The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, ২০২৩
২০২৩ সালের বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বাংলাদেশের বরিশালে একটি নির্বাচন, যা ১২ জুন ২০২৩ তারিখে বরিশালের পরবর্তী মেয়র ও কাউন্সিলরদের নির্বাচন করার জন্য অনুষ্ঠিত হবে। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১২৬টি ভোটকেন্দ্রের ৮৯৪টি কক্ষে মোট ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন ভোট দেবেন।
বাংলাদেশ (শুনুন) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। জনসংখ্যার বিবেচনায় ১৬ কোটির অধিক মানুষ নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম দেশ। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ (উচ্চারণ: [ʃad̪ʱinot̪a d͡ʒud̪d̪ʱo]; শাধিনতা জুদ্ধো) বা মুক্তিযুদ্ধ (উচ্চারণ: [mukt̪iɟud̪d̪ʱo]; মুক্তিজুদ্ধো) হলো ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি বিপ্লব ও সশস্ত্র সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবং বাঙালি গণহত্যার প্রেক্ষিতে এই জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পশ্চিম পাকিস্তান-কেন্দ্রিক সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে এবং নিয়মতান্ত্রিক গণহত্যা শুরু করে। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সাধারণ বাঙালি নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং পুলিশ ও ইপিআর কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বীকার করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনের পর অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে গণবিদ্রোহ দমনে পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী শহর ও গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান ও বিমানযুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী অধিকাংশ ইসলামি দলগুলোর সমর্থন লাভ করে। সেনাবাহিনীর অভিযানে সহায়তার জন্য তারা বিভিন্ন দলের লোকজন বিশেষ পাকিস্তান সমর্থনকারী ইসলামী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী নিয়ে আধা-সামরিক বাহিনী— রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনী গঠন করে। পূর্ব পাকিস্তানের উর্দু-ভাষী বিহারিরাও সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে। পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের সহায়তাকারী আধা-সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা, উচ্ছেদ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যাসহ একাধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়। প্রায় এক কোটি বাঙালি শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং আরও তিন কোটি মানুষ দেশের অভ্যন্তরে উদ্বাস্তু হয়। বাঙালি ও উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতাকে বুদ্ধিজীবীরা গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। বাঙালি সামরিক, আধা-সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনী চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেনারেল এম. এ. জি.
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ – ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি এশীয়দের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০ – ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা বঙ্গবন্ধু, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও তাকে প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
সৈয়দ ফয়জুল করিম (জন্ম: ১০ জানুয়ারি ১৯৭৩) একজন বাংলাদেশি ইসলামি পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ। সমর্থকদের নিকট তিনি শায়েখে চরমোনাই নামে পরিচিত। বর্তমানে তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি ও বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের সহ-সভাপতি এবং বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য। ছাত্রজীবনে তিনি ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০২০ সালে বাংলাদেশের ভাস্কর্য বিতর্কে তিনি ব্যাপকভাবে আলোচিত হন।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (জন্ম: ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১) (যিনি পীর সাহেব চরমোনাই নামে অধিক পরিচিত) একজন ইসলামি পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও ধর্মীয় আলোচক। বর্তমানে তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ২য় আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি ও বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি এবং বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি। তিনি দুই মেয়াদে চর মোনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন।
বিড়াল (Felis catus বা ফেলিস ক্যাটাস) একটি গার্হস্থ্য প্রজাতি বা ছোট মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণী। এটি ফেলিডা পরিবারের একমাত্র গৃহপালিত প্রজাতি এবং প্রায়শই এটি পরিবারের বন্য সদস্যদের থেকে পৃথক করার জন্য গার্হস্থ্য বিড়াল হিসেবে পরিচিত। একটি বিড়াল, হয় ঘরের বিড়াল, খামারের বিড়াল বা ফেরাল বিড়াল হতে পারে; বনবিড়াল অবাধে মানুষের যোগাযোগ পরিসীমা এড়িয়ে চলে। গার্হস্থ্য বিড়ালদের সাহচর্য এবং তীক্ষ্ণদন্তী প্রাণী শিকারের দক্ষতার জন্য মানুষ এদেরকে মূল্যবান বলে মনে করে। বিভিন্ন বিড়াল নিবন্ধনকারীর মাধ্যমে এযাবৎ বিড়ালের স্বীকৃত ষাটের অধিক স্বীকৃত বিড়ালের প্রজাতির সন্ধান পাওয়া যায়।বিড়াল শারীরবিদ্যায় অন্যান্য ফেলিড প্রজাতির মতোই: এদের শক্তিশালী নমনীয় শরীর, দ্রুত প্রতিফলন, তীক্ষ্ণ দাঁত এবং প্রত্যাহারযোগ্য নখর রয়েছে যা ছোট শিকারকে হত্যা করার জন্য অভিযোজিত। রাত্রীকালে এদের দৃষ্টি এবং ঘ্রাণশক্তি বোধ ভালভাবে বিকশিত হয়। বিড়ালের যোগাযোগের মধ্যে বিভিন্ন কণ্ঠস্বর যেমন মেয়াও,
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, ওড়িশা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৮.০৩ শতাংশ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে এবং হিন্দির পরেই ভারতে সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা - বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৭.৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
একজন মুক্তিযোদ্ধা (ইংরেজি: Freedom fighter) হল এমন একজন ব্যক্তি যিনি তার দেশের শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণ, শোষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন ও বর্বর অত্যাচার থেকে মুক্তির লক্ষ্যে যে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে থাকেন। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা বলতে এমন একদল জনগোষ্ঠীকে বোঝানো হয় যারা নিজেদের বা অন্যকারো রাজনৈতিক মুক্তি বা স্বাধীনতা লাভের উদ্দেশ্যে প্রতিরোধ আন্দোলনে সংগ্রামরত রয়েছে।
জয়নুল আবেদিন (২৯ ডিসেম্বর ১৯১৪ - ২৮ মে ১৯৭৬) বিংশ শতাব্দীর একজন বিখ্যাত বাঙালি চিত্রশিল্পী। পূর্ববঙ্গে তথা বাংলাদেশে চিত্রশিল্প বিষয়ক শিক্ষার প্রসারে আমৃত্যু প্রচেষ্টার জন্য তিনি শিল্পাচার্য উপাধি লাভ করেন। তার বিখ্যাত চিত্রকর্মের মধ্যে রয়েছে দুর্ভিক্ষ-চিত্রমালা, মই দেয়া, সংগ্রাম, সাঁওতাল রমণী, ঝড়, কাক, বিদ্রোহী ইত্যাদি। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে গ্রামবাংলার উৎসব নিয়ে আঁকেন তার বিখ্যাত ৬৫ ফুট দীর্ঘ ছবি নবান্ন।
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে; অন্যদিকে এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তানের ছিল দুইটি অংশ: পূর্ব বাংলা (১৯৫৫ সালে পুনর্নামাঙ্কিত পূর্ব পাকিস্তান) ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের (প্রায় ১২৪৩ মাইল) অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার পূর্ব পাকিস্তান তথা পূর্ব বাংলাকে ইসলামীকরণ তথা আরবিকরণের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে আরবি হরফে বাংলা লিখন অথবা সমগ্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা আরবি করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়। আবার, সমগ্র পাকিস্তানের সকল ভাষা লাতিন হরফে লেখার মাধ্যমে বাংলার রোমানীকরণের প্রস্তাবও করা হয়। এসকল ঘটনার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কার্যত পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি (৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন বাদামতলী কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের ছেলে রফিক, সালাম, এম. এ.
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী (গুজরাটি: મોહનદાસ કરમચંદ ગાંધી উচ্চারণ ; মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধী; ২রা অক্টোবর ১৮৬৯ – ৩০শে জানুয়ারি ১৯৪৮) ছিলেন অন্যতম ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিবর্গের মধ্যে একজন এবং প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক নেতা। এছাড়াও তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। যার মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণ তাদের অভিমত প্রকাশ করে। এ আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের উপর ভিত্তি করে এবং এটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি, সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।
এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)
এক্স এক্স এক্স এক্স (ইংরেজি:XXXX) কানাডিয়ান নৃত্য-পাঙ্ক ব্যান্ড ইউ সে পার্টি দলের তৃতীয় পূর্ণ দৈর্ঘ্যের অ্যালবাম (পূর্বনাম ইউ সে পার্টি!
