The most-visited বাংলা Wikipedia articles, updated daily. Learn more...
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস যা ২৬শে মার্চ তারিখে পালিত বাংলাদেশের জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে (কাল রাত) তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করে। ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণের ডাক দেন। ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী (গুজরাটি: નરેન્દ્ર દામોદરદાસ મોદી; উচ্চারণ শুনুন , জন্ম ১৭ই সেপ্টেম্বর, ১৯৫০) ভারতের পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রী। এই রাজনীতিবিদ ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ষোড়শ সাধারণ নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টিকে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে বহুমতের দ্বারা জয়লাভ লাভ করেন এবং ২৬শে মে ভারতের পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি গুজরাটের চতুর্দশ মুখ্যমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ই মার্চ ১৯২০–১৫ই আগস্ট ১৯৭৫), সংক্ষিপ্তাকারে শেখ মুজিব বা মুজিব, ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বাঙালির অধিকার রক্ষায় ব্রিটিশ ভারত থেকে শুরু করে ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। শুরুতে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, এরপর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে মুজিবকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্ব দেয়ার পাশাপাশি প্রাচীন বাঙালি সভ্যতার আধুনিক স্থপতি হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। এসকল কারণে তাকে বাংলাদেশের “জাতির জনক” বা “জাতির পিতা” হিসেবে গণ্য করা হয়। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” বা “শেখ সাহেব” নামে এবং তার উপাধি “বঙ্গবন্ধু” হিসেবেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী।
বাংলাদেশ (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। ভূ-রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয়, পূর্ব সীমান্তে আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে মায়ানমারের চিন ও রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণ উপকূলের দিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের সিংহভাগ অঞ্চল জুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অবস্থিত। নদীমাতৃক বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ছেয়ে আছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন ও দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে অবস্থিত।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ (উচ্চারণ: [ʃad̪ʱinot̪a ɟud̪d̪ʱo]; শাধিনতা জুদ্ধো) বা মুক্তিযুদ্ধ (উচ্চারণ: [mukt̪iɟud̪d̪ʱo]; মুক্তিজুদ্ধো) হলো ১৯৭১ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি বিপ্লব ও সশস্ত্র সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবং বাঙালি গণহত্যার প্রেক্ষিতে এই জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পশ্চিম পাকিস্তান-কেন্দ্রিক সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে এবং নিয়মতান্ত্রিক গণহত্যা শুরু করে। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সাধারণ বাঙালি নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং পুলিশ ও ই.পি.আর. কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বীকার করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে গণবিদ্রোহ দমনে পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী শহর ও গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান ও বিমানযুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইসলামি দলগুলোর সমর্থন লাভ করে। সেনাবাহিনীর অভিযানে সহায়তার জন্য তারা ইসলামি মৌলবাদীদের নিয়ে আধা-সামরিক বাহিনী— রাজাকার, আল বদর ও আল শামস গঠন করে। পূর্ব পাকিস্তানের উর্দু-ভাষী বিহারিরাও সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে। পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের সহায়তাকারী আধা-সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা, উচ্ছেদ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যাসহ একাধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়। প্রায় এক কোটি বাঙালি শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং আরও তিন কোটি মানুষ দেশের অভ্যন্তরে উদ্বাস্তু হয়। বাঙালি ও উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতাকে বুদ্ধিজীবীরা গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। বাঙালি সামরিক, আধা-সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনী চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেনারেল এম. এ.
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ মে ১৮৬১ - ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়-শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি; গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।ক[›] ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা-এ তার "অভিলাষ" কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৮৭৮ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ প্রথমবার ইংল্যান্ডে যান। ১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তার পত্নীবিয়োগ হয়। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘজীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তার মৃত্যু হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদি ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তার রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষ কে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে; রবীন্দ্রনাথ দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন। সংগীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। রবীন্দ্রনাথের গান তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার রচিত জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ও আমার সোনার বাংলা গানদুটি যথাক্রমে ভারত প্রজাতন্ত্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। মনে করা হয় শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত শ্রীলঙ্কা মাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে লেখা হয়েছে।
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও, বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে; অন্যদিকে, এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তানের ছিল দুইটি অংশ: পূর্ব বাংলা (১৯৫৫ সালে পুনর্নামাঙ্কিত পূর্ব পাকিস্তান) ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারের অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য বিরাজমান ছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার ঘোষণা করে যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কার্যত পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন বাদামতলী কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের ছেলে রফিক, সালাম, এম. এ.
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বলতে ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণাবার্তা ও প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার বা মুজিবনগর সরকার কর্তৃক ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত অন্য একটি ঘোষণাপত্রকে বোঝায়। যতদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলেছে ততদিন মুজিবনগর সরকার পরিচালনার অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধান বা ক্রান্তিকালীন বিধান হিসেবে এই ঘোষণাপত্র কার্যকর ছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার পরও এই ঘোষণাপত্র সংবিধান হিসেবে কার্যকর ছিল। ১৯৭২ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর তারিখে যখন দেশের নতুন সংবিধান প্রণীত হয় তখন সংবিধান হিসেবে এর কার্যকারিতার সমাপ্তি ঘটে।
