধ, অস্ত্র কেনাবেচা রোধ এবং ইউরোপের সংখ্যালঘু ও যুদ্ধবন্দীদের অধিকার নিশ্চিতকরণ অন্যতম। ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৫-এর মধ্যে সংস্থাটির সর্বোচ্চ সদস্যসংখ্যা ছিল ৫৮টি।
নেলসন রোলিহ্লাহ্লা ম্যান্ডেলা (জোজা উচ্চারণ: [xoˈliːɬaɬa manˈdeːla]; ১৮ জুলাই ১৯১৮ - ৫ ডিসেম্বর ২০১৩) ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ-বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী, রাজনৈতিক নেতা এবং প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দেশটির প্রথম কৃষাঙ্গ রাষ্ট্রপ্রধান। আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রের আদর্শের ধারক ম্যান্ডেলা ১৯৯১ থেকে ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ম্যান্ডেলা ব্রিটিশ দক্ষিণ আফ্রিকার এমভেজোর এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও উইটওয়াটারস্র্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং জোহানেসবার্গে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি উপনিবেশ-বিরোধী কার্যক্রম ও আফ্রিকান জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯৪৩ সালে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগ দেন এবং ১৯৪৪ সালে ইয়ুথ লিগ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি সশস্ত্র সংগঠন উমখন্তো উই সিযওয়ের নেতা হিসাবে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৬২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে ও অন্তর্ঘাতসহ নানা অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ম্যান্ডেলা ২৭ বছর কারাবাস করেন। এর অধিকাংশ সময়ই তিনি ছিলেন রবেন দ্বীপ, পলসমুর কারাগার ও ভিক্টর ভার্স্টার কারাগারে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চপের মুখে এবং বর্ণবাদী গৃহযুদ্ধের আতঙ্কে রাষ্ট্রপতি এফ. ডব্লিউ.
মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র
মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র (ইংরেজি: Universal Declaration of Human Rights (UDHR)) একটি ঘোষণাপত্র যা একটি আন্তর্জাতিক দলিল যা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দ্বারা গৃহীত হয় যা সমস্ত মানুষের অধিকার এবং স্বাধীনতাকে সংহত করে। এলেনর রুজভেল্টের সভাপতিত্বে জাতিসংঘের একটি কমিটি কর্তৃক খসড়া তৈরি করা হয়, এটি ফ্রান্সের প্যারিসের প্যালেস দে শ্যালোটে ১০ ডিসেম্বর ১৯৪৮ এ তৃতীয় অধিবেশন চলাকালীন সাধারণ পরিষদ কর্তৃক রেজোলিউশন ২১৭ হিসাবে গৃহীত হয়।। প্রত্যেক মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে এই সনদ ঘোষিত হয়।
পঞ্চায়েত, সরপঞ্চ বা মোখিয়া, ইউনিয়ন পঞ্চায়েত প্রথা (পঞ্চায়েত রাজ বা গ্রাম পরিষদ) হল ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভূত এক ধরনের শাসন ব্যবস্থা যা প্রধানত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কায় বিদ্যমান। এটি ভারতীয় উপমহাদেশের স্থানীয় সরকারের প্রাচীনতম ব্যবস্থা। বিভিন্ন ঐতিহাসিক বর্ণনা মতে ২৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকেই এ প্রথার প্রচলন ছিল। "পঞ্চায়েত" শব্দের অর্থ পাঁচ (পঞ্চ) জনের "পরিষদ" (আয়েত)। ঐতিহ্যগতভাবে পঞ্চায়েতগুলো স্থানীয় জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য জ্ঞানী ও সম্মানিত প্রবীণদের নিয়ে গঠিত হয়। তবে, স্থানভেদে এ জাতীয় পরিষদের গঠনে ভিন্নতা রয়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে, এই পরিষদ ব্যক্তি পর্যায়ের এবং গ্রাম পর্যায়ের বিভিন্ন বিরোধ মীমাংসা করে থাকে। বা এটা গ্রাম মহলের পূর্বেকার চেয়ারম্যানের একটি পদবী।
{{কাজ চলছে/২০২২}} জোরপূর্বক শ্রম, যৌন দাসত্ব অথবা পাচারকৃত মানুষদেরকে ব্যবসায়িক যৌনশোষণমূলক কাজে নিয়োজিত করার জন্য সংঘটিত অবৈধ মানব বাণিজ্যকে মানব পাচার বলা হয়। এ বিষয়টি জোরপূর্বক বিবাহের মাধ্যমে পত্নী জোগাড়, অঙ্গহানি বা টিস্যু/কলাহানি বা ভ্রূণকোষ ধ্বংস করাকেও পরিবেষ্টন করতে পারে। মানব পাচার একটি দেশের অভ্যন্তরে বা এক দেশ থেকে অন্য দেশে সংঘটিত হয়। মানব পাচার বল প্রয়োগের মাধ্যমে সংঘটিত একটি অপরাধ যা মানুষের মুক্ত চলাচলের অধিকারকে হরণ করে। মানব পাচার মূলত নারী এবং শিশু পাচারকেই ইঙ্গিত করে থাকে।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহের তালিকা
এই নিবন্ধটিতে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহের নামগুলি তালিকাবদ্ধ ভাবে উপস্থাপন করা হলো।
রেনেসাঁস বা পুনর্জন্ম বা পুনর্জাগরণ বা নবজাগরণ (ফরাসি: Renaissance, ইতালীয়: Rinascimento) ছিল পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে সংঘটিত ইউরোপীয় ইতিহাসে মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে পদার্পনের মধ্যবর্তী সময়। এটি মধ্যযুগের সংকটের পর সংঘটিত হয়ে ব্যাপক সামাজিক পরিবর্তন সাধিত করে। তাছাড়া রেনেসাঁ মূলত শুরু হয় চতুর্দশ শতাব্দীতে এবং শেষ হয় সপ্তদশ শতাব্দীতে এসে। গতানুগতিকভাবে সবাই রেনেসাঁর প্রাথমিক সময়ের দিকে নজর দেয়, কিন্তু অনেক ইতিহাসবিদ মধ্যযুগের দিকেই বেশি মনোনিবেশ করেন এবং তারা যুক্তি দেখান যে এটি মধ্যযুগেরই বিস্তৃতি। যাইহোক, সময়ের সূচনা - ১৫ শতকের প্রথম দিকের রেনেসাঁ এবং প্রায় ১২৫০ বা ১৩০০ সাল থেকে ইতালীয় প্রোটো-রেনেসাঁ - মধ্যযুগের শেষের সাথে উল্লেখযোগ্যভাবে ওভারল্যাপ করে, প্রচলিতভাবে সি.
