The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
তালবিয়া (আরবি: ٱلتَّلبِيَة, at-Talbīyah) হল একটি ইসলামী প্রার্থনা। হজ্জ বা হজ্বের সময় ইহরাম লাগানোর পর থেকে বারবার তালবিয়া পড়া হয়, যাতে হাজীরা পার্থিব উদ্বেগ থেকে নিজেকে শুদ্ধ ও মুক্ত রাখতে পারে। আরবি জিলহজ্জ মাসের নবম দিন, হজ্জের সময় আরাফাতের ময়দানে হাজীরা অবস্থান করে ও তালবিয়া বা লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক পাঠ করে। তালবিয়ার পাঠ্য হল: لَبَّيْكَ ٱللَّٰهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لَا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ ٱلْحَمْدَ وَٱلنِّعْمَةَ لَكَ وَٱلْمُلْكَ لَا شَرِيكَ لَكَলিপ্যন্তর: লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্নিমাতা লাকা ওয়ালমুল্ক লা শারি-কা লাক অধ্বব: [lab.baj.ka‿ɫ.ɫaː.hum.ma lab.baj.ka, lab.baj.ka laː ʃa.riː.ka la.ka lab.baj.ka, ʔin.na‿l.ħam.da wan.niʕ.ma.ta la.ka wal.mul.ka laː ʃa.riː.ka la.ka] “আমি হাজির হে আল্লাহ!
শিল্পের ইতিহাসে, প্রাগৈতিহাসিক শিল্পকলা হল প্রাক সাক্ষর সময়কার শিল্পকলা। প্রাগৈতিহাসিক সংস্কৃতিটি ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের অনেক পরে কোনো এক সময়ে শুরু হয়েছিল। যতক্ষণ না লেখার বিকাশ হয়েছে বা মানুষ তথ্য সংরক্ষণ করতে শিখেছে, বা অন্য সংস্কৃতির মানুষ যারা বিশেষ ঐতিহাসিক ঘটনার তথ্য সংরক্ষণ করতে শিখেছে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই শিল্পকলা অব্যাহত ছিল। এই সময় থেকেই পুরানো শিক্ষিত সংস্কৃতির জন্য প্রাচীন শিল্প শুরু হয়। কবে এটি শেষ হল তার সময় বিশ্বের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন রকম।আদি শিল্পকলাগুলিতে শৈল্পিক ছোঁয়া ছিল কিনা, তা কিছুটা বিতর্কিত বিষয়। এটা পরিষ্কার যে এই ধরনের কাজ ৪০,০০০ বছর আগে প্রাচীন প্রস্তর যুগে ছিল, যদিও এটি তার আগে থেকেও শুরু হতে পারে। সেপ্টেম্বর ২০১৮ এ, বিজ্ঞানীরা মানুষের প্রাচীনতম অঙ্কন আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন, যা আনুমানিক ৭৩,০০০ বছরের পুরানো। এর আগে পর্যন্ত ৪৩,০০০ বছরের পুরানো নিদর্শনগুলিই প্রাচীনতম মানব অঙ্কন বলে মনে করা হত।৫০০,০০০ বছর আগেকার হোমো ইরেকটাসদের খোদাই করে তৈরি করা খোলগুলি পাওয়া গেছে, যদিও এই খোদাইগুলিকে যথাযথভাবে ‘শিল্প’ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা যায় কিনা তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা একমত নন। প্রাচীন প্রস্তর যুগ থেকে শুরু করে মধ্য প্রস্তর যুগ পর্যন্ত, গুহা চিত্র এবং বহনযোগ্য শিল্পের মধ্যে প্রধানত মূর্তি এবং পুঁতির কাজ দেখা গেছে। কিছু উপযোগী বস্তুতে আলংকারিক ভাস্কর্যও দেখা যায়। নব্য প্রস্তরযুগের প্রাচীন মৃৎশিল্পের প্রমাণ মিলেছে, এছাড়াও দেখা গেছে ভাস্কর্য এবং মেগালিথ নির্মাণ। প্রাচীন শিলা শিল্প প্রথম এই সময়ের মধ্যে দেখা যায়। ব্রোঞ্জ যুগে ধাতুর কাজের উদ্ভবের ফলে শিল্প সৃষ্টিতে ব্যবহারের জন্য অতিরিক্ত মাধ্যম পাওয়া গিয়েছিল, এর ফলে শৈলীগত বৈচিত্র্য বৃদ্ধি পেয়েছিল, এবং শিল্প ছাড়া অন্য কোন সুস্পষ্ট কাজ নেই এমন বস্তুও তৈরি হয়েছিল। এই সময় কারিগরদের কিছু ক্ষেত্রেও উন্নয়ন হয়েছিল, শিল্পের উৎপাদনের পাশাপাশি প্রারম্ভিক লেখার ব্যবস্থায় বিশেষজ্ঞ এক শ্রেণির মানুষ দেখা গিয়েছিল। লৌহ যুগের মধ্যেই, প্রাচীন মিশর থেকে চীনের ইতিহাস#প্রাচীন চীন পর্যন্ত যে সভ্যতার বিকাশ হয়েছিল, সেখানে লিপির সন্ধান পাওয়া গেছে।
শিনজো আবে (জাপানি: 安倍晋三 আবে শিঞ্জৌ; ২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৪ – ৮ জুলাই, ২০২২) একজন জাপানি রাজনীতিবিদ ছিলেন, যিনি ২০০৬-২০০৭ সালে এবং ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পর্যন্ত জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তিনি জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
পদ্মা সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হয়েছে। সেতুটি ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়। এই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল প্রদান করে প্রথমবারের মত আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুতে আরোহন করেন এবং এর মাধ্যমে সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এই সেতুর উপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে মূল অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার।
নবান্ন হল বিজন ভট্টাচার্যের লেখা একটি বাংলা নাটক। ১৯৪৪ সালে ভারতীয় গণনাট্য ঐসংঘের প্রযোজনায় ও শম্ভু মিত্রের পরিচালনায় এই নাটকটি প্রথম মঞ্চস্থ হয়েছিল। এরপর ১৯৪৮ সালে বহুরূপী নাট্যদলের প্রযোজনায় ও কুমার রায়ের পরিচালনায় নবান্ন মঞ্চস্থ হয়। নাটকটির বিষয় পঞ্চাশের মন্বন্তর (ব্রিটিশ বাংলা প্রদেশের ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ)। গণনাট্য সংঘ এই নাটকটিকে ভারতের নানা জায়গায় তাদের 'ভয়েস অফ বেঙ্গল' উৎসবের অঙ্গ হিসেবে মঞ্চস্থ করে দুর্ভিক্ষের ত্রাণে লক্ষাধিক টাকা তুলতে সক্ষম হয়েছিল।
কুরবানী (আরবি: قربانى), কুরবান অথবা আদ্বহা বা আযহা ( أضحية) কে ইসলামী আইন হিসাবে উল্লেখ করা হয়, যা ঈদ উল আযহার সময় পশু উৎসর্গের অনুষ্ঠান। ইসলামি মতে কুরবানী হচ্ছে নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট ব্যক্তির আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পুরস্কার লাভের আশায় নির্দিষ্ট পশু জবেহ করা। মুসলমানদের পবিত্র আল কোরআনের তিনটি স্থানে কুরবানির উল্লেখ আছে যার একটি পশু কুরবানির ক্ষেত্রে এবং বাকি দুটি সাধারণ ভাবনার কাজ বোঝাতে যা দ্বারা আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া যায়। ঈদ উল আযহার নির্দিষ্ট দিনের বাইরে খাওয়ার জন্যে পশুহত্যা কে ইসলামে জবেহ বলা হয়ে থাকে।
হজ্ব বা হজ্জ বা হজ (আরবি: حج) ইসলাম ধর্মাবলম্বী অর্থাৎ মুসলমানদের জন্য একটি আবশ্যকীয় ইবাদত বা ধর্মীয় উপাসনা। এটি ইসলাম ধর্মের চতুর্থ স্তম্ভ। শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জীবনে একবার হজ সম্পাদন করা ফরজ বা আবশ্যিক। আরবি জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ হজের জন্য নির্ধরিত সময়। হজ পালনের জন্য বর্তমান সৌদি আরবের মক্কা নগরী এবং সন্নিহিত মিনা, আরাফাত, মুযদালিফা প্রভৃতি স্থানে গমন এবং অবস্থান আবশ্যক। এটি পৃথিবীর বাৎসরিক তীর্থযাত্রা। শারীরিক ও আর্থিকভাবে হজ পালনে সক্ষম হয়ে ওঠার অবস্থাকে ইস্তিতাহ বলা হয় এবং যে মুসলমান এই শর্ত পূরণ করে তাকে মুস্তি বলা হয়। হজ হ'ল মুসলিম জনগণের সংহতি, এবং আল্লাহর নিকটে তাদের আনুগত্যের প্রদর্শনী। যিনি হজ সম্পাদনের জন্য গমন করেন তাকে বলা হয় হাজী। হজ শব্দের অর্থ "একটি যাত্রায় অংশ নেওয়া", যা ভ্রমণের বাহ্যিক কাজ এবং উদ্দেশ্যগুলির অভ্যন্তরীণ কাজ উভয়কেই বোঝায়।
আরাফাতের দিন বা আরাফার দিন (আরবি: يوم عرفة) ইসলামের একটি পবিত্র দিন যেটি এই ধর্মের পরিপূর্ণতা লাভের দিবস হিসেবে পরিচিত। এই দিনটি ইসলামিক চন্দ্র পঞ্জিকা অনুসারে জিলহজ মাসের ৯ তারিখে সংগঠিত হয়, যা রমজান মাস শেষ হওয়ার প্রায় ৭০ দিন পর ঘটে। এই দিনটের শেষ ভাগে, মুসলিম হজ্জ্ব যাত্রীরা মিনা থেকে যাত্রা করে নিকটবর্তী পাহাড়ের সন্নিকটবর্তী-সমভূমি আরাফাতের ভূমিতে এসে উপস্থিত হন। এই দিকটিতেই মুহাম্মদ তার জীবনের শেষ বছর বিদায় ভাষন দিয়েছিলেন।
সম্প্রদায় হল ক্ষুদ্র বা বৃহৎ জনগোষ্ঠী যাদের মধ্যে কিছু বিষয়, যেমন সামাজিক প্রথা, ধর্ম, মূল্যবোধ, ও পরিচয়ের মিল থাকে। সম্প্রদায় প্রায়শই একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থান (যেমন, দেশ, শহর, বা গ্রাম) ভিত্তিতে গড়ে ওঠে, তবে সব ক্ষেত্রে নয়। নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থানের বাইরেও দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে ওঠলে তাকে সম্প্রদায় বলা হয়, যেমন ইন্টারনেট সম্প্রদায়। মানুষ এই ধরনের সামাজিক সম্পর্ককে তাদের পরিচয়, রীতিনীতি, ও সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন পরিবার, কর্মক্ষেত্র, সরকার, সমাজ, বা মানবসেবায় ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে। যদিও সম্প্রদায় বলতে ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যক্তিগত সামাজিক সম্পর্ককে বুঝানো হয়, "সম্প্রদায়" বলতে বৃহৎ জনগোষ্ঠী, যেমন জাতীয় সম্প্রদায়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, ভার্চুয়াল সম্প্রদায়ের সাথে একাত্মতাও বুঝানো হয়।