হাঁস অ্যানাটিডি (Anatidae) পরিবারের অন্তর্ভুক্ত পাখিদের বেশ কিছু প্রজাতির সাধারণ নাম। অ্যানাটিডি পরিবারের অন্য দুই সদস্য মরাল আর রাজহাঁস থেকে এরা আকারে ভিন্ন। হাঁসেরা এ শ্রেণীর বেশ কয়েকটি উপশ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। শারীরিক দিক থেকে হাঁস চ্যাপ্টা ঠোঁট ও খাটো গলাবিশিষ্ট মাঝারি থেকে ছোট আকারের পাখি। স্ত্রী ও পুরুষ হাঁসের মধ্যে বৈসাদৃশ্য দেখা যায়। এদের ডাকও বেশিরভাগক্ষেত্রে ভিন্ন। পুরুষ হাঁস বছরে দুইবার পালক বদলায়। স্ত্রী হাঁস একসাথে অনেকগুলো ডিম পাড়ে এবং ডিমের খোলস রাজহাঁস বা মরালের মত খসখসে নয়, মসৃণ। বেশিরভাগ হাঁসই জলচর; স্বাদুপানি আর লোনাপানি দুই ধরনের পরিবেশেই এরা বিচরণ করতে পারে। প্রায় একই রকম দেখতে আর আচরণগত সাদৃশ্য থাকলেও পাতি কুট, মার্গেঞ্জার, ডুবুরি প্রভৃতি পাখি হাঁস নয়।
সাতই মার্চের ভাষণ ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মার্চ ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত এক ঐতিহাসিক ভাষণ। তিনি উক্ত ভাষণ বিকেল ২টা ৪৫ মিনিটে শুরু করে বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে শেষ করেন। উক্ত ভাষণ ১৮ মিনিট স্থায়ী হয়।এই ভাষণে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। এই ভাষণের একটি লিখিত ভাষ্য অচিরেই বিতরণ করা হয়েছিল। এটি তাজউদ্দীন আহমদ কর্তৃক কিছু পরিমার্জিত হয়েছিল। পরিমার্জনার মূল উদ্দেশ্য ছিল সামরিক আইন প্রত্যাহার এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবীটির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা। ১৩টি ভাষায় ভাষণটি অনুবাদ করা হয়। ১৩ তম হিসাবে মাহাতো নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর কুড়মালি ভাষায় ভাষণটি অনুবাদ করা হয়, যা নৃ তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ভাষায় ১ম অনুবাদ। নিউজউইক ম্যাগাজিন শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি হিসেবে উল্লেখ করে। ২০১৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর ইউনেস্কো এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
সৈয়দ ফজলুল করিম (১৯৩৫ – ২০০৬) ছিলেন একজন বাংলাদেশি ইসলামি পণ্ডিত, পীর ও রাজনীতিবিদ। তিনি পীর সাহেব চরমোনাই নামে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। ইসলামের আধ্যাত্মিক শিক্ষার চর্চার পাশাপাশি স্বীয় উস্তাদ মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জীর সাথে তিনি রাজনীতিতে আগমন করেন এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সহ সভাপতি হন। হাফেজ্জীর মৃত্যুর পর তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির ইংরেজি নাম India ও সরকারি নাম ভারত প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে, জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার অবস্থিত। এছাড়া, ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া হল ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুস্ত্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম ধর্ম এ দেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়ে ওঠে। অতঃপর, এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য যেসব নিয়ম কানুন অনুসরণ করা হয় সেগুলোকেই স্বাস্থ্যবিধি হিসেবে অভিহিত করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে, 'স্বাস্থ্যবিধি বলা হয় সেসব নিয়মাবলি ও অনুশীলনকে যেগুলো সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।' ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বলতে দৈহিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে বোঝানো হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সংক্ষেপে আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্র হতে কেন্দ্র-বামপন্থী রাজনৈতিক দল এবং ২০০৯ সাল থেকে দেশের ক্ষমতাসীন দল। দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী প্রধানতম দল।আওয়ামী লীগের গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (পূর্বনাম ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন) বাংলাদেশের একটি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল। দলটির বর্তমান আমির সৈয়দ রেজাউল করিম, নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করিম এবং মহাসচিব ইউনুস আহমাদ। ১৯৮৭ সালের ১৩ মার্চ বিভিন্ন ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনের যৌথ প্রয়াসের ফলে ইসলামি শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঐক্যপ্রয়াসী একটি ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলন হিসেবে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন নামে এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরবর্তীতে আন্দোলনে অনৈক্য ও ভাঙ্গনের ফলে এটি চরমোনাই পীর সৈয়দ ফজলুল করিমের নেতৃত্বে একটি একক রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। মূলত ১৯৯১ সাল থেকে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক দল হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ২০০৮ সালে নিবন্ধন জটিলতায় এটি নাম পরিবর্তন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নামে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয় এবং হাতপাখা প্রতীক লাভ করে। বাংলাদেশের সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এটি এককভাবে অংশগ্রহণ করে তৃতীয় স্থান লাভ করে।
গান বাংলা (GB) , হচ্ছে বাংলাদেশ ভিত্তিক একটি ২৪/৭ এইচডি গানের চ্যানেল, চ্যানেলটি প্রথম যাত্রা শুরু করে ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩-এ। গান বাংলা টিভি বাংলা গান সম্প্রচার এবং বাঙালি সংস্কৃতি তুলে ধরে এবং বিভিন্ন দেশ ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডা, ইউরোপের কিছু অংশ এবং মধ্য প্রাচ্যে ও এটি সম্প্রচারিত হয়। এটি "ওয়ান মোর জিরো গ্রুপ" এর মালিকানাধীন।
বাল্যবিবাহ হল অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির আনুষ্ঠানিক অথবা অনানুষ্ঠানিক বিবাহ। আইনত বিয়ের বয়স ১৮ বৎসর, বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে। কিন্তু বিশেষ ক্ষেত্রে অভিবাবকের অনুমতি সাপেক্ষে এই বয়সের আগেও বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়। যদিও আইন অনুযায়ী বিয়ের বয়স ১৮ বৎসর, তারপরও কিছু কিছু দেশের নিজস্ব প্রথাকেই আইনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। বাল্যবিবাহে মেয়ে এবং ছেলে উভয়ের উপরই প্রভাব পড়ে। তবে মেয়েরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিশেষত নিম্ন আর্থসামাজিক পরিস্থিতির কারণে। বেশিরভাগ বাল্যবিবাহে দুজনের মধ্যে শুধু একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকে। বিশেষত মেয়েরাই বাল্যবিবাহের শিকার বেশি হয়। বাল্যবিবাহের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রধানত - দরিদ্রতা, যৌতুক, সামাজিক প্রথা, বাল্যবিবাহ সমর্থনকারী আইন, ধর্মীয় ও সামাজিক চাপ, অঞ্চলভিত্তিক রীতি, অবিবাহিত থাকার শঙ্কা, নিরক্ষরতা এবং মেয়েদের উপার্জনে অক্ষম ভাবা।বিভিন্ন কারণেই বাল্যবিবাহের প্রচলন অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- দারিদ্রতা, নিরাপত্তাহীনতা, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণসমূহ। এখনও উন্নয়নশীল দেশসমূহ, যেমন, আফ্রিকার কিছু অংশ,দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া, লাতিন আমেরিকা এবং ওশেনিয়া প্রভৃতি দেশে বাল্যবিবাহ বহুল প্রচলিত। যাইহোক, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশগুলিতে আইনী ব্যতিক্রমগুলিতে ১৭ টি রাজ্যে ন্যূনতম বয়সের প্রয়োজন নেই।নাইজার, চাদ, মালি, ভারত, বাংলাদেশ, গিনিও মধ্য আফ্রিকার কিছু দেশে বাল্যবিবাহের হার সবচাইতে বেশি, যা প্রায় ৬০% এর উপর। ২০০৩-২০০৯ জরিপ অনুযায়ী, নাইজার, চাদ, বাংলাদেশ, মালি এবং ইথিওপিয়াতে ১৫ বছরের নিচে শিশুদের বাল্যবিবাহের হার ২০% এর উপর।
লালবাগের কেল্লা (আওরঙ্গবাদ কেল্লা) ঢাকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত একটি অসমাপ্ত মুঘল দুর্গ। এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ১৬৭৮ সালে, মুঘল সুবেদার মুহাম্মদ আজম শাহ্ কর্তৃক, যিনি ছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র এবং পরবর্তীতে নিজেও সম্রাট পদপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু পরে তিনি দিল্লিতে চলে যান এতে কাজ থেমে যায। তার উত্তরসুরি, মুঘল সুবাদার শায়েস্তা খাঁ ১৬৮০ সালে নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু করেন, কিন্তু শেষ করেননি। কারণ মুঘল সুবাদার শায়েস্তা খাঁ এর কন্যা পরী বিবি মারা যান। তাতে তিনি নির্মাণ কাজ থামিয়ে দেন।