ভারতে গার্হস্থ্য সহিংসতার মধ্যে রয়েছে জৈবিক আত্মীয়ের দ্বারা একজন ব্যক্তি কর্তৃক সহ্য করা যেকোনো ধরনের সহিংসতা, কিন্তু সাধারণত একজন মহিলা তার পরিবারের পুরুষ বা আত্মীয়দের দ্বারা সহিংসতার শিকার হয়। ২০০৫ সালে একটি ন্যাশনাল ফ্যামিলি অ্যান্ড হেলথ সার্ভে অনুসারে, মহিলাদের মোট জীবনকালের ৩৩.৫% গৃহস্থালি সহিংসতা ও ৮.৫% যৌন সহিংসতা ১৫–৪৯ বছর বয়সের মধ্যে ঘটে। দ্য ল্যানসেট-এ ২০১৪ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে ভারতে যৌন সহিংসতার হার যদিও বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন, কিন্তু ভারতের বৃহৎ জনসংখ্যার অর্থ এই যে, সহিংসতা ২৭.৫ মিলিয়ন নারীকে তাদের জীবদ্দশাকে প্রভাবিত করে। যাইহোক, থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন দ্বারা পরিচালিত বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একটি মতামত জরিপ অনুযায়ী ভারতকে মহিলাদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ হিসাবে স্থান দেওয়া হয়।ভারতের ২০১২ সালের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্টে প্রতি অপরাধের হার ১,০০,০০০ জনে ৪৬ টি, ধর্ষণের হার প্রতি ১,০০,০০০ জনে ২ টি, যৌতুক হত্যার হার প্রতি ১,০০,০০০ জনে ০.৭ টি এবং স্বামী বা তার আত্মীয়দের দ্বারা পারিবারিক নিষ্ঠুরতার হার প্রতি ১,০০,০০০ জনে ৫.৯ টি উল্লেখ করা হয়। এই রিপোর্টে করা হারগুলি অনেক দেশে রিপোর্ট করা অন্তরঙ্গ অংশীদার গার্হস্থ্য সহিংসতার হারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষুদ্র, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (প্রতি ১,০০,০০০ জনে ৫৯০ টি) এবং জাতিসংঘ কর্তৃক ট্র্যাক করা বেশিরভাগ দেশে প্রতি ১,০০,০০০ জন নারীর মধ্যে হত্যা (বিশ্বব্যাপী প্রতি ১,০০,০০০ জনে ৬.২ টি), অপরাধ এবং ধর্ষণের ঘটনা।ভারতে বেশ কিছু পারিবারিক সহিংসতা আইন রয়েছে। প্রাচীনতম আইন হিসাবে 'যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইন ১৯৬১' ছিল, যা যৌতুক দেওয়া ও গ্রহণ করাকে অপরাধ হিসাবে পরিণত করেছিল। ১৯৬১ আইনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টায়, ১৯৮৩ সাল ও ১৯৮৬ সালে ভারতীয় দণ্ডবিধিতে দুটি নতুন ধারা, ধারা ৪৯৮এ ও ধারা ৩০৪বি চালু করা হয়। সাম্প্রতিকতম আইন হল গার্হস্থ্য সহিংসতা থেকে নারীদের সুরক্ষা আইন (পিডব্লিউডিভিএ) ২০০৫। পিডব্লিউডিভিএ, একটি নাগরিক আইন, যা পারিবারিক সহিংসতা হিসাবে শারীরিক, মানসিক, যৌন, মৌখিক ও অর্থনৈতিক অপব্যবহারকে অন্তর্ভুক্ত করে।
সরকার বা শাসনব্যবস্থা (ইং: Government) হলো কোনো দেশের সর্বোচ্চ সংস্থা ও কর্তৃপক্ষ যার মাধ্যমে দেশটির শাসন কার্য পরিচালিত হয়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি যেমন সংসদ সদস্যদের দ্বারা গঠিত হয়। সরকারের মৌলিক দায়িত্ব জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী দেশের নিরাপত্তা বিধান করা, সমাজের শান্তি বজায় রাখা, মানুষের জান-মাল রক্ষা করা এবং বিবাদের ক্ষেত্রে বিচারকার্য পরিচালনা করা। সরকার তার ওপর আরোপিত দায়িত্বসমূহ পালনের স্বার্থে রাজস্ব আহরণ করে এবং শাসনকার্য পরিচালনা ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য তা ব্যয় করে থাকে।সাধারণত "সরকার" শব্দটির দ্বারা একটি সাধারণ সরকার বা সার্বভৌম রাষ্ট্রকে বোঝায়। সরকার স্থানীয়, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক হতে পারে। যদিও বাণিজ্যিক, শিক্ষাগত, ধর্মীয়, বা অন্যান্য বিধিবদ্ধ সংস্থাগুলিও নিজস্ব পরিচালন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শাসিত হয়। এই জাতীয় কর্তৃপক্ষ বোর্ড অফ ডিরেক্টর, ম্যানেজার, গভর্নর নামে পরিচিত; এগুলিকে প্রশাসন (যেমন বিদ্যালয় প্রশাসন) বা কাউন্সিল অফ এল্ডার্স (যেমন খ্রিষ্টান চার্চে) নামেও চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। সরকারের আকার অঞ্চল বা উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়।