ভারতীয় দণ্ড বিধি (হিন্দি: भारतीय दण्ड संहिता) হল ভারতের মাটিতে সংঘটনীয় বিবিধ অপরাধের বিবরণ ও সংশ্লিষ্ট শাস্তি বা দণ্ডের বিধান সংবলিত প্রধান আইন। ১৮৩৩ সালের চার্টার আইনের নির্দেশে ১৮৩৪ খ্রিষ্টাব্দে থমাস ব্যাবিংটন মেকলের সভাপতিত্বে গঠিত প্রথম ভারতীয় আইন কমিশনের সুপারিশে ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে এই দণ্ড বিধির খসড়া তৈরী হয়। ভারতে ব্রিটিশ রাজের শুরুর দিকে ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে এই আইন বলবৎ হয়। তবে, দেশীয় রাজ্যগুলিতে নিজস্ব আইন-আদালত থাকার জন্য এই আইন ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চালু হয়নি। চালু হবার পর থেকে এই বিধির অনেক সংশোধন ও সম্প্রসারণ হয়েছে।
বৃন্দাবন (pronunciation ) হল ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মথুরা জেলার অন্তর্গত একটি শহর। ঈশ্বর পরম রাধামাধব এখানে নিজেদের সচ্চিদানন্দ ছেলেবেলার লীলা প্রকাশ করে থাকেন । শহরটি ঈশ্বর পরম রাধামাধবের ভূ লোকের লীলা ভূমি জেলাসদর মথুরা থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে আগ্রা-দিল্লি হাইওয়ের (২ নং জাতীয় সড়ক) উপর অবস্থিত। বৃন্দাবন শহরে রাধা ও কৃষ্ণের অনেকগুলি মন্দির আছে। হিন্দু ধর্মের বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের কাছে এটি একটি পবিত্র তীর্থস্থান।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ভারত)
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক স্থাপিত একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা। এটি ১৯৫৬ সালে গঠিত হয়। এর কাজ ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে সংহতি স্থাপন, মান নির্ণয় ও পরিচর্যা। ইউজিসি ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অনুমোদন দেয় এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে অর্থসাহায্য করে। এর প্রধান কার্যালয় নতুন দিল্লিতে। পুনে, ভোপাল, কলকাতা, হায়দ্রাবাদ, গুয়াহাটি ও বেঙ্গালুরুতে এর ছয়টি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে।২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন যে, সরকার ইউজিসি তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। দুর্নীতি ও অদক্ষতার জন্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। ইউজিসির পরিবর্তে উচ্চতর ক্ষমতার একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা চালু করা হবে।
শিব (সংস্কৃত: शिव [ɕɪʋɐ], সংস্কৃত: शिवः, আইএএসটি: Śiva, আইএসও: Śiva, শুনুন ), হলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ দেবতা। সনাতন ধর্মের শাস্ত্রসমূহে তিনি পরমসত্ত্বা রূপে ঘোষিত। শিব সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়রূপ তিন কারণের কারণ। তিনি সমসাময়িক হিন্দুধর্মের তিনটি সর্বাধিক প্রাচীন সম্প্রদায়ের অন্যতম শৈব সম্প্রদায়ের প্রধান দেবতা। এছাড়া শিব স্মার্ত সম্প্রদায়ে পূজিত ঈশ্বরের পাঁচটি প্রধান রূপের (গণেশ, শিব, সূর্য, বিষ্ণু ও দুর্গা) একটি রূপ। তার বিশেষ রুদ্ররূপ ধ্বংস, সংহার ও প্রলয়ের দেবতা।সর্বোচ্চ স্তরে শিবকে সর্বোৎকর্ষ, অপরিবর্তনশীল পরম ব্রহ্ম মনে করা হয়। ব্রহ্ম স্বরূপে পরমাত্মা শিব বিন্দুর ন্যায় অর্থাৎ নিরাকার,এই অবস্থায় শিবকে কল্পনাও করা যায়না,তিনি কালচক্র ও সংসারের সকল গুণ-অগুণ এর উর্দ্ধে। শিবের অনেকগুলি সদাশয় ও ভয়ঙ্কর মূর্তিও আছে। সদাশয় রূপে তিনি একজন সর্বজ্ঞ যোগী। তিনি কৈলাস পর্বতে সন্ন্যাসীর জীবন যাপন করেন। আবার গৃহস্থ রূপে তিনি পার্বতীর স্বামী। তার দুই পুত্র বর্তমান। এঁরা হলেন গণেশ ও কার্তিক। ভয়ঙ্কর রূপে তাকে প্রায়শই দৈত্যবিনাশী বলে বর্ণনা করা হয়। শিবকে যোগ, ধ্যান ও শিল্পকলার দেবতাও মনে করা হয়। এছাড়াও তিনি চিকিৎসা বিদ্যা ও কৃষিবিদ্যারও আবিষ্কারক।শিবমূর্তির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল তাঁর তৃতীয় নয়ন, গলায় বাসুকী নাগ, জটায় অর্ধচন্দ্র, জটার উপর থেকে প্রবাহিত গঙ্গা, অস্ত্র ত্রিশূল ও বাদ্য ডমরু। শিবকে সাধারণত ‘শিবলিঙ্গ’ নামক বিমূর্ত প্রতীকে পূজা করা হয়।
সাইবার অপরাধ বা কম্পিউটার অপরাধ এমন একটি অপরাধ যা কম্পিউটার এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাথে সম্পর্কিত। কম্পিউটার একটি অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে বা এটা নিজেই লক্ষ্য হতে পারে। দেবারতি হালদার ও কে জয়শংকর সাইবার অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করেছেন "আধুনিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক, যেমন ইন্টারনেট (চ্যাট রুম, ইমেল, নোটিশ বোর্ড ও গ্রুপ) এবং মোবাইল ফোন (এসএমএস / এমএমএস) ব্যবহার করে, অপরাধমূলক অভিপ্রায়ে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে সম্মানহানি, কিংবা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি, বা ক্ষতির কারণ হওয়া"। এ ধরনের অপরাধ একটি জাতির নিরাপত্তা ও আর্থিক স্বাস্থ্য হুমকি হতে পারে। আইনগত বা আইনবহির্ভূতভেবে বিশেষ তথ্যসমূহ বাধাপ্রাপ্ত বা প্রকাশিত হলে গোপনীয়তার লঙ্ঘন ঘটে। হ্যাকিং, কপিরাইট লঙ্ঘন, শিশু পর্নোগ্রাফির মতো অপরাধগুলো বর্তমানে উচ্চমাত্রা ধারণ করেছে। লিঙ্গের ভিত্তিতে দেবারতি হালদার ও কে জয়শংকর নারীর প্রতি সাইবার অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করেছেন, "ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের আধুনিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে, ইচ্ছাকৃতভাবে মানসিক এবং শারীরিক ক্ষতির উদ্দেশ্যে নারীর প্রতি অপরাধ"। আন্তর্জাতিকভাবে, রাষ্ট্রীয় বা ও-রাষ্ট্রীয় সত্তা কর্তৃক গুপ্তচরবৃত্তি, আর্থিক প্রতারণা, আন্তঃসীমান্ত অপরাধ, কিংবা অন্তত একটি রাষ্ট্রের স্বার্থ জড়িত এরূপ বিষয়ে হস্তক্ষেপজনিত সাইবার অপরাধকে সাইবার যুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করা হয়।একটি রিপোর্ট (ম্যাকাফি কর্তৃক স্পন্সরকৃত) অনুমান করে যে, বিশ্ব অর্থনীতিতে বার্ষিক ক্ষতি ৪৪৫ বিলিয়ন ডলার। তবে একটি মাইক্রোসফটের রিপোর্ট দেখায় যে জরিপ ভিত্তিক অনুমান "একেবারে ভ্রান্ত" হয় এবং সত্যিকারের লোকসানকে অতিরঞ্জিত করে। অনলাইন ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড জালিয়াতির ফলে ২০১২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় $ ১.৫ বিলিয়ন ডলার হারিয়ে গেছে। ২০১৬ সালে একটি গবেষণায় অনুমান করা হয়, সাইবার অপরাধের খরচ ২০১৯ সালে ২.১ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে।
খুরশিদ আলম খান (২২ অক্টোবর ১৯৪৪ - ৮ জুলাই ২০২২), বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। চলচ্চিত্রের গানে অবদানের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার বিভাগে সাতবার বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
বিদায় হজ্জের ভাষণ ১০ম হিজরিতে অর্থাৎ ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে হজ্জ পালনকালে আরাফাতের ময়দানে ইসলাম ধর্মের শেষ রাসুল মুহাম্মাদ (স:) কর্তৃক প্রদত্ত খুৎবা বা ভাষণ। হজ্জের দ্বিতীয় দিনে আরাফাতের মাঠে অবস্থানকালে অনুচ্চ জাবাল-এ-রাহমাত টিলার শীর্ষে দাঁড়িয়ে উপস্থিত সমবেত মুসলমানদের উদ্দেশ্যে তিনি এই ভাষণ দিয়েছিলেন। মুহাম্মাদ (স:) জীবিতকালে এটা শেষ ভাষণ ছিলো, তাই সচরাচর এটিকে বিদায় খুৎবা বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। ইসলামের প্রকৃত মূল্যবোধ অনুযায়ী মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কে এই ভাষণে চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা ছিলো।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। ১৬ কোটির অধিক জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম দেশ। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
ন্যায় ( সংস্কৃত: न्याय), আক্ষরিক অর্থ বিচার, নিয়ম, পদ্ধতি বা রায়। হিন্দুধর্মের ছয়টি দর্শনের মধ্যে একটি। ভারতীয় দর্শনে এই দর্শনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল যুক্তি তত্ত্ব, পদ্ধতিবিদ্যা এবং জ্ঞানবিজ্ঞানের উপর তার গ্রন্থগুলির পদ্ধতিগত বিকাশ।ন্যায় দর্শন জ্ঞানবিজ্ঞান ছয়টি প্রমানের মধ্যে চারটি জ্ঞান অর্জনের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে - প্রত্যয় (উপলব্ধি), অনুমান, উপমান (তুলনা ও উপমা) এবং শব্দ (অতীত বা বর্তমান নির্ভরযোগ্য বিশেষজ্ঞদের সাক্ষ্য)। তার অধিবিদ্যায়, ন্যায় দর্শন হিন্দুধর্মের বৈশেষিক দর্শনের কাছাকাছি। এটা ধরে নিয়েছে যে ভুল জ্ঞানের অধীনে ক্রিয়াকলাপ দ্বারা সৃষ্ট ভুলের ফলে মানুষের কষ্ট হয়। এটি বলে, মোক্ষ সঠিক জ্ঞানের মাধ্যমে অর্জিত হয়। এই ভিত্তি ন্যায়কে জ্ঞানতত্ত্বের সাথে নিজেকে উদ্বিগ্ন করতে পরিচালিত করেছিল, এটি সঠিক জ্ঞান অর্জন এবং ভুল ধারণাগুলি দূর করার নির্ভরযোগ্য মাধ্যম।