সিরাজুল আলম খান (৬ জানুয়ারি ১৯৪১ – ৯ জুন ২০২৩) ছিলেন বাংলাদেশের সাবেক ছাত্রনেতা ও রাজনীতিবিদ। তিনি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ১৯৬২-তে গোপন সংগঠন ‘নিউক্লিয়াস’ গঠন করেন। নিউক্লিয়াস ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’ নামেও পরিচিত। এছাড়াও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ গঠন এবং ‘৭ নভেম্বর ১৯৭৫’ এর নেপথ্য পরিকল্পনাকারী ছিলেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতিতে সিরাজুল আলম ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঢাকা শহরে অবস্থিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি আইডিয়াল হাই স্কুল (স্কুলটির পূর্ব নাম) বা মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল নামেও পরিচিত। ১৯৬৫ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি মতিঝিলে তার যাত্রা শুরু করে। মূলত তখন এটি তৎকালীন সিজিএস কলোনি (যা বর্তমানে এজিবি কলোনি নামে পরিচিত) এর নিবাসীদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য তৈরি হয়। বর্তমানে এর তিনটি মাধ্যমিক শাখা ও একটি উচ্চমাধ্যমিক শাখা (বালিকা) রয়েছে।
পদ্মা সেতু বা পদ্মা বহুমুখী সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হয়েছে। সেতুটি ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়। এই দিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল প্রদান করে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুতে আরোহণ করেন এবং এর মাধ্যমে সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়।পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। দুই স্তর বিশিষ্ট ইস্পাত ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এই সেতুর উপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় তৈরি সেতুটি ৪১টি স্প্যান নিয়ে গঠিত, প্রতিটি স্প্যান লম্বায় ১৫০.১২ মিটার (৪৯২.৫ ফুট) এবং চওড়ায় ২২.৫ মিটার (৭৪ ফুট)। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি (৩.৮২ মাইল)। এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু, স্প্যান সংখ্যা ও মোট দৈর্ঘ্য উভয়ের দিক থেকে গঙ্গা নদীর উপর নির্মিত দীর্ঘতম সেতু এবং ১২০ মিটার (৩৯০ ফুট) গভীরতাযুক্ত বিশ্বের গভীরতম পাইলের সেতু।সেতুটি চালু হওয়ার পর বাংলাদেশের জিডিপি ১.২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আম ম্যাঙ্গিফেরা গণের বিভিন্ন প্রজাতির গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উদ্ভিদে জন্মানো এক ধরনের সুস্বাদু ফল। কাঁচা অবস্থায় আমের রং সবুজ এবং পাকা অবস্থায় হলুদ হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খাওয়ার জন্যই এই ফল চাষ করা হয়। এই প্রজাতিগুলোর বেশিরভাগই বুনো আম হিসেবে প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। গণটি অ্যানাকার্ডিয়াসি (Anacardiaceae) পরিবারের সদস্য। আম ভারতীয় উপমহাদেশীয় ফল। এর আদি নিবাস দক্ষিণ এশিয়া। সেখান থেকেই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের একটি সাধারণ ফল হয়ে "সাধারণ আম" বা "ভারতীয় আম", যার বৈজ্ঞানিক নামম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা (Mangifera indica), অন্যতম সর্বাধিক আবাদকৃত ফল হিসেবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। ম্যাঙ্গিফেরা গণের অন্যান্য প্রজাতিগুলো (যেমনঃ হর্স ম্যাঙ্গো, ম্যাঙ্গিফেরা ফ্লোটিডা) স্থানীয়ভাবে আবাদ করা হয়।ধারণা করা হয়, আম প্রায় সাড়ে ৬০০ বছরের পুরনো।
পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা
পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা(Panchayat system) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার মূল ভিত্তি। ‘পঞ্চায়েত’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি হিন্দি पंचायत থেকে। প্রাচীন ভারতে পাঁচজন সদস্য নিয়ে যে স্বশাসিত স্বনির্ভর গ্রামীণ পরিষদ গঠিত হত, তাকেই বলা হত পঞ্চায়েত। আধুনিককালে এই শব্দটির সঙ্গে যুক্ত হয় এক সমষ্টিগত চেতনা। ‘পঞ্চায়েত’ শব্দটির লোকপ্রচলিত অর্থ হয়ে দাঁড়ায় ‘পাঁচ জনের জন্য’। সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর বর্তমানে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের তৃতীয় স্তরের সরকার। বর্তমানে গ্রামবাংলাকে কেন্দ্র করে যে প্রশাসনিক, জনকল্যাণমূলক, বিচারবিভাগীয় ও প্রতিনিধিত্বমূলক স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত, তাকেই পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নামে অভিহিত করা হয়। ১৯৭০ সালে প্রথম সর্ববঙ্গীয় গ্রামীণ চৌকিদারি পঞ্চায়েত আইনের মাধ্যমে আধুনিক গ্রাম পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। স্বাধীনতার পর গণতান্ত্রিক ভারতে এই ব্যবস্থা তৃণমূলস্তর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন পাস হয় ও সংবিধান সংশোধন করা হয়। ১৯৫৭ সালে সর্বপ্রথম পশ্চিমবঙ্গে পশ্চিমবঙ্গীয় চৌকিদারি পঞ্চায়েত আইন বিধিবদ্ধ হয়। ১৯৫৭ ও ১৯৬৩ সালের আইনানুসারেই পশ্চিমবঙ্গে চার-স্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু হয়। এরপর ১৯৭৩ সালে নতুন আইনের মাধ্যমে চালু হয় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা। ১৯৯১ সালে ভারতীয় সংবিধানের ৭৩তম সংশোধনী অনুসারে পঞ্চায়েতীরাজ চৌকিদারি পঞ্চায়েতব্যবস্থাকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয় এবং ১৯৯২ সালে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমবঙ্গীয় চৌকিদারি পঞ্চায়েত আইনটিকেও পুনর্সংশোধিত করা হয়।
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন (সাধারণত বেগম রোকেয়া নামে অধিক পরিচিত; ৯ ডিসেম্বর ১৮৮০ - ৯ ডিসেম্বর ১৯৩২) হলেন একজন বাঙালি চিন্তাবিদ, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি বাঙালি মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং প্রথম বাঙালি নারীবাদী। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে বিবিসি বাংলার 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি' জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন বেগম রোকেয়া। ছোটগল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী ও শ্লেষাত্মক রচনায় রোকেয়ার স্টাইল ছিল স্বকীয় বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। উদ্ভাবনা, যুক্তিবাদিতা এবং কৌতুকপ্রিয়তা তার রচনার সহজাত বৈশিষ্ট্য। তার প্রবন্ধের বিষয় ছিল ব্যাপক ও বিস্তৃত। বিজ্ঞান সম্পর্কেও তার অনুসন্ধিৎসার পরিচয় পাওয়া যায় বিভিন্ন রচনায়। মতিচূর (১৯০৪) প্রবন্ধগ্রন্থে রোকেয়া নারী-পুরুষের সমকক্ষতার যুক্তি দিয়ে নারীদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় আহ্বান জানিয়েছেন এবং শিক্ষার অভাবকে নারীপশ্চাৎপদতার কারণ বলেছেন। তার সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৫) নারীবাদী ইউটোপিয়ান সাহিত্যের ক্লাসিক নিদর্শন বলে বিবেচিত। পদ্মরাগ (১৯২৪) তার রচিত উপন্যাস। অবরোধ-বাসিনীতে (১৯৩১) তিনি অবরোধপ্রথাকে বিদ্রূপবাণে জর্জরিত করেছেন।রোকেয়ার কর্ম ও আদর্শ উদ্যাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর ৯ই ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস উদ্যাপন করে এবং বিশিষ্ট নারীদের অনন্য অর্জনের জন্য বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করে।
এই নিবন্ধে প্রধান কিছু শিল্পকলার শাখা আলোচনা করা হয়েছে। শিল্পকলা বলতে বিশ্বের বিভিন্ন সমাজ ও সংস্কৃতিতে বিদ্যমান বহুবিধ কিছু মানব কর্মকাণ্ডকে বোঝায়, যেগুলিতে দেখা, শোনা বা পড়ার যোগ্য কিংবা পরিবেশন করার মতো এমন বিশেষ কোনও কিছু (বস্তু, পরিবেশ বা অভিজ্ঞতা) সৃষ্টি করা হয়, যার মাধ্যমে সৃষ্টিকারীর কল্পনাশক্তি বা কারিগরি দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং দর্শক, শ্রোতা বা পাঠক বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে ও বুদ্ধি দিয়ে মানসিকভাবে যার সৌন্দর্য ও আবেগ উদ্রেককারী ক্ষমতার তারিফ করে। শিল্পকলায় সৃষ্ট বস্তুকে শিল্পকর্ম বলে এবং যে ব্যক্তি শিল্পকলার চর্চা করে শিল্পকর্ম সৃষ্টি করেন, তাকে শিল্পী বলে। কোনও মানব কর্মকাণ্ড ও তার সৃষ্টিকে শিল্প বলে গ্রহণ করা হবে কি না, তা প্রায়শই স্থান, কাল, সভ্যতা, সংস্কৃতি, সম্প্রদায় এমনকি ব্যক্তিগত সৌন্দর্যবোধ ও আবেগ-অনুভূতির উপরে নির্ভর করে। আবার স্থান, কাল, সংস্কৃতির সীমানা ছাড়িয়ে সিংহভাগ মানুষের সৌন্দর্যবোধ ও আবেগকে নাড়া দেয়, এমন শিল্পকর্মও রয়েছে। তবে বিংশ শতাব্দীতে এসে আবেগ ও সৌন্দর্যের চিরায়ত সংজ্ঞার বাইরে গিয়ে সমসাময়িক শিল্পীসমাজ, শিল্পের সমালোচক ও বোদ্ধাসমাজ এবং শিল্পকর্ম ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দ্বারা সমাদৃত যেকোনও কিছুকেই শিল্পের মর্যাদা দেওয়া হতে পারে, যা সাধারণ জনগণের কাছে দুর্বোধ্য মনে হতে পারে। শিল্পকলামূলক কর্মকাণ্ডের পরিধি সতত পরিবর্তনশীল। নতুন প্রযুক্তি, নতুন উপাদান, নতুন পরিবেশ-পরিস্থিতি, ইত্যাদি নতুন নতুন শিল্পকলার জন্ম দিচ্ছে।
একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সহ পশ্চিমবঙ্গ তথা সমস্ত বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও সুপরিচিত। বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে অনেক তরুণ শহীদ হন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো রফিক, জব্বার, শফিউর, সালাম, বরকত সহ অনেকেই। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা
এটি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের পর থেকে বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রপতিদের সম্পূর্ণ তালিকা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, যার পূর্বনাম ছিলো জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ বাংলাদেশের একটি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশে ইসলামী শরিয়াহ আইন বাস্তবায়ন এই দলের উদ্দেশ্য। দলটি ইকামতে দ্বীন (ধর্ম প্রতিষ্ঠা) নামক মতাদর্শকে মূলভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করে এবং একে "রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা" অর্থে দলীয় ও রাজনৈতিকভাবে ব্যাখ্যা করে থাকে। এটি পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর একটি শাখা এবং তা মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড-এর আদর্শ ধারণ করে। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন সম্পর্কিত একটি রুলের রায়ে এই সংগঠনের নিবন্ধন অবৈধ এবং একে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করে।বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনা ও সংবাদমাধ্যমের পরিমণ্ডলে আলোচ্য সংগঠনটিকে 'জামায়াত' বলেও উল্লেখ করা হয়। জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির (পূর্বেকার নাম: ইসলামী ছাত্র সংঘ)-এর একটিকে বোঝাতে 'জামায়াত-শিবির' শব্দদ্বয় ব্যবহৃত হয়। জামায়াতে ইসলামীর কর্মী, ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মী, এই দুই সংগঠনের অঙ্গ ও সমমনা সংগঠনসমূহের কর্মী, এদের সবকয়টির সমর্থকগোষ্ঠী - এদের সবাইকে বোঝাতে 'জামায়াতি' শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
প্লাস্টিক দূষণ হল পরিবেশ কর্তৃক প্লাস্টিক পদার্থের আহরণ যা পরবর্তীতে যে বন্যপ্রাণ, বন্যপ্রাণ আবাসস্থল, এমনকি মানবজাতীর ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে৷ আকারের উপর ভিত্তি করে, মাইক্রো-, মেসো-, অথবা ম্যাক্রোবর্জ্য এই তিনভাগে প্লাস্টিক দূষণকে শ্রেণীকরণ করা হয়। নিয়মিত প্লাস্টিক পদার্থের ব্যবহার প্লাস্টিক দূষণের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে৷ পলিথিন ব্যাগ, কসমেটিক প্লাস্টিক, গৃহস্থালির প্লাস্টিক, বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যের বেশিরভাগই পুনঃচক্রায়ন হয় না৷ এগুলো পরিবেশে থেকে বর্জ্যের আকার নেয়৷ মানুষের অসচেতনতাই প্লাস্টিক দূষণের প্রধান কারণ ৷ প্লাস্টিক এমন এক রাসায়নিক পদার্থ যা পরিবেশে পচতে অথবা কারখানায় পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ করতে প্রচুর সময় লাগে ৷ তাই একে "অপচ্য পদার্থ" হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। তাই প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে ৷ সাধারনত উদ্ভিদকূল, জলজ প্রাণী, দ্বীপ অঞ্চলের প্রাণীরা প্লাস্টিক বর্জ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে৷ প্লাস্টিক বর্জ্য ঐসকল প্রাণীর বাসস্থান, খাদ্য সংগ্রহের স্থান ও উদ্ভিদের খাদ্য গ্রহণের পথে বাধার সৃষ্টি করে। শুধুমাত্র উদ্ভিদ বা জলজ প্রাণী নয়, মানুষ প্লাস্টিক দূষণের কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ৷ থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণের জন্য প্লাস্টিক দূষণ পরোক্ষভাবে দায়ী৷ শুধুমাত্র আমেরিকাতে প্রতিবছর ৫ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহৃত হয় ৷ এগুলোর মধ্যে মাত্র ২৪ শতাংশ পুনঃচক্রায়ন হয়ে থাকে ৷ অন্য ৩.৮ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য আকারে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়৷ বর্তমানে বিভিন্ন দেশে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার কমাতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে ৷ বাংলাদেশেও পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ইউটিউব (ইংরেজি: YouTube) হলো সান ব্রুনো, ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক একটি বৈশ্বিক অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম সেবার সাইট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যা ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। ইউটিউব বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম। ২০০৬ সালের অক্টোবরে, গুগল সাইটটিকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করে নেয়। ইউটিউব বর্তমানে গুগলের অন্যতম অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
ফেসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেইসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত), হল মেটা প্ল্যাটফর্মসের মালিকানাধীন বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
সুন্দরবন হলো বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলির অন্যতম। পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও বরগুনা জেলার কিছু অংশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত। সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি। ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,৫১৭ বর্গ কিলোমিটার (৬৬%) রয়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ (৩৪%) রয়েছে ভারতের মধ্যে।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ, দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন ৮৮৭৫২ বর্গ কি.
সবুজ টিয়া (বৈজ্ঞানিক নাম:Psittacula krameri) টিয়া প্রজাতির অতিপরিচিত ও সুদর্শন পাখি। সবুজ টিয়া সহজেই পোষ মানে এবং মানুষের মতো করে কথা বলতে পারে। এরা সাধারণত বন, বৃক্ষবহুল এলাকা, প্রশস্ত পাতার বন, আর্দ্র পাতাঝরা বন, খোলা বন, পাহাড়ি বন, চা বাগান, বসতবাড়ির বাগান, আবাদি জমি, পুরান বাড়িতে বসবাস ও বিচরণ করে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) হল কুরআনের একটি আয়াত (বাক্য) বা দোয়া, যার বাংলা অর্থ হল "আমরা তো আল্লাহরই এবং আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী"। এটি ইস্তিরজা' (আরবি: اِسْتِرْجَاع, অনুবাদ 'প্রত্যাবর্তন') নামেও পরিচিত। সাধারণত মুসলমানরা তাদের বেদনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে বাক্যটি উচ্চারণ করে, বিশেষ করে যখন একজন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন বাংলাদেশের অন্যতম মহানগরী বরিশাল এর স্থানীয় সরকার সংস্থা। ১৮৬৯ সালে বরিশাল টাউন কমিটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ও ১৮৭৬ সালে বরিশাল মিউনিসিপ্যালিটিতে উন্নীত হয়। ১৯৮৫ সালে একে একটি প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০০২ সালে "বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (সংশোধন) আইন ২০০২" এর মাধ্যমে পৌরসভা বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হয়। বর্তমানে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসকারী জনসংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ ও আয়তন ৫৮ বর্গ কিলোমিটার। বর্তমানে ৩০টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সিটি কর্পোরেশনে ৩০জন সাধারণ আসনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এবং ১০ জন সংরক্ষিত আসনে মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্য থেকে মেয়র ও সম্মানিত কাউন্সিলরগণ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন।