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বড়ুচণ্ডীদাস নামক জনৈক মধ্যযুগীয় কবি রচিত রাধাকৃষ্ণের প্রণয়কথা বিষয়ক একটি আখ্যানকাব্য। ১৯০৯ সালে{তারিখ অজানা} বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ পশ্চিম বঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের নিকটবর্তী কাঁকিল্যা (কালিয়া) গ্রামের শ্রীনিবাস আচার্যের দৌহিত্র বংশীয় দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় নামক এক ব্রাহ্মণের বাড়ির গোয়ালঘরের মাচার ওপর থেকে এই কাব্যের একটি পুথি আবিষ্কার করেন। ১৯১৬ সালে তারই সম্পাদনায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামে পুথিটি প্রকাশিত হয়; যদিও কারও কারও মতে মূল গ্রন্থটির নাম ছিল ‘শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ’। বৌদ্ধ-সহজীয়া গ্রন্থ চর্যাপদের পর এটিই আদি-মধ্য বাংলা ভাষার প্রাচীনতম আবিষ্কৃত নিদর্শন।
স্বামীজীকে যেরূপ দেখিয়াছি (মূল ইংরেজিতে: The Master as I Saw Him: Being pages of the life of the Swami Vivekananda) (১৯১০) হল ভগিনী নিবেদিতার লেখা একটি বই। ১৮৯৫ সালের নভেম্বর মাসে ইংল্যান্ডে নিবেদিতার সঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দের আলাপ হয়। বিবেকানন্দের সঙ্গে তার সাক্ষাতের অভিজ্ঞতার কথা এই বইতে লিপিবদ্ধ করেন নিবেদিতা। বইটি ইংল্যান্ড ও ভারত থেকে একযোগে প্রকাশিত হয়। বর্তমানে এটিকে একটি ধ্রুপদি গ্রন্থের মর্যাদা দেওয়া হয়। বইটি বাংলায় অনুবাদ করে স্বামী মাধবানন্দ, যা ১৯৬৪ সালে প্রকাশ হয়।
সত্যজিৎ রায় (২ মে ১৯২১ – ২৩ এপ্রিল ১৯৯২) একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সঙ্গীত পরিচালক এবং লেখক। তাকে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। সত্যজিতের জন্ম কলকাতা শহরে সাহিত্য ও শিল্প সমাজে খ্যাতনামা রায় পরিবারে। তার পূর্বপুরুষের ভিটা ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কিশোরগঞ্জে (বর্তমানে বাংলাদেশ) কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। সত্যজিতের কর্মজীবন একজন বাণিজ্যিক চিত্রকর হিসেবে শুরু হলেও প্রথমে কলকাতায় ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা জঁ রনোয়ারের সাথে সাক্ষাৎ ও পরে লন্ডন শহরে সফররত অবস্থায় ইতালীয় নব্য বাস্তবতাবাদী চলচ্চিত্র লাদ্রি দি বিচিক্লেত্তে (ইতালীয়: Ladri di biciclette, বাইসাইকেল চোর) দেখার পর তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ হন।
অপারেশন সার্চলাইট (ইংরেজি: Operation Searchlight) ১৯৭১সালে ২৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত পরিকল্পিত গণহত্যা, যার মাধ্যমে তারা ১৯৭১ এর মার্চ ও এর পূর্ববর্তী সময়ে সংঘটিত বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দমন করতে চেয়েছিল। এই গণহত্যা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের আদেশে পরিচালিত,যা ১৯৭০ এর নভেম্বরে সংঘটিত অপারেশন ব্লিটজ্ এর পরবর্তি অনুষঙ্গ। অপারেশনটির আসল উদ্দেশ্য ছিল ২৬ মার্চ এর মধ্যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সব বড় বড় শহর দখল করে নেয়া এবং রাজনৈতিক ও সামরিক বিরোধীদের এক মাসের ভেতর নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। বাঙালিরা তখন পাল্টা প্রতিরোধ সৃষ্টি করে,যা পাকিস্তানি পরিকল্পনাকারীদের ধারণার বাইরে ছিল। মে এর মাঝামাঝি সময়ে সকল বড় বড় শহরের পতন ঘটার মধ্যে দিয়ে অপারেশন সার্চলাইটের প্রধান অংশ শেষ হয়। এই সামরিক আক্রমণ ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে ত্বরান্বিত করে। এই গণহত্যা বাঙালিদের ক্রুদ্ধ করে তোলে যে কারণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙ্গালি অফিসার ও সৈনিকেরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হয় এবং বহু মানুষকে শরণার্থীরূপে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়। এই ভয়াবহ গণহত্যা ১৯৭১ এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায় এবং বাঙালিরা দখলদারী পাকিস্তানি বাহিনীকে বিতারিত করার সংগ্রামে লিপ্ত হয়। পরিণতিতে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ কমান্ড "মিত্র বাহিনী" এর কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিনাশর্তে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।।
যে শব্দের দ্বারা সংক্ষেপে কোন বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে ব্যক্ত করা যায় তাকেই পরিভাষা বলা হয়। শব্দ হল যেকোন কিছুর নাম বা তাকে ভাষায় প্রকাশ করার উপায়, প্রতিশব্দ হল সমার্থক শব্দ; কিন্তু পরিভাষা পুরোপুরিই সংজ্ঞাবাচক। এর অর্থ ব্যাপক। একটি পরিভাষা একটি পরিপূর্ণ সংজ্ঞাকে নির্দেশ করে। শব্দের অর্থ এবং পরিভাষার অর্থ ভিন্ন বা একেবারে বিপরীত হতে পারে। যেমন, বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শব্দটি সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে। সংস্কৃতে বিজ্ঞান শব্দের অর্থ ছিল ঈশ্বরানুভব, অপরোক্ষ জ্ঞান, তত্ত্বজ্ঞান বা বিশেষ জ্ঞান। কিন্তু বাংলায় এটি ইংরেজি science শব্দের পরিভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই বাংলায় বিজ্ঞান শব্দের অর্থ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার ফলে কোন বিষয়ে ক্রম অনুসারে লব্ধ জ্ঞান। ঈশ্বরানুভূতি এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান একেবারে বিপরীত। দেখা যাচ্ছে, পরিভাষার অর্থ সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং এটিই বর্তমানে একটি সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞার জন্ম দিয়েছে।
ভারত (শুনুন ) দক্ষিণ এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম ভারতীয় প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এবং পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল, ও ভুটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার (৪,৬৭১ মাইল)।সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। ঐতিহাসিক সিন্ধু সভ্যতা এই অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত হয়েছিল বিশালাকার একাধিক সাম্রাজ্য। নানা ইতিহাস-প্রসিদ্ধ বাণিজ্যপথ এই অঞ্চলের সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করত। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ—বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুষ্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম এদেশে প্রবেশ করে, ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে এই দেশ পুরোদস্তুর একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।
জিয়াউর রহমান (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ৩০ মে ১৯৮১) ছিলেন বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন সেনাপ্রধান এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাঙালি জনগণের উপর আক্রমণ করার পর তিনি তার পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে বিদ্রোহ করেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরে ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা সমর্থনে একটি বিবৃতি পাঠ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করে। তবে মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকার সময় সংবিধান লঙ্ঘন, শেখ মুজিবের আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের অভিযোগে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) তার বীর উত্তম খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে সরিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর ১৯৮১ সালের ৩০শে মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে নির্মমভাবে নিহত হন।
বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্য নামে পরিচিত। আনুমানিক খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনার সূত্রপাত হয়। খ্রিষ্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত বৌদ্ধ দোহা-সংকলন চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আরও তিনটি গ্রন্থের সঙ্গে চর্যাগানগুলো নিয়ে সম্পাদিত গ্রন্থের নাম দেন " হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোহা "। মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্য ছিল কাব্যপ্রধান। হিন্দুধর্ম, ইসলাম ও বাংলার লৌকিক ধর্মবিশ্বাসগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই সময়কার বাংলা সাহিত্য। মঙ্গলকাব্য, বৈষ্ণব পদাবলি, শাক্তপদাবলি, বৈষ্ণব সন্তজীবনী, রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবতের বঙ্গানুবাদ, পীরসাহিত্য, নাথসাহিত্য, বাউল পদাবলি এবং ইসলামি ধর্মসাহিত্য ছিল এই সাহিত্যের মূল বিষয়। বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার সূত্রপাত হয় খ্রিষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার নবজাগরণের যুগে কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে বাংলা সাহিত্যে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। এই সময় থেকে ধর্মীয় বিষয়বস্তুর বদলে মানুষ, মানবতাবাদ ও মানব-মনস্তত্ত্ব বাংলা সাহিত্যের প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর বাংলা সাহিত্যও দুটি ধারায় বিভক্ত হয়: কলকাতা-কেন্দ্রিক পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য ও ঢাকা-কেন্দ্রিক বাংলাদেশের সাহিত্য। বর্তমানে বাংলা সাহিত্য বিশ্বের একটি অন্যতম, সমৃদ্ধ সাহিত্যধারা হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।
ব্রাহ্মসমাজ বা ব্রাহ্মসভা ১৯ শতকে স্থাপিত এক সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলন যা বাংলার পূনর্জাগরণের পুরোধা হিসেবে পরিচিত। কলকাতায় ২০ আগস্ট, ১৮২৮ সালে হিন্দুধর্ম সংস্কারক রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩) ও তার বন্ধুবর্গ মিলে এক সার্বজনীন উপাসনার মাধ্যমে ব্রাহ্মসমাজ শুরু করেন। তাদের উপাস্য ছিল "নিরাকার ব্রহ্ম", তাই থেকেই নিজেদের ধর্মের নাম রাখেন ব্রাহ্ম।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অস্থায়ী সরকার (যা মুজিবনগর সরকার বা প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার নামেও পরিচিত) মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমান মুজিবনগর) শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের জনগণের প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী সংগঠন ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় এবং এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ সহায়তাকারী রাষ্ট্র ভারতের সরকার ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক রক্ষায় এই সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। এই সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ প্রবল যুদ্ধে রূপ নেয় এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত হয়।
জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত মুক্তিযোদ্ধা ও নিহত বেসামরিক বাঙালি ও অবাঙ্গালিদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত একটি স্মারক স্থাপনা। এটি সাভারে অবস্থিত। এর নকশা প্রণয়ন করেছেন স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন। এখানে মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের দশটি গণকবর রয়েছে। বিদেশি রাষ্ট্রনায়কগণ সরকারিভাবে বাংলাদেশ সফরে আগমন করলে এই স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন রাষ্ট্রাচারের অন্তর্ভুক্ত।
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭০
ইয়াহিয়া খানের সামরিক শাসনামলে ১৯৭০ সনে পাকিস্তানে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ব পাকিস্তানে ১৯৭০ সনের অক্টোবরে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও বন্যার কারণে ডিসেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ১৯৭১ এর জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে যায়।
কাজী নজরুল ইসলাম (২৫ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬; ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ – ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) রাঢ় বাংলায় জন্ম নেওয়া একজন বাঙালি কবি এবং পরবর্তী কালে বাংলাদেশের জাতীয় কবি। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য এবং তিনি ছিলেন বাঙালি মনীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ – দুই বাংলাতেই তার কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। তার কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।বিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তার কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা হাতে তার প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তার প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে – কাজেই "বিদ্রোহী কবি", তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উভয় বাংলাতে প্রতি বৎসর উদযাপিত হয়ে থাকে।
চণ্ডীদাস (১৩৭০-১৪৩০),মধ্যযুগের চতুর্দশ শতকের বাঙালি কবি। তিনি চৈতন্য-পূর্ব বাংলা সাহিত্যে বৈষ্ণব পদাবলী রচয়িতা হিসেবে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন। চৈতন্যদেবের জন্মের আগে থেকেই চণ্ডীদাসের নামোল্লেখিত বহু গীতিপদ মানুষের মুখে মুখে ফিরত। চৈতন্যদেব নিজে তার পদ আস্বাদন করতেন। শ্রুতি আছে, রজকিনী রামী তার সহজসাধনের সঙ্গিনী ছিলেন।
মুজিব বর্ষ হলো বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিক পালনের জন্য ঘোষিত বর্ষ। বাংলাদেশ সরকার ২০২০-২১ সালকে (১৭ই মার্চ ২০২০ থেকে ১৭ই মার্চ ২০২১ পর্যন্ত) মুজিব বর্ষ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত এ বর্ষ উদযাপন করার কথা থাকলেও, করোনাভাইরাসের কারণে গ্রহণ করা কর্মসূচিগুলো নির্ধারিত সময়ে যথাযথভাবে করতে না পারায় মুজিববর্ষের মেয়াদ প্রায় ৯ মাস বাড়িয়ে সময়কাল ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। বাংলাদেশের জাতির পিতা এবং বঙ্গবন্ধু খ্যাত নেতা অবিভক্ত ভারতের পূর্ববঙ্গে (বর্তমানে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে) ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আবার ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতার অর্ধ-শত বার্ষিকীতে পদার্পণ করবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে শেখ মুজিবুর রহমান ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকায় ঘোষিত বর্ষটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মুজিব বর্ষের লোগোর নকশা করেন সব্যসাচী হাজরা।
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] (শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ – ৪ জুলাই ১৯০২) নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত (বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন। ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...," ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা, যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন। স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তার রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরিয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান ইতিমধ্যে বসানো সম্পন্ন হয়েছে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু। পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বাংলা: বাংলাদেশ গণসংঘ) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটির গোড়াপত্তন হয় ২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী কালে এর নাম ছিল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭০ সাল থেকে এর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এর নাম "আওয়ামী লীগ" করা হয়।
