The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
জন্মাষ্টমী বা কৃষ্ণজন্মাষ্টমী (দেবনাগরী कृष्ण जन्माष्टमी) একটি হিন্দু উৎসব। এটি বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণের জন্মদিন হিসেবে পালিত হয়। এর অপর নাম কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী ইত্যাদি।হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। উৎসবটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে, প্রতি বছর মধ্য-আগস্ট থেকে মধ্য-সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো এক সময়ে পড়ে। কৃষ্ণের জীবনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড (গান বা কীর্তন, গীতিনাট্য, নাট্য, যাত্রা ইত্যাদি) এর মাধ্যমে রাসলীলা, কংস বধ ইত্যাদি কর্মকাণ্ড উপস্থাপন করা হয়। মথুরা, বৃন্দাবন, মণিপুর ইত্যাদি স্থানে এই অনুষ্ঠান অত্যন্ত আড়ম্বরের সাথে করা হয়। রাস লীলায় কৃষ্ণের ছোট বয়সের কর্ম-কাণ্ড দেখানো হয়, অন্যদিকে, দহি হাণ্ডি প্রথায় কৃষ্ণের দুষ্টু স্বভাব প্রতিফলিত করা হয় যেখানে কয়েকজন শিশু মিলে উচ্চস্থানে বেঁধে রাখা মাখনের হাড়ি ভাঙতে চেষ্টা করে। এই পরম্পরাকে তামিলনাডুতে উরিয়াদি নামে পালন করা হয়। কৃষ্ণের জন্ম হাওয়ায় নন্দের সকলকে উপহার বিতরণের কাহিনী উদ্যাপন করতে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর পর বহু স্থানে নন্দোৎসব পালন করা হয়।
কৃষ্ণ বা শ্রীকৃষ্ণ (সংস্কৃত: श्रीकृष्ण) হলেন হিন্দুধর্মে পরম পুরুষোত্তম ভগবান। পুরাণ অনুযায়ী তিনি ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার রূপে খ্যাত। তাঁকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর (পরম সত্ত্বা) উপাধিতে ভূষিত করা হয় এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থ শ্রীমদভগবদ্গীতা-এর প্রবর্তক। প্রতিবছর ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী (জন্মাষ্টমী) তিথিতে তার জন্মোৎসব পালন করা হয়।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। জনসংখ্যার বিবেচনায় ১৬ কোটির অধিক মানুষ নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম দেশ। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০ – ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা বঙ্গবন্ধু, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ – ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি এশীয়দের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
বাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২
বাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ হচ্ছে বাংলাদেশের জনসংখ্যার বিস্তারিত গণনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত দেশের ষষ্ঠ জাতীয় আদমশুমারি। এটি বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল আদমশুমারি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তত্ত্বাবধানে ২০২২ সালের ১৫ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও নেত্রকোণা জেলায় বন্যা থাকায় ২৮ জুন ২০২২ পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলমান ছিল। তবে উক্ত আদমশুমারিতে সংগৃহীত তথ্যের মানদণ্ড হিসেবে ১৫ জুন ২০২২ তারিখটি ব্যবহৃত হয়। দশ বছর পর পর আদমশুমারি হওয়ার ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের পর ২০২১ সালে এই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারী, সিলেটে বন্যা এবং সরঞ্জামের অভাবের কারণে সৃষ্ট জটিলতার ফলে এই আদমশুমারি বিলম্বিত হয়।
পদ্মা সেতু বা পদ্মা বহুমুখী সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হয়েছে। সেতুটি ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়। এই দিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল প্রদান করে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুতে আরোহণ করেন এবং এর মাধ্যমে সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়।পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। দুই স্তর বিশিষ্ট ইস্পাত ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এই সেতুর উপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় তৈরি সেতুটি ৪১টি স্প্যান নিয়ে গঠিত, প্রতিটি স্প্যান লম্বায় ১৫০.১২ মিটার (৪৯২.৫ ফুট) এবং চওড়ায় ২২.৫ মিটার (৭৪ ফুট)। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি (৩.৮২ মাইল)। এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু, স্প্যান সংখ্যা ও মোট দৈর্ঘ্য উভয়ের দিক থেকে গঙ্গা নদীর উপর নির্মিত দীর্ঘতম সেতু এবং ১২০ মিটার (৩৯০ ফুট) গভীরতাযুক্ত বিশ্বের গভীরতম পাইলের সেতু।সেতুটি চালু হওয়ার পর বাংলাদেশের জিডিপি ১.২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্নদামঙ্গল রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র রচিত একটি মঙ্গলকাব্য। কাব্যটি দেবী অন্নপূর্ণার মাহাত্ম্য্যব্যঞ্জক। ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে ভারতচন্দ্র এই কাব্য রচনা করেছিলেন। ভারতচন্দ্রের পৃষ্ঠপোষক নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায় বাংলায় প্রতিমায় দেবী অন্নপূর্ণার পূজা প্রচলন করেন। তিনিই ভারতচন্দ্রকে রায়গুণাকর উপাধি প্রদান করে দেবীর মাহাত্ম্যব্যঞ্জক একটি কাব্য রচনার অনুরোধ করেন। সমগ্র কাব্যটি তিনটি খণ্ডে বিভক্ত: (ক) অন্নদামঙ্গল বা অন্নদামাহাত্ম্য্য, (খ) বিদ্যাসুন্দর বা কালিকামঙ্গল ও (গ) মানসিংহ বা অন্নপূর্ণামঙ্গল। মঙ্গলকাব্য ধারায় অন্নদামঙ্গল কাব্যকে একটি পৃথক শাখা রূপে গণ্য করা হয় না; কারণ ভারতচন্দ্র ভিন্ন অপর কোনো কবি এই বিষয়বস্তু অবলম্বন করে কাব্যরচনা করেননি।সমগ্র অন্নদামঙ্গল কাব্যের কোনো প্রাচীন নির্ভরযোগ্য পুঁথি পাওয়া যায় না। প্রাপ্ত পুঁথিগুলির লিপিকাল ১৭৭৬-১৮২৯ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়। ১৮১৬ খ্রিষ্টাব্দে এই কাব্যটি প্রথম মুদ্রিত হয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮৪৭ ও ১৮৫৩ সালে এই গ্রন্থের দুটি সংস্করণ প্রকাশ করেন। পরবর্তীকালে বিদ্যাসাগর কৃত সংস্করণটি আদর্শ ধরে অন্নদামঙ্গল কাব্যের অন্যান্য সংস্করণগুলি প্রকাশিত হয়। লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়াম, প্যারিসের বিবলিওথেক নাসিওনেল দে ফ্রান্স, এশিয়াটিক সোসাইটি ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে এই কাব্যের কয়েকটি প্রাচীন পুঁথি সংরক্ষিত আছে।ভারতচন্দ্র স্বয়ং অন্নদামঙ্গল কাব্যকে "নূতন মঙ্গল" অভিধায় অভিহিত করেছেন। কবি এই কাব্যে প্রথাসিদ্ধ মঙ্গলকাব্য ধারার পূর্ব ঐতিহ্য ও আঙ্গিককে অনুসরণ করলেও, বিষয়বস্তুর অবতারণায় কিছু নতুনত্বের নিদর্শন রেখেছেন। অন্যান্য মঙ্গলকাব্যের ন্যায় অন্নদামঙ্গল গ্রামীণ পটভূমি বা পরিবেশে রচিত হয়নি; এই কাব্য একান্তই রাজসভার কাব্য। ভারতচন্দ্র এই কাব্যের আখ্যানবস্তু সংগ্রহ করেছিলেন কাশীখণ্ড উপপুরাণ, মার্কণ্ডেয় পুরাণ, ভাগবত পুরাণ, বিহ্লনের চৌরপঞ্চাশিকা (চৌরীসুরত পঞ্চাশিকা), এবং ক্ষিতীশবংশাবলীচরিতম্ ইত্যাদি গ্রন্থ ও লোকপ্রচলিত জনশ্রুতি থেকে। অন্নদামঙ্গল কাব্যের বৈশিষ্ট্য হল ছন্দ ও অলংকারের সুদক্ষ প্রয়োগ। সংস্কৃত ভাষায় পারঙ্গম ভারতচন্দ্র প্রাচীন সংস্কৃত কাব্যের বিভিন্ন ছন্দ ও অলংকার সার্থকভাবে এই কাব্যে প্রয়োগ করেন। এই কারণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কাব্য সম্পর্কে মন্তব্য করেন,
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারত প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে, জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার অবস্থিত। এছাড়া, ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া হল ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম ধর্ম এ দেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়ে ওঠে। অতঃপর, এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
চৈতন্যভাগবত প্রসিদ্ধ বৈষ্ণব সন্তকবি বৃন্দাবন দাস ঠাকুর (১৫০৭–১৫৮৯ খ্রিষ্টাব্দ) রচিত চৈতন্য মহাপ্রভুর একটি জীবনীগ্রন্থ। এটি বাংলা ভাষায় রচিত চৈতন্য মহাপ্রভুর প্রথম পূর্ণাঙ্গ জীবনী। এই গ্রন্থে চৈতন্যদেবের প্রথম জীবন এবং গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তকরূপে তার ভূমিকার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। গ্রন্থে রাধা ও কৃষ্ণের যুগ্ম অবতাররূপে গৌড়ীয় বৈষ্ণব ভক্তসমাজে প্রচলিত চৈতন্যদেবের অবতারতত্ত্বেরও ধর্মীয় ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের গুরু তথা চৈতন্যদেবের প্রধান পার্ষদ নিত্যানন্দ চৈতন্যজীবনীরূপে চৈতন্যভাগবত গ্রন্থটিকে অনুমোদন করেন।
শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড
শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ছিল বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একদল সদস্য সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত করে এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডি ৩২-এর বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করে। পরে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ পর্যন্ত খন্দকার মোশতাক আহমেদ অঘোষিতভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হন। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের বেসামরিক প্রশাসনকেন্দ্রিক রাজনীতিতে প্রথমবারের মতো সামরিক ক্ষমতার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ ঘটে। হত্যাকাণ্ডটি বাংলাদেশের আদর্শিক পটপরিবর্তন বলে বিবেচিত। বর্তমানে ১৫ ই আগস্ট বাংলাদেশের ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালিত হয়।
বাগধারা শব্দের আভিধানিক অর্থ কথার বচন ভঙ্গি বা ভাব বা কথার ঢং। বাক্য বা বাক্যাংশের বিশেষ প্রকাশভঙ্গিকে বলা হয় বাগধারা। বিশেষ প্রসঙ্গে শব্দের বিশিষ্টার্থক প্রয়োগের ফলে বাংলায় বহু বাগধারা তৈরি হয়েছে। এ ধরনের প্রয়োগের পদগুচ্ছ বা বাক্যাংশ আভিধানিক অর্থ ছাপিয়ে বিশেষ অর্থের দ্যোতক হয়ে ওঠে। বলা যায় বাক্যার্থ ছাপিয়ে এখানে ব্যাঙ্গার্থই প্রধান।
চৈতন্য মহাপ্রভু (১৪৮৬ খ্রিঃ – ১৫৩৩ খ্রিঃ) ছিলেন ভারতবর্ষে আবির্ভূত এক বহু লোকপ্রিয় বৈষ্ণব সন্ন্যাসী ও ধর্মগুরু মহাপুরুষ এবং ষোড়শ শতাব্দীর বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক। তিনি গৌড়বঙ্গের নদিয়া অন্তর্গত নবদ্বীপে (অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলা) হিন্দু ব্রাহ্মণ পণ্ডিত শ্রীজগন্নাথমিশ্র ও শ্রীমতী শচীদেবীর গৃহে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁকে শ্রীরাধাকৃষ্ণের যুুুগল প্রেমাবতার বলা হয়। শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য ছিলেন শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ ও শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় উল্লিখিত দর্শনের ভিত্তিতে ভক্তিযোগ ভাগবত দর্শনের বিশিষ্ট প্রবক্তা ও প্রচারক। তিনি বিশেষত পরম সত্ত্বা রাধা ও কৃষ্ণের উপাসনা প্রচার করেন। জাতিবর্ণ নির্বিশেষে ব্রাহ্মণ থেকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পর্যন্ত শ্রীহরি নাম, ভক্তি ও হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র বিতরণ করেন যা শ্রীকলিসন্তরন উপনিষদে ও শ্রীপদ্মপুরাণের হরপার্বতী সংবাদে উল্লেখিত রয়েছে। হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্রকে এই কলিযুগে জড়জগৎ থেকে মুক্তি পেয়ে পারমার্থিক ধামে যাবার একমাত্র পন্থা হিসেবে গন্য করা হয়।