আস-সালামু আলাইকুম (আরবি: ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ) আরবি ভাষায় একটি অভিবাদনসূচক বাক্যাংশ, যার অর্থ "আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক"। সাধারণত মুসলিমরা ধর্মীয় অভিবাদনসূচক বাক্য হিসেবে এই বাক্যটি ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া অন্যান্য ধর্মের আরবি ভাষাভাষীরাও (যেমন: আরব খ্রিষ্টান) এটি ব্যবহার করে থাকে। কথোপকথনে, প্রায়ই এই বাক্যাংশের প্রথম অংশ (অর্থাৎ সালাম অনু. শান্তি) একজন ব্যক্তিকে অভিবাদন জানাতে ব্যবহৃত হয়। শুভেচ্ছার সাধারণ প্রতিক্রিয়া হলো "ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম" (وَعَلَيْكُمُ ٱلسَّلَامُ অনু. 'আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক')। সম্পূর্ণ বাক্যাংশটি হলো "আস-সালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু" (ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ)।
মুজিবনগর সরকার (যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অস্থায়ী সরকার বা প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার নামেও পরিচিত) মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল জনগনের রায়ে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমান মুজিবনগর) শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের জনগণের প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী সংগঠন ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় এবং এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ সহায়তাকারী রাষ্ট্র ভারতের সরকার ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক রক্ষায় এই সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। এই সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ প্রবল যুদ্ধে রূপ নেয় এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত হয়।
যতিচিহ্ন, বিরামচিহ্ন বা ছেদচিহ্ন হল সেইসব সাংকেতিক চিহ্ন যেগুলো লেখ্যমাধ্যমে ব্যবহার করে বাক্যের বিভিন্ন ভাব, যেমন: জিজ্ঞাসা, বিস্ময়, সমাপ্তি ইত্যাদি সার্থকভাবে প্রকাশের মাধ্যমে বাক্যের অর্থ সুস্পষ্ট করা হয়। বাংলা ভাষায় ২০টির মতো যতিচিহ্ন রয়েছে। এদের মধ্যে বাক্যশেষে ব্যবহার্য যতিচিহ্ন ৪টি; বাক্যের ভিতরে ব্যবহার্য ১০টি এবং বাক্যের আগে পরে ব্যবহার্য ৬টি।
যুক্তফ্রন্ট হলো পাকিস্তানের পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদের ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে, মুসলিম লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে অন্যান্য বিরোধী দল মিলে গঠিত একটি সমন্বিত রাজনৈতিক মঞ্চ। ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর, যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও পরবর্তীতে আওয়ামী মুসলিম লীগ (মাওলানা ভাসানী) ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর তারিখে কৃষক শ্রমিক পার্টি (শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক), নেজামে ইসলাম পার্টি (মাওলানা আতাহার আলী), বামপন্থী গণতন্ত্রী পার্টি (হাজী মোহাম্মদ দানেশ এবং মাহমুদ আলি সিলেটি) ও পাকিস্তান গণতন্ত্রী দল একসাথে মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে।
জগদীশ চন্দ্র বসু, সিএসআই, সিআইই, এফআরএস (৩০ নভেম্বর ১৮৫৮ – ২৩ নভেম্বর ১৯৩৭) একজন বাঙালি পদার্থবিদ, জীববিজ্ঞানী এবং কল্পবিজ্ঞান রচয়িতা ছিলেন। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবহারিক এবং গবেষণাধর্মী বিজ্ঞানের সূচনা তার হাত ধরে হয় বলে মনে করা হয়। ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স তাকে রেডিও বিজ্ঞানের একজন জনক হিসেবে অভিহিত করে।
১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজন বা দেশভাগ হল ব্রিটিশ ভারতকে দুটি স্বাধীন [[]] ভারত ও পাকিস্তানে বিভক্ত করার ঘটনা। ভারত অধিরাজ্য বর্তমান সময়ে ভারতীয় প্রজাতন্ত্র; পাকিস্তান অধিরাজ্য বর্তমান সময়ে ইসলামি প্রজাতন্ত্রী পাকিস্তান ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ হিসাবে পরিচিত। বিভাজনের ঘটনাটি জেলা-ভিত্তিক অমুসলিম বা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে বাংলা ও পাঞ্জাব প্রদেশের বিভাজনের সাথে জড়িত ছিল। ভারত বিভাজনের সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী, রাজকীয় ভারতীয় নৌবাহিনী, ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস, রেল ও কেন্দ্রীয় কোষাগারও বিভক্ত করে দেওয়া হয়। এই বিভাজনটি ভারতীয় স্বাধীনতা আইন ১৯৪৭-এ বর্ণিত হয়েছিল এবং এর ফলে ভারতে ব্রিটিশ রাজ বা ক্রাউন শাসনের অবসান ঘটে। দুটি স্ব-শাসিত দেশ ভারত ও পাকিস্তান আইনত ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে অস্তিত্ব লাভ করে।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানে দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার আওয়ামী লীগ নেতা ও পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩৫জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছিল। ১৯৬৮ সালের প্রথম ভাগে দায়ের করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, শেখ মুজিব ও অন্যান্যরা ভারতের সাথে মিলে পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই মামলাটির পূর্ণ নাম ছিল "রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য মামলা "। তবে এটি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা হিসাবেই বেশি পরিচিত, কারণ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল যে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় কথিত ষড়যন্ত্রটি শুরু হয়েছিল। মামলা নিষ্পত্তির চার যুগ পর মামলার আসামি ক্যাপ্টেন এ.
মুহাম্মাদ (আরবি: مُحَمَّد; মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত) বা পূর্ণ সম্মানসূচক নাম, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন একজন আরবের ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক নেতা এবং ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। ইসলামি মতবাদ অনুসারে, তিনি হলেন ঐশ্বরিকভাবে প্রেরিত ইসলামের সর্বশেষ নবী (আরবি: النبي; আন-নাবিয়্যু) তথা ‘বার্তাবাহক’ ও রাসুল (আরবি: الرسول; আল-রাসুল), যার উপর ইসলামের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কুরআন অবতীর্ণ হয়। আদম, ইব্রাহিম, মূসা, ঈসা (যিশু) এবং অন্যান্য নবিদের মতোই মুহাম্মদ একেশ্বরবাদী শিক্ষা প্রচার করার জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন। অমুসলিমদের মতে, তিনি ইসলামি জীবনব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল ছিলেন, তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সাফল্য। কুরআনের পাশাপাশি তার শিক্ষা এবং অনুশীলনগুলো ইসলামি ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন) (২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১;১২ আশ্বিন, ১২২৭ – ১৩ শ্রাবণ ১২৯৭ বঙ্গাব্দ ) ঊনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তার। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
অপারেশন সার্চলাইট (ইংরেজি: Operation Searchlight) ১৯৭১সালে ২৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত পরিকল্পিত গণহত্যা, যার মাধ্যমে তারা ১৯৭১ এর মার্চ ও এর পূর্ববর্তী সময়ে সংঘটিত বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দমন করতে চেয়েছিল। এই গণহত্যা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের আদেশে পরিচালিত,যা ১৯৭০ এর নভেম্বরে সংঘটিত অপারেশন ব্লিটজ্ এর পরবর্তি অনুষঙ্গ। অপারেশনটির আসল উদ্দেশ্য ছিল ২৬ মার্চ এর মধ্যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সব বড় বড় শহর দখল করে নেয়া এবং রাজনৈতিক ও সামরিক বিরোধীদের এক মাসের ভেতর নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। বাঙালিরা তখন পাল্টা প্রতিরোধ সৃষ্টি করে,যা পাকিস্তানি পরিকল্পনাকারীদের ধারণার বাইরে ছিল। মে এর মাঝামাঝি সময়ে সকল বড় বড় শহরের পতন ঘটার মধ্যে দিয়ে অপারেশন সার্চলাইটের প্রধান অংশ শেষ হয়। এই সামরিক আক্রমণ ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে ত্বরান্বিত করে। এই গণহত্যা বাঙালিদের ক্রুদ্ধ করে তোলে যে কারণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙ্গালি অফিসার ও সৈনিকেরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হয় এবং বহু মানুষকে শরণার্থীরূপে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়। এই ভয়াবহ গণহত্যা ১৯৭১ এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায় এবং বাঙালিরা দখলদারী পাকিস্তানি বাহিনীকে বিতারিত করার সংগ্রামে লিপ্ত হয়। পরিণতিতে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ কমান্ড "মিত্র বাহিনী" এর কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিনাশর্তে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।।