২০০২ গুজরাট দাঙ্গা ছিল পশ্চিম ভারতের গুজরাত রাজ্যে তিন দিনের আন্ত-সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, যা ২০০২ গুজরাট সহিংসতা এবং গুজরাট সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসাবেও পরিচিত। প্রাথমিক ঘটনার পরে আহমেদাবাদ শহরে তিন মাস ধরে সহিংসতার আরও প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ে; পরের বছর, রাজ্যব্যাপী, সংখ্যালঘু মুসলিম জনসংখ্যার বিরুদ্ধে সহিংসতার আরও প্রকোপ দেখা যায়। ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধড়ায় একটি ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, যার ফলে কারণে অযোধ্যা থেকে ফিরে আসা ৫৯ জন হিন্দু তীর্থযাত্রী মারা যায়। এই ঘটনাকে গুজরাত সহিংসতার প্ররোচনা বলে উল্লেখ করা হয়।সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে, দাঙ্গায় ১,০৪৪ জন নিহত, ২২৩ নিখোঁজ এবং ২,৫০০ আহত হয়। নিহতদের মধ্যে ৭৯০ জন মুসলমান এবং ২৫৪ হিন্দু ছিলেন। সংশ্লিষ্ট নাগরিক ট্রাইব্যুনাল রিপোর্টে, অনুমান করেছে যে প্রায় ১,৯২৬ জন নিহত হতে পারে। অন্যান্য উত্স অনুসারে মৃতের সংখ্যা ২ হাজারেরও বেশি। বহু নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের পাশাপাশি ব্যাপক লুটপাট ও সম্পদ ধ্বংসের খবর পাওয়া যায়। গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এবং পরবর্তীকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে এই সহিংসতা শুরু করার এবং প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়, যেমন পুলিশ এবং সরকারী আধিকারিকরা যারা দাঙ্গাকারীদের নির্দেশনা দিয়েছিল এবং মুসলমানদের মালিকানাধীন সম্পত্তির তালিকা তাদেরকে দিয়েছিল।২০১২ সালে, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক নিযুক্ত বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) দ্বারা নরেন্দ্র মোদি'র সহিংসতায় জড়িত থাকার বিষয় খারিজ করা হয়। এসআইটি এই দাবিও প্রত্যাখ্যান করেছিল যে রাজ্য সরকার দাঙ্গা প্রতিরোধে যথেষ্ট কাজ করেনি। মুসলিম সম্প্রদায় ক্রোধ ও অবিশ্বাসের সাথে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল বলে জানা গেছে। জুলাই ২০১৩ সালে, অভিযোগ করা হয়েছিল যে এসআইটি প্রমাণকে গোপন করেছে। ডিসেম্বরে, একটি ভারতীয় আদালত পূর্ববর্তী এসআইটি রিপোর্টকে সমর্থন করে এবং নরেন্দ্র মোদীর বিচারের জন্য আবেদন করা একটি আবেদন নাকচ করে দেয়। ২০১৪ সালের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্ট সহিংসতার সাথে জড়িত নয়টি মামলায় এসআইটির তদন্তের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এবং এসআইটি রিপোর্টকে "ভিত্তিহীন" হিসাবে উল্লেখ করার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে।যদিও সরকারীভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে, তবে ২০০২ সালের ঘটনাগুলি অনেক পণ্ডিত একটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসাবে বর্ণনা করেন, কিছু মন্তব্যকারী অভিযোগ করেন যে এই হামলার পরিকল্পনা করা হয়, ট্রেনের উপর হামলা একটি "পর্যায়ক্রমিক লক্ষ্য" হিসাবে। অন্যান্য পর্যবেক্ষকরা বলেছেন যে এই ঘটনাগুলি "গণহত্যার আইনি সংজ্ঞা"র শর্ত পূর্ণ করে, বা ঘটনাগুলিকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ বা জাতিগত নির্মূলকরণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। গণ-সহিংসতার উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে নরদা পটিয়া হত্যাযজ্ঞ, যা সরাসরি পুলিশ প্রশিক্ষণ শিবিরের সংলগ্ন স্থানে সংগঠিত হয়; গুলবার্গ সোসাইটি গণহত্যা যেখানে নিহতদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য এহসান জাফরিও ছিলেন; এবং ভাদোদরা শহরে বেশ কয়েকটি ঘটনা। ২০০২ এর দাঙ্গা অধ্যয়নরত পণ্ডিতরা বলেছেন যে ঘটনাগুলি পূর্বকল্পিত ছিল এবং একটি ধরনের জাতিগত নির্মূলকরণ সংগঠিত হয় এবং রাজ্য সরকার এবং আইন প্রয়োগকারীরা হিংস্র সংঘর্ষে জড়িত ছিল।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকান্ড সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সেনা শাখা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ভাস্কো দা গামা (১৪৬৯ - ডিসেম্বর ২৪, ১৫২৪, কোচি, ভারত) একজন পর্তুগীজ অনুসন্ধানকারী এবং পর্যটক যিনি প্রথম পঞ্চদশ শতাব্দীতে সমুদ্রপথে ইউরোপ থেকে ভারতে আসেন। তিনিই প্ৰথম ইউরোপীয় ব্যক্তি যিনি সম্পূৰ্ণ সাগর পথ পাড়ি দিয়ে ভারতে এসে উপস্থিত হন, তার ভ্ৰমণে এশিয়া এবং ইউরোপকে সংযোগ করার সাথে সাথে আটলান্তিক মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগরকে সংযোগ করেছিল এবং এ দিক থেকেই তিনি পশ্চিমা সংস্কৃতির সাথে পাশ্চাত্য দুনিয়ার সেতুবন্ধন গড়ে তোলেন৷ তার প্ৰথম ভারতমুখী ভ্ৰমণে (১৪৯৭-১৪৯৯) এই কাজ সম্পন্ন হয়েছিল৷ ভাস্কো দা গামার এই আবিষ্কার বৈশ্বিক সাম্ৰাজ্যবাদের ইতিহাসে অতি তাৎপৰ্য্যপূৰ্ণ ছিল কারণ এই ভ্ৰমণের দ্বারাই পর্তুগীজদের এশিয়া মহাদেশে দীৰ্ঘকালীন উপনিবেশ স্থাপনের পথ সুগম হয়েছিল৷ তার দ্বারা আবিষ্কৃত পথটি বিবাদপূৰ্ণ ভূমধ্য সাগর এবং বিপদজনক আরব উপদ্বীপ পার হওয়া থেকে রেহাই দিয়েছিল কারণ সমগ্র পথটিই ছিল সাগর পথে৷
বীর শ্রেষ্ঠ বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক পুরস্কার । যুদ্ধক্ষেত্রে অতুলনীয় সাহস ও আত্মত্যাগের নিদর্শন স্থাপনকারী যোদ্ধার স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক দেয়া হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে এই পদক দেয়া হয়েছে ।গুরুত্বের ক্রমানুসারে বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের অন্যান্য সামরিক পদক হল - বীর উত্তম, বীর বিক্রম ও বীর প্রতীক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পরই এই পদকগুলো দেয়া হয়। ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ গেজেটের একটি অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়।
স্বাধীনতা (বাংলা উচ্চারণ: [স্বাধীনতা] (শুনুন)) একটি শর্ত, যেখানে একটি জাতি, দেশ, বা রাষ্ট্র বা জায়গা যেখানে জনগণ থাকবে, নিজস্ব শাসনব্যবস্থা, এবং সাধারণত কোন অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব থাকবে। স্বাধীনতার বিপরীত হচ্ছে পরাধীনতা. স্বাধীনতা মানে যা খুশি তা করা নয়। স্বাধীনতা দীর্ঘ বিপ্লব বা সহিংসতার প্রশ্নে বিতর্ক যেভাবেই হোক, সার্বভৌমত্ব অর্জন যদিও কিছু বিপ্লবের উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য জাতীয় স্বাধীনতা অর্জন; অন্যদের শুধুমাত্র ক্ষমতা লাভের উদ্দেশ্য, যেখানে মুক্তির উপাদান থাকে, যেমন একটি দেশের মধ্যে গণতন্ত্রায়ন, যেখানে সীমানায় কোন পরিবর্তন হয় না। জাতি-রাষ্ট্র কোন বিপ্লবী কর্মকাণ্ড ছাড়া স্বাধীনতা দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ রাশিয়ার অক্টোবর বিপ্লব,জাতীয় স্বাধীনতার উদ্দেশ্যে হয়নি। (যদিও এর মাধ্যমে রুশ সাম্রাজ্যে ক্ষমতার পালা বদল হয়েছিল, যদিও এর ফলে পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, লাতভিয়া এবং ইস্তোনিয়া স্বাধীনতা লাভ করে).
মুহাম্মাদ (২৯ আগস্ট ৫৭০ - ৮ জুন ৬৩২; আরবি উচ্চারণ শুনতে ক্লিক করুন محمد মোহাম্মদ এবং মুহম্মদ নামেও পরিচিত; তুর্কি : মুহাম্মেদ), পূর্ণ নাম : মুহাম্মাদ ইবনে ʿআবদুল্লাহ ইবনে ʿআবদুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম (ابو القاسم محمد ابن عبد الله ابن عبد المطلب ابن هاشم) হলেন ইসলামের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব এবং ইসলামী বিশ্বাস মতে আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সর্বশেষ নবী, (আরবি: النبي আন-নাবিয়্যু), তথা "বার্তাবাহক" (আরবি : الرسول আর-রাসুল), যার উপর ইসলামী প্রধান ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অমুসলিমদের মতে তিনি ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, মুহাম্মাদ ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সফলতা।আনুমানিক ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে (হস্তিবর্ষ) মক্কা নগরীতে জন্ম নেওয়া মুহাম্মাদ মাতৃগর্ভে থাকাকালীন পিতা হারা হন শিশু বয়সে মাতাকে হারিয়ে এতিম হন এবং প্রথমে তার পিতামহ আবদুল মুত্তালিব ও পরে পিতৃব্য আবু তালিবের নিকট লালিত পালিত হন। হেরা পর্বতের গুহায় ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুওয়াত লাভ করেন। জিবরাঈল ফেরেশতা এই পর্বতের গুহায় আল্লাহর তরফ থেকে তার নিকট ওহী নিয়ে আসেন। তিন বছর পর ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে ওহী প্রচার করেন, এবং ঘোষণা দেন "আল্লাহ্ এক" ও তার নিকট নিজেকে সঁপে দেওয়ার মধ্যেই জাগতিক কল্যাণ নিহিত, এবং ইসলামের অন্যান্য নবীদের মত তিনিও আল্লাহর প্রেরিত দূত।মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মুহাম্মাদের নিকট আসা ওহীসমূহ কুরআনের আয়াত হিসেবে রয়ে যায় এবং মুসলমানরা এই আয়াতসমূহকে "আল্লাহর বাণী" বলে বিবেচনা করেন। এই কুরআনের উপর ইসলাম ধর্মের মূল নিহিত। কুরআনের পাশাপাশি হাদিস ও সিরাত (জীবনী) থেকে প্রাপ্ত মুহাম্মাদের শিক্ষা ও অনুশীলন (সুন্নাহ) ইসলামী আইন (শরিয়াহ) হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