শাকিব খান (জন্ম ২৮ মার্চ ১৯৭৯) হলেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, গায়ক, চলচ্চিত্র সংগঠক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত অনন্ত ভালবাসা (১৯৯৯) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। তিনি গণমাধ্যমে "সুপারস্টার", "কিং খান" ও "ঢালিউড কিং" হিসাবে সম্বোধিত হন। তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা।শাকিব তার কর্মজীবনে একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আটটি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, তিনটি বাচসাস পুরস্কার ও চারটি সিজেএফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার। তিনি ২০১০ সালের ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না, ২০১২ সালের খোদার পরে মা, ২০১৫ সালের আরো ভালোবাসবো তোমায় এবং ২০১৭ সালের সত্তা চলচ্চিত্রের জন্য চারবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল নাট্যধর্মী সুভা (২০০৬), প্রণয়ধর্মী আমার প্রাণের স্বামী (২০০৭), প্রিয়া আমার প্রিয়া (২০০৮), ও বলবো কথা বাসর ঘরে (২০০৯), প্রণয়ধর্মী-হাস্যরসাত্মক আদরের জামাই (২০১১), মারপিট-প্রণয়ধর্মী ডন নাম্বার ওয়ান (২০১২), প্রণয়ধর্মী পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী (২০১৩), মারপিট-থ্রিলারধর্মী শিকারি (২০১৬), নবাব (২০১৭), নাট্যধর্মী রাজনীতি (২০১৭), সত্তা (২০১৭) ও প্রণয়ধর্মী-হাস্যরসাত্মক চালবাজ (২০১৮), ভাইজান এলো রে(২০১৮), নাকাব(২০১৮)। ২০১১ সালে মনের জ্বালা চলচ্চিত্রে তিনি প্রথমবারে মতো তিনি নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে গানে কন্ঠ দেন। ২০১৪ সালে তিনি হিরো: দ্যা সুপার স্টার চলচ্চিত্র দিয়ে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং পরবর্তীকালে পাসওয়ার্ড (২০১৯), বীর (২০২০)।
প্রতি বৎসর বিভিন্ন দিনে বিশ্বব্যাপী নানা "দিবস" পালিত হয়। এই সকল বৈশ্বিক দিবস বা বিশ্ব দিবস বা আন্তর্জাতিক দিবসসমূহের তালিকা এই পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো। এই সকল দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে - কোন একটি নির্দিষ্ট দিনে আন্তর্জাতিকভাবে সাম্প্রতিককালের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধি বা ক্ষেত্র বিশেষে কোন অতীত ঘটনা স্মরণ বা উদ্যাপন করা।
মুহাম্মাদ (আরবি: مُحَمَّد; মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত) ছিলেন একজন আরবের ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক নেতা এবং ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। ইসলামি মতবাদ অনুসারে, তিনি হলেন ঐশ্বরিকভাবে প্রেরিত ইসলামের সর্বশেষ নবী (আরবি: النبي; আন-নাবিয়্যু) তথা ‘বার্তাবাহক’ ও রাসুল (আরবি: الرسول; আল-রাসুল), যার উপর ইসলামের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কুরআন অবতীর্ণ হয়। আদম, ইব্রাহিম, মূসা, ইসা (যিশু) এবং অন্যান্য নবিদের মতোই মুহাম্মদ একেশ্বরবাদী শিক্ষা প্রচার করার জন্য প্রেরিত। অমুসলিমদের মতে, তিনি ইসলামি জীবনব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল ছিলেন, তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সাফল্য। কুরআনের পাশাপাশি তার শিক্ষা এবং অনুশীলনগুলো ইসলামি ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৭ সালে ৩০ এপ্রিল জিয়াউর রহমান তার শাসনকে বেসামরিক করার উদ্দেশ্যে ১৯ দফা কর্মসূচি শুরু করেন। জিয়া যখন সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি রাষ্ট্রপতির পদের জন্য নির্বাচন করবেন তখন তার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ, দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
বেগম খালেদা জিয়া (জন্ম: আগস্ট ১৫ ১৯৪৫), জন্মগত নাম খালেদা খানম পুতুল, একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যিনি ১৯৯১-১৯৯৬ সাল এবং ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী রূপে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মাঝে দ্বিতীয় মহিলা সরকারপ্রধান (বেনজির ভুট্টোর পর)।
স্বাধীনতা দিবস হল ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একটি জাতীয় দিবস। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট (১৩৫৪ বঙ্গাব্দের ২৯ শ্রাবণ, শুক্রবার) ভারত ব্রিটিশ রাজশক্তির শাসনকর্তৃত্ব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। সেই ঘটনাটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর ১৫অগাস্ট তারিখটি ভারতে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে প্রধানত অহিংস, অসহযোগ ও আইন অমান্য আন্দোলন এবং বিভিন্ন চরমপন্থী গুপ্ত রাজনৈতিক সমিতির সহিংস আন্দোলনের পথে পরিচালিত এক দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের পর ভারত স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। স্বাধীনতার ঠিক পূর্ব-মুহুর্তে ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্য ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত হয় এবং তার ফলে ভারত ও পাকিস্তান অধিরাজ্যের জন্ম ঘটে। দেশভাগের সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। অনেক মানুষ প্রাণ হারান এবং ১ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুহারা হন। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণের পর দিল্লির লাল কেল্লার লাহোরি গেটের উপর ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তদবধি প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারা দেশে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। এই দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে এবং অন্যান্য অফিস-আদালতে মিষ্টান্ন বিতরণ করা হয়। কিন্তু এটি একটি জাতীয় ছুটির দিন হওয়ার দরুন সর্বত্রই পঠনপাঠন ও কাজকর্ম বন্ধ থাকে।
জিয়াউর রহমান (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ৩০ মে ১৯৮১) ছিলেন বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন সেনাপ্রধান এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাঙালি জনগণের উপর আক্রমণ করার পর তিনি তার পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে বিদ্রোহ করেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরে ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা সমর্থনে একটি বিবৃতি পাঠ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করে। তবে মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকার সময় সংবিধান লঙ্ঘন, শেখ মুজিবের আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের অভিযোগে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) তার বীর উত্তম খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তার খেতাব বাতিল করা হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে সরিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর ১৯৮১ সালের ৩০শে মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে নির্মমভাবে নিহত হন।
সুভাষচন্দ্র বসু উচ্চারণ (২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ - ?) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র যিনি এই সংগ্রামে নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত। ২০২১ সালে ভারত সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় পরাক্রম দিবস বলে ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বাংলা: বাংলাদেশ গণসংঘ) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়।
ভারতের অর্থনীতি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম (ক্রয় ক্ষমতায়) (Purchasing Power Parity, PPP) এবং পঞ্চম বৃহত্তম (Nominal) অর্থনীতি; ২০১৭ সালে এর মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (GDP) ছিল ৯.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (PPP) এবং ২.৪৫ ট্রিলিয়ন (Nominal) মার্কিন ডলার। ভারত বিশ্বের প্রবৃদ্ধিশীল অর্থনীতিগুলির মধ্যে সবচেয়ে নিম্নোক্ত ২০১৭ সালে ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি হার ছিল -৬%।
ভগবদ্গীতা (সংস্কৃত: भगवद्गीता, ˈbʱəɡəʋəd̪ ɡiːˈt̪aː , ভগবানের গান) বা শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা বা গীতা একটি ৭০০-শ্লোকের ধর্মগ্রন্থ। সাতশত শ্লোকের একটি গ্রন্থ বিধায় একে সপ্তশতী বলে। এটি প্রাচীন সংস্কৃত মহাকাব্য মহাভারত-এর একটি অংশ। গীতা একটি স্বতন্ত্র ধর্মগ্রন্থ তথা একটি পৃথক শাস্ত্র এর মর্যাদা পেয়ে থাকে। হিন্দুরা গীতা-কে ভগবানের মুখনিঃসৃত বাণী মনে করেন। মানবধর্ম, দর্শন ও সাহিত্যের ইতিহাসে গীতা এক বিশেষ স্থানের অধিকারী। গীতা-র কথক কৃষ্ণ হিন্দুদের দৃষ্টিতে ঈশ্বরের অবতার পরমাত্মা স্বয়ং। তাই গীতা-য় তাকে বলা হয়েছে "শ্রীভগবান"।গীতা-র বিষয়বস্তু কৃষ্ণ ও পাণ্ডব রাজকুমার অর্জুনের কথোপকথন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শুরু ঠিক আগে শত্রুপক্ষে আত্মীয়, বন্ধু ও গুরুকে দেখে অর্জুন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিলেন। এই সময় কৃষ্ণ তাকে ক্ষত্রিয় যোদ্ধার ধর্ম স্মরণ করিয়ে দিয়ে এবং বিভিন্ন প্রকার যোগশাস্ত্র ও বৈদান্তিক দর্শন ব্যাখ্যা করে তাকে যুদ্ধে যেতে উৎসাহিত করেন। তাই গীতা-কে বলা হয় মানব ধর্মতত্ত্বের একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ এবং হিন্দুদের জীবনচর্যার একটি ব্যবহারিক পথনির্দেশিকা। যোগশাস্ত্র ব্যাখ্যার সময় কৃষ্ণ নিজের "স্বয়ং ভগবান" রূপটি উন্মোচিত করেন এবং বিশ্বরূপে অর্জুনকে দর্শন দিয়ে আশীর্বাদ করেন। অর্জুন ছাড়া প্রত্যক্ষভাবে কৃষ্ণের মুখ থেকে গীতা শুনেছিলেন সঞ্জয় (তিনি যুদ্ধের ঘটনা ধৃতরাষ্ট্রের কাছে বর্ণনা করার জন্য বেদব্যাসের কাছ থেকে দিব্য দৃষ্টি লাভ করেছিলেন), হনুমান (তিনি অর্জুনের রথের চূড়ায় বসে ছিলেন) ও ঘটোৎকচের পুত্র বর্বরিক যিনি কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সব ঘটনা দেখেছিলেন)। গীতা-কে গীতোপনিষদ বলা হয়। অর্থাৎ, গীতা উপনিষদ্ বা বৈদান্তিক সাহিত্যের অন্তর্গত। "উপনিষদ্" নামধারী ধর্মগ্রন্থগুলি শ্রুতিশাস্ত্রের অন্তর্গত হলেও, মহাভারত-এর অংশ বলে গীতা স্মৃতিশাস্ত্রের অন্তর্গত। আবার উপনিষদের শিক্ষার সারবস্তু গীতা-য় সংকলিত হয়েছে বলে একে বলা হয় "উপনিষদ্সমূহের উপনিষদ্"। গীতা-কে মোক্ষশাস্ত্র নামেও অভিহিত করা হয়।ভারতীয় মনীষীদের পাশাপাশি অ্যালডাস হাক্সলি, জে.