ভারতের মৌলিক অধিকার ভারতের প্রকৃত গনতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য, সবরকম অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের অবসান ঘটানো। ভারতের সংবিধান -এর প্রস্তাবনায় সমতার আদর্শ ঘোষিত হয়েছে।প্রস্তাবনায় সমমর্যাদা ও সমান সুযোগের নীতি স্বীকৃতি পেয়েছে। এই অধিকার অনুযায়ী ভারতীয় ভূখন্ডের মধ্যে কোন ব্যক্তিকে আইনের দৃষ্টিতে সমতা অথবা আইনের দ্বারা সমানভাবে সংরক্ষিত হবার অধিকার অস্বীকার করবে না।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ – ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮) ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় এবং বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। তার অনেক উপন্যাস ভারতবর্ষের প্রধান ভাষাগুলোতে অনূদিত হয়েছে। বড়দিদি (১৯১৩), পরিণীতা (১৯১৪), পল্লীসমাজ (১৯১৬), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), শ্রীকান্ত (চারখণ্ডে ১৯১৭-১৯৩৩), দত্তা (১৯১৮), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী (১৯২৬), শেষ প্রশ্ন (১৯৩১) ইত্যাদি শরৎচন্দ্র রচিত বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তার দরুন তিনি 'অপরাজেয় কথাশিল্পী' নামে খ্যাত। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক পান৷ এছাড়াও, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে 'ডিলিট' উপাধি পান ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে।
আলোকচিত্র সাংবাদিকতা হল এক ধরনের সাংবাদিকতা যেখানে চিত্রের মাধ্যমে সংবাদ উপস্থাপন করা হয়। এর মাধ্যমে শুধুমাত্র স্থির চিত্রকে বুঝানো হয় তা নয়, বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্প্রচার সাংবাদিকতার জন্য ভিডিও ও ব্যবহৃত হয়। আলোকচিত্র সাংবাদিকতা আলোকচিত্রের নিকটবর্তী অন্যান্য শাখা, যেমন প্রামাণ্য আলোকচিত্র, সামাজিক প্রামাণ্য আলোকচিত্র, সড়ক আলোকচিত্র, বা সেলিব্রিটি আলোকচিত্র থেকে ভিন্ন এবং এতে একটি কঠোর নৈতিক কাঠামো বিদ্যমান যাতে বলা হয় যে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এই কাজটি সৎ এবং নিরপেক্ষ হতে হবে। আলোকচিত্র সাংবাদিকতা যেসব চিত্র সংগ্রহ করে তার সংবাদ মাধ্যমে অবদান রাখে এবং সম্প্রদায়কে একে অপরের সাথে যুক্ত করে। এর মাধ্যমে সংবাদ একটি সৃজনশীল উপায়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়, যা শুধুমাত্র তথ্যবহুলই নয়, বিনোদনও প্রদান করে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ – ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি এশীয়দের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
যমুনা বহুমুখী সেতু বা বঙ্গবন্ধু সেতু বাংলাদেশের যমুনা নদীর উপরে অবস্থিত একটি সড়ক ও রেল সেতু। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এই সেতুটি বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু। ১৯৯৮ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এটি যমুনা নদীর পূর্ব তীরের ভূঞাপুর এবং পশ্চিম তীরের সিরাজগঞ্জকে সংযুক্ত করে। এটি বিশ্বে ১১শ এবং দক্ষিণ এশিয়ার 5ষ্ঠ দীর্ঘতম সেতু। যমুনা বাংলাদেশের প্রধান তিনটি নদীর মধ্যে বৃহত্তর এবং প্রবাহিত পানি আয়তানিক পরিমাপের দিক থেকে বিশ্বে পঞ্চম বৃহত্তম। সেতুটি বাংলাদেশের পূর্ব এবং পশ্চিম অংশের মধ্যে একটি কৌশলগত সংযোগ প্রতিষ্ঠিত করে। এটি অত্র অঞ্চলের জনগণের জন্য বহুবিধ সুবিধা বয়ে আনে, বিশেষত অভ্যন্তরীন পণ্য এবং যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থা দ্রুত করে। পরবর্তিতে এই সেতুর নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু সেতু। যমুনা সেতু স্থাপনের জন্য প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয় ১৯৪৯ সালে। ১৯৯৪ সালের ১৫ অক্টোবর এর কাজ শুরু হয় এবং ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
জাপান (জাপানি: 日本, ঞ়িপ্পোঙ়্ বা ঞ়িহোঙ়্; পুরো নাম 日本国 ঞ়িপ্পোঙ়্-কোকু বা ঞ়িহোঙ়্-কোকু, "জাপান রাষ্ট্র") হল পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এই দেশটি প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে জাপান সাগর, পূর্ব চীন সাগর, চীন, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও রাশিয়ার পূর্ব দিকে উত্তরে ওখোৎস্ক সাগর থেকে দক্ষিণ পূর্ব চীন সাগর ও তাইওয়ান পর্যন্ত প্রসারিত। যে কাঞ্জি অনুসারে জাপানের নামটি এসেছে, সেটির অর্থ "সূর্য উৎস"। জাপানকে প্রায়শই "উদীয়মান সূর্যের দেশ" বলে অভিহিত করা হয়।
দর্শন, ইংরেজিতে ফিলোসফি (philosophy) (গ্রিক ভাষা φιλοσοφία, ফিলোসোফিয়া, আক্ষরিকভাবে "জ্ঞানের প্রতি ভালবাসা") হলো অস্তিত্ব, জ্ঞান, মূল্যবোধ, কারণ, মন এবং ভাষা সম্পর্কে সাধারণ এবং মৌলিক প্রশ্নগুলির অধ্যয়ন। জগৎ, জীবন, মানুষের সমাজ, তার চেতনা এবং জ্ঞানের প্রক্রিয়া প্রভৃতি মৌল বিধানের আলোচনাকেও দর্শন বলা হয়। মানুষের সামাজিক চেতনার বিকাশের একটা পর্যায়েই মাত্র মানুষের পক্ষে বিশ্লেষণী দৃষ্টি নিয়ে জগৎ এবং জীবন সম্পর্কে চিন্তা করা সম্ভব হয়েছে। মানুষ তার নিজের উদ্ভব মুহূর্ত থেকেই চিন্তার এরূপ ক্ষমতা দেখাতে সক্ষম ছিল না। মানুষের চেতনার বিকাশের একটা স্তরে মানুষ তার পরিবেশ সম্পর্কে চিন্তা করতে আরম্ভ করে। নিজের জীবনকে অধিকতর নিশ্চিত করে রক্ষা করার প্রয়োজনে মানুষ প্রকৃতি জগৎের রহস্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করে। প্রকৃতি, জগৎ এবং পরবর্তীকালে মানুষের নিজের দেহ এবং চেতনা সম্পর্কেও সে চিন্তা করতে শুরু করে।আদিকালে বিশ্বজগৎ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের পরিধি খুব অধিক ছিল না। দর্শনই আদি জ্ঞানের মূল ভাণ্ডার। জগৎ ও জীবনের প্রত্যেকটি সমস্যা মানুষের কাছে প্রশ্নাকারে উত্থাপিত হয়। যে প্রশ্নই উপস্থিত হোক না কেন, মানুষ তার একটা জবাব দিয়ে প্রকৃতিকে বশ করার চেষ্টা করেছে। তাই আদি দর্শন একদিকে যেমন সমস্ত জ্ঞানের ভাণ্ডার তেমনি আবার তার মধ্যে সমস্যার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষার ভিত্তিতে সমাধানের বদলে কাল্পনিক সমাধানের সাক্ষাৎ অধিক মেলে। কালক্রমে মানুষের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পুরাতন দার্শনিক কল্পনা বাস্তব জীবনে ভিত্তিহীন প্রমাণিত হলে তার স্থানে অধিকতর সঠিক সমাধান আবিষ্কৃত হতে থাকে। এইভাবে অধিকতর বাস্তব এবং সুনির্দিষ্ট আলোচনা ভিত্তিতে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বিকশিত হতে থাকে। পূর্বে প্রকৃতি, পদার্থ, সমাজ, চেতনা, যুক্তি, অর্থনীতি, ধর্ম সবই দর্শনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কালক্রমে তাদের প্রত্যেকে এক একটি ভিন্ন বিজ্ঞান বা আলোচনার শাখায় রূপান্তরিত হতে থাকে। এই বিকাশের পরিণামে বর্তমানে দর্শন বলতে কেবলমাত্র কল্পনার উপর নির্ভরশীল কোনো বিষয় আর অবশিষ্ট নেই। তাই দর্শনের প্রাচীন সংজ্ঞা এবং তার বর্তমান পরিস্থিতি এক নয়। সুনির্দিষ্টভাবে মানুষের জ্ঞান বিকশিত হওয়ার পরেও দর্শনকে অনেকে কল্পনার মধ্যে আবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। এই প্রয়াসে দর্শন জীবনের বাস্তব সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কশুন্য হয়ে পড়ে। যেখানে প্রাচীনকালে জীবনের সমস্যাই দর্শনের বিকাশ ঘটিয়েছে সেখানে আধুনিককালের এরূপ প্রয়াস দর্শনকে জীবনের সঙ্গে সম্পর্কশুন্য অবাস্তব কল্পনায় পর্যবসিত করেছে। দর্শনের এই সংকটের সুস্পষ্ট নির্দেশ দেন ঊনবিংশ শতকে কার্ল মার্কস। কার্ল মার্কস এবং ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস দর্শনকে জীবনের সঙ্গে যুক্ত করে বলেন যে, দর্শন হবে জীবন এবং জগৎকে বৈজ্ঞানিক এবং সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা। দর্শন হবে বৃহত্তম সংখ্যক মানুষের স্বার্থে জগৎ এবং সমাজকে পরিবর্তিত করার ভাবগত হাতিয়ার। দর্শন অবাস্তব কল্পনা নয়। দর্শন জগৎ ও জীবনের মৌলিক বিধানের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। আর এই ব্যাখ্যারই অপরনাম হচ্ছে দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের তত্ত্ব।দর্শন যেমন মানুষের আদি জ্ঞানভাণ্ডার, তেমনি তার ইতিহাস জ্ঞানের যে কোনো শাখার চেয়ে প্রাচীন। প্রাচীন গ্রিস, ভারত ও চীনে দর্শনের বিস্ময়কর বিকাশের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। কিন্তু দর্শনের বিকাশকে দেশ বা জনগোষ্ঠী হিসেবে বিভক্ত করার কোনো বিশেষ তাৎপর্য নেই। জীবন ও জগৎের সমস্যা নিয়ে চিন্তাই হচ্ছে দর্শন।
