The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
দ্বিতীয় এলিজাবেথ (এলিজাবেথ আলেকজান্ড্রা ম্যারি; ২১ শে এপ্রিল ১৯২৬ — ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২) যুক্তরাজ্য এবং আরও ১৫ টি কমনওয়েলথ রাজ্যের রাণী ছিলেন।এলিজাবেথ লন্ডনের মেফেয়ারে ইয়র্কের ডিউক এবং ডাচেস (পরে রাজা জর্জ এবং রাণী এলিজাবেথ)-এর প্রথম সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা ১৯৩৬ সালে নিজের ভাই রাজা অষ্টম এডওয়ার্ডের পরে সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। আর সেই সময় থেকেই এলিজাবেথ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ছিলেন। তিনি বাড়িতে ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষিত হয়েছিলেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ স্থলসেনাবাহিনীর নারী বিভাগ অগজিলিয়ারি টেরটোরিয়াল সার্ভিসে কর্মরত থেকে জনসাধারণের দায়িত্ব পালন শুরু করেছিলেন। ১৯৪৭ সালে তিনি গ্রিক ও ডেনমার্কের প্রাক্তন রাজপুত্র ডিউক অফ এডিনবরা ফিলিপকে বিয়ে করেন। এলিজাবেথ-ফিলিপ দম্পতির চারটি সন্তান হয়: ওয়েলসের যুবরাজ চার্লস; রাজকুমারী অ্যান; ইয়র্কের ডিউক যুবরাজ অ্যান্ড্রু; এবং ওয়েসেক্সের আর্ল যুবরাজ এডওয়ার্ড।
ভূপেন হাজারিকা (অসমীয়া: ভূপেন হাজৰিকা) (জন্মঃ ৮ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ - মৃত্যুঃ ৫ নভেম্বর ২০১১) একজন স্বনামধন্য কন্ঠ শিল্পী ও ভারতীয় সঙ্গীত জগতের পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং বিশ্বশিল্পী। এই কিংবদন্তিতুল্য কণ্ঠশিল্পীর জন্ম ভারতের আসামে। অত্যন্ত দরাজ গলার অধিকারী এই কণ্ঠশিল্পীর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। অসমীয়া চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে গানের জগতে প্রবেশ করেন তিনি। পরবর্তীকালে বাংলা ও হিন্দি ভাষায় গান গেয়ে ভারত এবং বাংলাদেশে অসম্ভব জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। অল্প সময়ের জন্যে তিনি বিজেপি বা ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। ২০০৬ সালে বিবিসি বাংলার শ্রোতা জরিপে তার "মানুষ মানুষের জন্যে" গানটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের তালিকায় ২য় স্থান লাভ করে।
২০২২ এশিয়া কাপ, পৃষ্ঠপোষকতাজনিত কারণে যেটি দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ড এশিয়া কাপ নামেও পরিচিত, একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট যেটি পুরুষ এশিয়া কাপের পঞ্চদশ আসর হিসেবে বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো টোয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক (টি২০আই) হিসেবে খেলা হচ্ছে। টুর্নামেন্টটি প্রথমে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আয়োজিত হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ সালের জুলাই মাসে টুর্নামেন্টটি স্থগিত করা হয়। ২০২১ সালের জুন মাসে শ্রীলঙ্কায় টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেয়া হলেও পরবর্তীতে তা আবারও স্থগিত করা হয়। সে পর্যায়ে পাকিস্তানের ওপর টুর্নামেন্টটি আয়োজনের দায়িত্ব ছিল। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে এশীয় ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ২০২২ সালের আসরের আয়োজক হিসেবে শ্রীলঙ্কার ও ২০২৩ সালের আসরের আয়োজক হিসেবে পাকিস্তানের নাম ঘোষণা করে। ভারত বিগত আসরের বিজয়ী দল।২০২২ সালের ২১ জুলাই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি) শ্রীলঙ্কায় চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের কারণে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করতে তারা সমর্থ হবে না বলে এসিসিকে জানায়। ২০২২ সালের ২৭ জুলাই এসএলসি টুর্নামেন্টটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজন করবে বলে এসিসি নিশ্চিত করে। ২০২২ সালের ২ আগস্ট টুর্নামেন্টের সূচি ঘোষিত হয়।
আকবর আলি খান (১৯৪৪ - ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২) ছিলেন একজন বাংলাদেশী সরকারী আমলা, অর্থনীতিবিদ এবং শিক্ষাবিদ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি হবিগঞ্জের মহুকুমা প্রশাসক বা এসডিও ছিলেন এবং যুদ্ধকালীন সময়ে সক্রিয়ভাবে মুজিবনগর সরকারের সাথে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধ কালে পাকিস্তান সরকার তার অনুপস্থিতিতে তার বিচার করে এবং ১৪ বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। দেশ স্বাধীন হবার পর তিনি সরকারি চাকরি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সাথে যুক্ত ছিলেন। ২০০৬ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা ছিলেন। পরবর্তীতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন না হবার আশঙ্কায় তিনি তিনজন উপদেষ্টার সাথে একযোগে পদত্যাগ করেন। তিনি রেগুলেটরি রিফর্মস কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। জনসংখ্যার বিবেচনায় ১৬ কোটির অধিক মানুষ নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম দেশ। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
পদ্মা সেতু বা পদ্মা বহুমুখী সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হয়েছে। সেতুটি ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়। এই দিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল প্রদান করে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুতে আরোহণ করেন এবং এর মাধ্যমে সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়।পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। দুই স্তর বিশিষ্ট ইস্পাত ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এই সেতুর উপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় তৈরি সেতুটি ৪১টি স্প্যান নিয়ে গঠিত, প্রতিটি স্প্যান লম্বায় ১৫০.১২ মিটার (৪৯২.৫ ফুট) এবং চওড়ায় ২২.৫ মিটার (৭৪ ফুট)। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি (৩.৮২ মাইল)। এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু, স্প্যান সংখ্যা ও মোট দৈর্ঘ্য উভয়ের দিক থেকে গঙ্গা নদীর উপর নির্মিত দীর্ঘতম সেতু এবং ১২০ মিটার (৩৯০ ফুট) গভীরতাযুক্ত বিশ্বের গভীরতম পাইলের সেতু।সেতুটি চালু হওয়ার পর বাংলাদেশের জিডিপি ১.২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে হচ্ছে বাংলাদেশের একটি রাষ্ট্র-মালিকানাধীন ও রাষ্ট্র-পরিচালিত রেল পরিবহন সংস্থা। এর সদর দপ্তর ঢাকায় অবস্থিত। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে এই সংস্থা নব্য প্রতিষ্ঠিত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন নিজের কার্যক্রম পরিচালনা করে। মোট ২৫০৮৩ জন নিয়মিত কর্মচারীসহ বাংলাদেশ রেলওয়ের মোট ২৯৫৫.৫৩ কিমি রুট রয়েছে।বাংলাদেশ রেলওয়ে বাংলাদেশের রেল পরিবহন ব্যবস্থার সিংহভাগ পরিচালনা করে। তবে এর পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোরও অংশগ্রহণ রয়েছে। যেমন, খাদ্য ও পানীয়ের ক্যাটারিং, কিছু নির্বাচিত রুট ও ট্রেনের রেলওয়ে রিজার্ভেশন ও টিকেটিং ব্যবস্থা এবং প্রধান রেলপথসমূহে ফাইবারঅপটিক কেবল স্থাপন, পরিচালন ও রক্ষনাবেক্ষনের কাজ বেসরকারি সংস্থার ওপর দেওয়া হয়েছে।বাংলাদেশ রেলওয়েকে মূলত দুইটি অংশে ভাগ করা হয়, একটি অংশ যমুনা নদীর পূর্ব পাশে এবং অপরটি পশ্চিম পাশে। এদেরকে যথাক্রমে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল নামে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। পূর্ব পাশের অংশের দৈর্ঘ্য ১২৭৯ কিলোমিটার এবং পশ্চিম পাশের অংশের দৈর্ঘ্য ১৪২৭ কিলোমিটার। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের রূপসা নদীর পূর্ব প্রান্তের ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রূপসা-বাগেরহাট ব্রড-গেজ রেলপথ সেকশনটিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের তৃতীয় অংশ হিসেবেও ধরা হয়।
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস হলো জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা বা ইউনেস্কো-ঘোষিত একটি আন্তর্জাতিক দিবস। ১৯৬৬ সালের ২৬ অক্টোবর ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের ১৪তম অধিবেশনে ৮ সেপ্টেম্বর তারিখকে “আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস” হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৬৭ সালে প্রথমবারের মতো দিবসটি উদ্যাপিত হয়। দিবসটির লক্ষ্য ব্যক্তি, সম্প্রদায় এবং সমাজের কাছে সাক্ষরতার গুরুত্ব তুলে ধরা। বর্তমানে জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র এ দিবসটি উদ্যাপন করে থাকে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ – ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি এশীয়দের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০ – ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা বঙ্গবন্ধু, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