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম হলো একটি প্রোটোকল তালিকা বা রাষ্ট্রের নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের পদ সমূহের ক্রমবিন্যাস। একজন ব্যক্তি যখন একের অধিক পদ ধরে রাখে তখন সর্বোচ্চ পদটি হিসাব করা হয়। এই তালিকাটি শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ ও তাদের আসনের ব্যবস্থা যা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সহ অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিদেশ গমন ও প্রত্যাবর্তনের সময় তাদের বিদায় ও অভ্যর্থনা জানানো এবং সমপর্যায়ের বিদেশি অতিথিদের দেশে স্বাগত ও পরে বিদায় জানানোর আনুষ্ঠানিকতার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর আপীল বিভাগ ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বা বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম রিটের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রদান করে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০২০ সালের জুলাইয়ে একটি নতুন পদমর্যাদার ক্রম সংশোধন ও প্রকাশ করেছে যা সংবিধানের আলোকে সুপ্রীম কোর্টের পদমর্যাদার ক্রম সংক্রান্ত রায়ের সাথে সাংঘর্ষিক। কোনও আইন বা অধ্যাদেশ যদি সংবিধান বা সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত সংবিধানের ব্যাখ্যার সাথে বিরোধিতা করে, তাহলে সংবিধান বা সুপ্রীম কোর্টের সংবিধান সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রাধান্য পাবে।
ভারতের জাতীয় পতাকা হল কেন্দ্রস্থলে ২৪টি দণ্ডযুক্ত ঘন নীল রঙের অশোকচক্র সংবলিত ভারতীয় গেরুয়া, সাদা ও ভারতীয় সবুজ এই তিন রঙের একটি আনুভূমিক আয়তাকার পতাকা। ১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই আয়োজিত গণপরিষদের একটি অধিবেশনে পতাকার বর্তমান নকশাটি গৃহীত হয় এবং সেই বছর ১৫ অগস্ট এটি ভারত অধিরাজ্যের সরকারি পতাকার স্বীকৃতি লাভ করে । এরপরে এটি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রেও জাতীয় পতাকার স্বীকৃতি বজায় রাখে। ভারতে এটিকে "তেরঙা" নামে অভিহিত করা হয়। পতাকাটির নকশা প্রস্তুত করা হয়েছিল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া কৃত "স্বরাজ" পতাকার আদলে।ভারতের আইন অনুযায়ী, জাতীয় পতাকা খাদি কাপড়ে তৈরি করতে হয়। এটি এক বিশেষ ধরনের হস্তচালিত তাঁত অথবা রেশমি কাপড় যেটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে মহাত্মা গান্ধী বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। ভারতীয় মানক ব্যুরো কর্তৃক জাতীয় পতাকা উৎপাদনের পদ্ধতি ও নির্দিষ্ট শর্তাবলি নির্ধারিত হয়। উৎপাদনের অধিকার খাদি উন্নয়ন ও গ্রামীণ শিল্প কমিশনের হাতে ন্যস্ত। এই কমিশনই বিভিন্ন আঞ্চলিক গোষ্ঠী উৎপাদনের স্বত্ব প্রদান করে থাকে। ২০০৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, কর্ণাটক খাদি গ্রামোদ্যোগ সংযুক্ত সংঘ ভারতের একমাত্র জাতীয় পতাকা উৎপাদনকারী সংস্থা।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একটি জাতীয় রাজনৈতিক দল। এই দল সাধারণভাবে কংগ্রেস নামে পরিচিত। কংগ্রেস দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলদুটির একটি (অপর দলটি হল ভারতীয় জনতা পার্টি)। এটি একটি ভারতের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন। ১৮৮৫ সালে থিওজোফিক্যাল সোসাইটির কিছু "অকাল্ট" সদস্য কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। এঁরা হলেন অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম, দাদাভাই নওরোজি, দিনশ এদুলজি ওয়াচা, উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, মনমোহন ঘোষ, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে ও উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন প্রমুখ। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব দান করেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করলে, কংগ্রেস দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। সেই থেকে মূলত নেহেরু-গান্ধী পরিবারই কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দান করতে থাকেন।
ভারতে নারীবাদ হল ভারতের নারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা ও রক্ষার আন্দোলন। এই ধারণাগুলিকে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রেও এই আন্দোলনের অংশীদারেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকেন। এটি ভারত রাষ্ট্রের মধ্যে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। অন্যান্য দেশের নারীবাদী আন্দোলনের মত ভারতেও এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্যের মধ্যে আছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা অর্জন: সমান পারিশ্রমিকে কাজ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় সমানাধিকার এবং রাজনীতিতে সমানাধিকার। ভারতীয় নারীবাদীরা ভারতের নির্দিষ্ট পিতৃতান্ত্রিক সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে কিছু স্বতন্ত্র আন্দোলনও পরিচালনা করেছেন, যেমন সতীদাহ প্রথা রদ ও উত্তরাধিকার আইনের প্রতিষ্ঠা।
রাজনীতি বা রাষ্ট্রনীতি বা রাজগতি বা রাজবুদ্ধি হলো হল দলীয় বা নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ক্ষমতার সম্পর্কের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিষয়ক কর্মকাণ্ডের সমষ্টি, উদাহরণস্বরুপ সম্পদের বণ্টন হল এমন একটি কর্মকাণ্ড। রাজনীতি এ্যাকাডেমিক অধ্যয়নকে রাজনীতিবিজ্ঞান বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কাজ হলো রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করা।
অধিবিদ্যা বা মেটাফিজিক্স (Metaphysics) হল দর্শনের একটি শাখা যাতে বিশ্বের অস্তিত্ব, আমাদের অস্তিত্ব, সত্যের ধারণা, বস্তুর গুণাবলী, সময়, স্থান, সম্ভাবনা ইত্যাদির দার্শনিক আলোচনা করা হয়। এই ধারার জনক অ্যারিস্টটল। মেটাফিজিক্স শব্দটি গ্রিক ‘মেটা’(μετά) এবং ‘ফিজিকা’(φυσικά) থেকে উদ্ভূত হয়েছে। অধিবিদ্যায় দুটি মূল প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়– সর্বশেষ পরিণাম কি ? কিসের মত ?মেটাফিজিক্স এর একটি মূল শাখা হল.
আনন্দবাজার পত্রিকা পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত একটি শতাব্দী প্রাচীন ভারতীয় দৈনিক পত্রিকা। কলকাতার এবিপি প্রাইভেট লিমিটেড এর প্রকাশক। প্রকাশ-সংখ্যার ভিত্তিতে এটি ভারতে বাংলা ভাষায় বহুল প্রচারিত দৈনিক। কলকাতা, নয়া দিল্লি, ভুবনেশ্বর, রাঁচি, শিলিগুড়ি ও ভারতের অন্যান্য শহর থেকে নিয়মিত এটি দশ লক্ষেরও অধিক সংখ্যায় প্রচারিত হয়। ইন্ডিয়ান রিডারশিপ সার্ভে অনুসারে, পত্রিকাটি ১৫৬ লাখ মানুষ পাঠ করেন।
ভারতের সংবিধান(Constitution of India) ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন। এই সংবিধানে বহুকক্ষবিশিষ্ট সরকারব্যবস্থা গঠন, কার্যপদ্ধতি, আমলাতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদ, ক্ষমতা ও কর্তব্য নির্ধারণ; মৌলিক অধিকার, নির্দেশমূলক নীতি, এবং নাগরিকদের কর্তব্য নির্ধারণের মাধ্যমে দেশের মৌলিক রাজনৈতিক আদর্শের রূপরেখাটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদে ২৮৪ জনের সই করলে গৃহীত হয় এবং এই দিনটি জাতীয় আইন দিবস হিসেবে পরিচিত। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে এই সংবিধান জোরদারভাবে কার্যকরী হয়। উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ঘোষণার স্মৃতিতে ২৬ জানুয়ারি তারিখটি সংবিধান পরিচালনার জন্য গৃহীত হয়েছিল। সংবিধানে ভারতীয় রাজ্যসংঘকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ গণপ্রজাতান্ত্রিক রূপে ঘোষণা করা হয়েছে; এই দেশের নাগরিকবৃন্দের জন্য ন্যায়বিচার, সাম্য ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা হয়েছে এবং জাতীয় ও প্রাদেশিক সংহতি সুরক্ষার জন্য নাগরিকদের পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃভাব জাগরিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। "সমাজতান্ত্রিক", "ধর্মনিরপেক্ষ" ও "সংহতি" এবং সকল নাগরিকের মধ্যে "ভ্রাতৃভাব" – এই শব্দগুলি ১৯৭৬ সালে একটি সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ হয়। সংবিধান প্রবর্তনের স্মৃতিতে ভারতীয়রা প্রতিবছর ২৬ জানুয়ারি তারিখটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে উদ্যাপন করেন। ভারতের সংবিধান বিশ্বের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রসমূহ মধ্যে বৃহত্তম লিখিত ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান। এই সংবিধানে মোট ২৪টি অংশে ৪৪৮টি ধারা, ১২টি তফসিল এবং ১১৩টি সংশোধনী বিদ্যমান। ভারতের সংবিধানের ইংরেজি সংস্করণে মোট শব্দসংখ্যা ৪৮৬টি। এই সংবিধানের প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পূর্বপ্রচলিত ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের ধ্বংস হয়ে যায়। দেশের সর্বোচ্চ আইন হওয়ার দারুন, ভারত সরকার প্রবর্তিত প্রতিটি আইনকে সংবিধানানুসারী হতে হয়। সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান ড.