ভারতের সংবিধান(Constitution of India) ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন। এই সংবিধানে বহুকক্ষবিশিষ্ট সরকারব্যবস্থা গঠন, কার্যপদ্ধতি, আমলাতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদ, ক্ষমতা ও কর্তব্য নির্ধারণ; মৌলিক অধিকার, নির্দেশমূলক নীতি, এবং নাগরিকদের কর্তব্য নির্ধারণের মাধ্যমে দেশের মৌলিক রাজনৈতিক আদর্শের রূপরেখাটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদে ২৮৪ জনের সই করলে গৃহীত হয় এবং এই দিনটি জাতীয় আইন দিবস হিসেবে পরিচিত। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে এই সংবিধান জোরদারভাবে কার্যকরী হয়। উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ঘোষণার স্মৃতিতে ২৬ জানুয়ারি তারিখটি সংবিধান পরিচালনার জন্য গৃহীত হয়েছিল। সংবিধানে ভারতীয় রাজ্যসংঘকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ গণপ্রজাতান্ত্রিক রূপে ঘোষণা করা হয়েছে; এই দেশের নাগরিকবৃন্দের জন্য ন্যায়বিচার, সাম্য ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা হয়েছে এবং জাতীয় ও প্রাদেশিক সংহতি সুরক্ষার জন্য নাগরিকদের পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃভাব জাগরিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। "সমাজতান্ত্রিক", "ধর্মনিরপেক্ষ" ও "সংহতি" এবং সকল নাগরিকের মধ্যে "ভ্রাতৃভাব" – এই শব্দগুলি ১৯৭৬ সালে একটি সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ হয়। সংবিধান প্রবর্তনের স্মৃতিতে ভারতীয়রা প্রতিবছর ২৬ জানুয়ারি তারিখটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে উদ্যাপন করেন। ভারতের সংবিধান বিশ্বের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রসমূহ মধ্যে বৃহত্তম লিখিত ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান। এই সংবিধানে মোট ২৪টি অংশে ৪৪৮টি ধারা, ১২টি তফসিল এবং ১১৩টি সংশোধনী বিদ্যমান। ভারতের সংবিধানের ইংরেজি সংস্করণে মোট শব্দসংখ্যা ৪৮৬টি। এই সংবিধানের প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পূর্বপ্রচলিত ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের ধ্বংস হয়ে যায়। দেশের সর্বোচ্চ আইন হওয়ার দারুন, ভারত সরকার প্রবর্তিত প্রতিটি আইনকে সংবিধানানুসারী হতে হয়। সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান ড.
ছোটগল্প (বিকল্প বানান: ছোট গল্প) কথাসাহিত্যের একটি বিশেষ রূপবন্ধ যা দৈর্ঘ্যে হ্রস্ব এবং একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। ছোটগল্পের আকার কী হবে সে সম্পর্কে কোন সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেই। সব ছোটগল্পই গল্প বটে কিন্তু সব গল্পই ছোটগল্প নয়। একটি কাহিনী বা গল্পকে ছোটগল্পে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য কিছু নান্দনিক ও শিল্পশর্ত পূরণ করতে হয়। ছোটগল্পের সংজ্ঞার্থ কী সে নিয়ে সাহিত্যিক বিতর্ক ব্যাপক। এককথায় বলা যায়- যা আকারে ছোট, প্রকারে গল্প তাকে ছোটগল্প বলে।
আরাফাত (আরবি: عرفة) (আরাফাতের ময়দান বলেও পরিচিত) মক্কা থেকে ২০ কিমি দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত একটি সমতল অঞ্চল। বছরের অধিকাংশ সময় এই স্থানে লোক সমাগম হয় না। জিলহজ মাসের ৯ তারিখ হজের দিন হজযাত্রীরা মিনা থেকে এখানে উপস্থিত হন। আরাফাতে অবস্থান হজের অন্যতম ফরজ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এসময় এখানে খুতবা পড়া হয় এবং যোহর ও আসরের নামাজ একত্রে পড়া হয়। সন্ধ্যায় হজযাত্রীরা আরাফাত ছেড়ে মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারত প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম ধর্ম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বা সৌরভ গাঙ্গুলী ( (শুনুন); জন্ম ৮ জুলাই ১৯৭২) একজন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার এবং ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন ৮ই জুলাই, ১৯৭২ সালে, কলকাতার বেহালায় একটি প্রতিষ্ঠিত পরিবারে। তিনি বিসিসিআই এর বর্তমান সভাপতি এবং উইসডেন ইন্ডিয়ার সভাপতি। তার বাবার নাম চণ্ডীদাস গঙ্গোপাধ্যায় ও মাতার নাম নিরুপা গঙ্গোপাধ্যায়। সৌরভ মূলত তার দাদার সাহায্যে ক্রিকেট জীবনে প্রতিষ্ঠিত হন।
জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবর ( নাস্তালিক: جلال الدین محمد اکبر الاعظم(হিন্দি: 'जलालुद्दीन मोहम्मद अकबर' ) ভারতবর্ষের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক। পৃথিবীর ইতিহাস এ মহান শাসকদের অন্যতম মহামতি আকবর নামেও পরিচিত। তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট। পিতা সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর পর ১৫৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেন। বৈরাম খানের তত্ত্বাবধানে তিনি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্রাজ্য বিস্তার করতে থাকেন। ১৫৬০ সালে বৈরাম খাঁকে সরিয়ে আকবর নিজে সকল ক্ষমতা দখল করেন। কিন্তু আকবর ভারতবর্ষ ও আফগানিস্তানে তার সাম্রাজ্য বিস্তার চালিয়ে যান। ১৬০৫ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় সমস্ত উত্তর ভারত তার সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে। আকবরের মৃত্যুর পর তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর ভারতবর্ষের শাসনভার গ্রহণ করেন।
রাজা রবি বর্মা, কিলিমানোর কইল থাম্পুরান (২৯ এপ্রিল ১৮৪৮—২ অক্টোবর ১৯০৬) বিখ্যাত ভারতীয় চিত্রশিল্পী ছিলেন। ভারতীয় ইতিহাসের নানাক্ষেত্রে বিচরণের জন্য তাকে ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী হিসেবে গণ্য করা হয়। ভারতীয় ইতিহাস ধরে রেখে তিনি ইউরোপীয় ধাঁচে চিত্র এঁকে ভারতীয় চিত্রশিল্প জগতে এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন এনেছিলেন। এছাড়া রাজা রবি লিথোগ্রাফিতে অনেক দক্ষ ছিলেন। যা তাকে আরো বেশি সুপরিচিত করে তোলে। তার চিত্রশিল্প থেকে পরে অনেকেই আকৃষ্ট এবং অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। এছাড়া হিন্দু দেব-দেবী এবং পুরাণের উপর তার সৃষ্টিকর্মগুলো তাকে আরো বেশি বিখ্যাত করে তোলে।
দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা ১৭৬৫ সালে লর্ড ক্লাইভ বাংলার নবাব থেকে দেওয়ানি সনদ প্রাপ্ত হলে যে শাসন প্রণালীর উদ্ভব হয়, তা ইতিহাসে দ্বৈত শাসন নামে পরিচিত। মীর জাফরের মৃত্যুর পর লর্ড ক্লাইভ ১৭৬৫ সালে মোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে। এ সময় কিছু শর্ত সাপেক্ষে মীরজাফরের পুত্র নাজিম-উদ-দৌলাকে বাংলার সিংহাসনে বসানো হয়। শর্ত মোতাবেক নাজিম-উদ-দৌলা তাঁর পিতা মীর জাফরের ন্যায় ইংরেজদের বিনা শুল্কে অবাধ বাণিজ্য করার সুযোগ দেবেন এবং দেশীয় বণিকদের অবাধ বাণিজ্যের সুবিধা বাতিল করবেন। এই ব্যবস্থার ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রচুর অর্থনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠে এবং বাংলার নবাব সামান্য বৃত্তিভোগী কর্মচারীতে পরিণত হন। ১৭৭২ সালে দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস কর্তৃক বাতিল হয়।তারপর রাজা হন,এই ব্যবস্থা কে দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা বলে।
জ্যোতি বসু (৮ জুলাই, ১৯১৪ - ১৭ জানুয়ারি, ২০১০) একজন ভারতীয় বাঙালি রাজনীতিবিদ। তিনি সিপিআই (এম) দলের সদস্য। ১৯৭৭ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত একটানা তেইশ বছর জ্যোতি বসু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনিই ছিলেন ভারতের দীর্ঘতম মেয়াদের মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও ১৯৬৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি সিপিআই(এম) দলের পলিটব্যুরো সদস্য ছিলেন।ছাত্রাবস্থায় উচ্চশিক্ষার্থে ইংল্যান্ডে গিয়ে কমিউনিস্ট ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন বসু। ১৯৪০ সালে গ্রহণ করেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ। ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলা প্রদেশের প্রাদেশিক আইনসভায় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধি রূপে নির্বাচিত হন। দেশভাগের পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রতিনিধি নির্বাচিত হন বসু। ড.