বিরাট কোহলি (পাঞ্জাবি: ਵਿਰਾਟ ਕੋਹਲੀ; উচ্চারণ ; জন্ম: ৫ নভেম্বর, ১৯৮৮) দিল্লিতে জন্মগ্রহণকারী ভারতের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।বাবার নাম প্রেম কোহলি। তিনি মাঝারি সারির ডানহাতি ব্যাটসম্যানরূপে পরিচিত। তবে, মাঝে-মধ্যে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবেও ব্যাটিংয়ে নেমে থাকেন তিনি। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম পেস বোলিং করে থাকেন। মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০০৮ সালের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের শিরোপা বিজয়ী ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি এবং এর কয়েকমাস পরে ১৯ বছর বয়সে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের হয়ে ওয়ান ডে তে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। তিনি শীঘ্রই ওয়ানডে তে মিডল অর্ডারে নিয়মিত হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন এবং ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ভারততের জয়ই দলের সদস্য ছিলেন। তিনি ২০১১ সালে টেস্ট অভিষেক করেছিলেন এবং ২০১৩ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্টে শতরান করে নিজেকে একজন টেস্টে ক্রিকেটার প্রমাণ করেছিলেন।পরবর্তীকালে, তিনি অনেক পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন, যেমন ২০১৩ সালে 'অর্জুন' পুরস্কার, ২০১৭ সালে 'পদ্মশ্রী' এবং ২০১৮ সালে ভারতের সর্বোচ্চ ক্রীড়া সম্মান "রাজীব গান্ধী খেলরত্ন" পেয়েছিলেন। ইএসপিএন দ্বারা কোহলি বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত অ্যাথলেট এবং ফোর্বসের অন্যতম মূল্যবান অ্যাথলেট ব্র্যান্ড হিসাবে স্থান পেয়েছেন। ২০১৮ সালে, টাইম ম্যাগাজিন কোহলিকে বিশ্বের অন্যতম ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তি মধ্যে একজনের আখ্যা দিয়েছিল। ২০১৭ এবং ২০১৮ সাল, পর পর দু বছর কোহলি, স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফি (আইসিসির বর্ষসেরা ক্রিকেটার) অর্জন করেছিলেন। আইসিসির টেস্ট প্লেয়ার অফ ২০১৮; ২০১২, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালের আইসিসি ওয়ান ডে খেলোয়াড় এবং উইজডেন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটার ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারত প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে, জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার অবস্থিত। এছাড়া, ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া হল ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম ধর্ম এ দেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়ে ওঠে। অতঃপর, এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
বাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২
বাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ হচ্ছে বাংলাদেশের জনসংখ্যার বিস্তারিত গণনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত দেশের ষষ্ঠ জাতীয় আদমশুমারি। এটি বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল আদমশুমারি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তত্ত্বাবধানে ২০২২ সালের ১৫ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও নেত্রকোণা জেলায় বন্যা থাকায় ২৮ জুন ২০২২ পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলমান ছিল। তবে উক্ত আদমশুমারিতে সংগৃহীত তথ্যের মানদণ্ড হিসেবে ১৫ জুন ২০২২ তারিখটি ব্যবহৃত হয়। দশ বছর পর পর আদমশুমারি হওয়ার ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের পর ২০২১ সালে এই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারী, সিলেটে বন্যা এবং সরঞ্জামের অভাবের কারণে সৃষ্ট জটিলতার ফলে এই আদমশুমারি বিলম্বিত হয়।
মিয়ানমার (বর্মী: မြန်မာ, [mjəmà]), যার দাফতরিক নাম মিয়ানমার সংঘ প্রজাতন্ত্র (বর্মী: ပြည်ထောင်စု သမ္မတ မြန်မာနိုင်ငံတော်, [pjìdàuɴzṵ θàɴmədaa̰ mjəmà nàiɴŋàɴdɔ̀]) এবং যা ব্রহ্মদেশ, বর্মা বা বার্মা নামেও পরিচিত, হল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় মূলভূখণ্ডের বৃহত্তম দেশ এবং ২০১৭ সালের হিসেব মতে এর জনসংখ্যা প্রায় ৫৪ মিলিয়ন। মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমে বাংলাদেশ ও ভারত, উত্তর-পূর্বে চীন, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে লাওস ও থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। দেশটির রাজধানী নেপিডো এবং বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন।তৎকালীন বার্মার গণতান্ত্রিক সরকারের উৎখাতের পর ১৯৮৯ সালে সেখানকার সামরিক সরকার বার্মার নতুন নামকরণ করে "মিয়ানমার" এবং প্রধান শহর ও তৎকালীন রাজধানী রেঙ্গুনের নতুন নাম হয় "ইয়াঙ্গুন"। তবে গণতান্ত্রিক দলগুলোর অনেক অনুসারীই এই নামকরণের বিপক্ষে। ২১ অক্টোবর ২০১০ থেকে দেশটির জাতীয় সঙ্গীত ও নতুন জাতীয় পতাকা প্রবর্তন করা হয়।
মুহাম্মাদ (আরবি: مُحَمَّد; মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত) ছিলেন একজন আরবের ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক নেতা এবং ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হয়ে আসা আল্লাহ্ প্রেরিত সর্বশেষ নবী ও প্রিয় রাসূল । ইসলামি মতবাদ অনুসারে, তিনি হলেন ঐশ্বরিকভাবে প্রেরিত ইসলামের সর্বশেষ নবী (আরবি: النبي; আন-নাবিয়্যু) তথা ‘বার্তাবাহক’ ও রাসুল (আরবি: الرسول; আল-রাসুল), যার উপর ইসলামের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কুরআন অবতীর্ণ হয়। আদম, ইব্রাহিম, মূসা, ইসা (যিশু) এবং অন্যান্য নবিদের মতোই মুহাম্মদ একেশ্বরবাদী শিক্ষা প্রচার করার জন্য প্রেরিত। অমুসলিমদের মতে, তিনি ইসলামি জীবনব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল ছিলেন, তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সাফল্য। কুরআনের পাশাপাশি তার শিক্ষা এবং অনুশীলনগুলো ইসলামি ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় নির্মাণাধীন শহরভিত্তিক রেল ব্যবস্থা হচ্ছে ঢাকা মেট্রো যা আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট বা সংক্ষেপে এমআরটি (MRT) নামে পরিচিত। ২০১৩ সালে অতি জনবহুল ঢাকা মহানগরীর ক্রমবর্ধমান যানবাহন সমস্যা ও পথের দুঃসহ যানজট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় যার অধীনে প্রথমবারের মত ঢাকায় মেট্রো রেল স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে প্রণীত সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা অনুসারে ঢাকায় নির্মিতব্য মেট্রো রেলের লাইনের সংখ্যা ৩টি থেকে বাড়িয়ে ৫টি করা হয়। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন ৬ (MRT Line-6) কে নির্বাচন করা হয়। ২০১৬ সালের ২৬ জুন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এমআরটি লাইন-৬ এর নির্মাণকাজ শুরু হয়।
গাজী মাজহারুল আনোয়ার (জন্ম: ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩ — মৃত্যু: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২) ছিলেন একজন বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, রচয়িতা, গীতিকার ও সুরকার। স্বাধীনতা ও দেশপ্রেম নিয়ে তিনি অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান লিখেছেন। তিনি ২০০২ সালে বাংলাদেশের একুশে পদক এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। ২০ হাজারের বেশি গান রচনা করেছেন তিনি। বিবিসি বাংলা তৈরিকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের তালিকায় রয়েছে তার লেখা তিনটি গান।
দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসব হল দেবী দুর্গার পূজাকে কেন্দ্র করে প্রচলিত একটি উৎসব। দুর্গাপূজা সমগ্র্র্র ভারতে প্রচলিত। তবে বাঙালি সনাতনী সমাজে এটি অন্যতম বিশেষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। আশ্বিন বা চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে দুর্গা মহাপূজা করা হয়। অবশ্য তন্ত্র শাস্ত্র মতে সকল স্থানই দুর্গার স্থান। সকল সময় দুর্গাপূজার সময়। যাইহোক, বছরে মূলত চারটি নবরাত্রি আসে। তার মধ্যে দুটি গুপ্ত নবরাত্রি। চারটি নবরাত্রিতেই শ্রী দূর্গার মহাপূজা হয়। আশ্বিনের নবরাত্রি পূজা শারদীয় পূজা এবং বসন্তের নবরাত্রির পূজা বাসন্তীক দুর্গাপূজা নামে পরিচিত।