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) ঊনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তার। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
সলিমুল্লাহ খান (জন্ম: ১৮ আগস্ট ১৯৫৮) একজন প্রথিতযশা বাংলাদেশী চিন্তাবিদ ও লেখক। তিনি পণ্ডিত ও গণবুদ্ধিজীবী হিসেবে প্রসিদ্ধ। তার রচনা ও বক্তৃতায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমাজ, রাজনীতি, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের বিশ্লেষণ মানুষকে প্রবলভাবে আকৃষ্ট করে। বাংলাদেশের তরুণ লেখক ও চিন্তকদের মাঝে সলিমুল্লাহ খানের অনুসারী রয়েছে। তার রচনায় কার্ল মার্ক্স, জাক লাকঁ ও আহমদ ছফার চিন্তার প্রভাব দেখা যায়। তিনি প্লাতোন, জেমস রেনেল, ফ্রঁৎস ফানঁ, শার্ল বোদলেয়ার, ডরোথি জুল্লে প্রমুখের লেখা বাংলায় তর্জমা করেছেন।
মনসা হলেন একজন লৌকিক হিন্দু দেবী। দেবী ভাগবত পুরাণ সহ আরও অনেক পুরাণে দেবী মনসার উল্লেখ পাওয়া যায়। তিনি সর্পদেবী। প্রধানত বাংলা অঞ্চল এবং উত্তর ও উত্তরপূর্ব ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে তার পূজা প্রচলিত আছে। সর্পদংশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে, সর্পদংশনের প্রতিকার পেতে, প্রজনন ও ঐশ্বর্যলাভের উদ্দেশ্যে তার পূজা করা হয়। মনসা ঘট স্থাপন করে পুজো করা হয়। মনসা নাগ-রাজ (সর্পরাজ) বাসুকীর ভগিনী এবং ঋষি জরৎকারুর (জগৎকারু) স্ত্রী। তার অপর নামগুলি হল বিষহরি বা বিষহরা (বিষ ধ্বংসকারিণী), নিত্যা (চিরন্তনী) ও পদ্মাবতী।পুরাণ অনুসারে, মনসার হলেন শিবের স্বীকৃতকন্যা ও জরৎকারুর পত্নী। জরৎকারু মনসাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। মনসার মা চণ্ডী (শিবের স্ত্রী পার্বতী) তাঁকে ঘৃণা করতেন কিন্তু পরবর্তীতে মাতা চণ্ডী মনসাকে নিজের মেয়ের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। কোনো কোনো ধর্মগ্রন্থে আছে, শিব নয়, ঋষি কাশ্যপ হলেন মনসার পিতা। মনসাকে ভক্তবৎসল বলে বর্ণনা করা হলেও, যিনি তার পূজা করতে অস্বীকার করেন, তার প্রতি তিনি নির্দয়। জন্ম-সংক্রান্ত কারণে মনসার পূর্ণ দেবীত্ব প্রথমে অস্বীকার করা হয়েছিল। তাই মনসার উদ্দেশ্য ছিল দেবী হিসেবে নিজের কর্তৃত্ব স্থাপন করা এবং একটি একনিষ্ঠ মানব ভক্তমণ্ডলী গড়ে তোলা।তার সাথে মিশরীয় দেবী আইসিসের মিল রয়েছে।
বিটিএস (কোরীয়: 방탄소년단) (যারা বাংতান বয়েজ নামেও পরিচিত,) হলো ৭ সদস্যের দক্ষিণ কোরিয়ান বয় ব্যান্ড। এ ৭ সদস্যের ব্যান্ড বিগহিট মিউজিক এর অধীনে ২০১০ সালে ট্রেইনি হিসেবে এবং ২০১৩ সালে ২ কুল ৪ স্কুল অ্যালবাম নিয়ে পুরো বিশ্বের সামনে নিজেদের আত্মপ্রকাশ করে। তারা মূলত হিপ হপ সঙ্গীতের গ্রুপ হলেও তাদের গানগুলোতে বিভিন্ন সঙ্গীতের ধরন প্রকাশ পায়। গানের মাধ্যমে তারা সাহিত্য, মনোস্তাত্বিক বিষয় এবং নিজেকে ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকাণ্ড সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ফেসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেইসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত), হল মেটা প্ল্যাটফর্মসের মালিকানাধীন বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
দ্য স্যাটানিক ভার্সেস (ইংরেজি ভাষায়: The Satanic Verses) সালমান রুশদির চতুর্থ উপন্যাস যা ১৯৮৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। এর কিছুটা ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মুহাম্মাদ এর জীবনী থেকে অনুপ্রাণিত। তার পূর্বের বইয়ের মত এতেও রুশদি জাদু বাস্তবতাবাদ ব্যবহার করেছেন এবং সমসাময়িক ঘটনা ও মানুষের সাহায্যে তার চরিত্রগুলো তৈরি করেছেন। বইয়ের নামটি তথাকথিত স্যাটানিক ভার্স বা শয়তানের বাণী-কে নির্দেশ করে। কারও কারও দাবী মতে কুরআনের কিছু আয়াত শয়তান কর্তৃক অনুপ্রাণিত হওয়ায় দৈনিক প্রার্থনার সময় তৎকালীন মক্কার পেগান দেবতা, লাত, উজ্জা এবং মানাতের পূজা হয়ে গিয়েছিল। এই আয়াতগুলোকেই শয়তানের বাণী বলা হয়। উপন্যাসটির যে অংশে শয়তানের বাণী সম্পর্কিত বিষয় আছে সে অংশটুকু প্রথম সহস্রাব্দের ইসলামী পণ্ডিত আল-ওয়াকিদি এবং আল-তাবরিরি-র সূত্র অনুসরণ করে লেখা হয়েছে।যুক্তরাজ্যে বইটি প্রশংসা কুড়িয়েছে। ১৯৮৮ সালে এটি বুকার পুরস্কার এর চূড়ান্ত তালিকায় ছিল যদিও পিটার ক্যারির অস্কার অ্যান্ড লুসিন্ডার কাছে হেরে যায়। একই বছর উপন্যাসটি হুইটব্রেড অ্যাওয়ার্ড লাভ করে। দ্য স্যাটানিক ভার্সেস একটি বিশাল বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল যখন রক্ষণশীল মুসলিমরা বইটিকে ব্লাসফেমি এবং তাদের বিশ্বাসের প্রতি ব্যঙ্গাত্মক হিসেবে আখ্যায়িত করে। কিছু মুসলিমের প্রতিক্রিয়ার সূত্র ধরেই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনী ১৯৮৯ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি সালমান রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেছিলেন।
বস্তুবাদ (ইংরেজি: Materialism) হলো দর্শনের সবচেয়ে প্রাথমিক মতবাদগুলোর একটি। বস্তুবাদ হল দার্শনিক অদ্বৈতবাদের একটি রূপ যা বস্তুকে এবং মানসিক অবস্থা ও চেতনা সহ সমস্ত জিনিস, যা বস্তুগত মিথস্ক্রিয়ার ফলাফল তা প্রকৃতির মৌলিক পদার্থ হিসাবে ধরে রাখে। দার্শনিক বস্তুবাদের মতে, মন এবং চেতনা হল বস্তুগত প্রক্রিয়ার উপজাত বা এপিফেনোমেনা (যেমন মানব মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের জৈব রসায়ন), যা ছাড়া তাদের অস্তিত্ব থাকতে পারে না। এই ধারণাটি আদর্শবাদের সম্পূর্ণ বিপরীত,যেখানে মন এবং চেতনা হল প্রথম-ক্রমের বাস্তবতা যার বিষয় হলো বস্তু এবং বস্তুগত মিথস্ক্রিয়া হলো গৌণ।
সংসদ ((Bharatiya Sansad)) ভারতের সর্বোচ্চ যুক্তরাষ্ট্রীয় ন্যায়বিভাগ। ভারতের রাষ্ট্রপতি, লোকসভা নামক নিম্নকক্ষ ও রাজ্যসভা নামক উচ্চকক্ষ নিয়ে ভারতের সংসদ গঠিত। নতুন দিল্লির সংসদ মার্গের সংসদ ভবনে এটি অবস্থিত। সংস্কৃত সংসদ (অর্থাৎ, সভা বা পরিষদ) থেকে এই নামটি গৃহীত হয়েছে। কোনও প্রস্তাব আইনে পরিণত করতে সংসদের উভয় কক্ষে তা উত্তীর্ণ হয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদিত হতে হয়। ভবনের কেন্দ্রীয় কক্ষটি সংসদের যৌথ অধিবেশনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত। এই গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক তৎসম বাংলা ভাষায় রচিত। গানটির রচনাকাল জানা যায় না। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের একটি সভায় এটি প্রথম গীত হয়। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীন ভারতের জাতীয় সঙ্গীত স্বীকৃতি লাভ করে এর প্রথম স্তবকটি। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বন্দেমাতরম গানটিও সমমর্যাদায় জাতীয় সঙ্গীতের স্বীকৃতি লাভ করে। বর্তমানে জনগণমন ভারতের জাতীয় সংগীত বা রাষ্ট্রগান (ন্যাশানাল অ্যানথেম) ও বন্দেমাতরম ভারতের জাতীয় স্তোত্র বা রাষ্ট্রগীত (ন্যাশানাল সং) বিবেচিত হয়।
ভারতের রাজনৈতিক দলগুলির তালিকা
ভারতের জাতীয় ও রাজ্য ও জেলা পর্যায়ের দলগুলির স্বীকৃতি সহ একটি বহুদলীয় ব্যবস্থা রয়েছে। ভারতের নির্বাচন কমিশন (নির্বাচন কমিশন) কর্তৃক পর্যায়ক্রমে এই অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল যারা স্থানীয়, রাজ্য বা জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় তাদের ভারতের নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবন্ধিত হতে হবে। নিবন্ধিত দলগুলিকে বস্তুনিষ্ঠ মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে স্বীকৃত জাতীয় বা রাজ্য স্তরের দল হিসেবে উন্নীত করা হয়। একটি স্বীকৃত দল একটি সংরক্ষিত দলের প্রতীক, রাষ্ট্র পরিচালিত টেলিভিশন এবং রেডিওতে বিনামূল্যে সম্প্রচারের সময়, নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের একটি আলোচনা এবং নির্বাচনী বিধি মালা নির্ধারণে মতপ্রদানের মত সুবিধা ভোগ করে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ
ভিকারুননিসা নুন স্কুল ও কলেজ ঢাকার বেইলি রোডে অবস্থিত বাংলাদেশে মেয়েদের একটি স্বনামধন্য স্কুল। ১৯৫২ সালে তৎকালীন পাকিস্থানের পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের (বর্তমানে স্বাধীন বাংলাদেশ) গভর্নর ফিরোজ খান নুনের সহধর্মিনী ভিকার উন নিসা নূন ঢাকায় মেয়েদের একটি আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুরু করার লক্ষ্যে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন ও তার নামানুসারেই স্কুলটির নামকরণ করা হয়েছে। ভিকারুননিসা স্কুলের সাথে ক্ষেত্রবিশেষে উপমহাদেশের ইতিহাসের সংযোগ রয়েছে। এটি এখন বাংলাদেশের নামকরা স্কুলগুলোর মধ্যে অন্যতম।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America; উচ্চারণ: ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি টেরিটোরি এবং কিছু মাইনর আউটলেয়িং দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি "আমেরিকা" নামেও পরিচিত। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি অঙ্গরাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি অঞ্চলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত; আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যটি মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। এছাড়াও ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে পাঁচটি টেরিটরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
হিন্দুধর্ম একটি ভারতীয় উপমহাদেশীয় ধর্ম বা জীবনধারা। এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধর্ম, যার অনুসারী সংখ্যা ১.২ বিলিয়নেরও বেশি, বা বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার ১৫-১৬%, যারা হিন্দু নামে পরিচিত। হিন্দু শব্দটি একটি উচ্ছসিত, এবং যখন হিন্দুধর্মকে বিশ্বের প্রাচীনতম ধর্ম বলা হয়, অনেক অনুশীলনকারী তাদের ধর্মকে সনাতন ধর্ম হিসাবে উল্লেখ করেন, যা এই ধারণাকে বোঝায় যে এর উৎস মানব ইতিহাসের বাইরে, যেমনটি হিন্দু ধর্মগ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। এ ধর্মের মূলে বেদ হওয়ায় এটি ‘বৈদিক ধর্ম’ নামেও পরিচিত।হিন্দুধর্ম হল বিভিন্ন দর্শন এবং ভাগ করা ধারণা, আচার, বিশ্বতাত্ত্বিক ব্যবস্থা, তীর্থস্থান এবং ভাগ করা পাঠ্য উৎস দ্বারা চিহ্নিত একটি বৈচিত্র্যময় চিন্তাধারা যা ধর্মতত্ত্ব, অধিবিদ্যা, পুরাণ, বৈদিক যজ্ঞ, যোগব্যায়াম, আগমিক আচার এবং মন্দির নির্মাণ নিয়ে আলোচনা করে। ধর্মীয় আচারগুলো মূলত ধর্ম(নৈতিকতা), অর্থ(সমৃদ্ধি), কাম(আকাঙ্খা) ও মোক্ষ(ঈশ্বর প্রাপ্তি) এই চারটি অর্জনের লক্ষ্যে পালন করা হয়, যাকে একসাথে বলা হয় পুরুষার্থ; সেইসাথে আছে কর্ম এবং সংসার (মৃত্যু ও পুনর্জন্মের চক্র)। যজ্ঞ, ধ্যান, পূজা, কীর্তন, ইষ্টনাম জপা, তীর্থযাত্রা প্রভৃতি আচার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দয়া, সংযম, ধৈর্য, প্রাণীর প্রতি অহিংসা ইত্যাদি চিরন্তন নৈতিক জীবনাচরণের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাহ্যিক আচরণ পালন অপেক্ষা মোক্ষ প্রাপ্তির উপায়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়ে, যা অর্জনের জন্য কেউ কেউ জাগতিক বস্তুগত সম্পদ ত্যাগ করে সন্ন্যাস জীবন গ্রহণ করে থাকে।হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলো শ্রুতি ("শোনা") এবং স্মৃতি ("স্মরণীয়") প্রধানত দুটি ভাগে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। বেদ, উপনিষদ্, পুরাণ, মহাভারত, রামায়ণ, শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা প্রভৃতি এর মাঝে অন্তর্ভুক্ত, যার মধ্যে বেদ হচ্ছে সর্বপ্রধান, সর্বপ্রাচীন ও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ। আবার ছয়টি আস্তিক দর্শন রয়েছে যা বেদের স্বীকৃতি দেয়। যথা: সাংখ্য, যোগ, ন্যায়, বৈশেষিক, মীমাংসা এবং ব্রহ্মসূত্র। যদিও পুরাণকাল বিদ্যাশাস্ত্র হাজার বছরের একটি বংশানুক্রমিক উপস্থাপন করে, বৈদিক ঋষিদের থেকে শুরু করে, পণ্ডিতরা হিন্দুধর্মকে বিভিন্ন ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে ব্রহ্মতান্ত্রিক অর্থোফ্রাক্সির সংমিশ্রণ বা সংশ্লেষণ হিসাবে বিবেচনা করেন, যার বিভিন্ন শিকড় রয়েছে এবং কোনও নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠাতা নেই। এই হিন্দু সংশ্লেষণ বৈদিক যুগের পরে উদ্ভূত হয়, আনু. ৫০০-২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ এবং আনু.