বিশ্ব পরিবেশ দিবস (সংক্ষেপে WED) প্রতি বছর ৫ জুন বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক কর্মোদ্যোগ আর জনসচেতনতার মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতার লক্ষ্যে পালিত দিবস। এই দিনটিতেই জাতিসংঘের মানবিক পরিবেশ কনফারেন্স (United Nations Conference on the Human Environment) শুরু হয়েছিল। এই কনফারেন্স হয়েছিল ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৫ থেকে ১৬ জুন অবধি। এই কনফারেন্স ঐ বছরই চালু করেছিল জাতিসংঘের সাধারণ সভা। তখন থেকেই প্রতি বৎসর এই দিবস পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি প্রথম পালিত হয় ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে। প্রতি বছরই দিবসটি আলাদা আলাদা শহরে, আলাদা আলাদা প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে পালিত হয়। ২০১৮ সালে প্লাস্টিক-দূষণ বন্ধের আহ্বানে 'বিট প্লাস্টিক পলিউশন' প্রতিপাদ্য নিয়ে সারাবিশ্বে দিবসটি পালিত হবে। উত্তর গোলার্ধে দিবসটি বসন্তে, আর দক্ষিণ গোলার্ধে দিবসটি শরতে পালিত হয়।
মুহাম্মাদ (আরবি: مُحَمَّد; মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত) ছিলেন একজন আরবের ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক নেতা এবং ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। ইসলামি মতবাদ অনুসারে, তিনি হলেন ঐশ্বরিকভাবে প্রেরিত ইসলামের সর্বশেষ নবী (আরবি: النبي; আন-নাবিয়্যু) তথা ‘বার্তাবাহক’ ও রাসুল (আরবি: الرسول; আল-রাসুল), যার উপর ইসলামের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কুরআন অবতীর্ণ হয়। আদম, ইব্রাহিম, মূসা, ইসা (যিশু) এবং অন্যান্য নবিদের মতোই মুহাম্মদ একেশ্বরবাদী শিক্ষা প্রচার করার জন্য প্রেরিত। অমুসলিমদের মতে, তিনি ইসলামি জীবনব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল ছিলেন, তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সাফল্য। কুরআনের পাশাপাশি তার শিক্ষা এবং অনুশীলনগুলো ইসলামি ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে।
হিন্দু মন্দির হল হিন্দুদের দেব-উপাসনার স্থান। ‘মন্দির’ বা ‘দেবালয়’ বলতে বোঝায় ‘দেবতার গৃহ’। মানুষ ও দেবতাকে একত্রে নিয়ে আসার জন্য হিন্দুধর্মের আদর্শ ও ধর্মবিশ্বাস-সংক্রান্ত প্রতীকগুলির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত ভবন বা স্থানকেই ‘মন্দির’ বলা হয়। জর্জ মিশেলের মতে, হিন্দু মন্দির এমন একটি আধ্যাত্মিক কেন্দ্র যেখানে মায়ার জগৎ থেকে মানুষ তীর্থযাত্রী বা পূণ্যার্থীর বেশে জ্ঞান ও সত্যের জগতের সন্ধানে আসেন।স্টেলা ক্র্যামরিসচের মতে, হিন্দু মন্দিরের প্রতীকতত্ত্ব ও গঠনভঙ্গিমা বৈদিক ঐতিহ্যের মধ্যেই নিহিত আছে। একটি মন্দিরের মধ্যে হিন্দু বিশ্বতত্ত্বের সকল ধারণার সন্ধান পাওয়া যায়। এরমধ্যে ভাল, মন্দ ও মানবিক দিকগুলির সঙ্গে সঙ্গে হিন্দুর কালচক্র ধারণা এবং পুরুষার্থ ধারণার সব কিছুই প্রতীকের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ধর্ম, কাম, অর্থ, মোক্ষ, কর্ম ও ভক্তির দার্শনিক ধারণাগুলিও প্রতীকের মাধ্যমে মন্দিরে উপস্থিত থাকে।হিন্দু মন্দিরে প্রতীকের মাধ্যমে উপস্থিত আধ্যাত্মিক আদর্শগুলির কথা পাওয়া যায় ভারতের প্রাচীন সংস্কৃত ধর্মগ্রন্থগুলিতে (যেমন, বেদ, উপনিষদ্ ইত্যাদি)। অন্যদিকে মন্দিরের গঠনভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত, তা বর্ণিত হয়েছে স্থাপত্য-সংক্রান্ত সংস্কৃত প্রবন্ধগ্রন্থগুলিতে (যেমন, বৃহৎসংহিতা, বাস্তুশাস্ত্র ইত্যাদি)। মন্দিরের নকশা, অলংকরণ, পরিকল্পনা ও নির্মাণশৈলীর মধ্যে প্রাচীন প্রথা ও রীতিনীতি, জ্যামিতিক প্রতীকতত্ত্ব এবং হিন্দুধর্মের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নিজস্ব বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। হিন্দু মন্দিরগুলি হিন্দুদের আধ্যাত্মিক গন্তব্য। সেই সঙ্গে মন্দিরগুলিকে কেন্দ্র করে প্রাচীন শিল্পকলা, সম্প্রদায়গত উৎসব ও আঞ্চলিক বাণিজ্যিক কেন্দ্র গড়ে উঠেছে।অঞ্চল ও সম্প্রদায়ভেদে মন্দিরগুলির গঠনভঙ্গিমা ও নির্মাণশৈলীর মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়। তা সত্ত্বেও হিন্দু মন্দিরগুলির মধ্যে কিছু সাধারণ মৌলিক ধারণা, প্রতীকতত্ত্ব ও বিষয়গত মিল দেখা যায়। মন্দিরের প্রাচুর্য দেখা যায় মূলত দক্ষিণ এশিয়া (প্রধানত ভারত ও নেপাল) এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে (প্রধানত কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপাঞ্চল ও মালয়েশিয়া)। ফিজি, মরিশাস, গুয়ানা, সুরিনাম, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় যেখানে হিন্দু জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য সেখানেও প্রচুর মন্দির গড়ে উঠেছে। হিন্দু মন্দিরের বর্তমান অবস্থা ও বহিরাকৃতির মধ্যে কয়েক সহস্রাব্দ ধরে বিবর্তনশীল হিন্দু শিল্পকলার মিশ্রণ চোখে পড়ে। খ্রিস্টীয় ১২শ শতাব্দীর পর থেকে হিন্দুধর্ম ও ইসলামের মধ্যে যে সংঘর্ষ চলে আসছে, তারও প্রভাব হিন্দু মন্দিরগুলির উপর পড়েছে।কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হিন্দু মন্দির হল কাশী বিশ্বনাথ মন্দির, চারধাম মন্দির-চতুষ্টয় (পুরী জগন্নাথ মন্দির, রামনাথস্বামী মন্দির, দ্বারকাধীশ মন্দির, ও বদ্রীনাথ মন্দির), ছোটো চারধাম মন্দির-চতুষ্টয় (বদ্রীনাথ মন্দির, কেদারনাথ মন্দির, গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রী), জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরসমূহ, ৫১টি শক্তিপীঠ মন্দিরসমূহ, তিরুপতি বালাজি মন্দির, কামাখ্যা মন্দির ইত্যাদি। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কয়েকটি বিখ্যাত মন্দির হল কপিলমুনির মন্দির কালীঘাট মন্দির, দক্ষিণেশ্বর মন্দির, বেলুড় মঠ, তারাপীঠ মন্দির, তারকেশ্বর মন্দির, শ্রী স্বামীনারায়ণ মন্দির ইত্যাদি। বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত মন্দির হল ঢাকেশ্বরী মন্দির।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০ – ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা বঙ্গবন্ধু, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
সত্যাগ্রহ (সংস্কৃত: सत्याग्रह) মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর (যিনি মহাত্মা গান্ধী নামেও পরিচিত) প্রতিষ্ঠিত একটি দর্শন এবং অহিংস প্রতিরোধের অনুশীলন। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী সত্যাগ্রহের চর্চা করেছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয়দের অধিকার প্রতিষ্ঠায়। তার এই তত্ত্ব নেলসন ম্যান্ডেলার আপার্টহাইট এবং গণঅধিকার আন্দোলনের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মার্টিন লুথার কিং ও জেমস বেভেলের কর্মসূচি সহ সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা ও অন্যান্য আন্দোলনে প্রভাব ফেলে। যারা সত্যাগ্রহের চর্চা করেন তাদের সত্যাগ্রহী বলা হয়।
লোকশিল্প লোক সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে তৈরি সমস্ত ধরনের চাক্ষুষ শিল্পকে অন্তর্ভুক্ত করে। লোকশিল্পের অনেক ধরনের সংজ্ঞা রয়েছে, তবে সাধারণত বস্তুগুলির কেবলমাত্র আলংকারিক হওয়ার পরিবর্তে কিছু ধরনের ব্যবহারিক উপযোগ থাকে। লোক শিল্পের নির্মাতারা সাধারণত সংস্কৃতির ললিতকলা ঐতিহ্যের পরিবর্তে একটি জনপ্রিয় ঐতিহ্যে মাধ্যমে প্রশিক্ষিত হয়ে থাকেন। গোষ্ঠীবদ্ধ মানুষ যারা উন্নত সমাজের কাঠামোর মধ্যে বিরাজমান করে কিন্তু ভৌগোলিক অথবা সাংস্কৃতিক কারণে শিল্পের উন্নত ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, তাদের নির্মিত এ শিল্পকে লোকশিল্প রূপে বিবেচনা করা হয়।
সংশয়বাদ শব্দটি অনেক বৃহৎ পরিসরে ব্যবহৃত হয়। যেকোন কিছুকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মনোভাবকেই সংশয়বাদ বলা যেতে পারে। সাধারণ্যে বহুল প্রচলিত কোনো ধারণাকে সন্দেহ করা অর্থে সংশয়বাদ শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কোনো কিছুর নিদর্শন পেলে তাকে বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে না নিয়ে বরং সেই নিদর্শনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করাই সংশয়বাদ। যারা সংশয়বাদের প্রতি আস্থা রাখেন বা সংশয়বাদ চর্চা করেন তাদেরকে সংশয়বাদী বলা হয়।