শিব (সংস্কৃত: शिव [ɕɪʋɐ], সংস্কৃত: शिवः, আইএএসটি: Śiva, আইএসও: Śiva, শুনুন ), হলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ দেবতা। সনাতন ধর্মের শাস্ত্রসমূহে তিনি পরমসত্ত্বা রূপে ঘোষিত। শিব সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়রূপ তিন কারণের কারণ। তিনি সমসাময়িক হিন্দুধর্মের তিনটি সর্বাধিক প্রাচীন সম্প্রদায়ের অন্যতম শৈব সম্প্রদায়ের প্রধান দেবতা। এছাড়া শিব স্মার্ত সম্প্রদায়ে পূজিত ঈশ্বরের পাঁচটি প্রধান রূপের (গণেশ, শিব, সূর্য, বিষ্ণু ও দুর্গা) একটি রূপ। তার বিশেষ রুদ্ররূপ ধ্বংস, সংহার ও প্রলয়ের দেবতা।সর্বোচ্চ স্তরে শিবকে সর্বোৎকর্ষ, অপরিবর্তনশীল পরম ব্রহ্ম মনে করা হয়। ব্রহ্ম স্বরূপে পরমাত্মা শিব বিন্দুর ন্যায় অর্থাৎ নিরাকার,এই অবস্থায় শিবকে কল্পনাও করা যায়না,তিনি কালচক্র ও সংসারের সকল গুণ-অগুণ এর উর্দ্ধে। শিবের অনেকগুলি সদাশয় ও ভয়ঙ্কর মূর্তিও আছে। সদাশয় রূপে তিনি একজন সর্বজ্ঞ যোগী। তিনি কৈলাস পর্বতে সন্ন্যাসীর জীবন যাপন করেন। আবার গৃহস্থ রূপে তিনি পার্বতীর স্বামী। তার দুই পুত্র বর্তমান। এঁরা হলেন গণেশ ও কার্তিক। ভয়ঙ্কর রূপে তাকে প্রায়শই দৈত্যবিনাশী বলে বর্ণনা করা হয়। শিবকে যোগ, ধ্যান ও শিল্পকলার দেবতাও মনে করা হয়। এছাড়াও তিনি চিকিৎসা বিদ্যা ও কৃষিবিদ্যারও আবিষ্কারক।শিবমূর্তির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল তাঁর তৃতীয় নয়ন, গলায় বাসুকী নাগ, জটায় অর্ধচন্দ্র, জটার উপর থেকে প্রবাহিত গঙ্গা, অস্ত্র ত্রিশূল ও বাদ্য ডমরু। শিবকে সাধারণত ‘শিবলিঙ্গ’ নামক বিমূর্ত প্রতীকে পূজা করা হয়।
হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ - ১৯ জুলাই ২০১২) ছিলেন একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অন্য দিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। তার বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। মিসির আলি এবং হিমু তার সৃষ্ট অন্যতম দুটি জনপ্রিয় চরিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালদের তালিকা
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের নিয়মতান্ত্রিক প্রধান ও ভারতের রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি। রাষ্ট্রপতি পাঁচ বছরের মেয়াদে রাজ্যপাল নিয়োগ করে থাকেন। মহামান্য লা গণেশন (অস্থায়ী) পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজ্যপাল (দপ্তরকালের সূচনা ১৮ জুলাই ২০২২)। রাজ্যপালের সরকারি বাসভবন রাজভবন।
দক্ষিণ ভারতের ইতিহাস দুই সহস্রাধিক বছর ধরে ঘটমান উক্ত অঞ্চলের একাধিক রাজবংশ ও সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের ইতিহাস। দক্ষিণ ভারত ভূখণ্ডে প্রাগৈতিহাসিক জনবসতির একাধিক নিদর্শন পাওয়া গেছে। দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন ইতিহাসের কোনো লিখিত উপাদান না পাওয়া গেলেও প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত ধ্বংসাবশেষ থেকে অনুমিত হয় খ্রিষ্টের জন্মের কয়েকশো বছর আগেই এই অঞ্চলে সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। মৌর্য সম্রাট অশোক সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে নিজ আধিপত্য বিস্তার করার সময় দাক্ষিণাত্যের একাধিক অঞ্চল জয় করেন। এই সময় থেকেই এই অঞ্চলের লিখিত ইতিহাসের সূত্রপাত। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে সাতবাহন, চালুক্য, পল্লব, রাষ্ট্রকূট, চের, চোল, পাণ্ড্য, কাকতীয় ও হোয়েসল রাজবংশ দক্ষিণ ভারতে নিজ আধিপত্য বিস্তার করে। এই সকল রাজ্যগুলি সর্বদাই নিজেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিগ্রহে লিপ্ত থাকত। পরে উত্তর ভারত থেকে মুসলমান বাহিনী দক্ষিণ ভারত আক্রমণ করলে তাদের বিরুদ্ধেও এরা সামরিক অভিযান চালায়। মুসলমান আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ উত্থান ঘটে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের। এই সাম্রাজ্য সমগ্র দক্ষিণ ভারতে নিজ অধিকার স্থাপন করতে সক্ষম হয় এবং দাক্ষিণাত্যে মুঘল অভিযানের বিরুদ্ধে প্রধান বাধাস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়। ষোড়শ শতাব্দীতে যখন ইউরোপীয় শক্তিগুলি এই অঞ্চলে পদার্পণ করতে শুরু করে তখন এই নতুন প্রতিকূলতার সঙ্গে সংগ্রামের ক্ষমতা দক্ষিণের রাজন্যবর্গের মধ্যে আর অবশিষ্ট ছিল না। ফলে ধীরে ধীরে সমগ্র দক্ষিণ ভারত ব্রিটিশদের অধীনস্থ হয়ে পড়ে। ব্রিটিশ সরকার দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলকে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত করেন। অবশিষ্ট অঞ্চলগুলি একাধীন ব্রিটিশ-নির্ভরশীল দেশীয় রাজ্যে বিভক্ত থাকে। ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের পর ভাষার ভিত্তিতে দক্ষিণ ভারত অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, কেরল ও তামিলনাড়ু রাজ্যে বিভক্ত হয়।