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] (শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ – ৪ জুলাই ১৯০২; জন্মনাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত, বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...," ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা, যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তার রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?
পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তালিকা
পশ্চিমবঙ্গের বেশির ভাগ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলি হল কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এছাড়া কিছু জলবিদ্যুৎ ও গ্যাস বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে চবি) চট্টগ্রামে অবস্থিত বাংলাদেশের সরকারি বহু-অনুষদভিত্তিক গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়। এটি ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় স্থাপিত হয়। এটি দেশের তৃতীয় এবং শিক্ষাঙ্গণ আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৯ সালের হিসাবে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৭,৫০০ শিক্ষার্থী এবং ৮৭২ জন শিক্ষক রয়েছেন।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
রাশিয়া (রুশ: Россия রশিয়া), সরকারিভাবে রুশ ফেডারেশন নামে পরিচিত (রুশ: Российская Федерация রশিস্কায়া ফিদিরাৎসিয়া) যেটা পূর্ব ইউরোপে এবং উত্তর এশিয়ায় অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। এই দেশটি অর্ধ প্রেসিডেনসিয়াল ফেডারেল প্রজাতন্ত্র যার সংবিধান ৮৩ টি ফেডারেল বিষয় দ্বারা গঠিত। রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব পর্যন্ত নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড (উভয় দেশই কালিনিনগ্রাদ অব্লাস্ত সীমান্ত দিয়ে যুক্ত), বেলারুশ, ইউক্রেন, জর্জিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সাথে সীমান্ত আছে। দেশটির অখতস্ক সাগরের মাধ্যমে জাপানের সাথে ও বেরিং প্রণালীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার সাথে সামুদ্রিক সীমানা রয়েছে। রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ যার রয়েছে পৃথিবীর মোট আবাসযোগ্য জমির এক অষ্টমাংশ। দেশটির মোট আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল)। রাশিয়া বিশ্বের নবম জনবহুল দেশ যেখানে ২০১২ হিসাব অনুযায়ী ১৪৩ মিলিয়ন লোক বসবাস করে। পূর্ব ইউরোপে জায়গা সম্প্রসারণের ফলে রাশিয়া ১১টি সময় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এবং এখানে অনেক রকম ও বিস্তৃত পরিবেশের সমন্বয় ঘটেছে।
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী (গুজরাটি: મોહનદાસ કરમચંદ ગાંધી উচ্চারণ ; মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধী; ২রা অক্টোবর ১৮৬৯ – ৩০শে জানুয়ারি ১৯৪৮) ছিলেন অন্যতম ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিবর্গের মধ্যে একজন এবং প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক নেতা। এছাড়াও তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। যার মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণ তাদের অভিমত প্রকাশ করে। এ আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের উপর ভিত্তি করে এবং এটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি, সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে ঢাবি) ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশের একটি স্বায়ত্তশাসিত সরকারি গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ ভারতে অক্সব্রিজ শিক্ষা ব্যবস্থা অনুসরণে এটি স্থাপিত হয়। এর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ১৯২১ সালের ১ জুলাই। সূচনালগ্নে বিভিন্ন প্রথিতযশা বৃত্তিধারী ও বিজ্ঞানীদের দ্বারা কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রিত হবার প্রেক্ষাপটে এটি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে স্বীকৃতি পায়।বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৩টি অনুষদ, ৮৩টি বিভাগ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ৫৬টি গবেষণা ব্যুরো ও কেন্দ্র, ২০টি আবাসিক হল ও ৩টি ছাত্রাবাস, এবং ৭টি স্নাতক পর্যায়ের অধিভুক্ত সরকারি কলেজসহ মোট ১০৫টি অধিভুক্ত কলেজ রয়েছে। অধিভুক্ত কলেজগুলোর ভিন্ন অবকাঠামো ও কর্মকাণ্ড রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অসংখ্য কৃতি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছেন ১৩ জন রাষ্ট্রপতি, ৭ জন প্রধানমন্ত্রী এবং একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান এখানে পড়াশোনা করেছেন এবং বাংলাদেশ স্বাধীন করতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিশেষ অবদান ছিল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি পদক লাভ করেছেন। এছাড়া এটি বাংলাদেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এশিয়া উইকের শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় জায়গা করে নেয়।
লোকনাথ ব্রহ্মচারী (জন্ম: ১৭৩০ - মৃত্যু: ১৮৯০) ছিলেন একজন হিন্দু সিদ্ধপুরুষ। তিনি বাবা লোকনাথ নামেও পরিচিত। হিন্দুধর্মানুশারীদের নিকট লোকনাথ ব্রহ্মচারী অত্যন্ত পূজনীয় ব্যাক্তিত্ব। তিনি দেহত্যাগের পূর্বপর্যন্ত বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের বারদী আশ্রমে অবস্থান করেছিলেন। বাবা লোকেনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার বারদীতে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু তীর্থভূমি। বিশেষত বাঙালি হিন্দুর কাছে এটি একটি জনপ্রিয় তীর্থস্থান।
কৈবর্ত বিদ্রোহ বা বরেন্দ্র বিদ্রোহ বলতে কৈবর্ত সামন্ত রাজা দিব্যের নেতৃত্বে শুরু হওয়া তাদের তৎকালীন পাল রাজা দ্বিতীয় মহীপালের (১০৭০-১০৭৫) পাল সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিপ্লবকে বোঝানো হয়। দশম-একাদশ শতকে বরেন্দ্রে মাৎস্যন্যায় প্রকট হয়ে উঠলে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছিল। সেই চরম অরাজকতা থেকে মুক্তি পাবার জন্য সেদিন সমস্ত কৈবর্ত শক্তি সম্মিলিত হলো। উত্তর বাংলায় সংঘটিত হয়েছিল ইতিহাসবিখ্যাত কৈবর্ত বিদ্রোহ যাকে বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষের প্রথম সফল বিদ্রোহ হিসেবেও অভিহিত করা হয়। এই বিদ্রোহের মাধ্যমে কৈবর্তরা সামন্ত রাজা দিব্যের নেতৃত্বে বরেন্দ্র ভূমিতে পুনরায় নিজেদের সার্বভৌম রাজ্য গড়তে সক্ষম হন ।
ইউটিউব (ইংরেজি: Youtube) হলো সান ব্রুনো, ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক একটি মার্কিন অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম সেবার সাইট, যা ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। ইউটিউব বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম। ২০০৬ সালের অক্টোবরে, গুগল সাইটটিকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করে নেয়। ইউটিউব বর্তমানে গুগলের অন্যতম অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
আবু রায়হান আল-বেরুনী বা আবু রায়হান মুহাম্মাদ ইবনে আহমদ আল-বেরুনী (ফার্সি: ابوریحان محمد بن احمد بیرونی; ৯৭৩–১০৪৮), সাধারণত আল-বেরুনী নামে পরিচিত, ইসলামী স্বর্ণযুগে একজন খাওয়ারেজমিয় ইরানি পণ্ডিত এবং বহুবিদ্যাবিশারদ ছিলেন। তাকে বিভিন্নভাবে " ইন্ডোলজির প্রতিষ্ঠাতা", " তুলনামূলক ধর্মের জনক ", "আধুনিক জিওডেসির জনক " এবং প্রথম নৃতত্ত্ববিদ বলা হয়। তিনি অত্যন্ত মৌলিক ও গভীর চিন্তধারার অধিকারী ছিলেন। শহরের বাইরে বসবাস করতেন বলে সাধারণভাবে তিনি আল-বেরুনী নামে পরিচিত। রুশীয় তুর্কিস্তানের খিওয়ায় এটি অবস্থিত ছিল। শহরটি খাওয়ারিজিমের রাজধানীর কাছে ছিল। বর্তমানে শহরটি নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এখন এ স্থানটি আল-বেরুনী শহর নামে অভিহিত। তিনি ছিলেন গণিত, জ্যোতিঃপদার্থবিদ, রসায়ন ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে পারদর্শী। অধিকন্তু ভূগোলবিদ, ঐতিহাসিক, পঞ্জিকাবিদ, দার্শনিক এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান, ভাষাতত্ত্ববিদ ও ধর্মতত্ত্বের নিরপেক্ষ বিশ্লেষক। স্বাধীন চিন্তা, মুক্তবুদ্ধি, সাহসিকতা, নির্ভীক সমালোচক ও সঠিক মতামতের জন্য যুগশ্রেষ্ঠ বলে স্বীকৃত। হিজরি চতুর্থ শতাব্দীর শেষার্ধ ও পঞ্চম শতাব্দীর প্রথমার্ধকে আল-বেরুনীর কাল বলে উল্লেখ করা হয়। তিনি সর্বপ্রথম প্রাচ্যের জ্ঞানবিজ্ঞান, বিশেষ করে ভারতের জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতি মুসলিম মনীষীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। অধ্যাপক মাপা বলেন, "আল-বেরুনী শুধু মুসলিম বিশ্বেরই নন, বরং তিনি ছিলেন সমগ্র বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জ্ঞানীদের একজন।”