কবিতা, কাব্য বা পদ্য হচ্ছে শব্দ প্রয়োগের ছান্দসিক কিংবা অনিবার্য ভাবার্থের বাক্য বিন্যাস--- যা একজন কবির আবেগ-অনুভূতি, উপলব্ধি ও চিন্তা করার সংক্ষিপ্ত রুপ এবং তা অত্যাবশ্যকীয়ভাবে উপমা-উৎপ্রেক্ষা-চিত্রকল্পের সাহায্যে আন্দোলিত সৃষ্টির উদাহরণ। পৃথিবী নামক গ্রহের তাবৎ বিষয়কে পুজি করে কবিতা ফলত সুমধুর শ্রুতিযোগ্যতা যুক্ত করে। কাঠামোর বিচারে কবিতা নানা রকম। যুগে যুগে কবিরা কবিতার বৈশিষ্ট্য ও কাঠামোতে পরিবর্তন এনেছেন। কবিতা শিল্পের মহত্তম শাখা হিসেবে পরিগণিত।
ইউটিউব (ইংরেজি: Youtube) হলো সান ব্রুনো, ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক একটি মার্কিন অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম সেবার সাইট, যা ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। ইউটিউব বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম। ২০০৬ সালের অক্টোবরে, গুগল সাইটটিকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করে নেয়। ইউটিউব বর্তমানে গুগলের অন্যতম অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
বিগত কয়েক সহস্রাব্দে ভারতীয় নারীর অবস্থা বহু পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে। প্রাচীণযুগ থেকে মধ্যযুগে, তাদের অবস্থার অবনতি আর কয়েকজন সমাজসংস্কারকের প্রচেষ্টায় আবার সমমর্যাদার অধিকারে উত্তরণের ইতিহাস বেশ ঘটনাবহুল। আধুনিক ভারতে নারীরা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার অধ্যক্ষ, বিরোধী দলনেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ পদ অলংকৃত করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ, দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] (শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ – ৪ জুলাই ১৯০২; জন্মনাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত, বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...," ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা, যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তার রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?
আনন্দবাজার পত্রিকা পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত একটি শতাব্দী প্রাচীন ভারতীয় দৈনিক পত্রিকা। কলকাতার এবিপি প্রাইভেট লিমিটেড এর প্রকাশক। প্রকাশ-সংখ্যার ভিত্তিতে এটি ভারতে বাংলা ভাষায় বহুল প্রচারিত দৈনিক। কলকাতা, নয়া দিল্লি, ভুবনেশ্বর, রাঁচি, শিলিগুড়ি ও ভারতের অন্যান্য শহর থেকে নিয়মিত এটি দশ লক্ষেরও অধিক সংখ্যায় প্রচারিত হয়। ইন্ডিয়ান রিডারশিপ সার্ভে অনুসারে, পত্রিকাটি ১৫৬ লাখ মানুষ পাঠ করেন।
আদিযোগী শিব মূর্তি হল ৩৪-মিটার-লম্বা (১১২ ফু), ৪৫-মিটার-দৈর্ঘ্য (১৪৭ ফু) এবং ২৫-মিটার-প্রস্থের (৮২ ফু) ইস্পাতের তৈরি একটি শিব মূর্তি, যা তামিল নাড়ুর কোয়েম্বাটুরের থিরুনামে অবস্থিত। এটি এটি গিনেস বিশ্ব রেকর্ডে বিশ্বের "সৰ্ববৃহৎ আবক্ষ ভাস্কর্য" হিসাবে স্বীকৃতি পায়। সদগুরু জাগ্গি বাসুদেব মূর্তিটির নকশা করেন, এর ওজন প্রায় ৫০০ টন (৪৯০ লং টন; ৫৫০ শর্ট টন)।আদিযোগীতে "প্রথম যোগী" বা শঙ্করকে প্রথম যোগী বলা হয়। এটি যোগের মাধ্যমে মানুষকে অভ্যন্তরীণ মঙ্গলের দিকে অনুপ্রাণিত করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
মুঘল সাম্রাজ্য (উর্দু: مغلیہ سلطنت, Mug̱ẖliyah Salṭanat, ফার্সি: گورکانیان, Gūrkāniyān) ছিল ভারত উপমহাদেশের একটি সাম্রাজ্য। প্রায় দুই শতাব্দী ধরে সাম্রাজ্য পশ্চিমে সিন্ধু অববাহিকার বাইরের প্রান্ত, উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তান এবং উত্তরে কাশ্মীর, পূর্বে বর্তমান আসাম ও বাংলাদেশের উচ্চভূমি এবং দক্ষিণ ভারতের ডেকান মালভূমির উপভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মুঘল সাম্রাজ্য মূলত পারস্য ও মধ্য এশিয়ার ভাষা, শিল্প ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত ছিল।পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইবরাহিম লোদির বিরুদ্ধে বাবরের জয়ের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়। মুঘল সম্রাটরা ছিলেন মধ্য এশিয়ার টার্কো-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত। তারা চাগতাই খান ও তৈমুরের মাধ্যমে চেঙ্গিস খানের বংশধর। ১৫৫৬ সালে আকবরের ক্ষমতারোহণের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের ধ্রূপদী যুগ শুরু হয়। আকবর ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরের শাসনামলে ভারতে অর্থনৈতিক প্রগতি বহুদূর অগ্রসর হয়। আকবর অনেক হিন্দু রাজপুত রাজ্যের সাথে মিত্রতা করেন। কিছু রাজপুত রাজ্য উত্তর পশ্চিম ভারতে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখে কিন্তু আকবর তাদের বশীভূত করতে সক্ষম হন। মুঘল সম্রাটরা মুসলিম ছিলেন তবে জীবনের শেষের দিকে শুধুমাত্র সম্রাট আকবর ও তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর নতুন ধর্ম দীন-ই-ইলাহির অনুসরণ করতেন।মুঘল সাম্রাজ্য কাঠামো, যাইহোক, কখনও কখনও বাবরের নাতি আকবরএর শাসনের তারিখ ১৬০০ থেকে ধরা হয়। এই সাম্রাজ্যিক কাঠামো ১৭২০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়, শেষ প্রধান সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। তার রাজত্বকালে সাম্রাজ্যতার সর্বোচ্চ ভৌগোলিক ব্যাপ্তি অর্জন করে। পরবর্তীতে হ্রাস, বিশেষ করে ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসনামলে, পুরাতন দিল্লি এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে, ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ রাজ দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যায়।
জনপ্রিয় সংস্কৃতি বা জনসংস্কৃতি বা সাধারণ সংষ্কৃতি (ইংরেজি: Popular culture, pop culture, mass culture) বলতে সেই সমস্ত সাংস্কৃতিক উপাদানের সমষ্টিকে বোঝায় যেগুলো বিভিন্ন জনপ্রিয় গণমাধ্যম, সমাজে বহুল প্রচলিত ভাষা ও লোকাঁচারে আধিপত্য বিস্তার করে। প্রতিদিনকার জীবনের নানা চাহিদা ও মিথষ্ক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট সাংস্কৃতিক মুহূর্তগুলো সমষ্টিবদ্ধ হয়ে মূলধারার লোকজনের দৈনন্দিন জীবনের প্রকৃতি নির্ধারণ করে। রান্নাবান্না, কাপড় চোপড়, গণমাধ্যম, বিনোদন, খেলাধুলা, সাহিত্য, ইত্যাদিতে জনসংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটে।অনেক সময়ই উচ্চবর্গ আর নিম্নবর্গের মধ্যে জনসংস্কৃতির সীমারেখাটি পরিষ্কার নয় ৷ সমাজের সদস্যদের দ্বারা স্বীকৃত বিভিন্ন বিশ্বাস বা অনুশীলন এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অর্থাৎ ঐতিহাসিক স্থাপনা ও বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান ও বিবিধ শিল্প যা পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকে মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে থাকে এবং যা একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঐ সমাজে সর্বব্যাপি ও প্রাধান্য বিস্তারকারী হয়ে থাকে তাকে জনপ্রিয় সংস্কৃতি (Popular culture) বলা হয়। জনসংস্কৃতি বলতে প্রাধান্য বিস্তারকারী ঐতিহাসিক স্থাপনা ও বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান ও বিবিধ শিল্প যা পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকে মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে থাকে তার সঙ্গে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও অনুভূতির মিথষ্ক্রিয়াকেও বোঝানো হয়। একটি নির্দিষ্ট সমাজে যা অত্যন্ত বেশি প্রভাব বিস্তার করে থাকে। সেইজন্য, একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রতি কোন ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গী তৈরিতে জনসংস্কৃতি প্রভাব বিস্তার করে।[2] যাহোক, জনসংস্কৃতিকে ব্যাখ্যা করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে।[3] এই কারণে, জনপ্রিয় সংস্কৃতি হচ্ছে এমন কিছু যা বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে পরস্পরবিরোধী উপায়ে বিভিন্ন ব্যক্তির দ্বারা সংজ্ঞায়িত হয়েছে।[4] সাধারণভাবে সংস্কৃতির অন্যান্য রূপ যেমন: লোক সংস্কৃতি, শ্রমজীবী-শ্রেণীর সংস্কৃতি বা উঁচু সংস্কৃতির সঙ্গেে এবং বিভিন্ন তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোন যেমন: মনঃসমীক্ষণ, উত্তরআধুনিকতাবাদ, এবং অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে এর বৈপরীত্য রয়েছে। সবচেয়ে প্রচলিত জনসংস্কৃতির ধরন হচ্ছে: বিনোদন, (যেমন: চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, টেলিভিশন এবং ভিডিও গেমস) খেলাধুলা, সংবাদ, রাজনীতি, ফ্যাশন, প্রযুক্তি, এবং স্ল্যাং।[5]অনেকে কখনো কখনো জনপ্রিয় সংস্কৃতিকে (Popular culture) তুচ্ছ এবং মূলধারায় সম্মতিসূচক গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার জন্য শিক্ষা, সাহিত্য, চলচ্চিত্র, সংবাদ, ভিডিওগেম ও সংস্কৃতির বুদ্ধিবৃত্তিক আধেয়কে সুচিন্তিত ভাবে অতি সরলীকরণ বলে জ্ঞান করেন। এর ফলে মূল ধারার বাইরের সংস্কৃতিগুলো {লক্ষণীয়ভাবে ধর্মভিত্তিক দলগুলো (religious groups) এবং উপসংস্কৃতির দলগুলো (countercultural groups)} জনসংস্কৃতিকে অত্যন্ত সমালোচনা করে থাকে। তারা এই সংস্কৃতিকে অগভীর, ভোগবাদী, গণ উত্তেজনাকর, বা দূষিত বলে বিবেচনা করেন।
রথযাত্রা বা রথদ্বিতীয়া একটি আষাঢ় মাসে আয়োজিত অন্যতম প্রধান হিন্দু উৎসব। ভারতীয় রাজ্য ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে এই উৎসব বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়। দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর কৃষ্ণের বৃন্দাবন প্রত্যাবর্তনের স্মরণে এই উৎসব আয়োজিত হয়ে থাকে। ভারতের সর্বাধিক প্রসিদ্ধ রথযাত্রা ওড়িশার পুরী শহরের জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রা। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল, শ্রীরামপুর শহরের মাহেশের রথযাত্রা, গুপ্তিপাড়ার বৃন্দাবনচন্দ্র মঠের রথ এবং কলকাতা ও বাংলাদেশের ইসকনের রথ ধামরাই জগন্নাথ রথ বিশেষ প্রসিদ্ধ। রথযাত্রা উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে মেলার আয়োজন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে রথযাত্রার সময় যাত্রাপালা মঞ্চস্থের রীতি বেশ জনপ্রিয়। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, তাঁর স্ত্রী মা সারদা দেবী, নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ, সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-সহ প্রমুখ ব্যক্তিরা রথের বিখ্যাত মেলা পরিদর্শনে আসতেন। শ্রী রামকৃষ্ণ বলতেন যাত্রাপালায় লোকশিক্ষা হয়।
সংস্কৃতি শব্দটির আভিধানিক অর্থ চিৎপ্রকর্ষ বা মানবীয় বৈশিষ্ট্যের উৎকর্ষ সাধন। ইংরেজি Culture-এর প্রতিশব্দ হিসেবে সংস্কৃতি শব্দটি ১৯২২ সালে বাংলায় প্রথম ব্যবহার শুরু হয়।সংস্কৃতি (বা কৃষ্টি) হলো সেই জটিল সামগ্রিকতা যাতে অন্তর্গত আছে জ্ঞান, বিশ্বাস, নৈতিকতা, শিল্প, আইন, রাজনীতি, আচার এবং সমাজের একজন সদস্য হিসেবে মানুষের দ্বারা অর্জিত অন্য যেকোনো সম্ভাব্য সামর্থ্য বা অভ্যাস।ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপিকা হেলেন স্পেনসার-ওটেইয়ের মতে, সংস্কৃতি হলো কিছু বুনিয়াদি অনুমান, মূল্যবোধ ও জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির, বিশ্বাস, নীতিমালা, প্রক্রিয়া এবং আচরণিক প্রথার অস্পষ্ট সমষ্টি–যা এক দল মানুষ ভাগ করে নেয় এবং সেই সমষ্টি দলের প্রত্যেক সদস্যের আচরণকে এবং তার নিকট অন্য সদস্যের আচরণের 'অর্থ' বা সংজ্ঞায়নকে প্রভাবিত করে (কিন্তু নির্ধারিত করে না)।
ইব্রাহিম বা ইব্রাহীম সম্মানার্থে হযরত ইব্রাহিম (আ.) (আরবি: ابراهيم, হিব্রু ভাষায়: אַבְרָהָם) তোরাহ অনুসারে ইব্রাহিম (আ.) (ইংরেজি: Abraham) (আনুমানিক জন্ম: অজানা হযরত ইবরাহীম (আ.) পশ্চিম ইরাকের বসরা নিকটবর্তী ‘বাবেল’ শহরে জন্মগ্রহণ করেন৷ তিনি ইসলাম ধর্মের একজন গুরুত্বপূর্ণ নবী ও রাসূল। পবিত্র কুরআনে তার নামে একটি সূরাও রয়েছে। পুরো কুরআনে অনেকবার তার নাম উল্লেখিত হয়েছে। ইসলাম ধর্মমতে, তিনি মুসলিম জাতির পিতা। ইসলাম ছাড়াও, ইহুদি ও খ্রিস্টধর্মেও ইব্রাহিম শ্রদ্ধাস্পদ ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। এজন্য ইবরাহিমকে (আ.) একই সাথে বহু ধর্মের জনক।। সৃষ্টিকর্তার প্রতি তার দৃঢ় বিশ্বাসের ছিলো ইসলামে তার কার্যক্রম কে স্মরণ করে ঈদুল আযহা পালিত হয়। ইব্রাহিম(আ.) ও তার শিশুপুত্র ইসমাইল(আ.) ইসলামে কুরবানি ও হজ্জের বিধান চালু করেন যা বর্তমানের মুসলিমদের দ্বারাও পালিত হয়।
ফেসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেইসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত), হল মেটা প্ল্যাটফর্মসের মালিকানাধীন বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
দ্য এশিয়াটিক সোসাইটি (ইংরেজি: The Asiatic Society) কলকাতার একটি অগ্রণী গবেষণা সংস্থা। ১৭৮৪ সালের ১৫ জানুয়ারি ভারততত্ত্ববিদ স্যার উইলিয়াম জোনস ব্রিটিশ ভারতের তদানীন্তন রাজধানী কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতের তদানীন্তন গভর্নর-জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ছিলেন এই সংস্থার প্রধান পৃষ্ঠপোষক। ১৮০৮ সালে দক্ষিণ কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের একটি ভবনে সংস্থাটি স্থানান্তরিত হয়। ১৯৬৫ সালে এই ঐতিহাসিক ভবনটির পাশেই সোসাইটির দ্বিতীয় ভবনটির দ্বারোদ্ঘাটন করা হয়। বর্তমানে সোসাইটির একটি নিজস্ব গ্রন্থাগার ও নিজস্ব সংগ্রহালয়ও রয়েছে। এই গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত আছে অনেক প্রাচীন পুঁথি, বইপত্র, তাম্রসনদ, মুদ্রা, প্রতিকৃতি, ছবি ও আবক্ষ মূর্তি। উল্লেখ্য, কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটি সমজাতীয় সংস্থাগুলির মধ্যে প্রাচীনতম।
আকিকাহ ( আরবি: عقيقة ), আকিকা নবজাতক শিশুর জন্ম উপলক্ষে প্রাণী কুরবানীর একটি ইসলামী প্রথা। এটি মুসলমানরা ব্যাপকভাবে পালন করে এবং নবজাতকের জন্য একটি ছাগল বা ভেড়া জবাই করা এবং গরীবদের মধ্যে মাংস বিতরণ করা সুন্নত হিসাবে বিবেচিত হয়। মুসলমানগণ সন্তানের মঙ্গলের জন্য পরিবার ও বন্ধুদের জন্য একটি ভোজের আয়োজন করে। আকিকা হলো সুন্নাত আল মু'আক্কাদাহ (নিশ্চিত সুন্নত)। যদি সন্তানের অভিভাবক সন্তানের জন্য একটি ভেড়া জবাই করতে সক্ষম হন তবে তাদের এটি করা উচিত। মুহাম্মদ (সঃ)বলেন: "একটি শিশুর জন্যে আকিকা দিতে হবে, সপ্তম দিনে তার জন্য কোরবানি দেওয়া হয়, মাথা কামানো হয় এবং একটি নাম দেওয়া হয়"। সপ্তম দিনে যদি কেউ জবাই করতে না পারে তবে চৌদ্দ দিনের দিন কেউ আকিকা করতে পারবে বা একবিংশ দিনে, যদি কেউ এটি করতে সক্ষম না হয় তবে কোনও ব্যক্তি সন্তানের যৌবনের আগে যে কোনও সময় আকিকা করতে পারে। আক্বিকাহ সুন্নত ও মুস্তাহাব ; এটি মোটেও ওয়াজিব নয়, সুতরাং কোন পাপ নেই যে ব্যক্তি এটি করে, বা যে এটি বিলম্ব করে এবং মুস্তাহাবের সময়ে তা না করে তার উপর, যদিও সে তার ফজিলত ও পুরষ্কারের হাতছাড়া করে (কেউ এটিকে স্থগিত রাখতে পারেন) যতক্ষণ না তিনি তা করতে সক্ষম হন। মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক নাতির পুত্র এবং সে যুগের বিশিষ্ট আলেম জাফর আল-সাদিক দাবি করেছিলেন যে আদর্শভাবে চুল কামানো , আকিকার জন্য জবাই করা এবং সন্তানের নামকরণ করা উচিত এক ঘণ্টার মধ্যে।
ব্রিটেন থেকে ভারতে প্রেরিত ক্যাবিনেট মিশন ১৯৪৬ ছিলো আলোচনা ও পরিকল্পনার দ্বারা স্বাধীনতা প্রদানের মাধ্যমে ভারতীয় নেতৃত্বের নিকট ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি পদক্ষেপ। যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এট্লি-এর উদ্যোগে প্রণীত এই কমিটি ছিলো তিন সদস্য বিশিষ্ট, যাতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, বৃটেনের ভারত বিষয়ক সেক্রেটারী অব স্টেট লর্ড পিটিক-লোরেন্স, ব্রিটিশ বোর্ড অব ট্রেডের সভাপতি স্যার স্ট্যাফর্ড ক্রিপ্স্, এবং এবং রাজকীয় নৌ-সেনাবিভাগের প্রথম অধিনায়ক এ. ভি.