যুক্তরাজ্য (ইংরেজি: United Kingdom ইউনাইটেড্ কিংডম্) ইউরোপীয় মূল ভূখণ্ডের উত্তর-পশ্চিম উপকূলের সন্নিকটে অবস্থিত একটি স্বাধীন দ্বীপরাষ্ট্র। রাষ্ট্রটির সরকারি নাম গ্রেইট ব্রিটেন এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের যুক্তরাজ্য (ইংরেজি: United Kingdom of Great Britain and Northern Ireland) এবং ব্রিটেন (Britain) নামেও পরিচিত। এই রাষ্ট্রটির চারটি সাংবিধানিক রাষ্ট্র: ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েল্স্ এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড (যুক্তরাজ্য অধিকৃত আয়ারল্যান্ড)-এর সমন্বয়ে গঠিত।
২০২২ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ
২০২২ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ হচ্ছে আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার অষ্টম আসর, যা ২০২২ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে নির্ধারিত হয়েছে। মূলত: প্রতিযোগিতাটি ২০২১ এর অক্টোবর নভেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে নির্ধারিত ছিল, কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ২০২০ এর জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ঘোষণা করে, প্রতিযোগিতাটি ২০২২ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। ২০২০ এর আগস্টে, আইসিসি আবারো নিশ্চিত করে যে, ২০২২ এর প্রতিযোগিতাটির আয়োজক হবে অস্ট্রেলিয়া।প্রতিযোগিতাটির বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ।
পতঞ্জলির যোগসূত্র হল যোগের তত্ত্ব ও অনুশীলনের উপর সংস্কৃত সূত্র (নীতিবচন)। বেদব্যাস ও কৃষ্ণমাচার্যের মতে সূত্রসংখ্যা ১৯৫ এবং বি কে এস লয়েনগার সহ অন্যান্য পণ্ডিতদের মতে ১৯৬। যোগ সূত্রগুলি খ্রিস্টীয় শতাব্দীর প্রথম দিকে, ভারতের ঋষি পতঞ্জলি দ্বারা সংকলিত হয়েছিল যিনি অনেক পুরনো ঐতিহ্য থেকে যোগ সম্পর্কে জ্ঞান সংশ্লেষিত এবং সংগঠিত করেছিলেন।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) হল কুরআনের একটি আয়াত (বাক্য) বা দোয়া, যার বাংলা অর্থ হল "আমরা তো আল্লাহরই এবং আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী"। এটি ইস্তিরজা' (আরবি: اِسْتِرْجَاع, অনুবাদ 'প্রত্যাবর্তন') নামেও পরিচিত। সাধারণত মুসলমানরা তাদের বেদনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে বাক্যটি উচ্চারণ করে, বিশেষ করে যখন একজন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বাংলা: বাংলাদেশ গণসংঘ) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) ঊনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তার। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
পাকিস্তান (উর্দু: پاکِستان), সরকারিভাবে ইসলামি প্রজাতন্ত্রী পাকিস্তান (উর্দু: اِسلامی جمہوریہ پاکِستان), দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। ২১,২৭,৪২,৬৩১-র অধিক জনসংখ্যা নিয়ে এটি জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম রাষ্ট্র এবং আয়তনের দিক থেকে ৩৩তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। পাকিস্তানের দক্ষিণে আরব সাগর এবং ওমান উপসাগরীয় উপকূলে ১০৪৬ কিলোমিটার (৬৫০ মাইল) উপকূল রয়েছে এবং এটি পূর্ব দিকে ভারতের দিকে, আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমে, ইরান দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং উত্তর-পূর্ব দিকে চীন সীমান্তে অবস্থিত। এটি উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তানের ওয়াখান করিডোরের দ্বারা তাজিকিস্তান থেকে সংকীর্ণভাবে বিভক্ত এবং ওমানের সাথে সমুদ্রের সীমান্ত ভাগ করে।
সুলতান-উল-হিন্দ, খাজা মইনুদ্দিন চিশতী (উর্দু/معین الدین چشتی) (ফার্সি: چشتی,উর্দু: چشتی - Čištī) (আরবি: ششتى - চিশতী) হলেন চিশতীয় ধারার ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত সুফি সাধক। তিনি ১১৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন ও ১২৩৫ সালে পরলোকগমন করেন। তিনি গরিবে নেওয়াজ (غریب نواز) নামেও পরিচিত। মইনুদ্দিন চিশতীই উপমহাদেশে প্রথম এই ধারা প্রতিষ্ঠিত ও পরিচিত করেন। তিনি ভারতে চিশতী ধারার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক ধারা বা সিলসিলা এমনভাবে পরিচিত করেন ;পরবর্তীতে তার অনুসারীরা যেমন, কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী, বাবা ফরিদ, নিজামুদ্দিন আউলিয়া সহ (প্রত্যেকে ক্রমানুযায়ী পূর্ববর্তীজনের শিষ্য) আরও অনেকে ভারতের ইতিহাসে সুফি ধারাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।"
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] (শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ – ৪ জুলাই ১৯০২; জন্মনাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত, বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...," ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা, যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তার রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?
টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকের রেকর্ড তালিকা
টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট (টি২০আই) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের পূর্ণাঙ্গ সদস্যসহ সকল অনুমোদিত সদস্যদের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। টেস্টের বাইরে অবস্থান করে টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে উভয় দল একটিমাত্র ইনিংস খেলার সুযোগ পায়। উভয় দলের জন্য ২০ ওভার বরাদ্দ থাকে। ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫ তারিখে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে প্রথমবারের মতো টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তারপর থেকে ৮৮টি দলের মধ্যে এ পর্যন্ত এক সহস্রাধিক টি২০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। টি২০আই মর্যাদার অধিকারী দলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় খেলা আয়োজনের সংখ্যাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলতঃ সংশ্লিষ্ট দেশের ক্রিকেট বোর্ডগুলো তাদের মূলধন বৃদ্ধিকল্পেই এ খেলার আয়োজন করার উদ্যোগ নেয়।টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে কমপক্ষে ৫০টি ম্যাচে অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে জয়ের শতাংশে ৬৭.৯৭% নিয়ে আফগানিস্তান শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছে। অন্যদিকে, জিম্বাবুয়ে ২৬.০৪% নিয়ে সর্বনিম্নে অবস্থান করছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকাণ্ড সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সত্যজিৎ রায় (২ মে ১৯২১ – ২৩ এপ্রিল ১৯৯২) ছিলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালক এবং লেখক। তাঁকে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। সত্যজিতের জন্ম কলকাতা শহরে সাহিত্য ও শিল্প সমাজে খ্যাতনামা রায় পরিবারে। তার পূর্বপুরুষের ভিটা ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কিশোরগঞ্জে (বর্তমানে বাংলাদেশ) কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। সত্যজিতের কর্মজীবন একজন বাণিজ্যিক চিত্রকর হিসেবে শুরু হলেও প্রথমে কলকাতায় ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা জঁ রনোয়ারের সাথে সাক্ষাৎ ও পরে লন্ডন শহরে সফররত অবস্থায় ইতালীয় নব্য বাস্তবতাবাদী চলচ্চিত্র লাদ্রি দি বিচিক্লেত্তে (ইতালীয়: Ladri di biciclette, বাইসাইকেল চোর) দেখার পর তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ হন।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ, দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
মুহাম্মদ আজিজ খান (ব্যবসায়ী)
মুহাম্মদ আজিজ খান (জন্ম ১৯৫৫) একজন ধনাঢ্য বাংলাদেশী ব্যবসায়ী যিনি সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান। সামিট গ্রুপ বাংলাদেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি, যার বিদ্যুৎ প্রকল্প বাংলাদেশের বিদ্যুতের প্রায় ২০ শতাংশ উৎপাদন করে। তার নেতৃত্বে সামিট গ্রুপ শুরু থেকেই বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আসছে। তাছাড়া জ্বালানি বাণিজ্য, বন্দর, টেলিযোগাযোগ, আতিথেয়তা এবং রিয়েল এস্টেট জুড়ে বিনিয়োগের সাথে একটি বৈচিত্রপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সামিট গ্রুপ আত্মপ্রকাশ করেছে। আজিজ খানের নেতৃত্বে সামিট গ্রুপ বিশ্বের অনেক বহুজাতিক সংস্থার সাথে অংশীদারত্ব গড়ে তুলেছেন। এর মধ্যে অন্যতম জিই, আইএফসি এবং ওয়ার্সেসিলা। তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন। এছাড়া ও তিনি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে ৩ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছেন.