দ্য হিন্দু উইডো'স রিম্যারেজ অ্যাক্ট, ১৮৫৬ আইনটি ২৬ জুলাই ১৮৫৬ এ আইন প্রণয়ন করেছিল, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনাধীনে ভারতবর্ষের সকল বিচারব্যবস্থায় হিন্দু বিধবাদের পুনর্বিবাহ বৈধ করেছিল। বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় তৎকালীন বড়লাট লর্ড ডালহৌসি আইন প্রণয়ন করে বিধবা বিবাহ কে আইনি স্বীকৃতি দেন । লর্ড উইলিয়ম বেন্টিনয়ের দ্বারা সতীদাহ বিলুপ্ত করার পর এটিই প্রথম বড় সমাজ সংস্কার আইন।.পারিবারিক সম্মান ও পারিবারিক সম্পত্তির কথা বিবেচনা করে, উচ্চ-বর্ণবাদী হিন্দু সমাজ দীর্ঘদিন ধরে বিধবা, এমনকি শিশু ও কিশোর-কিশোরদের পুনর্বাসনের বা বিয়ের অনুমতি দেয়নি, যার ফলে তাদের অনেক নিষ্ঠুর ও বঞ্চনার জীবনযাপন করতে হত। ১৮৫৬ সালের হিন্দু বিধবা পুনর্বিবাহ আইন একজন হিন্দু বিধবার উত্তরাধিকারের জন্য কিছু ক্ষতির বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষা প্রদান করেছিল, যদিও, আইনের অধীনে বিধবা তার মৃত স্বামীর উত্তরাধিকার ত্যাগ করে। বিশেষ করে এই আইন করার লক্ষ্য ছিল কিছু হিন্দু বিধবা শিশুর জন্য, যার স্বামী বাড়িতে যাবার আগে বিধবা হয়ে যেতো।
মেসোপটেমিয়া (প্রাচীন গ্রীকঃ Μεσοποταμία অর্থ-দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভূমি, আরবিঃ بلاد الرافدين ) বর্তমান ইরাকের টাইগ্রিস বা দজলা ও ইউফ্রেটিস বা ফোরাত নদী দুটির মধ্যবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল। অধুনা ইরাক, সিরিয়ার উত্তরাংশ, তুরষ্কের উত্তরাংশ এবং ইরানের খুযেস্তান প্রদেশের অঞ্চলগুলোই প্রাচীন কালে মেসোপটেমিয়ার অন্তর্গত ছিল বলে মনে করা হয় । মেসোপটেমিয় সভ্যতা পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতার অন্যতম। খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ হতে খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দের মধ্যে মেসোপটেমিয়ায় অতি উন্নত এক সভ্যতার উন্মেষ ঘটেছিল। সভ্যতার আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত এই অঞ্চল মিশরীয় সভ্যতার থেকে অনেকটাই ভিন্ন ছিল এবং বহিঃশত্রুদের থেকে খুব একটা সুরক্ষিত ছিল না বলে বারবার এর উপর আক্রমণ চলতে থাকে এবং পরবর্তীতে এখান থেকেই ব্রোঞ্জ যুগে আক্কাদীয়, ব্যবিলনীয়, আসিরীয় ও লৌহ যুগে নব্য-আসিরীয় এবং নব্য-ব্যাবিলনীয় সভ্যতা গড়ে উঠে।
লালন (১৭ অক্টোবর, ১৭৭৪ - ১৭ অক্টোবর, ১৮৯০) ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি; যিনি ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক বাউল সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক। তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং ‘বাউল-সম্রাট’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তার গানের মাধ্যমেই উনিশ শতকে বাউল গান বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
বিজয় দিবস বাংলাদেশে বিশেষ দিন হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের সর্বত্র পালন করা হয়। প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়। ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারীভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রায় ৯১,৬৩৪ সদস্য বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এর ফলে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। ভারতেও এই দিনটি বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে।
ফেইসবুক (ইংরেজি: Facebook) অথবা ফেসবুক (সংক্ষেপে ফেবু নামেও পরিচিত) বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। এর মালিক হলো ফেসবুক ইনক। ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন, সেই সাথে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকে এই ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়েছে।
বৈজ্ঞানিক বিপ্লব (scientific revolution) বলতে বিজ্ঞানের ইতিহাসের একটি সময়ব্যাপ্তিকে বোঝায়, ১৭ শতাব্দীতে ইয়োহানেস কেপলার, গ্যালিলিওদের অনুসন্ধান ও আবিষ্কারসমূহ দিয়ে যার শুরু এবং ১৬৮৭ সালে নিউটনের প্রিন্সিপিয়া ম্যাথেমেটিকার প্রকাশনার মাধ্যমে যার পরিণতি। এর পথ ধরেই পরবর্তীতে যুক্তি ও বিজ্ঞানের বিকাশকালের(Age of Enlightenment) শুরু।
বাংলা ভাষা (বাঙলা, বাঙ্গলা, তথা বাঙ্গালা নামগুলোতেও পরিচিত) একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। মাতৃভাষীর সংখ্যায় বাংলা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের পঞ্চম ও মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনুসারে বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা সার্বভৌম ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তথা সরকারি ভাষা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামের বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান কথ্য ভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, মেঘালয়, মিজোরাম, উড়িষ্যা রাজ্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী জনগণ রয়েছে। ভারতে হিন্দির পরেই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা। এছাড়াও মধ্য প্রাচ্য, আমেরিকা ও ইউরোপে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাংলাভাষী অভিবাসী রয়েছে। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৬ কোটির অধিক লোক দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ব্যবহার করে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও স্তোত্র বাংলাতে রচিত।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি জনবহুল ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্র। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশটি বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়। ভারতীয় উপমহাদেশের পূর্ব অংশে প্রাচীন ও ঐতিহাসিক অঞ্চলের প্রধান অংশের সাথে দেশটির সীমানা মিলেছে, যেখানে চার হাজারেরও বেশি বছর ধরে সভ্যতা চলছে, ক্যালকোলিথিক যুগেও। এই বাংলার ইতিহাস অনেক গৌরবের এবং ত্যাগের ইতিহাস। এলাকাটির প্রারম্ভিক ইতিহাস হল ভারতীয় সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং হিন্দু ও বৌদ্ধের মধ্যকার দ্বন্দ্বের ইতিহাস। ত্রয়োদশ শতাব্দীর পরে যখন মুসলিম অভিযাত্রীরা, যেমন তুর্কী, ইরানীয়, মুঘল প্রভৃতি এদেশে এসেছিল তখন ইসলাম ধীরে ধীরে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিল। পরবর্তীতে মুসলিম শাসকরা মসজিদ এবং মাদ্রাসা নির্মাণের মাধ্যমে রূপান্তরের প্রক্রিয়াটিকে শক্তিশালী করে ।।