আল-বেরুনী পদার্থবিদ্যা, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা এবং প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে পারদর্শী ছিলেন এবং একজন ইতিহাসবিদ, কালানুক্রমিক এবং ভাষাবিদ হিসেবেও নিজেকে আলাদা করেছিলেন। তিনি তার দিনের প্রায় সমস্ত বিজ্ঞান অধ্যয়ন করেছিলেন এবং জ্ঞানের অনেক ক্ষেত্রে তার অক্লান্ত গবেষণার জন্য প্রচুর পুরস্কৃত হয়েছিল। রাজা এবং সমাজের অন্যান্য শক্তিশালী উপাদান আল-বেরুনীর গবেষণাকে অর্থায়ন করে এবং নির্দিষ্ট প্রকল্পের কথা মাথায় রেখে তাকে খুঁজে বের করে। নিজের অধিকারে প্রভাবশালী, আল-বেরুনী নিজে অন্যান্য জাতির পণ্ডিতদের দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন, যেমন গ্রীক, যাদের থেকে তিনি অনুপ্রেরণা নিয়েছিলেন যখন তিনি দর্শনের অধ্যয়নের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। একজন প্রতিভাধর ভাষাবিদ, তিনি খওয়ারেজমিয়ান, ফার্সি, আরবি, সংস্কৃত এবং গ্রীক, হিব্রু এবং সিরিয়াক ভাষাও জানতেন। তিনি তার জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন গজনীতে, তৎকালীন গজনভিদের রাজধানী, আধুনিক দিনের মধ্য-পূর্ব আফগানিস্তানে। ১০১৭ সালে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে ভ্রমণ করেন এবং ভারতে প্রচলিত হিন্দু ধর্মের অন্বেষণের পর তারিখ আল-হিন্দ (ভারতের ইতিহাস) শিরোনামে ভারতীয় সংস্কৃতির উপর একটি গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি, তার সময়ের জন্য, বিভিন্ন জাতির রীতিনীতি এবং ধর্মের উপর একজন প্রশংসনীয়ভাবে নিরপেক্ষ লেখক ছিলেন, ১১ শতকের প্রথম দিকে ভারত তার পাণ্ডিত্যপূর্ণ বস্তুনিষ্ঠতা তাকে আল-ওস্তাদ ("দ্য মাস্টার") উপাধি অর্জন করেছিল তার প্রথম দিকের অসাধারণ বর্ণনার স্বীকৃতিস্বরূপ। ইরানে, আবু রায়হান বিরুনির জন্মদিন জরিপ প্রকৌশলী দিবস হিসেবে পালিত হয়।
আস-সালামু আলাইকুম (আরবি: ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ) আরবি ভাষায় একটি অভিবাদনসূচক বাক্যাংশ, যার অর্থ "আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক"। সাধারণত মুসলিমরা ধর্মীয় অভিবাদনসূচক বাক্য হিসেবে এই বাক্যটি ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া অন্যান্য ধর্মের আরবি ভাষাভাষীরাও (যেমন: আরব খ্রিষ্টান) এটি ব্যবহার করে থাকে। কথোপকথনে, প্রায়ই এই বাক্যাংশের প্রথম অংশ (অর্থাৎ সালাম অনু. 'শান্তি') একজন ব্যক্তিকে অভিবাদন জানাতে ব্যবহৃত হয়। শুভেচ্ছার সাধারণ প্রতিক্রিয়া হলো "ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম" (وَعَلَيْكُمُ ٱلسَّلَامُ অনু. 'আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক')। সম্পূর্ণ বাক্যাংশটি হলো "আস-সালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু" (ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ)।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) হল কুরআনের একটি আয়াত (বাক্য) বা দোয়া, যার বাংলা অর্থ হল "আমরা তো আল্লাহরই এবং আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী"। এটি ইস্তিরজা' (আরবি: اِسْتِرْجَاع, অনুবাদ 'প্রত্যাবর্তন') নামেও পরিচিত। সাধারণত মুসলমানরা তাদের বেদনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে বাক্যটি উচ্চারণ করে, বিশেষ করে যখন একজন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে।
দর্শন, ইংরেজিতে ফিলোসফি (philosophy) (গ্রিক ভাষা φιλοσοφία, ফিলোসোফিয়া, আক্ষরিকভাবে "জ্ঞানের প্রতি ভালবাসা") হলো অস্তিত্ব, জ্ঞান, মূল্যবোধ, কারণ, মন এবং ভাষা সম্পর্কে সাধারণ এবং মৌলিক প্রশ্নগুলির অধ্যয়ন। জগৎ, জীবন, মানুষের সমাজ, তার চেতনা এবং জ্ঞানের প্রক্রিয়া প্রভৃতি মৌল বিধানের আলোচনাকেও দর্শন বলা হয়। মানুষের সামাজিক চেতনার বিকাশের একটা পর্যায়েই মাত্র মানুষের পক্ষে বিশ্লেষণী দৃষ্টি নিয়ে জগৎ এবং জীবন সম্পর্কে চিন্তা করা সম্ভব হয়েছে। মানুষ তার নিজের উদ্ভব মুহূর্ত থেকেই চিন্তার এরূপ ক্ষমতা দেখাতে সক্ষম ছিল না। মানুষের চেতনার বিকাশের একটা স্তরে মানুষ তার পরিবেশ সম্পর্কে চিন্তা করতে আরম্ভ করে। নিজের জীবনকে অধিকতর নিশ্চিত করে রক্ষা করার প্রয়োজনে মানুষ প্রকৃতি জগৎের রহস্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করে। প্রকৃতি, জগৎ এবং পরবর্তীকালে মানুষের নিজের দেহ এবং চেতনা সম্পর্কেও সে চিন্তা করতে শুরু করে।আদিকালে বিশ্বজগৎ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের পরিধি খুব অধিক ছিল না। দর্শনই আদি জ্ঞানের মূল ভাণ্ডার। জগৎ ও জীবনের প্রত্যেকটি সমস্যা মানুষের কাছে প্রশ্নাকারে উত্থাপিত হয়। যে প্রশ্নই উপস্থিত হোক না কেন, মানুষ তার একটা জবাব দিয়ে প্রকৃতিকে বশ করার চেষ্টা করেছে। তাই আদি দর্শন একদিকে যেমন সমস্ত জ্ঞানের ভাণ্ডার তেমনি আবার তার মধ্যে সমস্যার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষার ভিত্তিতে সমাধানের বদলে কাল্পনিক সমাধানের সাক্ষাৎ অধিক মেলে। কালক্রমে মানুষের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পুরাতন দার্শনিক কল্পনা বাস্তব জীবনে ভিত্তিহীন প্রমাণিত হলে তার স্থানে অধিকতর সঠিক সমাধান আবিষ্কৃত হতে থাকে। এইভাবে অধিকতর বাস্তব এবং সুনির্দিষ্ট আলোচনা ভিত্তিতে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বিকশিত হতে থাকে। পূর্বে প্রকৃতি, পদার্থ, সমাজ, চেতনা, যুক্তি, অর্থনীতি, ধর্ম সবই দর্শনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কালক্রমে তাদের প্রত্যেকে এক একটি ভিন্ন বিজ্ঞান বা আলোচনার শাখায় রূপান্তরিত হতে থাকে। এই বিকাশের পরিণামে বর্তমানে দর্শন বলতে কেবলমাত্র কল্পনার উপর নির্ভরশীল কোনো বিষয় আর অবশিষ্ট নেই। তাই দর্শনের প্রাচীন সংজ্ঞা এবং তার বর্তমান পরিস্থিতি এক নয়। সুনির্দিষ্টভাবে মানুষের জ্ঞান বিকশিত হওয়ার পরেও দর্শনকে অনেকে কল্পনার মধ্যে আবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। এই প্রয়াসে দর্শন জীবনের বাস্তব সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কশুন্য হয়ে পড়ে। যেখানে প্রাচীনকালে জীবনের সমস্যাই দর্শনের বিকাশ ঘটিয়েছে সেখানে আধুনিককালের এরূপ প্রয়াস দর্শনকে জীবনের সঙ্গে সম্পর্কশুন্য অবাস্তব কল্পনায় পর্যবসিত করেছে। দর্শনের এই সংকটের সুস্পষ্ট নির্দেশ দেন ঊনবিংশ শতকে কার্ল মার্কস। কার্ল মার্কস এবং ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস দর্শনকে জীবনের সঙ্গে যুক্ত করে বলেন যে, দর্শন হবে জীবন এবং জগৎকে বৈজ্ঞানিক এবং সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা। দর্শন হবে বৃহত্তম সংখ্যক মানুষের স্বার্থে জগৎ এবং সমাজকে পরিবর্তিত করার ভাবগত হাতিয়ার। দর্শন অবাস্তব কল্পনা নয়। দর্শন জগৎ ও জীবনের মৌলিক বিধানের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। আর এই ব্যাখ্যারই অপরনাম হচ্ছে দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের তত্ত্ব।দর্শন যেমন মানুষের আদি জ্ঞানভাণ্ডার, তেমনি তার ইতিহাস জ্ঞানের যে কোনো শাখার চেয়ে প্রাচীন। প্রাচীন গ্রিস, ভারত ও চীনে দর্শনের বিস্ময়কর বিকাশের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। কিন্তু দর্শনের বিকাশকে দেশ বা জনগোষ্ঠী হিসেবে বিভক্ত করার কোনো বিশেষ তাৎপর্য নেই। জীবন ও জগৎের সমস্যা নিয়ে চিন্তাই হচ্ছে দর্শন।