প্রতি বৎসর বিভিন্ন দিনে বিশ্বব্যাপী নানা "দিবস" পালিত হয়। এই সকল বৈশ্বিক দিবস বা বিশ্ব দিবস বা আন্তর্জাতিক দিবসসমূহের তালিকা এই পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো। এই সকল দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে - কোন একটি নির্দিষ্ট দিনে আন্তর্জাতিকভাবে সাম্প্রতিককালের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধি বা ক্ষেত্র বিশেষে কোন অতীত ঘটনা স্মরণ বা উদ্যাপন করা।
ডেঙ্গু জ্বর (সমার্থক ভিন্ন বানান ডেঙ্গি) একটি এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস জনিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ। এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে সচরাচর ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। উপসর্গগুলির মাঝে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশিতে ও গাঁটে ব্যথা এবং গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি। দুই থেকে সাত দিনের মাঝে সাধারণত ডেঙ্গু রোগী আরোগ্য লাভ করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগটি মারাত্মক রক্তক্ষরী রূপ নিতে পারে যাকে ডেঙ্গু রক্তক্ষরী জ্বর (ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার) বলা হয়। এর ফলে রক্তপাত হয়, রক্ত অনুচক্রিকার মাত্রা কমে যায় এবং রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ ঘটে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কখনোবা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম দেখা দেয়। ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কমে যায়।কয়েক প্রজাতির এডিস মশকী (স্ত্রী মশা) ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক। যেগুলোর মধ্যে এডিস ইজিপ্টি মশকী প্রধানতম। ভাইরাসটির পাঁচটি সেরোটাইপ পাওয়া যায়। ভাইরাসটির একটি সেরোটাইপ সংক্রমণ করলে সেই সেরোটাইপের বিরুদ্ধে রোগী আজীবন প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে, কিন্তু ভিন্ন সেরোটাইপের বিরুদ্ধে সাময়িক প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে। পরবর্তীতে ভিন্ন সেরোটাইপের ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমিত হলে রোগীর মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। কয়েক ধরনের টেস্টের মাধ্যমে, যেমন, ভাইরাসটি বা এর আরএনএ প্রতিরোধী এন্টিবডির উপস্থিতি দেখেও ডেঙ্গু জ্বর নির্ণয় করা যায়।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আকাশ যুদ্ধ শাখা। বিমান বাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের আকাশ সীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। পাশাপাশি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে বিমান সহায়তা প্রদান করাও বিমান বাহিনীর অন্যতম দায়িত্ব। এছাড়াও বিমান বাহিনী দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন দুর্যোগে মানবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে এবং বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের সাথেও যুক্ত রয়েছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম হলো একটি প্রোটোকল তালিকা বা রাষ্ট্রের নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের পদ সমূহের ক্রমবিন্যাস। একজন ব্যক্তি যখন একের অধিক পদ ধরে রাখে তখন সর্বোচ্চ পদটি হিসাব করা হয়। এই তালিকাটি শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ ও তাদের আসনের ব্যবস্থা যা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সহ অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিদেশ গমন ও প্রত্যাবর্তনের সময় তাদের বিদায় ও অভ্যর্থনা জানানো এবং সমপর্যায়ের বিদেশি অতিথিদের দেশে স্বাগত ও পরে বিদায় জানানোর আনুষ্ঠানিকতার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর আপীল বিভাগ ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বা বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম রিটের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রদান করে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০২০ সালের জুলাইয়ে একটি নতুন পদমর্যাদার ক্রম সংশোধন ও প্রকাশ করেছে যা সংবিধানের আলোকে সুপ্রীম কোর্টের পদমর্যাদার ক্রম সংক্রান্ত রায়ের সাথে সাংঘর্ষিক। উল্লেখ্য, একটি রিট পিটিশনের মাধ্যমে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স চ্যালেঞ্জ করা হয়। সরকার রিভিউ পিটিশন দাখিল করায় বিষয়টি এখন বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে বিচারাধীন। তবে আপীল বিভাগ উক্ত রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেনি। কোনও আইন বা অধ্যাদেশ যদি সংবিধান বা সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত সংবিধানের ব্যাখ্যার সাথে বিরোধিতা করে, তাহলে সংবিধান বা সুপ্রীম কোর্টের সংবিধান সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রাধান্য পাবে।
সুভাষচন্দ্র বসু উচ্চারণ (২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ - ?) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র যিনি এই সংগ্রামে নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত। ২০২১ সালে ভারত সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় পরাক্রম দিবস বলে ঘোষণা করেন।
উত্থান ত্রুটি বা পুরুষত্বহীনতা বা লিঙ্গ শৈথিল্য হল এক প্রকারের যৌন রোগ যাতে শিশ্ন উত্থিত অবস্থা ধরে রাখতে পারে না বা লিঙ্গ উত্থান হয় না। সাধারণত যৌন ক্রিয়ার অংশ হিসেবে যৌন উত্তেজনা আসার লক্ষন এবং মিলনের পূর্বশত হিসেবে লিঙ্গ শক্ত হয়ে উত্থান হয়। পুরুষের যৌন সমস্যাগুলির মধ্যে এটি সবচেয়ে সাধারণ। এ সমস্যার কারনে মানসিক ক্ষতি হতে পারে কারণ এটি ব্যক্তিসত্ত্বা এবং যৌন সম্পর্কে সঙ্গীর সাথে সরাসরি জড়িত একটি বিষয়।
বাগধারা শব্দের আভিধানিক অর্থ কথার বচন ভঙ্গি বা ভাব বা কথার ঢং। বাক্য বা বাক্যাংশের বিশেষ প্রকাশভঙ্গিকে বলা হয় বাগধারা। বিশেষ প্রসঙ্গে শব্দের বিশিষ্টার্থক প্রয়োগের ফলে বাংলায় বহু বাগধারা তৈরি হয়েছে। এ ধরনের প্রয়োগের পদগুচ্ছ বা বাক্যাংশ আভিধানিক অর্থ ছাপিয়ে বিশেষ অর্থের দ্যোতক হয়ে ওঠে। বলা যায় বাক্যার্থ ছাপিয়ে এখানে ব্যাঙ্গার্থই প্রধান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America; উচ্চারণ: ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অবস্থিত পঞ্চাশটি অঙ্গরাজ্য, একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা ও পাঁচটি টেরিটোরি এবং কিছু মাইনর আউটলেয়িং দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশটি "আমেরিকা" নামেও পরিচিত। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত আটচল্লিশটি অঙ্গরাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি অঞ্চলসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডটি পশ্চিমে প্রশান্ত ও পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত; এই অঞ্চলের উত্তরে কানাডা ও দক্ষিণে মেক্সিকো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত; আলাস্কার পূর্ব সীমান্তে কানাডা ও পশ্চিমে বেরিং প্রণালী পেরিয়ে রাশিয়া অবস্থিত। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যটি মধ্য-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। এছাড়াও ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে পাঁচটি টেরিটরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
ভারতের সংবিধান(Constitution of India) ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন। এই সংবিধানে বহুকক্ষবিশিষ্ট সরকারব্যবস্থা গঠন, কার্যপদ্ধতি, আমলাতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদ, ক্ষমতা ও কর্তব্য নির্ধারণ; মৌলিক অধিকার, নির্দেশমূলক নীতি, এবং নাগরিকদের কর্তব্য নির্ধারণের মাধ্যমে দেশের মৌলিক রাজনৈতিক আদর্শের রূপরেখাটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদে ২৮৪ জনের সই করলে গৃহীত হয় এবং এই দিনটি জাতীয় আইন দিবস হিসেবে পরিচিত। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে এই সংবিধান জোরদারভাবে কার্যকরী হয়। উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ঘোষণার স্মৃতিতে ২৬ জানুয়ারি তারিখটি সংবিধান পরিচালনার জন্য গৃহীত হয়েছিল। সংবিধানে ভারতীয় রাজ্যসংঘকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ গণপ্রজাতান্ত্রিক রূপে ঘোষণা করা হয়েছে; এই দেশের নাগরিকবৃন্দের জন্য ন্যায়বিচার, সাম্য ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা হয়েছে এবং জাতীয় ও প্রাদেশিক সংহতি সুরক্ষার জন্য নাগরিকদের পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃভাব জাগরিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। "সমাজতান্ত্রিক", "ধর্মনিরপেক্ষ" ও "সংহতি" এবং সকল নাগরিকের মধ্যে "ভ্রাতৃভাব" – এই শব্দগুলি ১৯৭৬ সালে একটি সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ হয়। সংবিধান প্রবর্তনের স্মৃতিতে ভারতীয়রা প্রতিবছর ২৬ জানুয়ারি তারিখটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে উদ্যাপন করেন। ভারতের সংবিধান বিশ্বের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রসমূহ মধ্যে বৃহত্তম লিখিত ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান। এই সংবিধানে মোট ২৪টি অংশে ৪৪৮টি ধারা, ১২টি তফসিল এবং ১১৩টি সংশোধনী বিদ্যমান। ভারতের সংবিধানের ইংরেজি সংস্করণে মোট শব্দসংখ্যা ৪৮৬টি। এই সংবিধানের প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পূর্বপ্রচলিত ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের ধ্বংস হয়ে যায়। দেশের সর্বোচ্চ আইন হওয়ার দারুন, ভারত সরকার প্রবর্তিত প্রতিটি আইনকে সংবিধানানুসারী হতে হয়। সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান ড.