মুহাম্মাদ (আরবি: مُحَمَّد; মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত) ছিলেন একজন আরবের ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক নেতা এবং ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। ইসলামি মতবাদ অনুসারে, তিনি হলেন ঐশ্বরিকভাবে প্রেরিত ইসলামের সর্বশেষ নবী (আরবি: النبي; আন-নাবিয়্যু) তথা ‘বার্তাবাহক’ ও রাসুল (আরবি: الرسول; আল-রাসুল), যার উপর ইসলামের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কুরআন অবতীর্ণ হয়। আদম, ইব্রাহিম, মূসা, ইসা (যিশু) এবং অন্যান্য নবিদের মতোই মুহাম্মদ একেশ্বরবাদী শিক্ষা প্রচার করার জন্য প্রেরিত। অমুসলিমদের মতে, তিনি ইসলামি জীবনব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল ছিলেন, তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সাফল্য। কুরআনের পাশাপাশি তার শিক্ষা এবং অনুশীলনগুলো ইসলামি ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে।
বাদল সরকার (১৫ জুলাই, ১৯২৫ - ১৩ মে, ২০১১) একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি নাট্যব্যক্তিত্ব। যিনি থার্ড থিয়েটার নামক ভিন্ন ধারার নাটকের প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত। ৭০ দশকের নকশাল আন্দোলনের সময় প্রতিষ্ঠান বিরোধী নাটক রচনার জন্যে তিনি পরিচিত হন, মঞ্চের বাইরে সাধারণ মানুষের ভেতর নাটক'কে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রথম কাজ বাদল সরকারের। তার নিজস্ব নাটক দল শতাব্দী গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে। ভারতে আধুনিক নাট্যকার হিসেবে হাবিব তনভীর, বিজয় তেন্ডুলকর, মোহন রাকেশ এবং গিরিশ কারনাডের পাশাপাশি বাংলায় বাদল সরকারের নাম উচ্চারিত হয়।
ফেসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেইসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত), হল মেটা প্ল্যাটফর্মসের মালিকানাধীন বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
লাচিত বরফুকন সম্পূৰ্ণ নাম - চাও লাচিত ফুকনলুং (অসমীয়া: লাচিত বৰফুকন) আহোম সাম্রাজ্যের সাহসি ও পরাক্রমী সেনাপতি ছিলেন। ১৬৬৯ সনে তিনি আহোম সেনার দ্বারা বিশাল মোগল সেনা বাহিনীকে পরাজিত করে মোগল সাম্রাজ্যকে চিরকালের জন্য আসাম থেকে দূর করে দিয়েছিলেন। শরাইঘাটের যুদ্ধের পরাক্রমের জন্য আসামের ইতিহাসে লাচিত বরফুকনের নাম উজ্জ্বলিত হয়ে আছে। লাচিত বরফুকনের বীরত্বের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রতিবছর ২৪ নভেম্বর তারিখ অসমে লাচিত দিবস পালন করা হয়।
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, ২০২২
২০২২ ভারতীয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে ভারতে অনুষ্ঠিতব্য ১৬তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। রামনাথ কোবিন্দ ভারতের বর্তমান রাষ্ট্রপতি। ভারতের সংবিধানের ৫৬(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে ভারতের রাষ্ট্রপতি পাঁচ বছরের জন্য পদে বহাল থাকবেন। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ শেষ হওয়ার ফলে, পদটি পূরণের জন্য একটি নির্বাচনী ভোট ১৮ জুলাই ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোট গণনা ২১ জুলাই ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। ২১ জুন ২০২২, প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা যশবন্ত সিনহা সর্বসম্মতভাবে ২০২২ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য ইউপিএ এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির সাধারণ প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হন। একই দিনে এনডিএ দ্রৌপদী মুর্মুকে তাদের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসাবে বেছে নেয়।
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] (শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ – ৪ জুলাই ১৯০২; জন্মনাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত, বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...," ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা, যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তার রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?