যশোদাবেন নরেন্দ্রভাই মোদী (জন্ম ১৯৫২) হচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্ত্রী। ঐতিহ্য অনুসারে তারা শিশু থাকা অবস্থায় উভয় পরিবারের আয়োজনে তাদের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৮ সালে তাদের বিয়ের সময় নরেন্দ্র মোদীর বয়স ছিলো ১৮ এবং যশোদাবেনের ১৬। বিয়ের কিছুদিন পরে নরেন্দ্র মোদী যশোদাবেনকে ছেড়ে তিন বছরের জন্য সন্যাসব্রত পালনের উদ্দেশ্যে জন্য গৃহত্যাগ করেন। পরবর্তী জীবনে তিনি তার কাকার ব্যবসায় কাজ শুরু ও সরকারি অফিসে চাকরি করলেও যশোদাবেনকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেননি। আনুষ্ঠিকভাবে তিনি প্রথম বারের মতো তার বিয়ের কথা স্বীকার করেন ২০১৪ সালে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রচারণা প্রাক্কালে। যশোদাবেন নিজেকে নরেন্দ্র মোদীর স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তিনি বিয়ের পরেও তার পড়াশোনা চালিয়ে যান ও শিক্ষাজীবন শেষ করেন এবং পরবর্তীতে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণ করার পর যশোদাবেন খুবই সাধারণ জীবন যাপন করেন, যেখানে তার বেশিরভাগ সময় কাটে প্রার্থনা করে। প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী হিসেবে তিনি সরকারের একটি অংশ এবং সরকারিভাবে তাকে নিরাপত্তা প্রদান করা হয়, কিন্তু নিরাপত্তাকর্মীদের দায়িত্ব বা এই অবস্থানে থেকে তার অধিকার কী সে সম্পর্কে তিনি অবগত নন। ভারতীয় সমাজে নারী ও পুরুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যশোদাবেনের সাথে মোদীর এই বিয়ের বিতর্ক ভারতের গণমাধ্যমের অন্যতম আলোচিত একটি বিষয়।
তাওহিদ (আরবি: توحيد) ইসলাম ধর্মে এক আল্লাহর ধারণাকে বোঝায়। তাওহিদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ৷ ইসলামি পরিভাষায় তাওহিদ হল সৃষ্টি ও পরিচালনায় আল্লাহকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে বিশ্বাস করা, সকল ইবাদাত-উপাসনা কেবলমাত্র আল্লাহর জন্য করা, অন্য সবকিছুর উপাসনা ত্যাগ করা, আল্লাহর সুন্দর নামসমূহ ও সুউচ্চ গুণাবলীকে তার জন্য সাব্যস্ত করা এবং দোষ ত্রুটি থেকে আল্লাহকে পবিত্র ও মুক্ত ঘোষণা করা।
আল্লামা মামুনুল হক (জন্ম: নভেম্বর ১৯৭৩) একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, অধ্যাপক, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক, সম্পাদক, আন্তর্জাতিক ইসলামি বক্তা ও সমাজ সংস্কারক। তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া, ঢাকার শায়খুল হাদিস, বাবরি মসজিদ বাংলাদেশ, মাহাদুত তারবিয়্যাতুল ইসলামিয়া ও তারবিয়্যাতুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, মাসিক রহমানী পয়গামের সম্পাদক, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি ও বায়তুল মামুর জামে মসজিদের খতিব। তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের ইসলামি বক্তাদের সংগঠন রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন বাংলাদেশের উপদেষ্টাসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতৃস্থানীয় পদে রয়েছেন। ইংরেজি সহ পাঁচটি ভাষায় তার দক্ষতা রয়েছে। ইসলামি নেতা হিসেবে তিনি দেশব্যাপী পরিচিত। নাস্তিক, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী ও ইসলাম বিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে কঠোর বক্তব্য দিয়ে তিনি বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছেন এবং এ সংক্রান্ত আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ইসলামি মৌলবাদ প্রচারের অভিযোগে তাকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ, গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ ৬৫টি সংগঠন দেশব্যাপী ব্যাপক আন্দোলন করেছে।
যৌনসঙ্গম (যৌনমিলন, সঙ্গম, মৈথুন, রতিক্রিয়া, রতিমিলন; যৌন সংসর্গ, যৌন সহবাস, সহবাস ইত্যাদি) হচ্ছে একটি জৈবিক প্রক্রিয়া যা দ্বারা মূলত যৌনআনন্দ বা প্রজনন বা উভয় ক্রিয়ার জন্য একজন পুরুষের উত্থিত শিশ্ন একজন নারীর যোনিপথে অনুপ্রবেশ করানো ও সঞ্চালনা করাকে বোঝায়। অন্যান্য অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গমের মধ্যে রয়েছে পায়ুসঙ্গম (লিঙ্গ দ্বারা মলদ্বার অনুপ্রবেশ), মুখমৈথুন, অঙ্গুলিসঞ্চালন (আঙ্গুল দ্বারা যৌন অনুপ্রবেশ), যৌনখেলনা ব্যবহার দ্বারা অনুপ্রবেশ (বন্ধনীযুক্ত কৃত্রিম শিশ্ন)। এই সকল কার্যক্রম মূলত মানবজাতি কর্তৃক দুই বা ততোধিকের মধ্যেকার শারীরিক ও মানসিক অন্তরঙ্গতা জনিত পরিতোষ লাভের জন্য এবং সাধারণত মানব বন্ধনে ভূমিকা রাখতে সম্পাদিত হয়ে থাকে।যৌনসঙ্গম বা অপরাপর যৌনকর্ম কীভাবে সংজ্ঞায়িত হয় তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, যা যৌনস্বাস্থ্য বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিগুলোর উপর প্রভাব রাখতে পারে। যদিও যৌনসঙ্গম, নির্দিষ্টভাবে মৈথুন বলতে সাধারণত শিশ্ন-জরায়ুজ অনুপ্রবেশ ও সন্তান উৎপাদনের সম্ভাব্যতাকে নির্দেশ করা হয়, এর দ্বারা সাধারণভাবে অন্তর্ভেদী মুখমৈথুন ও বিশেষত শিশ্ন-পায়ুজ সঙ্গমকেও নির্দেশ করা হয়। এটি সাধারণত যৌন অনুপ্রবেশকে নির্দেশ করে, যেখানে অননুপ্রবেশকারী যৌনতাকে "বহির্সঙ্গম" নামে নামকরণ করা হয়, কিন্তু অনুপ্রবেশকারী যৌনকর্মকে যৌনসঙ্গম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। যৌনতা বা ইংরেজি ভাষায় সেক্স, প্রায়শই যৌনসঙ্গমের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যবহৃত রূপ, যা দ্বারা যে কোন প্রকারের যৌনক্রিয়াকে বোঝানো হতে পারে। যেহেতু এসকল যৌনকর্মের সময়ে মানুষ যৌনবাহিত সংক্রমণের সংস্পর্শের ঝুঁকিতে থাকতে পারে, নিরাপদ যৌনচর্চার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও অনাভেদী যৌনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়ে থাকে।বিভিন্ন আইনি বিধিমালা যৌনসঙ্গমমের সামাজিক অনুমতিপ্রদানের জন্য বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতির মাধ্যমে বৈবাহিক রীতির প্রবর্তন, প্রচলন ও সমর্থন করেছে এবং বেশ কিছু যৌনকর্মের বিপরীতে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনকে স্থান দিয়েছে, যেমন বিবাহপূর্ব ব্যভিচার ও বিবাহপরবর্তী পরকীয়া, পায়ুকাম, পশুকাম, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যৌনচর্চা ও অজাচার। ধর্মীয় বিশ্বাসও যৌনসঙ্গমসহ অন্যান্য যৌনাচার বিষয়ক ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে অন্যতম ভূমিকা পালন করে, যেমন কুমারীত্ব বিষয়ক সিদ্ধান্ত, অথবা আইনি বা সরকারী নীতিমালা সম্পর্কিত বিষয়াবলি। বিভিন্ন ধর্মভেদে ও একই ধর্মের বিভিন্ন শ্রেণীভেদে যৌনতা সম্পর্কিত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও কিছু বিষয়ে অভিন্নতা রয়েছে, যেমন ব্যভিচারের নিষেধাজ্ঞা।
কৃষিকাজের ইতিহাস বলতে শষ্য উৎপাদন ও প্রাণী পালন বিষয়সমূহ এবং এর উন্নয়ন ও ব্যপ্তির লিপিবদ্ধকরণকে বুঝানো হয়। কৃষিকাজ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে স্বাধীনভাবে শুরু হয় এবং বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকম পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। প্রাচীন ও আধুনিক বিশ্বের কমপক্ষে ১১টি অঞ্চলকে কৃষিকাজের স্বাধীন উৎপত্তির স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রাচীনতম পদ সংকলন তথা সাহিত্য নিদর্শন। নব্য ভারতীয় আর্যভাষারও প্রাচীনতর রচনা এটি। খ্রিষ্টীয় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত এই গীতিপদাবলির রচয়িতারা ছিলেন সহজিয়া বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যগণ। বৌদ্ধ ধর্মের গূঢ় অর্থ সাংকেতিক রূপের আশ্রয়ে ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যেই তাঁরা পদগুলো রচনা করেছিলেন। বাংলা সাধন সংগীত শাখাটির সূত্রপাতও হয়েছিলো এই চর্যাপদ থেকেই। সে বিবেচনায় এটি একটি ধর্মগ্রন্থজাতীয় রচনা। একই সঙ্গে সমকালীন বাংলার সামাজিক ও প্রাকৃতিক চিত্রাবলি এই পদগুলোতে উজ্জ্বল। এর সাহিত্যগুণ এখনও চিত্তাকর্ষক। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থশালা থেকে চর্যার একটি খণ্ডিত পুঁথি উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে চর্যাপদের সঙ্গে বাংলা ভাষার অনস্বীকার্য যোগসূত্র বৈজ্ঞানিক যুক্তিসহ প্রতিষ্ঠিত করেন। চর্যাপদের প্রধান কবিগণ হলেন লুইপাদ, কাহ্নপাদ, ভুসুকুপাদ, শবরপাদ প্রমুখ।
ভাষা ধারণাটির কোন সুনির্দিষ্ট, যৌক্তিক ও অবিতর্কিত সংজ্ঞা দেয়া কঠিন, কেননা যেকোন কিছুর সংজ্ঞা ভাষার মাধ্যমেই দিতে হয়। তাই ভাষার আত্মসংজ্ঞা প্রদান দুরূহ। তবে ভাষার একটি কার্যনির্বাহী সংজ্ঞা হিসেবে বলা যায় যে ভাষা মানুষের মস্তিষ্কজাত একটি মানসিক ক্ষমতা যা অর্থবাহী বাকসংকেতে রূপায়িত (বাগযন্ত্রের মাধ্যমে ধ্বনিভিত্তিক রূপে বা রূপে) হয়ে মানুষের মনের ভাব প্রকাশ করতে এবং একই সমাজের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে সহায়তা করে।