যোনি (লাতিন: ভ্যাজাইনা) স্ত্রীদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা একই সঙ্গে প্রজননতন্ত্র এবং রেচনতন্ত্রে অংশ।যোনি নারীর প্রজননতন্ত্রের বহির্ভাগ। যৌনসঙ্গম কালে পুরুষ তার লিঙ্গ নারীর যোনীতে প্রবিষ্ট করে এবং অঙ্গচালনার মাধ্যমে বীর্য নিক্ষেপ করে। এই বীর্য নারীর জরায়ুতে অবস্থিত ডিম্ব নিষিক্ত করে মানব ভ্রূণের জন্ম দিতে সক্ষম। অন্যদিকে, মূত্র ও নারীর মাসিক রজঃস্রাব কালে যোনীপথেই রক্তের নির্গমন হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় যোনীপথেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।বাংলায় যোনীর অনেক প্রতিশব্দ রয়েছে যথা স্ত্রীযোনী, যোনিপথ, যৌননালী, জনননালী ইত্যাদি। যৌনাঙ্গ, যৌনকর্ম ইত্যাদি শব্দও যোনী থেকে উদ্ভূত। যোনী হলো স্ত্রী প্রজনানঙ্গ যা জরায়ু থেকে স্ত্রীদেহের বাইরের অংশ অবধি পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ফাইব্রোমাসকুলার (তন্তু-পেশিময়) নলাকার অংশ। মানুষ ছাড়াও অমরাবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী ও মারসুপিয়াল প্রাণীতে, যেমন ক্যাঙ্গারু অথবা স্ত্রী পাখি, মনোট্রিম ও কিছু সরীসৃপের ক্লোকাতে যোনী বিদ্যমান। স্ত্রী কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণীরও যোনী আছে, যা মূলত ওভিডাক্টের শেষ প্রান্ত।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৭ সালে ৩০ এপ্রিল জিয়াউর রহমান তার শাসনকে বেসামরিক করার উদ্দেশ্যে ১৯ দফা কর্মসূচি শুরু করেন। জিয়া যখন সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি রাষ্ট্রপতির পদের জন্য নির্বাচন করবেন তখন তার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
আফগানিস্তান (পশতু/দারি: افغانستان, Afġānestān [avɣɒnesˈtɒn]), সরকারি নাম আফগানিস্তান ইসলামি আমিরাত, হলো পাহাড়ি স্থলবেষ্টিত একটি দেশ। এটি ইরান, পাকিস্তান, চীন, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, ও তুর্কমেনিস্তানের মধ্যস্থলে একটি ভূ-বেষ্টিত মালভূমির উপর অবস্থিত। আফগানিস্তানকে অনেক সময় দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের অংশ হিসেবেও গণ্য করা হয়। আফগানিস্তানের পূর্বে ও দক্ষিণে পাকিস্তান , পশ্চিমে ইরান, উত্তরে তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তান এবং উত্তর-পূর্বে গণচীন। আফগানিস্তান শব্দটির অর্থ "আফগান (তথা পশতুন) জাতির দেশ"। আফগানিস্তান একটি রুক্ষ এলাকা যার অধিকাংশ এলাকা পর্বত ও মরুভূমি আবৃত।শুধু পার্বত্য উপত্যকা এবং উত্তরের সমভূমিতে গাছপালা দেখা যায়। এখানকার গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়া গরম ও শুষ্ক এবং শীতকালে প্রচণ্ড শীত পড়ে। কাবুল দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী।
কলকাতা বা কোলকাতা ([kolkata] (শুনুন)) হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ায় কলকাতা ৩য় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক)$২৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বই ও নতুন দিল্লির ঠিক পর ৩য় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। এছাড়াও কলকাতা শহর,, মুম্বাই এবং নতুন দিল্লীর পর দক্ষিণ এশিয়ার ৩য় ধনী শহর|সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।
ফেসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেইসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত), হল মেটা প্ল্যাটফর্মসের মালিকানাধীন বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি হলো ভারতের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রধান দুটি দলের অন্যতম (অপর দলটি হলো ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস)। ২০১৪ সালের হিসেব অনুসারে, ভারতের সংসদ ও রাজ্য বিধানসভাগুলির প্রতিনিধি সংখ্যার দিক থেকে এটি ভারতের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। প্রাথমিক সদস্যপদের দিক থেকে এটি বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। বিজেপি একটি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দল। জাতীয়তাবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সঙ্গে এই দলের আদর্শগত ও সংগঠনগত নৈকট্য রয়েছে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি রাজনৈতিক দল।
শিব (সংস্কৃত: शिव [ɕɪʋɐ], সংস্কৃত: शिवः, আইএএসটি: Śiva, আইএসও: Śiva, শুনুন ), হলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ দেবতা। সনাতন ধর্মের শাস্ত্রসমূহে তিনি পরমসত্ত্বা রূপে ঘোষিত। শিব সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়রূপ তিন কারণের কারণ। তিনি সমসাময়িক হিন্দুধর্মের তিনটি সর্বাধিক প্রাচীন সম্প্রদায়ের অন্যতম শৈব সম্প্রদায়ের প্রধান দেবতা। এছাড়া শিব স্মার্ত সম্প্রদায়ে পূজিত ঈশ্বরের পাঁচটি প্রধান রূপের (গণেশ, শিব, সূর্য, বিষ্ণু ও দুর্গা) একটি রূপ। তার বিশেষ রুদ্ররূপ ধ্বংস, সংহার ও প্রলয়ের দেবতা।সর্বোচ্চ স্তরে শিবকে সর্বোৎকর্ষ, অপরিবর্তনশীল পরম ব্রহ্ম মনে করা হয়। ব্রহ্ম স্বরূপে পরমাত্মা শিব বিন্দুর ন্যায় অর্থাৎ নিরাকার,এই অবস্থায় শিবকে কল্পনাও করা যায়না,তিনি কালচক্র ও সংসারের সকল গুণ-অগুণ এর উর্দ্ধে। শিবের অনেকগুলি সদাশয় ও ভয়ঙ্কর মূর্তিও আছে। সদাশয় রূপে তিনি একজন সর্বজ্ঞ যোগী। তিনি কৈলাস পর্বতে সন্ন্যাসীর জীবন যাপন করেন। আবার গৃহস্থ রূপে তিনি পার্বতীর স্বামী। তার দুই পুত্র বর্তমান। এঁরা হলেন গণেশ ও কার্তিক। ভয়ঙ্কর রূপে তাকে প্রায়শই দৈত্যবিনাশী বলে বর্ণনা করা হয়। শিবকে যোগ, ধ্যান ও শিল্পকলার দেবতাও মনে করা হয়। এছাড়াও তিনি চিকিৎসা বিদ্যা ও কৃষিবিদ্যারও আবিষ্কারক।শিবমূর্তির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল তাঁর তৃতীয় নয়ন, গলায় বাসুকী নাগ, জটায় অর্ধচন্দ্র, জটার উপর থেকে প্রবাহিত গঙ্গা, অস্ত্র ত্রিশূল ও বাদ্য ডমরু। শিবকে সাধারণত ‘শিবলিঙ্গ’ নামক বিমূর্ত প্রতীকে পূজা করা হয়।
যৌনসঙ্গম (যৌনমিলন, সঙ্গম, মৈথুন, রতিক্রিয়া, রতিমিলন; যৌন সংসর্গ, যৌন সহবাস, সহবাস ইত্যাদি) হচ্ছে একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা দ্বারা মূলত যৌনআনন্দ বা প্রজনন বা উভয় ক্রিয়ার জন্য একজন পুরুষের উত্থিত শিশ্ন একজন নারীর যোনিপথে অনুপ্রবেশ করানো ও সঞ্চালনা করাকে বোঝায়। অন্যান্য অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গমের মধ্যে রয়েছে পায়ুসঙ্গম (লিঙ্গ দ্বারা মলদ্বার অনুপ্রবেশ), মুখমৈথুন, অঙ্গুলিসঞ্চালন (আঙ্গুল দ্বারা যৌন অনুপ্রবেশ), যৌনখেলনা ব্যবহার দ্বারা অনুপ্রবেশ (বন্ধনীযুক্ত কৃত্রিম শিশ্ন)। এই সকল কার্যক্রম মূলত মানবজাতি কর্তৃক দুই বা ততোধিকের মধ্যেকার শারীরিক ও মানসিক অন্তরঙ্গতা জনিত পরিতোষ লাভের জন্য এবং সাধারণত মানব বন্ধনে ভূমিকা রাখতে সম্পাদিত হয়ে থাকে।যৌনসঙ্গম বা অপরাপর যৌনকর্ম কীভাবে সংজ্ঞায়িত হয় তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, যা যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর উপর প্রভাব রাখতে পারে। যদিও যৌনসঙ্গম, নির্দিষ্টভাবে মৈথুন বলতে সাধারণত শিশ্ন-যোনিজ অনুপ্রবেশ ও সন্তান উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করা হয়, এর দ্বারা সাধারণভাবে অন্তর্ভেদী মুখমৈথুন ও বিশেষত শিশ্ন-পায়ুজ সঙ্গমকেও নির্দেশ করা হয়। এটি সাধারণত যৌন অনুপ্রবেশকে নির্দেশ করে, যেখানে অননুপ্রবেশকারী যৌনতাকে "বহির্সঙ্গম" নামে নামকরণ করা হয়, কিন্তু অনুপ্রবেশকারী যৌনকর্মকে যৌনসঙ্গম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যৌনতা বা ইংরেজি ভাষায় সেক্স, প্রায়শই যৌনসঙ্গমের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যবহৃত রূপ, যা দ্বারা যে কোন প্রকারের যৌনক্রিয়াকে বোঝানো হতে পারে। যেহেতু এসকল যৌনকর্মের সময়ে মানুষ যৌনবাহিত সংক্রমণের সংস্পর্শের ঝুঁকিতে থাকতে পারে, নিরাপদ যৌনচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও অনাভেদী যৌনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়ে থাকে।বিভিন্ন আইনি বিধিমালা যৌনসঙ্গমমের সামাজিক অনুমতিপ্রদানের জন্য বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতির মাধ্যমে বৈবাহিক রীতির প্রবর্তন, প্রচলন ও সমর্থন করেছে এবং বেশ কিছু যৌনকর্মের বিপরীতে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনকে স্থান দিয়েছে, যেমন বিবাহপূর্ব ব্যভিচার ও বিবাহপরবর্তী পরকীয়া, পায়ুকাম, পশুকাম, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনচর্চা ও অজাচার। ধর্মীয় বিশ্বাসও যৌনসঙ্গমসহ অন্যান্য যৌনাচার বিষয়ক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা পালন করে, যেমন কুমারীত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত, অথবা আইনি বা সরকারি নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়াবলি। বিভিন্ন ধর্মভেদে ও একই ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণীভেদে যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও কিছু বিষয়ে অভিন্নতা রয়েছে, যেমন ব্যভিচারের নিষেধাজ্ঞা।