সমুদ্রগুপ্ত (রাজত্বকাল খ্রিস্টীয় ৩৩৫ – ৩৮০ অব্দ) ছিলেন গুপ্তসম্রাট প্রথম চন্দ্রগুপ্তের পুত্র, উত্তরাধিকারী এবং গুপ্ত সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ রাজা। শুধু গুপ্ত বংশেরই নন, তিনি ছিলেন ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সামরিক শাসক। সম্ভবত তিনি পিতার প্রথম সন্তান ছিলেন না, কিন্তু শৌর্য ও বীর্যের কারণে প্রথম চন্দ্রগুপ্ত তাকেই উত্তরসূরি নির্বাচিত করেন। সমগ্র উত্তর ভারতকে নিজের প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে আনেন ও দক্ষিণ ভারতের মাদ্রাজ অঞ্চল অবধি রাজ্যসমূহকে গুপ্ত সাম্রাজ্যের করদ রাজ্যে পরিণত করেছিলেন সমুদ্রগুপ্ত। সিংহলের রাজাও তার সার্বভৌমত্ব স্বীকার করেছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বাংলা: বাংলাদেশ গণসংঘ) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়।
বিদ্যুৎ একটি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি অন্যতম সঞ্চালক ব্যবস্থা। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় এখনো বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত যথেষ্ট পিছিয়ে রয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) কর্তৃক প্রকাশিত ‘এনার্জি আর্কিটেকচার পারফরম্যান্স ইনডেক্স- ২০১৭’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুসারে বিদ্যুতের কাঠামোগত দক্ষতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৪তম বিশ্বের ১২৭টি দেশের মধ্যে। আগস্ট, ২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশে বিদ্যুতের মাথাপিছু উৎপাদন হল ৪০৭ কিঃওঃআঃ। যা দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো যেমন ভারত, পাকিস্তান কিংবা শ্রীলংকার মধ্যে সর্বনিম্ন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে বিদ্যুৎ খাতটি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে একীভূত অবস্থায় ছিল। এই খাতের সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে ১৯৯৮ সালে বিদ্যুৎ খাতটিকে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পৃথক বিদ্যুৎ বিভাগে পরিণত করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ, দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
স্যার মুহাম্মদ ইকবাল (; উর্দু: محمد اِقبال; ৯ নভেম্বর ১৮৭৭ – ২১ এপ্রিল ১৯৩৮), আল্লামা ইকবাল নামে ব্যাপক পরিচিত, ছিলেন অবিভক্ত ভারতবর্ষের মুসলিম কবি, দার্শনিক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও ব্যারিস্টার। তার ফার্সি ও উর্দু কবিতা আধুনিক যুগের ফার্সি ও উর্দু সাহিত্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাকে পাকিস্তানের আধ্যাত্মিক জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। ইকবাল তার ধর্মীয় ও ইসলামের রাজনৈতিক দর্শনের জন্যও বিশেষভাবে সমাদৃত ছিলেন।
ইউটিউব (ইংরেজি: Youtube) হলো সান ব্রুনো, ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক একটি মার্কিন অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম সেবার সাইট, যা ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। ইউটিউব বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম। ২০০৬ সালের অক্টোবরে, গুগল সাইটটিকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করে নেয়। ইউটিউব বর্তমানে গুগলের অন্যতম অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
আফিয়া নুসরাত বর্ষা (জন্ম ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৯ "বর্ষা" পরিচিত নামে) একজন বাংলাদেশী অভিনেত্রী। তিনি তার ক্যারিয়ার শুরু করেন মডেল হিসেবে। ২০১০ সালে ইফতেখার চৌধুরী'র খোঁজ-দ্য সার্চ চলচ্চিত্রে অনন্ত জলিলের সাথে চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে। তিনি তার ক্যারিয়ারে খোঁজ-দ্য সার্চ, হৃদয় ভাঙা ঢেউ, মোস্ট ওয়েলকাম এর মত বৃহৎ বাজেটের চলচ্চিত্রের উল্লেখযোগ্য চরিত্রে ভূমিকা রাখেন। এছাড়া তিনি মুনসুন ফিল্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি তার ক্যারিয়ার হাইলাইট হিসেবে অনন্ত জলিলকে বিয়ে করেন।
পঞ্চতন্ত্র (সংস্কৃত: पञ्चतन्त्र) সংস্কৃত ভাষায় রচিত একটি প্রাচীন গ্রন্থ যার রচয়িতা কবি বিষ্ণু শর্মা। তবে এই গ্রন্থের মূল পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায় নি। নানা উপদেশমূলক গল্পের সংকলন এই গ্রন্থ । জীবনের পথের নানা উপদেশ এই গ্রন্থের নানা উপকথার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। গ্রন্থটি পাঁচটি তন্ত্রে বিভক্ত বলেই নাম পঞ্চতন্ত্র। এগুলি হলো:
বাগধারা শব্দের আভিধানিক অর্থ কথার বচন ভঙ্গি বা ভাব বা কথার ঢং। বাক্য বা বাক্যাংশের বিশেষ প্রকাশভঙ্গিকে বলা হয় বাগধারা। বিশেষ প্রসঙ্গে শব্দের বিশিষ্টার্থক প্রয়োগের ফলে বাংলায় বহু বাগধারা তৈরি হয়েছে। এ ধরনের প্রয়োগের পদগুচ্ছ বা বাক্যাংশ আভিধানিক অর্থ ছাপিয়ে বিশেষ অর্থের দ্যোতক হয়ে ওঠে। বলা যায় বাক্যার্থ ছাপিয়ে এখানে ব্যাঙ্গার্থই প্রধান।