প্রতি বৎসর বিভিন্ন দিনে বিশ্বব্যাপী নানা "দিবস" পালিত হয়। এই সকল বৈশ্বিক দিবস বা বিশ্ব দিবস বা আন্তর্জাতিক দিবসসমূহের তালিকা এই পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো। এই সকল দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে - কোন একটি নির্দিষ্ট দিনে আন্তর্জাতিকভাবে সাম্প্রতিককালের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধি বা ক্ষেত্র বিশেষে কোন অতীত ঘটনা স্মরণ বা উদযাপন করা।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। মূল সংবিধান ইংরেজি ভাষায় রচিত হয় এবং একে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তাই এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধীত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য সংবিধানের ১৪২নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা পশ্চিমবঙ্গের এককক্ষবিশিষ্ট রাজ্য আইনসভা। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার বিবাদীবাগ এলাকায় হাইকোর্টের দক্ষিণে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভবনটি অবস্থিত। বিধানসভার সদস্যদের বিধায়ক বলা হয়। তাঁরা পাঁচ বছরের জন্য জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার মোট আসনসংখ্যা ২৯৫। এর মধ্যে ২৯৪টি আসনের বিধায়করা এক-আসনবিশিষ্ট বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সরাসরি নির্বাচিত হয়ে আসেন এবং এক জন সদস্য অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায় থেকে সরাসরি নির্বাচিত হন। সাধারণত, বিধানসভার মেয়াদ পাঁচ বছরের; তবে তার আগেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়া যায়।
জুমার নামাজ (আরবি: صلاة الجمعة ṣalāt al-jum`ah, "শুক্রবারের সালাত") ইসলামের অন্যতম একটি নামাজ। جُمُعَة (জুমু'আহ) শব্দটি আরবী । এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া । যেহেতু, সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মু'মিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামা'আতের সাথে সে দিনের যুহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরযরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাযকে "জুমু'আর নামায" বলা হয়। সময় একই হলেও যোহরের সাথে জুমার নামাজের নিয়মগত কিছু পার্থক্য রয়েছে।
ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি হলো ভারতের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রধান দুটি দলের অন্যতম (অপর দলটি হলো ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস)। ২০১৪ সালের হিসেব অনুসারে, ভারতের সংসদ ও রাজ্য বিধানসভাগুলির প্রতিনিধি সংখ্যার দিক থেকে এটি ভারতের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। প্রাথমিক সদস্যপদের দিক থেকে এটি বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। বিজেপি একটি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দল। জাতীয়তাবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সঙ্গে এই দলের আদর্শগত ও সংগঠনগত নৈকট্য রয়েছে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি রাজনৈতিক দল।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়; ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামেও স্বাক্ষর করতেন; ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ – ২৯ জুলাই ১৮৯১) উনবিংশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। সংস্কৃত ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল তাঁর। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রচনা করেছেন যুগান্তকারী শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়-সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য ও জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু রচনা। নারীমুক্তির আন্দোলনেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম তাঁর রচিত কাব্য, উপন্যাস, ছোটোগল্প, নাট্যসাহিত্য, প্রবন্ধ, চিত্রকলা ও সঙ্গীতের মধ্যে ছড়িয়ে আছে।
ইসলাম (আরবি) : আল-ইসলাম - [الإسلام] (শুনুন) রোমান হরফে : al-Islām - الإسلام) একটি একেশ্বরবাদী এবং ইব্রাহিমীয় ধর্মবিশ্বাস যার মূল শিক্ষা হল, এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন স্রষ্টা নেই এবং মুহাম্মদ হলেন আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবি ও রাসূল।এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান ধর্ম, যার অনুসারী সংখ্যা ১.৯ বিলিয়ন এবং পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২৪.৪%, যারা মুসলমান নামে পরিচিত। মুসলমানরা ৫০ এর অধিক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টি। ইসলাম শিক্ষা দেয় যে আল্লাহ দয়ালু, করুনাময়, এক ও অদ্বিতীয় এবং একমাত্র ইবাদতযোগ্য অভিভাবক।মানবজাতিকে পথ প্রদর্শনের জন্য তিনি যুগে-যুগে অনেক নবি-রাসূল, আসমানি কিতাব এবং নিদর্শন পাঠিয়েছেন। ইসলামে প্রধান ধর্মগ্রন্থ হলো পবিত্র কুরআন যা স্বয়ং আল্লাহর বাণী; আর সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবি মুহাম্মদ (২৯ আগস্ট ৫৭০- ৮ জুন ৬৩২) এর কথা, কাজ ও মৌনসম্মতিকে সুন্নাহ বলা হয় যা হাদিস নামে লিপিবদ্ধ রয়েছে। তবে সমস্ত সুন্নাহই হাদিস, কিন্তু সমস্ত হাদিস সুন্নাহ নয়।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ (আরবি: بيت المكرَّم الوطني مسجد) বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ। মসজিদটি রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র পল্টনে অবস্থিত। ১৯৬৮ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। এর স্থাপত্যশৈলী অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। তৎকালীন পাকিস্তানের বিশিষ্ট শিল্পপতি লতিফ বাওয়ানি ও তার ভাতিজা ইয়াহিয়া বাওয়ানির উদ্যোগে এই মসজিদ নির্মাণের পদক্ষেপ গৃহীত হয়। মসজিদে একসাথে ৩০,০০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে, ফলে ধারণক্ষমতার দিক দিয়ে এটি বিশ্বের ১০ম বৃহত্তম মসজিদ। তবে মসজিদটিতে জুমার নামাজ ছাড়াও বিশেষত রমজানের সময় অত্যধিক মুসল্লির সমাগম হয় বিধায়, বাংলাদেশ সরকার মসজিদের ধারণক্ষমতা ৪০ হাজারে উন্নিত করে।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৫ — ১৫ নভেম্বর ২০২০) একজন ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা। অভিনেতা হিসেবে তিনি কিংবদন্তি, তবে আবৃত্তি শিল্পী হিসেবেও তার নাম অত্যন্ত সম্ভ্রমের সাথেই উচ্চারিত হয়। তিনি কবি এবং অনুবাদকও। বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ৩৪টি সিনেমার ভিতর ১৪টিতে অভিনয় করেছেন।সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমহার্স্ট স্ট্রীট সিটি কলেজে, সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় অপুর সংসার ছবিতে অভিনয় করেন। পরবর্তীকালে তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মত পরিচালকদের সঙ্গেও কাজ করেছেন। সিনেমা ছাড়াও তিনি বহু নাটক, যাত্রা, এবং টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। অভিনয় ছাড়া তিনি নাটক ও কবিতা লিখেছেন, নাটক পরিচালনা করেছেন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানে দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার আওয়ামী লীগ নেতা ও পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩৫জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছিল। ১৯৬৮ সালের প্রথম ভাগে দায়ের করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, শেখ মুজিব ও অন্যান্যরা ভারতের সাথে মিলে পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই মামলাটির পূর্ণ নাম ছিল রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য মামলা। তবে এটি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা হিসাবেই বেশি পরিচিত, কারণ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল যে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় কথিত ষড়যন্ত্রটি শুরু হয়েছিল। মামলা নিষ্পত্তির চার যুগ পর মামলার আসামি ক্যাপ্টেন এ.