আবদুর রব সেরনিয়াবাত (১৯২১ - ১৫ আগস্ট ১৯৭৫) বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ এবং প্রাক্তন ভূমি প্রশাসন, ভূমি সংস্কার ও ভূমি রাজস্ব ও বন্যানিয়ন্ত্রণ, পানিসম্পদ ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপা। তিনি শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের সময়ে নিহত হন। তার এক পুত্র আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ বর্তমানে বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং কনিষ্ঠ পুত্র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ তার পৌত্র।
পিরামিড (Pyramid) হলো এক প্রকার জ্যামিতিক আকৃতি বা গঠন যার বাইরের তলগুলো ত্রিভূজাকার (Triangular) এবং যারা শীর্ষে একটি বিন্দুতে মিলিত হয়। পিরামিড একটি বহুভূজাকৃতি ভূমির উপর অবস্থিত। বহুভূজের উপর অবস্থিত যে ঘনবস্তুর একটি শীর্ষবিন্দু থাকে এবং যার পার্শ্বতলগুলো প্রত্যেকটি ত্রিভুজাকার, তাকে পিরামিড বলে। পিরামিডের ভূমি যেকোনো আকারের বহুভূজ (Polygon) হতে পারে এবং এর পার্শ্বতলগুলো যেকোনো আকারের ত্রিভূজ (Triangle) হতে পারে। একটি পিরামিডের কমপক্ষে তিনটি ত্রিভূজাকার পার্শ্বতল (Triangular outer surfaces) থাকে, অর্থাৎ পিরামিডের ভূমিসহ কমপক্ষে চারটি তল থাকে। বর্গাকার পিরামিড (Square Pyramid) হলো এমন একটি পিরামিড যা একটি বর্গাকার ভূমির উপর অবস্থিত এবং যার চারটি ত্রিভুজাকার পার্শ্বতল আছে। এই ধরনের পিরামিডের বহুল ব্যবহার আছে।
বাংলাদেশের সিটি কর্পোরেশনের তালিকা
বাংলাদেশে বর্তমানে ১২টি সিটি কর্পোরেশন রয়েছে। এর মধ্যে দুইটি রাজধানী ঢাকায় রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনগুলো বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ও নাগরিক কার্য সম্পাদন করে থাকে।
বাগধারা শব্দের আভিধানিক অর্থ কথার বচন ভঙ্গি বা ভাব বা কথার ঢং। বাক্য বা বাক্যাংশের বিশেষ প্রকাশভঙ্গিকে বলা হয় বাগধারা। বিশেষ প্রসঙ্গে শব্দের বিশিষ্টার্থক প্রয়োগের ফলে বাংলায় বহু বাগধারা তৈরি হয়েছে। এ ধরনের প্রয়োগের পদগুচ্ছ বা বাক্যাংশ আভিধানিক অর্থ ছাপিয়ে বিশেষ অর্থের দ্যোতক হয়ে ওঠে। বলা যায় বাক্যার্থ ছাপিয়ে এখানে ব্যাঙ্গার্থই প্রধান।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (২৫ জানুয়ারি ১৮২৪ – ২৯ জুন ১৮৭৩) ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি এবং নাট্যকার ও প্রহসন রচয়িতা। তাকে বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব গণ্য করা হয়। ঐতিহ্যের অনুবর্তিতা অমান্য করে নব্যরীতি প্রবর্তনের কারণে তাকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলসমূহের তালিকা
বাংলাদেশে প্রধানত দ্বিদলীয় শাসনব্যবস্থা বিরাজমান। অর্থাৎ দুই দলের বাইরে অন্য কোনো দলের নামে নির্বাচনে জয়লাভ কারো পক্ষে অত্যন্ত কঠিন। এখানে প্রধান দুই দল পালাক্রমে দেশ শাসন করে থাকে। যা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ। তাছাড়া বর্তমানে কমিউনিস্ট দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে গণআন্দোলন করছে। এছাড়া এখানে অনেকগুলো দল মিলে জোট করার ব্যাপার লক্ষ্যণীয়।
সুভাষচন্দ্র বসু উচ্চারণ (২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ - ?) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র যিনি এই সংগ্রামে নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত। সুভাষচন্দ্র পরপর দুইবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু গান্ধীর সঙ্গে আদর্শগত সংঘাত, কংগ্রেসের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতির প্রকাশ্য সমালোচনা এবং বিরুদ্ধ-মত প্রকাশ করার জন্য তাকে পদত্যাগ করতে হয়।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা যা এনএসআই নামে পরিচিত, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধান ও স্বাধীন আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা। এনএসআইয়ের প্রধান কার্যালয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত। এনএসআই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, কাউন্টার-ইন্টেলিজেন্স ও বৈদেশিক গোয়েন্দা সম্পর্কিত ক্ষেত্রগুলোতে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করে। এনএসআই বাংলাদেশের অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা যেমন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর, পুলিশের বিশেষ শাখা, সেনা গোয়েন্দা ও নৌ গোয়েন্দা প্রভৃতির মধ্যে বৃহত্তম। সংস্থাটি সরাসরি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংস্থাটির দপ্তর রয়েছে। পাশাপাশি যুগ্ম-পরিচালকের নেতৃত্বে বাংলাদেশের জেলাসমূহে স্থানীয় ইউনিট রয়েছে। বাংলাদেশের বৃহত্তম গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে এনএসআই প্রধান কার্যক্রমগুলোর মধ্যে মূলত বৈদেশিক সরকার, নির্দিষ্ট ব্যক্তি, সংস্থা, রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন ধর্মীয় দল এবং কাউন্টার-ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কিত নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সেক্টরসমূহ
১৯৭১ সালে সংগঠিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচলনায় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের সমগ্র ভূখণ্ডকে ১১টি যুদ্ধক্ষেত্র বা সেক্টরে ভাগ করা হয়।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠন
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মন্ত্রীসভা বৈঠকের মধ্য দিয়ে সূচিত হয়েছিল। একটি রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চল পূর্ব পাকিস্তান একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ কালে দেশের ধন-সম্পদ ও জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছিল। সদ্য-স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পুনর্গঠন গঠন ছিল সরকারের জন্য প্রাগ্রাধিকারমূলক কর্তব্য। এছাড়া একটি প্রাদেশিক সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নীত করার কাজ অবধার্য হয়ে পড়েছিল।
প্রযুক্তি হল কৌশল, দক্ষতা, পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া সমষ্টি যা পণ্য ও সেবা উৎপাদনে অথবা উদ্দেশ্য সাধনে ব্যবহৃত হয় যেমন বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান।প্রযুক্তির হতে পারে কৌশল ও প্রক্রিয়ার জ্ঞান অথবা এটি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে শুধুমাত্র যন্ত্রের ধারণা যে এটি কীভাবে পরিচালিত হয় এগুলো সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান ব্যতিরেকে। কৌশল (অর্থাৎ মেশিন বা যন্ত্র) যা প্রযুক্তির ব্যবহার ইনপুট নিয়ে একটি আউটপুট ফলাফলে পরিণত করে তাকে প্রযুক্তি কৌশল বা প্রযুক্তিগত কৌশল বলে।
কলকাতা বা কোলকাতা ([kolkata] (শুনুন)) হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ায় কলকাতা তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক)$২৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বই ও নতুন দিল্লির ঠিক পর ৩য় বৃহৎ অর্থনীতির শহর।|সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে ‘নিজামৎ’ বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং [[বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি]তে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।
অণুজীব, হল এককোষী জীব যাদের সাধারণত খালি চোখে দেখা যায় না এবং একক-কোষীয় আকারে অথবা কোষের কলোনি বা উপনিবেশ হিসাবে বিদ্যমান থাকে। এগুলিকে জীবাণু বা অণুবীক্ষণিক জীব হিসাবেও পরিচিত কারণ এগুলি কেবলমাত্র একটি মাইক্রোস্কোপের নীচেই দেখা সম্ভব। এটি অনুমান করা হয় যে অণুজীবগুলি পৃথিবীর জৈববস্তুর প্রায় ৬০% তৈরি করে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ
ভিকারুননিসা নুন স্কুল ও কলেজ ঢাকার বেইলি রোডে অবস্থিত বাংলাদেশে মেয়েদের একটি স্বনামধন্য স্কুল। ১৯৫২ সালে তৎকালীন পাকিস্থানের পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের (বর্তমানে স্বাধীন বাংলাদেশ) গভর্নর ফিরোজ খান নুনের সহধর্মিনী ভিকার উন নিসা নুন ঢাকায় মেয়েদের একটি আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুরু করার লক্ষ্যে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন ও তার নামানুসারেই স্কুলটির নামকরণ করা হয়েছে। ভিকারুননিসা স্কুলের সাথে ক্ষেত্রবিশেষে উপমহাদেশের ইতিহাসের সংযোগ রয়েছে। এটি এখন বাংলাদেশের নামকরা স্কুলগুলোর মধ্যে অন্যতম।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধিত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য সংবিধানের ১৪২নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোরেল হলো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি দ্রুতগামী গণপরিবহন ব্যবস্থা। ২০১৩ সালে অতি জনবহুল ঢাকা মহানগরীর ক্রমবর্ধমান যানবাহন সমস্যা ও পথের দুঃসহ যানজট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় যার অধীনে প্রথমবারের মত ঢাকায় মেট্রো রেল স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়। মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড। ২০১৬ সালে প্রণীত সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা অনুসারে ঢাকায় নির্মিতব্য মেট্রো রেলের লাইনের সংখ্যা ৩টি থেকে বাড়িয়ে ৫টি করা হয়। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন ৬-কে নির্বাচন করা হয়। ২০১৬ সালের ২৬ জুন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এমআরটি লাইন-৬ এর নির্মাণকাজ শুরু হয়।