জিয়াউর রহমান (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ৩০ মে ১৯৮১) ছিলেন বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন সেনাপ্রধান এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাঙালি জনগণের উপর আক্রমণ করার পর তিনি তার পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে বিদ্রোহ করেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরে ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা সমর্থনে একটি বিবৃতি পাঠ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করে। তবে মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকার সময় সংবিধান লঙ্ঘন, শেখ মুজিবের আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের অভিযোগে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) তার বীর উত্তম খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তার খেতাব বাতিল করা হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে সরিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর ১৯৮১ সালের ৩০শে মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে নির্মমভাবে নিহত হন।
জীবনানন্দ দাশ (১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৯ - ২২ অক্টোবর, ১৯৫৪; ৬ ফাল্গুন, ১৩০৫ - ৫ কার্তিক, ১৩৬১ বঙ্গাব্দ) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাঙালি কবি, লেখক ও প্রাবন্ধিক। তিনি বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম। তার কবিতায় পরাবাস্তবের দেখা মিলে। জীবনানন্দের প্রথম কাব্যে নজরুল ইসলামের প্রভাব থাকলেও দ্বিতীয় কাব্য থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন মৌলিক ও ভিন্ন পথের অনুসন্ধানী। মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে তিনি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন এবং ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে যখন তার জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছিল, ততদিনে তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবিতে পরিণত হয়েছেন।গ্রামবাংলার ঐতিহ্যময় নিসর্গ ও রূপকথা-পুরাণের জগৎ জীবনানন্দের কাব্যে হয়ে উঠেছে চিত্ররূপময়, তাতে তিনি ‘রূপসী বাংলার কবি’ অভিধায় খ্যাত হয়েছেন। বুদ্ধদেব বসু তাঁকে 'নির্জনতম কবি' বলে আখ্যায়িত করেছেন। অন্যদিকে, অন্নদাশঙ্কর রায় তাঁকে ‘শুদ্ধতম কবি’ অভিধায় আখ্যায়িত করেছেন। সমালোচকদের অনেকে তাঁকে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল-পরবর্তী বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবি বলে মনে করেন। জীবনানন্দের বনলতা সেন কাব্যগ্রন্থ নিখিলবঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলনে পুরস্কৃত (১৯৫৩) হয়। ১৯৫৫ সালে শ্রেষ্ঠ কবিতা গ্রন্থটি ভারত সরকারের সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করে। জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মাঝে রয়েছে রূপসী বাংলা, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, বেলা অবেলা কালবেলা, শ্রেষ্ঠ কবিতা ইত্যাদি।
ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের কারণ ও ফলাফল ইতিহাসে মোটামুটি ১৭৬০-১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দ এই সময়কালে কৃষি এবং বাণিজ্যিক ব্যবস্থা থেকে আধুনিক শিল্পায়নের দিকে গতি শুরু হওয়ায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিস্ময়কর পরিবর্তন ঘটে। পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীর সমুদ্র যাত্রা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের পথ খুলে দেয়। এরপর পুঁজিবাদের উদ্ভব, বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কার, কয়লার খনি আর ইস্পাতের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে অনেক শিল্প শহর আর কারখানা গড়ে উঠে।
মহাদেশ বলতে পৃথিবীর বড় ভূখণ্ডসমূহকে বুঝায়। পৃথিবীতে ৭ টি মহাদেশ রয়েছে। মহাদেশসমূহ হল এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ওশেনিয়া, ও অ্যান্টার্কটিকা।দ্বীপসমূহকে পার্শ্ববর্তী মহাদেশের অন্তর্গত হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপসমূহকে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন ভূ-রাজনৈতিক অঞ্চল ওশেনিয়া সৃষ্টি করা হয়েছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (বা WW1), এছাড়াও বিশ্বযুদ্ধ-১, বা মহাযুুুুদ্ধ হিসাবে পরিচিত, একটি বৈশ্বিক যুদ্ধ যা ১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই ইউরোপে শুরু হয় এবং ১১ নভেম্বর ১৯১৮ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। ৬ কোটি ইউরোপীয়সহ আরো ৭ কোটি সামরিক বাহিনীর সদস্য ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম এই যুদ্ধে একত্রিত হয়। এটি ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের একটি এবং এর ফলে পরবর্তী সময়ে এর সাথে যুক্ত দেশগুলোর রাজনীতিতে বিরাট পরিবর্তন হয়। অনেক দেশে এটি বিপ্লবেরও সূচনা করে।
ষষ্ঠ জর্জ (ইংরেজি: George VI, জন্ম: ১৪ ডিসেম্বর, ১৮৯৫ - মৃত্যু: ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২) যুক্তরাজ্যের রাজাসহ ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোর সম্রাট ছিলেন। তিনি তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা অষ্টম এডওয়ার্ডের অস্বীকৃতিজনিত কারণে রাজা হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হন। ১১ ডিসেম্বর, ১৯৩৬ সালে রাজ্যাভিষেক ঘটিয়ে মৃত্যু-পূর্ব পর্যন্ত নিজ দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যু পরবর্তীকালে রাজ্যভার অর্পিত হয় তারই সুযোগ্যা জ্যেষ্ঠা কন্যা রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাঁধে।
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী (গুজরাটি: મોહનદાસ કરમચંદ ગાંધી উচ্চারণ ; মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধী; ২রা অক্টোবর ১৮৬৯ – ৩০শে জানুয়ারি ১৯৪৮) ছিলেন অন্যতম ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিবর্গের মধ্যে একজন এবং প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক নেতা। এছাড়াও তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। যার মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণ তাদের অভিমত প্রকাশ করে। এ আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের উপর ভিত্তি করে এবং এটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি, সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।
হৃৎপিণ্ড অধিকাংশ প্রাণীতে একটি পেশীবহুল অঙ্গ, যা পৌনঃপুনিক ছন্দময় সংকোচনের মাধ্যমে সংবহনতন্ত্রের রক্তনালির মধ্য দিয়ে সারা দেহে রক্ত পাম্প করে। এনিলিডা, মলাস্কা এবং আর্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণীদের দেহেও অনুরূপ অঙ্গ বিদ্যমান। পাম্পকৃত রক্ত দেহে অক্সিজেন ও পুষ্টি পদার্থ বহন করে নিয়ে যায়, আর ফুসফুসে বিভিন্ন বিপাকজাত বর্জ্য, যেমন- কার্বন ডাই অক্সাইড বহন করে নিয়ে আসে। মানুষের দেহে, হৃৎপিণ্ডের আকার প্রায় একটি বদ্ধ মুষ্টির সমান এবং এটি বুকের মধ্য প্রকোষ্ঠতে ফুসফুস দুটির মাঝখানে অবস্থিত।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ – ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮) ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় এবং বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। তার অনেক উপন্যাস ভারতবর্ষের প্রধান ভাষাগুলোতে অনূদিত হয়েছে। বড়দিদি (১৯১৩), পরিণীতা (১৯১৪), পল্লীসমাজ (১৯১৬), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), শ্রীকান্ত (চারখণ্ডে ১৯১৭-১৯৩৩), দত্তা (১৯১৮), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী (১৯২৬), শেষ প্রশ্ন (১৯৩১) ইত্যাদি শরৎচন্দ্র রচিত বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তার দরুন তিনি 'অপরাজেয় কথাশিল্পী' নামে খ্যাত। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক পান৷ এছাড়াও, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে 'ডিলিট' উপাধি পান ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে।
সুন্দরবন হলো বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলির অন্যতম। পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত। সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি। ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার (৬২%) রয়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ (৩৮%) রয়েছে ভারতের মধ্যে।
ইসলাম (আরবি: আল-ইসলাম - [الإسلام] (শুনুন)) একটি একেশ্বরবাদী এবং ইব্রাহিমীয় ধর্মবিশ্বাস যার মূল শিক্ষা হল, এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন স্রষ্টা নেই এবং মুহাম্মাদ হলেন আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবি ও রাসূল।এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম, যার অনুসারী সংখ্যা প্রায় ২ বিলিয়ন এবং এটি মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৪.৪%, যারা মুসলমান নামে পরিচিত। মুসলমানরা ৫০ এর অধিক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টি। ইসলাম শিক্ষা দেয় যে আল্লাহ দয়ালু, করুনাময়, এক ও অদ্বিতীয় এবং একমাত্র ইবাদতযোগ্য অভিভাবক।মানবজাতিকে পথ প্রদর্শনের জন্য তিনি যুগে-যুগে অনেক নবি-রাসূল, আসমানী কিতাব এবং নিদর্শন পাঠিয়েছেন। ইসলামে প্রধান ধর্মগ্রন্থ হলো পবিত্র কুরআন, যা স্বয়ং আল্লাহর বাণী; আর সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবি মুহাম্মদ (ﷺ) (২৯ আগস্ট ৫৭০- ৮ জুন ৬৩২) এর কথা, কাজ ও মৌনসম্মতিকে সুন্নাহ বলা হয় যা হাদিস নামে লিপিবদ্ধ রয়েছে। তবে সমস্ত সুন্নাহই হাদিস, কিন্তু সমস্ত হাদিস সুন্নাহ নয়।