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একটি জাতীয় রাজনৈতিক দল। এই দল সাধারণভাবে কংগ্রেস নামে পরিচিত। কংগ্রেস দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলদুটির একটি (অপর দলটি হল ভারতীয় জনতা পার্টি)। এটি একটি ভারতের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন। ১৮৮৫ সালে থিওজোফিক্যাল সোসাইটির কিছু "অকাল্ট" সদস্য কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। এঁরা হলেন অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম, দাদাভাই নওরোজি, দিনশ এদুলজি ওয়াচা, উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, মনমোহন ঘোষ, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে ও উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন প্রমুখ। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব দান করেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করলে, কংগ্রেস দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। সেই থেকে মূলত নেহেরু-গান্ধী পরিবারই কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দান করতে থাকেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকা
ভারতের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাতে ১৫ আগস্ট, ১৯৪৭ তারিখে ভারত স্বাধীন হওয়ার দিন থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসন অলংকৃত করা সকল ব্যক্তির নাম সন্নিবিষ্ট করা হয়েছে।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (আরবি: إِنَّا لِلَّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ) হল কুরআনের একটি আয়াত (বাক্য) বা দোয়া, যার বাংলা অর্থ হল "আমরা তো আল্লাহরই এবং আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী"। কথাটা সাধারণত মুসলমানরা তাদের বেদনার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে উচ্চারণ করে, বিশেষ করে যখন একজন মুসলমান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ১৭৯৩ সালে কর্নওয়ালিস প্রশাসন কর্তৃক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সরকার ও বাংলার ভূমি মালিকদের (সকল শ্রেণির জমিদার ও স্বতন্ত্র তালুকদারদের) মধ্যে সম্পাদিত একটি স্থায়ী চুক্তি। এর প্রবক্তা লর্ড কর্নওয়ালিস। এ চুক্তির আওতায় জমিদার ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় ভূ-সম্পত্তির নিরঙ্কুশ স্বত্বাধিকারী হন। জমির স্বত্বাধিকারী হওয়া ছাড়াও জমিদারগণ স্বত্বাধিকারের সুবিধার সাথে চিরস্থায়ীভাবে অপরিবর্তনীয় এক নির্ধারিত হারের রাজস্বে জমিদারিস্বত্ব লাভ করেন। চুক্তির আওতায় জমিদারদের কাছে সরকারের রাজস্ব-দাবি বৃদ্ধির পথ রুদ্ধ হয়ে গেলেও জমিদারদের তরফ থেকে প্রজাদের ওপর রাজস্বের দাবি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ আরোপিত হয় নি। জমিদারদের জমি বিক্রয়, বন্ধক, দান ইত্যাদি উপায়ে অবাধে হস্তান্তরের অধিকার থাকলেও তাদের প্রজা বা রায়তদের সে অধিকার দেওয়া হয়নি। নিয়মিত খাজনা পরিশোধ সাপেক্ষে উত্তরাধিকারক্রমে জমির মালিক থাকার প্রথাগত অধিকার রায়তদের থাকলেও জমি হস্তান্তরের অধিকার তাদের ছিল না। সরকারের বেলায় জমিদারদের অবশ্য একটি দায়দায়িত্ব কঠোরভাবে পালনীয় ছিল। সেটি হচ্ছে নিয়মিত সরকারের রাজস্ব দাবি পরিশোধ করা। জমিদারগণকে এ মর্মে হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয় যে, তাদের কেউ নির্ধারিত তারিখে কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে খেলাপি ব্যক্তির সকল জমি বা বকেয়া দাবি পূরণের উপযোগী জমি নিলামে বিক্রয় করা হবে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা
এটি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের পর থেকে বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রপতিদের সম্পূর্ণ তালিকা।
ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের কারণ ও ফলাফল ইতিহাসে মোটামুটি ১৭৬০-১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দ এই সময়কালে কৃষি এবং বাণিজ্যিক ব্যবস্থা থেকে আধুনিক শিল্পায়নের দিকে গতি শুরু হওয়ায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিস্ময়কর পরিবর্তন ঘটে। পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীর সমুদ্র যাত্রা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের পথ খুলে দেয়। এরপর পুঁজিবাদের উদ্ভব, বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কার, কয়লার খনি আর ইস্পাতের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে অনেক শিল্প শহর আর কারখা না গড়ে উঠে।
যোনি বা যোনিপথ বা যৌননালী বা জনননালী (লাতিন: ভ্যাজাইনা) হলো স্ত্রী যৌনাঙ্গ, যা জরায়ু থেকে স্ত্রীদেহের বাইরের অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ফাইব্রোমাসকুলার (তন্তু-পেশিময়) নলাকার অংশ। মানুষ ছাড়াও অমরাবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী ও মারসুপিয়াল প্রাণীতে, যেমন ক্যাঙ্গারু অথবা স্ত্রী পাখি, মনোট্রিম ও কিছু সরীসৃপের ক্লোকাতে যোনি পরিদৃষ্ট হয়। স্ত্রী কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণীরও যোনি আছে, যা মূলত ওভিডাক্টের শেষ প্রান্ত।
অপারেশন জ্যাকপট বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নৌ-সেক্টর পরিচালিত সফলতম গেরিলা অপারেশন। এটি ছিল একটি আত্মঘাতী অপারেশন। এ অপারেশন ১৯৭১-এর ১৫ আগস্ট রাত ১২টার পর অর্থাৎ ১৬ আগস্ট প্রথম প্রহরে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর এবং দেশের অভ্যন্তরে চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরে একই সময়ে পরিচালিত হয়। ১০নং সেক্টরের অধীনে ট্রেনিং প্রাপ্ত নৌ কমান্ডো যোদ্ধাদের অসীম সাহসিকতার নিদর্শন এই অপারেশন জ্যাকপট। এই গেরিলা অপারেশনে পাকিস্তানি বাহিনীর অনেকগুলো অস্ত্র ও রসদবাহী জাহাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত ও বড় রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত জাহাজগুলোর মধ্যে পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্যকারী অনেকগুলো বিদেশি জাহাজও থাকায় এই অপারেশন বাংলাদেশের যুদ্ধ এবং যোদ্ধাদেরকে সারা বিশ্বে পরিচিতি পাইয়ে দেয়।সারা বিশ্ব বুঝতে পারে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই লড়ছে।এটি বাংলাদেশের ইতিহাস এর খুবই গুরুত্বপূর্ণ মিশন।