এই নিবন্ধটি ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পূর্ববর্তী ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস-সম্পর্কিত। ১৯৪৭-পরবর্তী ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ইতিহাস নিবন্ধটি। এছাড়া পাকিস্তান বা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন যথাক্রমে পাকিস্তানের ইতিহাস ও বাংলাদেশের ইতিহাস। দক্ষিণ ভারত, অবিভক্ত বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস জানতে হলে দেখুন যথাক্রমে দক্ষিণ ভারতের ইতিহাস, বাংলার ইতিহাস ও পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস।ভারতের ইতিহাস বলতে মূলত খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দ থেকে খ্রিষ্টীয় বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত, ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন -মধ্যযুগীয় ও প্রাক-আধুনিক কালের ইতিহাসকেই বোঝানো হয়। খ্রিষ্টের জন্মের প্রায় দশ লক্ষ(?) বছর আগে উক্ত ভূখণ্ডে প্রথম মানববসতি গড়ে উঠতে দেখা যায়। তবে ভারতের জ্ঞাত ইতিহাসের সূচনা হয় ৩৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সিন্ধু সভ্যতার উন্মেষ ও প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে। পরবর্তী হরপ্পা যুগের সময়কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দের সূচনায় এই ব্রোঞ্জযুগীয় সভ্যতার পতন ঘটে। সূচনা হয় লৌহ-নির্ভর বৈদিক যুগের। এই যুগেই সমগ্র গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে মহাজনপদ নামে পরিচিত ১৬টি প্রধান প্রধান রাজ্য-তথা-জনবসতির উত্থান ঘটে। এই জনপদগুলির অধিকাংশই রাজতান্ত্রিক হলেও এদের মধ্যে "লিচ্ছিবি" ছিল গণতান্ত্রিক। এই জনপদের মধ্যে অন্যতম ছিল মগধ।খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে মগধে জন্মগ্রহণ করেন মহাবীর ও গৌতম বুদ্ধ; পরবর্তীকালে যাঁরা ভারতের জনসাধারণের মধ্যে শ্রমণ ধর্মদর্শন প্রচার করেন।
আনন্দবাজার পত্রিকা পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত একটি শতাব্দী প্রাচীন ভারতীয় দৈনিক পত্রিকা। কলকাতার এবিপি প্রাইভেট লিমিটেড এর প্রকাশক। প্রকাশ-সংখ্যার ভিত্তিতে এটি ভারতে বাংলা ভাষায় বহুল প্রচারিত দৈনিক। কলকাতা, নয়া দিল্লি, ভুবনেশ্বর, রাঁচি, শিলিগুড়ি ও ভারতের অন্যান্য শহর থেকে নিয়মিত এটি দশ লক্ষেরও অধিক সংখ্যায় প্রচারিত হয়। ইন্ডিয়ান রিডারশিপ সার্ভে অনুসারে, পত্রিকাটি ১৫৬ লাখ মানুষ পাঠ করেন।
পরিবেশ আন্দোলন (কখনও কখনও বাস্তুসংস্থান আন্দোলন হিসাবেও উল্লেখ করা হয়), এছাড়াও সংরক্ষণ এবং সবুজ রাজনীতি সহ, পরিবেশগত সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য একটি বৈচিত্র্যময় দার্শনিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলন । অর্থ্যাৎ যেসব আন্দোলন গুলি পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানগুলির স্বাভাবিক ভারসাম্য বজায় রাখতে ও সংরক্ষণ করতে এবং পরিবেশ দূষণ ও অবক্ষয় প্রতিরোধ করতে এবং সর্বোপরি টেকসই পরিবেশ ও মানব জাতির স্বার্থে সংঘটিত হয় তাদের পরিবেশ আন্দোলন বলা যেতে পারে ।পরিবেশবাদীরা জনসাধারণের নীতি এবং ব্যক্তিগত আচরণের পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্পদের ন্যায্য এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশের স্টুয়ার্ডশিপের পক্ষে কথা বলেন। বাস্তুতন্ত্রের (শত্রু নয়) অংশগ্রহণকারী হিসাবে মানবতার স্বীকৃতিতে, আন্দোলনটি বাস্তুবিদ্যা, স্বাস্থ্য এবং মানবাধিকার কেন্দ্রিক।
যমুনা বহুমুখী সেতু বা বঙ্গবন্ধু সেতু বাংলাদেশের যমুনা নদীর উপরে অবস্থিত একটি সড়ক ও রেল সেতু। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এই সেতুটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু। ১৯৯৮ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এটি যমুনা নদীর পূর্ব তীরের ভূঞাপুর এবং পশ্চিম তীরের সিরাজগঞ্জকে সংযুক্ত করে। এটি বিশ্বে ১১শ এবং দক্ষিণ এশিয়ার ৬ষ্ঠ দীর্ঘতম সেতু। যমুনা বাংলাদেশের প্রধান তিনটি নদীর মধ্যে বৃহত্তর এবং প্রবাহিত পানি আয়তানিক পরিমাপের দিক থেকে বিশ্বে পঞ্চম বৃহত্তম। সেতুটি বাংলাদেশের পূর্ব এবং পশ্চিম অংশের মধ্যে একটি কৌশলগত সংযোগ প্রতিষ্ঠিত করে। এটি অত্র অঞ্চলের জনগণের জন্য বহুবিধ সুবিধা বয়ে আনে, বিশেষত অভ্যন্তরীন পণ্য এবং যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থা দ্রুত করে। পরবর্তিতে এই সেতুর নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু সেতু। যমুনা সেতু স্থাপনের জন্য প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয় ১৯৪৯ সালে। ১৯৯৪ সালের ১৫ অক্টোবর এর কাজ শুরু হয় এবং ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একটি জাতীয় রাজনৈতিক দল। এই দল সাধারণভাবে কংগ্রেস নামে পরিচিত। কংগ্রেস দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলদুটির একটি (অপর দলটি হল ভারতীয় জনতা পার্টি)। এটি একটি ভারতের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন। ১৮৮৫ সালে থিওজোফিক্যাল সোসাইটির কিছু "অকাল্ট" সদস্য কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। এঁরা হলেন অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম, দাদাভাই নওরোজি, দিনশ এদুলজি ওয়াচা, উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, মনমোহন ঘোষ, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে ও উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন প্রমুখ। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব দান করেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করলে, কংগ্রেস দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। সেই থেকে মূলত নেহেরু-গান্ধী পরিবারই কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দান করতে থাকেন।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
বিশ্বায়ন (globalization) বা ভুবনায়ন বিংশ শতকের শেষভাগে উদ্ভূত এমন একটি আন্তর্জাতিক অবস্থা যাতে পৃথিবীর বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা দৈশিক গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তঃদেশীয় পরিসরে পরিব্যাপ্তি লাভ করেছে। এর ফলে সারা বিশ্ব একটি পরিব্যাপ্ত সমাজে পরিণত হয়েছে এবং অভিন্ন বিনিয়োগ,কর্মসংস্থান,উৎপাদন ও বিপণন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন দেশ যুগপৎ অংশ গ্রহণ করছে।
দিন-দ্যা ডে হল ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ইরান-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার একটি অ্যাকশন থ্রিলার চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করছেন ইরানী পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম। এতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের আলোচিত ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা অনন্ত জলিল। চলচ্চিত্রটি ইরানের ফারাবি সিনেমা ফাউন্ডেশন ও অনন্ত জলিল যৌথ ভাবে প্রযোজনা করছেন। চলচ্চিত্রটি নির্মাণে ১০০ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে বলে জানান অনন্ত জলিল।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) ঊনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তার। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
জাতিসংঘ বিশ্বের জাতিসমূহের একটি সংগঠন, যার লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক অগ্রগতি এবং মানবাধিকার বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। ১৯৪৫ সালে ৫১টি রাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদ স্বাক্ষর করার মাধ্যমে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং পরবর্তীতে লুপ্ত লীগ অব নেশন্সের স্থলাভিষিক্ত হয়।
যোনি (লাতিন: ভ্যাজাইনা) স্ত্রীদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা একই সঙ্গে প্রজননতন্ত্র এবং রেচনতন্ত্রে অংশ।যোনি নারীর প্রজননতন্ত্রের বহির্ভাগ। যৌনসঙ্গম কালে পুরুষ তার লিঙ্গ নারীর যোনীতে প্রবিষ্ট করে এবং অঙ্গচালনার মাধ্যমে বীর্য নিক্ষেপ করে। এই বীর্য নারীর জরায়ুতে অবস্থিত ডিম্ব নিষিক্ত করে মানব ভ্রূণের জন্ম দিতে সক্ষম। অন্যদিকে, মূত্র ও নারীর মাসিক রজঃস্রাব কালে যোনীপথেই রক্তের নির্গমন হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় যোনীপথেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।বাংলায় যোনীর অনেক প্রতিশব্দ রয়েছে যথা স্ত্রীযোনী, যোনিপথ, যৌননালী, জনননালী ইত্যাদি। যৌনাঙ্গ, যৌনকর্ম ইত্যাদি শব্দও যোনী থেকে উদ্ভূত। যোনী হলো স্ত্রী প্রজনানঙ্গ যা জরায়ু থেকে স্ত্রীদেহের বাইরের অংশ অবধি পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ফাইব্রোমাসকুলার (তন্তু-পেশিময়) নলাকার অংশ। মানুষ ছাড়াও অমরাবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী ও মারসুপিয়াল প্রাণীতে, যেমন ক্যাঙ্গারু অথবা স্ত্রী পাখি, মনোট্রিম ও কিছু সরীসৃপের ক্লোকাতে যোনী বিদ্যমান। স্ত্রী কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণীরও যোনী আছে, যা মূলত ওভিডাক্টের শেষ প্রান্ত।
মহাকাব্য হচ্ছে দীর্ঘ ও বিস্তৃত কবিতা বিশেষ। সাধারণতঃ দেশ কিংবা সংস্কৃতির বীরত্ব গাঁথা এবং ঘটনাক্রমের বিস্তৃত বিবরণ এতে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরা হয়। সুপ্রাচীনকালে মুখে মুখে প্রচলিত কবিতাসমগ্রও মহাকাব্যের মর্যাদা পেয়েছে। মহাকাব্য নিয়ে আলবার্ট লর্ড এবং মিলম্যান প্যারী গবেষণা করেছেন। তারা উভয়েই যুক্তিপ্রদর্শন সহকারে ঐকমত্য্যে পৌঁছেছেন যে, আধুনিককালের মহাকাব্যগুলো প্রকৃত অর্থে প্রাচীনকালের মৌখিকভাবে প্রচলিত ও প্রচারিত কবিতাসমগ্রেরই শ্রেণীবিভাগ মাত্র।