স্যার আইজাক নিউটন (ইংরেজি: Sir Isaac Newton; ৪ জানুয়ারি ১৬৪৩ - ৩১ মার্চ ১৭২৭) প্রখ্যাত ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, প্রাকৃতিক দার্শনিক এবং আলকেমিস্ট। অনেকের মতে, নিউটন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী বিজ্ঞানী। ১৬৮৭ খ্রিস্টাব্দে তার বিশ্ব নন্দিত গ্রন্থ ফিলোসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা প্রকাশিত হয় যাতে তিনি সর্বজনীন মহাকর্ষ এবং গতির তিনটি সূত্র বিধৃত করেছিলেন। এই সূত্র ও মৌল নীতিগুলোই চিরায়ত বলবিজ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে, আর তার গবেষণার ফলে উদ্ভূত এই চিরায়ত বলবিজ্ঞান পরবর্তী তিন শতক জুড়ে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার জগতে একক আধিপত্য করেছে। তিনিই প্রথম দেখিয়েছিলেন, পৃথিবী এবং মহাবিশ্বের সকল বস্তু একই প্রাকৃতিক নিয়মের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। কেপলারের গ্রহীয় গতির সূত্রের সাথে নিজের মহাকর্ষ তত্ত্বের সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে সমর্থ হয়েছিলেন। তার গবেষণার ফলেই সৌরকেন্দ্রিক বিশ্বের ধারণার পেছনে সামান্যতম সন্দেহও দূরীভূত হয় এবং বৈজ্ঞানিক বিপ্লব ত্বরান্বিত হয়।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, ২০২৩
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, ২০২৩ হল বাংলাদেশের খুলনায় অনুষ্ঠিতব্য একটি নির্বাচন, যা ১২ জুন ২০২৩ তারিখে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের পরবর্তী মেয়র ও কাউন্সিলরদের নির্বাচন করার জন্য অনুষ্ঠিত হবে।
সম্প্রদায় হল ক্ষুদ্র বা বৃহৎ জনগোষ্ঠী যাদের মধ্যে কিছু বিষয়, যেমন সামাজিক প্রথা, ধর্ম, মূল্যবোধ, ও পরিচয়ের মিল থাকে। সম্প্রদায় প্রায়শই একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থান (যেমন, দেশ, শহর, বা গ্রাম) ভিত্তিতে গড়ে ওঠে, তবে সব ক্ষেত্রে নয়। নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থানের বাইরেও দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে ওঠলে তাকে সম্প্রদায় বলা হয়, যেমন ইন্টারনেট সম্প্রদায়। মানুষ এই ধরনের সামাজিক সম্পর্ককে তাদের পরিচয়, রীতিনীতি, ও সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন পরিবার, কর্মক্ষেত্র, সরকার, সমাজ, বা মানবসেবায় ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে। যদিও সম্প্রদায় বলতে ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যক্তিগত সামাজিক সম্পর্ককে বুঝানো হয়, "সম্প্রদায়" বলতে বৃহৎ জনগোষ্ঠী, যেমন জাতীয় সম্প্রদায়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, ভার্চুয়াল সম্প্রদায়ের সাথে একাত্মতাও বুঝানো হয়।
ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল ডি ফুটবল মায়ামি (ইন্টার মায়ামি ফুটবল ক্লাব বা কেবল ইন্টার মায়ামি নামে পরিচিত) ফোর্ট লডারডেলে অবস্থিত একটি আমেরিকান পেশাদার ফুটবল ক্লাব। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটি ২০২০ মৌসুমে মেজর লিগ সকার (এমএলএস) খেলতে শুরু করে। ক্লাবটি বর্তমানে তার ঘরোয়া এমএলএস ম্যাচগুলো ড্রাইভ পিংক স্টেডিয়ামে খেলে, যা ফ্লোরিডার নিকটবর্তী ফোর্ট লডারডেলের প্রাক্তন লকহার্ট স্টেডিয়ামের স্থান।
বেদে (অন্যান্য বানান: বাইদ্যা; স্ত্রীলিঙ্গ: বেদেনি) বা মান্টা নামেও পরিচিত, বাংলাদেশের একটি যাযাবর ইন্দো-আর্য জনগোষ্ঠী। বেদেরা ঐতিহ্যগতভাবে নদীতে বসবাস করে, ভ্রমণ করে এবং তাঁদের জীবিকা অর্জন করে, তাই তাঁরা "জল যাযাবর" বা "নদী যাযাবর" নামে পরিচিত। বেদেরা ইউরোপীয় যাযাবরদের অনুরূপ। বাংলাদেশের প্রায় আট লক্ষ বেদে আছে। তাঁরা দল বেঁধে ভ্রমণ করে এবং কখনো এক জায়গায় কয়েক মাসের বেশি থাকে না। বেদেরা একটি প্রান্তিক গোষ্ঠী। বেদেদের প্রায় ৯৮% দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে এবং প্রায় ৯৫% বেদে শিশু বিদ্যালয়ে যায় না। ঐতিহাসিকভাবে বেদেরা ভোট দিতে পারতো না কারণ তাঁদের স্থায়ী আবাস ছিল না, একই কারণে তাঁরা ব্যাংক ঋণ বা ক্ষুদ্রঋণের জন্য আবেদনও করতে পারতো না। ২০০৮ সালে বেদেরা বাংলাদেশে ভোটাধিকার অর্জন করতে সক্ষম হয়।এছাড়াও বেদেরা
সমাস একটি ব্যাকরণ সম্মত প্রক্রিয়া যেখানে বাক্যের মধ্যে পরস্পর অর্থসম্বন্ধ যুক্ত দুই বা ততোধিক পদ/শব্দ/অর্থমূল পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়। এর ফলে বাক্যে "পাশাপাশি অবস্থানকারী পদগুলো একত্রে মিলিত" হয় এবং "নতুন শব্দ গঠিত হয়"। সমাসের রীতি সংস্কৃত থেকে বাংলা ভাষায় এসেছে এবং এটি বাংলা ব্যাকরণের রূপতত্ত্ব অংশে আলোচনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ:
আনন্দবাজার পত্রিকা পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত একটি শতাব্দী প্রাচীন ভারতীয় দৈনিক পত্রিকা। কলকাতার এবিপি প্রাইভেট লিমিটেড এর প্রকাশক। প্রকাশ-সংখ্যার ভিত্তিতে এটি ভারতে বাংলা ভাষায় বহুল প্রচারিত দৈনিক। কলকাতা, নয়া দিল্লি, ভুবনেশ্বর, রাঁচি, শিলিগুড়ি ও ভারতের অন্যান্য শহর থেকে নিয়মিত এটি দশ লক্ষেরও অধিক সংখ্যায় প্রচারিত হয়। ইন্ডিয়ান রিডারশিপ সার্ভে অনুসারে, পত্রিকাটি ১৫৬ লাখ মানুষ পাঠ করেন।
মোহাম্মদ হামিদুর রহমান (২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ - ২৮ অক্টোবর ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান “বীর শ্রেষ্ঠ” উপাধিতে ভূষিত করা হয় তিনি তাদের অন্যতম। মাত্র ১৮ বছর বয়সে শহীদ হওয়া হামিদুর রহমান সাত জন বীর শ্রেষ্ঠ পদকপ্রাপ্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ।
জীবনানন্দ দাশ (১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৯ - ২২ অক্টোবর, ১৯৫৪) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাঙালি কবি, লেখক ও প্রাবন্ধিক৷ তিনি বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম৷ তার কবিতায় পরাবাস্তবের দেখা মিলে৷ জীবনানন্দের প্রথম কাব্যে নজরুল ইসলামের প্রভাব থাকলেও দ্বিতীয় কাব্য থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন মৌলিক ও ভিন্ন পথের অনুসন্ধানী। মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে তিনি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন এবং ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে যখন তার জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছিল, ততদিনে তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবিতে পরিণত হয়েছেন৷গ্রামবাংলার ঐতিহ্যময় নিসর্গ ও রূপকথা-পুরাণের জগৎ জীবনানন্দের কাব্যে হয়ে উঠেছে চিত্ররূপময়, তাতে তিনি ‘রূপসী বাংলার কবি’ অভিধায় খ্যাত হয়েছেন৷ বুদ্ধদেব বসু তাঁকে ‘নির্জনতম কবি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন৷ অন্যদিকে, অন্নদাশঙ্কর রায় তাঁকে ‘শুদ্ধতম কবি’ অভিধায় আখ্যায়িত করেছেন। সমালোচকদের অনেকে তাঁকে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল-পরবর্তী বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবি বলে মনে করেন। জীবনানন্দের বনলতা সেন কাব্যগ্রন্থ নিখিলবঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলনে পুরস্কৃত (১৯৫৩) হয়৷ ১৯৫৫ সালে শ্রেষ্ঠ কবিতা গ্রন্থটি ভারত সরকারের সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করে। জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মাঝে রয়েছে রূপসী বাংলা, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, বেলা অবেলা কালবেলা, শ্রেষ্ঠ কবিতা ইত্যাদি৷