ভারতের রাজনীতি ব্রিটিশ ওয়েস্টমিনিস্টার সিস্টেমের পরে একটি কেন্দ্রীয় সংসদীয় বহু দলীয় গনতন্ত্রী প্রজাতন্ত্রের একটি কাঠামোতে স্থান গ্রহণ করে আদল করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সরকারের প্রধান, ভারতের রাষ্ট্রপতির সময় দেশের আনুষ্ঠানিক প্রধান এবং বিপুল ভবিষ্যত সঞ্চয় অধিকার, স্থাপন তাকে ধরে অথবা ব্রিটিশ রাজা হিসেবে আন্দাজ একই অবস্থানে তার। কার্যকরী অধিকার সরকারের দ্বারা অনুশীলন করা হয়। কেন্দ্রীয় আইনের ক্ষমতা উভয় সরকারে অর্পণ করা হয় এবং ভারতীয় সংসদের দুই কক্ষ। বিচারবিভাগ কার্যকরী এবং আইনসভার স্বাধীন।যুক্তরাষ্ট্রীয় স্তরে ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। স্বাধীনতার পর অধিকাংশ সময়ই ভারতের শাসনকর্তৃত্ব ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কুক্ষিগত ছিল। অন্যদিকে রাজ্যগুলির রাজনীতিতে প্রাধান্য বিস্তার করে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) (সিপিআই(এম)) প্রভৃতি জাতীয় দল ও একাধিক আঞ্চলিক পার্টি। দুটি সংক্ষিপ্ত সময়কালকে বাদ দিলে ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৯০ সাল অবধি জাতীয় কংগ্রেস সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মর্যাদা ভোগ করেছে। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ঘোষিত জরুরি অবস্থার কারণে জন-অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ মধ্যবর্তী সময়ে কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করে জনতা পার্টি সরকার গঠন করে। ১৯৮৯ সালে জনতা দলের নেতৃত্বে জাতীয় ফ্রন্ট বামফ্রন্টের সহযোগিতায় নির্বাচনে জয়লাভ করে দু-বছর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকে। ১৯৯১ সালে কোনও পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ না করতে পারায় কংগ্রেস পি ভি নরসিমা রাওয়ের প্রধানমন্ত্রিত্বে একটি সংখ্যালঘু সরকার গঠন করে। এই সরকার অবশ্য পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সক্ষম হয়। ১৯৯৬-১৯৯৮ সালটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের অস্থিরতার যুগ। এই সময় একাধিক স্বল্পসময়ের জোট কেন্দ্রে সরকার গঠন করে। ১৯৯৬ সালে সংক্ষিপ্ত সময়কালের জন্য বিজেপি সরকার গঠন করে। তারপর কংগ্রেস ও বিজেপি বিরোধী যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৮ সালে বিজেপির নেতৃত্বে ন্যাশানাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ক্ষমতা দখল করে। এই সরকারই ভারতের প্রথম পূর্ণ সময়কালের অকংগ্রেসি সরকার। ২০০৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ) লোকসভায় বিপুল সংখ্যক আসনে জয়লাভ করে এবং বিজেপি-বিরোধী বাম সাংসদদের সহায়তায় সরকার গঠন করে। ইউপিএ ২০০৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে পুনরায় ক্ষমতায় আসে। অবশ্য, জোটের মধ্যে বামপন্থী পার্টির প্রতিনিধিত্ব গুরুত্বপূর্ণভাবে কমেছে।
দলিত শব্দের দ্বারা ভারত-এর এমন কিছু জাতিগত গোষ্ঠীকে বোঝানো হয় যারা সচরাচর নিপীড়িত এবং অনগ্রসর জাতিরূপে চিহ্নিত। সংস্কৃত এবং হিন্দী ভাষায় দলিত শব্দের অর্থ হচ্ছে "ভগ্ন" বা "ছিন্নভিন্ন"। দলিতদের অনেকে হিন্দু ধর্মের চারি বর্ণ ব্যবস্থা থেকে আলাদা বলে এবং পঞ্চম বর্ণ হিসাবে দেখায়, যা পঞ্চমা নামেও পরিচিত। দলিতদের বেশিরভাগ বর্তমানে হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এছাড়া তারা বৌদ্ধ ধর্ম, শিখ ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম এবং বিভিন্ন লোকধর্ম সহ বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসকে বিশ্বাস করে। ভারতের ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে দলিতদের সংখ্যা ২০ কোটি যা ভারতের জনসংখ্যার ১৬%।দলিত শব্দটি ১৯৩৫ সালের আগেকার ব্রিটিশ রাজ-এর জনগণনার শ্রেণীবিভাজনের সময়ের অবহেলিত শ্রেণী বা ডিপ্রেসড ক্লাসের অনূদিত রূপ। অর্থনীতিবিদ এবং সংস্কারক ভীমরাও রামজি আম্বেডকর (১৮৯১-১৯৫৬) দলিত শব্দটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করেন। তিনি জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত শোকগ্রস্ত লোককে দলিত সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত করেন। তার গঠন করা "লেবার পার্টি"-তে সমাজের নিম্ন শ্রেণীর সমস্ত লোককে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন যাদের মধ্যে মহিলা, ক্ষুদ্র কৃষক তথা অনগ্রসর শ্রেণীর লোকরা ছিল। আম্বেদকর নিজে একজন নিম্ন বর্ণের মহর সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন। ১৯৭০ দশকে "দলিত" শব্দের ব্যবহার আবার জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন যখন 'দলিত পেন্থার' সমাজকর্মী গোষ্ঠী এর ব্যবহার করেছিল। ক্রমে ক্রমে রাজনৈতিক দলসমূহও নিজেদের লাভালাভের জন্য এই শব্দের ব্যবহার আরম্ভ করে। কানহাইয়া কুমার-এর মতে "দলিত" শব্দের সংজ্ঞা অধিক ব্যাপক, একজন ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের কৃষক যিনি অতি কষ্টে জীবন নির্বাহ করছেন তিনিও "দলিত" শ্রেণীতে পড়েন।ভারতের অনুসূচীত জাতির জাতীয় আয়োগে দলিত শব্দের সরকারি ব্যবহারকে "অসাংবিধানিক" আখ্যা দেন এবং 'অনুসূচীত জাতি' শব্দের ব্যবহারকে প্রধান্য দেন। পরে কিছু সূত্র অনুসারে দলিত শব্দ এমন কিছু জনগোষ্ঠীকে নিয়েছে যাদের সাংবিধানিকভাবে অনুসূচীত জাতির স্বীকৃত দেয়া হয়নি এবং সাধারণত একটি ভারতের নিপীড়িত লোকদের বোঝাতে ব্যবহার করা হয়। নেপালেও এমন একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
যৌনসঙ্গম (যৌনমিলন, সঙ্গম, মৈথুন, রতিক্রিয়া, রতিমিলন; যৌন সংসর্গ, যৌন সহবাস, সহবাস ইত্যাদি) হচ্ছে একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা দ্বারা মূলত যৌনআনন্দ বা প্রজনন বা উভয় ক্রিয়ার জন্য একজন পুরুষের উত্থিত শিশ্ন একজন নারীর যোনিপথে অনুপ্রবেশ করানো ও সঞ্চালনা করাকে বোঝায়। অন্যান্য অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গমের মধ্যে রয়েছে পায়ুসঙ্গম (লিঙ্গ দ্বারা মলদ্বার অনুপ্রবেশ), মুখমৈথুন, অঙ্গুলিসঞ্চালন (আঙ্গুল দ্বারা যৌন অনুপ্রবেশ), যৌনখেলনা ব্যবহার দ্বারা অনুপ্রবেশ (বন্ধনীযুক্ত কৃত্রিম শিশ্ন)। এই সকল কার্যক্রম মূলত মানবজাতি কর্তৃক দুই বা ততোধিকের মধ্যেকার শারীরিক ও মানসিক অন্তরঙ্গতা জনিত পরিতোষ লাভের জন্য এবং সাধারণত মানব বন্ধনে ভূমিকা রাখতে সম্পাদিত হয়ে থাকে।যৌনসঙ্গম বা অপরাপর যৌনকর্ম কীভাবে সংজ্ঞায়িত হয় তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, যা যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর উপর প্রভাব রাখতে পারে। যদিও যৌনসঙ্গম, নির্দিষ্টভাবে মৈথুন বলতে সাধারণত শিশ্ন-যোনিজ অনুপ্রবেশ ও সন্তান উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করা হয়, এর দ্বারা সাধারণভাবে অন্তর্ভেদী মুখমৈথুন ও বিশেষত শিশ্ন-পায়ুজ সঙ্গমকেও নির্দেশ করা হয়। এটি সাধারণত যৌন অনুপ্রবেশকে নির্দেশ করে, যেখানে অননুপ্রবেশকারী যৌনতাকে "বহির্সঙ্গম" নামে নামকরণ করা হয়, কিন্তু অনুপ্রবেশকারী যৌনকর্মকে যৌনসঙ্গম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যৌনতা বা ইংরেজি ভাষায় সেক্স, প্রায়শই যৌনসঙ্গমের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যবহৃত রূপ, যা দ্বারা যে কোন প্রকারের যৌনক্রিয়াকে বোঝানো হতে পারে। যেহেতু এসকল যৌনকর্মের সময়ে মানুষ যৌনবাহিত সংক্রমণের সংস্পর্শের ঝুঁকিতে থাকতে পারে, নিরাপদ যৌনচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও অনাভেদী যৌনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়ে থাকে।বিভিন্ন আইনি বিধিমালা যৌনসঙ্গমমের সামাজিক অনুমতিপ্রদানের জন্য বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতির মাধ্যমে বৈবাহিক রীতির প্রবর্তন, প্রচলন ও সমর্থন করেছে এবং বেশ কিছু যৌনকর্মের বিপরীতে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনকে স্থান দিয়েছে, যেমন বিবাহপূর্ব ব্যভিচার ও বিবাহপরবর্তী পরকীয়া, পায়ুকাম, পশুকাম, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনচর্চা ও অজাচার। ধর্মীয় বিশ্বাসও যৌনসঙ্গমসহ অন্যান্য যৌনাচার বিষয়ক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা পালন করে, যেমন কুমারীত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত, অথবা আইনি বা সরকারি নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়াবলি। বিভিন্ন ধর্মভেদে ও একই ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণীভেদে যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও কিছু বিষয়ে অভিন্নতা রয়েছে, যেমন ব্যভিচারের নিষেধাজ্ঞা।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) বা বৈশ্বিক লক্ষ্যগুলি হলো ১৭টি আন্তঃসংযুক্ত বৈশ্বিক লক্ষ্যগুলির একটি সংগ্রহ যা "সকলের জন্য একটি ভালো এবং আরও টেকসই ভবিষ্যৎ অর্জনের পরিকল্পনা হিসাবে তৈরি করা হয়েছে। জাতিসংঘ লক্ষ্যগুলো প্রণয়ন করেছে এবং “টেকসই উন্নয়নের জন্য বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা” হিসেবে লক্ষ্যগুলোকে প্রচার করেছে। এসব লক্ষ্য সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা -কে প্রতিস্থাপন করেছে, যা ২০১৫ সালের শেষ নাগাদ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। SDGs-এর মেয়াদ ২০১৬ থেকে ২০৩০ সাল। এতে মোট ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা ও ১৬৯টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে । ১৭টি এসডিজি হলো: ১. দারিদ্র্য বিলোপ ; ২. ক্ষুধা মুক্তি ; ৩.