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী (গুজরাটি: મોહનદાસ કરમચંદ ગાંધી উচ্চারণ ; মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধী; ২রা অক্টোবর ১৮৬৯ – ৩০শে জানুয়ারি ১৯৪৮) ছিলেন অন্যতম ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিবর্গের মধ্যে একজন এবং প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক নেতা। এছাড়াও তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। যার মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণ তাদের অভিমত প্রকাশ করে। এ আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের উপর ভিত্তি করে এবং এটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি, সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।
বাগধারা শব্দের আভিধানিক অর্থ কথার বচন ভঙ্গি বা ভাব বা কথার ঢং। বাক্য বা বাক্যাংশের বিশেষ প্রকাশভঙ্গিকে বলা হয় বাগধারা। বিশেষ প্রসঙ্গে শব্দের বিশিষ্টার্থক প্রয়োগের ফলে বাংলায় বহু বাগধারা তৈরি হয়েছে। এ ধরনের প্রয়োগের পদগুচ্ছ বা বাক্যাংশ আভিধানিক অর্থ ছাপিয়ে বিশেষ অর্থের দ্যোতক হয়ে ওঠে। বলা যায় বাক্যার্থ ছাপিয়ে এখানে ব্যাঙ্গার্থই প্রধান।
কলকাতা বা কোলকাতা ([kolkata] (শুনুন)) হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ায় কলকাতা ৩য় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক)$২৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বই ও নতুন দিল্লির ঠিক পর ৩য় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। এছাড়াও কলকাতা শহর,, মুম্বাই এবং নতুন দিল্লীর পর দক্ষিণ এশিয়ার ৩য় ধনী শহর|সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।
আলোকচিত্র (ফটো বা ফটোগ্রাফ) বলতে কোন আলোকসংবেদী তলের উপর আলো ফেলার মাধ্যমে নির্মীত ছবিকে বোঝায়। আলোকসংবেদী তলটি ফটোগ্রাফিক ফিল্ম হতে পারে, আবার সিসিডি বা সিমস চিপের মত কোন ইলেকট্রনিক ছবি নির্মাণকারীও হতে পারে। সাধারণত ক্যামেরা দিয়ে আলোকচিত্র গ্রহণ করা হয়। ক্যামেরার লেন্স এক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আলোকচিত্র গ্রহণ করার শিল্প বা কাজকে আলোকচিত্রগ্রহণ বা ফটোগ্রাফি বলে। একে আলোকচিত্র শিল্প-ও বলা যায়।
যৌনসঙ্গম (যৌনমিলন, সঙ্গম, মৈথুন, রতিক্রিয়া, রতিমিলন; যৌন সংসর্গ, যৌন সহবাস, সহবাস ইত্যাদি) হচ্ছে একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা দ্বারা মূলত যৌনআনন্দ বা প্রজনন বা উভয় ক্রিয়ার জন্য একজন পুরুষের উত্থিত শিশ্ন একজন নারীর যোনিপথে অনুপ্রবেশ করানো ও সঞ্চালনা করাকে বোঝায়। অন্যান্য অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গমের মধ্যে রয়েছে পায়ুসঙ্গম (লিঙ্গ দ্বারা মলদ্বার অনুপ্রবেশ), মুখমৈথুন, অঙ্গুলিসঞ্চালন (আঙ্গুল দ্বারা যৌন অনুপ্রবেশ), যৌনখেলনা ব্যবহার দ্বারা অনুপ্রবেশ (বন্ধনীযুক্ত কৃত্রিম শিশ্ন)। এই সকল কার্যক্রম মূলত মানবজাতি কর্তৃক দুই বা ততোধিকের মধ্যেকার শারীরিক ও মানসিক অন্তরঙ্গতা জনিত পরিতোষ লাভের জন্য এবং সাধারণত মানব বন্ধনে ভূমিকা রাখতে সম্পাদিত হয়ে থাকে।যৌনসঙ্গম বা অপরাপর যৌনকর্ম কীভাবে সংজ্ঞায়িত হয় তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, যা যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর উপর প্রভাব রাখতে পারে। যদিও যৌনসঙ্গম, নির্দিষ্টভাবে মৈথুন বলতে সাধারণত শিশ্ন-যোনিজ অনুপ্রবেশ ও সন্তান উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করা হয়, এর দ্বারা সাধারণভাবে অন্তর্ভেদী মুখমৈথুন ও বিশেষত শিশ্ন-পায়ুজ সঙ্গমকেও নির্দেশ করা হয়। এটি সাধারণত যৌন অনুপ্রবেশকে নির্দেশ করে, যেখানে অননুপ্রবেশকারী যৌনতাকে "বহির্সঙ্গম" নামে নামকরণ করা হয়, কিন্তু অনুপ্রবেশকারী যৌনকর্মকে যৌনসঙ্গম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যৌনতা বা ইংরেজি ভাষায় সেক্স, প্রায়শই যৌনসঙ্গমের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যবহৃত রূপ, যা দ্বারা যে কোন প্রকারের যৌনক্রিয়াকে বোঝানো হতে পারে। যেহেতু এসকল যৌনকর্মের সময়ে মানুষ যৌনবাহিত সংক্রমণের সংস্পর্শের ঝুঁকিতে থাকতে পারে, নিরাপদ যৌনচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও অনাভেদী যৌনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়ে থাকে।বিভিন্ন আইনি বিধিমালা যৌনসঙ্গমমের সামাজিক অনুমতিপ্রদানের জন্য বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতির মাধ্যমে বৈবাহিক রীতির প্রবর্তন, প্রচলন ও সমর্থন করেছে এবং বেশ কিছু যৌনকর্মের বিপরীতে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনকে স্থান দিয়েছে, যেমন বিবাহপূর্ব ব্যভিচার ও বিবাহপরবর্তী পরকীয়া, পায়ুকাম, পশুকাম, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনচর্চা ও অজাচার। ধর্মীয় বিশ্বাসও যৌনসঙ্গমসহ অন্যান্য যৌনাচার বিষয়ক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা পালন করে, যেমন কুমারীত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত, অথবা আইনি বা সরকারি নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়াবলি। বিভিন্ন ধর্মভেদে ও একই ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণীভেদে যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও কিছু বিষয়ে অভিন্নতা রয়েছে, যেমন ব্যভিচারের নিষেধাজ্ঞা।
জগন্নাথ (অর্থাৎ, "জগতের নাথ" বা "জগতের প্রভু") হলেন একজন হিন্দু দেবতা। ভারতের ওড়িশা, ছত্তিশগড় (বস্তার অঞ্চল), পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, আসাম, মণিপুর ও ত্রিপুরা রাজ্যে এবং বাংলাদেশে তার পূজা প্রচলিত। জগন্নাথ হলেন হিন্দু দেবতা বিষ্ণু বা তার অবতার কৃষ্ণের একটি বিশেষ রূপ। তাকে তার দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে পূজা করা হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America; উচ্চারণ: ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি টেরিটোরি এবং কিছু মাইনর আউটলেয়িং দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি "আমেরিকা" নামেও পরিচিত। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি অঙ্গরাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি অঞ্চলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত; আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যটি মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। এছাড়াও ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে পাঁচটি টেরিটরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) হল কুরআনের একটি আয়াত (বাক্য) বা দোয়া, যার বাংলা অর্থ হল "আমরা তো আল্লাহরই এবং আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী"। এটি ইস্তিরজা' (আরবি: اِسْتِرْجَاع, অনুবাদ 'প্রত্যাবর্তন') নামেও পরিচিত। সাধারণত মুসলমানরা তাদের বেদনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে বাক্যটি উচ্চারণ করে, বিশেষ করে যখন একজন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) ঊনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তার। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।