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ৩১শে ভাদ্র, ১২৮৩ - ২রা মাঘ, ১৩৪৪ রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ – ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮) ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার। তিনি দক্ষিণ এশিয়া এবং বাংলা ভাষার অন্যতম জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। তার অনেক উপন্যাস ভারতবর্ষের প্রধান ভাষাগুলোতে অনূদিত হয়েছে। বড়দিদি (১৯১৩), পরিণীতা (১৯১৪), পল্লীসমাজ (১৯১৬), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), শ্রীকান্ত (চারখণ্ডে ১৯১৭-১৯৩৩), দত্তা (১৯১৮), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী (১৯২৬), শেষ প্রশ্ন (১৯৩১) ইত্যাদি শরৎ চন্দ্র রচিত বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তার দরুন তিনি 'অপরাজেয় কথাশিল্পী' নামে খ্যাত। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক পান৷ এছাড়াও, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে 'ডিলিট' উপাধি পান ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে।
ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞানভাণ্ডারের নাম বিজ্ঞান। অন্য ভাবে বলা যায় বিজ্ঞান হলো প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান যা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ঘটনাকে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করে। ল্যাটিন শব্দ সায়েনটিয়া (scientia) থেকে ইংরেজি সায়েন্স শব্দটি এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে জ্ঞান। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শব্দটির অর্থ বিশেষ জ্ঞান। ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার ফলে কোন বিষয়ে প্রাপ্ত ব্যাপক ও বিশেষ জ্ঞানের সাথে জড়িত ব্যক্তি বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানবিদ কিংবা বৈজ্ঞানিক নামে পরিচিত হয়ে থাকেন। বিজ্ঞানীরা বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে জ্ঞান অর্জন করেন এবং প্রকৃতি ও সমাজের নানা মৌলিক বিধি ও সাধারণ সত্য আবিষ্কারের চেষ্টা করেন। বর্তমান বিশ্ব এবং এর প্রগতি নিয়ন্ত্রিত হয় বিজ্ঞানের মাধ্যমে। তাই এর গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যাপক অর্থে যেকোনো জ্ঞানের পদ্ধতিগত বিশ্লেষণকে বিজ্ঞান বলা হলেও এখানে বিশেষায়িত ক্ষেত্রে শব্দটি ব্যবহার করা হবে। বিজ্ঞান চর্চার সূত্র সুদূর অতীত ৩০০০ থেকে ১২০০ বিসিই সময়কালে প্রাচীন মিশর এবং মেসোপটেমিয়ায় পাওয়া যায়। তাদের গণিত,জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং চিকিৎসাশাস্ত্রের জ্ঞান পরবর্তীতে গ্রিক ধ্রুপদী সভ্যতার দর্শনশাস্ত্রে প্রভাব রাখে তার পাশাপাশি প্রাকৃতিক কারনগুলোর উপর ভিত্তি করে বস্তুজগতকে ব্যাখ্যা করার সাধারণ প্রচেষ্টাও ছিল। পশ্চিমা রোমান সম্রাজ্য পতিত হবার পর পশ্চিমা ইউরোপে গ্রিকের পৃথিবী সম্পর্কিত জ্ঞান কমতে থাকে যা মধ্যযুগের ৪০০ থেকে ১০০০ সিই পর্যন্ত ছিল। পরে ইসলামিক স্বর্ণযুগে তার সংরক্ষিত হয়। ১০ম থেকে ১৩শ শতাব্দিতে গ্রিকদের জ্ঞান এবং পশ্চিম ইউরোপের থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান একত্রে পুর্নজাগরিত হয় "প্রাকৃতিক দর্শন" হিসেবে। যা ১৬শ শতকে শুরু হওয়া বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সময় থেকে রূপান্তরিত হতে থাকে। সেই সময় নতুন নতুন আবিষ্কার ও চিন্তাধারার কারনে গ্রিকদের ধারণা এবং চেতনার থেকে তা আলাদা পথে ধাবিত হয়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি জ্ঞান সৃষ্টির ক্ষেত্রে দ্রুতই বড় ধরনের ভূমিকা পেতে লাগল। ১৯শ শতকের মধ্যেই অনেক পেশাগত এবং বিদ্যাগত বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা পরিপূর্ণ রূপ পেতে শুরু করে। এরই সাথে সাথে "প্রাকৃতিক দর্শন" রূপান্তরিত হয়ে আর্বিভূত হয় "প্রাকৃতিক বিজ্ঞান" হিসেবে।আধুনিক বিজ্ঞানকে সাধারণত তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়: ১. প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, যা প্রাকৃতিক ঘটনাবলি ব্যাখ্যা প্রদান করে। ২. সামাজিক বিজ্ঞান , যা মানবিক আচরণ ও সমাজের অধ্যয়ন করে। ৩.
চিকিৎসক বা ডাক্তার হলেন একধরনের স্বাস্থ্য সেবা প্রদায়ক, যাঁদের পেশা (অর্থাৎ চিকিৎসাবিদ্যা বা ডাক্তারী) হল শারীরিক বা মানসিক রোগ, আঘাত বা বিকারের নিরীক্ষণ, নির্ণয় ও নিরাময়ের দ্বারা মানুষের স্বাস্থ্য বজায় রাখা বা পুনর্বহাল করা। এঁদের মধ্যে কেউ যদি কোন বিশেষ প্রকারের রোগ (যেমন স্নায়ুরোগাদি, মধুমেহ, হৃদরোগ ইত্যাদি) বা রোগী (যেমন শিশু, পোয়াতি, বৃদ্ধ ইত্যাদি) বা চিকিৎসাপদ্ধতির (যেমন স্নায়ুশল্যচিকিৎসা, ফিজিওথেরাপি ইত্যাদি) চর্চার প্রতি নিবিষ্ট হন তাদের সেই রোগ বা রোগীপ্রকার বা পদ্ধতির বিশেষজ্ঞ বা স্পেশালিস্ট বলা হয়। অন্যরা যাঁরা ব্যক্তিকেন্দ্রিক, পরিবারকেন্দ্রিক, জনগোষ্ঠীকেন্দ্রিক ইত্যাদি বিভিন্ন ভিত্তিতে, বয়স রোগ নির্বিশেষে, ক্রমান্বয়ে বা সর্বতোভাবে সাধারণ মানুষের নানারকম রোগবিকারাদির সাধারণ চিকিৎসা করে থাকেন তাদের জেনারাল প্র্যাক্টিশনার বলা হয়। চিকিৎসার সঠিক ব্যবহার শুধু চিকিৎসাবিজ্ঞানের বুনিয়াদী পঠনভিত্তিক জ্ঞানের উপরেই নির্ভর করে না, বরং এর কার্যকারিতা ও প্রচলন প্রায় সম্পূর্ণরূপেই নির্ভর করে এই বিজ্ঞানকে পরিশীলিতভাবে প্রয়োগ করবার তথা ফলিত কলাবিদ্যায় পারদর্শীতার উপর। । চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য সেবার অন্যান্য পেশাদারী ব্যক্তিদের (যথাঃ নার্স,পরীক্ষাগারের কর্মী, ঔষধশিল্পের সাথে জড়িত ফার্মাসিস্ট ও কেমিস্ট, মেডিক্যাল রিপ্রেসেন্টেটিভ ইত্যাদি) সাথেও অত্যন্ত নিবিড়ভাবে জড়িত।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান কেন্দ্র-ডান থেকে ডানপন্থী রাজনৈতিক দল। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৭ সালে ৩০ এপ্রিল জিয়াউর রহমান তার শাসনকে বেসামরিক করার উদ্দেশ্যে ১৯ দফা কর্মসূচি শুরু করেন। জিয়া যখন সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি রাষ্ট্রপতির পদের জন্য নির্বাচন করবেন তখন তার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন আব্দুস সাত্তার।
কামরুল হাসান (২ ডিসেম্বর ১৯২১ - ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮) প্রখ্যাত বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী। তিনি ড্রইং-এ দক্ষতা অর্জন করে বিশ্বব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছিলেন। কামরুল হাসানকে সবাই শিল্পী বললেও তিনি নিজে 'পটুয়া' নামে পরিচিত হতে পছন্দ করতেন। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে জেনারেল ইয়াহিয়ার মুখের ছবি দিয়ে আঁকা এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে পোস্টারটি খুব বিখ্যাত।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা বা মির্জা মুহম্মদ সিরাজ-উদ-দৌলা (১৭৩২–১৭৫৭) ছিলেন বাংলা-বিহার-ওড়িশার শেষ স্বাধীন নবাব। তিনি ১৭৫৬ থেকে ১৭৫৭ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর রাজত্বের সমাপ্তির পর বাংলা এবং পরবর্তীতে প্রায় সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশের উপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের সূচনা হয়।সিরাজউদ্দৌলা তার নানা নবাব আলীবর্দী খানের কাছ থেকে ২৩ বছর বয়সে ১৭৫৬ সালে বাংলার নবাবের ক্ষমতা অর্জন করেন। তার সেনাপতি মীরজাফর, রায়দুর্লভ, বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ২৩ জুন ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন। রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসনভার গ্রহণ করে।
জিয়াউর রহমান (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ৩০ মে ১৯৮১) ছিলেন বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন সেনাপ্রধান এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাঙালি জনগণের উপর আক্রমণ করার পর তিনি তার পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে বিদ্রোহ করেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরে ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা সমর্থনে একটি বিবৃতি পাঠ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করে। তবে মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকার সময় সংবিধান লঙ্ঘন, শেখ মুজিবের আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের অভিযোগে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) তার বীর উত্তম খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তার খেতাব বাতিল করা হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে সরিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর ১৯৮১ সালের ৩০শে মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে নির্মমভাবে নিহত হন। ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলা পরিচালিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জরিপে ২০ জন শ্রেষ্ঠ বাঙালির মধ্যে জিয়াউর রহমানের নাম ১৯ নম্বরে উঠে আসে।