পর্নোগ্রাফি (সংক্ষেপে "পর্ন" বা "পর্নো" অনানুষ্ঠানিক ব্যবহারে) যৌন উদ্দীপনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে যৌনসংক্রান্ত বিষয়বস্তুর প্রতিকৃতি অঙ্কন বা পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা। পর্নোগ্রাফি বিভিন্ন মাধ্যমের সাহার্যে উপস্থাপন করা হতে পারে, এর মধ্যে অর্ন্তভূক্ত রয়েছে, বই, সাময়িকী, পোষ্টকার্ড, আলোকচিত্র, ভাস্কর্য, অঙ্কন, পেইন্টিং, অ্যানিমেশন, সাউন্ড রেকর্ডিং, চলচ্চিত্র, ভিডিও এবং ভিডিও গেম।
রাশিয়া (রুশ: Россия রশিয়া), সরকারিভাবে রুশ ফেডারেশন নামে পরিচিত (রুশ: Российская Федерация রশিস্কায়া ফিদিরাৎসিয়া) যেটা পূর্ব ইউরোপে এবং উত্তর এশিয়ায় অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। এই দেশটি অর্ধ প্রেসিডেনসিয়াল ফেডারেল প্রজাতন্ত্র যার সংবিধান ৮৩ টি ফেডারেল বিষয় দ্বারা গঠিত। রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব পর্যন্ত নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড (উভয় দেশই কালিনিনগ্রাদ অব্লাস্ত সীমান্ত দিয়ে যুক্ত), বেলারুশ, ইউক্রেন, জর্জিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সাথে সীমান্ত আছে। দেশটির অখতস্ক সাগরের মাধ্যমে জাপানের সাথে ও বেরিং প্রণালীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার সাথে সামুদ্রিক সীমানা রয়েছে। রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ যার রয়েছে পৃথিবীর মোট আবাসযোগ্য জমির এক অষ্টমাংশ। দেশটির মোট আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল)। রাশিয়া বিশ্বের নবম জনবহুল দেশ যেখানে ২০১২ হিসাব অনুযায়ী ১৪৩ মিলিয়ন লোক বসবাস করে। পূর্ব ইউরোপে জায়গা সম্প্রসারণের ফলে রাশিয়া ১১টি সময় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এবং এখানে অনেক রকম ও বিস্তৃত পরিবেশের সমন্বয় ঘটেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America; উচ্চারণ: ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি টেরিটোরি এবং কিছু মাইনর আউটলেয়িং দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি "আমেরিকা" নামেও পরিচিত। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি অঙ্গরাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি অঞ্চলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত; আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যটি মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। এছাড়াও ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে পাঁচটি টেরিটরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
সম্মান রক্ষার্থে হত্যা বা অনার-কিলিং হল কাউকে নিজের পরিবার বা গোত্রের সম্মানহানির দায়ে ঐ পরিবার বা গোত্রের অপর ব্যক্তি কর্তৃক হত্যা করা, যার মাধ্যমে এই সম্মানহানির উপযুক্ত প্রতিকার হয়েছে বলে মনে করা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় অনার কিলিং প্রচলিত। নারীরা হলো অনার কিলিং এর প্রধান শিকার। পাকিস্তান, জর্ডান, লেবানন, মরোক্কো, সিরিয়ান রিপাবলিক ছাড়া অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশে এ প্রথা অধিক প্রচলিত। তবে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানীর মত দেশেও অনার কিলিং এর খবর পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকাণ্ড সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২
বাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ হচ্ছে বাংলাদেশের জনসংখ্যার বিস্তারিত গণনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত দেশের ষষ্ঠ জাতীয় আদমশুমারি। এটি বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল আদমশুমারি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তত্ত্বাবধানে ২০২২ সালের ১৫ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে। তবে উক্ত আদমশুমারিতে সংগৃহীত তথ্যের মানদণ্ড হিসেবে ১৫ জুন ২০২২ তারিখটি ব্যবহৃত হবে। দশ বছর পর পর আদমশুমারি হওয়ার ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের পর ২০২১ সালে এই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারী, সিলেটে বন্যা এবং সরঞ্জামের অভাবের কারণে সৃষ্ট জটিলতার ফলে এই আদমশুমারি বিলম্বিত হয়েছে।
মানব উন্নয়ন সূচক (ইংরেজি: Human Development Index) বিশ্বের সকল দেশসমূহের জীবন ধারণের মান, শিক্ষা, নিরক্ষরতা প্রভৃতির একটি তুলনামূলক সূচক। এখানে বিভিন্ন ধরনের পরিসংখ্যান ব্যবহার করে "মানব উন্নয়নের" মাপকাঠিতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে ক্রমানুসারে সাজানো হয় এবং "অনেক ভাল মানব উন্নয়ন", "ভাল মানব উন্নয়ন", "মাঝারি মানব উন্নয়ন" ও "নিম্ন মানব উন্নয়ন" এইসব ভাগে ভাগ করা হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধিত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য সংবিধানের ১৪২নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।