সেন রাজবংশ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম দিকের মধ্যযুগীয় একটি হিন্দু রাজবংশ ছিল, যা বাংলা থেকে একাদশ ও দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত সেন সাম্রাজ্য হিসেবে শাসন করেছিল। বল্লাল সেন রচিত গ্রন্থ অনুসারে সেন রাজবংশ এর গোরাপত্তন ৯০০ শতকেরও পূর্বে ।বাংলার পাল রাজাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে করতে তারা একসময় পাল রাজাদেরকে পরাজিত করে পাল সাম্রাজ্য করায়ত্ত করেন। সেন রাজাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে তারা রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বাংলা হতে পরিচালিত সেন সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ছিল বঙ্গোপসাগরের উপকুল থেকে উত্তরভারত (কনৌজ) পর্যন্ত। সেন রাজাদের আদি বাসস্থান ছিল রাঢ়ভূমের আদি কর্ণসুবর্ণে। সেনরা জাতিতে ব্রাহ্মণ ছিলেন কিন্তু ব্রাহ্মণ হয়ে রাজন্যধর্ম/ক্ষত্রিয়বৃত্তি পালনের জন্য বল্লাল সেনের অদ্ভুতসাগর গ্রন্থে ক্ষত্রচরিত্রাচার্য্য ব্রাহ্মণ ও লক্ষণ সেনের তাম্রশাসন অনুসারে রাজন্যধর্মাশ্রয়ী ব্রাহ্মণ( উভয়ের ভাবার্থ একই ) বলে শিলালিপিতে উল্লেখ করে গেছেন। রাজশাহীতে প্রাপ্ত বিজয় সেনের আমলের দেওপাড়া প্রশস্তিতে উমাপতিধরের শ্লোকে ব্রহ্মক্ষত্রিয় শব্দটি পন্ডিতদের কাছে সেনদের জাতি বর্ণনায় অধিক সমাদৃত। প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে একাদশ শতাব্দীর অন্তিমলগ্নে পাল রাজবংশের বিশৃঙ্খলতার সুযোগ নিয়ে সেনদের উত্থান একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূ্র্ণ অধ্যায়। বাংলার পাল রাজবংশের রাজা দ্বিতীয় মহীপালের রাজত্বকালে বারেন্দ্র 'সামন্তচক্রের' বিদ্রোহের সুযোগ নিয়ে সেন রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় সেন পশ্চিমবঙ্গে ক্রমশ স্বীয় আধিপত্য বিস্তার করেন এবং অবশেষে বাংলার পাল রাজবংশের রাজা মদনপালের রাজত্বকালে স্বাধীন সত্ত্বার বিকাশ ঘটিয়ে সেন-ব্রাহ্মণতান্ত্রিক সেন সাম্রাজ্য বিস্তার করেন। ভারতবর্ষের ইতিহাসে বাংলার সেন বংশীয় রাজাদের মধ্যে বীর সেন,সামন্ত সেন,হেমন্ত সেন, বিজয় সেন, সুখ সেন, বল্লাল সেন, ও লক্ষ্মণ সেন বিশিষ্ট স্থান অধিকার করছেন। বিশ্বরূপ সেন—তিনি বঙ্গের সেন বংশীয় নরপতি বল্লাল সেনের পৌত্র। লক্ষ্মণ সেনের অন্যতম পত্নী তন্দ্রাদেবী বা তাড়াদেবীর গর্ভে বিশ্বরূপ সেন ও কেশব সেন নামে দুই পুত্র জন্মে। লক্ষ্মণ সেনের পরলোক গমনের পরে তার পুত্র মাধব সেন প্রথমে বাঙ্গালার রাজা হয়েছিলেন। তৎপরে তার ভ্রাতা কেশব সেন ও বিশ্বরূপ সেন পর পর বাঙ্গালার রাজা হয়েছিলেন এবং এসময় রাজকুমারগণ রাজ্যসমূহের দায়িত্বভার বণ্টন করেন। মাধব সেন ভ্রাতা কেশব সেনের হাতে বঙ্গ রাজ্য তুলে দিয়ে হিমালয় রাজ্যে গমন করেন এবং সেখানে রাজ্য বিস্তার করেন,উত্তরাখণ্ডের আলমোড়ার কোটেশ্বর মন্দির গাত্রের শিলালিপিতে মাধব সেনের কীর্তি বর্ণিত আছে যে,ধর্মরক্ষার্থে দূর্গম হিমালয় রাজ্যের (অধুনা ভারতের উত্তরপ্রদেশ,হিমাচল প্রদেশ এবং নেপাল) শাসন ভার গ্রহণ করেন এবং অনেক কুলীন এবং শাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে যান। লক্ষণ সেনের পরেও যে গৌড়ে সেন রাজগণের আধিপত্য অক্ষুদ্র ছিল,বেঙ্গল গভর্ণমেণ্ট কর্তৃক সংগৃহীত একটি হস্ত লিখিত প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থে উল্লেখ আছে,—পরম ভট্টারক মহারাজাধিরাজ পরম সৌগত "মধুসেন” ১১৯৪ শকাব্দে (১২৭২ খ্ৰী: ) বিক্রমপুরে আধিপত্য করতেন। ‘’ কথিত আছে, ইনি তুরস্কদিগকে বারংবার পরাজিত করেছিলেন। এছাড়াও এই রাজবংশের রাজা হিসেবে সুর সেন/সূর্য সেন,নারায়ণ সেন,লক্ষণ সেনII, বল্লাল সেন II, দামোদর সেন। নাম পাওয়া গেছে।
গঙ্গাইকোণ্ড চোলপুরম দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে অবস্থিত আরিয়ালুর জেলার একটি ছোট শহর। জয়ঙ্কোণ্ডম থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। চোল সাম্রাজ্যের রাজা প্রথম রাজেন্দ্র চোলের সময়কালে (১০২৫ খ্রিস্টাব্দে) গঙ্গাইকোণ্ড চোলপুরম চোল সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পরবর্তী আড়াইশো বছর এটিই ছিল ঐ সাম্রাজ্যের রাজধানী।
কুরআন মজিদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ বা কোরআন (আরবি: القرآن আল্-কুর্'আন্[টী১]) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন। এটিকে আরবি শাস্ত্রীয় সাহিত্যের সর্বোৎকৃষ্ট রচনা বলে মনে করা হয়। কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবিতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা হয়েছে।
তাইওয়ান (TY-WAHN চীনা: 臺灣 বা 台灣; ফিনিন: Táiwān) সরকারিভাবে চীন প্রজাতন্ত্র (ROC; চীনা: 中華民國; ফিনিন: Zhōnghuá Mínguó), পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ। যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে অবস্থিত। এর উত্তর-পশ্চিমে চীনা মূল ভূখণ্ড, উত্তর-পূর্বে জাপান এবং দক্ষিণে ফিলিপাইন অবস্থিত । এর আয়তন ৩৫,৮০৮ বর্গ কি.মি.। যার পশ্চিমের দুই-তৃতীয়াংশ পাহাড় এলাকা এবং পশ্চিমের এক-তৃতীয়াংশ সমতল। এই পশ্চিমে নগরায়নের কারণে বেশিরভাগ জনগোষ্ঠী কেন্দ্রীভূত। তাইপে তাইয়ানের রাজধানী এবং সবচেয়ে বড় শহর। অন্যান্য বড় শহরের মাঝে আছে নিউ তাইপে, কাওহজং, তাইজং, তাইনান ও তাওয়ান। ২.৩৫৭ কোটি নাগরিক বহুল এই দেশটি পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।
বিজয় সেন ছিলেন সেন রাজবংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা। তার পিতা হেমন্ত সেনের প্রতিষ্ঠিত ক্ষুদ্র সেন রাজ্যকে তিনি পরাক্রমশালী সম্রাজ্যে পরিনত করেন। তিনি ১০৯৭ থেকে ১১৬০ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলায় রাজত্ব করেন। তার প্রতিষ্ঠিত সেন বংশ ১০০ বছর পর্যন্ত টিকে ছিল। বিজয় সেনের বংশধরগন দক্ষিণবঙ্গের কর্ণসুবর্ণ থেকে গৌড়ে এসেছিলেন। তিনি সূর বংশীয় রাজকন্যা বিলাশদেবীকে বিয়ে করেছিলেন।
কলকাতা বা কোলকাতা ([kolkata] (শুনুন)) হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ায় কলকাতা ৩য় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক)$২৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বই ও নতুন দিল্লির ঠিক পর ৩য় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। এছাড়াও কলকাতা শহর,, মুম্বাই এবং নতুন দিল্লীর পর দক্ষিণ এশিয়ার ৩য় ধনী শহর|সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।
উত্থান ত্রুটি বা পুরুষত্বহীনতা বা লিঙ্গ শৈথিল্য হল এক প্রকারের যৌন রোগ যাতে শিশ্ন উত্থিত অবস্থা ধরে রাখতে পারে না বা লিঙ্গ উত্থান হয় না। সাধারণত যৌন ক্রিয়ার অংশ হিসেবে যৌন উত্তেজনা আসার লক্ষন এবং মিলনের পূর্বশত হিসেবে লিঙ্গ শক্ত হয়ে উত্থান হয়। পুরুষের যৌন সমস্যাগুলির মধ্যে এটি সবচেয়ে সাধারণ। এ সমস্যার কারনে মানসিক ক্ষতি হতে পারে কারণ এটি ব্যক্তিসত্ত্বা এবং যৌন সম্পর্কে সঙ্গীর সাথে সরাসরি জড়িত একটি বিষয়।
যোনি (লাতিন: ভ্যাজাইনা) স্ত্রীদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা একই সঙ্গে প্রজননতন্ত্র এবং রেচনতন্ত্রে অংশ।যোনি নারীর প্রজননতন্ত্রের বহির্ভাগ। যৌনসঙ্গম কালে পুরুষ তার লিঙ্গ নারীর যোনীতে প্রবিষ্ট করে এবং অঙ্গচালনার মাধ্যমে বীর্য নিক্ষেপ করে। এই বীর্য নারীর জরায়ুতে অবস্থিত ডিম্ব নিষিক্ত করে মানব ভ্রূণের জন্ম দিতে সক্ষম। অন্যদিকে, মূত্র ও নারীর মাসিক রজঃস্রাব কালে যোনীপথেই রক্তের নির্গমন হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় যোনীপথেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।বাংলায় যোনীর অনেক প্রতিশব্দ রয়েছে যথা স্ত্রীযোনী, যোনিপথ, যৌননালী, জনননালী ইত্যাদি। যৌনাঙ্গ, যৌনকর্ম ইত্যাদি শব্দও যোনী থেকে উদ্ভূত। যোনী হলো স্ত্রী প্রজনানঙ্গ যা জরায়ু থেকে স্ত্রীদেহের বাইরের অংশ অবধি পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ফাইব্রোমাসকুলার (তন্তু-পেশিময়) নলাকার অংশ। মানুষ ছাড়াও অমরাবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী ও মারসুপিয়াল প্রাণীতে, যেমন ক্যাঙ্গারু অথবা স্ত্রী পাখি, মনোট্রিম ও কিছু সরীসৃপের ক্লোকাতে যোনী বিদ্যমান। স্ত্রী কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণীরও যোনী আছে, যা মূলত ওভিডাক্টের শেষ প্রান্ত।
ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান। রাষ্ট্রপতি ভারতের আইনবিভাগ, শাসনবিভাগ ও বিচারবিভাগের সকল শাখার আনুষ্ঠানিক প্রধান এবং ভারতের সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। ভারতের রাষ্ট্রপতির দণ্ডিত ব্যক্তির দণ্ডাদেশ স্থগিত, হ্রাস বা দণ্ডিতকে ক্ষমা করার অধিকার রয়েছে।রাষ্ট্রপতি এক নির্বাচকমণ্ডলীর দ্বারা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। এই নির্বাচকমণ্ডলী গঠিত হয় ভারতীয় সংসদ (লোকসভা ও রাজ্যসভা) এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভার সদস্যদের নিয়ে। রাষ্ট্রপতির কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর। অতীতে দেখা গিয়েছে যে, শাসক দলের (লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল) মনোনীত প্রার্থীই রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। অনেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতি পুনরায় নির্বাচনে লড়তে পারেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, যাতে নির্বাচকমণ্ডলীতে প্রতি রাজ্যের জনসংখ্যা ও সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিধায়কদের প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা এবং রাজ্য বিধানসভার সদস্যসংখ্যার সঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্যসংখ্যার সামঞ্জস্যবিধান করা যায়। কোনো প্রার্থী এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট পেতে ব্যর্থ হলে, একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পরাজয়শীল প্রার্থীদের ভোট অন্য প্রার্থীতে হস্তান্তরিত হতে থাকে (এবং সেই সঙ্গে সেই প্রার্থী নির্বাচন থেকে বাদ পড়তে থাকেন), যতক্ষণ না একজন সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেন। ভারতের উপরাষ্ট্রপতি অবশ্য লোকসভা ও রাজ্যসভার সকল সদস্যের (নির্বাচিত ও মনোনীত) প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন।যদিও ভারতীয় সংবিধানের ৫৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতি তার ক্ষমতা সরাসরি প্রয়োগ করতে পারেন, তবুও, কয়েকটি ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ছাড়া রাষ্ট্রপতির সব ক্ষমতাই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিপরিষদের কর্তৃত্বাধীন। ভারতের রাষ্ট্রপতি নতুন দিল্লিতে একটি এস্টেটে বাস করেন। এই এস্টেটটি রাষ্ট্রপতি ভবন নামে পরিচিত। রাষ্ট্রপতির অবসরযাপনের জন্য ছারাব্রা, শিমলা ও হায়দ্রাবাদে তিনটি রিট্রিট বিল্ডিং রয়েছে। হায়দ্রাবাদের রিট্রিট ভবনটির নাম রাষ্ট্রপতি নিলয়ম।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর নৌযুদ্ধ শাখা যার দায়িত্বে রয়েছে ১,১৮,৮১৩ বর্গকিলোমিটার (৪৫,৮৭৪ মা২) সমুদ্রসীমা এবং এই এলাকায় অবস্থিত সকল বন্দর এবং সামরিক স্থাপনার নিরাপত্তা। নৌবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে দেশে এবং বিদেশে বাংলাদেশের সামরিক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণ। পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনী বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং বিদেশে মানবিক সহায়তা মিশনেও একটি নেতৃত্বস্থানীয় বাহিনী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। নৌবাহিনী আঞ্চলিক সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রমে একটি প্রধান অংশগ্রহণকারী শক্তি এবং জাতিসংঘ মিশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রমেও যুক্ত রয়েছে।