কুরআন মজিদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ বা কোরআন (আরবি: القرآن আল্-কুর্'আন্[টী১]) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন। এটিকে আরবি শাস্ত্রীয় সাহিত্যের সর্বোৎকৃষ্ট রচনা বলে মনে করা হয়। কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবিতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা হয়েছে।
আস-সালামু আলাইকুম (আরবি: ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ) আরবি ভাষায় একটি অভিবাদনসূচক বাক্যাংশ, যার অর্থ "আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক"। সাধারণত মুসলিমরা ধর্মীয় অভিবাদনসূচক বাক্য হিসেবে এই বাক্যটি ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া অন্যান্য ধর্মের আরবি ভাষাভাষীরাও (যেমন: আরব খ্রিষ্টান) এটি ব্যবহার করে থাকে। কথোপকথনে, প্রায়ই এই বাক্যাংশের প্রথম অংশ (অর্থাৎ সালাম অনু. 'শান্তি') একজন ব্যক্তিকে অভিবাদন জানাতে ব্যবহৃত হয়। শুভেচ্ছার সাধারণ প্রতিক্রিয়া হলো "ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম" (وَعَلَيْكُمُ ٱلسَّلَامُ অনু. 'আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক')। সম্পূর্ণ বাক্যাংশটি হলো "আস-সালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু" (ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ)।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধিত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য সংবিধানের ১৪২নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
রাশিয়া (রুশ: Россия রশিয়া), সরকারিভাবে রুশ ফেডারেশন নামে পরিচিত (রুশ: Российская Федерация রশিস্কায়া ফিদিরাৎসিয়া) যেটা পূর্ব ইউরোপে এবং উত্তর এশিয়ায় অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। এই দেশটি অর্ধ প্রেসিডেনসিয়াল ফেডারেল প্রজাতন্ত্র যার সংবিধান ৮৩ টি ফেডারেল বিষয় দ্বারা গঠিত। রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব পর্যন্ত নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড (উভয় দেশই কালিনিনগ্রাদ অব্লাস্ত সীমান্ত দিয়ে যুক্ত), বেলারুশ, ইউক্রেন, জর্জিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সাথে সীমান্ত আছে। দেশটির অখতস্ক সাগরের মাধ্যমে জাপানের সাথে ও বেরিং প্রণালীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার সাথে সামুদ্রিক সীমানা রয়েছে। রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ যার রয়েছে পৃথিবীর মোট আবাসযোগ্য জমির এক অষ্টমাংশ। দেশটির মোট আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল)। রাশিয়া বিশ্বের নবম জনবহুল দেশ যেখানে ২০১২ হিসাব অনুযায়ী ১৪৩ মিলিয়ন লোক বসবাস করে। পূর্ব ইউরোপে জায়গা সম্প্রসারণের ফলে রাশিয়া ১১টি সময় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এবং এখানে অনেক রকম ও বিস্তৃত পরিবেশের সমন্বয় ঘটেছে।
ইউটিউব (ইংরেজি: Youtube) হলো সান ব্রুনো, ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক একটি মার্কিন অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম সেবার সাইট, যা ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। ইউটিউব বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম। ২০০৬ সালের অক্টোবরে, গুগল সাইটটিকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করে নেয়। ইউটিউব বর্তমানে গুগলের অন্যতম অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ (উচ্চারণ: [ʃad̪ʱinot̪a d͡ʒud̪d̪ʱo]; শাধিনতা জুদ্ধো) বা মুক্তিযুদ্ধ (উচ্চারণ: [mukt̪iɟud̪d̪ʱo]; মুক্তিজুদ্ধো) হলো ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি বিপ্লব ও সশস্ত্র সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবং বাঙালি গণহত্যার প্রেক্ষিতে এই জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পশ্চিম পাকিস্তান-কেন্দ্রিক সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে এবং নিয়মতান্ত্রিক গণহত্যা শুরু করে। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সাধারণ বাঙালি নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং পুলিশ ও ইপিআর কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বীকার করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনের পর অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে গণবিদ্রোহ দমনে পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী শহর ও গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান ও বিমানযুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী অধিকাংশ ইসলামি দলগুলোর সমর্থন লাভ করে। সেনাবাহিনীর অভিযানে সহায়তার জন্য তারা ইসলামি মৌলবাদীদের নিয়ে আধা-সামরিক বাহিনী— রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনী গঠন করে। পূর্ব পাকিস্তানের উর্দু-ভাষী বিহারিরাও সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে। পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের সহায়তাকারী আধা-সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা, উচ্ছেদ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যাসহ একাধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়। প্রায় এক কোটি বাঙালি শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং আরও তিন কোটি মানুষ দেশের অভ্যন্তরে উদ্বাস্তু হয়। বাঙালি ও উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতাকে বুদ্ধিজীবীরা গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। বাঙালি সামরিক, আধা-সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনী চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেনারেল এম. এ. জি.
হিন্দুধর্ম একটি ভারতীয় উপমহাদেশীয় ধর্ম বা জীবনধারা। এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধর্ম, যার অনুসারী সংখ্যা ১.২ বিলিয়নেরও বেশি, বা বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার ১৫-১৬%, যারা হিন্দু নামে পরিচিত। হিন্দু শব্দটি একটি উচ্ছসিত, এবং যখন হিন্দুধর্মকে বিশ্বের প্রাচীনতম ধর্ম বলা হয়, অনেক অনুশীলনকারী তাদের ধর্মকে সনাতন ধর্ম হিসাবে উল্লেখ করেন, যা এই ধারণাকে বোঝায় যে এর উৎস মানব ইতিহাসের বাইরে, যেমনটি হিন্দু ধর্মগ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে। এ ধর্মের মূলে বেদ হওয়ায় এটি ‘বৈদিক ধর্ম’ নামেও পরিচিত।হিন্দুধর্ম হল বিভিন্ন দর্শন এবং ভাগ করা ধারণা, আচার, বিশ্বতাত্ত্বিক ব্যবস্থা, তীর্থস্থান এবং ভাগ করা পাঠ্য উৎস দ্বারা চিহ্নিত একটি বৈচিত্র্যময় চিন্তাধারা যা ধর্মতত্ত্ব, অধিবিদ্যা, পুরাণ, বৈদিক যজ্ঞ, যোগব্যায়াম, আগমিক আচার এবং মন্দির নির্মাণ নিয়ে আলোচনা করে। ধর্মীয় আচারগুলো মূলত ধর্ম(নৈতিকতা), অর্থ(সমৃদ্ধি), কাম(আকাঙ্খা) ও মোক্ষ(ঈশ্বর প্রাপ্তি) এই চারটি অর্জনের লক্ষ্যে পালন করা হয়, যাকে একসাথে বলা হয় পুরুষার্থ; সেইসাথে আছে কর্ম এবং সংসার (মৃত্যু ও পুনর্জন্মের চক্র)। যজ্ঞ, ধ্যান, পূজা, কীর্তন, ইষ্টনাম জপা, তীর্থযাত্রা প্রভৃতি আচার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দয়া, সংযম, ধৈর্য, প্রাণীর প্রতি অহিংসা ইত্যাদি চিরন্তন নৈতিক জীবনাচরণের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাহ্যিক আচরণ পালন অপেক্ষা মোক্ষ প্রাপ্তির উপায়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়ে, যা অর্জনের জন্য কেউ কেউ জাগতিক বস্তুগত সম্পদ ত্যাগ করে সন্ন্যাস জীবন গ্রহণ করে থাকে।হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলো শ্রুতি ("শোনা") এবং স্মৃতি ("স্মরণীয়") প্রধানত দুটি ভাগে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। বেদ, উপনিষদ্, পুরাণ, মহাভারত, রামায়ণ, শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা প্রভৃতি এর মাঝে অন্তর্ভুক্ত, যার মধ্যে বেদ হচ্ছে সর্বপ্রধান, সর্বপ্রাচীন ও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ। আবার ছয়টি আস্তিক দর্শন রয়েছে যা বেদের স্বীকৃতি দেয়। যথা: সাংখ্য, যোগ, ন্যায়, বৈশেষিক, মীমাংসা এবং ব্রহ্মসূত্র। যদিও পুরাণকাল বিদ্যাশাস্ত্র হাজার বছরের একটি বংশানুক্রমিক উপস্থাপন করে, বৈদিক ঋষিদের থেকে শুরু করে, পণ্ডিতরা হিন্দুধর্মকে বিভিন্ন ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে ব্রহ্মতান্ত্রিক অর্থোফ্রাক্সির সংমিশ্রণ বা সংশ্লেষণ হিসাবে বিবেচনা করেন, যার বিভিন্ন শিকড় রয়েছে এবং কোনও নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠাতা নেই। এই হিন্দু সংশ্লেষণ বৈদিক যুগের পরে উদ্ভূত হয়, আনু. ৫০০-২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ এবং আনু.
ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি ঢাকা জেলার প্রধান শহর। ভৌগোলিকভাবে এটি বাংলাদেশের মধ্যভাগে বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে একটি সমতল এলাকাতে অবস্থিত। ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ায় মুম্বাইয়ের পরে দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। ঢাকার জিডিপি ১৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২০ সালের হিসেবে। এছাড়া ঢাকার পিপিপি ২৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২০ সালের হিসেবে। ভৌগোলিকভাবে ঢাকা একটি অতিমহানগরী বা মেগাসিটি; ঢাকা মহানগরী এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ১০ লক্ষ, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১১ ভাগ। জনসংখ্যার বিচারে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম শহর। জনঘনত্বের বিচারে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর; ৩০৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই শহরে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ২৩ হাজার লোক বাস করে।ঢাকা শহর "মসজিদের শহর" নামে সুপরিচিত। এখানে এক হাজারেরও বেশি মসজিদ আছে। এই শহরে রোজ প্রায় ৫ লক্ষ রিকশা চলাচল করে। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান সংস্কৃতি, শিক্ষা ও বাণিজ্যকেন্দ্র।ঢাকা শহরের জলবায়ু ক্রান্তীয় আর্দ্র ও শুষ্ক প্রকৃতির। গড় তাপমাত্রা এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ প্রায় ৩৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন প্রায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ঢাকা শহরে বর্ষাকাল, সেসময় প্রতি মাসে গড়ে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়।সপ্তদশ শতাব্দীতে পুরান ঢাকা মুঘল সাম্রাজ্যের সুবহে বাংলা (বাংলা প্রদেশ) এর প্রাদেশিক রাজধানী ছিল। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে এই শহর জাহাঙ্গীর নগর নামে পরিচিত ছিলো। বিশ্বব্যাপী মসলিন বাণিজ্যের একটি কেন্দ্র ছিলো ঢাকা এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীগণ এখানে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আসতেন। ঢাকাতে বিশ্বের সেরা মসলিন কাপড় উৎপাদিত হতো। যদিও আধুনিক ঢাকা শহরের বিকাশ ঘটে ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ শাসন আমলে, এই সময় নবাবগণ ঢাকা শাসন করতেন। এই সময় কলকাতার পরেই ঢাকা বাংলা প্রেসিডেন্সির দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী হয়ে ওঠে। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পরে ঢাকা নবগঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পরে ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসনিক রাজধানীতে পরিণত হয়। ১৯৫০-১৯৬০ সালের মধ্যে এই শহর বিভিন্ন সামাজিক, জাতীয়তাবাদী ও গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে ঢাকা “স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের রাজধানী” ঘোষিত হয়। ইতঃপূর্বে সামরিক আইন বলবৎ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা, সামরিক দমন, যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তাণ্ডবলীলার মতো একাধিক অস্থির ঘটনার সাক্ষী হয় এই শহর।
আয়াতুল কুরসি (আরবি: آية الكرسي আয়াত আল-কুরসি, অর্থ: "সিংহাসনের স্তবক") হচ্ছে কুরআনের দ্বিতীয় সূরা আল-বাকারার ২৫৫তম আয়াত (২:২৫৫)। এই আয়াতে সমগ্র মহাবিশ্বের উপর আল্লাহর পূর্ণ ক্ষমতা ঘোষণা করা হয়েছে এবং কীভাবে কোনো কিছু বা কাউকেই আল্লাহর সাথে তুলনীয় বলে গণ্য করা হয় না তা উদ্ধৃত করা হয়েছে।আয়াতটি ইসলামি বিশ্বে ব্যাপকভাবে পঠিত ও মুখস্থ করা হয়। ইসলামি পণ্ডিতগণ একে ‘কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত’ বলে দাবি করে থাকেন মুসলমানগণ বিশ্বাস করেন যে, এটি পাঠ করলে অসংখ্য উপকার ও পুণ্য লাভ হয়। এছাড়াও দুষ্ট আত্মা বা জ্বিনকে দূর করতেও এই আয়াতটি ব্যবহৃত হয়।
পর্নোগ্রাফি (সংক্ষেপে "পর্ন" বা "পর্নো" অনানুষ্ঠানিক ব্যবহারে) যৌন উদ্দীপনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে যৌনসংক্রান্ত বিষয়বস্তুর প্রতিকৃতি অঙ্কন বা পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা। পর্নোগ্রাফি বিভিন্ন মাধ্যমের সাহার্যে উপস্থাপন করা হতে পারে, এর মধ্যে অর্ন্তভূক্ত রয়েছে, বই, সাময়িকী, পোষ্টকার্ড, আলোকচিত্র, ভাস্কর্য, অঙ্কন, পেইন্টিং, অ্যানিমেশন, সাউন্ড রেকর্ডিং, চলচ্চিত্র, ভিডিও এবং ভিডিও গেম।
আশা ভোঁসলে (মারাঠি: आशा भोंसले, আশা ভোঁস্লে; জন্ম: ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩) একজন ভারতীয় গায়িকা। মূলত তিনি হিন্দি সিনেমার নেপথ্য সঙ্গীত গাওয়ার জন্য বিখ্যাত। আশা ভোঁসলে ভারতের জনপ্রিয়তম গায়িকাদের মধ্যে একজন। ১৯৪৩ সাল থেকে আরম্ভ করে তিনি ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে গান গেয়ে চলেছেন। তিনি তার সঙ্গীত জীবনে মোট ৯২৫টিরও বেশি সিনেমায় গান গেয়েছেন। মনে করা হয় তিনি ১২০০০ এরও বেশি গান গেয়েছেন। ২০১১ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাঁকে সর্বাধিক সংখ্যক গান রেকর্ডকারী হিসেবে ঘোষণা করে।
সালোকসংশ্লেষণ শব্দটি দুটি গ্রিক শব্দ photos (অর্থ: আলোক; এখানে সূর্যালোক) ও synthesis (অর্থ: সংশ্লেষণ, বা তৈরি করা) এর সমন্বয়ে গঠিত। আবার সালোকসংশ্লেষণ কথাটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়,সালোক শব্দটির অর্থ হলো--সূর্যালোকের উপস্থিতি এবং সংশ্লেষণ শব্দটির অর্থ—কোনো কিছু উৎপাদিত হওয়া। এক কথায় সালোকসংশ্লেষণ এর অর্থ দাঁড়ায় সূর্যালোকের উপস্থিতিতে রাসায়নিক সংশ্লেষ। যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবুজ উদ্ভিদ কোষে সূর্যালোকের উপস্থিতিতে, পরিবেশের বায়ুমণ্ডল থেকে গৃহীত কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2) ও মূল দ্বারা শোষিত জলের বিক্রিয়ায় শর্করা জাতীয় খাদ্যের সংশ্লেষ ঘটে এবং গৃহীত কার্বন ডাইঅক্সাইডের সমপরিমাণ অক্সিজেন প্রকৃতিতে নির্গত হয়, তাকে সালোকসংশ্লেষণ বলে। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার উপজাত হল অক্সিজেন। এই প্রক্রিয়ায় সজীব উদ্ভিদকোষে উপস্থিত ক্লোরোফিল নামক রঞ্জক আলোকশক্তিকে রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে এবং তা উৎপন্ন শর্করাজাতীয় খাদ্যের মধ্যে স্থিতিশক্তি রূপে সঞ্চিত রাখে। এই শক্তি পরবর্তীকালে স্বভোজী উদ্ভিদ দ্বারা অথবা শাকাহারী প্রাণীদের গৌণ পুষ্টিতে সাহায্য করে। সবুজ উদ্ভিদ ছাড়া কিছু জীবাণু এবং কিছু আদ্যপ্রাণীর মধ্যেও এই প্রক্রিয়া পরিদৃষ্ট হয়। এরকম কিছু জীবাণু, আদ্যপ্রাণী ও ক্লোরোফিল যুক্ত সজীব কোষে (উদ্ভিদ) শারীরবৃত্তিয় জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়ায় সূর্যালোকের উপস্থিতিতে, পরিবেশ থেকে গৃহীত কার্বন ডাই অক্সাইড ও মূলরোম দ্বারা শোষিত জলের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সরল শর্করা জাতীয় খাদ্য উৎপন্ন হয় ও কার্বন ডাই অক্সাইডের সমপরিমান অক্সিজেন উৎপন্ন হয়ে সৌরশক্তির আবদ্ধ ঘটার মাধ্যমে সালোকসংশ্লেষণ সম্পূর্ণ হয়। উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ দিনের বেলা ঘটে।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর (বাংলাদেশ)
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আসে। এই জাদুঘরটি বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞান যাদুঘর এবং জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা বা মির্জা মুহম্মদ সিরাজ-উদ-দৌলা (১৭৩২–১৭৫৭) ছিলেন বাংলা-বিহার-ওড়িশার শেষ স্বাধীন নবাব। বাংলা ইতিহাসের এক প্রতিমূর্তি। পলাশীর যুদ্ধে তার পরাজয় ও মৃত্যুর পরই ভারতবর্ষে ১৯০ বছরের ইংরেজ শাসনের সূচনা হয়।সিরাজউদ্দৌলা তার নানা নবাব আলীবর্দী খানের কাছ থেকে ২৩ বছর বয়সে ১৭৫৬ সালে বাংলার নবাবের ক্ষমতা অর্জন করেন। তার সেনাপতি মীরজাফর, রায়দুর্লভ, বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ২৩ জুন ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন। রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসনভার গ্রহণ করে।